তোমাতে আসক্ত আমি পর্ব ৩৫

তোমাতে আসক্ত আমি পর্ব ৩৫
ইরিন নাজ

ফ্রেস হয়ে নিজেকে পরিপাটি করে নিলো আরশি। এমন সময় দরজা নক করে কেউ একজন জানালো তাকে নিচে ডাকা হয়েছে। ধীর পায়ে নিচে নেমে আসলো আরশি। নিচে নামতেই একজন কর্মচারী বললো ডাইনিং টেবিলে যেতে। জো*রে একটা শ্বাস টে*নে ডাইনিং টেবিলের দিকে অগ্রসর হলো আরশি। না চাইতেও বেশ না*র্ভা*স সে। আবরার থাকলে হয়তো এমন ভ*য় কাজ করতো না। ডাইনিং টেবিলের কাছে পৌঁছাতেই আরশি দেখলো শুধুমাত্র আব্বাস আহমেদ আর মিসেস বন্যা বসে আছেন। আরশি সামনে গিয়ে মৃদু কণ্ঠে সালাম দিলো। আব্বাস আহমেদ উৎফুল্ল কণ্ঠে সালামের জবাব দিয়ে বললেন,

— বসো মামুনি। তোমার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম।
আরশি ভ*য়ে ভ*য়ে মিসেস বন্যার পাশের চেয়ারে বসলো। আরশি বসতেই মিসেস বন্যা আরশির প্লেটে খাবার বেড়ে দিলেন। অবাক হলো আরশি। মিসেস বন্যা এখনো তার সাথে একটাও কথা বলে নি। অথচ তার খেয়াল রাখতেও ভুলছেন না। মিসেস বন্যা আরশি কে খাবার দিয়ে নিজের খাবার খাওয়ায় মনোযোগ দিলেন। হাঁ*স*ফাঁ*স করতে লাগলো আরশি। সে কিছু একটা বলতে চায়। কিন্তু এখন বলবে কিনা বুঝতে পারছে না। আরশি কে খাবার না খেয়ে হাঁ*স*ফাঁ*স করতে দেখে আব্বাস আহমেদ বললেন,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

— কি হয়েছে মামুনি? খাচ্ছ না কোনো? কোনো স*ম*স্যা হয়েছে? বলতে পারো আমাদের।
আরশি আমতা আমতা করে বললো,
— আসলে স্যার আমার একটা রিকোয়েস্ট ছিলো…
অবাক হলেন আব্বাস আহমেদ। ভীষণ ভীষণ অবাক। মিসেস বন্যা ও খাওয়া থামিয়ে গম্ভীর দৃষ্টিতে তাকালেন আরশির দিকে। মিসেস বন্যা কে এভাবে তাকাতে দেখে মাথা নত করলো আরশি। আব্বাস আহমেদ গম্ভীর গলায় বললেন,
— কে তোমার স্যার?

থ*ত*ম*ত খেলো আরশি। ভী*ত চোখে আব্বাস আহমেদের দিকে তাকালো সে। আব্বাস আহমেদ বললেন,
— আমি তোমার বাবাই হই মেয়ে। স্যার স্যার কি করছো? আমি এতো সুন্দর করে তোমাকে মামুনি ডাকছি আর তুমি স্যার স্যার করছো। এটা কি ঠিক? এরপর আরেকবার স্যার বললে কিন্তু আর মামুনি ডাকবো না বলে দিলাম।
স্বস্তির নিঃশ্বাস ত্যাগ করলো আরশি। আলতো হাসলো আব্বাস আহমেদের কথায়। হাসলেন আব্বাস আহমেদ ও। আদুরে কণ্ঠে বললেন,

— আজ থেকে এখন থেকে আমাকে বাবাই বলে ডাকবে বুঝেছো? আর রিকোয়েস্ট বলে কোনো শব্দ আমাদের মাঝে থাকবে না। তুমি আমার মেয়ে। তাই যখন যা ইচ্ছা আবদার করবে। আমার সাধ্যের মধ্যে থাকলে অবশ্যই দিবো।
আনন্দের সাথে মাথা ঝা*কা*লো আরশি। আব্বাস আহমেদের মিশুক আচরণে মন টা ফুরফুরে হয়ে গেছে তার। তবে মিসেস বন্যা কে একটু ভ*য় ভ*য় পাচ্ছে সে। আব্বাস আহমেদ ফের বললেন,

— তা কি যেনো বলতে চাচ্ছিলে মামুনি…
হাসি মুখ টা আবার সি*রি*য়া*স হয়ে গেলো আরশির। সে কোমল কণ্ঠে বললো,
— আসলে আমি পড়াশোনার পাশাপাশি জবটাও কন্টিনিউ করতে চাচ্ছি। যেহেতু আমার মায়ের কোনো ছেলে নেই, আমার বোনের কোনো ভাই নেই তাই ওদের দায়িত্ব আমার। আমি আগের মতোই দায়িত্ব পালন করতে চাই।
আব্বাস আহমেদ বুঝলেন আরশির চি*ন্তা। বললেন,

— পড়াশোনা তো তুমি করবেই মামুনি। আর জব কন্টিনিউ করতে চাইলে অবশ্যই করবে। তবে এখন তোমার পরিবারের জন্য আমরা আছি এটা মনে রাখবে।
আরশি মাথা নত করে বললো,
— আমি জানি। তবে আমি চাই না কেউ আমার পরিবার কে খো*টা দিক। বলুক তারা আমার শ্বশুরবাড়ির উপর নির্ভর করে চলছে। আমি চাই নিজের পায়ে দাঁড়াতে। আমার দুই পরিবারের খেয়াল রাখতে। তবে সেটা অবশ্যই আপনাদের অনুমতি নিয়ে।
আরশির আত্মসম্মানবোধ, চি*ন্তা, ভাবনা দেখে আরও একবার মুগ্ধ হলেন আব্বাস আহমেদ। বললেন,

— অবশ্যই আমি অনুমতি দিবো। কেনো দিবো না!
খুশি হলো আরশি। কিন্তু মিসেস বন্যা কিছু না বলায় চি*ন্তি*ত হলো সে। তবে কি মিসেস বন্যা অনুমতি দিবে না তাকে! আব্বাস আহমেদ যেনো আরশির মনের কথা পড়ে ফেললেন। মিসেস বন্যার দিকে তাকিয়ে বললেন,
— তুমি কি বলো বন্যা? আমি জানি তুমিও অ*মত করবে না। কারণ ওর মাঝে আমি তোমার প্রতিচ্ছবি খুঁজে পাচ্ছি।
শেষের কথাটা নিম্ন স্বরেই বললেন আব্বাস আহমেদ। মিসেস বন্যা গম্ভীর কণ্ঠে বললেন,

— এতে অ*মত করার কিছু নেই। আত্মনির্ভরশীল হওয়া খা*রা*প নয়। বরং প্রতিটা মেয়ের আত্মনির্ভরশীল হওয়া উচিত। ওর যদি ইচ্ছা হয় ও জব কন্টিনিউ করতে পারে। সেটা সম্পূর্ণ ওর ইচ্ছা। প্রত্যেকেরই নিজের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার আছে।
আনন্দে চোখ ছ*ল*ছ*ল করে উঠলো আরশির। আবরার আসলেই ঠিক বলেছিলো। তার শাশুড়ি মায়ের মন টা ভীষণ ভালো। তবে উনি প্রকাশ করেন না। আব্বাস আহমেদ বললেন,

— জব কন্টিনিউ করতে চাইলে এক দু সপ্তাহ পর করো কেমন? আগামীকাল রিসেপশন পার্টি আছে। আর সপ্তাহ জুড়ে গেস্ট আসতেই থাকবে। তাই কয়েকদিন বাড়িতেই থেকো। ঠিক আছে মামুনি?
আরশি কৃতজ্ঞ কণ্ঠে বললো,
— জি।
আব্বাস আহমেদ খাবার খেয়ে উঠে গেলেন। টেবিলে এখন আরশি আর মিসেস বন্যা। মিসেস বন্যার ও প্রায় শেষ খাওয়া। নতুন জায়গায় খাবার খেতে অ*স্বস্তি হচ্ছে আরশির। সে ভাবলো আর খাবে না। মিসেস বন্যা যেনো আরশির মনের ভাবনা ধরে ফেললেন। হাত ধুয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বললেন,

— এক দানা খাবারও যেনো অবশিষ্ট না থাকে। খাবার অ*প*চয় করা মোটেও পছন্দ না আমার।
হ*তা*শ হয়ে বাকিটাও খেতে লাগলো আরশি। আরশির অ*গো*চ*রে মিটমিট করে হাসলেন মিসেস বন্যা। উনি বুঝতে পেরেছেন নতুন জায়গায় মানিয়ে নিতে স*ম*স্যা হচ্ছে আরশির। এই সময় টা যে উনিও পার করে এসেছেন।
আরশির খাওয়া শেষ হতেই মিসেস বন্যা আরশি কে উদ্দেশ্য করে বললেন,

— রুমে গিয়ে রেস্ট করো মেয়ে। বিকালে যখন ডাকবো তখন আমার রুমে আসবে।
আরশি মাথা দু*লা*লো। ডাইনিং টেবিল থেকে উঠে নিজের রুমে চলে আসলো। রিফা কে ফোন করে ওর সাথে কথা বলে নিলো। রিফা জানালো আবরারের গা*র্ডরা ওদের বাড়ির সামনে পা*হা*রা দিচ্ছে। এটা শুনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো আরশি। সে ভেবেছিলো আবরার কে এই বিষয়ে বলবে। কিন্তু তার পূর্বেই আবরার ব্যবস্থা গ্রহণ করে ফেলেছে। যেহেতু আবরারের সাথে তার জীবন জুড়ে গেছে সেহেতু আবরারের শ*ত্রু*রা এখন তার এবং তার পরিবারের ও শ*ত্রু।
সারা দুপুর শুয়ে, বসে কা*টা*লো আরশি। মাঝে নিজের বন্ধুদের সাথেও কিছু সময় কথা বলেছে সে।

বিকাল ৫ টা। মিসেস বন্যার রুমে বসে আছে আরশি। মিসেস বন্যা একটা প্যাকেট এনে আরশি কে দিলেন। আরশি কৌতূহল নিয়ে তাকালো প্যাকেটের দিকে। মিসেস বন্যা জিজ্ঞাসা করলেন,
— এই যে মেয়ে শাড়ি পড়তে জানো?
অ*স*হায় চোখে তাকালো আরশি। বুঝতে পারলো প্যাকেটে শাড়ি আছে। আর সে তো শাড়ি পড়তে জানে না। মিসেস বন্যা যেনো সব টা বুঝে গেলেন। গম্ভীর কণ্ঠে বললেন,

— নতুন বউ দেখতে প্রতিবেশীরা আসবে কিছুক্ষনের মধ্যে। আর বিয়ের পরের দিন শাড়ি ছাড়া বউ কে দেখলে অনেকেই অনেক কথা বলতে পারে। তাই আজ ক*ষ্ট করে শাড়ি টা পড়ে নাও। এরপর থেকে যা ইচ্ছা পড়তে পারো। না পারলে আমি পড়িয়ে দিবো শাড়ি। যাও ফ্রেস হয়ে আসো।
আরশি মুগ্ধ চোখে তাকালো মিসেস বন্যার দিকে। না বলতেই তার স*ম*স্যা কি করে বুঝে গেলেন মিসেস বন্যা! আরশি উৎফুল্ল মনে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো।

মিসেস বন্যা সময় নিয়ে সুন্দর করে আরশি কে শাড়ি পড়িয়ে দিলেন। চুল বেণী করে দিলেন, চোখে একটু কাজল আর ঠোঁটে হালকা করে লিপিস্টিক লাগিয়ে দিলেন।
আরশি কে সম্পূর্ণ রূপে তৈরি করে মুগ্ধ চোখে আরশির দিকে তাকালেন মিসেস বন্যা। কালো শাড়ি তে আরশি কে অসম্ভব সুন্দর দেখাচ্ছে। ওই কাজল টা*না চোখের দিকে তাকালে যেনো চোখ ফেরানো ক*ঠি*ন হয়ে যাচ্ছে! কি মায়া মায়া চেহারা মেয়েটার। শুধু ফর্সা হলেই সুন্দর হওয়া যায় না। বরং কিছু কিছু মানুষের চেহারায় এমন মায়া থাকে যে সেই মায়াবী মুখের দিকে একবার তাকালে চোখ ফেরানো ক*ঠি*ন হয়ে যায়। হোক সেই মানুষ টা কালো, শ্যাম বা ফর্সা। তাদের বলা হয় প্রকৃত সুন্দর। তবে সেই সৌন্দর্য দেখার মতো চোখ আবার সবার থাকে না।

কেউ দরজা নক করায় ধ্যা*ন ভা*ঙ*লো মিসেস বন্যার। একজন সার্ভেন্ট জানালো নিচে প্রতিবেশী মহিলারা এসেছে। মিসেস বন্যা তাদের নাস্তা দেয়ার কথা বলে আরশির কাছে ফিরে আসলেন। শাড়ি ঠিকঠাক করে আরশি কে নিয়ে নিচে নামলেন উনি। আরশি মহিলাদের কোমল কণ্ঠে সালাম দিলো। মিসেস বন্যা আরশি কে নিয়ে সোফায় বসলেন। কুশল বিনিময় করলেন প্রতিবেশী মহিলাদের সাথে। এমন সময় এক মহিলা খোঁ*চা মে*রে বললো,

— ভাবী মেয়ের চেহারা তো মোটামোটি তবে গায়ের রং তো কালো। আবরারের সাথে তো কোনোদিক দিয়েই যায় না।
আরেক মহিলা তা*ল মিলিয়ে বললো,
— হ্যা ভাবী ঠিকই বলেছেন। আমরা তো ভেবেছিলাম আবরার যেমন সুন্দর তেমন সুন্দর মেয়ে বিয়ে করবে। এখন তো দেখি হয়ে গেলো উ*ল্টো। তারপর শুনলাম মেয়ের নাকি বাপ ও নাই। এমন একটা মেয়ে কে কি করে আবরার পছন্দ করলো? নিশ্চয়ই এই মেয়ে কোনো ভাবে ফাঁ*সি*য়েছে। এসব মেয়েদের কাজ ই তো এটা।
এবার আরেক মহিলা খুঁ*চি*য়ে বললো,

— তা ভাবী মেয়ের বাড়ি থেকে কি কি দিলো?
এই প্রশ্ন শুনে প্রথম কথা বলা মহিলা টা হেসে দিলো। ব্যা*ঙ্গ করে বললো,
— কি যে বলো না শিউলি! যেই মেয়ের বাপ নেই সেই মেয়ের পরিবার আর কি দিবে! সামর্থ আছে নাকি কিছু দেয়ার?
অ*প*মা*নে চোখ মুখ লাল হয়ে আসলো আরশির। তবুও মাথা নিচু করে থ*ম মে*রে বসে রইলো সে। এই পরিবারের সম্মানের কথা চি*ন্তা করে এখনো চুপ আছে সে। নাহলে এতক্ষনে এই মহিলাদের অ*প*মা*ন করা, খু*চা*নো ছু*টি*য়ে দিতো।

মিসেস বন্যা কিছু বলবেন এমন সময় আরশির পাশে ধ*প করে বসে পড়লো কেউ। চোখ তু*লে তাকালো আরশি। আবরার কে দেখে চোখে পানি চলে আসলো আরশির। তবে চোখের পানি চোখের মাঝেই লুকিয়ে রাখলো সে। বাইরে গ*ড়া*তে দিলো না। আবরার একবার আরশির দিকে গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে প্রতিবেশী মহিলাদের দিকে ঘাড় কা*ত করে তাকালো। আবরার কে এভাবে তাকাতে দেখে থ*ত*ম*ত খেলো মহিলাগুলো। বাঁ*কা হাসলো আবরার। বললো,

— আমার বউ কে নিয়ে আপনাদের বড্ড বেশি চি*ন্তা দেখছি! তা সংসার টা কি আমি করবো না আপনারা করবেন? আর কি যেনো বলছিলেন আমার বউয়ের গায়ের রং কালো? তা ফর্সা রং দিয়ে কি হবে উপকারিতা গুলো যদি একটু বলতেন? আঙ্কেল রা বুঝি আপনাদের সুন্দর গায়ের রং ধু*য়ে প্রতিদিন এক গ্লাস করে পানি পান করেন? উম হবে হয়তো। এই জন্যই তো রাহেলা আন্টির চেহারা টা দিনদিন কেমন কা*ল*চে হয়ে যাচ্ছে আর আঙ্কেল দিনদিন সুদর্শন হচ্ছেন। ঠিক বলেছি তাই না রাহেলা আন্টি?

ফু*সে উঠলেন রাহেলা নামক মহিলা। এটা ঠিক তার রূপ দিনদিন নাই হয়ে যাচ্ছে। তাই বলে আবরার তাকে এভাবে খোঁ*চা*বে! চাইলেও কিছু বলতে পারলেন না তিনি। কারণ আবরারের পা*ও*য়ার আর রা*গ কে ভ*য় পান তিনি। মিসেস রাহেলার অবস্থা দেখে ঠোঁট বা*কি*য়ে হাসলো আবরার। বললো,
— ইশ সত্যি কথা বলে ফেললাম মনে হয়! তা যাই হোক আন্টি, আমি কিন্তু এমনিতেই যথেষ্ট সুন্দর। তাই বউয়ের গায়ের রং ধু*য়ে পানি খেয়ে সুন্দর হওয়ার প্রয়োজন নেই।
মহিলাগুলো কি বলবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। তাদের চুপ দেখে আবরার ফের বলে উঠলো,

— কবে ছাড়বেন এসব নি*কৃ*ষ্ট কাজ? একটা মেয়ের বাবা নেই। সেই মৃ*ত বাবা কে টে*নে আপনারা আ*জে*বা*জে কথা বলছেন। আপনাদের বাপ টে*নে আমি যদি এখন কিছু বলি স*হ্য করতে পারবেন? পারবেন না। আর রইলো রং, রূপের কথা, রূপ যৌবন যে স্থায়ী নয় তার প্রমান নিজেদের দিকে তাকালেই দেখতে পাবেন। আর কি যেনো বলছিলেন ওর পরিবার আমাদের কি দিয়েছে?

ওর মা আমার হাতে নিজের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ, নিজের মেয়ে কে তু*লে দিয়েছেন। এরচেয়ে মূল্যবান আর কিছু হতে পারে কি! আমার মনে হয় না কোনো পিতা মাতার কাছে সন্তানের চেয়ে মূল্যবান কিছু আছে। যাই হোক এসব আপনাদের মতো বি*কৃ*ত মস্তিকের মানুষের মাথায় ঢু*ক*বে না। আপনারা বউ কে তো দেখতে আসেন নি, এসেছেন বউয়ের কি আছে কি নেই এসব নিয়ে খু*চা*খু*চি করতে। তবে ও*য়া*র্ন করে যাচ্ছি আমার বউয়ের ব্যাপারে আরেকটা বা*জে কথা যেনো আমার কানে না আসে। প্রথম বার ভু*ল করে পার পেয়েছেন। নেক্সট টাইম পাবেন না।

কথা শেষ করে উঠে দাঁড়ালো আবরার। আরশির হাতের কব্জি টে*নে দাঁড় করালো আরশি কে। এতক্ষন মুগ্ধ হয়ে আবরারের দিকে তাকিয়ে ছিলো আরশি। কিন্তু হুট করে এভাবে হাত চে*পে দাঁড় করানোর কারণে হাতে ব্য*থা পেলো সে। আবরার মহিলাদের দিকে তাকিয়ে বললো,

— আমার বউটাকে নিয়ে গেলাম আন্টিরা। আজ আমার বউটাকে বড্ড বেশি সুন্দর লাগছে। চোখ ফেরানো মু*শ*কি*ল হয়ে গেছে। এখন আমি যদি আপনাদের সামনে বসে বউয়ের দিকে তাকিয়ে থাকি তাহলে তো আপনারা আমাকে বে*হা*য়া বলবেন। তাই বউ কে রুমে নিয়ে যাচ্ছি। তারপর শান্তিতে বসে দেখবো। আপনারা কিন্তু নাস্তা করেই যাবেন ওকে?
আবরারের কথা শুনে আরশির কান যেনো জ্ব*লে উঠলো।

ল*জ্জা*য় হাঁ*স*ফাঁ*স করতে লাগলো সে। সেদিকে পা*ত্তা নেই আবরারের। সে আরশির হাত ধরে টে*নে নিয়ে আসতে চাইলো। কিন্তু দেখলো আরশি শাড়ি পড়ে তেমন একটা হাঁটতে পারছে না। তাই ফ*ট করে আরশি কে কোলে তু*লে নিলো আবরার। চ*ম*কে উঠলো আরশি। শরীরে মৃদু ক*ম্প*ন অনুভব করলো সে। মাথা উঁচু করে দেখলো মহিলাগুলো হা করে তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। লজ্জায় আরও সি*টি*য়ে গেলো আরশি। বিড়বিড় করে বললো,

— বে*হা*য়া পুরুষ! মানুষ এতোটা বে*হা*য়া কি করে হয়!
আরশি বিড়বিড় করে বললেও তা আবরারের কান অব্দি ঠিকই পৌছালো। সে আরশি কে নিয়ে উপরে উঠতে উঠতে ফিসফিস করে বললো,

তোমাতে আসক্ত আমি পর্ব ৩৪

— বে*হা*য়া হয়েছি তোমার কারণে মিসেস অদ্ভুত চোখওয়ালি। তোমার ওই আঁখি জোড়ার দিকে তাকিয়ে আমি চূড়ান্ত পর্যায়ের বে*হা*য়া হয়েছি। এখন দো*ষ টা কার বলো তো? আমার? উহু, আমার না তোমার। বা*ধ্য করেছো তুমি আমাকে বে*হা*য়া হতে। অ*বা*ধ্য হয়েছি আমি শুধুমাত্র তোমার জন্য।

তোমাতে আসক্ত আমি পর্ব ৩৬