তোমার নামে লেখা চিঠি পর্ব ১৬

তোমার নামে লেখা চিঠি পর্ব ১৬
নওরিন মুনতাহা হিয়া

প্রায় দশ মিনিট পর অরণ্য গোসল শেষ করে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আসে অন্যদিকে ইনায়া এতোখন ভিজা শরীরে দাঁড়িয়ে ছিলো। অরণ্য ইনায়ার দিকে একবার তাকায় ওয়াশরুমে ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা মনে পড়ে যায় তার। নিজের চোখ সরিয়ে নেয় ইনায়ার উপর থেকে ইনায়া তাড়াতাড়ি করে ওয়াশরুমে চলে যায়।
ইনায়া গোসল শেষ করে বাহিরে এসে দেখে অরণ্য হেয়ার ড্রাইয়ার দিয়ে চুল শুকাতে থাকে। অরণ্য তার পিছনে ইনায়াকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তার হাতে থাকা হেয়ার ড্রাইয়ার ইনায়ার দিকে বাড়িয়ে দেয় আর বলে –

“- ইনায়া তাড়াতাড়ি চুল শুকিয়ে নেন। চুল বেশি সময় ভিজে থাকলে ঠান্ডা লাগতে পারে “।
অরণ্যর হাত থেকে হেয়ার ড্রাইয়ার নিয়ে ইনায়া তার চুল শুকিয়ে নিতে থাকে। অরণ্য নিচে চলে যায় খাবার খেতে ইনায়া রেডি হয়ে নিচে যায় সেখানে সায়মা অপেক্ষা করছিলো তাদের জন্য। এই বাড়িতে খুব অল্প মানুষ থাকে তার তাদের মধ্যে বন্ডিং খুব ভালো না যার জন্য ইনায়ার ভালো লাগে না।
চৌধুরী বাড়ির সকল সদস্যকে সে ভীষণ মিস করে সেখানে কাটানো সুন্দর মূহুর্ত তার মনে পড়ে। ইনায়া সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে যায় তাকে দেখে সায়মা এগিয়ে আসে সায়মা বলে –

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“- ভাবী তুমি এতো দেরি কেনো করলে খাবার খেতে আসতে? আমি অনেক সময় ধরে তোমার জন্য অপেক্ষা করছি?
“- আসলে আমি আর অরণ্য একটা জরুরি কাজে বাহিরে যাচ্ছি যার জন্য ব্যাগ পএ গুছাতে সময় লেগে গেছে?আচ্ছা এখন খাওয়া দাওয়া শুরু করা যাক?
“- হুম চলো “.
ইনায়া আর সায়মা খাবারের টেবিলে বসে যায় পাশের চেয়ারে অরণ্য বসে আছে। অরণ্য নিজের খাওয়া শুরু করে দেয় তবে ইনায়া সিঁড়ির কাছে থাকা রুমের দিকে বারবার তাকিয়ে দেখছে। ইনায়া রেহানা বেগমের জন্য অপেক্ষা করছে কিন্তু রেহানা বেগমের রুমের দরজা বন্ধ দেখে ইনায়া কৌতূহল নিয়ে জিজ্ঞেস করে –

“- সায়মা মা কোথায়? ওনার রুমের দরজা বন্ধ কেনো? ওনি কি খাবার খেতে আসবেন না?
ইনায়া কথা শুনে সায়মা অরণ্যর দিকে তাকায়। অরণ্য নিজের খাওয়া বন্ধ করে ইনায়াকে উদ্দেশ্য করে বলে –
“- আম্মু নিজের রুমে নাস্তা করেন সকলের সাথে টেবিলে বসে খাবার খাওয়া ওনার পছন্দ না। আপনি খাবার খাওয়া শুরু করেন দেরি হয়ে গেলে ট্রেন মিস হয়ে যাবে “।
অরণ্যর কথা শুনে ইনায়া অবাক হয় রেহানা বেগম কেনো সকলের সামনে খাবার খাওয়া পছন্দ করেন না। রেহানা বেগম যথেষ্ট ভদ্র আর বিনয়ী মহিলা পরিবারের সকলের সাথে খাবার না খেয়ে আলাদা রুমে খাবার খাওয়ার মতো অহংকারী মানুষ ওনি না। আর সন্তানরা খাবার খাবে আর মা সেটা দেখে তৃপ্তি অনুভব করবে এইটাই সকল মায়ের চাওয়া থাকে।

ইনায়া অরণ্যর কথা অনুযায়ী খাবার খাওয়া শুরু করে এরপর খাবার খাওয়া শেষ করে সায়মা নিজের রুমে চলে আসে। অরণ্য আর ইনায়া সিঁড়ি দিয়ে উপরে চলে আসে অরণ্য বেশ শান্ত আর চুপচাপ ছিলো এতোখন। ইনায়া আর অরণ্য রেডি হয়ে নিচে নামে এরপর সায়মার থেকে বিদায় নিয়ে তারা গাড়িতে উঠে বসে।
ইনায়া গাড়িতে বসে আছে তার পাশে বসে ল্যাপটপে কাজ করছে। অরণ্যর চোখ মুখ জুড়ে গম্ভীরতা রয়েছে গাড়িতে এখন নীরবতা বিরাজ করছে। ইনায়া হঠাৎ করে জিজ্ঞেস করে –
“- অরণ্য আমাদের বিদায় দেওয়ার জন্য মা কেনো আসলেন না? আমরা এতোদিনের জন্য বাহিরে যাচ্ছি ওনি কি সেটা যানেন না?
ইনায়ার মুখে ওর মায়ের কথা শুনে অরণ্য ল্যাপটপ থেকে নিজের মনোযোগ সরিয়ে ইনায়ার দিকে তাকায়। অরণ্য গম্ভীর কণ্ঠে বলে –

“- না আম্মু আমাদের বিদায় দিয়ে কখনো আসবে না? কারণ আম্মু আমাকে অপছন্দ করেন?
“- কেনো?
“- সব কেনো উত্তর হয় না ইনায়া “।
“- একজন মা কেনো তার ছেলেকে অপছন্দ করবে? তার সন্তান এতোদিনের জন্য কোথাও যাচ্ছে তাকে বিদায় দেওয়ার জন্য ইচ্ছা কি তার করে না?
“- যেই কারণে আপনি আমাকে ঘৃণা করেন সেই কারণে আমার আম্মু ও আমাকে ঘৃণা করে।
“- আমি আপনাকে ঘৃণা করি না অরণ্য “.
“- ভালো ও তো বাসেন না ইনায়া। যাকে নিজের আপন মা ঘৃণা করে তাকে অন্য নারী কি বা ভালোবাসবে? এই অরণ্য রাজ চৌধুরী জীবন যুদ্ধে বড্ড একা “।

অরণ্যর কথার মানে ইনায়া বুঝতে পারে না শুধু তার বোকা বোকা নয়নে অরণ্যর দিকে তাকিয়ে থাকে। গাড়িতে থাকা অবস্থায় অরণ্য আর কোনো কথা বলে নাই ইনায়ার সাথে। অরণ্যর সম্পূর্ণ মনোযোগ ল্যাপটপে নিজের কাজের উপর রেখেছে ইনায়ার দিকে ফিরে ও দেখে নাই। ইনায়ার বড্ড অভিমান হয় অরণ্যর উপর লোকটা কি তার কথায় রাগ করেছে। সকালে অরণ্যর মুড একদম পারফেক্ট ছিলো কিন্তু খাবারের টেবিলে ইনায়ার মুখে নিজের মায়ের নাম শুনে অরণ্যর মুখে গম্ভীরতার ছাপ স্পষ্ট ফুটে উঠেছে।

সকাল প্রায় দশটা ইনায়া আর অরণ্যর গাড়ি রেল স্টেশনের সামনে এসে পৌঁছায়। অরণ্য গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়িয়ে যায় পাশ থেকে গাড়ির দরজা খুলে ইনায়া নামে। অরণ্য ড্রাইভারকে বিদায় জানিয়ে ট্রেনের টিকিট পকেট থেকে বের করে স্টেশনের ভিতরে চলে যায়। ইনায়া সেখানে দাঁড়িয়ে আছে প্রায় পাঁচ মিনিট পর অরণ্য ফিরে আসে আর বলে –
“- ইনায়া ট্রেনের টিকিট ঠিক আছে। অল্প সময়ের মধ্যে ট্রেন ছেড়ে দিবে চলুন যাওয়া যাক “।
অরণ্যর মুখে ইনায়ার নাম শুনে ইনায়ার মনে প্রশান্তি বয়ে যায় অরণ্য অবশেষে তার সাথে কথা বলেছে। তাহলে কি অরণ্যর রাগ ইনায়ার উপর থেকে কমে গেছে ইনায়া শান্ত গলায় বলে –

“- অরণ্য আপনার রাগ কি শান্ত হয়েছে? আসলে সকালে তখন মায়ের কথা জিজ্ঞেস করার জন্য সরি।
ইনায়ার মুখ থেকে সরি কথাটা শুনে অরণ্য ওর দিকে অবাক নয়নে তাকায়। সকালের ঘটনার জন্য ইনায়ার উপর রাগ করে নাই অরণ্য শুধু মায়ের কথা শুনে তার মনে জমে থাকা কষ্টের আগমন ঘটে। যার জন্য অরণ্য চুপচাপ থাকে এতোখন একজন সন্তানের জন্য মায়ের চোখে ঘৃণা দেখা সহজ কথা না। তবে ইনায়া আজ প্রথম অরণ্যকে সরি বলেছে ইনায়ার চোখে এক অদ্ভুত ভয় সৃষ্টি হয়েছে।
ইনায়া কি তবে অরণ্যর রাগ দেখে ভয় পায় কিন্তু ইনায়া এতোটা ভিতু মেয়ে না। তাহলে কি ইনায়ার কষ্ট হচ্ছে অরণ্যর এমন ব্যবহার দেখে। অরণ্য মৃদুস্বরে জবার দেয় –

“- ইনায়া আপনার উপর রাগ করে থাকার কোনো যর্থাথ কারণ আছে কি? আর সকালে খাবার টেবিলে মায়ের কথা জিজ্ঞেস করা আপনার অন্যায় বা অপরাধ ছিলো না। বাড়ির বউ হিসাবে সকলের খাওয়া দাওয়ার বিষয়ে জানার বা জিজ্ঞেস করার অধিকার আপনার আছে?
অরণ্যর কথা শুনে ইনায়ার মুখে হাসি উঠে তাহলে কি অরণ্য তার প্রতি রাগ বা অভিমান করে নাই। ইনায়া বলে –
“- তবুও আমার কোনো বিষয় না জেনে কথা বলা ঠিক হয় নাই। মায়ের আর আপনার সম্পর্ক কেমন তা আমার জানা ছিলো না। আমার কথায় যদি আপনার খারাপ লেগে থাকে তাহলে আই এম সরি “।

“- ইনায়া আপনার যদি কষ্ট হয় তাহলে আপনার কি সত্যি খারাপ লাগে। নিজের শএুর উপর এতো মায়া জন্মানো কিন্তু ঠিক না ইনায়া? কারণ মায়া থেকেই ভালোবাসার জন্ম হয়.
“- অরণ্য ভালোবাসা কথাটা এই ইনায়ার ভাগ্য নাই। কারণ এই ইনায়া এতোটা অভাগা যে ও যাকে ভালোবাসে সে তার জীবন থেকে হারিয়ে যায় বা তাকে প্রতি ঘৃণা করে দূরে সরে যায় “.
অরণ্য আর ইনায়ার জীবন এক নদীর দুই তীরের মতো যাদের মধ্যে হাজার যোগসূত্র রয়েছে। রেল স্টেশনে অনেক মানুষের ভীড় রয়েছে যার জন্য অরণ্য ইনায়ার দিকে নিজের হাত বাড়িয়ে দেয়। অরণ্য বলে –

“- ইনায়া হাত ধরেন। অনেক মানুষের ভীড়ে হারিয়ে যেতে পারেন “।
ইনায়া অরণ্যর হাত শক্ত করে ধরে অরণ্য আর ইনায় রেল স্টেশনের ভিতরে চলে যায় অনেক মানুষের সমাগম সেখানে। তবে তারা সফল ভাবে ট্রেনের ভিতরে উঠতে পারে অরণ্য তাদের জন্য ভিআইপি সিট বুক করছে।ইনায়া আর অরণ্য এখন সেখানে বসে আছে পাশাপাশি দুইটো সিট কিন্তু তাদের অপর সিটে দুইজন বৃদ্ধ মহিলা আর পুরুষ বসে আছে। যদি ও তাদের সিট ভিআইপি কিন্তু ট্রেনে হাজার হাজার মানুষের ভীড় যার জন্য এর চেয়ে ভালো আয়োজন করা যায় নাই।

সামনে বসে থাকা বৃদ্ধ দম্পতির দিকে ইনায়া আর অরণ্য দুইজনে হাসে তার একসাথে অনেক সময় কথা বলে। অরণ্য যথেষ্ট মিশুক সকলের সামনে টাকা পয়সার অহংকার তার মধ্যে একদম নাই। আর ইনায়া সকলের সাথে কথা বলতে পছন্দ করে আর বয়স্ক লোককে সম্মান তারা দুইজনে করে। বৃদ্ধ লোক বলে –
“- আচ্ছা তোমরা কি বিবাহিত? তোমাদের কি প্রেম করে বিয়ে হয়েছে না পারিবারিক ভাবে?
বৃদ্ধ লোকের কথা শুনে অরণ্য আর ইনায়া একে অপরের দিকে তাকিয়ে দেখে ইনায়া চুপ থাকে। অরণ্য উত্তর দেয় –
“- জি আমরা বিবাহিত। তবে আমাদের বিয়ে ভালোবেসে হয় নাই আমরা বিয়ের আগে একে অপরকে অপছন্দ করতাম। কিন্তু তবুও পরিবার জোড় করে আমাদের বিয়ে দিয়েছে তাই এখন আমরা জানি না এইটা কি ম্যারেজ “.
অরণ্যর কথা শুনে বৃদ্ধ মহিলা আর পুরুষ হেঁসে দেয় ইনায়ার এমন করে বিয়ের কথা শুনে লজ্জা করছে। বৃদ্ধ মহিলা বলে –

“- শুনো যেই বিয়ের শুরুতে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া থাকে তারা এক অপরকে অপছন্দ করে সেই বিয়ে টিকে থাকে। ভালোবাসা কথাটা অদ্ভুত অনেক মানুষ সারাজীবন ভালোবাসি কথাটা বলে কিন্তু আমাদের মনে তার প্রতি শুধু বিন্দু মাএ অনুভূতি থাকে। আবার অনেকে ভালোবাসি কথাটা না বলে ও ভালোবাসে “।
ইনায়া আর অরণ্য তাদের সাথে বেশ অনেক সময় কথা বলে প্রায় দুপুর বারোটা বাজে এখন। ইনায়া এতো সকালে ঘুম থেকে উঠার কারণে তার চোখে অনেক ঘুম। অরণ্য দেখে ইনায়া ঘুমিয়ে পড়েছে সে তার কাছে যায় ইনায়ার মাথা নিজের কাঁধের রাখে। ইনায়া মনে হয় একটু আরাম পেয়েছে যার জন্য সে শান্তিতে অরণ্যর কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ে।

অন্যদিকে ইভান আজকে অফিসে এসেছে মিলন সাহেব ইনায়ার পরিবর্তনে কোম্পানির দায়িত্ব ইভানের হাতে দিয়েছে। ইভান এখন তার কেবিনে বসে অফিসের ফাইল চেক করছে তবে প্রতিটা ফাইল সহ ব্যাংক একাউন্ট দেখে সে অবাক হয়ে যায়।কোম্পানির প্রতিটা কাগজে আসল মালিক হিসাবে মিলন সাহেবের নাম দেওয়া আছে।
ইনায়ার ব্যংক একাউন্টে কোম্পানির তরফ থেকে সামান্য কিছু পারিশ্রমিক যেতো। তাহলে কি ইনায়া প্রায় বিনা বেতনে এতো বছর কোম্পানির জন্য কাজ করছে। ইনায়ার সম্পত্তির পরিমাণ বেশি নাই অতি সামান্য শুধু তার একটা নিজস্ব ব্যন্ড আছে যা এখন অনেক পপুলার। ইনায়া কোম্পানি জয়েন করার পর কোম্পানির উন্নয়ন আরো বেড়ে দিগুণ হয়ে গেছে।

ইভান তার সামনে থাকা সকল ফাইল দেখে বুঝতে পারে ইনায়া এই কোম্পানি থেকো নিজের জন্য কিছুই নেয় নাই।শুধু সামান্য কিছু পারিশ্রমিক নিয়েছে যা তার প্রাপ্য তাহলে কি ইনায়া লোভী মেয়ে না। ইভান তার চেয়ার ছেড়ে উঠে যায় এরপর জানালার দিকে তাকিয়ে ভাবে –
“- ইনায়া কি সত্যি এতো ভালো মেয়ে। ওর প্রতিটা কাজ বলে দিচ্ছে ও কতোটা যোগ্য আর পরিশ্রমি ইনায়া যা করেছে আমাদের জন্য তা অন্য কেউ করব না। তাহলে কি ইনায়ার প্রতি করা আমার ধারণা ভুল ইনায়াকে হারিয়ে কি আমি ভুল করলাম “।

বিকাল প্রায় চারটা ট্রেন এসে পৌঁছায় গন্তব্যে ইনায়া আর অরণ্য ট্রেন থেকে নামে। এরপর সেই বৃদ্ধ পুরুষ আর মহিলাকে বিদায় জানিয়ে তারা রূপনগরের উদ্দেশ্য রওনা দেয়। ইনায়া এখন একটা রিকশার মধ্যে বসে আছে পাশে বসে আছে অরণ্য তার মুখে বিরক্তির ছাপ স্পষ্ট ফুটে উঠছে। রিকশা করে কোথাও যাওয়ার অভ্যাস অরণ্যর নাই তাই সে বেশ ভালো সমস্যা হচ্ছে।

রূপনগর যখন তারা পার হয় তখন ইনায়া এক অদ্ভুত অনুভূতি হয় আজ প্রথম সে তার নানার বাড়িতে এসেছে। ছোটবেলা থেকে বাবার মৃত্যুর পর আপনজন হিসাবে মাকে জেনে এসেছে ইনায়া।কিন্তু মায়ের মৃত্যুর পর ইনায় রক্তের সম্পর্কে কাউকে যানতো না। ইনায়া রিকশা চালানো লোককে জিজ্ঞেস করে –
“- আচ্ছা এখানে মৃত শফিক তালুকদার নামে কি কেনো মানুষ কে আপনি চিনেন। তার একজন ছেলে ছিলো যার নাম শাফায়াত যিনি এক্সিডেন্ট মারা গেছে?
শফিক সাহেবের কথা শুনে রিকশা ওয়ালা রিকশা থামিয়ে পিছনে ফিরে তাকায় আর বলে –

“- আপনি শফিক সাহেবের কে হন? ওনার মারা যাওয়ার পর এই গ্রামে ওনার পরিচয় বা আত্মাীয় কেউ কখনো আসে নাই?
“- শফিক সাহেব আমার পরিচিত? আপনি কি ওনাকে বা ওনার ছেলে শাফায়াতকে যানেন?
“- হুম শফিক সাহেব অনেক ভালো লোক ছিলেন এই গ্রামের সবচেয়ে ধনী বক্তি। কিন্তু ধনী হওয়ার পর ও ওনার মনে কেনো অহংকার ছিলো না সবসময় সবার সাথে হাসি খুশি মনে কথা বলতেন। প্রায় দশ বছর আগে ওনি মারা যান।

“- আচ্ছা ওনার সন্তানদের বিষয় কি যানেন আপনি?
“- শফিক সাহেবের দুইজন সন্তান ছিলো। এক মেয়ে যে শহরে পড়াশোনা করতো কিন্তু সেখান এক ছেলেকে পছন্দ করে তাকে বিয়ে করে ফেলে। আর এক ছেলে শাফায়াত যে প্রায় পাঁচ বছর আগে এক্সিডেন্ট মারা যায় “।
শাফায়াত আর তার মায়ের কথা শুনে ইনায়া বুঝতে পারে এই লোক হয়তো তার পরিবারের বিষয়ে অনেক তথ্য যানে। আর ওনার বয়স যেটুকু আছে তাতে তার মামার বিষয়ে ওনার ধারণা থাকতে পারে। ইনায়া বলে –
“- আচ্ছা শাফায়াত মৃত্যুর পর ওনার লাশ কি এই গ্রামে নিয়ে আসা হয়েছে? ওনার লাশ কি আপনার নিজের চোখে দেখেছেন?

তোমার নামে লেখা চিঠি পর্ব ১৫

“- হুম দেখেছি শাফায়াতের জানাযা ও পড়েছি আমি। আর ওই যে দূরে একটা কবর স্থান দেখছেন সেখানে ওনাকে কবর দেওয়া হয়েছে “।
ইনায়ার চোখ যায় দূরে কবর স্থানের দিকে সেখানে স্পষ্ট লেখা আছে রূপনগর গোরস্থান তাহলে কি সত্যি শাফায়াত মারা গেছে। কিন্তু এতো বছর শাফায়াতের নাম করে এসএসে কোম্পানির দায়িত্ব কে পালন করেছে। তাহলে কি সত্যি ইনায়ার অজানা শএু আছে কিন্তু কে সে?

তোমার নামে লেখা চিঠি পর্ব ১৭