তুই শুধু আমার উন্মাদনা পর্ব ১৫
তাবাস্সুম খাতুন
“বিদেশি কুত্তা এত ভালো কবে থেকে হলো? আমাকে ঘুরতে নিয়ে যাবে, আল্লাহ মনে হয় সুবুদ্ধি দিয়েছে।”
বলে সিমি নিজের রুমে ঢুকে গেলো। সেখানে বসে গল্প করছিলো। জারা, সামিয়া আর রাত্রি। সিমি ওদের তিন জনকে দেখে চোখ ছোট ছোট করে বললো,,
“তোদের তিনজনের কি আর জায়গা নেই গল্প করার। যখনি দেখি আমার রুমে।”
জারা মুখ ভাঙিয়ে বললো,,
“শশুর বাড়ি থেকে এসে লেকচার মারছে হুউউউ।”
সিমি — “জাওড়া পাখি আমার শশুর বাড়ি কোথা থেকে আসলো, আমি তো ওই বিদেশি কুত্তার রুমে ছিলাম।”
রাত্রি একটু ঢঙ্গি সরে বললো,,
“আইহাই তোরা দেখ আমাদের ন্যাসপাতি ভাই কে আজকাল চোখে হারাচ্ছে কেউ, তাই সবসময় ওই রুমেই থাকে।”
সিমি দাঁত কিড়মিড় করতে করতে বললো,,
“আসমান জমিন ও যদি এক হয়, তাও মেনে নেবো তবে আমার পাশে ওই বিদেশি কুত্তা কে কখনো আমি মানবো না।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
সামিয়া — “মানিস না বলেই আজ তোর হাপপ্যান্ট সরি হাসব্যান্ড।”
সামিয়ার কথা শুনে জারা রাত্রি দুইজনেই হেসে উঠলো সিমি এইবার চিল্লিয়ে বললো,,,
“শালা মীরজাফরের বংশ ধরেরা বেড়িয়ে যা আমার রুম থেকে।”
সামিয়া আস্তে আস্তে বললো,,
“কেন বেবি জিজু আসবে নাকি?”
সিমি চোখ গরম করে সামিয়ার দিকে তাকাতেই সামিয়া চুপ হয়ে গেলো। বুজাই যাচ্ছে সিমি আজ অনেক রেগে গেছে। তাই ওরা তিনজন বেড়িয়ে গেলো সিমির রুম থেকে। ওরা বেরোতেই সিমি দরজা জোরে লাগিয়ে দিলো। রাগে যেন মাথা ফেঁটে যাচ্ছে ওর। লাইট অফ করে পর্দা টেনে দিয়ে বেডে শুয়ে পড়লো। রাগ কমানোর জন্য এইটাই বেটার অপশন।
এইদিকে ওরা তিনজন বাইরে এসে হাসাহাসি করছে। জারা সামিয়া কে বললো,,
“সামু আমি আর জারা নিচে যাচ্ছি। তুই কি যাবি?”
সামিয়া — “মনটা এখন ছাদের দিকে ইশারা করছে, তোরা যা আমি ছাদে যাবো।”
জারা আর রাত্রি নিচে চলে গেলো। সামিয়া ফোন স্ক্রল করতে করতে ছাদে গেলো। সিঁড়ি বেয়ে উঠে ছাদের দরজার কাছে আসতেই কারোর শক্ত পক্ত বুকের সাথে জোরে ধাক্কা খেয়ে নিচে পড়ে গেলো। সামিয়া হাল্কা ব্যাথা ও পেলো। সে চোখ উঁচিয়ে সামনে তাকিয়ে দেখে জবেদার ভাতার তার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে। সামিয়া উঠে দাঁড়ালো জিহানের দিকে তাকিয়ে বললো,,
“এই জবেদার ভাতার, সমস্যা কি আপনার? ফেলে দিলেন কেন আমাকে?”
জবেদার ভাতার এমন নাম শুনে যেন জিহানের কাশি উঠে যাচ্ছে। নিজেকে সামলিয়ে সামিয়াকে বললো,,
“এক্সকিউজ মি এই জবেদার ভাতার টা কে?”
সামিয়া — “আপনি, আপনার বউ এর নাম জবেদা। তাই সেই সূত্রে আপনি তারবর খাঁটি বাংলায় বলতে গেলে জবেদার বর না জবেদার ভাতার its বেস্ট।”
জিহানের এইবার সত্যি সত্যি কাশি উঠে গেলো। সে বললো,,
“এই জবেদা কে কই পেলে তোমরা?”
সামিয়া — “এখনো পাই নি, তবে আপনার জন্য খুজছি।”
জিহান — “এই মেয়ে ভালোই ফটর ফটর কর দেখছি?”
সামিয়া মুখ ভাঙিয়ে বললো,,
“আমার মুখ আছে তাই ফটর ফটর করি তাতে আপনার কি সমস্যা?”
জিহান — “শালার আজকের দিনটাই খারাপ জড়িয়ে ধরলো বাজার থেকে কিনা মিষ্টি আর ধাক্কা মারলো মিস ক্যারক্যারানি। অসহ্য বাড়িতে থেকেও আজকাল শান্তি পাওয়া যাচ্ছে না ধ্যাৎ বউ এর হক সব এরাই নিয়ে নিচ্ছে ডিসগাস্টিং ব্যাপার স্যাপার।”
বলে জিহান চলে যেতে নিলেই সামিয়া পথ আটকিয়ে ধরে বললো,,
“এই আপনি আমাকে কি নামে ডাকলেন?”
জিহান বিরক্তি কণ্ঠে বললো,,
“এক কথা দ্বিতীয় বার বলতে আমি পছন্দ করি না মেয়ে রাস্তা ছাড়ো।”
সামিয়া — “বললেই হলো নাকি, দেখেন মিস্টার জবেদার ভাতার বেশি তিড়িং বিড়িং করলে কিন্তূ একেবারে জবেদার কাছে রেখে আসবো।”
জিহান — “এইযে মিস ক্যারক্যারানি বেশি পকপক করলে কিন্তূ তোমার দিনে দুপুরে সর্বনাশ করে দেবো।”
সামিয়া ভাব নিয়ে ব্যাঙ্গত সরে বললো,,
“ওরে আইসে আমার সর্বনাশ আলিরে রে কি সর্বনাশ করবেন আপনি?”
জিহান — “খাঁচায় বন্ধী করে রাখবো।”
সামিয়া — “আমি কি পাখি নাকি যে আমাকে খাঁচায় বন্ধী করবেন।”
জিহান বাঁকা হেসে বললো,,
“সমস্যা কি আমি যদি চাই তোমাকে পাখি ও বানাতে পারি।”
সামিয়া উপহাস করে বললো,,
“ও আচ্ছা তাই নাকি, প্লিজ তাহলে আমাকে পাখি বানিয়ে দেন আমার না পাখি হওয়ার অনেক শখ। পাখি হয়ে আকাশে ঘুরে নিজের জামাই কে খুঁজব আহঃ কি শান্তি।”
বলে সামিয়া জিহানের দিকে তাকাতেই জিহান কি যেন বিড়বিড় করতে করতে চলে গেলো। সামিয়া ও জিহানের দিকে তাকিয়ে মুখ ভ্যাংচি কেটে ছাদে উঠে গেলো।
বিকাল ছয়টা বেজে পাঁচ মিনিট। সেলিনা সোজা মিষ্টির রুমের সামনে আসলো। দুই তিনবার নক করলো কিন্তূ কোন সারা শব্দ নেই। সেলিনা এইবার ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে লক খুলে ভিতরে প্রবেশ করলেন। ভিতরে ঢুকতেই কেমন যেন রক্তের ঘ্রান ভেসে আসলো। চারিদিকে অন্ধকার। সেলিনা সুইচ বোর্ড হাতড়িয়ে লাইট অন করতেই চমকে উঠলো চিৎকার দিয়ে উঠলো। সেলিনা দৌড়ে বেডের কাছে অবহেলিতাই পড়ে থাকা মিষ্টির কাছে গেলো। যে বেডে হেলাম দিয়ে ফ্লোরে বিশেষ আছে। চুলগুলো এলোমেলো চারিদিকে কাঁচের টুকরো হাত থেকে রক্ত পড়ছে এখনো টুপটাপ করে। সাদা ফ্লোর লাল হয়ে গেছে। কেঁপে কেঁপে উঠছে প্রতিবার। সেলিনা গিয়েই মিষ্টি কে জড়িয়ে ধরলো সেলিনার চোখে পানি সে মিষ্টি কে আগলিয়ে বললো,,
“কি হয়েছে সোনা, তোর এই অবস্থা কেন? এমন কিভাবে হলো আমার সোনা বাচ্চা বল।”
মিষ্টি চোখ বন্ধ করলো। বার দুয়েক বড়ো বড়ো শ্বাস নিয়ে বললো,,
“খালাআম্মু নিশান কি ম্যারিড?”
সেলিনা মিষ্টি কে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো,,
“যেইদিন বিয়ের কথা বলেছি সেইদিন রাত দুটোর সময় বিয়ে করেছে।”
মিষ্টির চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়লো। সে সেলিনা কে বললো,,
“আমার মধ্যে কিসের কমতি ছিলো খালাআম্মু, আমি কি নিশানের বউ হওয়ার যোগ্য রাখি না। আমি কি নিশান কে আমার করে পেতে পারতাম না।”
সেলিনা মিষ্টি কে ছেড়ে দিয়ে তার সামনে বসিয়ে চুলগুলো ঠিক করে মুখে এক হাত রেখে বললো,,
“আমার ছেলের বউ হওয়ার যোগ্যতা একমাত্র তোরই আছে সোনা, তাইতো নিশানের বিয়ে হয়েছে এইটা তোকে বলি নি, আর এইখানে নিয়ে এসেছি। কারণ সোজা আঙ্গুলে ঘি না উঠলে তো আঙ্গুল বাঁকাতেই হবে।”
সেলিনার কথার অর্থ মিষ্টি বুজতে পারলো না তাই বললো,,
“ঠিক বুজতে পারলাম না খালাআম্মু একটু বুজিয়ে বলবে।”
সেলিনা মিষ্টির মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,,
“সিমি কে আমি সত্যিই ভালোবাসি, তবে সেইটা দশ বছর আগেই। যেইদিন আমার ছেলেকে রক্তাত করে এই বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল সেইদিন থেকে আমার মনে সিমির জন্য ঘৃণা ছাড়া কোন কিছুই নেই আর না আসবে ওকে আমি ঘৃণা করি তবে সবাইকে বুজতে দেই না। সবাই জানে আমি সিমি কে অনেক বেশি ভালোবাসি।”
মিষ্টি সেলিনার মুখের দিকে এখনো তাকিয়ে আছে। সেলিনা মিষ্টি কে উঠে দার করালো তারপর বললো,,
“সব কথা এইভাবে বলতে নেই, দেওয়ালের ও কান থাকে। যা সোনা গোসল করে আয় আমি এইগুলো পরিষ্কার করার ব্যবস্থা করছি।”
মিষ্টি আর দ্বিতীয় বাক্য না বলে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো। সেলিনা একটা সার্ভেন্ট ডেকে মিষ্টির রুম পরিষ্কার করে নিলো। তারপর নিজে রুম থেকে বেড়িয়ে নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলো। পোশাকে রক্ত লাগছে এইজন্য।
দেখতে দেখতে ধরণীর বুকে অন্ধকার নেমে আসছে। সময়টা সাড়ে সাত টা। নিশান মাত্র বাসায় ফিরলো সেই দুপুরে বেড়িয়ে ছিলো আর এখন আসলো। নিশান সোজা নিজের রুমে যাই। রুমে ঢুকেই ব্লেজার আর ফোন বেডে চেলে দিয়ে ওয়াশরুম এ ঢুকে যাই। এইদিকে নিশান কে রুমে যেতে দেখে সিমি দ্রুত নিজের রুমে যাই। রেডি হতে, বলা তো যাই না যদি ওই বিদেশি কুত্তা এসে দেখে সিমি এখনো রেডি হয় নি তাহলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয়ে যাবে। ঘুরতে নিয়ে যাক আর না যাক রেডি হয়ে থাকা ভালো। সিমি ফ্রেশ হয়ে একটা মিষ্টি কালারের লং গ্রাউন্ পড়লো। চুলগুলো উঁচু করে বাঁধলো কিলিপ দিয়ে। উড়না টা মাথায় দিয়ে ভালো ভাবে গায়ে জড়িয়ে
নেই। মুখে পন্ডস ক্রিম আর ঠোঁট এ লিপবাম দিয়ে বেডে বসে পড়লো।
এইদিকে নিশান ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে আসলো গোসল করেই আসছে। সে একটা কালো ব্ল্যাক ডায়মন্ড প্যান্ট আর সাদা শার্ট পড়লো। ডেসিং টেবিলের কাছে গিয়ে চুলগুলো ঠিক থাক করলো। পরিপাটি হয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে সিমির রুমের দিকে যেতে যেতে হাতা ফোল্ট করে নিলো। নিশান সিমির রুমে ঢুকতেই দেখতে পাই সিমি রেডি হয়ে বসে আছে। মিষ্টি রং এর জামা সাথে মাথায় ঘোমটা দেয়াই সিমি কে দারুন দেখাচ্ছে নিশান কয়েক পল তাকিয়ে রইলো। সিমি তার দিকে তাকাতেই চোখ নামিয়ে নিলো। নিশান সিমির হাত ধরে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। ড্রইং রুমে সবাই বসে ছিলো এমনকি মিষ্টি ও। জিহান নিজের রুমে আছে। নিশান সিমি কে নিয়ে যাচ্ছে হাত ধরে সবাই দেখছে কিন্তূ কিছু বলছে না কি বলবে?
তারা স্বামী স্ত্রী যা পারে করুক। নিশান সিমি কে নিয়ে নিজের ব্ল্যাক মার্সিডিজের কাছে গেলো। সিমি কে ফ্রন্ট সিট্ এ বসিয়ে নিশান ড্রাইভিং সিট্ এ বসে রইলো। তাঁদের মধ্যে কোন কথা বার্তা হলো না। যে যার মতো চুপ করে আছে। নিশানের গাড়ি থামলো এক নির্জন জায়গায়। যেইখানে আশেপাশে কোন বাড়ি ঘর নেই, নেই কোন গাড়ি। আছে দুইপাশে ঘন জঙ্গল। সিমির ভয় লাগছে তাও চুপ করে আছে। নিশান গাড়ি থেকে নামলো সাথে সিমি কেউ নামালো। গাড়ির পিছনের ডিক্কি থেকে নিশান একটা কোদাল বাহির করলো। সিমি শুধু দেখছে কিন্তূ কিছু বলার যেন সাহস পাচ্ছে না। নিশান সিমির হাত ধরেই জঙ্গলের মধ্যেই ঢুকে গেলো। সিমির গা হাত পা যেন কেঁপে কেঁপে উঠছে। জঙ্গলের একটু ভিতরে ঢুকে নিশান থামলো। হাতে থাকা ফোন সিমির হাতে দিয়ে বললো,,
“ফোনের ফ্ল্যাশ অন কর।”
সিমি কাঁপা হাতে ফোন নিয়ে ফ্ল্যাশ অন করলো। নিশান কোদাল নিয়ে মাটি কাটতে লাগলো। সিমি এইবার নিজেকে শক্ত করে নিশানের দিকে তাকিয়ে বললো,,
“এইখানে এইভাবে মাটি কাটছেন কেন?”
নিশান জবাবে বললো,,
“মাটি কেটে কবর তৈরী করছি।”
নিশানের এই সামান্য কথা যেন সিমির মনে ভয়ের উথাল পাতাল অবস্থা। সে যেন কাঁপতে লাগলো মুখ দিয়ে আর কথা বাহির হচ্ছে না। প্রায় দশ মিনিটের মাথায় নিশান একটা কবর খুঁড়ে ফেললো। নিশান এইবার সিমির কাছে গেলো। সিমির কাঁপতে থাকা শরীর দেখে বললো,,
“কি হয়েছে জানবাচ্চা তুই কাঁপছিস কেন?”
সিমির মুখ দিয়ে কোন কথা বাহির হচ্ছে না।নিশানের মুখের রং পাল্টে গেলো। সিমি কে নিজের দিকে ফিরিয়ে বাহু জোরে চেপে ধরে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,,,,
“তোর সাহস দেখে আমি অবাক ইশু, নিজেই নিজের ঘরে সতীন ডাকিস। অ্যামেজিং ব্যাপার স্যাপার তাইনা।”
নিশানের কথাই সিমি কেঁপে উঠলো সে তুতলানো কণ্ঠে বললো,,,
“আ.. সো.. লে.. আমি.. ভু.. ল.. কো..!”
বাকি কথা শেষ করার আগেই নিশান সিমির হাত জোরে চেপে ধরে চিৎকার করে বললো,,,
“তোর ভুলের গুষ্টি মারি।”
বলে নিশান সিমি কে পাঁজা কোলে তুলে নিলো। নিয়ে নিশান সিমি কে কবরের কাছে এনে জোরে সেই কবরের মধ্যে ফেলে দিলো। এইভাবে জোরে ফেলাই সিমির কোমরে হাতে সব জায়গায় ব্যাথা লাগছে। সিমি ব্যাথায় মুখ কুঁচকিয়ে নিলো। নিশান এর মধ্যে কবরের পাশে যেইস মাটি আছে সিমির গায়ে দিতে লাগলো। সিমি দ্রুত চোখ খুললো। সামনে তাকাতেই নিশান কে এইভাবে মাটি দিতে দেখে সিমি চিৎকার দিয়ে কাকুতি মিনতি করে বললো,,,,
“নিশান ভাইয়া এইসব কি করছেন আমি মরে যাবো তো প্লিজ এমন করবেন না।”
নিশান সিমির গায়ে মাটি দিতে দিতে বললো,,
“রিলাক্স জানবাচ্চা মরবি না, যদি বারবার মরার কথা বলিস তো এর থেকে বেশি শাস্তি অপেক্ষা করবে তোর জন্য।”
কিন্তূ সিমি কি রিলাক্স থাকতে পারচ্ছে।সে চিৎকার করতেই আছে। নিশান সিমির পেট পযন্ত মাটি তুলে দিলো। তারপর সে নিজের প্যান্টের পকেট থেকে কচ টেপ বাহির করে। সেইটা সিমির দুই হাতে জড়িয়ে বেঁধে রাখলো। সিমি কান্না করছে জোরে চিৎকার করছে। নিশান আবারো মাটি দিতে লাগলো। এইভাবে সিমির গলা পযন্ত মাটি তুলে দিয়ে নিশান সিমির দিকে তাকিয়ে বাঁকা হেসে বললো,,
“জানবাচ্চা বড়োই ভুল করেছিস তুই, তুই জানিস আমি তোকে কতটা চাই। তারপর ও এইসব তাই সামান্য শাস্তি দিলাম মাইন্ড করিস না।”
বলে নিশান ওই জায়গা ছেড়ে দিলো। নিশান কে চলে যেতে দেখে সিমি আরো জোরে চিৎকার দিয়ে উঠলো,,,
“ও নিশান ভাইয়া আমাকে এইখানে একা রেখে যাবেন না প্লিজ। আমার ভয় করছে কি অন্ধকার আমি কিছু দেখতে পারছিনা। আমার ভয় লাগে আমাকে নিয়ে যান আপনার সাথে ও নিশান ভাই।”
সিমির কথা এই অন্ধকার জঙ্গলের মধ্যে যেন বারবার প্রতিধ্বনি হচ্ছে, তার শব্দ শুনে পাখিরা উড়ছে এইদিকে ওইদিকে শেয়াল ও ডাকছে কুকুরের ডাক। শুকনো পাতার মচমচ শব্দ। সবমিলিয়ে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। সিমির ভয়ে জান বেড়িয়ে আসছে। এইদিকে নিশান রাস্তার কাছে গাড়িতে হেলাম দিয়ে দাঁড়িয়ে সিমির দিকে তাকিয়ে আছে বাঁকা হেসে। সিমি কান্না করেই যাচ্ছে আর নিশান কে ডাকছে,,,
“নিশান ভাই ও নিশান ভাই আমার ভুল হয়ে গেছে, আমাকে এই জায়গা থেকে তোলেন ও নিশান ভাই। আমি এইবার সত্যিই মরে যাবো নিশান ভাইইইইইইইই।”
সিমির এইসব আর্তনাদ শুনে নিশানের কোন হেলদোল হচ্ছে না সে ঐভাবেই সিমির দিকে তাকিয়ে আছে। দেখতে দেখতে দশ মিনিট হয়ে গেলো। সিমির গলা শুকিয়ে গেছে চিৎকার করতে পারছেনা আর। ভয়ের মাত্রা বাড়ছে মাটির ভিতরে থাকা সারা শরীর অবাস হয়ে আছে। কোন পোকা মাকড় কামড়িয়ে দিয়েছে কিনা সে কিছুই বুজতে পারছেনা। চোখ দুটো যেন বুজে আসছে। গলা থেকে আওয়াজ বেরোনোর চেষ্টা করেও পারছেনা শুধু বেরোলো অল্প কথা,,,
“পানি পানি দাও আমাকে কেউ পানি দাও।”
ব্যাস তার কথা বন্ধ সেই জায়গায় অজ্ঞান হয়ে যাই সিমি। এইদিকে পুরোটা সময় নিশান সিমির দিকে তাকিয়ে ছিলো। সিমি অজ্ঞান হতেই নিশান নিজের ফোন সামনে এনে জিহানের নাম্বার এ কল দিলো দুই তিনবার রিং হতেই জিহান কল রিসিভ করলো। জিহান কে কিছু না বলতে দিয়েই নিশান বলে উঠলো,,,
“ইমিডিয়েটলি এই লোকেশন এ চলে আয়। হাতে সময় মাত্র পনেরো মিনিট আমি লোকেশন তোর ফোনের মেসেজ এ send করছি।”
বলে কল কেটে দিয়ে লোকেশন পাঠিয়ে দিলো। এইদিকে জিহান কিছু বুজতে পারলো না তাও সে এক মুহূর্ত দেরি না করে যেই অবস্থায় ছিলো ওই অবস্থায় বেড়িয়ে গেলো। পনেরো মিনিট পরে ওই লোকেশনে আসতেই দেখে নিশান গাড়িতে হেলাম দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। জিহান নিশানের কাছে গিয়ে বললো,,,
“বল কি জন্য ডাকছিস?”
নিশান সরল সোজা ভাবে জবাব দিলো,,,
“তোর বোনকে জ্যান্ত কবর দিয়েছিলাম, এখন অজ্ঞান হয়ে গেছে ওকে হাসপাতালে নিয়ে যা।”
নিশানের কথা শুনে জিহান অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো,,,
“নিশান তুই কি আদাও ভালো মানুষ? তুই একটা সাইকো তুই পাগল মাথা খারাপ হয়ে গেছে তোর।”
জিহানের কথাই নিশান চিৎকার দিয়ে বললো,,,
“হ্যা আমি পাগল, আমি সাইকো, আমি উন্মাদ তবে আমার এইসব উন্মাদনা শুধু তোর বোনের জন্য অনলি ইশু ও ব্যাতিত আর কোন কিছু তেই আমার পাগলামি নেই আমার উন্মাদনা নেই। এখন যা ওকে হাসপাতালে নিয়ে যা কুইক।”
বলে নিশান নিজের গাড়িতে উঠে বসতেই জিহান বললো,,,
“তুই কোথায় যাচ্ছিস?”
নিশান স্টেয়ারিং এ হাত দিয়ে বললো,,
“এক্সপ্লেইন করার মতো ইচ্ছে আমার নেই।”
বলেই নিশান গাড়ি চালিয়ে চলে গেলো। অনেক দূরে এই রাতের অন্ধকার এর সাথে তার গাড়িও মিলিয়ে গেল এই অন্ধকার এ।
জিহান ফোনের ফ্লাস অন করে দৌড়ে সিমিকে খুঁজে আর পেয়েও যাই। সিমির এই অবস্থা দেখে নিজেরই কেমন একটা লাগছে চোখে যেন পানি এসে ভীড় জমিয়ে ছে। আসলেই নিশান কতটা নিষ্ঠুর। জিহান দ্রুত সিমির গায়ের উপর থেকে মাটি সরিয়ে নিলো হাতে থাকা কচ টেপ ফেলে দিয়ে সিমি কে কোলে তুলে নিজের গাড়িতে বসালো। দ্রুত গাড়ি চালিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলো।হাসপাতালে এসে সিমি কে কোলে করে ডাক্তার এর কাছে নিয়ে গেলো। সিমির অবস্থা দেখে ডাক্তার এর গা পযন্ত কাঁটা দিয়ে উঠলো দ্রুত তাকে নিয়ে গিয়ে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করে দিলো। জিহান বাড়িতে খবর দিলো তবে এইসব জ্যান্ত কবর দিয়েছে এইসব কিছুই বললো না একটা বানানো মিথ্যা বানিয়ে বললো। বাড়ির সকলে হাসপাতালে আসলো।
“মায়া মায়া মহামায়ার ভেতর আমি কে?
আমি কে? আমি কে তোর?
মায়া মায়া মহামায়ার ভেতর আমি কে?
আমি কে? আমি কে তোর?”
নিশানের মুখে এমন গান শুনে পাশে থাকা তার বডিগার্ড রা যেন বিষম খাচ্ছে। আদাও কি এইটা বিশ্বাস করার কথা এই নিশান কিনা গান গাইছে। নিশান একটা বন্ধুক হাতে বাম হাতে ধরে আছে আর ডান হাতের শাহাদাত আঙ্গুল দিয়ে কপালে স্লাইড করতে করতে গান গেয়ে উঠলো। এর মধ্যে নিশানের ফোনে কল আসলো নিশান ফোন রিসিভ করলো ওই পাশ থেকে কি বললো সোনা গেলো না তবে নিশান বাঁকা হেসে বললো,,,
তুই শুধু আমার উন্মাদনা পর্ব ১৪
“আমার পিপাসা ওদের রক্ত দিয়েই মেটাবো। আমি আসছি একটাওযেন পালাতে না পারে ধরে রাখ আত্মীয়তা কর।”
বলেই কল কেটে দিলো কিছু সময় বসে রইলো। হুট্ করে দাঁড়ালো বেড়িযেক গেলো। সাথে তার দুটো বডিগার্ড ও গেলো। হয়তো কোন অজানা গন্তব্য পারি জমাচ্ছে।