তুই শুধু আমার উন্মাদনা পর্ব ৩০
তাবাস্সুম খাতুন
পার্টিতে অনেক বড়ো বড়ো বিজনেস ম্যান রা এসেছে। ওয়েলকাম জানাচ্ছে বাড়ির তিন কর্তা। সবার সাথে বিজনেস সম্পর্কে কথা ও বলছে। অপরদিকে নিশান আর জিহান একপাশে দাঁড়িয়ে ওয়াইন এর গ্লাসে চুমুক দিচ্ছে। চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। সেইসময় একজন লোক তার কাছে গেলো। পরনে নেভি ব্লু রঙের শুট। চুলগুলো জেল দিয়ে সুন্দর করে সেট আপ করা। মুখে কোন দাড়ি নেই। বাম হাতে দামি ঘড়ি। সে এসে নিশানের পাশে দাঁড়িয়ে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো,,
“মিস্টার চৌধুরী কেমন আছেন?”
নিশান ও হাত বাড়িয়ে হ্যান্ডশেক করে বললো,,,
“ভালো আছি আপনি কেমন আছেন মিস্টার খান?”
লোকটা হেসে বললো,,,
“মোটামুটি ভালোই, তো কি অবস্থা? বিজনেস সম্পর্কে কাকে দিবে ভাবলে?”
নিশান একটা ওয়াইন এর গ্লাস লোকটার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো,,,
“কত জনকেই তো দেখলাম, আপাতত সঠিক কাউকে দিতে চাই। যে কাউকে ইচ্ছে করে ধাক্কা মেরে চলে না যাই।”
লোকটা ওয়াইন এর গ্লাস হাতে নিলো। তাতে এক চুমুক দিলো। নিশানের দিকে ফিরে বললো,,,
“তো মিস্টার চৌধুরী আপনার মিসেস কোথায় দেখছি না তো?”
নিশান বাঁকা হেসে বললো,,,,
“তাকে যেইখানে থাকার কথা সে সেইখানেই আছে। আমি খুবই জেলাস আমার ওয়াইফ কে নিয়ে। তাই সবার সামনে প্রেজেন্টশন করি না।”
লোকটা হেসে বললো,,,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“জেলাস থাকা ভালো।”
নিশান — “ইনজয় করেন সবার সাথে।”
লোকটা আর কিছু না বলে চলে গেলো।
(লোকটার নাম হলো সারজিদ খান নীল। বয়স এই ২৫ তার বাবার ব্যবসা তে এখন নিজে বসেছে। সেই দশ বছর ধরে আমেরিকা ছিলো। কয়দিন আগেই বাংলাদেশে শিফট হয়েছে। আর এইখানে বিজনেস পার্টি জয়েন হতে এসেসছে।)
লোকটা যেতেই জিহান নিশান কে বলে উঠলো,,,
“এই লোকটা সুবিধার না। তোর কি মনে হয়?”
নিশান ওয়াইন এর গ্লাসে চুমুক দিয়ে বললো,,,
“সে তো দশ বছর আগে থেকেই সুবিধার ছিলো না।”
জিহান ভ্রু কুঁচকে বললো,,,
“মানে?”
নিশান ওই জায়গা ছেড়ে যেতে যেতে বললো,,,,
“মানের উত্তর তোর বউ এর কাছে গিয়ে শোন। কানের কাছে ফ্যান ফ্যান করিস না।”
বলে নিশান চলে গেলো। নিশানের পিছু পিছু জিহান ও গেলো। এইখানে অভি আর আয়ান ও আসছে তাদের ও নিজিস্ব বিজনেস আছে। অভি আর আয়ান নিশান আর জিহানের কাছে আসলো। আয়ান জিহান কে বললো,,,
“কিরে শুনলাম বিয়ে করছিস?”
জিহান — “তো করবো না আজীবন কি চিরকুমার থাকবো।”
আয়ান কাঁদো কাঁদো ফেস করে বললো,,,,
“তো আমাদের ও তো একটু করিয়ে দিতে পারিস?”
জিহান আগের মতোই বললো,,,
“মেয়ে দেখ আর করে ফেল বিয়ে করতে বারণ করছে কে?”
আয়ান হাসি মুখে বললো,,,
“মেয়ে তো পছন্দ আছেই শুধু তুই একটু সেটিং করিয়ে দিলেই হবে।”
জিহান ভ্রু কুঁচকে বললো,,,
“কোন মেয়ে?”
আয়ান হাত উঁচিয়ে ছাদের একদম কার্নিসে দাঁড়িয়ে থাকা কয়টা মেয়ের দিকে ইশারা করলো। জিহান তাকিয়ে দেখলো কয়েকটা মেয়ে আছে জিহান বললো,,,
“কোন মেয়েটা?”
আয়ান — “ঐযে কালো গাউন পরে দাঁড়িয়ে আছে যেই মেয়েটা। চুলগুলো কত সুন্দর করে ছেড়ে দিয়েছে। মুখে তেমন মেক আপ ও নেই। ওই মেয়েটার সাথে সেটিং করিয়ে দে ভাই তোর মামাতো বোন হয় তাই না। দে ভাই একটু।”
আয়ানের কথা শেষ হতে জিহান ওর দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বললো,,,
“কুত্তার বাচ্চা তুই আমার বউ এর সাথে সেটিং করতে চাস?”
আয়ান অবাক হয়ে বললো,,,
“ঐটা তোর বউ?”
জিহান দাঁতে দাঁত চেপে বললো,,,,
“তো কি আমার দাদি লাগছে?”
বলে নিশান কে বললো,,,,
“আগেরবার এর হাত ভেঙে ছিলিস,এইবার আমি কি করবো?”
নিশান স্বাভাবিক ভাবেই বললো,,,,
“বেশি কিছু না টুপ্ করে ছাদ থেকে ফেলে দে।”
আয়ান দুই হাত উঁচু করে বললো,,,
“মাফ চাই ভাই লাগবে না তোদের খাতির। আর জীবনেও আসবো না। বারবার এইভাবে অপমান সয্য হয় না।”
বলে অভি কে নিয়ে আয়ান সেই জায়গা ত্যাগ করলো। জিহান আর কিছু বললো না, সে সোজা সামিয়ার কাছে গেলো গিয়ে সামিয়ার হাত ধরে টানতে গেলে সামিয়া বলে উঠলো,,,
“সমস্যা কি টানছেন কেন এইভাবে?”
জিহান কোন কথার উত্তর না দিয়ে সামিয়া কে কোলে তুলে নিয়ে চলে গেলো সেই জায়গা ছেড়ে। সামিয়া জোরে জোরে পা হাত ছুড়াছুরি করতে লাগলো। কিন্তু কোন উপায়ে ছাড়া পাচ্ছে না। জিহান সামিয়া কে সোজা নিজের রুমে নিয়ে গেলো দরজা লক করে সামিয়া কে বেডে চেলে দিলো। সামিয়া মাজায় হাল্কা ব্যাথা পেলো। সে উঠতে নিলেই জিহান তার একদম কাছে আসলো। সামিয়ার কোমরের খাঁজে হাত দিয়ে সামিয়া কে নিজের কোলে বসিয়ে নিলো। সামিয়া ছাড়া পেতে চাচ্ছে কিন্তু পারছেনা। সামিয়া বললো,,,
“কি করছেন আপনি? সরে যান।”
জিহান দাঁতে দাঁত চেপে বললো,,,
“এত সেজে তোকে পার্টি তে যেতে কে বলেছে বল?”
সামিয়া — “আমি যাবো তাতে আপনার সমস্যা কি ছেড়ে দেন আমাকে।”
জিহান — “তোর সাজের বারোটা বাজিয়ে তারপর ছাড়বো।”
বলে জিহান নিজের শুষ্ক ঠোঁট দ্বারা সামিয়ার কোমল ঠোঁট দুটো নিজের দখলে করে নেই। সামিয়া ছাড়া পেতে চাই কিন্তু সে নড়তে পারছেনা। সামিয়ার দম বন্ধ হয়ে আসছে। এইদিকে জিহান সামিয়ার ঠোঁটে ইচ্ছে মতো জোরে জোরে কামড় দিচ্ছে। সামিয়ার ঠোঁট জ্বালা করছে রক্ত বাহির হয়েছে মনে হয়। টানা দশ মিনিট পরে জিহান সামিয়া কে ছেড়ে দিলো। সামিয়া কে বেডে ফেলে দিয়ে বললো,,,,
“তোকে যদি আমি আর পার্টি তে যেতে দেখেছি? I suer খুন করে ফেলবো তোকে। চুপচাপ ফ্রেশ হয়ে রুমে বসে থাক।আমাকে যতটা ভালো ভেবেছিলিস? আজ থেকে ততটা খারাপ আমার মধ্যে পেয়ে যাবি।”
বলে জিহান বেড়িয়ে গেলো যাওয়ার সময় দরজা টা জোরে বাড়ি দিয়ে চলে গেল। এইদিকে সামিয়া কান্না করছে তার কষ্ট হচ্ছে ঠোঁট দুটো জ্বলে ছাই হয়ে যাচ্ছে। সে কি করেছে যে তাকে এমন শাস্তি দিচ্ছে। তার বোন ও তো ঐখানে আছে তাকে তো কিছু বলছে না। সামিয়া নিজের একটা থ্রি পিস নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো।এর হিসাব সে সুদে আসলে তুলে নেবে।
সিমি সেই থেকে রুমে ফোন দেখতে দেখতে বোর হয়ে যাচ্ছে। তাই সিমি এইবার ফোন রেখে বেড থেকে নামলো জারাদের দিয়ে যাওয়া শপিং ব্যাগ টা হাতে নিলো। সেইটাতে কি আছে বাহির করলো। দুটো ড্রেস পেলো সে। একটা মিষ্টি কালারের গাউন। আরেকটা সাদা রং এর জামা মতো। সিমি ভ্রু কুঁচকে সাদা জামাটা তুললো। সে মেলিয়ে দেখলো এইটা জামা না শার্ট এর মতো। সে ফোনে দেখছে এইরকম ড্রেস। যেইটা শার্ট এর মতো হাঁটু পযন্ত আসে। এর সাথে আবার এডজাস্ট করা চিকন ফিতে থাকে হাতে।সিমি এই শার্ট টা হাতে নিয়ে উল্টিয়ে পাল্টিয়ে কিছুক্ষন দেখলো। পড়বে কিনা পড়বে না? এইগুলো ভাবতে লাগলো আপাতত নিশান এখন আসবে না তাই সে এইটা পড়ার চিন্তা ভাবনা করলো। সিমি শার্ট নিয়ে দ্রুত ওয়াশরুম এ ঢুকলো সেখানে গিয়ে এই শার্ট টা পরে নিলো। পরে সিমি বাহিরে আসলো আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখতে লাগলো। নিজেকে দেখে যেন নিজেই ক্রাশ খাচ্ছে। সিমি নিজের ফোন নিয়ে কিছু ছবি তুললো। এরপর সাউন্ড বক্স এ গান চালালো গানের লাইন,,,
“Aaj blue hain panni,,
Aur din bih sunny..
Aaa jaoo on the beach..
Yaar photo meri kheench..!”
এই গানের তালে তালে সিমি ধীরে ধীরে নাচতে লাগলো।
,
মিষ্টি দুই তলায় দাঁড়িয়ে আছে। হুট্ করে তার পাশে একটা ছেলে এসে দাঁড়ালো। ছেলে তাকে দেখে মিষ্টি বললো,,,
“কেউ দেখি নি তো তোমাকে?”
ছেলেটা — “না এখন দ্রুত ওই রুমে ঢুকতে হবে আমাকে, কোথায় রুম?”
মিষ্টি এইদিকে ওইদিকে তাকিয়ে দেখলো না কেউ নেই। ছেলেটার হাত ধরে নিশানের রুমের সামনে আনলো চারিদিকে আরো ভালো। করে দেখলো। আস্তে আস্তে নিশানের রুমের লক খুললো। লক খুলে ছেলেটা কে বললো,,,,
“আমি একটু পরে আসবো সবাইকে নিয়ে তার মধ্যে কাজ খাতাম করতে হবে ok।”
ছেলেটা মাথা নাড়লো মিষ্টি ছেলেটা কে ধাক্কা মেরে ঢুকিয়ে দিলো নিশানের রুমে। ঢুকিয়ে রুম লক করে আবারো আশেপাশে দেখে চলে গেলো পার্টি জয়েন হতে। এইদিকে রুমের ভিতরে সিমি এখনো নাচ করছে তার পরনে সেই সাদা শার্ট। ছেলেটা সিমি কে এই অবস্থা তে দেখে বাঁকা হাসলো সে ধীরে ধীরে সিমির কাছে এসে সিমি কে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো সিমি ছেলেটার হাত সরাতে সরাতে বললো,,,
“সরে যান আমার থেকে। আপনি পার্টি জয়েন করেন। আমি আমার মতো এইখানে পার্টি করবো সরে যান।”
বলে সিমি ছেলেটার হাত সরাতে সরাতে তার দিকে ফিরলো অচেনা কোন ছেলেকে দেখে সিমি চিৎকার দিয়ে উঠলো,,,,
“কে আপনি?”
ছেলেটা — “তোমার নাগর।”
সিমি নিজেকে এই ছেলের বাঁধন থেকে ছাড়াতে ছাড়াতে বললো,,,
“আমার কোন নাগর নেই সরে যান বলছি।”
ছেলেটা সিমিকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। সিমির গলায় মুখ দিয়ে বললো,,,
“আগে ছিলো না এখন হয়েছে উফফ তুমি সেই একটা মাল।”
সিমি ভাবছিলো এইটা নিশান তাই নিশান ভেবে ঐগুলো বলছিলো এখন অন্য কাউকে দেখে তার জান যেন হাতে চলে আসছে। ছেলেটা তাকে এইভাবে বাজে ভাবে টাচ করছে সিমি চিৎকার দিয়ে বললো,,,,
” ছেড়ে দিন প্লিজ আমাকে,আল্লাহর দোহাই লাগে আমাকে এইভাবে নোংরা করবেন না, আমি একজনের নিষ্পাপ ফুল। আমাকে নিষ্পাপ ফুল থেকে কলঙ্কিত করবেন না।”
কিন্তু ছেলেটা শুনছে না সিমি কে ধাক্কা মেরে বেডে ফেলে দেই। সিমির উপরে ঝাঁপিয়ে পড়লো সিমির মুখে গলায় চুমু দিচ্ছে। সিমি মাথা শুধু এইপাসে ঐপাশে করছে চোখ থেকে অঝোরে পানি পড়ছে। সে মনে মনে বললো,,,,
“নিশান ভাই আমাকে বাঁচান আপনার ইশু বিপদে আছে।”
সে ছেলেটা কে ধাক্কা দিচ্ছে কিন্তু সরাতে পারছেনা। তার শার্ট এর বোতাম খোলা শুরু করছে। সিমি এইবার সাহস যুগালো মনে যে করেই হোক তাকে বাঁচতে হবে। সিমি হাত বাড়ালো টি টেবিলের উপরে থাকা ল্যাম্প পোস্ট টা হাতে নিলো। শক্ত করে চেপে ধরে জোরে ছেলেটার মাথায় বাড়ি মারলো। ছেলেটা মাথায় হাত দিয়ে সরে গেলো। সিমি দ্রুত উঠে বসলো। সে নেমে দরজা খুলতে গেলো কিন্তু দরজা লক খুলতে পারচ্ছেনা। ছেলেটা মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে। সিমি দৌড়ে ওয়াশরুমের কাছে যেতে নিলেই ছেলেটা উঠে আসলো সিমি কে জোরে ধাক্কা মারলো সিমির মাথা দেওয়াল এ গিয়ে বাড়ি খেলো। ওর মাথা চক্কর দিয়ে উঠলো রক্ত গড়িয়ে পড়লো মাথা দিয়ে। সিমি তাও কোন মতে উঠে দাঁড়িয়ে ওয়াশরুমের দিকে যেতে নিলেই ছেলেটা তাকে ধরে ফেললো শক্ত করে ধরে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,,,,
“তোর তেজ খুব। তোর এই তেজ আজকে আমি মেটাবো।”
বলে সিমির জামার বোতাম খুলে দিলো। সিমির গলায় মুখ বসালো সিমি মনে মনে আল্লাহ কে বললো,,,,
“আল্লাহ শক্তি দাও আমাকে। আমি এই নরপশুর হাতে নিজেকে শপে দেবো না কোন মতেই।”
বলে সে চোখ বন্ধ করে নিলো। হুট্ করে ফ্লোরে বসে পড়লো। ছেলেটা কিছু বুজতে পারলো না সে একটু নিচু হয়ে তুলতে গেলেই সিমি ওর ডান পা উঁচু করে তুলে ছেলেটার মেইন পয়েন্ট এ জোরে একটা লাথি মারলো। সাথে সাথে ছেলেটা নিজের মেইন পয়েন্ট এ হাত দিয়ে সরে গেলো। ওর মনে হয় জীবন তাই বেড়িয়ে গেলো। সিমি দেওয়াল ধরে আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়ালো। শার্ট এর বোতাম গুলো লাগালো মাথা থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। কষ্ট হচ্ছে তার। সে দরজার কাছে গেলো দরজা ধাক্কা তে লাগলো চিৎকার করতে লাগলো,,,
“কেউ আছো? থাকলে খুলে দাও আমাকে।”
কিন্তু কেউ শুনলো না। সিমি দরজা থেকে একটু সরে দাঁড়ালো। ছেলেটা এখনো মেইন পয়েন্ট এর জায়গায় হাত দিয়ে আছে। সিমি খুব জোরেই লাথি মেরেছে।
এইদিকে মিষ্টি একটা মেয়েকে দিয়ে নিশানের কাছে বলে পাঠালো,,,
“ভাইয়া একটা বন্ধ রুমে একটা ভাইয়া দেখলাম ঢুকলো।সেইখানে একটা মেয়েও ছিলো। কে চেনে না তবে তাদের অন্তরঙ্গ হওয়ায় আওয়াজ শোনা যাচ্ছিলো।”
মেয়েটা গিয়ে মিষ্টির বলে দেওয়া কথা টা নিশান কে বললো।নিশান এইটা শুনে নিজের ফোন বাহির করলো ফোনের ভিতরে সবটুকু দেখে দ্রুত পথে দৌড়ে দুই তলায় নিজের রুমের সামনে আসলো। নিশানের পিছু পিছু জিহান, সাথে বাড়ির তিন কর্তা, তিন গিন্নি,মেহেরিমা, মিষ্টি, জারা আর রাত্রি সহ সার্ভেন্ট পার্টি তে আশা কিছু আসলো। নিশান নিজের রুমের সামনে আসলো।
এইদিকে রুমের ভিতরে ছেলেটা আবারো উঠে দাঁড়ালো সিমির কাছে আসলো সিমির আর বল নেই দেহে। সে এসে সিমি কে আবারো জড়িয়ে ধরলো সিমি সরাতে চাইলো কিন্তু পারছেনা। ছেলেটা আবারো সিমিকে বাজে ভাবে টাচ করতে লাগলো। সিমির আর শক্তি নেই তবুও সে ছাড়া পেতে চাইছে। ঠিক সেই সময় নিশান রুমের দরজা খুলে দিলো। ছেলেটা এখনো সিমি কে জড়িয়ে আছে নিশান ভিতরে ঢুকতেই ছেলেটা সিমি কে ছেড়ে দিলো। সিমি সামনে তাকিয়ে দেখলো নিশান দাঁড়িয়ে আছে সিমি দৌড়ে নিশানের কাছে গেলো নিশান কে জড়িয়ে ধরে বললো,,,,
“দেখেন না এই ছেলেটা আমাকে বাজে ভাবে টাচ করছে আমি বলেছি আমি আপনার আপনার এক নিষ্পাপ ফুল আমাকে কলঙ্কিত করবেন না তবুও আমাকে ছুঁয়েছে।”
নিশান সিমি কে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরলো। ছেলেটা বলে উঠলো,,,
“মিথ্যা কথা বলছো কেন তুমি? তুমি তো আমাকে ফোন দিয়ে বললে আজকে সন্ধ্যায় আমার স্বামী পার্টি তে থাকবে রুমে আমাকে একা রেখে যাবে তুমি চলে এসো। আর তুমি এখন মিথ্যা বলছো।”
সিমি মাথা উঁচিয়ে ছেলেটা কে বললো,,,
“একদম মিথ্যা বলবে না আমি আপনাকে চিনি না।”
ছেলেটা — “স্বামীর সামনে ভালো সাজছো? এইজন্য আমাকে চিনছো না। আমি কিন্তু সবাইকে সত্যি কথা বলে দেবো?”
সিমি — “কি সত্যি বলবেন আপনি? আমি আজকে প্রথম আপনাকে দেখলাম!”
ছেলেটা — “তোমার পেটে যে আমার দুই মাসের সন্তান একটু একটু করে বেড়ে উঠছে এইটাও কি অস্বীকার যাবে?”
সিমি নিশান কে জড়িয়ে ধরে বললো,,,
“মিথ্যা বলবেন না। আমার পেটে কোন বাচ্চা নেই।”
ছেলেটা কিছু বলবে সেলিনা বলে উঠলো,,,,
“মিথ্যা কেন বলছো সিমি? আমরা সবাই দেখলাম তুমি ছেলেটার সাথে কিভাবে জড়িয়ে ধরে ছিলে। তোমার পোশাকের ও কি অবস্থা। ওর সন্তান আছে তোমার পেটে নিজের সন্তান কেউ অস্বীকার করছো ছি তুমি তো মা নামে কলঙ্ক।”
সিমি সেলিনার দিকে তাকিয়ে বললো,,,
“বড়ো আম্মু তুমি বিশ্বাস কর আমি ওকে চিনি না।”
সেলিনা মুখ ঘুরিয়ে বললো,,,
“তোর ওই মুখে আমাকে ডাকবি না তুই আমাদের বাড়ির কলঙ্ক এখন অন্যের সন্তান এখন তুই আমার ছেলের ঘাড়ে দিবি। ছি তোর লজ্জা করলো না এমন কলঙ্ক ময় কাজ করতে তোকে দেখেও আমার ঘৃণা হচ্ছে। নিশান তুই এখনো এই কলঙ্কিত মেয়েকে এইভাবে নিজের বউ বলে দাবি করবি?”
সেলিনার কথা শেষ হতেই রোজিনা কান্না করতে করতে বললো,,,
“বড়ো আফা আমার ছোট মেয়েটা এমন না ও কলঙ্কিত না। আমার মেয়েকে এমন বলো না বড়ো আফা।”
সেলিনা — “যে পাপ কাজ করে বেড়াবে তো কাকে কি বলবো। ছি আমার ছেলেকে এখনো কিভাবে জড়িয়ে আছে। পোশাক তো আস্তাগফিরুল্লাহ ছি ছি ছি ঘরের মধ্যে নাগর দেখে এনে পেট বাঁধিয়েছে। থু।”
সেলিনার কথা শেষ হতে নিশান হুহংকার দিয়ে বললো,,,
“Stop আর কোন দ্বিতীয় বাক্য কারোর মুখ থেকে আমি শুনতে চাই না।”
বলে জিহান কে উদ্দেশ্য করে বললো,,,
“জিহান এই ছেলেটা আর ওই মিষ্টি সহ ওর খালা মনিকে নিয়ে আমার টর্চার সেলে যা আমি আসছি।”
জিহান দুইটা বডিগার্ড ডাকলো মিষ্টি আর ছেলেটা কে ধরলো মিষ্টি আর ছেলেটা বলতে লাগলো আমরা কি করলাম আমাকে ধরছেন কেন? সেলিনা ওদের বাঁচাতে গেলে জিহান তাকে ধরলো সেলিনা জিহান কে বললো,,,
“আমাকে ধরলি কেন তুই?”
জিহান সেলিনা কে নিয়ে যেতে যেতে বললো,,,
“সেইটা নিশান বলবে।”
বলে ওদের তিনজনকে টানতে টানতে নিয়ে চলে গেলো। নিশান বলে উঠলো,,,
“রুম থেকে বেড়িয়ে যাও সবাই ফার্স্ট।”
কেউ আর রুমে দাঁড়ালো না সবাই চলে গেলো।তাজউদ্দিন আর জামালউদ্দিন মিলে পার্টি তে থাকা প্রতিটা মানুষকে চলে যেতে বললো। ক্ষমা চাইলো আজকে পার্টি হবে না এইজন্য। সালাউদ্দিন কিয়া এরা মিলে রোজিনা কে সামলাচ্ছে।
সবাই চলে যেতেই নিশান গিয়ে রুমের দরজা লক করলো। সিমি কান্না করতে করতে নিশান কে বললো,,,
“বিশ্বাস করুন আমি ওকে চিনি না। আমার পেটে কারোর অবৈধ সন্তান নেই। আমাকে একমাত্র হালাল ভাবে আপনিই ছুঁয়েছেন হারাম ভাবেও কাউকে ছুঁতে দেই নি আমি।”
বলতে বলতে সিমি ঢলে পরে গেলো। তার মাথা থেকে অতিরিক্ত ব্লাডিং হয়েছে আর কান্নার ফলে সেন্সলেন্স হয়ে গেছে। নিশান গিয়ে সিমি কে পাঁজা কোলে তুলে বেডে শুয়ে দিলো। ফার্স্ট এইড বক্স এনে সিমির মাথা থেকে রক্ত পরিষ্কার করে ব্যান্ডেজ করে দিলো। সিমির গায়ে ব্লাঙ্কেট টেনে দিয়ে সিমির বাম হাত শক্ত করে চেপে ধরে বললো,,,
“I am sorry ইশু। আমি তোকে সেভ করতে পারি নি। তবে কথা দিচ্ছি তোর এই অবস্থা যে যে করেছে তাকে আমি ছেড়ে দেবো না। তোর কষ্টের প্রতিটা ফোঁটা যন্ত্রনা তাঁদের অনুভব করাবো আমি। আমার কলিজা নিয়ে খেলতে আশার পরিণতি কি হতে পারে এর হিসাব তারা দেবে। মেরে ফেলবো জানে। ”
বলে থামলো। সিমির কপালে গভীর চুম্বন দিলো নরম কণ্ঠে বললো,,,
“আমি জানি আমার ইশু নিষ্পাপ। তোকে বারবার বলতে হবে না তুই নির্দোষ আমি জানি তুই শুধু আমার অস্তিতে মিশে আছিস বন্ধী আছিস আজীবন থাকবি। কেউ তোকে আমার থেকে কেড়ে নেবে না। তোর পেটে আমার সন্তান বড়ো হবে কোন জারজ সন্তান না। আমার জন্য তুই নিজেকে যতটুকু সেভ করেছিস এইটা আমার কাছে অনেক ইশু। আমি তোকে প্রমিস করছি আমি ওদের একটা কেউ ছাড়বো না।”
বলে সিমির মাথায় হাত বুলিয়ে নিশান বেড়িয়ে গেলো রুম থেকে। যাওয়ার সময় রোজিনা কে বলে উঠলো,,,
“ইশু এখন সেন্সলেন্স হয়ে গেছে ওর দিকে একটু খেয়াল রেখো। আমার বাড়ি ফিরতে অনেক রাত হবে।”
রোজিনা বলে উঠলো,,,
তুই শুধু আমার উন্মাদনা পর্ব ২৯
“বাবা আর যাই কর উনি কিন্তু তোমার জন্মধারিণী মা। তোমাকে দশ মাস দশদিন পেটে রেখে দুই বছর বুকের দুধ খাইয়েছে। তোমাকে এত বড়ো করিয়ে ছে কত স্নেহ দিয়ে। হয়তো একটু ভুল বুজেছে। তুমি তাকে বেশি কষ্ট দিতে যেও না। তাকে বুঝাবে সে বুজবে।”
নিশান কিছু বললো না বাড়ি থেকে বেড়িয়ে নিজ গন্তব্যের দিকে পারি জমালো। রোজিনা সোজা নিশানের রুমে গেলো নিশানের রুমে ঢুকে সিমির কাছে গিয়ে চুপচাপ বসে রইলো। তার ছোট মেয়েটা এইটুকু বয়সে কত কি সয্য করলো। এইসব ভেবেই কান্না আসছে।