তোমার ছোঁয়ায় আসক্ত আমি পর্ব ৩
নীল মণি
পড়ন্ত বিকাল ঢলে পড়েছে গোধূলির কোলে। আকাশে ধীরে ধীরে অন্ধকারের ছায়া জমতে শুরু করেছে, আর দূর আকাশে জেগে উঠেছে রাতের অলস মিছিল। শহরের রাস্তায় হালকা ব্যস্ততা, দূর থেকে চলা যানবাহনের হুইসেল, ফুটপাথে টালি খেলা রোদের শেষ আলো সব মিলিয়ে এক অদ্ভুত মিশ্রণ তৈরি করছে। শহর যেন সন্ধ্যার সেই নরম সোনালী আবেশে মোড়া।
সন্ধ্যা তখন ৭:১৫। সন্ধ্যেবেলার রঙ এখনও পুরো গভীরভাবে ছড়ায়নি, তবে ছায়া আর আলো এক অদ্ভুত খেলা করছে। সেই গোধূলির মায়াজালে অনন্যা আর মারিয়া এক ঝলক উচ্ছ্বাস নিয়ে রায়ানকে নিয়ে আবরার জায়নের কাছে উপস্থিত হলো।
অনু চোখে উজ্জ্বলতা, মুখে মিষ্টি হাসি আর কণ্ঠে অবাধ আনন্দ নিয়ে বলে উঠলো,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
__”ভাইয়া, এবার তো আমাদের গিফ্ট গুলো দাও, সেই দুপুর থেকে অপেক্ষা করছি।”
জায়ন এই বাড়ির টেক কেয়ারার রহীম চাচার দিকে তাকিয়ে হাসি দিয়ে বলল,
__”রহীম চাচা, আমার রুম থেকে ব্ল্যাক এর লাগেজ দুটো এনে দাও না।”
রহীম চাচা ও রায়ান দ্রুত রুমে গিয়ে লাগেজ দুটি নিচে নিয়ে আসে। তাদের পায়ে দৃঢ়তা, চোখে আনন্দ, মনে ভরসা কারণ তারা জানে, জায়ন এই মুহূর্তে একধরনের ছোট্ট উদযাপন করতে চায়।
জায়ন তখন সবাইকে ঘিরে দাঁড়িয়ে গিফ্ট গুলো বের করতে লাগল। একে একে প্যাকেটগুলো হাতের মধ্যে আসতেই, প্রতিটি উপহার যেন তাদের চোখে আনন্দের দীপ্তি জ্বালায়।
মা চাচীর জন্য বিদেশী ডায়মন্ড জুয়েলারি। জায়নের চোখে স্নেহের উষ্ণতা, মৃদু হাসি, মনে আনন্দের অদৃশ্য ঝলক। সে জানে, মা চাচী এই ছোট্ট টুকরো উপহারেও খুশি হবেন, তাই চোখে কোমল উজ্জ্বলতা।
বাবা চাচা ও ফুপা জন্য বিদেশী স্যুট প্যান্ট। তার কণ্ঠে প্রশান্তি, চোখে সন্তুষ্টি। মনে হচ্ছে, এই ছোট্ট অভিব্যক্তি দিয়ে সে তাদের আনন্দ দিতে চায়।
ইউভান আর আকাশের জন্য দামী রিস্টওয়াচ ও বিদেশী ব্র্যান্ডেড পারফিউম। জায়নের চোখে উচ্ছ্বাস, কণ্ঠে মৃদু আনন্দ, মনে এক প্রশান্তি যেন ছোট্ট এই জিনিসগুলো তাদের মুখে হাসি ফোটাতে পারবে।
রায়ানের জন্য
শার্ট, প্যান্ট, একটি ব্র্যান্ডেড স্মার্টওয়াচ, কিছু দামী পেন। জায়নের কণ্ঠে হালকা গম্ভীরতা, চোখে উজ্জ্বলতা, মনে সন্তুষ্টি। সে চায়, রায়ান আনন্দে ছুটে যাবে, চোখে হাসি ফুটবে।
বৃষ্টির জন্য চারটি ড্রেস, একটি শাড়ী, একটি পেনডেন্ট দিয়ে চেইন। জায়নের চোখে কোমলতা, কণ্ঠে স্নেহ, মনে এক ধরনের আদর মিশ্রিত অনুভূতি। সে জানে, এই উপহার দিয়ে বৃষ্টি খুশি হবে, আর তার চোখে আনন্দ ফুটবে।
অনন্যা ও মারিয়ার জন্য দুটো ফ্রক ড্রেস, মারিয়ার জন্য বিদেশী ডল, অনন্যার জন্য কসমেটিকস আর পারফিউম। জায়নের চোখে উচ্ছ্বাস, মুখে নরম হাসি। সে অনুভব করছে, এই ছোট্ট খুশিগুলোই তাদের ভালো লাগার মুহূর্ত হয়ে উঠবে।
প্রতিটি গিফ্ট দেওয়ার সময় তাদের চোখে কৌতূহল, হৃদয়ে উচ্ছ্বাস, মুখে অদ্ভুত উষ্ণতা। আনন্দের এই মুহূর্তে সবাই যেন এক জায়গায় মিলিত হয়ে আবেগের ছোট্ট স্রোত তৈরি করেছে।
অনু, মারিয়া, রায়ান, আকাশ, বৃষ্টি সবাই জায়নের দিকে তাকিয়ে, চোখে উজ্জ্বলতা, মুখে হাসি, মনে আনন্দের ঢেউ। জায়নের সঙ্গে এই ছোট্ট উদযাপন তাদের মনে আনন্দের এক দ্যুতি জ্বালিয়ে দিল।
সবার চোখে আনন্দের উজ্জ্বলতা, মুখে মৃদু হাসি, হৃদয়ে উচ্ছ্বাস তাদের হাতে নতুন নতুন গিফ্ট। কিন্তু এক কোণে দাঁড়িয়ে থাকা তিয়াশার চোখে হঠাৎ ভাঙা অনুশোচনার আভা, মুখে অজানা রঙের ছায়া নেমে এসেছে। চোখে অদৃশ্য ক্ষোভের রেখা, ঠোঁটের কোণে লুকানো অস্থিরতা, মন-ভেতরে একটি প্রশ্ন ঘুরছে,
“আমার জন্য কি কিছু আনেনি?”সে অনুভব করছে, আজকের আনন্দময় মুহূর্তে তার জন্য কিছু নেই।
হঠাৎ মারিয়ার কণ্ঠের কোমল উচ্ছ্বাস ভাঙল এই নিস্তব্ধতাকে,
__”বড় ভাইয়া, তিয়ু আপুর জন্য কিছু আননি?”
তার চোখে কৌতূহল, মুখে মিষ্টি হেসে ওঠার চাহনি, মনে লুকানো অস্থিরতা। সে জানে, এই প্রশ্ন তিয়াশার মনকে সরাসরি স্পর্শ করবে।
সবার নজর তখন তিয়াশার দিকে চলে আসে। মেহজাবীন বেগমের কণ্ঠে আসে স্নেহ আর হালকা মৃদু ব্যঙ্গের মিশ্রণ,
__”কিরে জায়ন, মেজ আম্মুর জন্য কিছু আনিস নি?”
তার চোখে কোমল উদাসীনতা, মনে হালকা আশ্চর্য তবে মুখে মিষ্টি হাসি। তিনি জানেন, এই মুহূর্তে তিয়াশার অনুভূতি সবচেয়ে স্পর্শক।
জায়ন তখন তিয়াশার দিকে তাকিয়ে হালকা হাসি ছাড়ে, তার চোখে মৃদু উজ্জ্বলতা, কণ্ঠে আনন্দ, মনে স্বস্তি একদম শিশুর মতো সরল খুশি।
একটু গা জ্বালান হাঁসি দিয়ে বলল,
__”না, তোমার মেজ আম্মুর জন্য কিছু আনিনি, সে তো আমার সঙ্গে কখনও কথাই বলেনি, আমি তো ভুলেই গেছিলাম আমাদের বাড়িতে আরেক পিচ্চি আছে।”
জায়নের এই কথা বলার সময় চোখে দুষ্টুমি, ঠোঁটে ছোট্ট হাসি, মনে ছোট্ট স্নেহ, যেন অনিচ্ছায় এক অদ্ভুত আনন্দের মুহূর্ত তৈরি হচ্ছে।
তিয়াশার চোখ জ্বলে ওঠে, চোখে ক্ষোভের অদৃশ্য রেখা, ঠোঁট গটগট করে কষে চেপে ধরেছে রাগ। তার মনে অস্থিরতা, কিন্তু মুখে শক্ত সংকল্প,
__”লাগবে না আমার আপনার কোন গিফ্ট, আমার অনেক গিফ্ট দেওয়ার লোক আছে… বড় আব্বু আমাকে গিফ্ট দেবে, তাই না বড় আব্বু?”
মনের গভীরে এক ধরনের প্রতিরোধ আর আত্মসম্মান, চোখে অদৃশ্য চঞ্চলতা, মুখে ছোট্ট চাপে থাকা হাসি।
প্রান্তিক চৌধুরী সাহেব তিয়াশার কথায় খুশি হয়ে
হেসে বলেন,
__”হ্যাঁ আম্মু, আমি তোমায় গিফ্ট কিনে দেব।”
তার চোখে আনন্দ, কণ্ঠে স্নেহময় উচ্ছ্বাস, মনে সন্তুষ্টি মেয়ের খুশি দেখেই তার মন ভরে যায়।
মেহজাবীন বেগমও চুলের কানের কাছে এক সামান্য খেয়াল রেখে বলেন,
__”হ্যাঁ রে বাবা, তোর কোন কান্ডক জ্ঞান নেই, তুই সবার জন্য আনলি, ওর কি খারাপ লাগছে না এখন, তিযু মামনি তোমায় অমিয় গিফ্ট কিনে দেব।”
মুখে কোমল হাসি, চোখে মৃদু উষ্ণতা, মনে সন্তুষ্টি এই মুহূর্তে তিনি সন্তুষ্ট যে, সকলের মন খুশিতে ভরে উঠছে।
সেই মুহূর্তে তিয়াশার চোখে হালকা উজ্জ্বলতা, মুখে জয়ের হাসি, ধীরে ধীরে গর্ব আর আনন্দের ছাপ। সে ধীরে ধীরে জায়নের দিকে মুখ বাঁকিয়ে উপরের দিকে চলে যায়। মনে আনন্দ, চোখে উজ্জ্বলতা, হালকা অস্থিরতা মিশে একসাথে ফুটে উঠেছে।
এই দেখে জায়ন মুচকি মুচকি হাসছে।
তার হাসি যেন নিঃশব্দে ঘরে ভরিয়ে দিচ্ছে আনন্দের ঝলক, চোখের কোণ হালকা উজ্জ্বল, মনে একটা শান্তি আর আনন্দের মিশ্রণ। সে হাসছে কেবলমাত্র মুহূর্তের আনন্দে নয়, বরং তার চারপাশের মানুষদের সুখ-উচ্ছাস দেখেও। শরীরের ভঙ্গি হালকা শিথিল, কণ্ঠে একটি শান্ত মৃদু ঝাঁকুনি, মনে এক ধরনের নিখুঁত সান্ত্বনা।
জায়ন একটু পর ইউভিকে বলে উঠল,
“চল পুরনো পঙ্গপাল দের সঙ্গে দেখা করে আসি, ওদের সঙ্গে দেখা না করলে আবার বম্ব ব্ল্যাস্ট করবে, আকাশ তুই ও চল আজকে এই কদিন এখানেই থাকবি”
জায়ন এর কণ্ঠে মিশ্রিত উত্তেজনা আর মজা, চোখে এক উজ্জ্বল চঞ্চলতা। মনে ঝরছে পুরনো স্মৃতি আর বন্ধুত্বের উষ্ণতা, যা দূর দেশেও ম্লান হয়নি। শরীরে ছোট্ট এক উত্তেজনার কম্পন, যেন সে প্রায়ই ছোট্ট ছদ্মবুদ্ধিতে বন্ধুদের সঙ্গে হট্টগোল করতে প্রস্তুত।
তারপর জায়ন আয়েশা বেগম কে উদ্দ্যেশ্যে করে বলল
__”ফুপি তোমরা তো থাকবে না আকাশ কে রেখে দিচ্ছি কদিন”
মুখে হালকা হাসি, চোখে এক রকম শান্ত নিশ্চয়তা, মনে নিরাপত্তার অনুভূতি যে কেউ বা কিছুর জন্য আকাশকে চিন্তা করতে হবে না। শরীরের ভঙ্গি থেকে বোঝা যায় সে দৃঢ় ও সাবধান, তবে মৃদু আনন্দে উদ্দীপিত।
আয়েশা বেগমও হ্যাঁ সূচক সম্মত্তি জানিয়ে দিলেন।
চোখে সন্তুষ্টি, মুখে মৃদু হাসি, মনে শান্তি এবং আনন্দ পরিবারের ছোটখাটো কার্যক্রম সঠিকভাবে সম্পন্ন হওয়ার খুশি।
৩ ভাই বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়ল, জায়ন এর পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে।
মনে উত্তেজনা, চোখে এক সতর্ক উজ্জ্বলতা, মুখে হাসির ঝলক। বিদেশে থেকেও বন্ধুত্বের সেই উষ্ণতা আর মধুরতা যেন একইভাবে রয়ে গেছে। শরীরে এক ধরনের প্রফুল্ল, উদ্দীপক অনুভূতি, যা দূরত্ব ও ব্যস্ততা কখনো ম্লান করতে পারেনি।
টং এর চায়ের দোকানের সামনে দাড়িয়ে আছে আহান, সাগর, পলাশ আর নাজিম।
তাদের চোখে আনন্দ, মুখে খোলাখুলি হাসি, মনে এক হ্রাস অনুভূতি যেন পুরনো বন্ধুত্বের স্পন্দন আবার নতুন করে জেগে উঠেছে। শরীরে সেই উত্তেজনার কম্পন, হালকা হাঁচি আর হেসে উঠার প্রলেপ।
জায়ন কে তো দেখেই তাদের হাঁসি আর এক হ্রাস অনুভূতি জড়িয়ে পড়ল।
মুখে খোলাখুলি হাসি, চোখে উষ্ণতা, মনে স্নেহমিশ্রিত আনন্দ পুরনো বন্ধুর সাথে দেখা হওয়ার খুশি।
ইউভি আর আকাশের উদ্দেশ্যে তারা বলল,
__”কি ছোট ভাই কি খবর তোমাদের, সব ঠিক তো?”
চোখে আগ্রহ, কণ্ঠে স্বাভাবিক উচ্ছ্বাস, মনে বন্ধুত্বের নিখুঁত স্পর্শ। শরীরে ছোট্ট উত্তেজনার ঢেউ, হাতের ভঙ্গিতে বন্ধুত্বের স্বচ্ছন্দতা।
ইউভি আর আকাশ হ্যাঁ সূচক সম্মত্তি জানিয়ে, মেতে উঠল তাদের গল্পের আসরে।
চোখে আনন্দ, মুখে উচ্ছ্বাস, মনে বন্ধুত্বের উষ্ণতা। শরীরের প্রতিটি অঙ্গের ভাষা হাতের অঙ্গভঙ্গি, হালকা লাফানো সব কিছুর মধ্যেই হাসি-ঠাট্টার মিলন।
এই ৫ বন্ধুর মধ্যে জায়ন আর নাজিমই অবিবাহিত, আর আহান, সাগর, পলাশ আগে ভাগেই বিয়ে করেছে।
মনে এক ধরনের শান্ত আত্মবিশ্বাস, চোখে নীরব আনন্দ, মুখে হালকা হাসি এতে বন্ধুত্বের সম্পর্কের প্রেক্ষাপট স্পষ্ট।
সাগর জায়নের উদ্দেশ্যে একটু ঠাট্টার সুরেই বলল,
__”কি মামা, দিল্লীর লাড্ডু খাওয়ায় জন্য রেডী তো?”
মুখে উচ্ছ্বাস, চোখে হাসির ঝলক, মনে উত্তেজনা আর খুনসুটি এক ছোট্ট মজার প্রতিযোগিতা।
জায়ন বাকা হাসি দিয়ে এক কথায় জবাব দিলো ,
__”লাড্ডু খাব বলেই তো ফিরে আসা, তোরা তো খেয়েছিস এখন আমি একটু টেস্ট করে দেখি, এর পর নাজিম তারপর আমাদের ইউভি আর আকাশও টেস্ট করবে, কি বলিস তোরা”
তোমার ছোঁয়ায় আসক্ত আমি পর্ব ২
চোখে কৌতূহল, মুখে হাসি, মনে বন্ধুত্বের মধ্যে এক রকম মজা আর চ্যালেঞ্জ। শরীরে হালকা উত্তেজনা, হাতের ভঙ্গিতে স্বাভাব সব মিলিয়ে বন্ধুত্বের প্রাণবন্ততা।
ব্যাস, এইভাবেই হাসি-ঠাট্টার মধ্যে তাদের সময় কেটে গেল।
মনে আনন্দ, শরীরে হালকা উদ্দীপনা, মুখে খোলাখুলি হাসি যেন একটি ক্ষণিকের স্বর্গীয় মুহূর্ত বন্ধুত্বের আড্ডার মাঝে স্থায়ী হয়ে গেল।