তোমার ছোঁয়ায় আসক্ত আমি পর্ব ৯

তোমার ছোঁয়ায় আসক্ত আমি পর্ব ৯
নীল মণি

জায়ন এর মার্সিডিজ টা বাড়ির লোহার ফটক এর সামনে এসে পার্কিং করল । কিছু না বলেই বেরিয়ে গেল , তিয়াশার
দিকে একবার ঘুরে তাঁকালো না পর্যন্ত। তিয়াশা নিজেই আস্তে আস্তে গাড়ি থেকে নেমে বাড়িতে প্রবেশ করল , সে একটু কোমরে ব্যথাও পেয়েছে। ড্রইং রুম এর সোফায় মেহজাবীন বেগম, রূহেনা বেগম, সুরাইয়া বেগম ও বৃষ্টি বসে ছিল , বাসার দরজার কাছে দাড়িয়ে কাজ করছিল কাজের বুয়া । তখন বুয়ার নজরে পড়ে জায়ন হেঁটে আসছে তার রক্তাত্ব হাত টা নিয়ে , কাজের বুয়া ওই দেখে জোরে চিৎকার করে বলল

” ও আফা এয়া আইও জলদি, দাইদা বাবুর হাতার থাইক্যা রক্ত বাইর আইতাসে। ও আল্লাহ হেইয়া কি হইয়া গেছে।”
সবাই হতভম্ব হয়ে বাসার প্রধান দরজার সামনে এসে দেখতে লাগল কি হয়েছে , দেখতেই মেহজাবীন বেগম এর সঙ্গে সঙ্গে সবাই চমকে উঠলেন। মেহজাবীন
জায়ন এর দিকে এগিয়ে কাঁদো কাঁদো সুরে বললেন –
” কি হয়েছে বাবা ? হাতের এরকম অবস্থা কেন?”
বৃষ্টি ও হতবাক হয়ে বলল –
” জায়ন ভাই বলেন কি হয়েছে হাতে , কোথা থেকে এই আঘাত পেয়ে ছেন?”
জায়ন কিছু বলল না পাস কাটিয়ে চলে গেল উপরে ।
রূহেনা বেগম বললেন –
” ও জায়ন , বাবা তুই তো অফিস গেছিলিস , এই সময় বাসায় ফিরে আসলি । অফিসে কিছু হয়েছে?”
জায়ন তাও কিছু বলল না , না পিছনে ফিরে তাকাল , উপরে জেতেই নিচের সবাই জোরে দরজা বন্ধ করার আওয়াজ পেল।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

সুরাইয়া বেগম আর কিছু বলে ঊঠতে পারলেন না।
মেহজাবীন বেগম এর নজর আবার সদর দরজার দিকে পরতেই দেখল তিয়াশা ভেতরে আসছে ।
মেহজাবীন বেগম তিয়াশা কে জিজ্ঞেস করে বসল —
” আম্মু তুই কি জায়ন এর লগে এসেছিস?”
তিয়া শা মাথা নিচু করে বললেন —
” হ্যাঁ বড় আম্মু”
রুহেনা বেগম ও তিয়াশা কে দেখে খানিকটা ভ্রূ কুচকে বললেন —
” এই মেয়ে তুই জানিস বড় বাবার হাতে কি হয়ছে?”
তিয়াশা পড়েছে মহা বিপদে এ কি বলবে বুঝে পারছে না , সে নিজে বাচ্ছে না নিজের ব্যথার জালায় । না পারছে কাউকে বলতে যে সে নিজেও কতটা আঘাতগ্রস্ত।
তিয়াশা একটু ঘাবড়ে গিয়ে বলল। —

” আসলে আ আ আম্মু , ইয়ে মানে”
এদিকে মেহজাবীন বেগম বৃষ্টি কে উদ্যেশ্য করে বলল —
” বৃষ্টি আম্মু যা তো ফার্স্ট এইড বক্স খানা নিয়ে উপরে।
বৃষ্টি ‘জী বড় আম্মু ‘বলে তৎক্ষনাৎ ফার্স্ট এইড বক্স টা নিয়ে উপরে চলে গেল ।
রূহেনা বেগম এদিকে নিজের কোমরে হাত দিয়ে তিয়াশার দিকে রাগান্বিত দৃষ্টিতে
তাকিয়ে –
” এই তুই ইয়ে ইয়ে কি করছিস ? তোকে কিছু জিজ্ঞেস করছি না । তুই আবার ওর হাতে কিছু করিস নি তো?”
সুরাইয়া আপা তিয়াশার কাছে এসে বলেলন —
” আপা কি যে বলনা , ও এমনিই দেখছ ভয় ভয় আছে।”
তিয়াশা মনে মনে বির বির করল – ” উহ ওনার জায়ন বাবা লোক কে মেরে কুল কিনারা পাচ্ছে না , ওনার জায়ন বাবা কে আবার আমি মারিনি তো ? যত্তসব। বাঘের বাচ্চা কে একদিন এমন টাইট দেব সব হিরকি বেরিয়ে যাবে ”
সুরাইয়া বেগম তিয়াশার মুখ এর চিবুক টা ছুঁয়ে —
” তিয়ু কি হয়েছে আম্মু , জায়ন এর সঙ্গে ?”
তিয়াশা বলল —

” আসলে ছোট আম্মু ভাইয়া আমাকে সেন্টারে আনতে গিয়ে ছিলেন । আসার পথে এক জনের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ভাই এর হাত টা উইন্ডো গ্লাস এ গিয়ে লাগে ।
গাড়ির গ্লাস এ হাত টা লেগে গিয়ে চোট পেয়ে ছেন ।”
মেহজাবীন বেগম বললেন —
” হে আল্লাহ এই ভাবে কেউ চোট পায়, ছেলে মেয়ে গুলো কি ভাবে যে চলা ফেরা করে । আর ভালো লাগে না বাপু”
সুরাইয়া বেগম বললেন তিয়াশা কে –
” যা তুই ফ্রেশ হয়ে নিচে আয় , খেতে দিব । রায়ু আর অনু আসার ও সময় হয়ে আসল । তারাতারি যা। ”
এই শুনে তিয়াশা নিজের রুম এর উদ্দেশ্যে চলে গেল।
রুহেনা বেগম এর যেন তিয়াশার কথা টা বিশ্বাসযোগ্য
মনে হল না। রুহেনা বেগম মেহজাবীন বেগম এর কাছে গিয়ে বললেন
” আপা চিন্তা করোনা তুমি বসো এখানে।
আমরা খাবারের ব্যবস্থা করি , এই ছোট চল ।
এই যে আফিযার মা (কাজের বুয়া) জাও তো বাসন গুলো তারাতারি ধুয়ে দাও ।”
কাজের বুয়া –

“জি আফা অহনি দিতাছি।”
এই বলে যে যার কাজে চলে গেল……
জায়ন এদিকে রুমে প্রবেশ করেই ডেভিনে ব্লেজারটা ছুড়ে মারলো, তারপর নিজের শরীরটা ডেভিনে একটু এলিয়ে দিয়ে কিছু একটা ভাবতে ভাবতে হঠাৎ দুই উরুর ওপরে কোনুই রেখে দুই হাত দিয়ে কপাল চেপে ধরে বসে রইল।
জায়নের দরজায় কেউ নক করল, কিন্তু জায়ন এর এদিকে কোন হুশ নেই ।
তারপর আরো দু তিনবার দরজায় নক্ এর আওয়াজ আসলো।
” জায়ন ভাই ,জায়ন ভাই প্লিজ দরজাটা খুলুন”
বৃষ্টির আওয়াজ আসতেই জায়ন এর যেন হুশ
ফিরে আসল ।
জায়ন আস্তে করে উঠে ধীর পায়ে দরজাটা খুলে দিল।
ভ্রূ কুচকে বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে দেখল ।

“কিছু বলবি”
বৃষ্টি অবাক হয়ে তাকিয়ে বলল–
“আরে বাবা কি বলব । আপনার হাতটা কতটা কেটে গেছে দেখতে পাচ্ছেন না রক্ত বের হচ্ছে ।”
“চলুন ভিতরে বসুন আমি হাতটায় পট্টি করে দেই”
“আমি করে নেব তুই যা”
“আরে বাবা একা একা কি করে করবেন । আসুন বসুন ”
জায়ন কপালে দু আঙ্গুল ঘষতে ঘষতে বলল –
” বৃষ্টি প্লিজ আই নিড সাম প্রাইভেসি রাইট নাউ”
বৃষ্টি একটু মন খারাপ করে বলল
“কিন্তু হাতটা”
জায়ন একটু নিচু সুরে বলল –
“আই উইল টেক কেয়ার মাইসেলফ। জাস্ট গো ”
বৃষ্টি জায়নের দিকে আরেকবার ঘুরে বলল
” বড় আম্মু তো আমাকে পাঠিয়েছে এখন যদি আমি আপনার হাতটা ব্যান্ডেজ করে না যাই তাহলে আমাকে আবার বকবে। আঘাতটাই বা কোথা থেকে লাগলো?
জায়ান একটু করুন সুরে বলল বৃষ্টিকে–

“বৃষ্টি প্লিজ, আমি আম্মুর সাথে পরে কথা বলে নেব।”
বৃষ্টি কিছু একটা ভেবে ফার্স্ট এইড বক্সটা রেখে চলে গেল।
এরমধ্যে জায়নের ফোনে অনেক কল এসে যাচ্ছে কিন্তু জায়ন তার ফোন ছুঁয়েও দেখল না।
বৃষ্টি চলে যেতেই জায়ন পুনরায দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে নিজের শরীরে থাকা সেই সকালে অফিসে পড়ে যাওয়া শার্ট আর ট্রাউজারটা খুলে ছুড়ে মারলো ফ্লোরে , একটা টাওয়াল কোমড়ে পেঁচিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেল।
শাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে আছে জায়ন। এক হাতে ভিজা চুলগুলো পেছনে ঠেলে দিচ্ছে, আরেক হাত মুঠোয় নিয়ে আছড়ে মারছে টাইলসের দেওয়ালে। ঠান্ডা পানির ধারা তার চুল বেয়ে গাল ছুঁয়ে পড়ছে মেঝেতে, ঠিক দেখতে যেন জমে থাকা সব অনুভবকে ধুয়ে মুছে ফেলতে চাইছে। জল আর নীরবতার মাঝখানে তার বুকের গভীরে কোন কথার হাহাকার করছে —

বলা হয়নি, শোনা হয়নি, তবু থেকে গেছে ।
জায়ন এর বার বার গাড়িতে রোদের সঙ্গে হয়ে যাওয়া ঘটনা চোখের সামনে ফ্ল্যাশ ব্যাক হচ্ছে । চোঁখ টা বন্ধ করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বির বির করলো-
“I want you so much my Kitty cat , I want to taste you more than i thought.
U taste like mine my little kitty cat .
oh f**k what should I do with you kitty” এই বলে পুণরায় আবার হাতটা টাইলস এর দেওয়ালে আছাড় মারছে।
এইভাবে কেটে গেল প্রায় ঘন্টা খানিক সময়। ঘন্টা পরে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে , কাবর্ড থেকে একটা টি শার্ট আর একটা ব্লাক কালারের ব্যাগি প্যান্ট বের করে সেটা পরে , টাওয়াল টা দিয়ে মাথা টা আরেক টু মুছে বিছানায় গা এলিয়ে দিল।

এদিকে তিয়াশাও অনেকক্ষণ আগে ফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে রুমে এসে শুয়ে পড়েছিল।
দুপুরের পরে মেহজাবীন বেগম অনেকবার জায়ন কে খেতে দেখেছে কিন্তু জায়ন দরজা খোলেনি ।
সন্ধ্যা নামল ধীরে ধীরে, ঠিক যেন আকাশ তার রঙ পাল্টে কাঁধে ছায়া মেখে নিচ্ছে— গাছে গাছে হালকা বাতাসে পাতার দুলুনি, দূরে আজান ভেসে আসছে নরম সুরে, আর জানালার ধারে দাঁড়িয়ে কার যেন বুকের গভীর শূন্যতা হঠাৎ খুব টের পাওয়া যাচ্ছে; দিনশেষের এই আলোটা বড়ো অদ্ভুত — কিছু বলে না, তবু অনেক কথা বুঝিয়ে দেয়।
সন্ধ্যা বেলায় জায়ন রেডী হয়ে কোথাও বেরোচ্ছিল ।
ড্রয়িং রুমে বসেছিল বাসার সকল সদস্য।
প্রান্তিক চৌধুরী সাহেব জায়ন কে দেখে বলে উঠলেন–

“কি এমন জরুরী দরকার ছিল ,যার জন্য তোমার প্রথম দিনেই অফিস থেকে দুপুরে বেরিয়ে যেতে হয়?”
আবারো বলে উঠলেন–
“শুনলাম হাতে হাতে নাকি চোট পেয়েছো, তো অফিস ছেড়ে কি এমন কাজে গেছিলে যার জন্য হাতের এই অবস্থা?”
এদিকে তাহসান সাহেবও বলে উঠলেন–
“কিরে জায়ন তুই তো বললি তোর খুব জরুরী দরকার আছে, হাতের এই বাড়াটা কি করে বাজালি?”
জায়ন একটু চুপ করে বলে উঠলো-

“কেন বাবা আমার কি কোন পার্সোনাল কাজ থাকতে পারে না? আমাকে কি সবকিছু বলেই করতে হবে?”
প্রান্তিক চৌধুরী সাহেব জায়ানের দিকে তাকিয়ে একটু অখুশি হয়ে মুখটা গম্ভীর করে বললেন–
” অবশ্যই থাকতে পারে, কিন্তু হাতের এই অবস্থা দেখে আমরা কি জিজ্ঞাসা করতে পারি না”
এদিক দিয়ে জায়ন কিছু বলার আগেই তিয়াশা বলে উঠলো —
“আসলে বড় আব্বু , আমার সেন্টারের সামনে একটা লোকের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ভাইয়ার হাতটা গাড়ির উইন্ডো গ্লাসে গিয়ে লাগে। তখন ভাইয়া হাতে চোটটা পায় ।”
জায়ন তিয়াশার কথা শুনে রাগান্বিত দৃষ্টি দিয়ে তিয়াশ এর দিকে তাকিয়ে আছে। তিয়াশাও সেটা দৃষ্টিপাত করল।
প্রান্তিক চৌধুরী সাহেব আবারও বললেন–

“আম্মু আমি তো তোমায় জিজ্ঞাসা করিনি? তাহলে তুমি কেন বলছ?আজ জায়ন তোমার সেন্টারের সামনে কি করছিল? ”
এবার তিয়াসা কিছু বলার আগেই জায়ন তার বাবার কথার উত্তর দিল —
” কাজটা ঐদিকেই ছিল তাই ওকে আসার সময় নিয়ে এসেছি। কোন সমস্যা আপনাদের?”
প্রান্তিক চৌধুরী সাহেব বললেন —
“না না সমস্যা কোথায়, ভালোই হয়েছে তুমি মেজো আম্মুকে নিয়ে এসেছো। কিন্তু হাতের আঘাতটা মাথায় ঢুকছেনা।”
জায়ন এবার বিরক্ত হয়ে এবার উত্তরটা দিল-

” বাবা রোদ বলল তো কি করে আঘাতটা পেয়েছি।
আমি একটু ব্যাস্ত আছি এখন কি আসতে পারি?”
প্রান্তিক চৌধুরী সাহেব বললেন-
” হ্যাঁ যাও দেখো আবার কিছু অঘটন না ঘটিও।”
এর মধ্যেই মেহজাবীন বেগম জায়ন কে বলে উঠলো —
” বাবা ভাবছিলাম কালকে তোদের বিয়ের কেনাকাটা গুলো কড়েই আসি। কি বলিস?”
এই বিয়ের কথা শুনে তিয়াশার বুকে যেন টাইফুন সাইক্লোন শুরু হয়ে গেছে। এখন সে কোথায় পালাবে ?না পারবে এসব শুনতে না পারবে এখান থেকে পালাতে।
জায়ন এবার আরো বিরক্ত হয়ে বলল —

” যেটা তোমাদের ভালো লাগে সেটা কর আমাকে বলার কি আছে।”
মেহজাবিন বেগম বললেন–
“তুই বিরক্ত কেন হচ্ছিস। আমি তো বলতে চাচ্ছিলাম যে তুই আর বৃষ্টি গিয়ে তোদের বিয়ের পোশাকটা নিজে পছন্দ করে কিনে নিয়ে আসিস?”
জায়ন এবার একটু গম্ভির স্বরে বলেলন —
” আমি কোথাও যাবো না, ইভেন আমার বিয়ের কোন পোশাকও চাইনা । তোমরা বৃষ্টি কে নিয়ে গিয়ে কিনে নিয়ে এসো। আমি এখন আসছি পরে কথা হবে।”
এই বলে জায়ন বাইকের চাবি নিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেল।
প্রান্তেক চৌধুরী সাহেব বললেন মেহজাবিন বেগমকে–

“তোমার ছেলের দিন দিন ভাব সাব আমার ভালো ঠেকছে না।”
মেহজাবিন বেগম কিছু বলবেন তার আগেই প্রণয় আলী সাহেব বললেন–
“আরে ভাইয়া চিন্তা কর না, সামনে বিয়ে তো তাই হয়তো একটু চিন্তায় আছে।
মেহজাবিন বেগম বললেন–
” ছেলেটার দোষ দিওনা, এই একমাস আগে দেশ থেকে ফিরল। সব কিছুর সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে একটু সময় লাগবে তাই না ।
রুহেনা বেগম এ একটু এগিয়ে এসে বললেন –
” জি ভাইয়া আপা ঠিক ই বলেছেন।”
প্রান্তিক চৌধুরী সাহেব বললেন –

” নাও নাও বাবা হয়েছে , তোমাদের সামনে ছেলের কথা কিছু বললে হয়েছে , ব্যাস।
আজকে আর চায়ের টংয়ের সামনে না, জায়ন সিধা চলে গেল সাগরদের বাড়িতে।
বাড়িতে ঢুকতেই কলিংবেলটা বাজালো দুবার। সাগরের স্ত্রী ইভা এসে দরজা খুলে একটু মুচকি হাসি দিয়ে বলল–
” আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া, ভিতরে আসুন আপনার জন্য উনি ওয়েট করছে।”
” জী ভাবি ওয়ালাইকুম আসসালাম , ভালো আছেন আপনি।”
“জি ভাইয়া আলহামদুলিল্লাহ। ভেতরে আসুন প্লিজ”
“ভাবি সাগর কোথায়?”

“জ্বী ভাইয়া উনি ছাদেই আছেন । আপনি চলে যান , আমি আপনাদের জন্য একটু নাস্তা নিয়ে আসি।”
“না ভাবি প্লিজ কিছু খাব না ইচ্ছা নেই কিছু খাবার, আপনি অযথা কষ্ট করবেন না।”
” এ মা কি করে হয়, আপনি এত বছর পরে এই বাড়ি এলেন। আর আমাদের বিয়ের পরে প্রথম আসলেন, একটু কিছু তো খেতেই হবে।”
জায়ান একটু হেসে বলল-
“ঠিক আছে ভাবি।”
এই বলে জয়ান ছাদের দিকে চলে গেল । ছাদে যেতেই জায়ন দেখল সাগর ছাদে রাখা চেয়ারের উপর বসে আছে।
সাগর জায়নকে দেখেই বলল —

” কিরে মামা এত দেরি হল কেন?”
জায়ন একটু ঠোঁট উল্টে বাঁকা হাসি দিয়ে বলল —
“আর বলিস না বেরোনোর সময় বাবার হাজারটা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে”
সাগর বললো হেসে হেসে-
“তো মামা উত্তর তো দিতেই হবো , তুমি যে মামা এক মাইয়ার লগে হাত ফাটায় বইসা রইছো তো প্রস্ন তো আইবেই।”
জায়ন এবার একটু রেগে গিয়ে বলল–
“তোদের দুজনরে আমার ফোন করে বলাটাই ভুল হইছে। এইসব বাদ দে বল আহান কোথায়?”
সাগর হেসে বলল-
“ব্যাটা, একটু আগে কল দিয়া জানাইছে সে নাকি জ্যামে পড়ছে। আইতেছে একটু পরেই।”
খানিক সময় বাদে আহান ছাদে এসে পৌঁছালো , সঙ্গে সাগরের স্ত্রী ইভা এসে তাদের নাস্তা আর কোল্ড ড্রিঙ্কস দিয়ে গেল।
আহান বলল চেয়ারে বসতে বসতে-

“দোস্ত এখনই নিজের হাত ফাটিয়েছিস, আর কয়দিন পরে কি ফাটাবি তা ঠিক নেই।”
আহান আবারও বলল —
” তুই নিযে ২ দিন বাদ বিয়ে করছিস , তাহলে তুই নিজেকে লিটল প্রিন্সেস এর সঙ্গে কেন জড়াচ্ছিস?এটা কি ঠিক জায়ন?”
জায়ান এবার রেগে আহানের কলার চেপে বলল–
” আহান এর বাচ্চা তুই কাকে লিটিল প্রিন্সেস বলছিস? তোদের কতবার বারণ করবো বলতো? তোরা কি চাস আমি তোদের মা****র্ডার করি?।
সাগর একটু কেঁপে কেঁপে বলল ভঙ্গি করে–
“দেখ মামা আমি কিন্তু কিছু বলি নাই এখন। যা বলছে আহান বলছে ।তাই পেদানি ডা আহনরেই দে , আমি নয় যখন বলবো তখন আমায় দ্যাস।”
সাগর এই বলে খিল খিল করে হেসে উঠলো–
জায়ন এর চোখ রেগে এমন মনে হচ্ছে এই দুজনকেই গিলে খাবে।
আহান বলল —

“এবার ছাড় আর কিছু বলছি না বাপ আমার। ”
সাগর বলল —
“নিজে করবে বিয়ে আমরা বললে দোষ”
জায়ন এবার আরো উত্তেজিত হয়ে বসা থেকে উঠে দাড়িয়ে বলল —

তোমার ছোঁয়ায় আসক্ত আমি পর্ব ৮

” শোন আমি ঠিক ভুল বুঝিনা , আর আজ থেকে তোরা ওকে আপু বলবি, শালা ইডিয়েটস্ কোথা কার । ”
” ফর কাইন্ড ইনফরমেশন আমি যদি ১০ টাও বিয়ে করি , তাও little kitty cat শুধুই আমার ।
আর যদি ও অন্য কারো হওয়ার চেষ্টা করে ওকে মা*****র্ডার করে নিজে মরে যাবো । আর ওর কাছে যদি কেউ আসার চেষ্টা করে তাহলে ওখানে পুঁতে দেব । ”
” She is mine. one and only mine ”

তোমার ছোঁয়ায় আসক্ত আমি পর্ব ১০

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here