তোকে ছুয়েছি আঁধারে পর্ব ৪১

তোকে ছুয়েছি আঁধারে পর্ব ৪১
ভূমিকা তালুকদার

[Save your liver before touching the liver]
(কলিজাতে হাত দেওয়ার আগে কলিজাকে বাঁচিয়ে নাও)
~Monster~
শুকনো র’ক্তে লিখা চিঠিটা হাতের নিয়ে জায়ান চারপাশে চোখ ঘুরাতে থাকে। মাথাটা ব্যথায় টন টন করে উঠছে।জায়ান কিছুক্ষণ নিজেকে স্থির করলো মাথার চুল চেপে ধরে।চিঠিটা হাত দিয়ে মুচরে মুচরে এক দৌড়ে ম্যাপল পাতার গাছের কাছে এসে দেখে লিয়ানা নেই।লিয়ানার উপর রাগ ঝারতে গাছের মধ্যে অনবরত ঘুষি মারতে থাকে।কপাল বেয়ে ঘাম হাত বেয়ে টাটকা শীতল র’ক্ত গড়িয়ে পড়তে থাকে।এদিক ওদিক পুরো গার্ডেন। প্যালেস অফ লিয়ার্জ এর প্রত্যকটা জায়গা প্যালেসের ভিতরের করিডর বেড, ডাইনিং, লাইব্রেরি রুম সব জায়গা চিৎকার করে করে খুঁজতে থাকে,

শালী বান্দীর ঘরে বান্দী, আমার সাথে ছলনা।জায়ান খানের সাথে। তোর শরীরের র’গ গুলো একেকটা করে গুনবো আমি।
বেশ্ কিছুক্ষণ পুরো চারপাশ বেডের নিচ কোনো কানাকুনিও বাদ রাখে নি যেখানে খুঁজে নি জায়ান।অতিরিক্ত হাইপার হয়ে না হাতের চিঠির মিনিং টা বুঝা তো দূর হাতে যে একটা চিঠি মুঠ করে ধরে আছে তা ভুলে গিয়ে গাগলের মতো লিয়াকে খুঁজতে থাকে।ডাইনিং স্পেসের জিনিসপত্র সব এদিক ওদিক ছুড়ে ফেলতে ফেলতে হঠাৎ হাত থেকে চিঠিটা পড়ে গেলে এবার নজর কাড়ে তা।জায়ান দু’বার চোখ বুলালো চিঠিতে,শরীরের রক্তগুলো টগবগিয়ে উঠতেই ঠোঁটের ফাঁক গলে তিনটে শব্দ প্রতিধ্বনি হয়,
কলিজা!মন্সটার! Save!

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

প্যালেস অফ লিয়ার্জ জায়ানের সম্পূর্ণ গোপনীয় প্যালেস।বাড়িটা পুরোটা লিয়ানার নামে রেজিস্ট্রার করা।গ্রেট জায়ানের গোপন প্যালেস এর ঠিকানা শুধু চারজন ব্যাক্তি জানে,মার্কো,নাদিয়া,এলেক্স, জায়ান নিজে।দেশের সরকারও জানে তবে তা যে জায়ানের তা এদের বাদে আর কারোর জানার কথা না।পিছনে জঙ্গলের রেস্ট্রিকটেড এরিয়া।না কোনো জন মানব এর ছায়া এখানে পড়ে।যোগসূত্র খুঁজে উঠার আগে এক মূহুর্ত টাইম ওয়েস্ট না করে জায়ান গাড়ির চাবি নিয়ে, ল্যাম্বরগিনির ড্রাইভিং সিটে বসে সোজা প্যারিসের উদ্দেশ্য রওনা।জায়ানের হাত অচল হয়ে যাওয়ার উপক্রম ততক্ষণে। মাথাটা ছিঁড়ে যাবে যেনো

।এ’য়ারপিস কানে লাগিয়ে মেইন সিটির পুলিশ স্টেশনের পাষার জুনিয়র ইনস্পেক্টর পিটারকে কল করে প্রত্যেকটা রাস্তার, গোলচত্তর,গুলোতে ট্রাফিক পুলিশ নামিয়ে চেকিং এর আদেশ দেয়।ফ্রান্সের যতগুলো ডিপার্টমেন্ট আছে প্রত্যকেটা পুলিশ স্টেশনে খবর পৌঁছে দিতে বলে,এয়ারপোর্টগুলো তে কড়া নজর হাই সিকিউরিটি গার্ড এর নির্দেশ দেয়।জায়ান চোয়াল শক্ত করে কুখ্যাত মাফিয়া ডন কোবরা কে ইচ্ছেমতো বাংলা গালি মারতে মারতে গাড়ি ফুল স্পিড করে প্যারিসে চলে আসে।গাড়ি এনে শ্যাডো এম্পায়ার এর সামনে দাঁড় করিয়ে হনহনিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে চিল্লাতে থাকে। জায়ানের চিল্লানোর আওয়াজ পেয়ে রান্না রুম থেকে মিসেস হান আর মেরিন দুজনেই আঁতকে উঠে ডাইনিং এ আসতেই মেরিন থ মেরে এখানেই দাঁড়িয়ে পড়ে শুকনো ঢুক গিলে নিজের জামার উড়না দিয়ে তড়িঘড়ি করে বড় করে একটা ঘুমটা টেনে ভিতরে চলে যায়।বুকটা মুচড়ে উঠলো তার,তোতলাতে তোতলাতে ফিসফিস করে উঠে,

“আমি কি ঠিক দেখেছি। আমি কাকে দেখলাম। ”
মেরিন নিজের চোখ জোড়া কচলাতে লাগলো। বিষম খেতে খেতে রুম থেকে উঁকি মেরে তাকাতেই শুধু জায়ানের পিছন দিকটা দেখতে পায়।কণ্ঠটা চিনা মনে হলো তার।যদিও মেরিন শুধু তার বার্থডে পার্টিতে একবারের জন্যেই দেখেছিলো জায়ানকে তার আবার একটুর জন্যে। তবে মনটা বার বার অজানা আতঙ্কে ভরে উঠে।নিজের মাথায় চা’টি মেরে নিজেকে বুঝাতে ব্যস্থ হয়ে পড়ে।

“কোন কু’*ত্তার বাচ্চার কলিজাটা ঠিক কতো বড় তার আমি দাঁড়িপাল্লা দিয়ে মেপে নিবো।শুয়ো*রের বাচ্চা।মাদারফা*কার।দুনিয়াডা মনে হয় আমায় আর ভালো থাকতে দিবে না।জানো*য়ারের বাচ্চা, জেন্ত মাটিতে পুতে রেখে দিবো।জায়ান খানের কলিজায় হাত মা-রা সারাজীবনের জন্যে চু’কিয়ে দিবো।হাত আর হাতের জায়গায় থাকবে না।লোহা ডু’কিয়ে দিবো”

জায়ানের চিৎকারের এম্পায়ার ভূমিকম্পের ন্যায় কম্পিত হতে লাগলো।নাদিয়া এলেক্স উপর থেকে তড়িঘড়ি করে নামতে লাগলো।নাদিয়ার মেজাজ এমনিতে সারাদিন একশো মাত্রায় জ্বলে জ্বলে উঠছে। মার্কোর সাথে বাইক রাইডিংয়ে হেরে নাজেহাল অবস্থা। নাদিয়া আবার এলেক্সকে মেরে চোখ ফুলিয়ে দিয়েছে। শ্যাডো এম্পায়ারে এমনিতেই আগুন জ্বলে আছে।এদিকে জায়ানের চেঁচামেচিতে দু’জনেই নেমে আসে।জায়ান নিজের সাইলেন্সারযুক্ত পিস্তলে গুলি ডুকাতে থাকে। তবে এলেক্স আর নাদিয়া আঁতকে উঠে তখনি যখন জায়ান শ্যাডো এম্পায়ার এর বান’কারের থেকে AK-47,Glock 19,AWM SniperM16, M16 Assault Rifle এগুলো বের করে আনে।নাদিয়া তড়িঘড়ি করে রিমোট চেপে এম্পায়ার এর চারপাশের কাঁচের গ্লাসগুলোর উপরে থাকা সমস্ত পর্দাগুলো নামিয়ে দেয়।এলেক্স চোখ বড় বড় করে জায়ানের কাছে এসে অবৈধ অস্ত্রগুলো নিতে থাকে।

“Zayan! Are you mad!What happened bruh”
“সবগুলোকে মে’রে এখানেই কবর দিয়ে দেয়ার ব্যাবস্থা করছি।”
নাদিয়া:”কাকে মা’রবি জায়ান।কি হ’য়েছে সেটা তো বল।উত্তে’জনার বসে এমন কিছু করে ফেলিস না যা আমাদের ক্ষতি হয়।ঠান্ডা মাথায় বসে ক্লিয়ার কাট কথা বল।আমরা একসাথে মিলে সল্ভ করবো।Now tell me”
জায়ানের চোখমুখ ততক্ষণে রক্তিম বর্ণ ধারণ করে হাতের রগ গুলো টানটান হয়ে গিয়েছে। কপালের শি’ড়া ফুলে উঠে ভাসমান হয়ে গিয়েছে। যেনো আশেপাশের সব ধ্বংস করে দিবে।হাত দিয়ে অস্ত্রগুলো এক্টিভেট করতে থাকে। জায়ান দাঁতে দাঁত পিষে ব’লে উঠে,

“নাদিয়া।হেলিকপ্টার গুলো রেডি কর ফাস্ট। লিন কে খুঁজে পাচ্ছি না।আমি প্রত্যেকটা ডিপার্টমেন্টে গার্ডদের পাঠিয়ে দিয়েছি।”
“What!পাচ্ছিস না মানে কি।কোথায় লিয়ানা।কি হ’য়েছে বল।এটা কি ডক কু’বরার কোনো প্ল্যান? ”
“যার হউক।যদি লিনের গায়ে একটা আঘাত লাগে,একটা ফুলের টুকাও লাগে পুরো পৃথিবী দেখবে জায়ান ঠিক কতোটা নিচে নামতে পারে ঐই নারীর জন্যে,”
“যে কোনো কিছুর বিনিময়ে হলেও লিন কে আমার চাই মানে চাই।আমি যা ব’লেছি ফাস্ট কর।”

এলেক্স :Wait! wait!তুই কি লিয়ানাকে নিয়ে কোথাও গিয়েছিলি?লোকেশন দে। সেখানে হাই সিকিউরিটি টিমের ব্যাবস্থা করি।ওয়েট প্রত্যেকটা সিটির রোড সাইড সিসিটিভি ফুটেজ গুলো চেক্ করি”-বলেই এলেক্স ল্যাপটপ অন করে ডিভাইস কানেক্টেড করতেই যাবে।জায়ান টেবিলের উপরের থাকা কাচের গ্লাসে মুঠোতে করে চাপ প্রয়োগ করে। কাঁপা হাতের জোরে গ্লাস ফেঁটে ভেঙ্গে কাচ ভাঙ্গাগুলো হাতে গেঁথে যায়।মাথায় চেপে কিছুক্ষণ চুপ থাকে।হাতের র’ক্ত কপাল পেয়ে গড়াতে শুরু করে।কাচের টুকরো গুলো হাত থেকে টেনে খুলতে খুলতে ব’লে,
লিন।আমার প্যালেস থেকে মিসিং হয়েছে।

“I want her Nadia”Any How!I let the world burn for her!
নাদিয়া এলেক্স দু’জনেই আশ্চর্য হয়ে যায়।এলেক্স ল্যাপটপ বন্ধ করেই হতবাক হয়ে ব’লে উঠে,
“Impossible Zayan!তুই কি সেন্সে আছিস।লিয়ার্জ প্যালেসের লোকেশন ডন কুবরা কেন কোনো হান্টারি খুঁজে পাওয়ার কথা না।”
“একটু ভেবে দেখ লাস্ট টাইম লিয়ানা তোর সাথেই তো ছিলো তাই না।”
জায়ান এবার মাথা উঠিয়ে এলেক্সের দিকে রক্তিম দৃষ্টি ফেলে বলে,

“আমি কি করবো বল। আমায় চিনিস না।এতো রাগ জেদ থাকার পরও দূর্বল হয়ে আছি তার কাছে।নিজেকে যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করি। শালী বারবার আমার কথার অবাধ্য হয়।যার জন্যে এ-তো কিছু করলাম সে বুঝতে পারে না আমায়।শরীরের ভিতরের দানবটাকে বারবার জাগিয়ে দেয়।রাগ উঠলো, গাছের সাথে বেঁধে দিলাম বেশ্।তারপর আর খুঁজে পাইনি।”

নাদিয়া কপালে হাত রেখে সোফায় বসে পড়ে।জায়ানের এমন কর্মকান্ডে। ভার্সিটির কথা মনে পড়ে যায় তার। জায়ান একটা চাইনিজ ছেলেকে গাছের সাথে বেঁধে লোহার রড দিয়ে ইচ্ছেমতো মেরেছিলো।পুরো পঙ্গু বানিয়ে ছেড়েছিলো।তাই বলে লিয়ানাকেও।নাদিয়ার সিক্সসেন্স বুঝতে পারলো নিশ্চয়ই লিয়ানা জায়ানের কাছ থেকে নিজের ইচ্ছায় গিয়েছে। হয়তোবা রাগে। কিন্তুু বেশিদূর তো যাওয়ার কথা না।কোনো বিপদ আপদ হয়ে গেলে।চ’ট করে মস্তিষ্কে কি ভেবে যেনো আল্পস ওর জঙ্গলের কথা আসলো।ঠোঁট গলে শব্দ বেরিয়ে আসলো।
“alps forest”প্যালেসের পিছনে।”

জায়ান শব্দটা শুনার সাথে সাথে সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে পড়ে।হাত মুষ্টিবদ্ধ করে। ঘাড় এপাশ ওপাশ কাত করে। হাত দিয়ে মাথার ঘাম মুছে।পকেট থেকে চিঠিটা বের করে পুরো সমীকরণ মিলিয়ে নেয়।শ্যাডো এম্পায়ারের রফ’টপে ততক্ষণে তিনটে হেলিকপ্টার এসে নামে।এলেক্স ঘাড় ঘুড়িয়ে মেইন দরজার মনিটরে দেখতে পায় রেহমান পাষা এম্পায়ারের দিকেই আসছে।পাষাকে আসতে দেখে যত যা অস্ত্রগুলো ছড়িয়েছিটিয়ে পড়ে ছিলো।সব গুলো বুকের ভাঁজে নিয়ে রান্নার রুমের দিকে চলে যায়।তাড়াহুড়ো করে সবগুলো রাইফেল কেবিনেটে ঢুকাতে থাকে।নাদিয়াও খেয়াল করতেই বিরক্তি নিয়ে ব’লে উঠে,

“এই বা’লটা আবার এখানে কেন!কুখ্যাত মুখটা নিয়ে হাজির না হলে চলে না।”
জায়ান যে পিটারকে কল করেছিলো।পাষা জানতে পেরে সোজা শ্যাডো এম্পায়ারে চলে আসে।ইন্সপেক্টরের পোশাক পড়ে, চোখে সানগ্লাস লাগিয়ে।ভিতরে প্রবেশ করেই পকেটে হাত রেখে তীক্ষ্ণ চোখে জায়ানের দিকে এগিয়ে এসেই বাঁকা হাসে।
“আপনি ডাকলেন আমি চলে এলাম।মিস্টার জায়ান আমার কি মনে হয় জানেন আপনার সাথে আমার চিনি গুড়ের সম্পর্ক।”
জায়ান চোয়াল শক্ত করে রেহমান পাষার কলার চেপে ধরে ফেলে।

“আপনাকে আমার দরকার নেই।গেট লস্ট।আমি আপনাকে ডাকি নি।”
রেহমান পাষা জায়ানের কাছ থেকে শার্টের কলার ছাড়িয়ে ।সোফায় পায়ের উপর পা উঠিয়ে বসে পড়ে।চোখের সানগ্লাসটা খুলে জায়ানের দিকে দৃষ্টি ফেলে ব’লে,
“লুকোচুরি খেলা খেলেও লাভ হচ্ছে না।বউকে লুকিয়ে রেখেও হারিয়ে ফেলেন।এটা আপনার থেকে বোধগম্য নয়।সো স্যাড।বাই দ্যা রাস্তা ওাষা ইজ্ কামিং।একসাথে খুঁজা যাক চলুন।”
রেহমান পাষার কথায় জায়ানের পায়ের রক্ত তড়তড় করে মাথায় উঠে যায়।সাইলেন্সার যুক্ত বন্দুকটা সোজা পাষার কপালে সামনে ধরে ফেলে।রেহমান পাষা উঠেই জায়ানের কপালে নিজের বন্দুক ধরতেই।নাদিয়া সামনে এসে দাঁড়িয়ে পাষার বন্দুক দরে ফেলে।

“উহু।ডার্লিং সরো তো।”
“আপনি কি এখান থেকে যাবেন নাকি।আপনাকে গুম করে দিবো সারাজীবন এর জন্যে এটা আপনার লালবাতির পুলিশ স্টেশন না।”
জায়ান নাদিয়াকে সরিয়ে পাষাকে মারতে উদ্ধৃত হলে এলেক্স এসে ধরে ফেলে।
“জায়ান। এসবের এখন টাইম নয়।টাইম ওয়েস্ট হচ্ছে।”

জায়ান হিংস্র সিংহের ন্যায় গর্জে উঠে চেয়ারে লাতি মেরে হনহনিয়ে রফ’টপের দিকে পাঁ বাড়ায়।নাদিয়া এলেক্স তাদের লিগ্যাল বন্দুক সাথে নিয়ে জায়ানের পিছন পিছন চলে আসে।তিনটা হেলিকপ্টার। প্রথমটায় জায়ান উঠে,দ্বিতীয়টায়, এলেক্স।আর তৃতীয়টায় নাদিয়া উঠে বসলে।সেটাতে রেহমান পাষাও এসে বসে পড়ে। নাদিয়া বিরক্ত হয়ে পাষাকে ধাক্কা মারতে থাকে। পাষা নাদিয়ার হাত চেপে ধরে। পাইলটকে স্টার্ট দিতে বলে।তিনটে হেলিকপ্টার বাজ পাখির ন্যায় আকাশে উড়ে আল্পসের দিকে রওনা হয়।আল্পস এর অন্ধকার জঙ্গল বিশাল বড়।জায়ান আসার আগে একশো গার্ডকে আগে থেকে সেখানে পাঠিয়ে দিয়েছে।হিম ধরা ঠান্ডার মাঝেও জায়ান ঘেমে একাকার হয়ে গিয়েছে। পুরো শার্ট ঘেমে গায়ের সাথে লেপ্টে আছে।

শরীরটা বারবার অস্থির হয়ে উঠছে।হৃদস্পন্দন জোরে জোরে বিট করা শুরু করে দিয়েছে।এখুনি বুঝি প্রাণ পাখিটা বেরিয়ে আসবে।হঠাৎ জায়ানের ফোনে একটা নোটিফিকেশন আসে।জায়ান রাগে ফেন সুইচটপ করার আগেই একটা লোকেশন এর ম্যাসেজ দেখে। ভ্রু কুচকিয়ে স্ক্রিনে ক্লিক করতেই।জায়ান পাইলটকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে ফুল স্পিডে আল্পস এর দিকে যেতে বলে।জায়ান সাইলেন্সার যুক্ত বন্দুকটা হাতে নিয়ে কপালে ঠেকিয়ে চোখজোড়া বন্ধ করে রাখে।

কয়েকমিনিটের মধ্যে হেলিকপ্টারগুলো আল্পসের ঘন অন্ধকার জঙ্গলের মাঝে এসে ল্যান্ড করেতে থাকে।হেলিকপ্টার মাটি স্পর্শ করার আগেই জায়ান লাফিয়ে নেমে পড়ে।জায়ান চারপাশটা ভালো করে দেখতে থাকে।তিনটা রাস্তা তিন দিকে। ঘন বড় বড় গাছপালায় ঘেরা চারপাশ।উত্তরে হিমেল বাতাস তিব্র বেগে বাড়তে থাকে।জায়ানের বুক উঠানামা করতে থাকে। বড় শ্বাস টেনে।এলেক্সকে বা পাশের রাস্তায় যেতে বলে,আর নাদিয়ার সাথে রেহমান পাষাকে ডান পাশের রাস্তায় পাঠিয়ে। জায়ান মাঝের রাস্তা বড়াবড় গুহার পথ ধরে হাটঁতে শুরু করে।জায়ান যতবার পাঁ ফেলছিলো শুকনো পাতার খচখচ শব্দ হচ্ছিলো।আশেপাশে বন্দুক তাক করে করে সামনে এগুতে থাকে রাত হয়নি তবে এখানের গাছ পালা এতোটাই ঘন লতাপাতা গাছের শিকড়। বড়বড় ভিন্ন প্রজাতির গাছে ভরা যে সূর্যের আলো কম প্রবেশ করে।

Norway Spruce (Picea abies)আল্পসের সবচেয়ে সাধারণ বড় পাইন জাতীয় গাছ। সবুজ সুচের মতো পাতা, যা কিনা ঠান্ডা আবহাওয়ায় টিকে থাকে।গাছের ডালে একটা ছায়ামূর্তি ভাসমান হয়। বড় কালো ওভারকোটে গাঁ জড়ানো।হাতে চিরচেনা কালো গ্লা’ভস।মুখ ব্লেক মাস্ক ধারা লুকায়িত। মাস্ক ম্যান শিকার করে রাতে।দিনে তেমন বের হয় না।দিনে তার আস্তানায় বসে সর্বত্র লোকেশন ফাইন ডাউট করতে থাকে।ধ/র্ষ/ণকারীকে মে’র তার রক্তে গোসল করার ক্ষুধা তার।ঘাড় ছুঁই ছুঁই চুল গুলো হাতের মধ্য আঙুলে পেঁচিয়ে ঢুলতে থাকে।অনেকদিন ধরে খুঁজ নিচ্ছিলো আল্পসের পুরো ঘাটি বেঁধে বসবাস করার নর/কখাদক টাকে নিজের শিকার বানাবে ব’লে। নর/খাদকটা খায় র/ক্ত, মাস্ক ম্যান তার র’ক্তে হবে সুদ্ধ।নিজের শিকারের খুঁজে এসে দেখতে পায় শিকার করছে শিকারী।সকালেই লিয়ানাকে নিয়ে যেতে দেখেছিলো।মাস্ক ম্যান মাস্কের আড়ালে একটা পৈশাচিক হাসির রেখা টেনে। এক লাফে গাছ থেকে নেমে পড়ে।চতির দৃষ্টি তে হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে গুনগুনিয়ে হাঁটতে শুরু করে,

“Twinkle twinkle little star.
How i wonder what’s u are…”
ভারি কালো বুট জুতো দিয়ে পাঁ ফেলে চলে আসে গুহার কাছে।ভিতর থেকে কাচা মাং/স পোড়ার গন্ধ।সাথে ধোঁয়া উড়ে এসে নাকে লাগতেই। মাস্ক ম্যান তা টেনে নেয়।গুহাড় দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে ধারালো চাকুদুইটা বের করে পাথুরে দেয়ালে ঘষতে থাকে। ধার দিতে থাকে। মনের আনন্দে ধার দিতে দিতে ছড়া গাইতে থাকে।হঠাৎ কারোর পাঁয়ের শব্দ পেতেই একটা গাছের পিছনে লুকিয়ে পড়ে।দেখে জায়ান এদিকেই আসছে।ঘাড়টা কাত করে জায়ানের দিকে শকুন দৃষ্টি নিক্ষেপ করে জায়ানের দিকে চাকু তাক করে ব’লে উঠে,
“you are dmn clever man!Evrytime you know, i know, i know you know.
I think romeo Fail.”
পুরো গুহার ভিতরে হাড়গুঁড় শুকিয়ে পড়ে আছে।জায়ান মাকড়শার বাসার জাল গুলো হাত দিয়ে সরিয়ে সামনে এগুতে থাকে।

নর/খাদকটা চেয়ারে বসে মাং/স পুড়া খাচ্ছে।গ্লাস ভর্তি তাজা র’ক্ত। পাশের চেয়ারে চোখ মুখ বাঁধা অবস্থায় লিয়ানা সেন্সলেস হয়ে পড়ে আছে।জামার হাতা ছিঁড়ে কনুই ভাসমান।বুকের মধ্যে স্কার্ফটাও নেই।সেটা দিয়েই চোখ বাঁধা তার।হাতে পায়ে আঁচড়। নর/খাদকটা টপনে হিঁছড়ে আনার ফলে পুরো শরীরে ছোট ছোট ক্ষতগুলোতে র’ক্ত জমাট বেঁধে আছে।মুখটা ফেকাসে হয়ে নীলবর্ণ ধারণ করে আছে।গোলাপি ঠোঁটজোড়া সাদা হয়ে উঠেছে।
নর/খাদক টা Iv পুষ করার পলে লিয়ানার হুঁশ ফিরে নি এখনো।

নরখাদকটা তার নোং/রা জিভ বের করে লিয়ানার দিকে কুদৃষ্টি স্থাপন করে।সামনে গিয়ে তার বিভিন্ন রকমের ছুড়ি,চাকুগুলো থেকে একটা কেঁচি বের করে আনে,লিয়ানার সামনে এসে দাঁড়িয়ে মুখের দিকে ঝুঁকে একটা বিচ্ছিরি হাসির রেখা টেনে লিয়ানার শরীরের ঘ্রান টানতে থাকে। পশুর মতো লিয়ানার চুল কাটাঁ জন্যে হাত বাড়ানোর আগেই রডের তিব্র আঘাতে হুমড়ি খেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। জায়ানের বজ্রাঘাতের পলে ন/রখাদকটার নাক বেয়ে গরম র’ক্ত গড়িয়ে পড়তে থাকে।জায়ানের চোখে শীতল হিংস্রতা।বড় বড় শ্বাস টেনে টেনে লিয়ানার দিকে দৃষ্টি ফেলে, লিয়ানার মাথা নিজের বুকের চেপে ধরে, কপালে একটা প্রশান্তির চু*মু খেয়ে ব’লে
“I am coming my white rose.my sweetheart. ”

জায়ান সামনে এগিয়েই ইচ্ছামতো ন/রখাদকটাকে রড এর আঘাত করতে থাকে অনবরত। অগনিত। জায়ান চাইলে একে গুলি করে মারতে পারে তবে এতো সহজ মৃত্যু কি করে দিবে।এ তো তার কলিজা ছিঁড়ে বের করতে চাইলো।এখন তার কলিজাটা বের করে দাঁড়িপাল্লায় মাপার সময় চলে এসেছে। নর/খাদক টা হুমড়ি খেয়ে এসে জায়ানের পায়ে কামু/ড় বসিয়ে দেয়।জায়ান চোয়াল শক্ত করে এক লাথি মেরে তার গলায় পাঁ চেপে ধরে। নর/খাদক টার গলা নাক বেয়ে গরম র’ক্ত গড়িয়ে পড়তে থাকে। জায়ান হাটুগেড়ে বসে শয়তানটার চুলের মুঠি চেপে ধরে।লিয়ানার চুল কাঁটার শখ মিটাতে তার সম গুলো চুল টেনে টেনে সব ছিঁড়তে শুরু করে।নর/খাদকটা মরণ যন্ত্রণায় কুঁকড়ে উঠে গুঙিয়ে উঠে।হঠাৎ লিয়ানার শরীর নড়ে উঠতেই জায়ান মুখে আঙুল দিয়ে ব’লে

“হুশশশশ!”
জায়ানের শরীরের সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করে চুল টেনে ছিঁড়তে তীব্র টানের ফলে মাথার চামড়া ছিঁড়ে চলে আসে। জায়ান নর/খাদকটার নাক পাতালি অনবরত ঘুষি মারতে মারতে আদম’রা বানিয়ে পাঁ ধরে টেনে আরেকটা চেয়ারে বসিয়ে বেঁধে ফেলে।তার এই পৈশাচিক ভয়ানক দৃশ্য দূর থেকে কেউ একজন ক্যাপ্চার করতে থাকে। মাস্ক ম্যান জায়ানের পিছন পিছন গুহায় প্রবেশ করে দেয়ালে গাঁ হেলিশে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জায়ানের প্রতিটা স্টেপ ফলো করতে থাকে।আর আঙুল ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে ছড়া কাটতে থাকে।যেনো তার মানুষ মা’রা যেমন শান্তি দেয়।মা’রতে দেখা আরও আনন্দিত করে।
জায়ান গর্জে উঠে,

“Motherfu*ker…you d*ck is useless.ass*oles ”
জায়ান যেনো সম্পূর্ণ মন্সটারে রূপ নিয়ে ফেলেছে।সে এখন তার নিয়ন্ত্রণে নেই।ঠোঁটের কোনে একটা পৈশাচিক হাসির রেখা টেনে, একটা চেয়ার এনে খাদকটার সামনে বসে পড়ে।নর/ক যন্ত্রণা অনুভব করানোর জন্যে ধারালো ছুড়ি তার গলায় ঢুকিয়ে গোল করে ঘুড়াতে শুরুকরে।নর/খাদকটার গলা বেয়ে রক্ত ছিটকিয়ে জায়ানের উপর এসে পড়তে জায়ান উচ্চশব্দে হাসতে গিয়েও পারে না।হুঁশশ করে।লিয়ানাকে উঠতে দেয়া যাবে না একদমি।খাদকটার গলা দিয়ে গোঙানির শব্দ কানে আসতেই যেনো জায়ানের কলিজা শান্তি পেলো।সুক্ষ্ম হাতে ছুড়ি চাম*ড়া ছিঁড়ে কাটাতে শুরু করে।হাতের চাম/ড়া কেটে প্লেটে রাখে।নর/খাদকটা প্রায় ম’রা ম’রা অবস্থা। জায়ান ঘাড় কাত করে বলে,

“জানিস। আমি না অনেক ভালো রান্না পারি।খেতে চাস? ”
জায়ান চেয়ার ছেড়ে উঠেই সামনে গিয়ে চুলার কাছে। মাং/স গুলোতে লবণ মরিচ মাখিয়ে ফ্রাই পেনে কষাতে শুরু করে।নিখুঁত ভাবে নর/খাদকটার মাং*স কষিয়ে। তার সামনে এনে ধরে।এতদিন তো অন্যের গুলো খেয়ে খেয়ে পেট পুড়িয়েছি এবার না হয়।নিজের টাই খাঁ
জায়ান জোর করে মুখ চেপে খাদকটার মুখে মাং/স ডুকিয়ে দেয়।
“কেমন লাগছে নিজের মাং/স নিজে খেতে?”

জায়ান এবার ইচ্ছে মতো পুরো শরীরের ছুড়ি আঘাত করে বুকের মাঝ বরাবর কেটে কলিজাটা বের করে নেয়,মাটিতে ফেলে পাঁ দিয়ে পিষে নেয়।নর/খাদকটা ততক্ষণে মৃত্যুর কুলে ঢলে পড়েছে।জায়ান একটা শান্ত নিঃশ্বাস টেনে হাত ধুয়ে নেয়।পড়নের শার্টটা রক্তাক্ত হয়ে আছে। পুরো শার্টটা খুলে মেঝেতে ফেলে দেয়।ফুলা ফুলা পেশী গুলো এখনো টান টান হয়ে আছে।

জায়ান গিয়ে লিয়ানা সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে।লিয়ানার পায়ে চুমু খেয়ে।হাতের বাঁধন গুলো খুলতে থাকে।পুরো শরীরের আঘাতগুলো চোখ বুলাতে জায়ানের বুকের ভেতরটা এবার দাবানলের মতো পুড়তে শুরু করে।এই এক জায়গা।এই একটা মুখশ্রী জায়ানকে শান্ত করতে যথেষ্ট। তার একমাত্র দূর্বলতা।জায়ান লিয়ানাকে কোলে তোলে পাশের আরেকটা রুমে যেখানে নর/খাদকটা রাত্রি যাপন করতো সেখানে চৌকিতে শুইয়ে দেয়।লিয়ানার ফেঁকাসে হয়ে যাওয়া মুখ থেকে চুল গুলো সরিয়ে একেরপর এক চুমু খেতে থাকে।অগনিত।ললাটেট চুল গুলো ঠোঁট দিয়ে সরিয়ে লে*হন করে।

জায়ানের ঠোঁটের স্পর্শ পেয়ে লিয়ানা কেঁপে কেঁপে উঠে। মাত্র কয়েকঘন্টা কাছে না পেয়ে জায়ানের অবস্থা এতটাই সূচনীয় হয়ে উঠে ছিলো যে এখন বউকে কাছে পেয়ে মনে অজানা উত্তেজনা বাসা বাঁধে।উন্মাদ হয়ে লিয়ানার শরীরের ঘ্রান টানতে থাকে। এখন শান্তি লাগছে তার।লিয়ানার শরীরের আঘাতের সমস্ত জায়গাগুলোতে ওষ্ঠ ঠেকাতে থাকে,পায়ে, হাতে,মুখে, জামা উপরে উঠিয়ে উদরে মুখ ডুবায়,মধ্যেমনিতে আলতো করে কা*মুড় বসাতেই লিয়ানা শিউরে উঠে আহ! শব্দ করে নড়ে উঠে,বড় বড় শ্বাস টানতে টানতে বুক উঠা নামা করতে থাকে। গভীর উন্মাদনায় বশির্ভূত হয়ে লিয়ানার পুরো শরীর ন’গ্ন করে আদরে ভরিয়ে দিতে থাকে জায়ান,লিয়ানা অর্ধখোলা চোখে জায়ানের পিঠে চুলে খামছে ধরে নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে নিজেকে।তারপর জায়ান লিয়ানার ব’ক্ষে হাত বিচলন করে ঘাড়ে ওষ্ঠের ছোঁয়ায় জ্বালাতে থাকে।ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে গভীর চু*ম্বনে উন্মাদ হয় জায়ান।

তোকে ছুয়েছি আঁধারে পর্ব ৪০

“I can’t live without you!Jaan!you are my everything… Zayan is totally addicted on you!”
তাদের দুজনের দেহ দগ্ধ মিল’নে লি’প্ত হতেই কারোর হাতের স্পর্শে রুমের সামনের পর্দাগুলো দিয়ে তাদের ঢেকে দেয়।হ্যাঁ মাস্ক ম্যান পর্দা লাগিয়ে নরখা/দকটার মৃত শরীর টার দিকে এগিয়ে যেতে থাকে হাতে ধারালো ছুড়ি নিয়ে কাটাকুটি উদ্দেশ্য ……

তোকে ছুয়েছি আঁধারে পর্ব ৪২

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here