তোর নেশা পর্ব ৫
তুষার আহমেদ কাব্য
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই কাব্য দেখলো মাইশা তার সামনে দাড়িয়ে আছে।
—এতোক্ষন লাগে উঠতে? শুনুন আপনি আগে কোথায় ছিলেন আমি জানিনা তবে আমাদের বাড়িতে সবাই ভোরে উঠে, তো এখন আপনাকেও উঠতে হবে(মাইশা)
কাব্য ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। কি বলবে বুঝতে পারছে না৷ মাইশা আরেকবার বলতেই কাব্য ফ্রেশ হতে চলে যায়।
কাব্য চলে যেতেই মাইশা হেসে উঠে। পেছন থেকে মাইশা ভাবি হাজির
— তুই ওকে এতো জলদি তুললি কেন? এখন ৬ঃ৪০ বাজে মাত্র(মাইশার ভাবী)
— প্লিজ ওকে একটু জ্বালাতে হবে(মাইশা)
ভাবি হেসে চলে যায়। মাইশা বিছানা গোছাতে থাকে।
কিছুক্ষন পর কাব্য বেরিয়ে আসে।
— চলুন আমাদের বাসার সবাই ঘুম থেকে উঠে বাড়ির পেছনের বাগানে যাই। আজ সবাই চলে এসেছে, আপনাকে নিয়ে আমাকেই যেতে হবে(মাইশা)
কাব্য কিছু বলল না। মাইশা কাব্যকে নিয়ে বাগানে চলে যায়। কুয়াশা ভেজা ঘাসের উপর হাটতে ভালোই লাগছে। কাব্য চারদিকে দেখতে থাকে। খুব ভালো লাগছে।
কিছুক্ষন ঘুরে বাসায় ফিরে আসে দুজনে..
কাব্যকে নাস্তা করতে টেবিলে বসতে বলে মাইশার আম্মু।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
— না মা,ওর এসবের অভ্যাস নেই। সকালে এমন পরিবেশ এ খেয়েছে নাকি। ও রুমে যাক..রুমেই খাবার দিয়ে আসবো(মাইশা)
কাব্য হেটে রুমে চলে যায়। প্রচন্ড রাগ হচ্ছে তার।
—এই তুই ওর সাথে এমন করছিস কেন?(মাইশার আম্মু)
— মা,এখানে বসলে ওর জন্য স্পেশাল নাস্তা যা আমি বানাবো তা দিতে পারবো? বুঝে যাবে না?(মাইশা)
—তুই ও না
মাইশা হেসে রান্নাঘরে চলে যায়।
নাস্তা বানিয়ে রুমে নিয়ে যায়। কাব্য বারান্দায় দাঁড়িয়ে।
—নিন আপনার নাস্তা(মাইশা)
–ক্ষিদে নেই(কাব্য)
— দেখুন আমাদের উপর নজর রাখছে সবাই, যদি আপনি রাগ করেন তাহলে ওরা কিন্তু….
কাব্য ঘুরে তাকায়। মাইশা গিয়ে হাত ধরে নিয়ে বিছানায় বসায় কাব্য
— এবার খেয়ে নিন(মাইশা)
–হুম
মাইশা বেরিয়ে যায়।
নাস্তা শেষ করে কাব্য বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ায়।
— কফি! (মাইশা)
কাব্য তাকিয়ে দেখে মাইশা কফি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
কাব্য কফি টা নেয় না। সামনের দিকে তাকিয়ে থাকে
— কফি চাই না?(মাইশা)
— না
— কেন?
— এমনি
— চা?
— না
—চুমু/
—কিহ?
— চিনি
— নাহ
—আদর?
—- মানে?
— বাদর
—আপনি ঠিক আছেন?
— মনে হচ্ছে না
কাব্য মাইশার দিকে তাকিয়ে থাকে মাইশা হেসে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে। এই মেয়ের আজ কি হলো?
অন্যদিকে
ডাক্তারের সামনে বসে আছে কাব্যের মা
— তুষার আসেনি?(ড.)
— না,এখনো কিছু জানেনা।হয়তো জানার সুযোগ ও পাবেনা (বলেই কেদে উঠে কাব্যের মা)
— কাদবেন না,নিজেকে শক্ত রাখুন। দেখুন আপনি সঠিক সিন্ধান্ত নিয়েছেন। কাব্য যদি জানে তার হাতে কিছু সময়ই আছে তাহলে ও বাচতে ভুলে যাবে। তার থেকে ও এভাবে নিজের মতো দিন গুলো পার করুক।
— ওকে বাচানোর কি কোনো উপায় নেই?
— দেখুন যখন এই রোগ টা শুরু হয়েছিল তখন যদি চিকিৎসা শুরু করা হতো তাহলে এটা ছড়ানো থেকে আটকানো যেতো, কিন্তু কাব্য সব সময় নিজের ব্যাপারে কেয়ারলেস। তাই রোগ টা পুরোপুরি ভাবে ছড়িয়ে গেছে।
— তাহলে কি আমার তুষার…
— নিজেকে সামলান।
কাব্যের মা কেদেই যাচ্ছে।
কাব্যের দেহে বেধেছে এক মরণব্যাধি যা কাব্য জানেও না। যখন তা ধরা পড়ে তখন অনেক দেরী হয়ে গেছে।
এইদিকে
বিকেলের দিকে কাব্যের মাথার পেছনে প্রচন্ড ব্যাথা শুরু হয় । কাব্য চুপ করে সহ্য করতে থাকে। মাইশা সামনে দাড়িয়ে তাদের বাসায় কি কি হয় তা বলতে থাকে। এক সময় ব্যাথা সহ্য ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। কাব্য উঠে বাড়ির বাইরে চলে যায়।
হাটতে থাকে রাস্তায়।
হঠাৎ
— আরে কাব্য?( সেই ডাক্তার)
— আপনি এখানে?(কাব্য)
— মাত্রই একটা রোগী কে দেখে এলাম। মাথায় কি হয়েছে, হাত দিয়ে রেখেছো?
— জানিনা প্রচন্ড ব্যাথা
ডাক্তার কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে ব্যাগ থেকে একটা ট্যাবলেট কাব্যের হাত দেয় এক বোতল পানি সহ
— খেয়ে নাও
কাব্য ট্যাবলেট খেয়ে নেয়
— এখানে কি কোথাও ঘুরতে এসেছো?
— জ্বি(কাব্য)
— আচ্ছা যাও বাসায় গিয়ে রেস্ট নাও
বলেই ডাক্তার গাড়িতে করে চলে যায়। কাব্য বাসার দিকে হাটতে থাকে, চোখ কেমন যেনো বন্ধ হয়ে আসছে।ঘুম ঘুম পাচ্ছে।
কাব্য বাসায় ফিরে আসে। মাইশা রান্নাঘরে রান্না করছে। কাব্য রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ে, সাথে সাথে সে ঘুমিয়ে পড়ে।
তোর নেশা পর্ব ৪
— রাতে বরের জন্য কি রান্না হচ্ছে(ভাবী)
—কেন বলবো?(মাইশা)
—খুব ভালোবাসিস?
— হুম
— যদি হারিয়ে ফেলতি?
— জানিনা,ওকে ছাড়া এখন এক মুহুর্ত ভাবতে পারছি না(হালকা হেসে)
— পাগলি মেয়ে
মাইশা আসলেই ভাবতে পারছে না কাব্য হারিয়ে গেলে সে কি করবে…
অন্যদিকে বাড়ির সামনে এসে থামে নিধি আর নিরবের গাড়ি….