তুই শুধু আমার উন্মাদনা পর্ব ৫
তাবাস্সুম খাতুন
“বস তোরা আমি বলছি সবকিছু….
**ফ্ল্যাশব্যাক..
চোখের সামনে কাউকে এইভাবে মৃত্যু যন্ত্রনায় ছটফট করতে দেখে সিমির সেন্স কাজ করছিল না। সামিয়া, জারা, রাত্রি এত ডাকছে কিন্তূ তার কানে কোন শব্দ যাচ্ছে না। হুট্ করে গুলির শব্দ হলো জোরে। সামিয়া, জারা আর রাত্রি মাথা নিচু করে কানে হাত দিয়ে রাখলো। এইদিকে সিমি এখনো ঐভাবে দাঁড়িয়ে তখনি কারোর হাত তার বাহু ধরে টান দিয়ে জড়িয়ে ধরলাম, সিমি চোখ খিচে বন্ধ করে নিলো।
জড়িয়ে ধরা ব্যাক্তিটা হলো নিশান। সে সিমি কে আগলিয়ে নিতে গুলি তার ডান হাতের বাহু ঘেঁষে চলে গেলো। যার দরুন নিশানের হাতে আঘাত লাগে রক্ত বেরিয়ে যাই। নিশান সিমি কে পাঁজা কোলে তুলে মুহূর্তে সি জায়গা ত্যাগ করে। নিশান সিমি কে গাড়িতে বসালো। নিজের বুকের মাঝে চেপে রাখলো। জিহান গাড়ি চালাচ্ছে। এইদিকে সিমি নিশানের বুকে অজ্ঞান অবস্থায় পরে আছে। জিহান গাড়ি হাসপাতালের দিকে নিয়ে গেলো। হাসপাতালে গিয়ে আগে সিমির চেক আপ করালো। সিমি কে ভালো ভাবে চেক আপ করে ডাক্তার বললো,,
“অপ্রত্যাশিত কিছু দেখেছে তাই অতি শকড এ জ্ঞান হারিয়েছে, তবে আমরা একটা ইনজেকশন দিচ্ছি যাতে দ্রুত জ্ঞান ফিরবে।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
বলে ডাক্তার একটা নার্স কে ইনজেকশন আনতে পাঠালো। নার্স ইনজেকশন টা আনলো। ডাক্তার ইনজেকশন হাতে নিয়ে ওষুধ ঢোকাতে নিশান চিৎকার দিয়ে বললো,,
“ইডিয়েট এইটা কি? এইটা তুই ইশুর শরীরে দিবি?”
ডাক্তার নিশানের কথাই থতমত খেয়ে গেলো বলল,,
“এইটা তো ইনজেকশন, এখন রুগীর এইটা প্রয়োজন খুব তা…!”
বাকি কথা শেষ করার আগেই কাইরান বললো,,
“ইনজেকশন সেইটা আমিও খুব ভালো ভাবেই জানি, কিন্তূ এত বড়ো ইনজেকশন এনেছিস কেন? সেইটার আনসার চাচ্ছি আমি?”
ডাক্তার নিশান কে শান্ত করতে বললো,,
“বাবা দেখো রুগীর তেমন কোন ক্ষতি হবে না, জাস্ট হাল্কা ব্যাথা লাগবে পরে ঠিক হয়ে যাবে। আমার উপরে বিশ্বাস রাখতে পারো।”
ডাক্তারের কথা শুনে নিশান স্বাভাবিক ভাবে বললো,,
“জি আঙ্কেল এই ইনজেকশন টা আপনার পাছায় দেই আমি, আমার উপরে বিশ্বাস আনুন কিচ্ছু হবে না।”
নিশান এর এমন কথা শুনে ডাক্তার কিছু বলবে তখন জিহান বললো,,
“নিশান এমন করিস কেন? ইনজেকশন টা নিতে দে, নয়তো সিমি কিন্তূ সুস্থ হবে না।”
নিশান রাগী চোখে জিহানের দিকে তো একবার ডাক্তার এর দিকে তাকালো। তারপর সে সিমির পাশে বসে সিমির এক হাত ধরলো। জিহান ডাক্তার কে ইশারা করলো সিমি কে ইনজেকশন দিতে। ডাক্তার সিমির হাত ধরতেই নিশান দাঁতে দাঁত চেপে বললো,,
“গুরুজন বলে এখনো সন্মান করে যাচ্ছি, নয়তো মেরে ফেলতাম, সাহস কি করে হলো আমার ইশু কে টাচ করার? মহিলা ডাক্তার নেই? তাড়াতাড়ি মহিলা ডাক্তার আন কুইক।”
ডাক্তার জিহানের দিকে তাকাতে জিহান চোখের ইশারায় বুজিয়ে দিলো নিশান যা বলে সেইটা করতে। ডাক্তার বাহিরে গিয়ে একটা মহিলা ডাক্তার কে ডেকে দিলো। মহিলা ডাক্তার টা এসে সিমি কে ইনজেকশন দিলো। নিশান যেন জোরে জোরে নিঃশাস নিচ্ছিলো যেন ইনজেকশন টা তাকে দেওয়া হয়েছে। জিহান এসে নিশানের ঘাড়ে হাত রেখে বললো,,
“নে তোর ইশু ঠিক আছে কিছু হয় নি? কিন্তূ তুই যা করছিস আমার মনে হয় তোকেও ভর্তি করতে হবে হাসপাতালে। যাই হোক তোর হাত থেকে রক্ত পড়ছে ডেসিং করতে হবে।”
নিশান কোন উত্তর দিলো না চুপচাপ সিমির হাত ধরে তার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো। জিহান বাহিরে গেলো একটা নার্স কে নিয়ে আসলো। নিশানের হাত ডেসিং করার জন্য। জিহান নিশান কে বললো জামা খুলতে। নিশান বিনা বাক্য ব্যায় করে জামা খুলে ফেললো। অল্প বয়স্ক নার্স টা নিশানের বডির দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে রইলো। যেইটা নিশানের চোখে পড়লো তাই সে শান্ত কণ্ঠে বললো,,
“চোখের ইজ্জত ঠিক করেন? সম্পদ অন্যের কেনা, তাকিয়ে লাভ নেই বরং লস হবে, চোখের ইজ্জত তা হারাতে পারেন।”
নার্স তা দ্রুত চোখ নামিয়ে নিয়ে নিশানের ডান হাতের বাহু সুন্দর করে ডেসিং করে ব্যান্ডেজ করে দিয়ে চলে গেলো। নার্স চলে যেতেই জিহান উচ্চসরে হেসে উঠলো। নিশান কে বললো,,
“চোখের ইজ্জত!প্রথম বাক্য যেইটা শুনলাম তোর মুখ থেকে?”
নিশান — “না হেসে বিল পেমেন্ট করে গাড়িতে চল, আমি ইশু কে কোলে নিয়ে যাচ্ছি।”
জিহান আর কিছু না বলে বিল পেমেন্ট করতে চলে গেলো। নিশান জামা পরে সিমি কে কোলে তুলে বেড়িয়ে গেলো কেবিন থেকে। সোজা গাড়ির ব্যাক সিট্ এ গিয়ে উঠলো। সিমি এখনো নিশানের বুকে মাথা রেখে আছে এখনো তার জ্ঞান ফেরে নি। নিশান এসে বসার কয়েক মিনিট পরে জিহান ও আসলো। জিহান নিশানের দিকে তাকিয়ে বললো,,
“বাড়িতে যাবো?”
নিশান — “no আমার বাংলো তে নিয়ে চল গাড়ি।”
জিহান কিছু না বলে সিমি কে নিয়ে নিশানের বাংলো তে গেলো। যেইটা এই শহরের শেষ প্রান্তে অবস্থিত। প্রায় ঘন্টা খানেক লাগে। জিহান গাড়ি নিশানের বাংলোর সামনে রাখতে নিশান সিমি কে কোলে নিয়ে বেড়িয়ে আসলো গাড়ি থেকে। তারপর বাংলোর ভিতরে ঢুকলো। জিহান ও আসলো। নিশান সিমি কে ড্রয়িং রুমের সোফায় শুয়ে দিলো, আর তার পাশে বসলো জিহান ও এসে বসলো। জিহান বলে উঠলো,,
“ভার্সিটি তে ওরা কারা ছিলো নিশান কিছু জানিস?”
নিশান গম্ভীর কণ্ঠে বললো,,
“আমার শত্রু পক্ষের লোক, ইশু কে আঘাত করতে চেয়েছে, কারণ আমার দুর্বলতা ইশু। আমাকে কাবু করতে ইশু কে টার্গেট করেছে তারা। তবে এর ফল ভালো হবে না।”
জিহান অবাক হয়ে বললো,,,
“কি ওই টাকলু ইদ্রিস মির্জা?”
নিশান মাথা নাড়লো জিহান বললো,,
“ওই শালার তাক ফাটাবো!শালা কিভাবে জানলো যে ইশু তোর দুর্বলতা।”
নিশান সিমির দিকে এক পলক তাকালো তারপর বললো,,
“May be..স্পা লাগিয়েছিল আমার পিছু!তবে আমি থাকতে আমার ইশু কেন আমার বাল তাও ছিড়তে পারবে না ওই ইদ্রিস। এর কাহিনী আমি রাতে দেখবো just wait…!”
জিহান আর কিছু বললো না, এর মধ্যে সিমির জ্ঞান ফিরলো।সিমি চোখ মেলে সামনে তাকিয়ে দেখলো জিহান বসে আছে। সিমি উঠে বসলো মাথা কেমন ভার হয়ে আছে। সিমি জিহান কে বললো,,
“জিহান ভাইয়া, আপনি এইখানে?আর আমি বা এইটা কোথায়?”
জিহান — “তুমি নিশানের বাংলো তে আছো।”
সিমি আশেপাশে তাকালো। কিন্তূ নিজের পাশে বসে থাকা নিশানের দিকে এখনো তাকাই নি।সিমি আবারো বললো,,
“আমার কি হয়েছে?”
জিহান — “সেন্সলেন্স হয়ে পড়েছিলে।”
সিমির কিছু বলার আগেই নিশান উঠে দাঁড়ালো বাড়ির বাইরে যেতে যেতে বললো,,
“জিহান তোর বোন কে নিয়ে দ্রুত আয়, আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে।”
কোন পুরুষের কণ্ঠ শুনে সিমি তাকিয়ে দেখলো নিশান চলে যাচ্ছে। সিমি জিহানের দিকে তাকিয়ে বললো,,
“নিশান ভাই কোথা থেকে উদয় হলো?”
জিহান ও উঠে দাঁড়ালো বললো,,
“তোমার পাশে বসে ছিলো সেই থেকেই তখন থেকেই উদয় হয়েছে, আসো আমার সাথে।”
বলে জিহান হাঁটা ধরলো সিমি ও গেলো জিহানের সাথে। সিমি যেতে যেতে জিহান কে জিজ্ঞাসা করলো কি হয়েছিল তার? জিহান কিছু কিছু কথা বললো এই যে সিমি কে বাঁচাতে গিয়ে নিশানের গুলি লেগেছিল। আর সিমি কে ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিল সে অজ্ঞান হয়ে গেছিল। সিমি সবকিছু শুনে কষ্ট লাগলো। তাকে বাঁচাতে গিয়ে নিশান ভাই আঘাত পেয়েছে এইটা শুনে কষ্ট লাগলো। তারপর তারা গাড়িতে উঠে বসলো নিশান ড্রাইভিং সিট্ এ জিহান ফ্রন্ট সিট্ এ আর সিমি ব্যাক সিট্। গাড়ির ভিতরে আর কোন কথা হলো না। নিশান সোজা গাড়ি চৌধুরী ম্যানশন এ নিয়ে আসলো।
**বর্তমান..
সিমির কথা শুনে সামিয়া বললো,,
“এ কিয়া বাত হে? ন্যাসপাতি ভাই এতদিন আমাগো রোজিনার বাচ্চা সিমি কে স্বপ্নে মারছে, ভয় দেখায় সে আর বাস্তবে বাঁচাতে গিয়ে গুলি খাইসে..এরে কি বলতে হবে? ভিলেন /নায়ক?”
সামিয়ার কথা শুনে রাত্রি বললো,,
“ভিলেন হইবো, রাতে ভয় দেখানো ভিলেনের কাজ, দিনে আগলিয়ে রাখাও ভিলেনের কাজ। উফফফ কিয়া বাত হে।”
জারা মুচকি হেসে বললো,,
“বলতেই হয় আমার ন্যাসপাতি ভাইয়ার ভিলেন গিরি সেই সেই।”
এদের তিনজনের কথা শুনে সিমি চোখ ছোট ছোট করে বললো,,
“ভিলেন হ্যা এইটাই মানাই ওই বিদেশি কুত্তার সাথে। But এত প্রশংসা করিস কেন?”
জারা চ্যাত করে উঠে বললো,,
“শালী তুই আমার ভাই রে কি বললি?”
সিমি — “কি বললাম?”
জারা — “আমার ভাই বিদেশি কুত্তা?”
সিমি ভাব নিয়ে বললো,,
“অবশ্যই বিদেশি কুত্তা ওরফে ন্যাসপাতি ভাই, কারণ এই বিদেশি কুত্তা কত বছর বিদেশে ছিলো তাই এই বিশেষ অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত উপাধি আমার পক্ষ থেকে।”
সিমির কথা শুনে সামিয়া আর রাত্রি হাসলো জারা সিমির পিঠে হাল্কা চাপর মারলো বললো,,
“তোর অ্যাওয়ার্ড তুই নে শালী।”
সিমি — “দেখ আমাদের ফ্রেন্ড এমন শক্ত যে আমরা বোন হয় এইটা মানি না, তাই তোর ভাই কে আমরা চিনি না কোন ভাই নিয়ে পীড়িত চলবে না।”
সিমির কথাই সামিয়া, জারা আর রাত্রি সহমত করলো। সিমি এইবার দুঃখী দুঃখী ভাব নিয়ে বললো,,
“ন্যাসপাতি ভাই এর হাতে গুলি লাগছে দেখতে যেতে হবে একবার।”
সিমির কথা শেষ হতে জারা চোখ ছোট ছোট করে বললো,,
“এইযে বললি চিনিস না? তো দরদ আসছে কোথা থেকে?”
সিমি — “আসমান থেকে টপকে।”
রাত্রি — “গায়েস থাম তোরা বাল, ঝগড়া অফ কর। ”
সামিয়া রাত্রির সাথে মিলে বললো,,
“হ্যা হ্যা রাতের নেশা ঠিকই বলেছে বাদ দে এই টপিক।”
সিমি আর জারা ও একমত হলো। তারপর তারা টুকটাক বিষয় নিয়ে কথা বলতে লাগলো।
রাত এগারোটা পঞ্চাশ বাজে। চৌধুরী বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে আছে। বলতে যে যার রুমে। জারা আর রাত্রি নিজেদের রুমে গেলো এই আধা ঘন্টা আগে। সামিয়া ও ঘুমিয়ে পড়েছে। কিন্তূ সিমি এখনো ঘুমাই নি। সে চুপচাপ শুয়ে ছিলো সামিয়ার ঘুমানোর অপেক্ষায়। সামিয়া ঘুমিয়ে যেতেই সিমি আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়ালো। বালিশের কাছে থাকা ফোন তা নিলো। তারপর আস্তে আস্তে পা টিপে টিপে রুম থেকে কোন শব্দ বিনা বেড়িয়ে গেলো। সিমি রুমের বাইরে বেড়িয়ে দরজা লাগিয়ে বুকে হাত দিয়ে জোরে জোরে দুই তিনবার নিশ্বাস নিলো। গায়ে থাকা উড়না দিয়ে কপালের ঘাম মুছে নিলো। ফোনের ফ্ল্যাশ অন করলো। ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলো সামনের দিকে।
পরপর দুইটা রুম পাড় করে একটা রুমের দরজার সামনে দাঁড়ালো সিমি। ফ্ল্যাশ এইদিকে ঐদিকে ঘুরিয়ে দেখে নিলো কেউ আছে কিনা না নেই। সিমি উড়নার মুড়োই বেঁধে রাখা এক চাবি দিয়ে দরজা লক খুললো।দরজা খুলতে সিমি আস্তে আস্তে রুমের ভিতরে ঢুকে দরজা লক করে দিলো। আস্তে আস্তে সামনে ফিরে ফ্লাশ অন করে চারপাশে দেখলো রুম তাতে। বেডে দেখা মিললো কাউকে। ফ্ল্যাশ মারা তাই দেখা গেলো ছেলেটার কোমর পযন্ত ব্লাঙ্কেট দেওয়া। খালি গায়ে। উবর হয়ে শুয়ে আছে ফর্সা পীঠ উন্মুক্ত। বাম হাত মাথার কাছে তোলা ডান হাত মুখে রাখা। সিমি এগিয়ে গেলো। ফোনের ফ্ল্যাশ মারলো ছেলেটার মুখের দিকে কি নিষ্পাপ দেখাচ্ছে, সিমি মনে মনে বললো,,
“শালা বিদেশি কুত্তা ওরফে ন্যাসপাতি ভাই আমার স্বপ্নে প্রতিদিন আসে কি ভয়ঙ্কর রূপে,আমার ঘুম হারাম করতে আর এইদিকে উনি নিশ্চিন্তে কি শান্তিতে ঘুমাচ্ছে কি নিষ্পাপ লাগছে এনাকোন্ডা।”
সিমির মনে মনে বলার মধ্যে নিশান একটু নড়লো সিমি দ্রুত ফ্ল্যাশ অফ করলো। কিছু ক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলো চুপ করে নিশান জেগে যাই কিনা সেইজন্য। কোন শব্দ আসছে না তাই সিমি ফোনের ফ্ল্যাশ অন করলো। নিশানের মুখের দিকে মারলো না এখনো ঘুমিয়ে আছে। সিমি আস্তে আস্তে পা টিপে টিপে নিশানের কাছে গেলো। সে মূলত নিশানের হাত দেখতে এসেছে, সবাই সজাগ থাকলে আসতে পারতো, but আসলেও এই ন্যাসপাতি ভাই কে কি বলতো? যদি ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দিতো তখন? তাই এখন আসছে নিশান ঘুমালে। সিমি নিশানের কাছে এসে ফ্ল্যাশ অফ করে ফোন অন করলো যেইটুকু আলো দেখা যাই।
সে নিশানের ডান হাতের বাহু দেখতে লাগলো। ব্যান্ডেজ করা। সিমি অনেক তা নিচু হয়ে নিশানের হাত দেখছে ভালো ভাবে দেখে নিশানের জন্য সিমির অনেক কষ্ট হলো। আহারে বেচারা তা তাকে বাঁচাতে গিয়ে আঘাত প্রাপ্ত। সিমি য্খন নিজের মধ্যে দুঃখ প্রকাশ করছিলো ঠিক সেই সময় নিশান সিমির বাহু টেনে বেডে ফেললো। আর নিজে সিমিকে দুই হাত দিয়ে আটকিয়ে নিলো যেন সিমি বেড়িয়ে যেতে না পারে। সিমির হাত থেকে অনেক আগেই তার ফোন পরে গেছে। এইভাবে তাকে বেডে ফেলে আটকে রাখাই সিমির নিশ্বাস যেন বন্ধ হয়ে গেলো। বুকের ভিতরে জোরে জোরে বিট করতে লাগলো। ভয় লজ্জা সব একসাথে কাজ করছে। নিশান সিমির আর একটু কাছে আসলো নিশানের গরম নিশ্বাস সিমির মুখে উপচে পড়ছে। সিমির সারা দেহ কেঁপে উঠলো চোখ বন্ধ করে নিলো। নিশান স্লো ভয়েসে বললো,,
“মাঝ রাতে আমার রুমে চুপিচুপি আসার কারণ?”
সিমি ভয়ে কথা বলতে পারছেনা এমন কি নিশ্বাস তাও নিচ্ছে নাহ। নিশান স্বাভাবিক ভাবে বললো,,
“নিশ্বাস নে,”
সিমি এখনো একই ভাবে আছে নিশান এইবার একটু ধমক দিয়ে বললো,,
“কথা কানে যাই না, নিশ্বাস নে।”
সিমি এইবার জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে লাগলো। তার কান্না লাগছে। নিশান আবারো বললো,,
“কি হলো? আমি কিছু জিজ্ঞাসা করেছি আমার রুমে এত রাতে কি করিস তুই?”
সিমি অতিরিক্ত ভয়ে সত্যি সত্যি কান্না করে দিলো কান্না মাখা কণ্ঠে বললো,,
“বিশ্বাস করুন নিশান ভাইয়া আমি ইচ্ছা করে আসি নি তো আমার পা এসেছে আপনার হাত দেখার জন্য।”
সিমির কথার উত্তর না দিয়ে উল্টে নিশান প্রশ্ন করলো,,
“আমি তোর কোন জন্মের ভাই লাগি?”
সিমি না বুজে বললো,,
“এই জন্মের।”
নিশানের রাগ হচ্ছে এইবার। সে সিমির উপর থেকে উঠে গেলো। সিমি উঠে বসলো কান্না করছে এখনো। নিশান জোরে চিৎকার দিয়ে বললো,,
“বেড়িয়ে যা আমার রুম থেকে।”
সিমি ঐভাবে বসে আছে এখনো। নিশানের রাগ যেন আকাশ ছুঁতে যাচ্ছে সিমির হাত ধরে নিচে নামিয়ে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে এক হাত দিয়ে দরজা খুলে সিমি কে বাইরে বার করে দিয়ে বললো,,
“দ্বিতীয় বার যেন আমার রুমের ভিতরে কেন আশেপাশে ও যেন তোকে না দেখি।”
বলেই নিশান সিমির মুখের উপরে জোরে দরজা লাগিয়ে দিলো। সিমি কেঁপে উঠলো। সে ঐখানে আর দাঁড়িয়ে থাকলো না কান্না করতে করতে দৌড়ে নিজের রুমে আসলো। এসে ভিতরে ঢুকে বেডে শুয়ে পড়লো। বালিশে মুখ গুঁজে কান্না করতে লাগলো। সে কি এমন বললো যে তাকে এইভাবে বার করে দিয়ে মুখের উপরে দরজা লাগালো। হুউউউ এইজন্য মানুষের উপরে দয়া দেখাতে নেই। ছি সিমি তুই রাস্তার কুকুর কে দয়া দেখাবি। তবে আর কোনোদিন যেন ওই বিদেশি কুত্তা ওরফে ন্যাসপাতি ভাই কে দয়া দেখাবি না। কথা গুলো সিমি কান্না করতে করতে নিজের মনে বললো। এইভাবে কিছু সময়ের মধ্যে সিমি কান্না করতে করতেই ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেলো।
ওপরদিকে নিশান বেলকুনিতে চলে গেলো। সিগারেট ধরালো। সিগারেট টান দিতে লাগলো। রাগ হচ্ছে খুব। ইশু তাকে ভাই বললো তাকে ভাই বলার রাইট আমি দেই নি। ডিসগাস্টিং। নিশান য্খন রাগে সিগারেট টান দিচ্ছিলো তখনি তার ফোনে কল আসলো। নিশান কল রিসিভ করলো। ওইপাস থেকে কি শোনা গেলো জানা নেই তবে নিশান বাঁকা হাসি দিয়ে বললো,,
তুই শুধু আমার উন্মাদনা পর্ব ৪
“Good আমি আসছি অপেক্ষা কর।”
বলে কল কেটে দিলো। রুমের ভিতরে ঢুকে নিশান তার বাইকের চাবি তা নিলো। আর যেইভাবে ছিলো ঠিক সেইভাবেই বেড়িয়ে গেলো। বাড়ি থেকে। বাইকে উঠে অজানা গন্তব্য পাড়ি জমালো।