তোকে ছুয়েছি আঁধারে পর্ব ১০

তোকে ছুয়েছি আঁধারে পর্ব ১০
ভূমিকা তালুকদার

ক্রিমিনাল লয়্যার গ্রেট জায়ান খান ফ্রান্সের নামকরা ও অদ্বিতীয় ফিগার। মাত্র পাঁচ বছরের ক্যারিয়ারে এমন সব হাই-প্রোফাইল কেস তিনি জিতেছেন, যা অন্য কোনো আইনজীবীর পক্ষে অসম্ভব ছিল। রেকর্ড বলছে এখনো পর্যন্ত তিনি কোনো কেস হারেননি।কিন্তু জায়ান খান শুধুই একজন বিখ্যাত আইনজীবী নন, তিনি ফ্রান্সের বিলিয়নেয়ার লয়্যারদের তালিকায়ও শীর্ষে। প্রশ্ন উঠেছে,মাত্র কয়েক বছরে কীভাবে এমন বিপুল সম্পদের মালিক হলেন তিনি? কেউ বলে, তার নিজস্ব ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য আছে, তবে কেউ বা সমালোচনাসূচক করে বলে ওঠে এর পেছনে অন্য কিছু আছে হয়তবা তার হাত লেগে আছে ইউরোপ,রাশিয়ান,ইতালিয়ান সহ নামীদামী মাফিয়া গ্যাংদের সাথে Underworld ক্যাসিনো, ডার্ক ডিল, কিছু তো আছে কিন্তু প্রমাণ? শূন্য।সমালোচনা হোক বা প্রশংসা,একটি সত্য অস্বীকার করার উপায় নেই। আদালতে তিনি এক অব্যর্থ অস্ত্র, যার একটাই নিয়ম,কখনো হারবেন না। আর আজ সেই গ্রেট জায়ান শুয়ে আছেন আইসিইউ-তে ফ্রান্স স্তব্ধ, আইনজগত নিঃশ্বাস বন্ধ করে অপেক্ষা করছে।

প্যারিসের আকাশে গোধূলির আলো মিশে আসছে, ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় হাসপাতাল “Hôpital Saint Louis”বাইরে থেকে কাচের দেওয়াল ঘেরা সেই সুবিশাল হাসপাতালটা দূর থেকেই যেন এক বিশাল জাহাজের মতো দাঁড়িয়ে আছে,শত শত জানালায় সাদা আলো জ্বলছে, যেন হাজার প্রাণের শ্বাসপ্রশ্বাস ভেসে আসছে ভেতর থেকে।প্রবেশদ্বারে গাঢ় নীল ইউনিফর্ম পরা সিকিউরিটি দাঁড়িয়ে, হাতে ইয়ারপিস, চোখে শীতল নিরাবেগ দৃষ্টি। স্বয়ংক্রিয় কাচের দরজা শুঁউউউ শব্দ করে খুলে গেলেই, ভেতরের ঠান্ডা এয়ার-
কন্ডিশনের শ্বাস প্রথমে মুখে লাগে,তারপর ভেসে আসে অদ্ভুত এক গন্ধ জীবাণুনাশকের তীব্র, ধাতব স্বাদমিশ্রিত গন্ধ, যেটা কেবল হাসপাতালেই থাকে।ভেতরে রিসেপশনের সামনে কাতারে দাঁড়িয়ে মানুষ, নার্সরা দ্রুত পায়ে হেঁটে যাচ্ছে করিডর ধরে, সাদা কোটের ভাঁজ উড়ছে চলার তাড়ায়। কোথাও হুইলচেয়ারে বসা রোগী, কোথাও স্ট্রেচারে টানা হচ্ছে জরুরি কেস। করিডরের দেয়ালজুড়ে ঝকঝকে স্টিলের সাইনবোর্ড—

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

Intensive Care Unit(ICU) – Restricted Access
Surgery Wing – Authorized Personnel Only
হাসপাতালের লিফটে উঠে সোজা বাইশ তলায় পৌঁছানো যায় ভি আই পি মেডিকেল সেকশনে,যেখানে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ। লিফটের দরজা খুলতেই চোখে পড়ে এক লম্বা কাচঘেরা করিডর, যার শেষ মাথায় বড় একটা ফ্রস্টেড গ্লাসের দরজা,তার ওপাশে জায়ান এর কেবিন। দরজার দুই পাশে দাঁড়িয়ে দুইজন ব্ল্যাক স্যুট পরা বডিগার্ড,চোখে কালো শেড, হাতে ইয়ারপিস, যেনো সাধারণ সিকিউরিটি নয়, বরং কোনো রাষ্ট্রপতির প্রহরী।
এদিকে লিফটের পাশেই, এক আলাদা ভি আই পি রুমে বসে মার্কো আর এলেক্স। তাদের মুখে অস্বস্তি, কিন্তু চোখে সেই ঠান্ডা ক্যালকুলেশন,যেন তারা ঠিক করছে পরের পদক্ষেপটা কী হবে।হঠাৎ দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলেন প্যারিসের একজন উচ্চপদস্থ ডাক্তার নাম লিওনেল আলবার্ট সাদা কোটের ওপর স্টেথোস্কোপ ঝুলছে। তারপর বললেন-

মিস্টার জায়ান বেঁচে আছেন,তার হার্ট চলছে বাট,হি ইজ ইন ডিপ কোমা রাইট নাউ!আমরা সঠিকভাবে কিছু বলতে পারছিনা আপাতত,,মেইবি তিনি ঠিক হয়ে যাবে হয়তোবা হবেননা। ইট’স অল ইন গড হেন্ড নাউ।
মার্কোর চোখে শূন্যতা, ঠোঁট শক্ত হয়ে আছে। এলেক্স নিজেকে সামলে নিয়ে বলে,
Coma? রিকোভার হতে কতোদিন লাগতে পারে?
ডাক্তার এক মুহূর্ত থেমে, গভীর দৃষ্টিতে তাদের দিকে তাকায়,
এটা খুবই বিরল কেস,এমন দূর্ঘটনায় মানুষের বাঁচার চান্স খুবই কম থাকে,,তিনি পুরোপুরি ভাবে কোমায় চলে গিয়েছেন,তবে যদি তার দেহ সক্রিয় হয় তাহলে কয়েক মাসের মধ্যে ঠিক হওয়া পসিবল, কয়েক মাস লাগতে পারে কিংবা বছর, তবে তিনি যদি দ্রুত সুস্থ হয়ে জান তবে তা হবে মিরাকেল!yesss!

পিছন থেকে আরেকজন ডাক্তার এগিয়ে এলেন চারপাশে একবার তাকালেন, যেন নিশ্চিত হলেন কেউ শুনছে না, তারপর চাপা গলায় বললেন
কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে ব্রেক ফেইল করিয়েছে বলে আমার সন্দেহ হচ্ছে, পুলিশের রিপোর্ট আসেনি, কিন্তু, আপনারা যেমন মানুষ, আমি জানি আপনাদের অন্ধকার দুনিয়ায় এ ধরনের দুর্ঘটনা কাকতালীয় হয় না।
মার্কোর ঠোঁটের কোণে হালকা বাঁকা হাসি ফুটল,যেটা আসলে হাসি নয়, বরং একটা হুমকি।
প্রমাণ,হয়তো এখনও নেই। কিন্তু যে করেছে, সে জানে না সে কার গায়ে হাত দিয়েছে।
এলেক্স আস্তে উঠে জানালার বাইরে তাকালো—প্যারিসের রাত তখন ঝলমলে আলোয় ডুবে যাচ্ছে। তার কণ্ঠ যেন ফিসফিস করে ছুরির মতো কাটল—

ওকে আঘাত মানে,
“সিংহের খাঁচায় নিজের ইচ্ছায় পা দেওয়া।”
বাইরে দূরে অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন বাজলো,শহরের আরেক প্রান্তে হয়তো কেউ বাঁচার জন্য লড়ছে। কিন্তু এই হাসপাতালের ২২ তলায়, ক্ষমতার খেলা, হিংস্রতা আর প্রতিশোধের গন্ধ আরও ঘন হয়ে উঠছে।

(বাংলাদেশ,ঢাকা)
দুপুর গড়িয়ে বিকেল। লিভিং রুমে সবার মুখে এক ধরনের অস্থিরতা। বিশাল ঝাড়বাতির নীচে বসে আছেন জায়ানের মা নাফিসা খান মুখে অদ্ভুত এক গম্ভীর ছায়া, যা তিনি লুকানোর চেষ্টা করলেও চোখে-মুখে ধরা পড়ে যাচ্ছে।
তুমি বলছো, জায়ান গতকালও বাসায় আসেনি? দাদি অবাক হয়ে তাকালেন ফাহিম খানের দিকে।
ফাহিম খান চশমা ঠিক করে গম্ভীর গলায় বললেন, না মা, শুধু গতকাল নয়,,পরশুও না। ফোন অফ দেখাচ্ছে অনেকবার কল করেছি ।

মুহূর্তের মধ্যে একটা ঠান্ডা নীরবতা নেমে এলো। কফি টেবিলের ওপরে রাখা কাপগুলোতে চা ঠান্ডা হয়ে গেছে।রুকসানা খান একবার নীচু গলায় বললেন, “তুমি কি মনে করছো যে জায়ান আবার….
নাফিসা খান কথাটা শেষ হওয়ার আগেই চুপ করিয়ে দিলেন, না, এমন কথা বলিস না। হয়তো কাজে কোথাও গিয়েছে আমার ছেলেটা ।কিন্তু কণ্ঠে আত্মবিশ্বাসের চেয়ে উদ্বেগই বেশি ছিল।
অপরদিকে জানালা দিয়ে আসা নরম আলো লিয়ানার বিছানার ওপরে ছায়া ফেলেছে। সে এক হাতে বালিশ জড়িয়ে আরেক হাতে বই ধরে মন দিয়ে পড়ছে।হঠাৎ কড়কড় শব্দে দরজা খুলে গেল।ভিতরে ঢুকল মাইশা, আরিশা আর রিহান।মাইশা আর আরিশা সোজা বিছানায় উঠে লিয়ানার পাশে বসে পড়ল, যেন এই বিছানাই তাদের সদর দপ্তর।রিহান অলস ভঙ্গিতে ডেস্কের চেয়ার টেনে এনে পা তুলে বসে গেল।তারপর মাইশা বলে উঠলো-
শুনেছিস আপি, নিচে সবাই কি কথা বলছে? বলছে নাকি জায়ান ভাইয়া আবার চলে গেছে!
আরিশা-

আচ্ছা ভাইয়া এমন করে কেনো বল তো? এত রহস্যময়,,আমাদের কে কি একটুও ভালবাসে না নাকি? কিছু না বলেই চলে যায় কীভাবে! এমনকি বড় আম্মুকেও বলে যায়নি!আর ফোনও নাকি সুইচ অফ।
লিয়ানা বিরক্ত হয়ে বই বন্ধ করে উঠে বসে গেল।
না ভালোবাসেনা তো? তোরা কি এসব বলার জন্য এসেছিস? যা, তোদের কথা আমার ভালো লাগছে না। আমায় পড়তে দে—সামনে বোর্ড এক্সাম।
রিহান-
আরে শোন না লিও আপু,আচ্ছা, তোর কি মনে হয় জায়ান ভাইয়ার হঠাৎ আসা-যাওয়ার পেছনে কোনো কারণ আছে? অবশ্যই আছে, তাই না?
আমি তো ওইদিন থেকেই ভেবে রেখেছিলাম, জায়ান ভাই হয়তো লিও আপুকে ভালোবাসে। ওইদিন দেখলি না,বড় আব্বু কীভাবে আমাদের উপর পাঠিয়ে দিলেন, আর ওরা নিজেদের মধ্যে গোপনে কথা বললো? কী ছিল জানতেই পারলাম না।

আরিশার কথা শেষ হতেই, লিয়ানা গরম হয়ে উঠে তার কানে হালকা টিপ দিলো।
বাজে বকিস না, বেশি পেকে গেছিস!
রিহান আর মাইশা একে অপরের দিকে তাকিয়ে চোখ টিপলো
চলে গেছেন ভালোই হয়েছে! আর না আসুক। গরিলা কোথাকার আমাকে কি না মুখের ওপর না করে দিলো সেইদিন !
কি না করলো???(মাইশা,রিহান,আরিশা হা হয়ে তাকিয়ে বলে উঠল)
তোদের বলতে হবে? যা, এখান থেকে! না হলে ঘাড় ধরে বের করে দেবো—তোদের এই বিরক্তিকর মুখ দেখতে ইচ্ছে করছে না!
তিনজনেরই মুখে হাসি বিলিন হয়ে ধীরে ধীরে দরজার দিকে হাঁটতে হাঁটতে বেরিয়ে গেলোলিয়ানা আবার বই খুলে নিলো বটে, কিন্তু পৃষ্ঠার ওপর চোখ আটকে থাকলেও মাথার ভেতরে ঘুরছে অন্য কিছু,যেটা সে কারও সাথে স্বীকার করবে না।লিয়ানার মাথায় তখনও ঘুরছে—

সত্যিই কি চলে গেলো লোকটা? আর ফিরবেন না?
বুকের ভেতরটা হঠাৎ কেমন শূন্য শূন্য লাগতে লাগলো। অজানা এক কাঁপন ছড়িয়ে গেল সারা দেহে। হাতে রাখা বইটা ধীরে ধীরে বন্ধ করে সে উঠে দাঁড়াল। কয়েক সেকেন্ডের জন্য যেন সব শব্দ থেমে গেল,শুধু তার নিজের শ্বাসপ্রশ্বাস আর বুকের ধুকপুকানি কানে বাজছে।পা টেনে টেনে সে এগিয়ে গেলো জায়ান এর রুমের দিকে। দরজার কপাট খুলতেই মুখে এসে লাগল সেই চেনা পারফিউমের গন্ধ যেনো দেয়াল, চাদর, এমনকি বাতাসও এখনো তাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। অথচ রুমটা ফাঁকা, মানুষ নেই। তবু কেমন এক অদৃশ্য উপস্থিতি ভর করে আছে,যেনো তিনি ঠিক পাশেই কোথাও আছেন, অথচ ছুঁয়ে ধরা যাবে না।
চুপচাপ গিয়ে লিয়ানা বসে পড়লো খালি বিছানায়। নরম গদির ভাঁজে হাত বুলিয়ে নিচু গলায় বলল,
আপনি কি সত্যিই চলে গেলেন নাকি? এবার আর আসবেন না?
এক মুহূর্ত থেমে গলাটা ভারী হয়ে এল।

আমাকে নাই ভালোবাসলেন, কিন্তুু নিজের মাকেও তো ভালোবাসেন নাকি? বাবাকে বাদ দিলাম,, কিন্তু দাদিমা উনাদের কথাও একবার ভাবেন না,,এতটা পাষাণ হৃদয় কি কোনো মানুষের হতে পারে?
বাইরে থেকে দেখলে হয়তো মনে হবে রিহানদের সামনে জায়ান এর কথা তেমন গুরুত্বই দিচ্ছে না লিয়ানা। কিন্তু কাছে তাকালেই বোঝা যায়,তার চোখ, তার চেহারার ভেতরের সবকিছুই অন্য কথা বলছে,হঠাৎ লিয়ানা ঠোঁট কামড়ে, গলা শক্ত করে বলে উঠল,
আর হ্যাঁ,,নিজেকে কী ভাবেন আপনি? এনাকোন্ডা কোথাকার,,ভাববেন না যে আমি আপনাকে ভালোবাসি। তারপর মুখ বাঁকিয়ে বলে-

আমিও আপনাকে ভালোবাসি না। বুঝেছেন?
তার চোখে ঝিলিক খেলো রাগের, অথচ ভেতরের অস্থিরতা লুকোতে গিয়ে হাত দুটো মুঠো করে ফেললো,
এক সেকেন্ড থেমে, গলাটা আরও নিচু করল,
“I hate you, Mr. Zayan Khan.”
শব্দগুলো যেন ছুরি হয়ে ছুঁড়ে দিলো খালি রুমটার দিকে । কিন্তু বলার সাথে সাথেই বুকের ভেতর কেমন হালকা লাগার বদলে উল্টোটাই হলো—চোখ ঝাপসা হয়ে এলো।নিজের অজান্তেই, দৃষ্টি নীচু করার আগে, একটা লোনাজল গড়িয়ে পড়লো গাল বেয়ে।

গুলশান লেকসাইড – ব্ল্যাক হেভেন
রাত তখন প্রায় সাড়ে দশটা। লেকের ধারে গাঢ় কালো আকাশে কিছুটা মেঘ জমে আছে, দূরের রাস্তার লাইটের প্রতিফলন লেকের জলে নরম ঢেউয়ের সাথে দুলছে। ব্ল্যাক হেভেন বার-এর ওপেন টেরাসে মৃদু জ্যাজ মিউজিক বাজছে, চারপাশে হলুদ-কমলা আলোয় সাজানো কাঠের টেবিল, আর নরম ধোঁয়া মিলেমিশে একটা রহস্যময় পরিবেশ তৈরি করেছে।কোণের একটা টেবিলে বসে আছে ইশান।বাংলাদেশের তরুণ রকস্টার,যে ছেলেটার কণ্ঠ আর গিটার একসাথে হাজার মানুষের হৃদয় কাঁপাতে পারে। লম্বা, অ্যাথলেটিক ফিগার, গভীর চোখের দৃষ্টি যেন কাউকে ভেদ করে দেখতে পারে, তীক্ষ্ণ চোয়াল আর হালকা দাড়ি তার চেহারায় একধরনের রাফ হ্যান্ডসাম লুক এনে দিয়েছে। কালো শার্টের বোতাম গলায় খুলে রাখা, হাতের কবজিতে সিলভার ব্রেসলেট—সব মিলিয়ে এক অনায়াস চার্ম।তার সামনে রাখা হুইস্কির গ্লাসে বরফ ধীরে ধীরে গলে যাচ্ছে। ইশান কনুই টেবিলে ঠেকিয়ে, এক হাতের আঙুলে গ্লাস ঘোরাচ্ছে, আর গভীর চিন্তায় ডুবে আছে। ঠোঁটে হালকা হাসি খেলছে—যেন তার মনের মধ্যে কারও ছবি ঘুরছে।
ঠিক তখন পেছন থেকে তার বন্ধু দিয়ান এর কণ্ঠ-

কিরে, মামা! তুই কি প্রেমে পাগল হয়ে গেছিস নাকি? নাকি নতুন কোনো গান লিখছিস? একা একা হাসছিস,, খুঁজে পেলি তোর সেই নীলাঞ্জনাকে? নামটা যদি বলতে পারতিস, আমি তো দুই মিনিটে বের করে দিতাম।
ইশান ধীরে ধীরে মাথা তুলে তাকালো। ঠোঁটের কোণে খেললো এক রহস্যময় হাসি
নাম? পুরো ডিটেইলস বের করা কোনো ব্যাপার না,আমি শুধু অপেক্ষায় আছি।
অপেক্ষা? কিসের জন্য?

আচ্ছা বল তো—আর কয়দিন পর বোর্ড পরীক্ষা শুরু?
হুম,আরও সাপ্তাখানিক পর বোধহয়। মেইবি সিউর না,,, ক্যান রে?
ইশান গ্লাসটা হাতে নিয়ে সামান্য পেছনে হেলান দিলো, চোখে ঝিলিক।
তেমন কিছু না, শুধু গুনছি।

তোকে ছুয়েছি আঁধারে পর্ব ৯

তারপর ধীরে ধীরে হুইস্কির গ্লাসটা তুললো, মাতাল মুখের সামনে ধরে লেকের প্রতিফলিত আলোয় চোখ সরু করল। ঠোঁট থেকে বেরোল হালকা ফিসফাস
নীলাঞ্জনা খুব শিগগির ই আমাদের দেখা হবে। রেডি থেকো।
” I really miss you”
বরফের টুকরোটা গ্লাসের ভেতর ঠকঠক শব্দ করে ঘুরে গেল, যেন সেই প্রতীক্ষার সিগন্যাল বাজিয়ে দিল।

তোকে ছুয়েছি আঁধারে পর্ব ১১

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here