তোমার নামে নীলচে তারা পর্ব ৬
নওরিন মুনতাহা হিয়া
ঝলমলে আলোয় মেঘ তার সামনে থাকা মানুষটার মুখমণ্ডল দেখতে পায়। মেঘ কিছুক্ষণের জন্য থমকে যায়, তার পা স্থির হয়ে যায়। মেঘের থেকে সামান্য দূরে অবস্থান করছে আদ্রিয়ান, তার স্বামী। যে মানুষটা কে দেখার জন্য মেঘ সাত বছর ছটফট করছে, যার ছবির সামনে দাঁড়িয়ে সাতটা বছর কাটিয়ে দিয়েছে। আজ অবশেষে সে তার সম্মুখে দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু মেঘ আদ্রিয়ানকে দেখে খুশি হতে পারে না। তার চোখ বেয়ে অশ্রু বিন্দু গড়িয়ে পড়ে, স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকার শক্তিটুকু সে হারিয়ে ফেলেছে। মেঘ এক পা পিছনে পড়ে যেতে গেলে, আদ্রিয়ান তার হাত ধরে ফেলে। মেঘের হাত ধরে তার কাছে নিয়ে আসে,আদ্রিয়ানের নিশ্বাস মেঘ উপলব্ধি করতে পারছে।
আদ্রিয়ান কি তবে জানে যে মেঘই তার বউ। চৌদ্দ বছর আগে সে মেঘকে বিয়ে করেছিল? মেঘই তার বাবার বন্ধুর মেয়ে। কিন্তু মেঘের সাথে আদ্রিয়ানের কখন সরাসরি দেখা হয় নি, কথা ও হয়নি। তবে সে কি করে জানবে যে মেঘ তার স্ত্রী, মেঘের মাথার হাজার ও প্রশ্ন ঘুরাঘুরি করছে। যদিও আদ্রিয়ানের মনে ও শত শত প্রশ্ন ঘুরাঘুরি করছে, কিন্তু তার বিষয়টা সম্পূর্ণ আলাদা। আদ্রিয়ান মূলত তার সামনে থাকা, মেয়েটাকে চেনার চেষ্টা করছে। এই মেয়ে কে? কি তার পরিচয়? আর এতো রাতে এই ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যে কি করছে, ও কি আবিহাকে খুঁজতে বের হয়েছে? কিন্তু আবিহার সকল আত্মীয় স্বজন, কাজিনের সাথে আদ্রিয়ানের পরিচয় হয়েছে ও দেখা হয়েছে। তাদের মধ্যে সে এই মেয়ে কে দেখে নি। আর ওর পোশাক আর মুখের আদল দেখে আমেরিকান মনে হচ্ছে না, তবে কি এই মেয়ে বাঙালি?
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
ঘুটঘুটে অন্ধকার পরিবেশে হঠাৎ আলো দেখে, কারান সেখানে ছুটে আসে। ঝলমলে আলোর মাঝে, আদ্রিয়ান আর মেঘকে কাছাকাছি দাঁড়িয়ে দেখতে দেখে কারান তাদের ডাক দেয়। কারান বলে __
“- আদ্রিয়ান মেঘ তোমরা এখানে? আর এখানে এতো আলো আর লাইট কোথায় থেকে আসল? আবিহাকে কি খুঁজে পেয়েছ তোমরা?
কারানের কণ্ঠ শুনে আদ্রিয়ান মেঘের হাত ছেড়ে দেয়, তার থেকে দুরত্ব বজায় রেখে সরে দাঁড়ায়। হঠাৎ করে আদ্রর আবিহার কথা মনে পড়ে, এখন ও কি আবিহাকে খুঁজে পাওয়া যায় কি? কারান আদ্রিয়ান আর মেঘের কাছে আসে, সেখানে আবিহা নাই। কারানের কিছু বলার আগেই, আদ্রিয়ান তাকে জিজ্ঞেস করে __
“- আবিহাকে কি খুঁজে পাওয়া যায় নি কারান?
কারান না – বোধক মাথা নাড়িয়ে, জবাব দেয় __
“- না কোথা ও খুঁজে পাওয়া যায় নি __.
কারান আর আদ্রিয়ানের কথা বলার মধ্যেই, হঠাৎ করে একদম মানুষ জোরে জোরে শব্দ করে হেসে তাদের কাছে এগিয়ে আসে। এই একদল মানুষ আর অন্য কেউ না, বরং আবিহা ও তার কাজিনরা। যারা এতোখন দূরে দাঁড়িয়ে সব দেখছিল, তাদের সাথে আবিহা ও রয়েছে। সকলের মধ্যে থেকে কারানের চোখ যায় আবিহার দিকে, কারান তাড়াতাড়ি ছুটে যায় তার কাছে। কারান আবিহাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে, সে সত্যি ভয় পেয়ে গিয়েছিল। আবিহা ও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কারান, কাজিনরা সকলে হাততালি দিয়ে উঠে। কারান আবিহাকে জড়িয়ে ধরে শান্ত হয়, এরপর আবিহার গালে হাত রেখে বলে __ __
“- আবিহা কোথায় চলে গিয়েছিলে তুমি? আর আমি কি করেছি, যার জন্য তুমি রাগ করেছ আমার উপর। যানো তোমাকে যখন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না, তখন কতো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম? এমন বাচ্চাদের মতো জেদ কি কেউ করে? তুমি কি কারণে রাগ করেছ বলো আমায়,আমি সবকিছুর জন্য তোমাকে সরি বলতে রাজি আছি। বলো আবিহা কি করেছি আমি?
কারানের প্রশ্ন শুনে আবিহা মাথা নিচুঁ করে ফেলে। এখন কে কি উত্তর দিবে? কারান তাকে সত্যি অনেক ভালোবাসে, যা আবিহা বুঝতে পারে। কাজিনদের সকলের কথায় এমন করে, কারানকে কষ্ট দেওয়া উচিত হয় নি তার। আবিহাকে মাথা নিচুঁ করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে, কারান অবাক হয়। কারান আবার কিছু জিজ্ঞেস করতে যাবে আবিহাকে, তার আগেই সকল কাজিনরা বলে উঠে __
“- সরি কারান ভাইয়া। তোমাকে টেনশন বা কষ্ট দিতে চাই নি আমরা। আসলে আবিহা আপুর কোনো দোষ নাই, সব দোষ আমাদের। তোমার আর আবিহা আপুর এনগেজমেন্ট হয় নি, কাল গায়ে হলুদ হয়ে যাবে। এর জন্য আমরা সকল কাজিনা পরিকল্পনা করেছিলাম যে, আজ তোমার আর আবিহা আপুর এনগেজমেন্ট হবে। যার জন্য আবিহা আপুর ফোন দিয়ে, আমরা তোমাকে মেসেজ করেছি। যাতে তুমি আবিহা আপুকে খুঁজতে এখানে আসো। এই চারপাশটা সুন্দর করে সাজিয়েছি, যাতে তুমি এখানে এসে আবিহা আপুকে প্রপোজ করো আর ভালোবাসে আংটি পড়িয়ে দাও.
সকল কাজিনদের কথা শুনে কারান রাগান্বিত লুকে তাদের দিকে তাকায়। কিছুক্ষণ সকলে বকাবকি ও করে। তবে যখন দেখে সকলে মাথা নিচুঁ করে, মুখ ঘোমড়া করে দাঁড়িয়ে আছে৷ তখন কারান হাসি মুখে বলে উঠে __
“- আচ্ছা যাও আর তোমাদের বকব না। তবে ভবিষ্যতে যেনো এমন ভুল না হয়। আর এতো সুন্দর করে যখন চারপাশ সাজানো হয়েছে, তখন এনগেজমেন্ট করা যেতেই পারে। আংটি দাও, হবু বউকে প্রপোজ করে তাকে বিয়ে জন্য রাজি করায় __.
কারানের মুখে আংটির কথা শুনে, কাজিনা সকলে আবার খুশি হয়ে যায়। তারা কারানের হাতে আংটি দেয়, কারান হাঁটু গেঁড়ে বসে যায় মাটিতে। এরপর বলে উঠে __
“- আবিহা তোমাকে আমি অনেক ভালোবাসি। জীবনের শেষ নিঃশ্বাস অবধি তোমার হাত ধরে বাচঁতে চাই। তুমিই আমার প্রথম ভালোবাসা, আর তুমিই শেষ। বিয়ে করতে আমায় আবিহা?
কারানের কথা শুনে আবিহা খুশি হয়ে যায়। আবিহা তার হাত এগিয়ে দেয়, কারান ওর হাতে আংটি পড়িয়ে দেয়। কাজিনরা সকলে হাততালি আর তাদের শুভেচ্ছা দেয়। আদ্রিয়ান এতোখন কারান আর আবিহার ভালোবাসার মূহুর্ত দেখে, তার মুখে মিষ্টি হাসি ফুটে উঠে। কিন্তু সকল উচ্ছাস, আর আনন্দের মাঝে মেঘের চোখে অশ্রু কণা জমা হয়েছে। আদ্রিয়ানের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা, তার আর সম্ভব হচ্ছে না। মেঘ এক- পা দুই পা করে আদ্রিয়ানের থেকে দূরে সরে যায়। এরপর এক দৌড়ে সেখান থেকে চলে যায়, সকলে আবিহা আর কারানকে নিয়ে ব্যস্ত থাকায় মেঘকে দেখতে পায় না।
আবিহা আর কারান তাদের ভালোবাসার সুন্দর মূহুর্ত ইনজয় করে। প্রায় দশ মিনিট পর সকলে রিসোর্টে ফিরে আসার কথা ভাবে। তখনই হঠাৎ করে আবিহার মনে পড়ে মেঘের কথা, এখানে সকলে উপস্থিত রয়েছে কিন্তু মেঘ কোথায়? আবিহা যতদূর মনে আছে, সে মেঘকে আদ্রিয়ানের পাশেই দেখে ছিল। আবিহা বলে __
“- আদ্রিয়ান ভাই মেঘ কোথায়? ও না আপনার পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল?
মেঘ নামটা শুনে আদ্রিয়ান অবাক হয়ে বলে __
“- কে মেঘ?
“- আরে মেঘ আমার বান্ধবী। যাকে আজ বিমানবন্দর থেকে আপনার রিসিভ করে নিয়ে আসার কথা ছিল। ও তো এখানেই দাঁড়িয়ে ছিল, কোথায় চলে গেলো?
আদ্রিয়ান বুঝতে পারে, একটু আগে অন্ধকারে যে মেয়ের সাথে তার দেখা হয়েছিল তার নাম মেঘ। আবিহা যাকে রিসিভ করে, নিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করেছিল। আদ্রিয়ান তার পাশে তাকিয়ে দেখে, সেখানে মেঘ নামের মেয়েটা নাই। একটু আগেই তো এখানে ছিল, আদ্রিয়ান বলে__
“- ঔই মেয়েটা এখানেই দাঁড়িয়ে ছিল, কোথায় চলে গেলো হঠাৎ করে?
আবিহা আর আদ্রিয়ানের কথা শুনে কারান বলে __
“- আমার মনে হয় মেঘ আবিহার উপর রাগ করেছে। কারণ আবিহা হারিয়ে যাওয়ার কারণে, ও অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিল। যার জন্য হয়ত, রাগ করে রিসোর্টে চলে গেছে _.
কারানের কথায় আবিহা সম্মতি জানায়, আর বলে __
“- হুম মেঘ মনে হয় রাগ করেই, রিসোর্টে চলে গেছে _.
অন্ধকার বন্ধ রুমে বসে আছে মেঘ। তার চোখ বেয়ে টপটপ করে পানির বিন্দু গড়িয়ে পড়ছে, ভীষণ কষ্ট হচ্ছে তার। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে তার, সবটা সপ্নের মতো মনে হচ্ছে। যে মানুষটাকে গত সাত বছর ধরে একবার দেখার জন্য ছটফট করছে, সে আজ তার সামনে। কিন্তু এখন মেঘ আদ্রিয়ানকে চাই না, আদ্রিয়ান তাকে তালাক দিয়েছে। মেঘের জন্য সে এখন পরপুরুষ। গত সাতবছরে যখন আদ্রিয়ানকে একবার দেখার জন্য সে ছটফট করেছে, তখন কেনো তাদের দেখা হয় নি। আজ যখন মেঘ তার অতীত ভুলে গিয়ে, তার কেরিয়ার তার মৃত বাবার সপ্ন পূরণের উপর মনোযোগ দিয়েছে। তখনই কেনো আদ্রিয়ান আবার তার জীবনে ফিরে এসেছে? কেনো?
আদ্রিয়ানকে তার চোখের সামনে দেখে মেঘ কি করে তার থেকে দূরে থাকবে? ভালোবাসার মানুষকে তার চোখের সামনে দেখে, তাকে ঘৃণা করার মতো শক্তি মেঘের নাই। মেঘ আবার দুবর্ল হয়ে যাবে আদ্রিয়ানের প্রতি, শত অপমান আর অবহেলার পর বেহায়ার মতো ছুটে যাবে আদ্রিয়ানের কাছে। না, না মেঘ বেহায়া মেয়ে না, যদি আদ্রিয়ান মেঘকে ঘৃণা করে, অবহেলা করে। তবে মেঘ ও তাকে ঘৃণা করবে, তাছাড়া আদ্রিয়ান এখন তার স্বামী না। আদ্রিয়ান তার ইচ্ছায় মেঘকে ডিভোর্স দিয়েছে, তবে মেঘ কেনো তাকে সারাজীবন ভালোবেসে যাবে?
মেঘ তার মনকে শক্ত করে, চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়া অশ্রু বিন্দু হাত দিয়ে মুছে নেয়। মেঘ বেহায়া মেয়ে হবে না, তার মধ্যে আত্মা সম্মান বোধ রয়েছে। আদ্রিয়ান নামক মানুষটার অস্বস্তি, তার জীবন থেকে মুছে দিবে সে। আদ্রিয়ান যতই তার সামনে থাকুক না কেনো, সে দুবর্ল হবে না। আদ্রিয়ানকে ভুলে যাওয়ার সাধ্য হয়ত মেঘের নাই, তবে তার থেকে দুরত্ব বজায় রাখার সাহস মেঘের আছে। যে তাকে ভালোবাসে না, সম্মান করে না, সারাজীবন তাকে ভালোবেসে যাওয়া বোকামি ছাড়া আর কিছু নয়। আদ্রিয়ান যানে না যে মেঘই তার বউ, তবে মেঘ তার পরিচয় কখন দিবে না আদ্রিয়ানকে। আদ্রিয়ান যখন মেঘকে ঘৃণা করে তার থেকে দূরে থাকতে চাই, তবে মেঘ ও তার থেকে শত হাত দূরে থাকবে৷ মেঘ হয়ত পারবে না আদ্রিয়ানকে ঘৃণা করতে, কিন্তু তাকে আর ভালোবাসবে না.
আদ্রিয়ান হয়ত কারান ভাইয়ার আত্মীয়, বিয়ে উপলক্ষে হয়ত এসেছে। যতদিন না আবিহার বিয়ে সম্পন্ন হচ্ছে, ততদিন মেঘ রুম থেকে বেশি বাহির হবে না। মেঘ আর কখন আদ্রিয়ানের সম্মুখে যাবে না, কখন না অসম্ভব। মেঘ শুধু তার কেরিয়ার, আর সপ্নের উপর ফোকাস করবে। আদ্রিয়ানের সৃতি তার হৃদয়, মন, আত্মা সব থেকে বিলুপ্ত করে দিবে সে। মেঘ তার মনকে শক্ত করে, সে ভেঙে পড়বে না। অতীতের সৃতি আঁকড়ে বেঁচে থাকবে না, এখন শুধু সে তার সম্পূর্ণ মনোযোগ তার ভবিষ্যতের উপর দিবে।
কিছুক্ষণ পর আদ্রিয়ান, কারান, আবিহা সহ সকল কাজিনরা রিসোর্টে ফিরে আসে। আদ্রিয়ান রাতের খাবার খেয়ে, সিঁড়ি দিয়ে উপরে তার রুমে চলে যায়। মেঘ আর আদ্রিয়ানের রুম পাশাপাশি, মাঝে শুধু একটা দেয়াল। আবিহা মেঘকে খাবার খাওয়ার জন্য ডাক দেয়, কিন্তু মেঘ দরজা খুলে না। আবিহা অনেক সময় দরজায় কড়া নাড়ার পর, মেঘ বিরক্ত হয়ে ছোট করে উত্তর দেয় __ “- রাতের খাবার খাব না আমি, খুদা নাই আমার __. মেঘের জবাব শুনার পর, আবিহা ওকে অনেকবার অনুরোধ করে খাবার খাওয়ার জন্য কিন্তু মেঘ কোনো উত্তর দেয় না দরজা ও খুলে না। আবিহা মনে করে মেঘ হয়ত, একটু আগের ঘটনা নিয়ে রাগ করেছে। যার জন্য সে সরি ও বলে, তবুও মেঘ দরজা খুলে না ।
রাত প্রায় এগারোটা আদ্রিয়ান তার রুমে বসে ল্যাপটপ দিয়ে কাজ করছে। অন্যদিকে মেঘ ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে আসে, দীর্ঘ সময় কান্না করার ফলে তার চোখ মুখ সব ফুলে গেছে। চোখ রক্তিম বর্ণ ধারণ করেছে, মাথার পরিপাটি চুল এলেমেলো হয়ে গেছে। মেঘ একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে, এরপর বিছানার কাছে এগিয়ে যায়। বিছানায় তার ব্যাগপএ পড়ে আছে, যা এখন গুছিয়ে রাখা হয় নি। বিকালে শরীর টার্য়াড থাকার কারণে ঘুমিয়ে পড়েছিল, যার কারণে জামা কাপড় আলমারিতে রাখার কথা মনে ছিল না। মেঘ তার ব্যাগপএ থেকে জামাকাপড় বের করতে যাবে, তখনই তার চোখ যায় ব্যাগে রাখা তার গিটারের দিকে।
মেঘের গানের গলা খুব ভালো, তবে সে নিয়মিত গান করে না। যদি কখন তার মন খারাপ থাকে, তখন গিটারের সুরে কিছু লাইন গাওয়া হয়। মেঘ তার গিটার হাতে নেয়, এরপর বিছানায় বসে সুর তুলে। আদ্রিয়ান কাজ করার মধ্যে হঠাৎ করে, গিটারের সুর শুনতে পায়। শব্দটা পাশের রুম থেকে আসছে, তবে কি পাশের রুমে নতুন কোনো অতিথি এসেছে? মেঘ গিটারের সুরের তালে গান গাইতে থাকে ___
“- আমি শুরু থেকে জানি __.
“- তুমি হবে না আমারি ___.
“- তবুও আমি পাগল হয়েছি ___.
“- তার কারণে ____.
“- যেনো আকাশভরা তারা __.
“- আর লাগে না গো ভালো __.
“- সব যেনো কালো মেঘে ঢাকা পড়েছে __.
“- তুমি ছুঁয়ে দেখো আমায় __.
“- তুমি ছুয়েঁ দেখো আমায় __.
“- ছুঁয়ে দেখো আমায় ___.
তোমার নামে নীলচে তারা পর্ব ৫
আদ্রিয়ান মেঘের গাওয়া গানের প্রতিটা শব্দ শুনে। সত্যি মেয়েটার কণ্ঠ অসম্ভব সুন্দর, গানের প্রতিটা লাইন সে অনুভব করেছে। আদ্রিয়ানের পাশের রুমে থাকা মেয়েটাকে একবার দেখার বড্ড আগ্রহ জন্মায়। যার জন্য সে তার ল্যাপটপে কাজ করা, বন্ধ রেখে বেলকনিতে ছুটে যায়। কিন্তু পাশের রুমের বেলকনির দরজা বন্ধ, আর রুমটা সম্পূর্ণ অন্ধকার থাকায় সে কিছুই দেখতে পায় না৷ আদ্রিয়ান হতাশ হয়ে তার রুমে ফিরে আসে।
