তুই শুধু আমার উন্মাদনা পর্ব ৪৭

তুই শুধু আমার উন্মাদনা পর্ব ৪৭
তাবাস্সুম খাতুন

“ম্যাম আসসালামু ওয়ালাইকুম…”
রাত বারোটার সময় ফোনের মেসেঞ্জার থেকে এমন মেসেজ আসলো জারার ফোনে। সে মেসেঞ্জার এর ভিতরে ঢুকে দেখলো আইডির নাম Arihanrihan Sikdar Ayan.. জারা আইডির প্রোফাইল চেক করলো এইটা নিশানের বন্ধু আয়ান। জারা দেখে রেখে দিলো মেসেজের রিপ্লাই দিলো না। আয়ান আবারো মেসেজ সেন্ড করলো,,,
“প্রোফাইল পিক এ যেই মেয়েটা আছে ঐটা আপনি তাইতো ম্যাম? বিশ্বাস করুন ম্যাম আমার জীবনে আমি এত সুন্দর নারী কোথাও দেখি নি।”
জারা এইবার উঠে বেডে হেলাম দিলো পাশে রাত্রি বসে অভির সাথে কলে কথা বলছে জারা কে উঠতে দেখে রাত্রি প্রশ্ন ছুড়লো,,,

“কি হয়েছে? উঠলি কেন?”
“তোর দেবর আমার সাথে ঢঙ্গি ব্যবহার করতে আসছে। আমি ঢঙের দুইটা রং দেখিয়ে দেই।”
রাত্রি হেসে বললো,,,
“যা ইচ্ছে কর।”
“হ্যা আর তুই ও কথা বল।”
এর মধ্যে আবারো মেসেজ আসলো,,,
“আপনার বাসার ঠিকানা টা যদি দিতেন তাহলে আপনার জন্য সুন্দর সুন্দর কিছু শাড়ি গহনা পাঠাতাম উফফফ ঐগুলো পড়লে আপনাকে আরো মিষ্টি পরি দেখাবে।”
জারা মেসেজ গুলো পড়লো হাসিও লাগছে তবুও মেসেজের রিপ্লাই দিলো এইবার,,,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“ওয়ালাইকুম আসসালামু…
“আপনি রিপ্লাই দিয়েছেন, ইসসস কিযে খুশি লাগছে আমার। মন তো চাচ্ছে ছাদ থেকে ঝাঁপ দেই।”
“সমস্যা নেই দিয়ে দেন ঝাঁপ গোটা জাহান্নাম দেখতে পারবেন!”
“উসস এইভাবে বলতে নেই ম্যাম আমি মরে গেলে আপনার কি হবে?”
“আমার কি হবে মানে ভাইয়া? আপনি কি বোঝাতে চান।”
“আরে মেয়ে ভাইয়া বলো না বুকে লাগে ব্যাথা। ”
“তবে কি ডাকবো?”

“সাইয়া বলে ডাকতে পারো মাইন্ড করবো না।”
“সাইয়া বলে ডাকলে আমার কি লাভ হবে?”
“সাইয়া বলে ডাকলে বিয়ে করে আমার বউ হয়ে তোমাকে বাড়িতে তুলে আনবো।”
“সাহস আছে আমাকে তুলে আনার?”
“কেন থাকবে না? একশো পার্সন সাহস আমার। যাই হোক সুন্দরী বউ তোমার নাম কি?”
“ওমা আমি আপনাকে কখন বিয়ে করলাম?যে বউ ডাকচ্ছেন।”
“মনে মনে করে ফেলছি সোনা।”
“বাসরটাও করে নিলেন নাকি? ”
“তুমি বললে করতেই পারি।”
“ওওও আচ্ছা।”
“তোমার নাম কি বউ?”
“জারা…

“বুকের ভিতরে ঢুকবুকানির জ্বালা!”
“ফ্ল্যাট তো ভালোই করছেন?”
“সিরিয়াসলিলি তোমাকে আমার পছন্দ হয়েছে চলো বিয়ে করি!তোমার বাড়ির ঠিকানা টা দাও আমি এক্ষুনি আসছি তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করে ফেলবো।”
“সত্যি দেবো ঠিকানা?”
“আবার জিগাই, দিয়ে দাও বউ ইনবক্স এ তো আর মনের কথা বলা যাই না সামনাসামনি বউ হয়ে আসো ডিপলি hug দেবো…!”
“ওও আচ্ছা তাই নাকি?”
“হ্যা ঠিকানা দাও।”
“আচ্ছা আমি ভাইয়ার থেকে ঠিকানা টা নোট করে আনছি।”
“বউ ভাইয়াকে কেন ডাকো? তুমি ঠিকানা জানো না?”
“জানি তবে..
“তবে কি?”

“ভাইয়া আসছে আমি কি ভাইয়ার ভয়েসে ঠিকানা পাঠিয়ে দেবো? ”
“না তুমি পরে সুযোগ বুঝে দিও। আর এত রাতে তোমার ভাইয়া তোমার রুমে কি করছে?”
“আসলে আমার ভাইয়া আমার জন্য পাত্র খুঁজছে, একটা ছেলে পেয়েছে তাই আমাকে দেখাতে আনলো।”
“তাহলে আমার কথা বলো তোমার ভাইয়াকে।”
“বলেছি..
“কি বললো?”

“বলছে ভাইয়া নাকি আপনাকে চেনে!আপনার নাকি দশটা গার্লফ্রেন্ড সাথে তিনটা বউ আছে। সবগুলো পেত্নীর মতো দেখতে আরো আপনি বুড়িদের পিছন ও ছাড়েন না ব্লা ব্লা বলছে।”
“কিহহ কে তোমার ভাই? আমার নামে মিথ্যা কথা বললো কে? তাড়াতাড়ি বলো।”
“নাম বললে চিনতে পারবেন খুব ভালো করে বলবো কি?”
“আমার লক্ষী বউ বলো নাম টা কি?”
“তানভীর চৌধুরী নিশান।”

“কোন নিশান?”
“আমার ইতালি থেকে দশ বছর পরে বাড়ি আশা নিশান ভাইয়া।”
জারার এই রিপ্লাই শুনে আয়ান বউ থেকে এক চান্স এ আপু সম্মোধন করে বললো,,,
“আপু সরি আমি বুঝতে পারিনি, ভুল হয়ে গেছে। এইভাবে কত কি বললাম। প্লিজ আপু নিশান কে কিছু বলবে না ও আমাকে জানে মেরে ফেলবে। আপু প্লিজ বলবে না আমি তোমার পায়ে ধরছি।”
“ওমা বউ থেকে আপু ডাকেন কেন? আমি কি সাইয়া ডাকবো?”
“না আপু একদম না। আমার ভুল হয়ে গেছে জেনে বুঝে বাঘের গুহায় পা দিয়েছি মাফ করুন প্লিজ তবুও নিশান কে বলো না।”

“ইসসস ভাইয়া সো সরি সাইয়া এইভাবে বলো না। আমি কি আমার সাইয়া কে বিপদে ফেলতে পারি।”
“তুমি যা চাইবে তাই দেবো বইন তবুও তোমার ভাইয়াকেকে বলো না আমি এখনো বিয়ে করি নি বউ এর মুখ দেখার আগে মরতে চাই না।আপু প্লিজ।”
জারা আর রিপ্লাই দিলো না তার হাসি লাগছে প্রচুর। সে নেট অফ করে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিলো ভালোই লাগছে এখন জব্দ করতে পেরে। রাত্রি ও মাত্র ঘুমিয়ে পড়লো। এইদিকে আয়ান সরি বলে বলে ইনবক্স ভর্তি করে দিচ্ছে সাথে বারণ করছে নিশান কে না বলতে। সুন্দর একটা ছবি আর অজানা মেয়ে আইডির নাম দেখে একটু প্রেম জমাতে আসছিলো প্রেমের বারোটা বাজিয়ে বাঘের গুহায় মুখ দিলো আহারে বেচারিটা…

আঁধারে ঢাকা তিমির রাত কেটে ধরণীতে সূর্যের আগমন ঘটলো।চৌধুরী ম্যানশনের কম বেশি সবাই উঠে পড়েছে। সময়টা সকাল সাতটা চল্লিশ, নিশান বেলকুনিতে দাঁড়িয়ে ফোনে বিজনেস সম্পর্কে কথা বলছে। সিমি মাত্র ঘুম থেকে উঠলো ও উঠে বসলো। শব্দ শুনে নিশান ভিতরে ঢুকলো কল কেটে দিলো সিমির কাছে আসলো সিমিকে প্রশ্ন করলো,,,
“কোন সমস্যা হচ্ছে?”
সিমি মাথা দুইপাশে নাড়ালো মানে না।নিশান সিমির হাত ধরলো ওকে ধরে ওয়াশরুমের ভিতরে ঢুকিয়ে দিয়ে বললো,,,
“ফ্রেশ হয়ে নে আমি এইখানে দাঁড়িয়ে আছি।”
সিমি কিছু না বলে ফ্রেশ হয়ে নিলো। নিশান আবারো সিমিকে ধরে বাইরে আনলো বেডে বসাতেই সিমি বললো,,
“নিচে যাবো।”

নিশান কিছু বললো না সিমিকে ভালো ভাবে ধরে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো, সিঁড়ির কাছে আসতেই এক পা এক পা করে ধীরে ধীরে নামতে লাগলো সিঁড়ি বেয়ে। সবাই ড্রইং রুমে বসেছিল নিশান আর সিমির দিকে চোখ গেলো মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে তাঁদের দিকে। নিশান সিমিকে নামিয়ে ড্রইং রুমের সোফায় বসিয়ে দিলো তারপাশে বসলো রোজিনার উদ্দেশ্য বললো,,,
“মেজো আম্মু কি নাস্তা বানিয়েছো?”
“রুটি আর ভাজি।”
“নিয়ে আসো।”

রোজিনা চলে গেলো সবাই ওদের দিকে তাকিয়ে। সিমির যেন এইবার লজ্জা লাগছে বাপ চাচাদেরদের সামনে কি করতে যাচ্ছে?রোজিনা প্লেটে করে চারটা রুটি আর ভাজি আনলো। নিশানের হাতে দিলো। নিশান এক টুকরো রুটি ছিঁড়ে ভাজি নিয়ে সিমির মুখে ধরলো সবাই তাকিয়ে আছে এখনো।সিমির লজ্জায় মাটির নিচে ঢুকে যেতে ইচ্ছে করছে কি করছে এই বিদেশি কুত্তা ছিঃ কি লজ্জাকর পরিস্থিতি। নিশান ভ্রু কুঁচকে বললো,,,
“মুখ খোল।”
“আমি খাবো না এখন।”
“আদেশ করছি না জোর করছি মুখ খোল।”
সিমি একটু কানি মুখ খুললো নিশান খাইয়ে দিলো। সবার তাকানো দেখে নিশান এইবার মুখ খুললো,,,
“এইভাবে তাকিয়ে থেকে লাভ নেই খাবার টা আমার বউ এর জন্য, যদি বেশি খেতে মন চাই নিজেদের বউ এর কাছে চেয়ে নেন।”

নিশানের কথা শুনে সবাই থতমত খেয়ে চোখ সরিয়ে নিলো। সিমি মাথা নিচু করে আছে নিশান একটু একটু ছিঁড়ে খাইয়ে দিতে লাগলো এর মধ্যে জিহানকেকে বললো,,,
“ভালো মহিলা ডাক্তার কোন জায়গায় আছে খোঁজ নে জিহান একটু পরে ইশু কে নিয়ে যাবো।”
নিশানের কথা শেষ হতেই তাজউদ্দিন প্রশ্ন ছুড়লো,,,
“কেন ওর কি হয়েছে? সিমি মামুনি কোন সমস্যা?”
সিমি মাথা দুইপাশেপাশে নাড়িয়ে বললো,,,
“কিছু হয় নি বড়ো আব্বু।”
“তাহলে ডাক্তার এর কাছে কি করতে যাবে?”
“জানিনা আমি।”
“নিশান ডাক্তারেররের কাছে কেন নিয়ে যাবি?”
“ইচ্ছে হলো এইজন্য।”

কেউ আর কোন কথা বললোনা। জিহান একটা ভালো গাইনি ডাক্তার এর কথা নিশানকে বললো। নিশান দুইটা রুটি সিমিকে খাইয়ে দিলো আর খাওয়াতে গেলে বললো,,,
“আর জায়গা নেই।”
নিশান হাত ধুয়ে নিলো সিমিকে পানি দিলো। এরপর আবারো সিমির হাত ধরে ধীরে ধীরে উপরে রুমে নিয়ে গেলো। রুমে আসতেই সিমির বমি লাগছে মুখে হাত দিয়ে দৌড়ে ওয়াশরুমে ঢুকে হরহর করে বমি করে দিলো। নিশান এসে সিমির পিঠে হাত বুলিয়ে দিলো বমি শেষ হতে মুখে পানি দিলো সিমির হাত ধরে রুমে বেডে বসিয়ে বললো,,,
“বসে থাক। নড়বি না একদম আমি এক্ষুনি ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাচ্ছি।”
বলে ওয়াশরুমে ঢুকলো বমি গুলো পানি ঢেলে পরিষ্কার করলো নিজে ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়ে আসলো। ফর্মাল ড্রেস পড়লো সিমির মাথা ও ঘুরছে নিশান সিমির হাত ধরলো আলমরি থেকে একটা কালো গ্রাউন বাহির করে সিমিকে দিয়ে বললো,,,

“জামা আজকেই লাস্ট পরে নে। এইবার থেকে বাইরে গেলে বোরকা পড়বি কিনে এনে দেবো।”
সিমি জামা হাতে নিয়ে ওয়াশরুমের দিকে যেতেই মাথা ঘুরে পরে যেতে নিলেই নিশান ধরে ফেললো,,,
“আমি পড়িয়ে দেই।”
“না আমি পড়তে পারবো।”
“তাহলে এইখানে পর আমি বেলকুনিতে আছি।”
বলে সিমিকে রেখে বেলুনিতে গেলো সিমি চোখ বন্ধ করলো এরপর জামা পরে চুল আছড়িয়ে মাথায় কাপড় দিলো মুখে কিছু দিলো না শুধু ঠোঁটে লিপবাম ছাড়া। সিমির হয়ে গেলে বলে উঠলো,,,
“আমার হয়ে গেছে।”

নিশান আসলো সিমিকে ধরে রুম থেকে বেরোলো সিমি বলে উঠলো,,,
“মাত্র এক দের মাস প্রেগনেন্ট আমি এইভাবে ধরে থাকতে হবে না আমি ঠিক আছি।”
“বেশি বোঝার দরকার নেই যেইভাবে ধরে আছি ধরে থাকতে দে।”
সিমি আর কিছু বললো না। নিশান সিমিকে নিয়ে গাড়িতে উঠে বসলো সিমিকে ফ্রন্ট সিট এ বসিয়ে নিজে ড্রাইভিং সিট এ বসলো। গাড়ি ধীরে ধীরে চালাতে লাগলো ডাক্তারের চেম্বার বেশি দূরত্বর না ত্রিশ মিনিট রাস্তা। নিশান গাড়ি চালাতে চালাতে সিমিকে বললো,,,

“সমস্যা হচ্ছে কোন?”
“উহুম।”
নিশান আর কিছু বললো না। সিমি বলে উঠলো,,
“আপনি নাস্তা করবেন না? ”
“পরে।”
সিমি এইবার ঠোঁট উল্টিয়ে বললো,,,
“আমার একটা জিনিষ খেতে ইচ্ছে করছে!”
নিশান গাড়ি চালাতে চালাতে বললো,,,
“কি সেইটা?”
“আইসক্রিম।”
নিশান সিমির দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বললো,,,

“কানের নিচে দেবো দুইটা থাপ্পড় শীতকালে আইসক্রিম খাবি। ঠান্ডা লাগবে না বেয়াদব মেয়ে।”
“বকছেন কেন? বেবি খেতে চাচ্ছে।”
“বেবির ঠান্ডা লাগবে। সাথে বেবির মায়ের ও চুপচাপ বসে থাক চিপস কিনে দেবো।”
“খাবো না আপনার চিপস আপনি খান।”
“আমি চিপস বানাই না তাই আমার চিপস বলা বন্ধ কর।”সিমি নিশানের দিকে মুখ ভাঙিয়ে জানালার দিকে তাকিয়ে রইলো। কিছু সময় পরে নিশানের গাড়ি থামলো ডাক্তারের চেম্বারের সামনে। নিশান সিমিকে গাড়ি থেকে নামিয়ে ধরে ভিতরে ঢুকলো। ডাক্তার মিস অনুপমা শর্মা নিশানদের বসতে বললো। নিশান সিমি কে বসিয়ে নিজেও বসলো। অনুপমা শর্মা হাসি মুখে বললেন,,,
“আপনার ওয়াইফ কয়দিনের প্রেগনেন্ট?”
“ডাক্তার বললো এক মাসের।”
“আচ্ছা আমি একটু চেক আপ করতাম।”
“হ্যা অবশ্যই করেন।”

ডাক্তার সিমির কাছে আসলো সিমিকে ভালো ভাবে চেক আপ করলো পেট আল্ট্রাসোনা করতে আলাদা রুমে নিয়ে গেলো। সবকিছু শেষ করে সিমিকে আবারো চেয়ারে বসিয়ে দিলো। ডাক্তার নিশানকে বললো,,,
“আপনার ওয়াইফ একদম সুস্থ আছে কোন সমস্যা নেই। আমি চেকআপ করেছি রিপোর্ট আসুক সেখানে বোঝা যাবে আপাতত কত মাসের প্রেগনেন্ট।”
নিশান কিছু বললোনা। পাঁচ মিনিট পরেই রিপোর্ট আসলো ডাক্তারের এসিস্টেন্ট এসে রিপোর্ট দিয়ে গেলো। ডাক্তার ভালো ভাবে দেখে বললো,,
“মোটামুটি সব ঠিক আছে কোন সমস্যা নেই। আর রুগী দুই মাসের প্রেগনেন্ট।”
বলে রিপোর্ট টা নিশানের হাতে দিলো নিশান আল্ট্রাসোনা দেখলো দুই মাসের বেবি। রক্তের দলা এখনো। নিশান তাকিয়ে আছে সেইদিকে সিমিও একটু উঁকি মারলো। নিশান কিছু সময় পরে ডাক্তার কে বললো,,,
“কি সাবধনতা মেনে চলতে হবে? আর ও কিছু খেতে পারছেনা সকালে খাবার খেয়েছে সাথে সাথে বমি করেছে, মাথা ঘুরছে।”

ডাক্তার হেসে বললো,,,
“প্রথম তিন মাসের প্রেগনেন্সি তে এমন হয়ে থাকে। চিন্তার কারণ নেই। আপাতত উনাকে কোন কাজ করতে দেবেন না সবসময় রেস্ট এর মধ্যে রাখবেন একটু ঘুরতে নিয়ে যাবেন এতে করে মন ভালো থাকবে বেবি ও সুস্থ থাকবে। আর সবকিছুই ধরতে গেলে খাওয়া যাবে তবে পেঁপে খাদ্য টা দেবেন না। যা খেতে চাই কিনে দেবেন। বিশেষ করে এইসব টাইট জামা পড়া যাবেনা ঢিলা ঢিলা জামা পড়তে হবে। এইগুলো মেনে চললেই হবে, হ্যা শীত তো চলে আসলো সাবধানে রাখবেন যেন ঠান্ডা না লাগে। মায়ের ঠান্ডা লাগলে বেবির ও ঠান্ডা লাগবে তখন অনেক সমস্যা হবে।”

নিশান সবগুলো মন দিয়ে শুনলো। এরপর ডাক্তারের বিল পেমেন্ট করে সিমিকে নিয়ে বেড়িয়ে গেলো। সিমি এত সময় চুপ ছিলো এইবার নিশান কে বললো,,,
“দেখলেন ডাক্তার কি বললো? আমি যা খেতে চাই দিতে বলেছে, এইজন্য আমাকে আইসক্রিম কিনে দেন।”
নিশান সিমিকে গাড়িতে বসিয়ে নিজেও ড্রাইভিং সিট এ বসে স্টেয়ারিং ঘুরিয়ে বললো,,,
“ডাক্তার এইটাও বলেছে এখন শীতকাল বেবির মাম্মামের জন্য ঠান্ডা না লাগে।”

“দূর বাল..”
নিশান গম্ভীর কণ্ঠে বললো,,,
“মুখের ভাষা ঠিক কর ইশু।”
সিমি অসহায় কণ্ঠে বললো,,,
“কিনে দেন না একটা।”
সিমির এত আবদার পরে নিশান বললো,,,
“বেশি খাওয়া যাবে না।”
সিমি খুশিতে লাফ দিয়ে বললো,,
“একদম একটুকানি খাবো।”

তুই শুধু আমার উন্মাদনা পর্ব ৪৬

নিশান নিঃশব্দে হাসলো। গাড়ি একটা দোকানের সামনে দার করালো, গাড়ি থেকে নেমে একটা কোন আইসক্রিম কিনে সিমিকে দিলো। সিমি খুলে খাওয়া শুরু করলো, নিশান আবারো গাড়ি চালালো সিমি নিশানের মুখের সামনে এনে বললো,,,
“আপনিও খান।”
“বেশি পীড়িত দরকার নেই, দ্রুত খেয়ে নে।”
সিমি আর কিছু বললোনা। মনের সুখে খেতে লাগলো।

তুই শুধু আমার উন্মাদনা পর্ব ৪৮

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here