তোমার মুগ্ধতায় পর্ব ৩৬
অহনা আক্তার
জহির তালুকদার বাড়িতে আসতেই বোনকে দেখে ঠোঁটে প্রশস্ত হাসি ফুটল। সেই হাসি আরো গাঢ় হলো বোনের মেয়েকেও সোফায় বসে থাকতে দেখে। জহিরকে দেখেই রিতা মিষ্টি হেসে সালাম দিয়ে জিজ্ঞেস করল,
— কেমন আছেন মামু?
জহির সালামের উত্তর নিয়ে প্রফুল্ল কণ্ঠে বলল,
— ভালো মা। তুমি কেমন আছো?
— খুব ভালো।
— কখন এলে? নাস্তা করেছো?
— কিছুক্ষণ আগেই এসেছি মামু। নাস্তা করা হয়নি। আপনার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম।
জহির আনন্দিত স্বরে বলল,
— তাই নাকি! চলো তাহলে একসাথে নাস্তা করা যাক।
রিতা হেসে জহিরের সাথে কথা বলতে বলতে ডাইনিং টেবিলের কাছে চলে আসল। মামা ভাগ্নির কথা বেশ জমে উঠেছে। জহির রিতাকে এটাসেটা জিজ্ঞেস করতে করতে তাজমহলকে খাবার দিতে বললেন।
ফাইজা এতোক্ষণ রিতার সাথেই বসে ছিল। রিতা উঠে যাওয়ার পর বারবার ছাঁদের সিঁড়ির দিকে তাকাচ্ছে। তার রুম থেকে বের হয়ে রিশাদ ছাঁদে গিয়েছে। এখনো তার বাবা কিংবা ভাইয়ের সামনে পরেনি।
ফাইজাকে সোফায় থম মেরে বসে থাকতে দেখে তাজমহল ডাক দিলেন,
— ফাইজা এখনো সোফায় বসে আছো কেনো? নাস্তা করতে আসো।
মায়ের ডাকে ফাইজা দুরুদুরু বুক নিয়ে নাস্তা করতে বসলো। জহির হেসে হেসে বোন আর ভাগ্নির সাথে কথা বলছে।
মুসকানকে সবে মাত্র রুম থেকে বেড়িয়ে আসতে দেখে জিন্নাত শুধালো,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
— ফারিশ আসলো না?
— আসছে ফুপিমণি।
— আমরা যে এসেছি জানে?
— বলিনি এখনো।
— আচ্ছা ঠিক আছে। নিচে আসলেই দেখতে পাবে। তুই
বস। আমাদের সাথে নাস্তা কর।
মুসকান সাথে সাথে নাকচ করল,
— না, না। আমি নাস্তা করেছি। বড়চাচি তোমরা আসার আগেই আমাকে জোর করে অনেককিছু খাইয়েছে।
তাজমহলও সমস্বরে বলল,
— হ্যা। ওহ খাবে না এখন। তোমরা করো…
” আমাকে রেখেই নাশতা করে নিচ্ছ তোমরা?”
তাজমহল বাক্য শেষ করার আগেই রিশাদের কথাটি ভেসে আসে। রিশাদকে দেখে জহিরের পুরো মুখ কুঁচকে যায়। তীরের ফলার মতো দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলে,
— তুমি?
তাজমহল স্বামীকে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে দ্রুতবেগে বলল,
— আরে রিশাদ? তোমার কথা আমি মাত্র বলতে নিচ্ছিলাম। এতোসময় ছাঁদে কি করছো? আসো নাস্তা করো।
রিশাদ আড়মোড়া ভেঙে জহিরের পাশের চেয়ারটায় ধপ করে বসে পড়ল। হাই তুলতে তুলতে বলল,
— আর বলবেন না মামি। আপনাদের ছাঁদের ডেকোরেশন টা আমার এতো পছন্দ হয়েছে যে আসতেই ইচ্ছে করছিল না। ভাবছি এমন একটা শ্বশুর বাড়ির ছাঁদ দেখে মেয়ে বিয়ে করব। যেন চাইলেই ছাঁদ বিলাশ করতে পারি।
রিশাদের কথা শুনে ফাইজার কাশি উঠে গেল। জিন্নাত ফাইজাকে দ্রুত পানি এগিয়ে দিয়ে ছেলের দিকে গরম চোখে তাকাল। রিশাদ পরোয়া করল না সেই তাকানো। আয়েশি ভঙ্গিতে জহিরের দিকে তাকিয়ে বলল,
— কেমন আছেন মামুজান?
জহির থতমত খেল। কণ্ঠে বিরক্ত ফুটিয়ে বলল,
— তুমি কেন এসেছো?
রিশাদ অবাক হওয়ার ভান ধরে বলল,
— এটা কেমন কথা ? আমার মায়ের ভাইয়ের বাসা আর আমি আসবো না! নিজের মামুর বাড়িতে আসার পূর্ণাঙ্গ অধিকার আছে আমার। আমি এসেছি আপনি খুশি হননি মামুজান?
— না…
জহিরের মুখের উপর না শুনে রিশাদ বোকা বনে গেল। ঢুক গিলে অপমানটা হজম করে নাকি সুরে বলল,
— আপনি এভাবে বলতে পারলেন মামু? আমি আপনার একটা মাত্র বোনের একটা মাত্র পুত্র। একদিন আমিও তো আপনার ভবিষ্যৎ নাতিপুতির বা*** ( জহির ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই থেমে গেল) মেকি হেসে বলল, ” মামা ” হবো । আর আপনি আমি আসায় খুশি হননি! দিস ইজ নট ফেয়ার!
রিশাদের বেফাঁস কথায় ফাইজার জানটা মনে হচ্ছে জিহ্বার আগায় এসে আটকে আছে। হা করলেই বেরিয়ে পড়বে। প্রতিটা মুহুর্ত আতঙ্কে কাটাচ্ছে সে। জিন্নাত, মুসকান, রিতার চেহারাও দেখার মতো।
তাজমহল স্বামীর ব্যবহারে খুব বিরক্ত প্রকাশ করলেন। তিনি রিশাদের দিকে তাকিয়ে হাসার চেষ্টা করে বললেন,
— তুমি আসায় আমরা খুব খুশি হয়েছি রিশাদ। তোমার মামু কেমন গম্ভীর তা তো তোমরা জনোই। কিছু মনে করো না বাবা।
রিশাদ তার মামির দিকে তাকিয়ে অমায়িক একটা হাসি দিল,
— আপনি খুবই ভালো মামি। আপনার সাথে এমন একটা গম্ভীর মানুষ কে মোটেও মানায় না। আমি আরো ভালো মামু ডিজার্ব করি।
এবার তাজমহলও স্তব্ধ হয়ে গেল। বাকি সবাই নাক চুলকানোর ভান ধরে হাসি ডাকার চেষ্টা করছে। জহির প্রচন্ড ক্ষেপে বোনকে ডাক দিল,
— ” জিন্নাত ”
— জি জ্বি ভাইজান..
— এই বে’য়া’দ’ব টাকে এখানে কেনো নিয়ে এসেছিস ??
জিন্নাত অসহায় মুখ করে বলল,
— পিছন পিছন আঁচল ধরে ঘুরঘুর করছিল ভাইজান। না রেখে আসতে পারিনি।
জিন্নাতের কথা শুনে সবাই মিটিমিটি হাসছে। জহির আর কোনো কথা বলল না। গম্ভীর হয়ে খাবার খেতে লাগলো। তাজমহল রিশাদের প্লেটেও খাবার বেড়ে দিলেন।
রিশাদ হাত ধুয়ে খাবার ছুঁতে যাবে তখনই গটগট পায়ে সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসে ফারিশ। রিশাদকে দেখে ফারিশের চোখ অটোমেটিক লাল হয়ে যায়। মুসকান সেই লাল হয়ে যাওয়া চোখ দেখে জড়সড় হয়ে দাঁড়াল। ফারিশ ঘাড় ঘুরিয়ে একবার তাকালো মুসকানের দিকে। মুসকান এমনিতেই ঘাবড়ে ছিলো। ফারিশের তাকানোতে এবার বুঝি হার্ট অ্যাটাক করে বসবে।
জিন্নাত ফারিশকে দেখে হাসোজ্জল কণ্ঠে বলল,
— আরে ফারিশ! আসতে এতো দেরি করলি কেন ? আয় আমার পাশে বসে নাস্তা কর।
ফারিশ গাল ফুলিয়ে শ্বাস ছাড়ে। রিশাদ কে দেখে তার শরীর জ্বলছে। রাগ উঠছে। কিন্তু সে তার ফুপিমণি কে দেখে রাগটা দমিয়ে নিল। গম্ভীর হয়ে জিন্নাতের পাশের চেয়ার টায় বসে প্রশ্ন করল,
— তোমরা কখন এলে?
এসেছিতো অনেকক্ষণ। রিতা আসতে চাইছিল তাই নিয়ে এসেছি।
ফারিশ রিশাদের দিকে তাকিয়ে বলল,
— শুধু কি রিতা আসতে চাইছিল?
রিশাদ একটু বিব্রত হলো। চোখ বাঁকিয়ে ফারিশকে দেখে খাবার খেতে লাগল। মুসকান নড়েচড়ে এসে ফারিশকেও খাবার বেড়ে দিল।
ফারিশ আসার পর ডাইনিং টেবিলে আর তেমন কথা হয়নি। রিশাদও কোনো বেফাঁস কথা বলেনি। তার টেলেন্টেড মামাতো ভাই ওরফে সম্বন্ধী বুঝে যাবে।
ফাইজার ফোন ফিরিয়ে দিয়েছে তাজমহল। দেয়ার আগে ভালো ভাবে শর্ত ঠুকে দিয়েছে লেখাপড়ায় কোনো গাফলতি করা যাবে না। ফাইজাও মাথা পেতে সেই শর্ত মেনে নিয়েছে। ফোন পাওয়ার খুশিতে সে যেন হাওয়ায় ভাসছে। রিশাদরা চলে যাওয়ার পরপরই তাজমহল ফোন ফিরিয়ে দিয়েছিল ফাইজার। আস্তে আস্তে দিনগুলো এভাবেই কেটে যেতে লাগল। পেরিয়ে গেল আরো চারটি মাস। রিশাদের সাথে ফাইজার সম্পর্ক ধীরে ধীরে হয়ে উঠল আরো মধুময়। ফারিশ মুসকান আর ফাইজাকে একই কলেজে ভর্তি করিয়ে দিল। মুসকান প্রেগন্যান্সির জন্য এখন কলেজে যেতে না পারলেও ফাইজা রেগুলার যাচ্ছে। পড়ালেখায়ও গভীর মনযোগ দিয়েছে ফাইজা। রিশাদও এখন ফাইজাকে পড়তে খুব ইন্সপায়ার করে। একটা ব্যাংকে ছোট খাটো জব নিয়েছে রিশাদ। কাজ ভালো হলে প্রমোশন পেয়ে আরো উপরেও উঠতে পারবে। ছেলের সত্যি সত্যি এমন পরিবর্তনে জিন্নাতের খুশির অন্ত নেই। ফাইজার কাছেও কৃতজ্ঞতার শেষ নেই উনার। একেএকে তানিয়া, শিল্পী, রাহিলা, রাতুল সকলেই যেনে গেছে রিশাদ আর ফাইজার সম্পর্কের কথা। তারা সবাই রিশাদের পরিবর্তনে মন থেকে আনন্দিত। আর তাছাড়াও রিশাদতো কখনো তাদের সাথে তেমন খারাপ ব্যবহার করে নি। আগে কারো সাথে ওতোটা মিশতো না এখন যতটা মিশে। তাই তারা রিশাদের ভিতরের কোমলতাটা বুঝতে পারেনি।
নয় মাসের ভরা পেট মুসকানের। হাটতে চলতে খুব অসুবিধে হয়। হাত-পায়ে পানি নেমে যা তা অবস্থা। পেটে মাতৃত্বের দাগ পড়ে তার সুন্দর পেটটা এখন আর আগের মতো তুলতুলে সফট নেই। মুসকানের মনে হয় সে এখন নিশ্বাস নিলেও তার ক্লান্ত লাগে। প্রতিটা দিন, ঘন্টা, মিনিট, সেকেন্ড সে উপলব্ধি করছে মাতৃত্ব এতো সহজ নয়। ফারিশ এখন আগের থেকেও বেশি কেয়ার করে মুসকানের। মুসকানের কষ্ট দেখে তার নিজেরই কষ্ট হয়। সে যদি পারতো মেয়েটার সব কষ্ট সে নিজের মাঝে নিয়ে নিতো। বাচ্চাদের পায়ের আ’ঘাতে মুসকান যখন অস্ফুট স্বরে কাঁদে তখন ফারিশ নিজেকে বড্ড অসহায় মনে করে। বাচ্চারা আর কয়েকটা বছর পরে আসলে হয়তো মেয়েটাকে এতোটা ক’ষ্ট পেতে হতো না। শুধু যে মুসকান ক’ষ্টই পায় তা কিন্তু নয়। প্রতিটা মুহুর্তে সে উপলব্ধি করে এক অন্যরকম সুখানুভব। যখন তার পেটে বাচ্চাগুলো নড়াচড়া করে তখন মুসকানের মনে হয় তার থেকে সুখী এই পৃথিবীতে আর কেউ নেই। মুসকান যখনই ভাবে সে মা হবে। তার তুলতুলে বাচ্চা দুটোকে সে আলতো করে বুকে জড়িয়ে ধরবে, কোলে নিবে, নিজের হাতে খাইয়ে দিবে, পোশাক পড়িয়ে দিবে, গোসল করিয়ে দিবে তখন মনে হয় এর থেকে শান্তির আর কিছু হতেই পারে না।
___খাটে পা জুলিয়ে বসে আছে মুসকান। ফারিশ পেছন থেকে তার চুল আঁচড়িয়ে দিচ্ছে। প্রেগন্যান্সির পর যেন মুসকানের চুল গুলো আগের থেকে আরো লম্বা হয়েছে। ওতো টুকু পে’টে দুইটা বেবি নিয়ে সে নড়তেই পারে না চুল আঁচড়াবে দূরের কথা ! শুধু এলোমেলো ভাবে খোপা করে রেখে দেয়। ফারিশের জন্য সে চুলগুলো কেটে একটু ছোটও করতে পারে না। দেয় না লোকটা। অসুবিধে দেখালে বলে যে সে নিজে আঁচড়িয়ে দিবে। বিছানার চাদর গোছানো, চুল আঁচড়ানো, মাথায় তেল দিয়ে দেওয়া এসব মেইলি কাজ ফারিশ আগে থেকে না জানলেও এখন শিখেছে। স্ত্রীর জন্য শিখতে হয়েছে । তার স্ত্রী তার সন্তানদের জন্য এতো ক’ষ্ট করছে, রাতের পর রাত নির্ঘুম কাটাচ্ছে আর সে এইটুকু করতে পাড়বে না। আলবাত পাড়বে।
মুসকানের চুলে খুব সুন্দর একটা বিনুনি পাকিয়ে বিছানা থেকে নেমে গেল ফারিশ। এই বিনুনি করাটা সে ইউটিউব থেকে শিখেছে। প্রথম প্রথম পারতো না। খুব বিরক্ত লাগতো। কিন্তু করতে করতে এখন পারে।
মাথার লম্বা বিনুনি টা সামনে এনে মৃদু হাসে মুসকান। তার এতো কেয়ার করে লোকটা। মাঝে মাঝে মনে হয় তার চেয়ে সৌভাগ্যবতী কেউ নেই।
লম্বা চুলের বিনুনি টা দুলিয়ে ফারিশকে প্রশ্ন করল মুসকান,
— সোনিয়া আপুর তো শোনলাম কাল বিয়ে। আপনি কি যাবেন না?
— না!
— কেন? নানিজান এতো করে বলল আপনাকে যেতে আর আপনি যাবেন না কেন?
— যাওয়ার ইচ্ছে নেই তাই যাব না। ওরা তো যাচ্ছেই।
— আপনারা বাবা ছেলে কেন যেতে চাইছেন না বলেন তো? নানিজান তো রাগ করবেন। একজনের অন্তত যাওয়া উচিৎ।
ফারিশ অবাক কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল,
— বাবা যাবে না বলেছে?
— হ্যা।
— কেন?
— সেটা আমি কি করে বলবো? ঘরের সকল কে নিমন্ত্রণ করেছে। অথচ কেউই যেতে চাইছে না। আমার জন্য গতকাল কেউ গায়ের হলুদেও গেল না। আজ বিয়েতে না গেলে সবাই কি ভাববে। ফাইজাকে জোর করে রাজি করিয়েছি। বড়চাচ্চু যাবে না বলে বড়চাচিও গাল ফুলিয়ে বসে আছেন। এখন আপনিও না গেলে..
মুসকানকে কথার মাঝে আটকে দিয়ে বলল ফারিশ,
— পা’গল হয়েছো? তোমাকে এই অবস্থায় রেখে আমি যাব বিয়ে খেতে? ডেলিভারির ডেট একটা চলে গিয়েছে তোমার। কখন বেবিদের আসার সময় হয়ে যায় বুঝা দায়। আমি ডক্টরের সাথে কথা বলে রেখেছি। আর দু একটা দিন গেলেই তোমার সি’জার করিয়ে ফেলবো। তোমাকে আর বেবিদের কে নিয়ে কোনো ঝুঁকি নিতে পারবো না আমি। হোক সেটা একদিন বা একঘন্টার জন্য। মাকে বলে দিয়েছি যেন দ্রুতই চলে আসে। মা যতক্ষণ বাড়িতে না থাকবে আমি একমিনিটও তোমার সঙ্গ ছাড়বো না।
— কিন্তু সোনিয়া আপু যে বারবার বড়চাচির কাছে আবদার করছে আপনাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। ওহ নাকি শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার আগে শেষ একবার আপনাকে দেখে যেতে চায়।
— ” সাট আপ ”
আচমকা ফারিশের ধমকে চুপসে গেল মুসকান। ফারিশ রাগান্বিত হয়ে বলল,
— কোথাকার কোন সোনিয়া ওর জন্য এতো মাথা ব্যথা কেন তোমার? সতিন আনতে চাইছো? ওই মেয়ে আমাকে কেন দেখতে চাইছে বুঝতে পারছো না? দিনরাত উত্ত্যক্ত করতো তোমার স্বামীকে !! এই দেখো কিসব ছবি, মেসেজ, ভিডিও, ভয়েস পাঠিয়ে আমাকে কনভিন্স করতে চাইছে। ব্লক করেও শান্তি নেই। হুমকি, ধমকি দিলে কয়েকদিন চুপ থেকে আবার নতুন করে শুরু করে।
মুসকান চোখ বড়বড় করে ফারিশের ফোনের স্কিনে তাকিয়ে আছে। সে তো এই ব্যাপারে কিছুই জানতো না। ছবি গুলো দেখে মুসকানের সমস্ত শরীর রাগে গমগম করে উঠে। সে বসা থেকে দাঁড়িয়ে তেজি কণ্ঠে বলে,
— এই বে*হায়া মেয়ে আপনাকে এমন বিরক্ত করতো আমায় আগে বলেননি কেন? ওর চোখ তুলে আমি আমার বেবিদের ফুটবল খেলতে দিবো। নি*র্লজ্জ মেয়ে আমার হাসবেন্ডের দিকে নজর দেওয়া****
ফারিশ ফুস করে দম ছাড়ে,
— এইজন্যই বলি নি। জানি তুমি এটা শোনে এমন উত্তেজিত হয়ে পড়বে। যেটা এখন তোমার জন্য মোটেও ঠিক না।
মুসকান এখনো রাগে ফুসফুস করছে। ফারিশ মুসকান কে ধরে পুনরায় খাটে বসিয়ে দিল। মুসকানের দু বাহুতে হাত রেখে শান্ত স্বরে বলল,
— রিল্যাক্স। সোনিয়ার চাপ্টার আমি ক্লোজ করে দিয়েছি। আমার আর রাসেল মামুর যে এটার জন্য কি ঝামেলা পোহাতে হয়েছে তা শুধু আমরাই জানি। থ্যাংক গড এই মেয়ে অবশেষে বিয়ের পিরিতে বসতে যাচ্ছে।
ফারিশ মুসকানের মুখোমুখি দাড়িয়ে মুসকানকে কথা গুলো বলছিল। আচানাক মুসকান ফারিশের কোমর জড়িয়ে ধরল। অভিমানী সুরে বলল,
তোমার মুগ্ধতায় পর্ব ৩৫
— আপনি শুধু আমার।
ফারিশের ঠোঁটে প্রশস্ত হাসির রেখা ফুটে উঠল। সেও মুসকানের মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
— আমি শুধু তোমার।