তুমি রবে পর্ব ৩২

তুমি রবে পর্ব ৩২
Israt Jahan Sobrin

টাইটা খুলে আশফি পেছনের সিটে রাখল। এরপর শার্টের ওপরের দুটো বোতাম খুলে সিটে হেলে বসে রইল কিছুক্ষণ।
– “কোনো সমস্যা?”
আশফি নিরুত্তর চোখে একবার মাহির দিকে তাকিয়ে আবার সামনে দৃষ্টি মেলে বসে রইল। মাহি খেয়াল করল আশফির গায়ের শার্টটা ঘামে ভিজে একদম চুপসে আছে।

– “ইস আপনি এত ঘেমেছেন কেন?”
– “মানুষ ঘামে কেন?”
নির্বিকারভাবে বলল আশফি।
– “এই ভেজা শার্টে থাকলে তো গা থেকে দুর্গন্ধ বের হবে।”
আশফি ঘাড় ঘুরিয়ে আবার তাকাল মাহির দিকে। তারপর বলল,
– “গা থেকে দুর্গন্ধ আসবে শুধু এটার চিন্তা হলো? প্রায় দুই ঘন্টা যাবৎ এভাবে ঘেমে আছি। গরম ঠান্ডাও লেগে যেতে পারে। এই চিন্তা আর হলো না না?”

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

আশফির কথা শুনে ঠোঁটটা চোঁখা করে মাহি চকিতে উত্তর দিলো,
– “ওও…তাই! কেন আমার চিন্তা হবে? আমি কি আপনার বউ?”
কথাটা শুনতেই আশফি চকিতে তাকাল মাহির দিকে। আশফির দৃষ্টি পড়তেই মাহি তার বোকা কথার ইঙ্গিত বুঝতে পেরে দ্রুত দৃষ্টি ফিরিয়ে নেয়। আশফি কিছুই বলল না তখন, ঈষৎ হাসলো মাত্র। এরপর যা করল আশফি, তা ছিল মাহির জন্য অভাবনীয়। সে পুরো শার্টটা গা থেকে খুলে ফেললে মাহি চেঁচিয়ে বলে উঠল,
– “এই আপনি শার্ট খুললেন কেন হ্যাঁ? একজন মেয়ের সামনে এভাবে শার্ট খুলে ফেলার অর্থ কী? দেখুন, আমি কিন্তু গাড়ি থেকে নেমে যাব। আর…”

আশফি মাহির কান্ডে শুধু ভ্রু কুচকে তাকিয়ে মাহির হাত থেকে ব্যাগটা নিয়ে তার মধ্যে থেকে ধূসর বর্ণের একটা ওয়াশের টি শার্ট বের করে সেটা গায়ে ঢুকিয়ে নিলো। মাহি কিছুক্ষণ আশফির দিকে কেমন আজব প্রাণী বা অদ্ভুত দৃশ্য দেখার মতো করে চেয়ে রইল। এরপর হঠাৎ দাঁত বের করে অনুচ্চ হাসি হাসলো৷ আশফি ভিউ মিরোরে তাকিয়ে চুলগুলো হাত দিয়ে ব্রাশ নিতে নিতে বলল,
– “এই চিৎকার করে মানুষ জড়ো করতে চাইছিলেন, আবার ফিক করে হেসে ফেলছেন। জ্বীনের সমস্যা আছে না কি?”
– “এই একদম বাজে বকবেন না। আমি তখন আপনার শার্ট খোলার ব্যাপারটাতে নেগেটিভ কিছু ভেবে বসেছিলাম।”
– “হ্যাঁ জানি এমন কিছু ভাবা আপনার দ্বারা সম্ভব। তার জন্যই গাড়ি লক করেছিলাম। তো হাসছেন কেন আবার?”
মাহি হাসি মুখে জড়িয়ে রেখেই বলল,

– “আপনি গাড়িতে জামা কাপড় নিয়ে ঘোরেন! তা তো জানা ছিল না।”
আশফি ওর দিকে তাকিয়ে একটা উচ্ছল হাসি হাসলো। এরপর মাহির কাছে একটু এগিয়ে এসে নিচু স্বরে বলল,
– “আপনি ব্যাগে অন্তর্বাস নিয়ে ঘুরতে পারেন আর আমি টিশার্ট নিয়ে ঘুরলে হাসি পায়?”
মুহূর্তে মাহির মুখটা একদম চুপসে গেল। মুখটা কালো করে ফেলল সে। লোকটা সুযোগ পেলেই কড়াকড়ি অপমান করে দেয়। এত বদ কেন এই লোকটা? রেগে উঠে মাহি তার জবাব দিলো,
– “আপনাকে এর আগেও আমি বলেছি তার কারণটা। আপনি তাও সুযোগ পেলে এত বিশ্রীভাবে লজ্জা দেন কেন বলুন তো?”
আশফি হাসলো। তারপর বলল,

– “তো আপনার কেন মনে হলো আমি জামা কাপড় গাড়িতে নিয়ে ঘুরি? আমার ক্ষেত্রেও তো এর পেছনে কোনো কারণ থাকতে পারে।”
কথা বলার মাঝেই আশফি গাড়ির লক খুলে দিয়েছে। মাহি দরজাটা খুলে নামতে নামতে বলল,
– “সেটা বললেই হতো।”
আশফিও গাড়ি থেকে নেমে এসে গাড়ি লক করে মাহির পাশাপাশি হাঁটতে শুরু করল। কয়েক মুহূর্ত নীরব দুজনে।
সাঁঝ নেমে গেছে পুরোপুরি। সাঁঝের আলোয় তারা একে অপরের দিকে হাঁটার ফাঁকে ফাঁকে দৃষ্টি ফেলছে। ঘড়িতে সময় দেখা যাচ্ছে না বলে ফোনটা পকেট থেকে বের করে আশফি সময়টা দেখে নিলো। আজকের শহুরে আবহাওয়াটা বেশ দারুণ। হালকা শীতের আমেজ বোঝা যাচ্ছে। বাতাসের গায়ে শীতকে আমন্ত্রণের আভাস। তবুও মন প্রাণ জুড়িয়ে যাচ্ছে মৃদু হিম বাতাসে। মৌনতা ভেঙে মাহি বলল,

– “বললেন না যে?”
– “কী?”
– “এখানে হঠাৎ?”
– “ইচ্ছা করল।”
– “তো আমাকে কেন নিয়ে এলেন?”
– “কেন সমস্যা?”
মাহি সরু দৃষ্টিতে তাকাল আশফির দিকে। কিছুক্ষণ পর আশফি বলল,
– “আমি রাতে ঘুরতে পছন্দ করি।”
– “ছেলেদের তো বন্ধুমহলের আসর জমে রাতেই।”

– “আমার কোনো বন্ধুমহলের প্রয়োজন পড়ে না ঘোরার জন্য। আমি একাই ঘুরি।”
– “হ্যাঁ তাই তো৷ এই যে লং ভ্যাকেশনে আপনি বহদূরে কোথাও ঘুরতে যান। তো গত বছর কোথায় কোথায় ছিলেন?”
– “গত বছর একটা জায়গাতেই ছিলাম। সুইজ্যারল্যান্ড।”
– “আল্পস পর্বতের মনোমুগ্ধকর দৃশ্যাবলী আর ছবির মতো সাজানো গ্রাম সুইজারল্যান্ড। আমি তো গত বছর আমার এক ফ্রেন্ডের মধুচন্দ্রিমায় তোলা ফটো দেখে আল্পস পর্বতের প্রেমে পড়ে গিয়েছি।”

– “তাই! হ্যাঁ সত্যিই প্রেমে পড়ে যাওয়ার মতোই।”
– “কোথায় কোথায় ঘুরেছেন।”
– “মেটারহর্ন, জাংফ্রোজেস, ইন্টারলোকেন, লুসারণ, জেনেভা, জুরিখ, বার্ন।”
– “আন্তর্জাতিক রিসোর্টে ছিলেন নিশ্চয়?”
– “হুঁ।”
– “আরও কিছু বলুন না।”
আশফি মাহির আগ্রহ ভরা চোখ দুটো দেখে বলল,
– “হবুবরকে নিয়ে মধুচন্দ্রিমার প্ল্যানিং চলছে না কি?”
মাহি কপট রেগে বলল,

– “আচ্ছা আপনি মানুষটাই বাঁকা তাই না? কোনোকিছু সোজা ভাবতে পারেন না।”
আশফি স্মিতহাস্যে তাকাল মাহির দিকে।
– “পর্বত খুব ভালোবাসেন নিশ্চয়?”
– “হ্যাঁ। আমার ইচ্ছা আমি আর আমার বর যখন মধুচন্দ্রিমায় ওখানে যাব তখন আমি তাকে সাথে নিয়ে মেটারহর্ন চূড়ার একদম শীর্ষে উঠে তাকে…”
– “তাকে?”
মাহির অসম্পূর্ণ কথায় আশফি প্রশ্ন করল। মাহি বলল,

– “কিন্তু যখন মনে পড়ে ১৮৬৫ সালে যে চারজন আরোহী দুঃখজনকভাবে মৃত্যুবরণ করেছিল, তখন আমার আবার এই ইচ্ছাটা থাকে না। তবে এই পর্বতের পাদদেশের মনোমুগ্ধকর গ্রামে থাকার খুব ইচ্ছা আছে। ঘোড়ায় টানা গাড়িগুলোতে চড়ব আর কাঠের তৈরি একটা বাড়িতে থাকব। রাত নামলে রাতের পর্বত সৌন্দর্য দেখব ওই কাঠের বাড়ির জানালার কাছে বসে। আচ্ছা ওখানে মোটরচালিত যান তো নিষিদ্ধ তাই না?”

– “হ্যাঁ। বাতাসের গুনাগুণ ঠিক রাখার জন্য আর শান্তিপূ্র্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য ওখানে মোটরচালিত যান নিষিদ্ধ।”
– “ওরা ওদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর পরিবেশ নিয়ে কতটা ভাবে। আপনি স্কিইং করেছিলেন?”
– “ওখানে গেলেই আমার করা হয়। স্কিইং করাটা আমি বেশ উপভোগ করি।”
আশফি মাহিকে প্রশ্ন করল,

– “তো আপনার ইচ্ছা মধুচন্দ্রিমাতে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার?”
– “না শুধু সুইজারল্যান্ড নয়। আরও বহু জায়গাতে যাওয়ার ইচ্ছা আছে।”
– “কোথায় কোথায়?”
– “আপনাকে কেন বলব?”
– “কেন আবার? জানতে চাইছি তাই।”
– “জানতে হবে না। আমি শুধু আমার বরকে বলব।”

আশফি অন্যদিকে চেয়ে একটু হাসলো। তারপর দুজন হাঁটতে হাঁটতে আবার গাড়ির কাছে চলে এলো। গাড়ির হুডের ওপর এসে বসলো আশফি। মাহি তার পাশে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করল,
– “আপনি কি সিরিয়াসলি ওকে চাপা দেওয়ার প্ল্যানটা করেছিলেন?”
– “কী মনে হচ্ছিল?”
– “আপনার চেহারার ভাব দেখে তো তাই-ই মনে হয়েছিল।”
আশফি শুনে নীরব রইল। মাহি তার নীরবতা দেখে জিজ্ঞেস করল,
– “বলছেন না কেন? সত্যিই চাপা দিতে চেয়েছিলেন?”
নির্বিকার সুরে আশফি বলল,

– “ভেবেছিলাম।”
মাহি বিস্ময় ভরা কণ্ঠে বলল,
– “কী! তাই বলে মানুষ মারবেন?”
– “বাইকটা মারতে চেয়েছিলাম। এর বেশি কিছু না।”
মাহি হেসে উঠল খুব। আশফি সেই হাসিটার দিকে কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে বলল,
– “ফাজলামি মনে হলো না?”
মাহি হাসি কিছুটা থামিয়ে বলল,
– “একটা প্রশ্ন করব?”
– “মানা করেছে কে?”

– “আমি ওর বাইকে চড়লে আপনার কী? আপনি সঙ্গে থাকলে আমাকে কেন আপনার সঙ্গেই আসতে হবে?”
– “আমি চাই না তাই। আর আমি চাই তাই।”
– “কী? বুঝলাম না।”
– “প্রথম প্রশ্নের উত্তর আমি চাই না আর দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর আমি চাই।”
– “কেন চান না? আর কেন চান?”
– “ঘুরে ফিরে আবার সেই একই প্রশ্ন কেন।”
– “অবশ্যই আমার জানা প্রয়োজন।”
আশফি মাহির চোখের দিকে তাকাল। প্রচন্ড উদ্বিগ্নতা সেই চোখে। একটা তৃপ্তির আভাস চেহারাতে ফুঁটে উঠেছে তার। ওষ্ঠকোণে মিষ্টি মৃদু হাসি। আশফি উঠে তার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বলল,
– “যখন মানুষটাই খুব বিশেষ আমার জন্য।”

এটুকু বলে আশফি কতক্ষণ মাহির মুখপানে নিষ্পলক চেয়ে ছিল তা অজানা। মাহি চাইতেও পারেনি তার দৃষ্টির সামনে হতে দূরে আসতে, চাইতেও পারেনি তখন তার দৃষ্টিতে দৃষ্টি মেলে তাকিয়ে থাকতে, চাইতেও সে বলতে পারেনি,
– “এভাবে দেখবেন না আশফি। আপনার চাউনিতে যে ঝড় বয়ে যায় ভেতরটায়। হৃদয়কোণের তল্লাট জুড়ে চাহনির ঝড়ে তোলপাড়।”

– “আকাশের অবস্থা দেখেছেন? ছোটোখাটো ঝড় হবে আজ।”
– “আমি এখন আরও বড় ঝড় উঠাব যদি আপনিটা না যায়।”
দিয়া হাসলো দিশানের কথাতে। দিয়া ইচ্ছা করেই যেন তাকে আপনি বলে। দিশান তা বুঝতে পারে। আচমকা দিশান তার হাতদু্টোর মাঝে দিয়ার গালটা ধরে করুণ সুরে বলল,
– “প্রিয় দিয়া, কেন তুমি নয়? কেন আপনি? কেন এই দূরত্ব আমাদের মাঝে? আমি আহত এ ডাকে। তবে কি আমি শহরের আনাচে কানাচে প্রেম বেদনায় জর্জরিত শত শত আহতবাসীদের নিয়ে মিছিল, সমাবেশ গড়ব? তাহলে এই যন্তণাকর, অনুভূতিশূন্য সম্বোধন থেকে রক্ষা দেবে তো?”

দিয়া হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ল দিশানের গায়ে।
– “এত অ্যাডভান্স কেন তোমার সবকিছু বলো তো?”
দিশান একটা দীর্ঘ শান্তির নিঃশ্বাস ত্যাগ করে সিটে হেলান দিলো। এরপর বলল,
– “আমি আমার ফার্স্ট রিলেশনশিপে প্রপোজালটা তার তরফ থেকেই পেয়েছিলাম। কিন্ত ফার্স্ট কিসটা বিনা ভঙ্গিমায় আমিই আগে করেছিলাম। বলতে পারো আমি রিলেশনশিপে ওভার ফিল শাই, বেশি ন্যাকাপনা একদমই অপছন্দ করি। কিন্তু….”

দিয়ার দিকে চোখ পড়তেই দিশান থেমে গেল। কেমন আহত সেই দৃষ্টি। দিশান বুঝতে পারল দিয়ার এই মুহূর্তের মনোভাব। সে দিয়ার কাছে এগিয়ে তার হাতদু্টো নিজের হাতের মাঝে ধরে বলল,
– “পরের কথাগুলো কি বলার সুযোগ দেবে আমায়?”
দিয়া দৃষ্টি নত রাখল শুধু।
– “কিন্তু আমি একটা জায়গায় এসে আমার এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ছিটকে পড়েছি দিয়া। সেই জায়গাটা কোথায় জানো?”
দিয়া মলিন মুখটা উঁচু করে তাকাল দিশানের দিকে। দিশান বলল,

– “এই যে এই জায়গাটায়। তুমি যখন তোমার চশমা ঠিক করার বাহানায় আমাকে দেখতে, আমার চোখে চোখ পড়লে লজ্জা পেয়ে তা আড়াল করার জন্য কপট রেগে উঠতে, এই ব্যাপারগুলো কেন জানি না আমার ভীষণ ভালো লাগত। আমি চাইতাম তোমার এই ব্যাপারগুলো বারবার ফেস করতে। তাই তো তোমাকে সামনে পেলেই তোমার সঙ্গে মজা করতাম, যাতে এই ভালোলাগাগুলো আবার পাই।

– “আমি স্যরি দিশান। আসলে আমি ভুলে গিয়েছিলাম তুমি তোমার জীবনের অধিকাংশই দেশের বাইরে কাটিয়েছো। সেখানে তোমার সঙ্গে আমার কখনোই যায় না। আমার মনে হয় আমাদের….”
কথাগুলো শেষ হওয়ার পূর্বেই সেই প্রথম দিনের ঝক্কিটা এলো আবার। আসলে এই ব্যাপারট কেবল দিয়ার কাছেই ঝক্কি। কিন্তু দিশানের কাছে এটা মাত্র টিক্যাল(আলতোভাবে স্পর্শ করা)। দিশান তাকে ছেড়ে দিয়ে তার মুখের দিকে তাকাল। দিয়া লজ্জাচোখে চেয়ে আছে দিশানের দিকে।

– “যে কথাটা তুমি সম্পূর্ণ করতে চাইছিলে তা সম্পূর্ণ আমি কখনোই হতে দেবো না দিয়া। আমি আমার ভার্জিনিটি হারাই যখন আমি টুয়েন্টি প্লাস। একজন বাঙালি হয়েও আমি গড়ে উঠেছি পশ্চিমা কালচারে কেন জানো? কারণ যে সময়টা একটা বাচ্চা তার পরিবার থেকে প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করে, সেই সময়টা আমি আমার পরিবার থেকে দূরে। হ্যাঁ সবাই জানে আমি বাবার কাছে বড় হয়েছি। কিন্তু এটা ভুল, আমি বড় হয়েছি ন্যানির হাতে। আসলে বাবার ইচ্ছা ছিল ভাইয়াকে তার কাছে রাখার। কিন্তু ভাইয়া খুব শক্ত মনের মানুষ। বাবা হলেও সে বাবাকে মাত্র হাতে গোণা কয়েকবার বাবা বলে ডেকেছে। দাদীবু, দাদার কাছ থেকে বাবা কখনোই ভাইয়াকে নিয়ে যেতে পারেনি। সেটা ভাইয়ার জন্যই সম্ভব হয়নি। কিন্ত আমি তো খুব ছোট ছিলাম, তাই বাবার কাছে থাকার জন্য পাগল হয়ে গিয়েছিলাম। বাবার কাছে থাকতে পারব আমি, এই ভাবনাটা আমাকে ভীষণ খুশি করেছিল।”

তুমি রবে পর্ব ৩১

কথাগুলো বলে দিশান থামল। দিয়া উৎসুক চাহনিতে চেয়ে রইল দিশানের দিকে। দিশান একটু হেসে দিয়ার হাতটা ধরে বলল,
– “তুমি যদি ভেবে থাকো, শুধুমাত্র আমার এই কালচারগুলোর জন্য আমার থেকে দূরে থাকবে, আমি তোমাকে থাকতে দেবো না দিয়া। তুমি যেতে চাইলেও আমি তোমাকে যেতে দেবো না। আমাকে তোমার বিশ্বাস করতে হবে দিয়া। আমার চলাফেরা সম্পর্কে তোমার ধারণা সীমিত। কিন্তু যা জানো তা সবকিছুই নেগেটিভ জানো। পজিটিভটা জানানোর সুযোগ আমাকে তোমায় দিতে হবে দিয়া।”
দিয়া খুব শক্ত করে দিশানের হাতটা ধরল।

তুমি রবে পর্ব ৩৩