তুই শুধু আমার উন্মাদনা গল্পের লিংক || তাবাস্সুম খাতুন

তুই শুধু আমার উন্মাদনা পর্ব ১
তাবাস্সুম খাতুন

—ভ.. ভা.. ইয়া.. ভাইয়া এ.. বারের মত.. আমাকে ছেড়ে দিন প্রমিস আর আপনার অবাধ্য হবো নাহ আপনার সব কথা মে.. ণে.. নেবো..
সামনের ছেলেটা মেয়েটার কাতর মাখা কণ্ঠ শুনলো নাহ। বরং সে হাতে থাকা ছুড়ি টা ঘোরাতে লাগলো। ঘোরাতে ঘোরাতে মেয়েটার কাছে আসছে। জায়গা টা একদম অন্ধকার কিছুই দেখা যাচ্ছে নাহ তাই ছেলেটার মুখ ও দেখা যাচ্ছে নাহ। মেয়েটা এখনো একই ভাবে কাকুতি মিনতি করে যাচ্ছে কিন্তূ ছেলেটা শুনছে নাহ।ছেলেটা একদম তার কাছে চলে আসলো। মেয়েটা ছটফট করছে ছাড়া পাবার জন্য কারণ তাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে একটা চেয়ারের সাথে। ছেলেটা এসেই ওর চুলের মুটি টেনে ধরে মেয়েটার মুখ তার সামনে আনলো। ছেলেটা দাঁতে দাঁত চেপে বললো ;

— “তোর সাহস দেখে আমি অবাক ইশু? আমি থাকতে তুই কেন অন্য ছেলের হাত ধরেছিস বল কেন ধরেছিস?”
ছেলেটার চিৎকার এ মেয়েটা কেঁপে উঠলো ফুফাতে ফুফাতে বললো ;
— “ভাইয়া ভাইয়া তুমি তু মি যা চাইবে যেমন ভাবে চাইবে আমি সেইভাবে কাজ করবো আজ থেকে তবুও ভাইয়া আমাকে মারবে নাহ আমাকে ছেড়ে দাও আমার ভয় লাগছে কষ্ট হচ্ছে ও ভাইয়া ভাইয়া ও ভাইয়া গোওও।”
মেয়েটার চিৎকার ভেসে বেড়াচ্ছে এই অন্ধকার বাড়ির ভিতরে ছেলেটা ছুড়ি দিয়ে মেয়েটার সুন্দর কোমল নরম হাত কেটে দিয়েছে নকশা তৈরী করেছে খুব সুন্দর করে!হাত থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। ছেলেটা মেয়েটার মুখে ছুড়ি চেপে ধরে একই টোনে বললো :

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

— “আমাকে ছাড়া অন্য ছেলেকে ছুঁয়ে দেখলে তোর এই হাত আর থাকবে নাহ কেটে কবর দেবো তোর ওই হাত।”
বলেই খেক খেঁক করে বিচ্ছিরি ভাবে হাসতে লাগলো। মেয়েটা হাত দেখে জোরে চিৎকার দিলো :
— “নিশান ভাইয়া তুমি ভালো নাহ তুমি পচা আমাকে মারো তুমি ভালো নাহ।”
বলেই হুট্ করে তার ঘুম ভেঙে গেলো। সে উঠে পড়লো। তার পাশে বসেছিল সামিয়া। সে মেয়েটাকে এইভাবে চিৎকার দিয়ে ঘুম থেকে উঠতে দেখে জড়িয়ে ধরে বললো :
— “কি হয়েছে সিমি? আবার নিশান ভাইয়া কে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিস?”
সিমি কান্না করে দিলো সামিয়া কে জড়িয়ে ধরে কান্নার রেশ টেনে বললো :
— “সামু ভাইয়া এত খারাপ কেন? আমাকে শুধু কষ্ট দেই ব্যাথা দেই আমি ঘুমাতে পারছিনা উনি যে সেই দশ বছর আগে চলে গেলেন আর আসেন নি কিন্তূ আমার স্বপ্নে তো সে প্রত্তেকদিন আসে। সামু আমার ভয় লাগছে খুব। ভাইয়া স্বপ্নে এই করছে বাস্তবে য্খন আসবে যদি আগের মতো আমার সাথে আবারো ঐরকম করে আমি মরে যাবো সামু।”
সিমির সম্পূর্ণ কথা শুণে সামিয়া সিমির মাথায় হাত বুলিয়ে শান্তনার বাণী ঝাড়লো :

— “সিমি তোর কেন মনে হচ্ছ দশ বছর আগে নিশান ভাইয়া তোকে যে কষ্ট দিয়েছে সেইটা আবার দিবে? কিছু বললে তুই আন্টি আঙ্কেল কে বলে দিবি।”
সিমি ঐভাবে সামিয়া কে জড়িয়ে ধরে ফুফাতে ফুফাতে বললো ;
— “বাড়িতে সবাই য্খন জানতে পেরেছিলো বড়ো আব্বু ভাইয়া কে অনেক মেরেছিলো রক্তাত করে দিয়েছিলো ভাইয়া কিছুই বলে নি শুধু আমার দিকে কেমন করে তাকিয়ে ছিলো আমি তো তখন ছোট ছিলাম আম্মুকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছিলাম। আর ভাইয়া কে সেই দিনই বড়ো আব্বু ইমার্জেন্সি প্লেনের টিকিট বুক করে ইতালিটে ফুফির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিলো। তারপর থেকে তো আর ভাইয়া একবারও দেশে আসি নি।”
সামিয়া সিমির মাথায় হাত বুলিয়ে বললো :

— “হ্যা তবে সেও আর কত বিদেশে থাকবে দেশে তো আসবেই এইবার কোন ঘটনা ঘটালে সবাইকে বলে দিবি চুপ থাকবিনা।”
সিমি সামিয়ার বুক থেকে উঠে চোখের পানি মুছে হেসে বললো ;
— “আমি কি জন্য বাড়িতে থাকি নাহ জানিস?”
সামিয়া হেসে সিমির গাল টেনে দিয়ে বললো :
— “জানিনা মানে? এইযে তুই এইসব স্বপ্ন প্রতিদিন দেখিস আর এইভাবে চিৎকার করে উঠিস আর উঠে কান্না করিস বাড়িতে দেখলে সমস্যা হবে তাইতো তুই মাসে দুই দিন করে যাস গিয়ে তাও আলাদা রুম এ থাকিস যাতে কেউ বুজতে নাহ পারে।”
সিমি হেসে সামিয়া কে আবারো জড়িয়ে ধরে বললো :
— “তুই তো সবই জানিস সামু আর তোকে ছাড়া যে আমি নিঃস এইটাও তুই জানিস?”
সামিয়া এইবার মেকি রাগ নিয়ে বললো ;

— “১৯ বছরের ধারী মেয়ে একটা তোর ভালোবাসা এখন আমার লাগবে নাহ উঠ জলদি ভার্সিটি যেতে হবে নাহ নাকি? যদি দেরি হয়ে যাই তাহলে ওই খাটাস ইংলিশ স্যার আমাদের দিয়ে মুরগি ড্যান্স করাবে।”
সিমি ফিক করে হেসে দিলো। তারপর উঠতে উঠতে বললো :
— “হ্যা সত্যি মুরগি ড্যান্স করতে হবে ছি তখন সবাই দেখবে আর কি বলবে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নেই।”
বলে সিমি দ্রুত ওয়াশরুম এ ঢুকে গেলো। সামিয়া আগেই ফ্রেস হয়ে ফোন স্ক্রল করছিলো আর তখনি সিমির চিৎকার শুনলো সে। এখন সে রেডি হবে। ভার্সিটির জন্য। সিমি ওয়াশরুম থেকে সাওয়ার নিয়ে বেরোলো। তারপর একটা কালো রং এর একটা গাউন পারলো। মাথায় কালো রং এর একটা হিজাব বাঁধলো তারপর একপাশে উড়না নিয়ে পিন করলো। মুখে হোয়াটটন পাউডার আর ঠোঁট এ হাল্কা পিঙ্ক লিপিস্টিক দিয়ে নিলো। ব্যাস তার গোছানো শেষ। সামিয়া একটা লাল রং এর গাউন পড়েছে সেও সিমির মতো করে নিজেকে সাজিয়েছে। দুই বান্ধবীর সাজ শেষ হতেই দুইজনে ব্যাগ নিয়ে বেড়িয়ে গেলো হোস্টেল থেকে। তারা রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে রিক্সার জন্য। এমন সময় সিমির মা রোজিনা চৌধুরী সামিয়ার ফোন এ কল দিলো। সামিয়া ফোন পিক আপ করে বললো ;

— “মামুনি কেমন আছো?”
রোজিনা চৌধুরী মেকি রাগ করে বললো ;
— “মামুনি নাহ ছাই একবারও আমার খোঁজ নিস্ তুই আমি ফোন নাহ দিলে আমার খোঁজই নিস্ নাহ।”
সামিয়া অসহায় ফেস করে বললো ;
— “মামুনি আমি ফোন দিতে গিয়েছিলাম কিন্তূ তোমার ওই মেয়ে আমার হাত বেঁধে রেখেছে তাইতো দিতে পারিনি।”
রোজিনা চৌধুরী এইবার বললেন ;

— “কই সেই বাঁদর টা দে দেখি তার কাছে?”
সামিয়া সিমির দিকে ফোন এগিয়ে দিলো। সিমি ফোন কানে ধরে বললো ;
— “জি আম্মু বলো?”
রোজিনা চৌধুরী একটু রাগী কন্ঠে বললো ;
— “তো জমিদারি রা আপনারা কি সকালে নাস্তা করেছেন?”
রোজিনার এই কথার উত্তরে সিমি দ্রুত জবাবে বললো :
— “আম্মু রিকশা চলে আসছে দ্রুত যেতে হবে নয়তো ভার্সিটি যেতে লেট হবে।”
বলেই দ্রুত ফোন কেটে দিলো। সামিয়া তাড়াতাড়ি বললো ;
— “সিমি রে আজকে জোর বাঁচা বেঁচে গেলাম।”
সিমি বুকে হাত দিয়ে নিশ্বাস নিয়ে বললো ;
— “হ্যা সামু।”
ওদের কথা বলার মধ্যেই রিকশা আসলো। ওরা উঠে বসলো।তারপর রিকশা ওয়ালা মামা কে ভার্সিটির দিকে যেতে বললো।

একটু পরিচয় হওয়া যাক — চৌধুরী পরিবারে তিন ভাই আর এক বোন তারা। বড়ো ভাই এর নাম হলো। তাজউদ্দিন চৌধুরী। তার বউ এর নাম সেলিনা চৌধুরী। তাদের এক ছেলে আর এক মেয়ে। বড়ো ছেলের নাম হলো তানভীর চৌধুরী নিশান। আর ছোট মেয়ের নাম হলো সিনথিয়া ইয়াসমিন জারা যার বয়স ১৯ বছর ছয় মাস চলছে। অর্নাস ফার্স্ট ইয়ার এ পরে।চৌধুরী বাড়ির মেজো ছেলের নাম হলো।সালাউদ্দিন চৌধুরী।তার বউ এর নাম রোজিনা চৌধুরী। তাদের তিন ছেলে মেয়ে। বড়ো মেয়ের নাম হলো সুরাইয়া আফরিন সুমি। সে প্রেম করে বিয়ে করেছে বাড়িতে সবার সাথে সম্পর্ক নষ্ট করে সে তার প্রেমিক কে নিয়ে চলে গেছে চার বছর হচ্ছে। শেষ খবর পাওয়া গেছে তারা নাকি সুইজারল্যান্ড থাকে। আর তাদের একটা মেয়ে আছে দুই বছরের। তবে তারা বাড়ির কারোর সাথে যোগাযোগ করতে চাই নাহ আর চৌধুরী বাড়ির ও কেউ আর কোন যোগাযোগ বাহ্ খোঁজ খবর রাখি নি। সালাউদ্দিন এর মেজো মেয়ের নাম হচ্ছে ঈশিতা জাহান সিমি। ওর বয়স ১৯ +।

সে এখন অর্নাস ফার্স্ট ইয়ার এ পরে। আর সালাউদ্দিন এর ছোট ছেলে যার বয়স এই দশ বছর।এখন ক্লাস ফোর এ পরে। নাম তাজিয়ান চৌধুরী তাজ। চৌধুরী পরিবারের ছোট ভাই এর নাম হলো জামালউদ্দিন চৌধুরী। তার বউ এর নাম কিয়া চৌধুরী।তাদের দুই মেয়ে। বড়ো মেয়ের নাম অরুনিমা ইয়াসমিন পিহু। যার বয়স ১৭ এখন ইন্টার ফার্স্ট ইয়ার এ পরে। আর ছোট মেয়ের নাম। অরুণিকা ইয়াসমিন মিহু। ওর বয়স ১২। সে এখন ক্লাস সেভেন এ পরে। আর চৌধুরী পরিবারের একমাত্র বোনের নাম মেহেরিমা শেখ। আর তার হাসব্যান্ড এর নাম রুবেল শেখ। তাদের বিয়ের দুই বছর পরেই তারা সুদূর দেশ ইতালি টে চলে গেছিলো। তাদের তিন ছেলে মেয়ে। দুই ছেলে আর এক মেয়ে।বড়ো ছেলের নাম জিহান শেখ যার বয়স ২৮ বছর নয় মাস। পড়াশোনা কমপ্লিট বাবার ব্যবসা দেখাশোনা করে। আর মেজো ছেলের নাম তিহান শেখ বয়স ২২+ অর্নাস শেষ বর্ষ। আর তার ছোট মেয়ের নাম মেহেরিন শেখ রাত্রি। বয়স ১৯ বছর দুই মাস।অর্নাস ফার্স্ট ইয়ার। তাজউদ্দিন এর বড়ো ছেলে তানভীর চৌধুরী নিশান এইখান থেকে দশ বছর আগে ফুফির বাসায় এসেছে এখন তার বয়স ২৯ +। তার ও পড়াশোনা কমপ্লিট। নিজে ব্যবসা দাঁড় করিয়েছে সবকিছু তার বাবার টাকার। আর সামিয়া তার পুরো নাম সামিয়া আক্তার তুলি।তার বয়স এখন ১৯ বছর এক মাস।সে চৌধুরী বাড়িতে থাকে। তবে কেন সেইসব কিছু আপাতত গল্পে জানা যাবে।

তাদের গল্প করার মধ্যেই রিক্সা এসে থামলো ভার্সিটির সামনে। তারা নেমে পড়লো। নেমে ভাড়া মিটিয়ে সবে পাশ ফিরবে অমনি কেউ একজন ঝড়ের গতিতে এসে ওদের দুইজনকেই আঁকড়ে ধরলো। সিমি আর সামিয়া দুইজনে প্রথমে ভড়কে গেলো। তারপর কে ধরেছে বুজতে পারলো বুকে হাত দিয়ে নিশ্বাস নিলো। কিছু বলবে তার মধ্যেই দৌড়ে আশা মেয়েটি বলে উঠলো ;
— “ও মোর আল্লাহ কত দিন পরে তোদের দেখছি আমি।”
সিমি মেয়েটার কান টেনে ধরে বললো ;
— “বেয়াদব কত দিন কালকেই দেখা হয়েছে আমাদের তুই কতদিন দেখস আবার?”
মেয়েটা সিমির হাত নিজের কান থাকে ছাড়িয়ে নিতে নিতে বললো ;
— “রোজিনার বাচ্চা সিমি ছাড় আমার কান বাল ধরোস কেন? আর শোন আমার কাছে এক এক ঘন্টা মানে এক দিন তাই কালকে থেকে শুরু করে আমরা দেখা করি নি ১৩ ঘন্টা তার মানে ১৩ দিন উফফফফ।”
সিমি এইবার মেয়েটার মাথায় চাটি মেরে বললো ;
— “গাধা দেখেছি but তোর মতো দেখি নি আজকে দেখে নিলাম। চল এইবার।”
সামিয়া মেয়েটার কাঁধ জড়িয়ে ধরে বললো ;

—“জাউড়া পাখি…”
মেয়েটা সামিয়ার চুল টেনে বললো ;
— “সামু রামু মোর নাম not জাউড়া only জারা জারা পাখি ukay?”
সামিয়া মাথায় হাত দিয়ে ভ্রু কুঁচকে বললো ;
— “শালী তুই আমার চুল টানলি কেন?”
জারা ভাবলেশিন ভাবে বললো ;
— “প্রথমত আমারে জাউড়া পাখি বলার জন্য চুল টানসি।আর আমি আমার কোন বোনকেই তোর সাথে বিয়ে দেই নি তাই don’t call me to শালী ukay?”
সামিয়া মুখ ভাঙছিয়ে বললো ;
— “ukay..!”
সিমি এইবার মেকি রাগ নিয়ে বললো ;
— “পেত্নীর দল যাবি নাকি আমি যাবো কোনটা?”
সামু আর জারা একসাথে বলে উঠলো ;
— “no বেবস i আয়তাসি।”

বলেই দুইজনে সিমির সাথে যেতে লাগলো। তারা ক্লাসে চলে গেলো ক্লাস শুরু ও হয়ে গেছে। সময়টা এগারোটা পঞ্চাশ। এমন সময় চৌধুরী বাড়ির বড়ো কর্তা তাজউদ্দিন চৌধুরী আসলো ভার্সিটি তে। তাকে দেখেই প্রিন্সিপাল স্যার নিজের জায়গা ছেড়ে তাকে বসতে দিলেন। উনি বসলেন। প্রিন্সিপাল স্যার বললেন ;
— “জি স্যার আমি কি কোন হেল্প করতে পারি?”
তাজউদ্দিন চৌধুরী গম্ভীর মানুষ সবসময় সিরিয়াস আর গম্ভীরতা বজিয়ে রাখে। সাথে বিচক্ষণ পুরুষ। তিনি গম্ভীর ভাবে বললেন ;
— “নাহ মেয়েদের নিতে এসেছি তাই দ্রুত নিয়ে আসো ওদের।”
প্রিন্সিপাল স্যার যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে বললো ;
— “আমি নিজে গিয়ে নিয়ে আসছি তার মধ্যে আপনি এক কাপ কফি খান।”
বলেই সে বেরিয়ে গেলো। আর একটা স্যার কে দিয়ে প্রিন্সিপাল এর রুমে কফি সাথে একটু নাস্তা পাঠিয়ে দিলো। এই ভার্সিটি টা তাজউদ্দিন চৌধুরীর এইখানে আগে খোলা মাঠ ছিলো। সে নিজের বিচক্ষন বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে এইখানে একটা ভার্সিটি দাঁড় করিয়েছে। ভার্সিটি তৈরী করা হয়েছে প্রায় পনেরো বছর হচ্ছে। আর এইজন্য চৌধুরী বাড়ির সবাইকে সন্মান করে তারা। প্রিন্সিপাল স্যার অর্নাস ফার্স্ট ইয়ার এর ক্লাসে গেলো। সে যেতেই সবাই দাঁড়িয়ে পড়লো। প্রিন্সিপাল স্যার বললো ;

— “সিমি, সামিয়া আর জারা তোমরা আমার সাথে আসো।”
বলেই তিনি বাহিরে গেলেন। ক্লাসের সবাই তাদের দিকে তাকালো। মনে মনে অনেকে খুশি হয়েছে যে এরা হয়তো কোন পানিশমেন্ট পাবে। স্যার ও কিছু বললো নাহ। ওরা তিনজন বেড়িয়ে আসলো। তারপর প্রিন্সিপাল এর সাথে যেতে লাগলো। তারা অফিস রুমে ঢুকতেই দেখতে পাই তাজউদ্দিন চৌধুরী কফির মগে চুমুক দিচ্ছে। সিমি আর সামিয়া খুশিতে দৌড়ে তাজউদ্দীন চৌধুরী কে জড়িয়ে ধরলেন। তাজউদ্দিন তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে বললো ;
— “আমার আম্মুরা কেমন আছে?”
সামিয়া আর সিমি একসাথে বললো ;
— “আলহামদুলিল্লাহ তুমি?”
তাজউদ্দিন হেসে বললো ;
— “আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আমার সাথে এখন তোমরা তিনজনই বাড়িতে যাবে বুজেছো?”
সিমি মাথা উঁচিয়ে তাকিয়ে বললো ;

— “কেন বড়ো চাচ্চু কিছু হয়েছে কি?”
তাজউদ্দিন সিমির মাথায় হাত বুলিয়ে বললো ;
— “হুম অনুষ্ঠান আছে চলো আমার সাথে।”
সিমি আর দ্বিতীয় প্রশ্ন করলো নাহ। সামিয়া, জারা আর সিমি একসাথে তাজউদ্দিন এর সাথে চলে গেলো তার গাড়িতে বসেই বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দিলো।দের ঘন্টা ড্রাইভ পরে তারা বাড়িতে ফিরলো। বাড়িতে ফিরতেই বাড়ির প্রত্যেক টা সদস্য সিমি আর সামিয়া কে জড়িয়ে ধরলো। তারপর তাদের উপরে ফ্রেশ হতে পাঠালো। সিমি সামিয়া কে বললো ;
— “আচ্ছা সামু হুট্ করে এই অনুষ্ঠান হওয়ার মানে কিরে?”
সামু — “শালী আমি কেমনে জানবো তুই ও যেই উগান্ডায় ছিলিস আমিও সেই উগান্ডায় ছিলাম তাহলে কেমনে জানবো বল?”
সিমি দাঁত কেলিয়ে বললো ;

— ” ভুলে গেছি সোনা মাফ কর। ”
তারা কথা বলতে বলতে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠলো সামনে দেখা হলো মিহুর সাথে। মিহু এসেই সিমি আর সামিয়া কে জড়িয়ে ধরলো ভালো মন্দ জিজ্ঞাসা করলো। সিমি এইবার মিহু কে বললো ;
— “মিহু একটা কথা বলবি?”
মিহু তারা দিয়ে বললো ;
— “দ্রুত বলো আপুনি নিচে অনেক কাজ আছে।”
সিমি — “আচ্ছা আমার ছোট মিহু সোনা বলছি কি অনুষ্ঠান টা কিসের জন্য করা হচ্ছে?”
মিহু কপালে হাত দিয়ে বললো ;
— “একি আপুনি তুমি এখনো জানোনা অনুষ্ঠান টা কিসের জন্য?”
সিমি ইনোসেন্ট ফেস করে বললো ;
— “নাহ সোনা জানলে কি আর তোমাকে জিগাইতাম?”
মিহু — “সেই দশ বছর পরে নিশান ভাইয়া আজকে বাড়ি আসবে তাই তো এই অনুষ্ঠান হচ্ছে। আচ্ছা আপুনি আমি নিচে যাচ্ছি অনেক কাজ পরে আসবো কেমন বাই বাই।”
বলেই ছোট্ট মিহু দৌড়ে চলে গেলো। আর এইদিকে নিশান এর কথা শুনেই সিমির মাথা চক্কর দিয়ে উঠলো মনের ভিতরে ভয় ঝেঁকে বসলো। কি হবে ভাবতে লাগলো। মাথা ঘুরিয়ে পরে যেতে নিলেই। সামিয়া তাকে আঁকড়ে ধরে বললো ;

— “সিমি আমার সোনা আমার জান শক্ত হও তুই। আর রুমে চল।”
এর মধ্যে ঐখানে জারা ও চলে আসলো। সেও জানতো নাহ তার ভাইয়া আজকে বাড়ি আসবে। যখনি শুনলো দৌড়ে সিমির কাছে আসলো আর এসেই দেখলো সিমি কেঁপে উঠছে ভয় পাচ্ছে সামিয়া কে ধরে রেখেছে। জারা ও সিমি কে ধরলো কেউ যেন দেখতে নাহ পাই দ্রুত তারা সিমি কে নিয়ে রুমে ঢুকলো। সিমি ভয়ে কথা বলতে পারছেনা। সামিয়ার কাঁধে মাথা রেখে আছে। আর জারা সিমির হাত ধরে আছে।
জারা বললো ; —

তুই শুধু আমার উন্মাদনা পর্ব ২