তোর প্রেমে উন্মাদ আমি পর্ব ৮

তোর প্রেমে উন্মাদ আমি পর্ব ৮
Raiha Zubair Ripti

পরের দিন বিকেলে সন্ধ্যা আসলো রাতদের বাড়িতে। কনা কে শুভেচ্ছা জানাতেই কনা সন্ধ্যার হাত টেনে জানালো এটা একটা ভুল বোঝাবুঝি। তার বেয়া’দব ছেলেটা না বুঝেই ভেবে বসেছে কনা প্রেগন্যান্ট। রাত মজা করে বলেছিল বাচ্চার কথা। সন্ধ্যা তপ্ত শ্বাস ফেললো। আয়ুশ এত পাকনা বাপ্রে।
-” আয়ুশ টা কোথায়?
-” আছে হয়তো আরুর রুমে।
সন্ধ্যা গলা ছেড়ে ডাকলো আয়ুশ কে। আয়ুশ সন্ধ্যার গলার স্বর শুনেই দৌড়ে ছুটে আসলো। এসে দেখলো সন্ধ্যা একা এসেছে৷ আয়ুশ দাঁড়িয়ে রইলো। সন্ধ্যা পাশে এসে বসতে বলল। আয়ুশ বসলো। সন্ধ্যা ব্যাগ থেকে চকলেট বের করে আয়ুশের হাতে দিতেই আয়ুশ বলল-

-“ একা এসেছো?
-“ হ্যাঁ। কেনো?
-“ তোমার মেয়ে আসে নি?
-“ না।
-“ নিয়ে আসতে।
-“ আনবো না আর তোমাদের বাসায়।
-” কেনো?
-” কারন তুমি দিনকে দিন দুষ্ট হয়ে যাচ্ছ। পড়াশোনা করবে কবে থেকে বলো?
-“ আমাকে বরং তোমাদের বাড়ির মালি হিসেবে রেখে দাও। তবুও এসব পড়াশোনা নিয়ে কথা বলো না। আমি পড়াশোনা করতে চাই না মামনি।
-” আচ্ছা যাও।
আয়ুশ চলে গেলো। সন্ধ্যা কনার দিকে তাকিয়ে বলল-

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

-“ ছেলেটার জন্য কিছু ভেবেছিস?
-“ কি আর ভাববো।
-“ পড়াশোনা করতে হবে না?
-“ ওর বাপকে বললাম হোস্টেলে পাঠানোর কথা। কিন্তু না করে দিলো। রাতে বাড়ি ফিরে ছেলেকে না দেখে থাকতে পারবে না।
-“ হোস্টেলে কেনো দিবি। তুই নিজে একটু প্রোপার গার্ড কর। এই ধর ওর হাতে ফোন টা কম দিয়ে নিজে সাথে বসে থেকে পড়াবি। দু একদিন মানা করবে। একবার অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেলে তখন ঠিক হয়ে যাবে।
-“ ট্রাই না করে আছি নাকি। তারে পড়াতে গেলেই তার ঘুম পায়। বিছানায় শুয়ে পা উপরে দিয়ে পড়ে। সাপের মতো গড়াগড়ি করে। পড়ার সময় বলে এটা এনে দাও ওটা বানিয়ে দাও খাবো।
-“ কয়েক দিন আমার বাসায় নিয়ে রেখে দেখি আরশির সাথে পড়ে কি না।
-“ নিয়ে গিয়ে দেখ মানুষ হয় কি না।

সন্ধ্যা সেদিন চলে আসলো। রাতের দিকে আরাধ্য আরু কে ফোন করলো। সন্ধ্যা ভেবেছে আরাধ্য যেহেতু আরু দের বাসায় গিয়েছিল তার মানে জানে প্রেগন্যান্সির কথা টা ভুল। তাই আর বাসায় ফিরে কিছু বলে নি। আরু মায়ের সামনে বসেছিল। আয়ুশ যে মিথ্যা বলেছে সেটা জানতে পেরেই চোটে আছে৷ এর মত আবা’ল মাথায় গো’বর ভর্তি কোনো ছেলে কি আর পৃথিবীতে আছে?
-“ মা তোমার ছেলে কিন্তু বাড়াবাড়ি করেতেছে অনেক। ওরে বাসায় না রেখে দূরে কোথাও পাঠাও। অন্তত এসব অযাচিত ঘটনা থেকে রেহাই পাবো।
কনা পাল্টা জবাবা দিলো-
-“ তোরে তো কয়দিন পর শ্বশুর বাড়ি পাঠায় দিব। এখন আমার ছেলে একাই থাকবে বাড়ি। তোর তো সমস্যা হবার কথা না। যা পড়তে বয় গিয়ে। আমারে টিভি দেখতে দে।
আরু মায়ের উপর বিরক্ত হয়ে চলে আসলো। রুমে আসতেই আরাধ্যর ফোন এলো আরুর ফোনে। আরু ফোন টা রিসিভ করলো। ওপাশ থেকে আরাধ্য বলল-

-” এ্যই আরু শোন। তোর ভাই/বোনের জন্য আমার বিয়েতে কোনো প্রবলেম হবে না তো?
আরাধ্যর কথায় আরুর বিরক্তিকর মাত্রা আরো বেড়ে গেলো।
-” আপনি আমার ভাই বোন নিয়ে পড়ে আছেন কেনো? সমস্যা কি আপনার?
-” জানিস না কি সমস্যা? তোর ভাই বোন গুলোই
তো আমার সমস্যা। এই খবর টা আমার বিয়ে হওয়ার পরের দিন দিত তাহলেও এতো চিন্তা করতে হতো না আমায়।
-” এই সব শোনানোর জন্য ফোন দিছেন আমায়?
-“ হ। আমি বলবো তুই শুনবি।
-” না ফোন কেটে দিমু বইলা রাখলাম।
-“ কেটে দেখ। তোর বাপরে ফোন দিয়ে বিচার দিব।
-” কি বলবেন?
-” বলবো তুই এত রাতে আমাকে ফোন দিয়ে
কান্নাকাটি করতেছিস। চাচি প্রেগন্যান্ট বলে।

-” শাট-আপ মা প্রেগন্যান্ট না।
আরাধ্যর ভ্রু কুঁচকে আসলো।
-” মিথ্যা বলিস কেনো হু?
-” মিথ্যা কেনো বলবো আমি হু? আপনি আমার
বেয়াই লাগেন?
-” বেয়াই না তবে হবু বর লাগি। মজা করতেই পারিস। কিন্তু আয়ুশ যে বললো।
-” ও মিথ্যা বলছে।
-” শা’লা বজ্জাতের হাড্ডি। মিথ্যা বলে তো আমার
খাওয়া দাওয়া ভাসিয়ে দিয়েছিল। তোর বাপ কে বলে ওটাকে হোস্টেলে পাঠানোর ব্যবস্থা কর।
-” হু সেটাই করাবো।
আরাধ্যর মুখ চুপসে গেলো।
-“ আসলেই?

-” হ্যাঁ। ও যা শুরু করছে এভাবে চলতে থাকলে
ও মানুষ না হয়ে গাধা হবে।
-” অলরেডি তো গাধাই তৈরি করেছিস নিজের মতন।
-” আমি গাধা? রেগে বলল আরু।
-” হ্যাঁ কেনো কোনো সন্দেহ আছে এতে?
-” রাখেন ফোন।
-“ কেনো ফোন রাখবো? ফোনের ব্যালেন্স তোর ফুরচ্ছে নাকি আমার ফুরচ্ছে? অবশ্যই আমার তাহলে তুই ফোন রাখতে বলার কে?
-“ আমার এতো সময় নেই আপনার সাথে কথা বলার।
-“ কি করার সময় আছে তোর?
-“ পড়বো আমি।
-“ বাহ্ বিয়ের কথা শোনার পর থেকে দেখছি একটু বেশিই পড়াশোনা করছিস।
-“ এটা আপনার ভুল ধারনা।
-“ খেয়েছিস রাতে?
-“ হ্যাঁ।
-“ আমাকে তো পাল্টা জিজ্ঞেস করলি না ম্যানারলেস মেয়ে।
-“ খেয়েই থাকবেন নিশ্চয়ই।
-“ তুই খাইয়ে দিয়ে গেছিলি বোধহয়।
-“ উফ আপনি কি এসবই বলে যাবেন? ফোন কেটে দিলাম আমি।
-” শোন না আরু জানিস আজকাল না আমার ভীষণ কষ্ট হয়।
-” কেনো ম’রে টরে যাবেন নাকি? ম’রলে প্লিজ বিয়ের আগেই ম’রে যান। তাহলে আর আপনাকে আমার বিয়ে টা করতে হয় না।
আরাধ্য রেগে গেলো। বকা দিয়ে বলল-

-” শালার বোন এখন ও না হওয়া হবু বউ। তুই এখন আমার সামনে থাকলে তোরে থা’পড়াইয়া দাঁত ফা’লাইয়া বুড়ি বানায় দিতাম। আমি মর’বো কেনো হু? আমার কি ম’রার বয়স হইছে? বিয়ে করবো। বছরে বছরে বাচ্চা হওয়াবো তোরে দিয়ে। ফুটবল, ক্রিকেট টিম বানাবো। ওদের বিয়ে দিব। তারপর আমার নাতি নাতনির সাথে হাডুডু খেলবো। আর তুই এসব পূরন হবার আগেই আমার ম’রার কথা বলছিস!
-” আশ্চর্য আপনিই তো বললেন আপনার কষ্ট হয়। সেজন্য বললাম হয়তো ম’রে টরো যাওয়ার সময় হয়েছে।
-“ চপ শয়তান ছ্যামড়ি। আমি ম’রে গেলে কি আরেক বেডারে বিয়ে করবি তুই?
-” হ।
-” ভূত হইয়া তর ঘাড় মটকামু। এখন আসল কথা শোন। আমার বাসা থেকে কোল বালিশ টা নিয়া যা তো।
-” আপনার কোল বালিশ এনে আমি কি করবো?
-” তুই ছাড়া বিছানায় কোল বালিশ রেখে আমি কি করবো?
-” কেরোসিন তেল এনে পু’ড়িয়ে ফেলুন।
-” এটাও তো বলতে পারিস কেরোসিন তেল এনে তোরে পু’ড়ায় ফেলতে। তাহলে তো আত্মিক শান্তি পাইতাম।
আরু কেটে দিলো ফোন। আরাধ্য ফোনের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বিরবির করে বলল- আমার মুখের উপর ফোন কেটে দিস তুই। এর শাস্তি তো তোকে দিব বিয়ের পর।
পরের দিন সকালে আয়ুশ কে স্কুলে পৌঁছে দিলো রাত। আয়ুশ তার ক্লাস রুমে ঢুকতেই দেখতে পেলো লায়া তার জন্য জায়গা রেখেছে পাশাপাশি বেঞ্চে। লায়া আয়ুশ কে দেখে দৌড়ে আসলো। মেয়েটা আজ অতিরিক্ত সেজেছে।
-“ আয়ুশ তোমার জন্য আমি জায়গা রেখেছি।
আয়ুশ বিরক্ত মুখে বলল-

-“ আই সি ইট।
-“ চলো বসবে।
আয়ুশ গিয়ে বসলো। লায়া ফের বলল-
-“ আজ আমাকে কেমন লাগছে আয়ুশ?
আয়ুশ তাকালো লায়ার দিকে। একটু ভেবে বলল-
-“ এ্যই তুমি এতো সাজো কেনো? আর স্কুল ড্রেসের সাথে কে লাল টকটকা লিপস্টিক দেয় ঠোঁটে?
লায়া ব্যাগ থেকে ছোট আয়নাটা বের করে নিজেকে দেখে বলল-
-“ কেনো আমাকে সুন্দর লাগছে না?
-” এটাকে সুন্দর বলে? তুমি আমার জুনিয়র আরশি কে কখনও লিপস্টিক দিয়ে তোমার মতো সেজে স্কুলে আসতে দেখেছো?
-“ তোমার বোন আরশি?

-“ হোয়াট বোন! শি ইজ নট মাই সিস্টার। শি ইজ মাই ফিউচার পার্টনার আন্ডারস্ট্যান্ড?
লারা বুঝলো না আয়ুশের কথা। সেজন্য কিছুটা ভাবুক হয়ে ভাবতে থাকলো এর বাংলা টা।
কনা আয়ুশের ব্যাগ পত্র গোছাচ্ছে। আরু সেটা দেখে বলল-
-“ কোথাও পাঠাচ্ছো আয়ুশ কে?
-“ হু।
-” কোথায়?
-“ সন্ধ্যা দের বাসায়। দেখি ওখানে একটু পড়াশোনা করে কি না।
-“ তোমার মনে হয় ও বাড়িতে পড়াশোনা করবে? জীবনেও না। উল্টো আরশির পড়ার ১২ টা বাজাবে।
-“ সন্ধ্যা সামলে নিবে।
বিকেলের দিকে আয়ুশ কে সন্ধ্যাদের বাসায় দিয়ে আসে কনা। আরাধ্য বাসায় এসেই আয়ুশ কে নিজের বাসায় দেখে ভাবে হয়তো আরুও এসেছে। সেজন্য জিজ্ঞেস করলো-
-“ তোর বোন এসেছে?
আয়ুশ স্যুপ খেতে খেতে বলল-

-“ না।
-“ তাহলে কার সাথে এসেছিস?
-“ মা দিয়ে গেছে।
-“ যাবি কার সাথে বাসায়?
-“ বাসায় তো যাব না।
-“ বাসায় যাবি না মানে?
-“ মা ল্যাগেজ সহ দিয়ে গেছে। আর বলেছে ঠিক মতো পড়াশোনা করতে আরশির সাথে।
-“ এটা স্কুল নাকি যে এখানে তুই পড়াশোনা করবি। আর তোর না হোস্টেলে যাওয়ার কথা।
-“ আমিই বলেছি আয়ুশ কে দিয়ে যেতে। আরশির সাথে পড়লে হয়তো পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ জাগবে সেজন্য।
আরাধ্য মায়ের কন্ঠ শুনে ভদ্র হয়ে গেলো। বসা থেকে উঠে বলল-
-“ হ্যাঁ ঠিক ই করেছো। এবার বেশ মনোযোগী হয়ে উঠবে আয়ুশ। তাই না আয়ুশ?
আয়ুশ সন্ধ্যার দিকে তাকিয়ে বলল- হ্যাঁ।

আরাধ্য বিরবির করে আয়ুশ কে কয়েক টা বকা দিতে দিতে রুমে আসে। সন্ধ্যা রুম থেকে আরশি কে ডেকে এনে পড়তে বসায়। সেটা দেখে আয়ুশ নিজের বই গুলো এনে আরশির পাশে বসতে গিয়ে সদর দরজার দিকে তাকিয়ে দেখলো সিদ্দিক ব্যাগ কাঁধে নিয়ে আসতেছে। আয়ুশ আর বই নিয়ে বসলো না। বিস্ময় হয়ে বলল-
-“ এ্যাই সিদ্দিক হোয়ার আর ইউ কাম মাই ইন লো হাউস? তোমার বাসায় পড়ার টেবিল নেই পড়ার জন্য?
সিদ্দিক এগিয়ে এসে বলল-
-“ আমি তো আরশির সাথেই পড়ি রোজ ভাইয়া।
আয়ুশ তর্জনী তুলে বলল-
-” এর জন্য তুমি এতো বিলিপয়েন্ট?
-“ বিলিপয়েন্ট মানে কি ভাইয়া?
সন্ধ্যা স্মিত হেঁসে বলল-
-“ ব্রিলিয়ান্ট কে বলছে বিলিপয়েন্ট। তা সিদ্দিক তুমি এসে বসো আরশির পাশে।
সিদ্দিক গিয়ে বসার আগেই আয়ুশ গিয়ে বসলো আরশির পাশে। তারপর বই খাতা বের করতে করতে বলল-
-“ আরশির বিসাইডে শুধু আই বসবো। নট এনিওয়ান।

সন্ধ্যা সিদ্দিক কে নিজের পাশে বসালো। আয়ুশ পড়ার ফাঁকে ফাঁকে সিদ্দিক কে চোখ দিয়ে ভস্ম করে দিচ্ছিলো। সিদ্দিকের কি বাবার টাকা কমে গেছে নাকি। সেজন্য ফ্রী তে আরশির বাসায় এসে পড়ে। টিউটর রাখতে পারে না ওর বাবা ওর জন্য। ও কেনো এ বাড়িতে এসে পড়বে।
অর্ধেক পড়েই আয়ুশ সোফায় শুয়ে পড়লো। সন্ধ্যা সেটা দেখে বলল-
-“ কি হয়েছে?
-“ মাই পিঠ ব্যথা করছে। অনেকক্ষণ হলো স্টাডি করছি।
সন্ধ্যা ঘড়ির দিকে তাকালো। কেবল বিশ মিনিট হয়েছে।
-” কোথায় অনেকক্ষণ হলো? কেবল বিশ মিনিট হয়েছে।
-“ হোয়াট আর ইউ সেইয়িং, মামুনি? ইয়োর ক্লক মাস্ট বি ব্রোকেন। ইটস বিন ওভার ওয়ান আওয়ার আই স্টাডিইং।
সন্ধ্যা তপ্ত শ্বাস ফেললো।

-“ আমার ঘড়ি ঠিক আছে। তুই পড় বাবা।
আয়ুশ কিছুক্ষণ ভেবে বলল-
-“ আমার ইংরেজি এখন গুড হয়?
-“ হ্যাঁ গুড হচ্ছে। এখন পড়।
-“ তার মানে আমি বিলিপয়েন্ট হচ্ছি?
-“ হু। এখন পড়া শুরু কর।
-“ আমার স্লিপ পাচ্ছে। ঘুমাই?
-“ না।
আয়ুশ চুপচাপ বইয়ের দিকে তাকিয়ে রইলো। আর পড়লো না।
দেড় ঘন্টা শেষে যখন সন্ধ্যা পড়তে গেলো তখন আর পড়া বলতে পারে না আয়ুশ৷ সিদ্দিক সেটা দেখে হাসে। আয়ুশের শরীর জ্বলে উঠে সিদ্দিকের হাসি দেখে। রেগে বলল-
-“ এ্যই সিদ্দিক হোয়ার আর ইউ হাসিং না কিডিং হবে। হোয়ার আর ইউ কিডিং হু?
সন্ধ্যা সিদ্দিক কে হাসতে বারন করে আয়ুশ কে বলল-
-“ কি পড়লি এতক্ষণ ধরে তাহলে? কিছুই তো পারিস না।
-“ কাল থেকে পারবো। এখন খেতে দাও।
-“ পড়ার আগেই তো স্যুপ খেলি।

-“ খোঁটা দিচ্ছ?
-“ আচ্ছা টেবিলে গিয়ে বস দিচ্ছি।
রাতে আষাঢ় ফিরলো বাসায়। আয়ুশ কে বসার ঘরে দেখে এগিয়ে এসে পাশে বসে বলল-
-“ আরে আয়ুশ বাবু যে।
-“ আমি বাবু না তো চাচ্চু।
আরাধ্য খাচ্ছিলো টেবিলে। খাওয়া রেখে বলল-
-” না তুমি তো দামড়া সাহেব।
-“ হোয়াট ইজ দামড়া সাহেব?
-“ কুছ নেহি৷ ঘুমাতে যা।
-“ মশারি টা নিজ দায়িত্বে টানিও?
-“ আমার রুম তোদের বাড়ির মতো জঙ্গলে না। মশা নেই আমার রুমে। মশারি টানাতে হয় না।

আয়ুশ চলে গেলো। আরাধ্য খাওয়া শেষ করে রুমে এসে দেখে আয়ুশ অর্ধেকের বেশি বিছানা জুড়ে শুয়ে আছে। আরাধ্য আয়ুশ কে সাইডে টেনে নিয়ে নিজে শুয়ে পড়লো। মাঝরাতে হঠাৎ পেটের উপর আচমকা ভারি কিছু পরতেই আরাধ্যর ঘুম ভেঙে যায়৷ পেটের উপর হাত দিয়ে দেখে পা। বুঝলো এই আয়ুশ টা তাকে ঘুমাতে দিবে না। বে’য়াদব টার শোয়া ভালো না। সেজন্য মাথার পাশে থাকা কোলবালিশ টা মাঝখানে দিলো। ভাগ্যিস কোল বালিশ টা ছিলো। আর এই কোলবালিশ টাকে নিয়েই আরুর সাথে ঝগড়া করলো!
পরের দিন বিকেলে আরু কে নিয়ে শপিংমলে আসলো কনা সন্ধ্যা। সাথে আছে আরশি আয়ুশ। আয়ুশের মন ভারী। সেদিন ভেবেছিল তার আর আরশির বিয়ে। কিন্তু আজ জানলো বিয়ে তো তার বোনের। কনা সন্ধ্যা পছন্দ করে আরুকে বিয়ের সব কিনে দিলো। শেষের দিকে আয়য়ুশে জন্য কিছু কেনার জন্য আয়ুশকে কনা জিজ্ঞেস করলো -কি কিনবি?
আয়ুশ জবাবে বলল-

তোর প্রেমে উন্মাদ আমি পর্ব ৭

-“ শেরওয়ানি।
কনা আর দ্বিতীয় বার জিজ্ঞেস করলো না। নিজেই পছন্দ করে আয়ুশের জন্য শার্ট প্যান্ট, পাঞ্জাবী কিনলো। আরাধ্যর পোশাক আরাধ্যর বাবা আর চাচারা এসে কিনবে।

তোর প্রেমে উন্মাদ আমি পর্ব ৯