তোমাতেই আসক্ত পর্ব ৭৩

তোমাতেই আসক্ত পর্ব ৭৩
তানিশা সুলতানা

“দরজা কেনো বন্ধ করলেন?
ইশারা ভ্রু কুচকে শুধায়। সিয়াম যেনে থমথমে খেয়ে গেলো। এদিক সেদিক দৃষ্টি ফিরিয়ে মিনমিন করে জবাব দেয়
” আদ্রিতা মা আমাদের বিডিভিডি ম্যারেজ করাতে চাচ্ছে। তার জন্যই বন্ধ করেছি।
এক লাফে উঠে বসে ইশারা।

“বিডিভিডি ম্যারেজ আবার কি?
“বি ফর বন্ধ
ডি ফর দরজায়
ভি ফর ভয়
ডি ফর দেখিয়ে ম্যারেজ যাকে বলে। তুমি না চাইলে বিয়ে বাদ।
আমি এখুনি আদ্রিতাকে বলে দিবো এই বিয়ে হবে না।
বলেই উঠে যেতে নেয় সিয়াম। ইশারা ওর হাত খানা ধরে ফেলে এবং এক টান দিয়ে নিজের পাশে বসিয়ে দেয়।
” এই বিয়ে হবে।
চমকালো বোধহয় সিয়াম। বড়বড় চোখ করে বলে

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“সত্যি?
” হ্যাঁ
ভয় দেখান আমায়।
“তেলাপোকা ধরে আনবো?
“শালা”
বিরবির করে বলে ইশারা। তারপর সিয়ামের হাত খানা নিজের পেটের ওপর রাখে। গলা শুকিয়ে আসলো বোধহয় সিয়ামের। তুতলিয়ে বলে
“ক…..কি করছো?
ইশারা যেনো শুনলো না৷ নিজের হাত দুটো সিয়ামের দুই গালে রেখে ওষ্ঠের ভাজে নিজের ওষ্ঠ মিলিত করে।
পুরুষালি চিত্ত যেনো লাফিয়ে উঠে সিয়ামের। কন্ট্রোল লেস হয়ে পড়ে মুহুর্তেই। ইশারাকে দুই হাতে জড়িয়ে পাগলের মতো চুমু খেতে থাকে।

তখনই দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে পড়ে আদ্রিতা আবরার আমান আহান ইভান সহ আরও কিছু আত্নীয়রা। দুজনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে সকলেই ছি ছি করতে থাকে। লজ্জায় পড়ে যায় ইশারা এবং সিয়াম। মুহুর্তেই দুজন দুজনকে ছেড়ে আলাদা হয়েছে।
আমান আহাদ ইভান সিয়ামের চারিপাশে বসে পড়েছে ইতিমধ্যেই। আমান তো বলেই ওঠে
” ম্যাশিন আছে তাহলে তোর? শিরায় শিরায় উত্তেজনা। ও মাই গড
সকলেই কানাঘুষা বাড়তে থাকে মুহুর্তেই। সেটা থামাতে আবরাট বলে ওঠে “এখনই ওদের বিয়ে দেওয়া হবে”
ব্যাসস তারপর কাজি ডেকে সিয়াম এবং ইশারার বিয়ে পড়িয়ে দেওয়া হয়।
কবুল বলার সময় সিয়াম আরেক কান্ড ঘটিয়ে ফেলে। হুজুর যখন বলে

“বলো বাবা কবুল
সিয়াম রুমাল দিয়ে মুখ ঢেকে বলে ওঠে
” আমার সরম করছে। আজকের পর থেকে এক নারীকে বউ বলে ডাকতে হবে। আয়হায় আমি কেমনে ডাকবো?
লজ্জা লজ্জা
আবরার চোখ পাকিয়ে তাকাতেই সিয়ামের সব কাহিনি শেষ। ফটাফট কবুল বলে ফেলে।
আবরারের কক্ষে সিয়ামের জন্য বাসর সাজানো হচ্ছে। ইশারাকে আদ্রিতা এবং তিথি সাজিয়ে দিচ্ছে।
আর সিয়ামকে চেপে ধরেছে তার তিন বন্ধু।
তাদের একটাই কথা

“এত উত্তেজনা তুই কোথায় লুকিয়ে রেখেছিলি? এতদিন আমাদের দেখাস নি কেনো?
বিরক্ত সিয়াম চোখ মুখ কুঁচকে বলে ওঠে
“শালা তোরা কি মেয়ে নাকি যে দেখাবো?
উত্তেজনা থাকে শিরায় শিরায়।
নারী দেখলেই বেরিয়ে আসে তরতরিয়ে। এসব তোরা বুঝবি না। সিঙ্গেলদের উত্তেজনার সংজ্ঞা গুলিয়ে খাওয়ালেও তারা বুঝবে না।
ইভান আফসোসের সুরে বলে
” আজকে সিঙ্গেল বলে এভাবে কথা শুনালি। একদিন চার পাঁচটা প্রেম করবো। সেইদিন সালাম করবি।
আহাদ বলে
“হ হ ইভানের সঙ্গে সহমত আমি।
আমান বলে

” শালা বিয়ে করে লাফাইস না। তোর থেকে আগে বাবা হয়ে দেখাবো।
সিয়াম কবিতার সুরে বলে
“বাবা হতে চাইলেই কি আর বাবা হওয়া যায়?
ছোট্ট একটা পাখির বাসা কয়জনই বা খুঁজে পায়?
আমি সিয়াম সুদর্শন পুরুষ
গোটা বিশ্বের ক্রাশ
তাই তো পেলাম একটা সুন্দর বাঁশ।
কয়দিন পরে হবো বাবা
তোরা হবি চাচা
দেখবি আর জ্বলবি
মাঝ রাতে স্বপ্নদোষে মরবি।
কবিতা খানা শেষ করেই এক দৌড়ে পালিয়ে যায় সিয়াম। আমান বলে ওঠে
” শালা আমাদের অপমান করলো?
আহাদ বলে
“শালার বাসর তো একটু পরে। ক****ম গিফট করে আসি চল আমরা।

লাল বেনারসি পড়ে বাসর ঘরে বসে আছে ইশারা। সিয়ামও পানজাবি পাজামা পড়ে চলে এসেছে। ওর পেছন পেছন ঢুকেছে আবরার ইভান আহাদ আমান আর আদ্রিতা।
সকলের হাতে কিছু না কিছু রয়েছে। মূলত ওদের বিয়ের গিফট।
প্রথমে আদ্রিতা এক জোড়া বালা দেয় ইশারাকে। আবরার রেপিং পেপারে মোড়ানো কিছু একটা দেয়। সেটা খুলতেও বারণ করে। সবাই চলে গেলে দেখতে বলে। ইভান দেয় একটা বড়সর বেলুন। আমান এক প্যাকেট ঔষধ।
সর্বশেষে আহাদ শপিং ব্যাগ খানা উপুড় করে বিছানার ওপরে। মুহুর্তে অশ্লীল অনেক গুলো প্যাকেট পড়ে বিছানায়। আদ্রিতা এক দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। ইশারা আঁচল দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলে। সিয়াম খাটের তলায় ঢুকে।
আমান খিল খিল করে হেসে ওঠে বলে

“আহাদ তুই একটা মাল শালা।
আবরার একটা রাম ধমক দিয়ে বলে
” বের হ তোরা। ইডিয়েট সব কয়টা।
ইভান বলে
“এ ভাই চল যাই। ছোট পাখি ওয়ালাদের বাসর দেখার ইন্টারেস্ট নেই।
বলেই বেরিয়ে যায়।
আহাদ যেতে যেতে গান ধরে
” সন্ধ্যা বেলায় বগুন ক্ষেতে করতে যাইও চুরি
বেগুন ওয়ালা হয়ে আমি হাতটা নিবো ধরি
ধইরা নিয়া ভইরা দিবো বেগুন তোমার থলিতে
আবরার পূণরায় ধমক দিয়ে বলে
“ডিজগাস্ট গান পাস কোথায় তোরা?
ছিহহহহহ
আহাদ মুখ বাঁকিয়ে বলে
“বউ নাই যে। এসব গানই একমাত্র জীবনসঙ্গী।

ফাইনালি আবরার আদ্রিতা প্রাইভেসি পেয়েছে। আজকে আবরার তাসনিনকক একটু বেশিই ধৈর্য
শীল দেখালো। লোকটা দিনকে দিন নদীর মতো শান্ত হয়ে যাচ্ছে। ঠিক যেমনটা আদ্রিতা চাইতো। স্বপ্ন বুঝি সত্যি হচ্ছে?
আদ্রিতা এবার সুস্থ স্বাভাবিক সুন্দর একটা সংসার পাবে।
” এসব ফাকিং এক্সকিউজ আবরার তাসনিন ট্রলারেট করবে না। তাকে শেষ করে দাও।
হঠাৎ করে আবরারের কন্ঠস্বর শুনে চমকে ওঠে আদ্রিতা। পেছন ফিরে দেখে জনাব দাঁড়িয়ে আছে। কানে ফোন এবং চোয়াল শক্ত। হাত খানা মুষ্টিবদ্ধ করে রেখেছে। কপালের রগ গুলো ফুলে উঠেছে। ঠিক আগের সেই হিংস্র আবরার যেনো।
আদ্রিতা শুকনল ঢোক গিলে।
বিরবির করে আওড়ায়

“শালা এ জীবনেও শুধরাবে না। আদ্রিতা একটা জীবন সাইকো টার ধমক খেতে খেতেই কাটাতে হবে তোর।
ভাবনাটুকু শেষ হওয়ার আগেই নিজের ঘাড়ে কারো নিঃশ্বাসের শব্দ অনুভব করে। জিভ দ্বারা ঠোঁট ভিজিয়ে নেয় আদ্রিতা। দুই হাতে শক্ত করে চেপে ধরে বিছানা চাদর। আঁখিপল্লব বন্ধ করে রিনরিনিয়ে বলে
” আ…..আবরার আপনাকে কিছু বলার আছে আমার।
পিঠের ওপরে লেপ্টে থাকা চুল গুলো সামনে দিয়ে ঠোঁট ছোঁয়ায় ঘাড়ে। এবং হাঙ্কি স্বরে বলে
“এ’ম সো হাংরি
ডোন্ট ডিস্টার্ব পাখি
” ই…..ইমপটেন্ট ক….ক

পুরো টুকু শেষ করার আগেই আদ্রিতাকে সামনে দিকে ঘুরিয়ে দেয় আবরার। আঁচল খানা ফেলে দিয়ে ভ্রু কুঁচকে বলে
“ডিস্টার্ব করলে লাথি মেরে ছাঁদ থেকে ফেলে দিবো। এমনিতেই মেজাজ গরম।
ব্যাসস আর কথা বলার সাহস হয় না আদ্রিতার। সে চুপচাপ তাকিয়ে থাকে আবরারের চোখের দিকে। লাল লাল এই দৃষ্টির সঙ্গে তার পরিচয় রয়েছে। প্রথমবার সমুদ্রের পাড়ে দেখেছিলো। সেই উম্মাদনা আর অদ্ভুত আবরারকে পূণরায় আজকে দেখতে পাচ্ছে।

তোমাতেই আসক্ত পর্ব ৭২

” ইয়া আল্লাহ এখন তাকে কি করে বলবে যে সে অসুস্থ। শরীর খারাপ।
কাঁচা চিবিয়ে খেয়ে নিবে রেহহহ।
আবরার আদ্রিতার ওষ্ঠজোড়ায় নিজের ওষ্ঠ পুরে নিবে তখনই দরজায় কড়া নারে সিয়াম।
বড্ড উত্তেজিত স্বরে বলে ওঠে
“এ আব্বা দরজা খোল।
আমি বাসর করবো না।
পরে বউ প্রেগন্যান্ট হয়ে গেলে মানুষ ভাববে আমি ১৮+ কাজকাম করেছি। ছিহহহ ছিহহহ করবে রেহ সবাই।

তোমাতেই আসক্ত পর্ব ৭৪