তোমার নামে লেখা চিঠি পর্ব ২৬

তোমার নামে লেখা চিঠি পর্ব ২৬
নওরিন মুনতাহা হিয়া

আকাশ থেকে তখন গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে, বাতাসে ঠান্ডা হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টির তীব্রতা যদিও এখন কমে যাচ্ছে, প্রকৃতি আবার শান্ত রূপ ধারণ করছে। শহরের অরণ্যর বাড়িতে সায়মা নিজের রুমে বসে আছে, বাড়িতে এখন কোনো মানুষ জনের উপস্থিত নাই। যার জন্য সম্পূর্ণ বাড়ি শূন্য, সায়মার দরজার বাহিরে হঠাৎ করে কারো কণ্ঠ শুনা যায়। সায়মা বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় দরজার কাছে এগিয়ে যায়, এরপর ধীরে ধীরে দরজা খুলে দেয়। দরজার বাহিরে রেহানা বেগম দাঁড়িয়ে আছে, এমন অসময়ে রেহানা বেগমের উপস্থিতি সায়মাকে উত্তলা করে তুলে। রেহানা বেগম নিজের রুম থেকে সচারাচর বের হন না, অতিরিক্ত জরুরি কোনো প্রয়োজন ছাড়া। সায়মা বলে –

“- আম্মু তুমি এখানে? কোনো জরুরি কথা বলার ছিলো?
রেহানা বেগম দরজায় সম্মুখে দাঁড়িয়ে থাকা সায়মাকে ভালো করে দেখতে থাকে, সময় কত দ্রু পরিবর্তন হয় তার মেয়ে আজ কতো বড়ো হয়ে গেছে। বিয়ে হয়েছে সংসার হয়েছে, আর এখন ও অন্য একজন সন্তানের বাচ্চার মা হবে। সায়মার গর্ভকালীন সময়ে ও মা হয়ে রেহানা বেগম কোনো দায়িত্ব পালন করেন নাই, রেহানা বেগম কি নিজের সন্তানের উপর বড্ড বেশি নিষ্ঠুর হয়ে যাচ্ছে। রেহানা বেগম শান্ত স্বরে বলে –
“- কেনো সায়মা? কোনো জরুরি কাজ ছাড়া কি তোমার রুমে আসার অনুমতি আমার নেই?
রেহানা বেগমের এমন কথা শুনে সায়মা বলে –

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“- না আম্মু তুমি আমার রুমে সবসময় আসতে পারবে। আসলে তুমি কখনো জরুরি প্রয়োজন ছাড়া, কথা বা রুমে আসো না আমার তাই জিজ্ঞেস করেছি “।
রেহানা বেগম শান্ত হয়ে সায়মার কথা শুনে, তার সাথে কথা বলার সময় সায়মার মধ্যে জড়তা কাজ করছে। প্রতিটা মেয়ে তার মনের সকল কথা নিজের মায়ের সাথে, কিন্তু সায়মার কথার বলার মধ্যে অস্বস্তি, জড়তা, আর ভয় কাজ করে। রেহানা বেগম তা লক্ষ্য করে, ওনি এগিয়ে যান সায়মার কাছে তার মাথায় হাত রাখে। সায়মা নিজের মাথায় মায়ের হাত অনুভব করে, তার চোখে বিন্দু বিন্দু জল চলে আসে। প্রায় অনেকদিন পর নিজের মায়ের আদুরে হাতের ছোঁয়া অনুভব করছে সায়মা, ছোটবেলা ঘটে যাওয়া ঘটনার পর থেকে রেহানা বেগম অরণ্যর সাথে কথা বলে না।
সায়মা মনে পড়ে যায় ছোটবেলা তাদের মধুর সৃতিময় দিনের কথা, একসাথে জীবন যুদ্ধে লড়াই করা তার ভাই, মা,আর সায়মার কষ্টের দিনের কথা। রেহানা বেগম বলে –

“- সায়মা নিজের মাকে মাফ করে দিও, মা হিসাবে তোমার সাথে অনেক অন্যায় করেছি আমি। ভালো থেকো তুমি “।
মায়ের মুখে এমন কথা শুনে কষ্ট হয় সায়মার, তাদের জীবনের শুধু এক অতীতের জন্য সব শেষ হয়ে গেলো।সায়মা নীরবতা ভেঙে জবাব দেয় –
“- আম্মু তুমি কি অরণ্য ভাইয়াকে কখনো মাফ করতে পারবে না? অতীতে যা হয়েছে তা ভুলে গিয়ে আবার একবার নিজের সন্তানকে ক্ষমা করে দিতে? আর কতো শাস্তি দিবে ভাইকে?
সায়মার কথা শুনে রেহানা বেগম বলে –

“- সব ভুলের ক্ষমা হয় না সায়মা। আর কিছু শাস্তি কখনো অবসান হয় না। সন্তান যদি অপরাধ করে তাহলে মা হয়ে তাকে শাস্তি দেওয়া আমার দায়িত্ব “।
মায়ের কথার উত্তরে সায়মা আর কোনো কথা বলে নাই, কারণ সে যানে তার মা ঠিক কতটা জেদি। যদি হাজার বার অনুরোধ করে তবুও অরণ্যর করা ভুল, রেহানা বেগম কখনো ক্ষমা করবেন না। রেহানা বেগম বলে –
“- অরণ্য আর ইনায়া? গত তিনদিন ধরে ওদের কথা বার্তার কোনো আওয়াজ শুনা যাচ্ছে না?
“- হ্যাঁ ইনায়ার নানার বাড়ি রূপনগর সেখানে বেড়াতে গিয়েছে। রূপনগরে ইনায়ার মামা শাফায়াত তালুকদারের মৃত্যুর বিষয়ে কি যেনো জানতে গিয়েছে?

সায়মার মুখ থেকে শাফায়াত নাম শুনে রেহানা বেগম চমকে যায়, ওনার শরীর বরফের ন্যায় ঠান্ডা হয়ে যায় গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যায়। ইনায়ার মামা শাফায়াত, আর অরণ্য শাফায়াত মৃত্যুর তদন্ত করার জন্য রূপনগর গ্রামে গিয়েছে। যাকে নিজের হাত খুন করেছে তার মৃত্যুর রহস্য সে যানতে চাই। অরণ্য কি করতে চলছে তা রেহানা বেগম বুঝতে পারছে না, তবে মনে হচ্ছে অরণ্য কোনো সাংঘাতিক গেইম খেলছে। হঠাৎ করে তার শএু ইনায়াকে বিয়ে করা? তার মামার খুনের রহস্য উদঘাটন করার পিছনে অরণ্যর কোনো পরিকল্পনা রয়েছে। কোথাও অরণ্য আড়াল থেকে সব ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে না তো?

চায়ের দোকানে ইনায়া আর অরণ্য দাঁড়িয়ে আছে, অরণ্যর চোখ মুখ একদম শান্ত কিন্তু ইনায়ার চোখে অবিশ্বাস, সন্দেহ, ঘৃণার সংমিশ্রণ রয়েছে। শাফায়াত খুনি অরণ্য? ইনায়ার কথাটা বিশ্বাস হচ্ছে না, কতো সহজে নিজের অপকর্মের কথা বলে দিয়েছে অরণ্য। আর তার চোখ মুখে স্পষ্ট ফুটে উঠছে খুন করে ও তার মধ্যে কোনো অপরাধ বোধ কাজ করছে না। ইনায়া বলে –
“- কেনো খুন করেছেন শাফায়াত মামাকে?
অরণ্য তার ঠোঁটে মৃদু হাসি বজায় রেখে শান্ত স্বরে উত্তর দেয় –
“- আপনার শাফায়াত মামা আমার বাবাকে খুন করেছে?
অরণ্যর কথা শুনে ইনায়া যথেষ্ট অবাক হয়, শাফায়াত অরণ্যর বাবাকে কি করে খুন করবে? বা কেনো খুন করবে? আর অরণ্য বাবা এক্সিডেন্ট মারা যান তাহলে এখানে শাফায়াত কি করে খুনি হতে পারে? ইনায়া বলে –

“- শাফায়াত মামা আপনার বাবাকে খুন করেছে মানে? আপনার বাবা তো এক্সিডেন্ট মারা গেছে? তাহলে মামা কি করে খুনি হতে পারে?
অরণ্য আবার শান্ত স্বরে উত্তর দেয় –
“- শাফায়াত ও তো এক্সিডেন্ট মারা গেছে? তাহলে আপনি কেনো তার খুনির খোঁজ করছেন?
ইনায়া এখন বুঝতে পারে অরণ্য সত্যি তার মামার খুনি? যেমন করে শাফায়াত খুন করার অন্য এক্সিডেন্টের নাটক সাজিয়েছে অরণ্য? ঠিক একরকম করে অরণ্যর বাবা মুরার চৌধুরীর খুন করে এক্সিডেন্টের নাটক সাজানো হয়েছে। অরণ্য ইনায়ার দিকে তাকিয়ে থাকে, তার চোখে মুখ এখনো শান্ত ঠোঁটের কোণে মৃদু হাসি যেনো মনে হচ্ছে সে খুনের কথা না বরং কোনো রূপকথার গল্প বলছে। ইনায়া এমন অদ্ভুত দৃষ্টি দেখে অরণ্য বলে –

“- বৃষ্টি থেমে গেছে, বাড়ি ফিরে চলুন ইনায়া।
অরণ্যর কথা শুনে ইনায়ার মুখে এবার হাসি ফুটে উঠে, সে বলে –
“- তাহলে আবার প্রমাণিত হয়ে গেলো অরণ্য রাজ চৌধুরী স্বার্থপর। শুধু নিজের স্বার্থর জন্য আমাকে বিয়ে করেছেন? এসএস কোম্পানির খাবারের পণ্য বিষ মিশিয়ে হাজারো অসহায় বাচ্চাদের মেরে ফেলেছেন। চৌধুরী বাড়ির সকলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আমাকে বিয়ে করেছে৷ ঘৃণা হয় আপনার চেহারা দেখে আমার? আমি ডিভোর্স চাই আপনার থেকে? মুক্তি চাই এমন খুনি আর স্বার্থপর মানুষের থেকে “।
ইনায়ার কথা শেষ হওয়ার আগেই অরণ্যর ওকে পাশে থাকা দেয়ালের সাথে চেপে ধরে, অরণ্যর শরীর রাগে জ্বলে যাচ্ছে। অরণ্য ইনায়ার গাল চেপে ধরে শক্ত করে এরপর বলে –

“- কি বললেন আপনি ইনায়া অরণ্য চৌধুরী স্বার্থপর তাই না, তাকে ছেড়ে চলে যাবেন ডিভোর্স দিবেন। এতো সহজ সবকিছু। আর কি বললেন অরণ্য চৌধুরী স্বার্থপর ? এই অরণ্যকে স্বার্থপর হতে বাধ্য করেছে ওই চৌধুরী পরিবার।
“- মিলন চৌধুরী আমার মা আর বাবার বিয়ে মেনে নাই কারণ আমার মা গরীব ছিলেন বলে, তারা পালিয়ে বিয়ে করেছেন বলে। কিন্তু নিজের বউয়ের বন্ধাবীর মেয়ে তাদের বাড়ির কাজের লোক ছিলো, তার সাথে ঠিকই নিজের ছেলের বিয়ে দিয়েছে। অথচ নিজের ভাইয়ের বিয়ে মেনে নিতে পারে নাই তাদের সন্তানদের জায়গা দেয় নাই চৌধুরী বাড়িতে। আমার বাবার মৃত্যুর পর আপনি যানেন কোথায় থেকেছি আমরা, এই অরণ্য তার মা বোন সবাই বস্তিতে থাকত। সারাদিনে একবার খাবার জুটত না কপালে, এমন দিন ও গেছে যখন আমরা পানি খেয়ে থেকেছি শুধু।

“- কিন্তু তখন আপনার ভালো বাবা আর মামণি চৌধুরী পরিবারের ব্যবসা থেকে আসা টাকা দিয়ে রাজকীয় টেবিলে বসে খাবার খেত। আমার বাবাকে খুন করেছে আপনার মামা, এই দুইহাতে নিজের বাবার কবরে মাটি দিয়েছি আমি। বারো বছর বয়সে নিজের বাবার মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে কবরে গিয়েছি, তখন কোথায় ছিলেন মিলন চৌধুরী। বিধবা হয়ে চাকরি করেছে আমার মা সমাজের মানুষের কুৎসিত কথা সয্য করেছে আমার মা। হাজারো পুরুষ বাজে নজর দিয়েছে আমার মায়ের দেহে, তবুও নিজের সন্তানদের জন্য স্কুলে চাকরি করত আমার মা।

“- চৌধুরী বাড়ির এক বউ যখন যখন নিজের সন্তান দের নিয়ে জীবন সংগ্রামে কষ্ট করে, নিজের চরিত্র নিয়ে মানুষের কাছে কথা শুনে জীবন কাটিয়ে দিয়েছে। তখন অন্য এক বউ চৌধুরী বাড়ির মহলে বসে সোনার গয়না পড়ে রাজ রানির মতো থেকেছে। রেহানা চৌধুরী আর অরুণা বেগম দুইজনে চৌধুরী বাড়ির বউ ছিলো তাহলে আমার মাকে কেনো সব কষ্ট সয্য করতে হয়েছে। আমার বাবা এক্সিডেন্ট মারা যাওয়ার পর তার কাফনের কাপড় কিনার মতো টাকা ছিলো না, অন্যদিকে তার ভাই হাজার হাজার দামী কাপড় পড়েছে। আমার বাবার মৃত্যুর সময় তার জানাযার সময় একবারের জন্য ও তাকে শেষ বারের মতো দেখতে আসে নাই মিলন চৌধুরী।

“- ইভান চৌধুরী রাগ করে বিদেশে চলে যায়, কিন্তু বিদেশ গিয়ে সে পড়াশোনা করেছে লন্ডনের সবচেয়ে দামী কলেজে। সেখানে এসি রুম, দামী গাড়ি, দিয়ে চলাচল করেছে অন্যদিকে আমি সাধারণ একটা স্কুলে পড়াশোনা করেছি। তখন টিফিনের সময় খাওয়ার মতো টাকা ছিলো না, রোদ হোক বা বৃষ্টি সবসময় হেঁটে হেঁটে স্কুলে যেতে হতো। ইভান চৌধুরী আর অরণ্য চৌধুরী মধ্যে পার্থক্য ছিলো বলুন, তাদের রক্ত এক বংশ এক তাহলে জীবন অন্যরকম কেনো?

“- চৌধুরী পরিবারের ব্যবসা আমার দাদুর ছিলো ওনি মারা যাওয়ার সমস্ত সম্পত্তি তার দুই সন্তানের মধ্যে ভাগ হওয়ার কথা। তাহলে মিলন চৌধুরী কি করে একা সব বাড়ি গাড়ির মালিক হতে পারে, আজ ওনি তার পরিবর্তে ইভান চৌধুরীকে বিজনেস সামলানোর দায়িত্ব দিয়েছে কিন্তু এই বিজনেস কি শুধু একা ইভান চৌধুরী? আমার কি অংশ নেই নিজের দাদার সম্পত্তির উপর বলুন ইনায়া?

“- একজন বস্তি থেকে উঠে আসা অনাথ ছেলে কি করে এই শহরেরে সবচেয়ে বড়ো বিজনেস ম্যান হলো, তা কি আপনি জানতে চেয়েছেন ইনায়া? ইভান চৌধুরী বিদেশ থেকে এসে নিজের বাবার কোম্পানির এমডি হয়ে গেছে? কিন্তু আমি কলেজ লাইফ থেকে টিউশনি করে, কাজ করে টাকা জমিয়ে একটু একটু করে ব্যবসা শুরু করেছি। পাঁচ টাকা ও দেয় নাই চৌধুরী পরিবার আমাকে, অথচ নিজের সন্তানকে সমগ্র বিজনেস দিয়ে দিয়েছে।

“- ইনায়া আপনার সাথে বিয়ে পর ইভান কতো খারাপ ব্যবহার করেছে, আপনাকে কাজের লোক বলে অপমান করেছে ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমি বিয়ের পর কি কখনো আপনার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছি, আপনার মায়ের পরিচয় নিয়ে কথা শুনিয়েছি। সবসময় সম্মান দিয়েছে নিজের বউয়ের মর্য়াদা দিয়েছি, তবুও আপনি ইভান চৌধুরীকে ভালোবাসেন। যে পুরুষ আপনাকে ঘৃণা করে, আপনাকে তালাক দিয়ে অন্য পুরুষের সাথে বিয়ে দিয়ে দেয় তাকে আপনি ভালোবাসেন। কিন্তু যে আপনাকে সম্মান করে, সবসময় বিপদে আপদে আগলে রাখে, ভালোবাসে তাকে আপনি ঘৃণা করেন।ওয়াও।

“- আসলে ইভান চৌধুরী ভাগ্য সবসময় ভালো, ও না চাইতেই সব পেয়ে গেছে আর আমি অভাগা অরণ্য হাজার কান্না করে ও কিছু পাই না।
অরণ্যর কথা শুনে ইনায়ার খারাপ লাগে, অরণ্যর চোখে পানি এসে যায়। আজ বিয়ের পর প্রথমবার অরণ্যের চোখে পানি দেখছে ইনায়া, ইনায়া বলে –
“- অরণ্য আমি শুধু “।
“- চুপ করুন ইনায়া। আমি যানি আপনি সারাজীবন ইভানকে ভালোবাসেন আর আমাকে ঘৃণা করবেন। মিলন চৌধুরী নিজের ভাইয়ের সমস্ত সম্পত্তি কেঁড়ে নিয়েছে তবুও সে স্বার্থপর হলো না, অরুণা বেগম নিজের দেবরের বউয়ের সব গয়না ছিনিয়ে নিয়েছে তবুও সে স্বার্থপর না, ইভান চৌধুরী নিজের বউকে অন্য কারো বিয়ে দিয়ে দিলো তবুও সে স্বার্থপর না। শুধু এই অরণ্য স্বার্থপর কারণ সে নিজের বাবার খুনির মৃত্যুর প্রতিশোধ নিয়েছে,নিজের বোনকে ভালো ঘরে বিয়ে দিয়েছে, কষ্ট করে সফল হয়েছে শহরের বড়ো ব্যবসায়ী হয়েছে তাই না “।

“- অরণ্য “।
“- ইনায়া আপনাকে এই কথা বলতে চাই নাই। কিন্তু কেনো যানি আপনার মুখে স্বার্থপর কথাটা শুনে কষ্ট হয়েছে। আসলে কি যানেন আমার ভাগ্য সবসময় খারাপ যে মাকে বিলাসবহুল জীবন দিলাম সেই মা আজ আমাকে ঘৃণা করে, যেই বোনের পড়াশোনার জন্য নিজের রক্ত পানি করে টাকা রোজগার করলাম, তাক৷ ভালো পরিবারে বিয়ে দিলাম সেই বোন আজ আমার সাথে সারাদিন একবার ও কথা বলে না। যেই বউকে বিয়ে করে ঘরে তুললাম, সম্মান দিলান, মর্য়াদা দিলাম সে আজ অন্য কাউকে ভালোবাসে। অবশেষে সবার জন্য সব করে ও নিকৃষ্ট হয়ে গেলাম আমি। ইনায়া এই অরণ্য রাজ চৌধুরী কি এতো খারাপ?

তোমার নামে লেখা চিঠি পর্ব ২৫

“- আপনি কি এসএস কোম্পানির খাবারে বিষ মিশিয়ে মানুষকে হত্যা করেছেন অরণ্য?
“- ইনায়া যে নিজেই খাবারের কষ্টে ছটফট করেছে, সে অন্য বাচ্চাদের বিষ খায়িয়ে মেরে ফেলতে পারে। এর পিছনে অন্য কেউ রয়েছে? যার পরিচয় আপনাকে যানতে হবে?

তোমার নামে লেখা চিঠি পর্ব ২৭