তোমার মুগ্ধতায় পর্ব ৫

তোমার মুগ্ধতায় পর্ব ৫
অহনা আক্তার

সকাল বেলা। পুরো বিছানা জুড়ে হাত পা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ঘুমিয়ে আছে মুসকান। তার এক’পা পুরোটাই ফারিশের পেটের উপর। মাথার লম্বা চুল গুলো ফারিশের মুখে এমন ভাবে পরে আছে যে ফারিশের চেহারাই দেখা যাচ্ছে না। নাক পিটপিট করে ঘুমের ঘোরেই হাঁচি দিলো ফারিশ। কোনো মতে মুসকানের চুলগুলো মুখের উপর থেকে সরিয়ে উঠে বসল। মুসকানের দিকে তাকিয়ে তার চোখ ছানাবড়া। এ কিরকম ঘুমানোর স্টাইল! মুসকান নিজের অংশের দিকে পুরো খাট রেখে ফারিশের দিকে এসে শুয়ে আছে। মাঝখানের কোল বালিশ কখন লা’থি মে’রে খাটের নিচে ফেলে দিয়েছে এটা হয়তো সে নিজেই জানে না। মুসকানের এই অবস্থা দেখে ফারিশের ইচ্ছে করছে বাংলা সিনেমার জসীমের মতোন দেওয়ালে মাথা ঠুকে কপাল ফাটাতে। এই মেয়েটি তাকে এতো জ্বালাচ্ছে কেন !! একরাতেই অতিষ্ঠ হয়ে গেছে সে সারাজীবন কীভাবে সহ্য করবে একে,,,

আলগোছে মুসকানের পা টা নিজের উপর থেকে সরিয়ে বিছানা থেকে নেমে পড়ল ফারিশ। ভাগ্যেস তার ঘুম ভেঙেছিলো নাহলে কোল বালিশের মতো তাকেও কখন এই মেয়ে খাট থেকে লা’থি মে’রে ফেলে দিত কে জানে! শুয়ার যা স্টাইল…

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

ফারিশ বেশ কয়েকবার মুসকানকে ঠিক হয়ে শুয়ার জন্য ডাকতে গিয়ে বিব্রত বোধ করল। কারণ মুসকানের পুরো শাড়ি এলোমেলো হয়ে আছে। পেটের দিকটায় শাড়ির আঁচল সরে গিয়ে সেখানে অবস্থিত কালো কচকচে তিলটা দেখা যাচ্ছে। ফারিশের চোখের সামনে ঝলঝল করছে মুসকানের মেদহীন ফর্সা কোমর। সেদিকে তাকিয়ে ঢুক গিলল ফারিশ। যতই হোক একজন পুরুষ মানুষ সে। এভাবে নিজের বেডরুমে কোনো রূপসী নারীকে এইভাবে শুয়ে থাকতে দেখলে নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় না। আর যদি সে নরীটি নিজের অর্ধাঙ্গীনি হয় তাহলেতো আরো কষ্টসাধ্য । কম্পিত হাতে মুসকানের শাড়ি ঠিক করে দিল ফারিশ। আলতো করে মুসকানের ঘাড়টা সোজা করে উঠিয়ে বালিশে শুইয়ে দিল। গাল ফুলিয়ে শ্বাস ছেড়ে বিড়বিড়িয়ে বলল,

” কি ঘুমরে ভাই! কেউ এসে উঠিয়ে নিয়ে গেলেও বোধহয় টের পাবে না ”
ফারিশ আর মুসকানকে উঠালো না। কটা দিন ধরে মেয়েটার চোখে ঘুম নেই। যার সাক্ষি সে নিজেই। বাবার জন্য কান্নাকাটি করে শরীর একদম দুর্বল বানিয়ে ফেলেছে। ঘুমের ঔষধ খাইয়েও কেউ তাকে ঘুম পারাতে পারেনি। এখন যদি একটু ঘুমায় তাহলে ক্ষতি কি!

ফারিশ সাওয়ার সেরে নিচে নামতেই হইহট্টগোলে তার কান তব্দা লেগে গেলো। ড্রয়িং রুমের সোফায় তার পুরো বন্ধু – বান্ধবের গ্যাং বসে আছে।
তাজমহল কে চারদিক থেকে ঘিরে ধরে বকবক করতে করতে তার মাথায় জেম ধরিয়ে দিয়েছে এইগুলো। সবগুলো মুসকান কে দেখতে এসেছে। ফারিশের ফ্রেন্ডদের মধ্যে অনেকেই পড়ালেখা শেষ করে নিজেদের বান্ধুবিকে বিয়ে করে নিয়েছে। এখন তারা বউ সমেত না জানিয়ে হুট করে ফারিশের বউ দেখতে এসেছে। তাদের হেন্ডসাম বন্ধু কেমন মেয়ে বিয়ে করেছে দেখতে হবে না। ফারিশ ড্রয়িং রুমে আসতেই তার বন্ধুবি টয়া শুধালো,
— অবশেষে বিছানা ছেড়ে উঠে আসতে মন চাইলো তোর ? আমরাতো ভেবেছিলাম আজ আর ঘরের দরজাই খুলবি না। দরজা ভেঙে তোর বউ আর বাসর দুটোই দেখে আসবো!
তাজমহল কখনই ওঠে চা’নাস্তার ব্যবস্থা করতে চলে গেছে। ফারিশ তাদের বন্ধুদের দিকে তাকিয়ে হাসি মুখে বলল,
— তোরা কখন এলি? আমাকে জানাসনি কেন?
ফারিশের বন্ধু কুদ্দুস বলল,

— প্রায় তিন ঘন্টা হবে। বউ নিয়ে পরে থাকলে বুঝবি কীভাবে?
ফারিশ হেসে কুদ্দুসকে ঘু’ষি মারল,
— তোর মিথ্যে বলার অভ্যাসটা আর গেলো না।
ফারিশের বন্ধুরা ভার্সিটিতে পড়া কালীন প্রায় সময়ই ফারিশদের বাড়ি আসত। এখন অনেকে বউ, সংসার, চাকরী নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেছে বলে আসতে পারেনা। ফারিশের বন্ধু বান্ধবিদের গ্যাং খুব বড় হলেও ছয়জন বাদে এখন আর সবার সাথে তেমন যোগাযোগ নেই ফারিশের। কুদ্দুস হচ্ছে ফারিশের বন্ধুদের মধ্যে সবচেয়ে ফানি আর দুষ্টু। নিহান আর রমিজ দুষ্ট হলেও বউদের জন্য তেমন দুষ্টমি করতে পারেনা। তাদের বউরা এককালে তাদেরই বান্ধুবি ছিল। বেশিদিন হয়নি বিয়ে হয়েছে। নিহান আর টয়ার বিয়ে হয়েছে বছর খানেক হবে। বিয়েটা তারা ভালোবেসেই করেছে। টয়া ফর্সা হলেও দেখতে কিছুটা ফ্যাট। যার জন্য নিহান তাকে মজা করে মাঝেমধ্যে মটি বলে ডাকে। আর সেই ডাক শুনে টয়াতো রেগে ফায়ার।

রমিজও তাদের বান্ধুবি তন্নিকে বিয়ে করেছে। তারাও প্রেম করেই। কিন্তু এখানে তন্নি রমিজকে আগে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছে। রমিজ রাজি ছিল না। তন্নি যেন কি করে রমিজ কে পটিয়ে পাটিয়ে বিয়ে করে নিয়েছে। তন্নি দেখতে সুন্দরী,স্মার্ট হলেও কিছুটা চিকন আর লম্বাটে। তার হাইট আর রমিজের হাইট মাত্র দু ইঞ্চি বেশ কম। একসাথে দাড়ালে রমিজকেই একটু উঁচু মনে হয় তাও তন্নি নিজের এই লম্বা হাইট নিয়ে রমিজের পাশে দাঁড়াতে লজ্জিত বোধ করে। ফারিশদের আরেক বান্ধুবি শ্যামা। সে দেখতে শ্যামলা হলেও তার চেহারাটা মুগ্ধকর। শ্যামা এখন একটা বেসরকারি অফিসে চাকরিরত আছে। বাবা-মা আর তিন বছরের মেয়েকে নিয়েই শ্যামার জীবন। শ্যামা একজন ডিবর্সি মেয়ে। বিয়েটা শ্যামা বাবা-মায়ের ইচ্ছেতে করলেও তার স্বামী ইকবাল ছিলো চ*রিত্রহীন, ল*ম্পট। বিয়ের প্রথম দিকে ইকবাল ভালো থাকলেও আসতে আসতে সে নিজের রুপ দেখাতে শুরু করে। শ্যামাকে মা*রদর, অ*ত্যাচার, একাধিক মেয়ের সাথে স*ম্পর্ক, শ্যামার বাবা-মার কাছে মোটা অংকের টাকা আরো নানান অ*ত্যাচার করে শ্যামার জীবনটা অতিষ্ঠ করে ফেলে।

এমনকি শ্যামার মেয়ের জন্মের পরও ইকবাল নিজের মেয়েকে দেখতে আসেনি। ইকবালের শ্যামার প্রতি এমন অমানবিক আচরণের জন্য ফারিশ এবং তার বন্ধুরা মিলে শ্যামাকে তার থেকে উদ্ধার করে। ইকবালকে আরো অনেক আগেই শাসিয়েছে,ওয়ার্নিং দিয়েছে ফারিশ আর তার বন্ধুরা। কিন্তু ইকবাল শুধরায়নি। উল্টো তাদের সাথে জড়িয়ে শ্যামাকে আরো আজেবাজে কথা শুনায়। অতিষ্ঠ হয়ে শ্যামা নিজেই বন্ধুদের সাহায্যে ইকবালকে ডিবোর্স দেয়। আর্থিক ভাবে শ্যামারা ততটা সচল নয়। যার জন্য ফারিশ নিজেই শ্যামাকে চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়। শ্যামা আর শ্যামার মেয়ের জন্য ফারিশ আর তাদের বন্ধুরা যতটা করেছে এটা শ্যামা কোনোদিনও ভুলবে না। ফারিশদের বন্ধু মহলে কেবল কুদ্দুস আর ফারিশই বিয়ে করেনি। এখন ফারিশও বিয়ে করে নিয়েছে। যার জন্য কুদ্দুসের দুঃখের শেষ নেই।

তাজমহল সকলের সামনে চা, নাস্তা নিয়ে হাজির হতেই টয়া বলল,
— ফারিশের বউ কোথায় আন্টি? পুত্রবধূকে কি দেখাবেন না আমাদের?
তাজমহল মুচকি হেসে বলেন,
— দেখাবো না কেন? অবশ্যই দেখাবো? বসো তোমরা। মাত্রইতো এলে। নাস্তা কর। বিশ্রাম নাও। আমি মুসকানকে নিয়ে আসছি। তোমাদের দুপুরে খাবারের আয়োজন করা হচ্ছে। আমি কিন্তু এমনি এমনি ছাড়ছিনা। কতোদিন বাদে এলে তোমরা।
তন্নি বলল,
— না না আন্টি। ব্যস্ত হবেন না। আমরা এতো দেরি করবো না। মুসকানকে দেখেই চলে যাব। আপনি ওকে নিয়ে আসুন। বাকিরাও তাল মিলালো।
তাজমহল কিছুক্ষণ তাদের দুপুরে থাকার জন্য শাসিয়ে মুসকানকে আনতে উপরে চলে গেলেন।

ফারিশ সোফায় আয়েশ করে বসে আছে। তার ভেজা চুল দেখে নিহান প্রশ্ন করল,
— ‘ব্যাপার কি দোস্ত? উঠেছিস দেরি করে! আবার দেখি চুলও ভেজা! বাচ্চা মেয়েটা ঠিক আছেতো?’
ফারিশ নিহানের দিকে সোফার কোশন ছুড়ে মারল। নিহান কেচ ধরে হাসতে লাগলো।
রমিজ বলল,
— যাই করিস না কেন একটু বুঝে শুনে ভাই। আমিতো একটা বুড়ো মেয়েকেই কাঁদিয়ে দিয়েছি। সেই তুলনায় তোর বউতো নিতান্তই বাচ্চা** (তন্নির দিকে তাকিয়ে)
তন্নি রাগে ফুঁসছে। রমিজের পাশেই ছিলো সে। এলোপাতাড়ি কি’ল ঘু’সি মা’রতে লাগলো তাকে। তা দেখে ড্রয়িং রুমে থাকা সবাই হাসতে লাগলো।

তাদের হাসাহাসি মধ্যেই মুসকানকে নিয়ে ড্রয়িং রুমে আসলো তাজমহল। সকলকে সালাম দিয়ে মাথা নিচু করে দড়িয়ে রইল মুসকান। আর এদিকে ফারিশের বন্ধুবান্ধুবিরা হা হয়ে তাকিয়ে তাকে দেখছে।
সকালের মুখ থেকে আপনাআপনিই বেরিয়ে আসলো মাশাআল্লাহ! শ্যামা সোফা থেকে উঠে এসে মুসকানকে ধরে নিজের পাশে বসালো। মুসকান কান্জিভরম শাড়ি পরে আছে। তাজমহল তাকে একেবারে রেডি করেই নিচে নিয়ে এসেছে। কারণ নতুন বউ বলে আরো অনেকেই মুসকানকে দেখতে আসবে। শ্যামা মুসকানের থুতনিতে হাত রেখে বলল,

— বাহ্ দারুণ মিষ্টি দেখতেতো তুমি!
তন্নিও উঠে এসে মুসকানের পাশে বসল। মুসকানের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল,
— একদম বার্বি ডল।
টয়া উঠতে নিলে কুদ্দুস ফাজলামো সুরে বলল,
— তুই ওখানেই থাক। তোর জায়গা হবে না।
টয়া ধারাম করে কুদ্দুসের পিঠে কিল বসিয়ে দিল। ‘তোর বউ আমার থেকেও চার ডাবল হবে দেখেনিস’
কুদ্দুস মেকি হেসে বলল,
— তাহলেতো আমারই লাভ সারাক্ষণ বিছানায় বসিয়ে রেখে আ/দর করতে থাকবো। দৌড়ে চলে যেতে চাইলেও পারবে না।
টয়া ঠোঁট লটকিয়ে বলে,

— শা*লা নি’র্লজ্জ।
কুদ্দুস ফারিশের কানের কাছে গিয়ে ফিসফিসিয়ে বলল,
— এমন বউ রেখে বিছানা থেকে কি করে উঠে আসলিরে? আমিতো তিনদিন সেখানেই ল্যাটকিয়ে থাকতাম। দরজা ভেঙে ফেললেও ছাড়তাম না। হোক বাচ্চা!
ফারিশ আরেকটা ঘু’ষি মারতে গেলে কুদ্দুস দ্রুত সরে যায়। ‘তোরা সবগুলো মারতে মারতেই আমার হাফ মাংসা কমিয়ে ফেলেছিস।’
ফারিশ ভ্রু উঁচিয়ে বলে,
— তুই কথাই বলিস ওইরকম যে তকে মারার জন্য হাত আকুপাকু করে।
রমিজ মুসকানের দিকে তাকিয়ে আহত গলায় বলল,
— আচ্ছা মুসকান তুমি আগে কোথায় ছিলে বলতো? তোমাকে আগে দেখলে কি আমি আর ওই চিকনাকে বিয়ে করি। এখন থেকে তন্নি আউট মুসকান ইন। তুমিও এসব ঠাডা, মেঘ, বারিশ, ফারিশ বাদ দিয়ে আমার কাছে চলে আসো। আমরা মঙ্গল গ্রহে গিয়ে সংসার পাতবো।
তন্নিকে চিকনা বলায় সে রমিজের দিকে কটমট করে তাকালো। কিড়মিড়িয়ে বলল,

— ওহ তোর ভাবি হয়। ভাবি ডেকে রেসপেক্ট দিয়ে কথা বল।
রমিজ ব্যাঙ্গ করে বলল,
— এ্যাহ আসছে আমার রেসপেক্ট ওলি! তুই কোথায় মানুষকে রেসপেক্ট দিয়ে কথা বলে উল্টিয়ে ফেলিস শুনি একটু? নিজের স্বামীকে যে তুই করে বলিস লজ্জা করেনা?’ আমি তোর বন্ধু আগে ছিলাম এখন বর। আমাকে আপনি করে সম্মান দিয়ে কথা বলবি এখন থেকে।
তন্নি জোরপূর্বক ঠোঁটে হাসি জুলিয়ে বলল,
— ওহ তাই নাকি বরমশাই। আপনি বাড়ি চলুন। আপনার চোখের এন্ট্যানা খুলবো আমি।
মুসকান ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ফারিশের বন্ধুদের খুনসুটি দেখছে। তারা মুসকানের সামনেই হাসাহাসি করছে মজা করছে। মুসকানও তাদের হাসিতে সামান্য হাসে। কতো মজা করে এরা। ফারিশ মুসকানের দিকে আড়চোখে তাকায়। মেয়েটাকে হাসলে কতটা সতেজ লাগে। অথচ তাকে একবারও হাসতে দেখেনি ফারিশ।
কুদ্দুস মুসকান কে উদ্দেশ্য করে রসাত্মক সুরে বলল,

— এক গ্লাস পানি খাওয়াতে পারবেন ভাবি?
মুসকান লজ্জা পায়। কতবড় ছেলে তাকে ভাবি ডাকছে। সে জানে লোকটা মজা করে ডাকছে। তাও সে লজ্জা পাচ্ছে। মুসকান সোফা থেকে উঠে আলতো পায়ে হেটে পানি আনতে চলে যায়। কাল রাতে সোফা থেকে পরে কোমরে অনেকটাই ব্যাথা পেয়েছিল। যেটা এখনো আছে। যার জন্য সে একটু পা টানা দিয়েই হাটছে।
মুসকানের এভাবে হাঁটা দেখে কুদ্দুস অবাক হওয়ার ভান ধরে ফারিশকে বলল,
— মেয়েটার একি হা*ল করেছিস বন্ধু! ঠিক করে হা*টতে পর্যন্ত পারছে না বেচারা। বাচ্চা মেয়ে এতো নি*তে পারে! একটু বুঝে শুনে ক*রবি না!
আহারে…(হতাশার সুরে)
ফারিশ ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে ফোন টিপছে। কুদ্দুসের কথা যেন শুনলোই না। সে জানে তার বন্ধুরা এরকমই। একেকটা বজ্জাতের হাড্ডি। একটু আগে কুদ্দুস নিজেই বলছিল সে হলে, বিছানায় তিনদিন ল্যাটকিয়ে থাকতো। হোক বাচ্চা! এখন আবার সেই এ কথা বলছে। এর মুখের কোনো সংযম নেই।

তোমার মুগ্ধতায় পর্ব ৪

মুসকান এক গ্লাস পানি নিয়ে এসে কুদ্দুসের দিকে বাড়িয়ে দিল। কুদ্দুস হাত বাড়িয়ে মুসকানের থেকে গ্লাস টা নিতে নিতে দুষ্টু কণ্ঠে বলল,
— ‘ ভাবি আপনি ঠিক আছেনতো? ‘
মুসকান লজ্জা পেয়ে কুদ্দুসের ধরার আগেই গ্লাসটা ছেড়ে দিল। গ্লাসের পানি সরাসরি গিয়ে পড়ল কুদ্দুসের গুপ্তস্থানে। সাথে সাথে জায়গাটা বাচ্চাদের হি*শু করে দেওয়ার মতো ভিজে গেলো। সেদিকে তাকিয়ে মুসকান চোখ ডেকে জোরে এক চিৎকার দিয়ে উঠল। লজ্জায় হতভম্ব মুসকান আর এক মিনিটও সেখানে না দাঁড়িয়ে দৌড়ে ঘরের ভিতর চলে গেল। আর এদিকে ফারিশসহ ড্রয়িং রুমের সবাই হাসতে হাসতে এক প্রকার গড়াগড়ি খাচ্ছে। নিহান আর রমিজতো হাসতে হাসতে ফ্লোরেই বসে পরেছে। তারা যতবার কুদ্দুসের ভেজা জায়গাটায় তাকাচ্ছে ততবার ঘর কাঁপিয়ে হেসে উঠছে। হাসি যেন থামছেই না…

তোমার মুগ্ধতায় পর্ব ৬