তুই শুধু আমার উন্মাদনা পর্ব ৩৭
তাবাস্সুম খাতুন
সূর্যের প্রখর তাপ ধীরে ধীরে নরম হয়ে আসলো। ব্যাস্ত শহরের মানুষগুলো যেন এই তেজি সূর্য থেকে একটু রেহাই পেলো। চারিদিকের মসজিদে আসরের আজান শোনা যাচ্ছে মুরুব্বিra মসজিদে নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্য যাচ্ছে নিজেদের দোকান পার্ট বন্ধ রেখে।চৌধুরী বাড়ির তিন কর্তা সহ তাঁদের বোন জামাই কে সাথে নিয়ে একত্রে নামাজের উদ্দেশ্য বের হলো। বাড়ি থেকে পাঁচ মিনিট হেঁটে যেতেই দেখা হলো সিমি, জারা আর রাত্রির সাথে। তাজউদ্দিন ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করলো,,,
“বলেছিলে দেরি হবে? তাই বলে এত দেরি!”
জারা শুষ্ক ঠোঁট জোড়া জিভ দিয়ে ভিজিয়ে বললো,,,
“আসলে কালকে ভার্সিটিতে অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। দায়িত্ব পড়েছে আমার, সিমি, জারা, সামিয়া আর তন্নীর। সাথে সিনিয়র আপু ভাইয়ারা আছে।”
তাজউদ্দিন একই ভাবে বললো,,
“হ্যা তো কি হয়েছে?”
সিমি — “বড়ো আব্বু আমাদের উপরে দায়িত্ব সেইজন্য সেগুলো কমপ্লিট করতে এত বেলা, কালকেও ভোরে যেতে হবে এখনো অনেক কাজ বোকো না প্লিজ।”
তাজউদ্দিন একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে তিনজনের মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,,
“খেয়েছো তোমরা দুপুরে?”
তিনজনেই মাথা নাড়লো মানে খেয়েছে তাজউদ্দিন বললো,,
“আচ্ছা বাড়ি ফিরে ফ্রেশ হয়ে রেস্ট নাও একটু যাও।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
বলে তারা নামাজের উদ্দেশ্য চলে গেলো। সিমি রাও গল্প করতে করতে বাড়িতে পৌঁছালো। যে যার রুমে চলে গেলো, সিমি নিশানের রুমের সামনে দাঁড়িয়ে লক খুলে ভিতরে প্রবেশ করলো ঘাড় ব্যাথা করছে তার এইজন্য ঘাড় একটু এইপাশে ঐপাশে কাত করে ঘুরালো একটু। সে নিশানের রুমেই থাকে সকল যাবতীয় জিনিষ সে এই রুমে রাখছে নিজের রুমের দিকে ঘুমের মধ্যেও ভুল করে যাই না। সিমি ঘাড় ব্যাগ বেডে ফেললো পা থেকে জুতো খুলে রাখলো গায়ে থাকা উড়না খুলে ফেলে দিলো বালিশের পাশে থাকা এসির রিমোর্ট টা তুলে এসির পাওয়ার একটু জোরে দিলো। তারপর ধপাস করে বেডে চার হাত পা মেলিয়ে শুয়ে পড়লো চোখ বন্ধ করে রিলাক্স হলো, মুহূর্তেই চোখ খুললো ব্যাগ থেকে ফোন বাহির করে মুখের সামনে আনলো মিউজিক এপ্স এ গিয়ে স্ক্রল করে একটা গান প্লে করলো গানের দুই এক লাইন সে নিজেও গেয়ে উঠলো,,,
“Khabow main jo aye jaye.. Pyar hum wohi hain..
Hum kisi ko asa ni se..milte hi nehi hain…..”
ফোন টা মাথার কাছে রেখে গানের তালে তাল মিলিয়ে নিজেও গাইতে লাগলো। সিমির এইভাবে গাওয়ার মধ্যেই হুট্ করে এক পুরুষনালীর কণ্ঠ সে শুনতে পেলো,,
“ইডিয়েট, তোর মনে এত আনন্দ অপেক্ষা কর একটু তোর আনন্দের বাপ মা পুরো চোদ্দ গুষ্টি কে খুন করে ফেলবো ননসেন্স..!”
কোন পুরুষনালীর কণ্ঠ সিমির কানে যেতেই সে লাফ দিয়ে উঠে সামনে তাকালো। সে মূলত কোন দিকে তাকাই নি রুমে এসে সোজা বেডে শুয়ে পড়েছে আশেপাশে কেউ আছে কিনা নেই? এইসব কিছু দেখি নি। কিন্তু এখন সামনে তাকাতেই স্বয়ং নিশান কে দেখে যেন নিশ্বাস নিতেই ও ভুলে গেছে। নিশান কান থেকে ফোন টা নামিয়ে টি টেবিলের উপরে রাখলো ল্যাপটপ নিয়ে আবারো কাজ করতে বসলো একবারের জন্য সিমির দিকে তাকালোনা। এইদিকে সিমি নিশ্বাস না ছেড়ে ঐভাবে অবাক নয়নে নিশানের দিকে তাকিয়ে আছে। নিশান নিজের কাজ করতে করতে বলে উঠলো,,,
“নিশ্বাস না ফেলে যদি দম আটকিয়ে মরতে চাই মরুক। আমি সম্মানে দাফন দিয়ে আসবো।”
নিশানের কথাই সিমির হুস ফিরলো দ্রুত নিশ্বাস ছাড়লো। বুকে হাত দিয়ে বড়ো বড়ো নিশ্বাস নিতে লাগলো। তার কানে ভেসে আসলো গান,দ্রুত নিজের ফোন হাতে নিয়ে গান অফ করে দিলো। আড়চোখে নিশানের দিকে একবার তাকালো সে নিজের মতো কাজ করছে। সিমি এইবার উঠে দাঁড়ালো নিজের ব্যাগ জুতো সুন্দর করে গুছিয়ে রাখলো বেডের দিকে তাকাতেই দেখলো তার উড়না টা অবহেলায় পরে আছে দৌড়ে উড়না টা বুকে জড়িয়ে নিলো নিজের উপরে নিজেরই রাগ ধরছে কি কি করছে সে রুমে ঢুকে ছিঃ ভাবতেই গা যেন গুলিয়ে উঠছে। সে আর দাঁড়ালো na দৌড়ে ওয়াশরুমের ভিতরে ঢুকে গেলো। এইদিকে নিশান সিঙ্গেল সোফায় বসে ল্যাপটপ এ নিজের কাজ করতে লাগলো, সাথে কফির কাপে চুমুক দিলো।
বিশ মিনিট পরে সিমি ওয়াশরুমের দরজা খুললো। একটু কানি মাথা বাহির করে আশেপাশে তাকালো নিশান আছে কিনা নেই, চারিদিকে ভালো করে দেখলো না নিশান নেই। সে ধীরে ধীরে ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে আসলো তার পরণে সাদা টাওয়াল জড়ানো। তখন দ্রুত ওয়াশরুমে যাওয়ার জন্য জামা কাপড় নিতে ভুলে গেছে। সিমি ধীরে ধীরে আলমারির কাছে আসলো আলমারির এক পার্ট খুলে নিজের জামা বাহির করবে ঠিক তখনি নিশান এসে দাঁড়ালো তার পাশে তাঁদের মধ্যে দূরত্ব দুই ইঞ্চি কারোর বডি কারোর সাথে টাচ করে নি। সিমি চোখ বন্ধ করে নিলো বুকের বাম পাশে থাকা হার্টবিট টা যেন জোরে জোরে বিট করতে লাগলো ডান হাত টা বুকের বাম পাশে নিয়ে গেলো। কপাল গাল ঘামছে। নিশানের গা থেকে ভেসে আশা পারফিউম এর সুগন্ধ যেন সিমিকে পাগল করে দিচ্ছে সে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
এইদিকে নিশান আলমারির আরেক পার্ট খুললো একটু মাথা ঝুঁকালো যা সিমির কাঁধের কাছে আসলো নিশানের গরম নিশ্বাস সিমির ঘাড়ে আঁচড়ে পড়লো নিশান নিজের শার্ট টেনে বাহির করে সরে গেলো। শার্ট টা পরে নিজের ফোন হাতে নিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। একটা বারের জন্য সিমির দিকে না তাকালো, না কোন প্রশ্ন বা কথা বললো। নিশান চলে যাওয়ার দশ মিনিট পরেও যেন সিমি ঐভাবেই স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তার নিজের উপরে রাগ হচ্ছে প্রচুর সে বারবার ওই বিদেশি কুত্তার সামনে আপত্তিকর পরিস্থিতি তে পরে কেবলাকান্ত হয়ে যাচ্ছে হাবলার মতো দাঁড়িয়ে তো ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে, সিমি মুখ দিয়ে চ সূচক শব্দ উচ্চারণ করলো। নিজের জন্য একটা কালো গেঞ্জি আর ছায়মাটি রংএর প্লাজু বাহির করে পরে নিলো। গায়ে উড়না জড়িয়ে নিলো চুলগুলো আছড়িয়ে নিজের ফোন হাতে নিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। মনে মনে নিজেকে একশোটা গালি দিলো। এইবার থেকে আসলে রুম আগে ভালো ভাবে দেখে নিতে হবে। সিমি সোজা নিজের আম্মুর রুমে ঢুকলো। রোজিনা রুমে শুয়ে ছিলো মেয়েকে দেখে উঠে বসলো হাসি মুখে বললো,,
“কিছু লাগবে আম্মু?”
সিমি মাথা নাড়লো মানে তার লাগবে। রোজিনা প্রশ্ন করলো,,
“কি লাগবে?”
সিমি — “ভার্সিটিতে কালকে অনুষ্ঠান আছে সব মেয়েদের শাড়ি পরে যেতে হবে। আর তার মধ্যে এই অনুষ্ঠানের দায়িত্ব আমাদের কাঁধেও আছে এখন আমি যদি শাড়ি না পরি কেমন টা লাগবে।”
রোজিনা হেসে বললো,,
“পড়বি না কেন? অবশ্যই পড়বি শাড়ি।”
সিমি দুঃখী ভাব নিয়ে বললো,,,
“আমার শাড়ি ও নেই, সাথে আমি শাড়ি পড়তেও পারি না।”
রোজিনা বেড থেকে নামলো আলমারির কাছে গিয়ে আলমারি খুলে সেই জায়গা থেকে অনেক খুঁজে একটা শাড়ি বাহির করে সিমির সামনে আনলো। নেভি ব্লু রঙের জামদানি শাড়ি, সিমি শাড়ি টা দেখেi বলে উঠলো,,,
“ওয়াও আম্মু কত সুন্দর শাড়িটা। ইসসস আমি পড়বো এইটা দিবে আমাকে।”
রোজিনা — “তোকে দেওয়ার জন্যই তো বাহির করছি।”
সিমি খুশি হলো তবে আবারো মন খারাপ করে বললো,,
“কিন্তু আমি তো পড়তে পারি না।”
রোজিনা মেয়ের মুখ উঁচু করে বললো,,,
“মা আছে কি করতে? মা পড়িয়ে দেবে!”
সিমি লাফ দিয়ে তার আম্মুকে জড়িয়ে ধরে গালে একটা চুমু দিয়ে বললো,,,
“দুনিয়ার সব থেকে বেস্ট আম্মু তুমি আমার। কালকে তাহলে পড়িয়ে দিও। আমি গেলাম।”
বলে সিমি চলে গেলো, রোজিনা শাড়িটা গুছিয়ে রাখলো আর বেডে শুলো না রুম থেকে বাইরে গেলো ড্রইং রুমে একটু বসবে।
সিমি জারাদের রুমে যাই গিয়ে দেখে ওরা দুইজন শাড়ির গোডাউন নিয়ে বসছে। সিমি রুমে ঢুকতে ঢুকতে বললো,,,
“তোরা কি শাড়ি বিক্রি করবি? যদি করিস তো আমাকে ডিসকাউন্ট দিস হাজার হলেও তোদের ছোট্ট বোন আমি।”
জারা শাড়ি দেখতে দেখতে বললো,,,
“বালের ছোট হও তুমি আমার। এখন শাড়ি বেঁচে দে তো একটু, বুজতে পারছিনা কালকে কি শাড়ি পড়বো আমরা। আর তুই ও তো শাড়ি পড়বি।”
সিমি বেডে বসলো বললো,,,
“আমার শাড়ি আমি রেখে আসছি, আম্মুর থেকে নিয়েছি এখন তোরা এই শাড়ির গোডাউন কোথা থেকে পেলি রে?”
রাত্রি দাঁত কেলিয়ে হেসে বললো,,,
“আম্মুর আলমারিতে যা ছিলো সব নিয়ে আসছি।”
জারাও একই ভাবে বললো,,,
“সেম টু ইউ তোর শাশুড়ির আলমারি ডাকাতি করেছি।”
সিমি তালি দিয়ে বললো,,
“সাব্বাস সাব্বাস কোন ভদ্র ছেলেদের অভদ্র বউ তোরা। তোদের ডাকাতি বন্ধ করিস না। নয়তো স্বামীরা না খেয়ে মরবে।”
রাত্রি — “বাল বাল করবি না শাড়ি বেছে দে।”
সিমি শাড়ি গুলো দেখলো এর মধ্যে দুইটা জামদানি শাড়ি টেনে বাহির করলো একটা জলপাই রঙের আরেকটা মিষ্টি কালারের। জলপাই রঙের টা জারা কে দিয়ে বললো,,,
“এইটা পড়লে তোকে মাশাআল্লাহ মাশাআল্লাহ লাগবে জান।”
জারা শাড়ি নিয়ে আয়নার কাছে গেলো। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতে লাগলো। সত্যি দারুন মানিয়েছে তাকে। সিমি এইবার মিষ্টি কালারের জামদানি শাড়িটা রাত্রি কে দিয়ে বললো,,,
“রাতের নেশা আমার এইটা পড় দিনে দুপুরে প্রতিটা ছেলেকেই রাতের নেশা বানিয়ে ছাড়বি।”
সিমির কথা শুনে জারা রাত্রি দুইজনে হাসলো রাত্রি ও নিজেকে আয়নাতে দেখলো সুন্দর লাগছে দুইজনে ওই শাড়ি দুটো আলাদা রেখে। বাকি শাড়ি গুলো গুছাতে লাগলো সিমি ওদের প্রশ্ন করলো,,,
“কিরে সামু কই?”
রাত্রি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,,,
“জামাইয়ের সাথে ইটিস পিটিশ করে।”
সিমি হেসে বললো,,,
“তোর ভাই – ভাবি হয় ওরা একটু সন্মান দে।”
রাত্রি সিমির কথা উড়িয়ে দিয়ে বললো,,,
“সম্মানের মা মরে গেছে বহুকাল আগে।”
সিমি আবারো প্রশ্ন করলো,,
“ওকি অনুষ্ঠানে যাবে?”
জারা — “আমাদের সাথে এখনো কথা হয় নি।”
সিমি উঠে দাঁড়ালো বললো,,,
“আমি কথা বলে আসছি, থাক তোরা।”
বলে সিমি জিহানের রুমের সামনে দাঁড়িয়ে দুই তিনবার নক করলো জিহান এসে দরজা খুলতে দেখলো সিমি দাঁড়িয়ে আছে। সিমি সৌজন্যে মূলক হাদি দিয়ে বললো,,,
“সামু কই ভাইয়া?”
জিহান দরজা থেকে সরে দাঁড়িয়ে বললো,,
“ভিতরে এসে দেখ।”
সিমি ভিতরে ঢুকলো বেডের দিকে চোখ যেতেই দেখলো সামিয়া খাতা কলম হাতে ধরে আছে, তার পাশে বই ছড়ানো। সামিয়া সিমি কে দেখে মুখটা দুঃখী দুঃখী ভাব করলো। সিমি ধীরে গিয়ে সামিয়ার পাশে বসলো কোন মতে বললো,,,
“সামু তুই বই পড়ছিস?”
সামু মাথা নাড়লো। জিহান বললো,,,
“আর কয়দিন পরে ইয়ার চেঞ্জ এক্সাম না পড়লে ফেল করবে। আর আমি চাই না আমার বউ কে কেউ ফেল্টুস বলুক।”
সিমি হাসার চেষ্টা করে সামু কে বললো,,,
“আচ্ছা সামু তাহলে তুই পড়, তোর কালকে যেহেতু সময় নেই।”
সামিয়া বলে উঠলো,,,
“কে বলেছে সময় নেই?”
সিমি জিহানের দিকে তাকিয়ে নিয়ে বললো,,,
“এইযে এত বই পড়ছিস। এত সুন্দর টিচার পেয়েছিস পড় বইন পড় ভালো ফলাফল পাবি।”
সামিয়া জিহানের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে সিমির হাত ধরে বলল,,,
“বল না কালকে কি আছে?”
সিমি — “ভার্সিটিতে অনুষ্ঠান আছে, আর তোর উপরেও দায়িত্ব পড়েছে।”
সামিয়া একবার জিহানের দিকে তাকালো সকাল থেকে তাকে বন্ধী করে রেখেছে এই রুমে নিজের জোড় খাটিয়ে তাকে বই পড়াচ্ছে। রাগের মাত্রা সামিয়ার বাড়ছে অতিমাত্রায়। নিজেকে সংবরং করে সিমি কে বললো,,,
“ভার্সিটিতে অনুষ্ঠান আর আমি যাবো না এইটা হয় নাকি। ভোরে আমাকে ডেকে নিয়ে যাবি।”
সিমি উঠে দাঁড়িয়ে বললো,,,
“শাড়ি পড়তে হবে। আমি একটা শাড়ি রেখে দেবো।”
বলে সিমি চলে গেলো সামিয়া বলে উঠলো,,,
“আচ্ছা সুন্দর একটা রাখিস।”
শাড়ির কথা শুনে জিহান ভ্রু কুঁচকে সামিয়ার দিকে তাকালো বলে উঠলো,,,
“অনুষ্ঠানে শাড়ি পড়বে তুমি?”
সামিয়া ভাবলেশিন ভাবে বললো,,
“হ্যা তো কি হয়েছে?”
জিহান সোজাসুজি বলে উঠলো,,,
“ভার্সিটি অনুষ্ঠান যাবে ঠিক আছে এই পযন্ত। কিন্তু শাড়ি এলাও করবো না আমি।”
সামিয়া মুখ ভাঙিয়ে বললো,,,
“উমম আপনি কি হয়ে পড়েছেন যে আপনার কথা শুনতে হবে আমাকে?”
জিহান সামিয়ার দিকে ফিরে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে বাঁকা হেসে বললো,,,
“আমার কথা না শুনলে তোমার বিপদ হবে ম্যাডাম বাকিটা ডিসিশন আপনার বাঁচবেন নাকি মরবেন?As you’re wish..”
বলে জিহান চলে গেলো ওয়াশরুমে ফ্রেশ হওয়ার জন্য। সামিয়া ওয়াশরুমের দরজার পানে তাকিয়ে গালি দিতে দিতে বললো,,,
“জবেদার ভাতার, ছাগলের দশ নাম্বার বাচ্চা, গরুর বয়ফ্রেন্ড, কুত্তার বন্ধু আমি কালকে শাড়ি পড়বো তুই কি করতে পারিস আমিও দেখবো হুউউউ।”
রাত দশটা বাজে..
বাড়ির প্রতিটা সদস্য ডাইনিং টেবিলে বসে ডিনার করছে। শুধু নিশান বাদে। রোজিনা সিমি কে প্রশ্ন করলো,,,
“সিমি নিশান কই? ও ডিনার করবে না।”
সিমি মুখে মিথ্যা হাসি ঝুলিয়ে বললো,,,
“অফিসের কাজ অনেক তাই নিচে আসতে পারবেনা।”
রোজিনা — “আচ্ছা তাহলে আমি প্লেটে খাবার দিয়ে দিচ্ছি তুই নিয়ে যাস।”
সিমি কিছু বললো না। বাড়ির কোন সদস্য ও আর কোন কথা বললো না যে যার মতো চুপচাপ খেয়ে উঠে রুমে চলে গেলো। সিমিও নিশানের খাবারের প্লেট নিয়ে রুমে গেলো, নিশান এখনো নিজের মতো কাজ করছে। সিমি কোন কথা না বলে প্লেটটা টি টেবিলের উপরে রেখে কোন মতে বললো,,,
“খেয়ে নেবেন।”
বলে সোজা বেডে চলে গেলো। বেডে উঠে টি টেবিলএ থাকা জগ থেকে এক গ্লাস পানি ঢেলে ঢকঢক করে খেয়ে নিলো। ফোন টা নিজের মাথার কাছে রেখে শুয়ে পড়লো। তার আজকে কেমন জানি লাগছে। সে আগেও তো নিশানের রুমে নিশানের সাথে তার বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়েছে কিন্তু এমন হয় নি আজকে কেমন যেন অস্বস্তি লাগছে কিছু ভালো লাগছে না। ঘুমতাও যেন চোখের পাতায় ভারী হয়ে আসলো দেখতে দেখতে ঘুমের দেশে পারি জমালো। সিমি ঘুমিয়ে যাওয়ার আধা ঘন্টা পরে নিশান নিজের ল্যাপটপ রেখে দিলো। সিমির রেখে যাওয়া প্লেট টা নিয়ে খাবার খেয়ে নিলো। হাত ধুয়ে প্লেট গুছিয়ে রাখলো উঠে দাঁড়ালো রুমের লাইট অফ করলো, সোজা বেডের কাছে গেলো ল্যাম্প এর হলুদ আলো সিমির মুখে পড়ছে ভালো ভাবে। নিশান সিমির মুখের দিকে তাকিয়ে বললো,,,
“আমাকে ইগনোর করে নাগরের সাথে ঘুরিস খুব ভালো? আমার সাথে কথা না বলে নাগরের সাথে ঘন্টা খানেক কথা বলতে পারিস। হালাল ভাবে ছুঁয়েছি বলে আমার হাত পাপে ভর্তি, আর নাগরের হাত ধরলে সেইটা পবিত্র। এই তুই আমাকে কি মনে করেছিস রে? যে তুই যা করবি আমি চুপচাপ মানবো দেখবো কিচ্ছু বলবো না? আমি কি এতটাই সাধু।তোর শাস্তি তোকে পেতেই হবে ইশু।”
বলে নিশান সিমির ঠোঁট জোড়া নিজের শুষ্ক ঠোঁট দিয়ে দখল করে নিলো। গভীর চুম্বন এর বদলে কামড় দিতে লাগলো জোরে জোরে। ঠোঁট ছেড়ে দিয়ে সিমির গলায় কামড় দিলো ঘাড়ে কামড় দিলো। পুরো গলা আর ঘাড় সম্পূর্ণ নিশান কামড়ের দাগ দিয়ে ভর্তি করে দিলো। সিমি শুধু নড়ে উঠলো তবে কোন হুস নেই, হুস থাকবেও না কারণ নিশান সিমির পানির মধ্যে আগে থেকেই ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছিলো সিমি কে সে এইভাবেই শাস্তি দিতে চেয়েছিলো। সিমির শাস্তি দেওয়া শেষ হলে ঘাড় কাত করে তাকিয়ে রইলো সিমির মুখ পানে বলে উঠলো,,,
“আমার প্রতিটা নিশ্বাস জানে কতটা চাই আমি তোকে। তুই কিভাবে ভাবলি? আমি অন্য মেয়ের সাথে ফিজিক্যাল ভাবে সম্পর্কে জড়িয়েছি? আমি খারাপ জায়গায় যাই। হ্যা তুই অবুঝ তবে এত তাই অবুঝ আমার নামে মিথ্যা বানানো গল্প বললো আর তুই বিশ্বাস ও করলি বাহ্। খুব ভালো!এইজন্যই তো আমি বলেছি প্রমান তোকে দেবো দুই একদিনের মধ্যে নিজের ভুল বুজবি। আমার কাছে ক্ষমা চাইবি। আমাকে চাইবি, আমাকে পাগলের মতো খুঁজবি, আমার সন্নিকটে আশার জন্য তোরপিয়ে মরবি তবুও আমার কাছে আসতে পারবি না। এইটাই তোর জন্য বড়ো শাস্তি।”
নিশান থামলো একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। তাকালো আবারো সিমির মুখের পানে তাকিয়ে আছে নিস্পলক চাহুনি তে, কি নিষ্পাপ মুখটা ঘুমিয়ে আছে একদম বাচ্চাদের মতো!নিশান নিঃশব্দে হাসলো একটু নিচু হয়ে সিমির কপালে গভীর চুম্বন দিলো সিমি একটু নড়াচড়া করলো নিশান জিভ দিয়ে শুষ্ক ঠোঁট ভিজিয়ে প্রেয়শির দিকে তাকিয়ে দুই তিন লাইন গান গেয়ে উঠলো,,,
তুই শুধু আমার উন্মাদনা পর্ব ৩৬
“যতনে রেখেছি তোকে মনেরিই গভীরে,
তোর দেখা না পেলে হয় মন বড়োই চঞ্চল!
কতবার বোঝাবো বল? কতবার জানাবো বল?
নিঃস এ জীবনে শুধু তুই আমার সম্বল।”
বলে নিশান আর কিয়তক্ষণ তাকিয়ে থেকে উঠে গেলো,ল্যাম্প টা বন্ধ করে দিলো।একটা বালিশ আর কম্বল নিয়ে সোফায় চলে গেলো। বালিশ রেখে সেখানে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিলো।

Porbo gula ki tara tari deya jay na ?? eto wait kora jay.emon korle golpo pore kivabe.Ami sob gula porbo porte chai