তুমি অন্য কারো সঙ্গে বেঁধো ঘর পর্ব ২৯

তুমি অন্য কারো সঙ্গে বেঁধো ঘর পর্ব ২৯
রাজিয়া রহমান

পুরো বাসায় পিনপতন নীরবতা। সবাই চমকে তাকিয়ে আছে তামিমের দিকে।তামিমের দুই পাশে দুজন লোক দাঁড়িয়ে আছে। শক্ত করে তামিমকে ধরে আছেন তারা।তামিম সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছে না।
সামিম ছুটে গিয়ে তামিমকে জড়িয়ে ধরে সোফায় এনে বসালো। লোক দুটো সামিমকে উদ্দেশ্য করে বললো, “মানুষ এরকম মাতালামি করে না-কি? ছি ছি!উনি কি সব বাজে কথা বলছিলেন বারে বসে।মেয়েদের নিয়ে কেমন সব নোংরা কথা।রাস্তায় নবনী বলে কাউকে নিয়ে কি সব আবোল তাবোল কথা বলেছেন!”

লোক দুজনের কাছে সামিম ক্ষমা চেয়ে নিলো ভাইয়ের এরকম ব্যবহারের জন্য।
তামিম অকারণে খিলখিল করে হাসতে লাগলো। তারপর দুই চোখ ছোট করে নিতুর দিকে তাকিয়ে বললো, “এই!এই!তুই কোন সাহসে আবার বাসায় এসেছিস?শা/লী!
তোর বস কই এখন?কুত্তার মতো পা চাটতে চলে এসেছিস আমার কাছে?তুই কি ভেবেছিস তোর মতো বিবাহিতা মহিলাকে মেঘের মতো লোক ভালোবাসবে?মোটেও না।ওর ও তোর শরীরের উপর নজর। হা হা হা। ” এসব বলেই তামিম অপ্রকৃতিস্থের মতো খ্যাঁক খ্যাঁক করে হাসতে লাগলো।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

নিতুর বিস্ফোরিত নয়নে তাকিয়ে রইলো তামিমের দিকে। এই কাকে দেখছে সে?
এই কি সত্যি তামিম?যাকে নিতু নিকের সবটুকু ভালোবাসা উজাড় করে দিয়েছিলো?
এই কি তার প্রতিদান?
বর্ষার ধারা বইতে লাগলো নিতুর দুই চোখ বেয়ে।মাথার ভেতর বজ্রপাত হচ্ছে যেনো!
একটা অচেনা ঝড়ে উড়ে গেছে নিতুর সব ভালোবাসা, ভরসা,বিশ্বাস।ভেতর থেকে কেউ একজন চিৎকার করে নিতুকে বলছে, “ভুল,ভুল,ভুল।সবকিছু তোর ভুল ছিলো নিতু।অনেক বড় ভুল করেছিস তুই।”

নিতু দাড়ানো থেকে পড়ে যেতে নিয়েও নিজেকে সামলে নিলো।চেয়ার চেপে ধরে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো।
তামিম কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে পড়ে রইলো অজ্ঞানের মতো। তারপর আবারও চেঁচিয়ে উঠে কাঁদতে কাঁদতে বললো, “নবনী,আমার নবনী।আমি তোমাকে ছাড়া ভালো নেই নবনী।আমি অনেক বড় ভুলে করেছি।আমাকে ক্ষমা করে দাও নবনী।আমি সব ছেড়ে দিবো।কোনো মেয়ের সাথে কথা বলবো না।কোনো মেয়ের সাথে রুম ডেটে যাবো না নবনী।একবার চান্স দাও আমাকে।

আমি ভীষণ নিঃস্ব তোমাকে ছাড়া। আমার বুকের ভেতর সারাক্ষণ তুমি থাকো।আমি কোনোকিছুতে শান্তি পাই না।কতো রাত আমি নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারি না। বাসায় আসলে তোমার পুতুলের মতো মুখখানা দেখি না।এই দুনিয়াদারি সব আমার কাছে অসহ্য লাগে তোমাকে ছাড়া। তোমাকে হারিয়ে ফেলার পর আমি তোমার মূল্য বুঝতে পেরেছি। আমি ভীষণ ভীতু ছিলাম নবনী,মনে মনে তোমাকে চাইলেও মায়ের ভয়ে মুখ ফুটে কিছু বলতে পারি নি। নিতুকে আমি ভালোবাসতে পারি নি।নিতু ছিলো আমার ক্ষণিকের মোহ নবনী।আমি কোনটা মনের ভালোবাসা আর কোনটা মোহ তার পার্থক্য বুঝতে পারি নি।নিতুকে তো আমি শুধু বিছানা পর্যন্ত চেয়েছি,সংসার করার জন্য নয়।নিতু আমার জন্য পারফেক্ট নয়,আর না আমি নিতুর জন্য।আমার মন তো তোমাকে চেয়েছে।তুমি কেনো আমার মনের কথা বুঝতে পারলে না।

কি থেকে কি হয়ে গেলো! আমি কিছু করতে পারলাম না।তুমি এই থাপ্পড় আমাকে আরো আগে কেনো দাও নি।তাহলে তো আমার হুঁশ হতো।আমি সহ্য করতে পারি না নবনী। তোমার পাশে অন্য কেউ আমার সহ্য হয় না।বুকের ভেতর ঈর্ষার আগুন জ্বলতে থাকে।”
নিতু ধপ করে ফ্লোরে বসে পড়লো। তাহেরা বেগম ব্যতিব্যস্ত হয়ে বললেন,”সামিম,তোর ভাইকে আমার রুমে নিয়ে শুইয়ে দে।ওর মাথা ঠিক নেই।কি সব বলছে ও!”

সামিম ধরতে যেতে তামিম পায়ের জুতা ছুঁড়ে মারলো সামিমের দিকে।তারপর টলমল কণ্ঠে বললো, “কোনো শা/লা আমাকে ধরতে আসবি না।আজ আমি সব বলে দিবো আমার নবনীকে।অনেক সহ্য করেছি শালা।আর না।নবনী শুধু আমার।এই তাহেরা,চুপ হারা/মির বাচ্চা, তোর জন্য আমার নবনীকে হারিয়ে ফেলেছি।আমি তোকে শেষ করে ফেলবো। ”
বলতে বলতে তামিম বমি করে দিলো। সামিম উঠে গিয়ে তামিমকে ধরে তাহেরা বেগমের রুমে নিয়ে গেলো। বিছানায় শুইয়ে দিতেই তামিম উঠে বসলো। তারপর চিৎকার করে বললো, “কোন শা/লা আমাকে কি করবে?আমি কি কাউকে ভয় পাই না-কি? দরকার হলে আজ সারারাত ও মেয়ে নিয়ে কাটাবো, নবনীকে আমি কি ভয় পাই না-কি? ও যদি ওই শা/লার মেঘের সাথে লাইন করতে পারে আমি কেনো পারবো না। আমার নবনী আমার কাছে আর আসে না কেনো?কতোদিন আমার খোলা বুকে নবনী আছড়ে পড়ে না।আমার বুকের বাম পাশে ভীষণ কষ্ট হয়।”

তারপর সামিমকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে বললো,”ভাই আমার,তোর ভাবীকে বল আমার সাথে যেনো রাগ না করে। আমি সত্যি ভালো হয়ে যাবো।নিতুর সাথে আর কোনো সম্পর্ক রাখবো না।বাবাকে বল আমাকে মাফ করে দিতে।আমি নবনীকে সত্যি ভালোবাসি।আর কখনো এসব করবো না।নবনীকে বল ও যাতে না যায় আমাকে ছেড়ে।বাবাকে বল নবনীকে বুঝিয়ে বলতে। আমি নবনীর পায়ে ধরে ক্ষমা চাইবো।বিয়ের আগে মেয়েদের সাথে রাত কাটানোর জন্য,নিতুকে ভালোবাসার জন্য,সবকিছুর জন্য ক্ষমা চাইবো ”

বলতে বলতে কাঁদতে লাগলো তামিম।কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে গেলো। পাশের রুম থেকে নিতু সব শুনতে পেলো। শূন্যদৃষ্টিতে নিতু সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে রইলো।মাথার উপরে ঘুরতে থাকা বৈদ্যুতিক পাখার বাতাসে জানালার পর্দা থরথর করে কাঁপছে। সেই কাঁপন নবনীর সর্ব অঙ্গ প্রতঙ্গে কাঁপন ধরিয়ে দিচ্ছে যেনো।দুচোখ অশ্রুতে টলমল হয়ে আছে।
এতোদিন ধরে মাথার ভেতর ঘুরতে থাকা প্রশ্নেরা আজ জবাব পেয়ে গেলো।অথচ এই জবাবে নিতুর বুক ফেটে গেলো যেনো।একরাশ শূন্যতা বুকের ভেতরটা ক্রমে দখল করে নিচ্ছে।নিতুর মনে হচ্ছে নিতু স্বপ্ন দেখছে।এসব কিছুই হচ্ছে না।তামিম এখনো বাসায় আসে নি।

বুকের ভেতরটা ক্ষণে ক্ষণে দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে।অসহ্য যন্ত্রণায় কুঁকড়ে যাচ্ছে নিতুর সারা দেহ।তীক্ষ্ণ ছু/রি দিয়ে কেউ যেনো কু/পি/য়ে ফালা/ফালা করে দিচ্ছে নিতুর কলিজা।
চিৎকার করে নিতু আল্লাহকে ডেকে বললো, “হায় আল্লাহ, এতো যন্ত্রণা কেনো হচ্ছে!কেনো এরকম হলো আমার সাথে!আমার ভালোবাসা তো সত্যি ছিলো। তবে কেনো আমার জন্য কারো ঘর ভাঙ্গলো! ”

তামিম প্রলাপ বকে যাচ্ছে ঘুমের মধ্যে ও।বারবার নবনীকে ডাকছে,কখনো গালাগাল করছে,কখনো ক্ষমা চাচ্ছে।
নিতুর সমস্ত পৃথিবী যেনো অন্ধকার হয়ে আসছে।যন্ত্রণায়,বিশ্বাস ভেঙে যাওয়ায় বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে নিতু।মনের ভেতর এক কোণে একটা আশার প্রদীপ তবুও টিপটিপ করে জ্বলছে।এসব যেনো মিথ্যে হয়।এসব যেনো তামিমের প্রলাপ হয়।
সামিম বাহিরে এসে দেখে নিতুর বেহাল অবস্থা। সামিম ছুটে গিয়ে এক গ্লাস পানি নিয়ে এলো।নিতুকে একটু পানি খাইয়ে দিয়ে মাথায় একটু পানি দিলো।তারপর উঠিয়ে নিয়ে সোফায় বসালো।

ক্লান্তিতে, অবসাদে,ব্যথায় নিতুর অবস্থা ভীষণ খারাপ। তবুও নিতু থেমে থেমে বললো, “ভাই,আপনি আমার ছোট ভাইয়ের মতো। আমি আপনার পায়ে পরি আপনি আমাকে সত্যি করে বলুন এসবের মানে কি।নবনীর সাথে তামিমের কীসের সম্পর্ক ছিলো? ”
সামিম সোফায় হেলান দিয়ে বসে বললো,”এখন আর আপনার থেকে লুকানোর মতো কিছু নেই।আগেই জানার দরকার ছিলো আপনার এসব ব্যাপার। এখন যখন জেনে গেছেন তখন সবই বলবো। আপনি আমার ভাইয়ের দ্বিতীয় স্ত্রী। নবনী ভাবী ছিলো প্রথম স্ত্রী। ”

নিতুর মাথায় আসমান ভেঙে পড়লো শুনে।যে আশার প্রদীপ নিভু নিভু করে জ্বলছিলো এক ঝটকায় তাও নিভে গেলো।
নিতু দুই হাতে বুক চেপে ধরে সোফায় শুয়ে পড়লো। নিজের কানকে নিতুর বিশ্বাস হচ্ছে না কিছুতে।
সামিম একটু থেমে বললো, “আমার বিয়ে হয় ভাইয়ার বিয়ের আগে। এজন্য বাবা ভীষণ রেগে ছিলেন আমার উপর।অল্প বয়সে দিশার প্রেমে পড়ে যাই।মা জানতেই উঠেপড়ে লাগেন বিয়ের জন্য।নিজে থেকে আমার আর দিশার বিয়ে দেন।দিশার বাবার টাকা পয়সা আছে,এই লোভ মা সামলাতে পারেন নি।মা চেয়েছিলো ভাইয়াকেও এরকম একটা মেয়ে দেখে বিয়ে করাবে।কিন্তু বাবার জন্য তা আর পারে নি।ভাবীকে দেখেই বাবা সিদ্ধান্ত নিলেন ভাইয়ার বউ করার।কারো অনুমতি না নিয়েই ভাইয়ার বিয়ে দিলেন।

সবকিছু ঠিকঠাক চলছিলো ভাবী আর ভাইয়ার মাঝে।যদিও মায়ের উষ্কানিতে ভাইয়া ভাবীর সাথে প্রায় সময় ঝামেলা করতো।তবুও ভাবী সেসব গায়ে মাখতো না।হেসে উড়িয়ে দিয়ে বলতো সংসার করতে গেলে এরকম কতো কিছুই হয়।মা ভাবীর বাবার বাড়ির অবস্থান নিয়ে সবসময় ভাবীকে কথা শুনাতো।ভাবীকে কখনো টু শব্দ করতে দেখি নি।ভাইয়াকে কখনো ভাবীর হয়ে প্রতিবাদ করতে দেখি নি।
ভাবীর মুখে অভিযোগ দেখি নি।এতো শক্ত,ধৈর্যশালী ভাবী আমার মুষড়ে পড়লো সেদিন যেদিন আপনার আর ভাইয়ার সম্পর্কের কথা জানতে পারলো।

মা জানার পর থেকে ভাইয়াকে ইন্ধন দিতে লাগলো ভাবীকে ছেড়ে দেয়ার জন্য। ভাবী ও এই অপমান সহ্য করতে পারেন নি।বাসা ছেড়ে চলে গেছেন।আমার ভাই সবসময় সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন,নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে পারেন না।তাই আবারও মায়ের কথা মতো ভাবীকে ছেড়ে দিলো।এই আঘাত আমার বাবা সহ্য করতে না পেরে মারা গেলেন।
আপনি চাকরিজীবী মেয়ে,মাস শেষে মা আপনার বেতনের টাকায় ভাগ বসাতে পারবেন এই স্বপ্ন দেখেই মা দ্রুত আপনার আর ভাইয়ার বিয়ে দেন।ভাইয়ার প্রেমে অন্ধ হয়ে আপনি ও বিয়ে করে চলে এলেন।মধ্যখানে শেষ হয়ে গেলো ভাবীর সংসার। আমার বাবার জীবন।ভাবীকে হারিয়ে ফেলার পর ভাইয়া ভাবীর শূন্যতা অনুভব করতে শুরু করলো। আপনাকে বিয়ে করে আনার পর ভাইয়া বুঝতে পারলো সে আসলে ভুল করেছে।আপনার প্রতি ভাইয়ার ভালো লাগা ছিলো। কিন্তু ভালোবাসা ভাবীর জন্যই ছিলো। ”

নিতুর বুকের ভেতর হাতুড়ি পেটা করতে লাগলো কেউ।কাঁদতে কাঁদতে নিতু ফ্লোরে পড়ে গেলো। কি করলো সে এটা!
একটা মেয়ের স্বপ্নের সংসারে সে অভিশাপের ছায়া হয়ে এলো।তার জন্য ভেঙে গেলো কারো তিন বছরের সাজানো স্বপ্ন!
কিভাবে পারলো সে এই কাজ করতে?
নিতুর মনে হলো তার যেনো দম বন্ধ হয়ে আসছে।এতো বড় প্রতারণা নিতু সহ্য করতে পারলো না।সে তো সরল মনে ভালোবেসেছে,তবে কেনো এভাবে ঠকে গেলো সে?ভালোবাসার এই প্রতিদান কেনো পেলো?একজন প্রতারকের সাথে এতোগুলা দিন কাটিয়ে দিলো কিভাবে?

বাঁধভাঙ্গা চাঁদের আলোয় আলোকিত চারপাশ। মৃদুমন্দ শীতের হাওয়া বইছে।নবনী দাঁড়িয়ে আছে রুমের সাথে লাগোয়া ব্যালকনিতে। কানে ফোন ধরে আছে এক হাতে,অন্য হাতে একটা কফির মগ।
মেঘ ফিসফিস করে বললো, “নবনীতা! ”
নবনী চুপ করে রইলো।

মেঘ বললো, “আকাশের বুকের ওই চাঁদটা দেখেছো নবনীতা? আমার অন্ধকার জীবনে তুমি ও তেমন পূর্ণিমার চাঁদ।আমি আজীবন আর কিছু চাইবো না।তুমি শুধু আমার আকাশের চাঁদ হয়ে থেকো।আমি আজীবন তোমার কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো। ”
নবনী হেসে বললো, “ভালোবাসা এতো সুন্দর কেনো বলুন তো?আমার মাঝেমাঝে নিজেকে সদ্য কৈশোরে পা দেওয়া কিশোরীর মতো মনে হয়। যার জীবনে আপনি প্রথম বসন্তের কোকিল হয়ে এলেন।বুকের ভেতর যার জন্য ভালোবাসার ফুল ফুটেছে।

আমাকে এই অপূর্ব সুন্দর অনুভূতির সাক্ষী করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।”
মেঘ ফিসফিস করে বললো, “একবার শুধু বৈধভাবে আমার হও,আমি তোমাকে জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত এই সুন্দর সুন্দর অনুভূতির মুখোমুখি করবো নবনীতা। ”
নবনী চুপ করে রইলো।

মেঘ আপনমনে বলতে লাগলো, “নবনী,আমরা একটা ছোট ঘর বানাবো কোনো এক অজপাড়া গাঁয়ে।বাড়ির পিছনে একটা সরু নদী থাকবে। বৃষ্টির সময় আমরা সেখানে চলে যাবো।ঝুম বৃষ্টিতে দুজন মন ভরে বৃষ্টিতে ভিজবো। উথাল-পাতাল জোছনা রাতে দুজনে খোলা আকাশের নিচে বসে জোছনার আলো গায়ে মাখবো। এই যান্ত্রিক শহর থেকে অনেক অনেক দূরে চলে যাবো তোমাকে নিয়ে। আমাদের স্পেশাল দিনগুলো আমরা দুজন সেখানে একান্ত সময় কাটাবো।
রাতে দুজন নৌকায় ঘুরে বেড়াবো। আমার দুচোখ জুড়ে হাজারো স্বপ্ন নবনীতা। তুমি কখনো আমার থেকে দূরে চলে যাও না।আমি তোমাকে নিয়ে জীবনের শেষ স্বপ্নটা ও পূর্ণ করতে চাই।তুমি না থাকলে এই জীবনের সব স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যাবে।”

তুমি অন্য কারো সঙ্গে বেঁধো ঘর পর্ব ২৮

নবনী কেঁদে উঠলো। কাঁপা গলায় বললো, “আমি আজীবন আপনার সাথে থাকতে চাই।আল্লাহ যতো দিন বাঁচিয়ে রেখেছেন, আপনার পাশে থাকতে চাই আমি।”
ভালোবাসা পৃথিবীর সবচেয়ে নির্মম এবং মধুর ব্যাপার। কখনো কারো দুচোখ জুড়ে সুখ স্বপ্ন এনে দেয়। আবার কখনো কারো জীবনের বেঁচে থাকার শেষ স্বপ্ন ও কেড়ে নেয়।দেয়ালের এই পাশে নবনী সুখের স্বপ্ন দেখছে আর ওপাশে নিতুর সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে।
আহা ভালোবাসা!
আহারে ভালোবাসা!

তুমি অন্য কারো সঙ্গে বেঁধো ঘর পর্ব ৩০