দিগন্তবেলার প্রেমান্দোলন পর্ব ৫০ (২)

দিগন্তবেলার প্রেমান্দোলন পর্ব ৫০ (২)
আফরোজা আশা

রাত হয়েছে অনেক। আমার মাথায় চিন্তার ভার; এতো রাতে হোস্টেলে উঠতে পারব কি না। এহেন ভাবনার মাঝে একজন জিজ্ঞেস করল, আমি কোথা থেকে রিকশা নিয়েছি। জবাবে বাস স্ট্যান্ডের কথা জানালাম, সাথে এও জানালাম ভাড়া চল্লিশ বলেছিল কিন্তু এখন পাঁচশো চল্লিশ চাইছে। রিকশাওয়ালার সাথে ছেলেগুলোর তর্কাতর্কি হলো। জিতল অবশ্য ছেলে দুজনই, স্থায়ী ছেলেদের সাথে ভাড়ার লজিকে টিকল না রিকশাচালক। সেই আবার চল্লিশ টাকা নিয়ে ফিরতে হলো তাকে। ততক্ষনে আমি রাস্তা থেকে উঠে দাঁড়িয়েছি। হাঁটুতে ছাল উঠেছে, দাঁড়াতে কষ্ট হলো বেশ।

ভেজাল মিটিয়ে ছেলেদুটো আমার সামনে এলো। আমি ব্যাগ হাতিয়ে চল্লিশ টাকা ওদের দিকে বাড়িয়ে দিলাম। আমার বাড়িয়ে দেওয়া টাকা দেখে ওরা একজন আরেকজনের দিকে তাকিয়ে হাসলো। সে হাসির মানে বুঝলাম না আমি। অচেনা শহরে ছেলেদুটোকে ভয় হতে লাগল এবার। যদি খারাপ হয়, আমার ক্ষতি করার চেষ্টা করে! তন্মধ্যে বাইক চালাচ্ছিল যে ছেলেটা সে আমার বাড়ানো হাতের উপর কচকচে পাঁচটা হাজারের নোট রাখল। হতভম্ব আমি জিজ্ঞেস করলাম, কিসের টাকা? জবাবে পাশের জন জানালো, ওদের বাইক দিয়ে আমার এক্সিডেন্ট হলো তার ক্ষতিপূরণ। ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে দেখে সুযোগটা চট করে লুফে নিলাম।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

টাকাগুলো ওদের ফিরিয়ে দিয়ে বললাম, পড়াশোনার তাগিদে শহরে এসেছি। ক্ষতিপূরণ দিতে চাইলে একটা গার্লস হোস্টেলের ব্যবস্থা করে দিতে। তারপর ওদের সাথে আরো কিছুক্ষন কথাবার্তা হলো। জানতে পারলাম, আমরা তিনজনই সেইম ভার্সিটি, সেইম ইয়ার, সেইম ডিপার্টমেন্ট। আমার ভয় খানিক লাঘব হলো। প্রায় তখনি থাকার জায়গারও খোঁজ পেয়ে গেলাম। ভার্সিটি থেকে কিছুটা দূরে গার্লস হোস্টেলে উঠিয়ে দিয়ে ওরা চলে গেল। এতো রাতে একটা সিঙ্গেল বেডের রুম পেয়ে আমি প্রথমে অবাক হয়েছিলাম! পরে জানলাম এটা শিকদারের মামা-মামির আন্ডারে। হ্যাঁ! উক্ত ব্যক্তিদ্বয়, যারা আমার ব্যাচমেট হয়ে এই উপকার করল তাদের একজন রায়হান শিকদার, আরেকজন দিগন্ত তালুকদার। ❞

পড়ার মাঝে দিগন্ত নড়চড়ে উঠতেই মনযোগ বিঘ্ন হলো বেলার। তড়িঘড়ি করে নোটপ্যাড বন্ধ করে সোজা হয়ে বসলো। হাত বাড়িয়ে দিল দিগন্তের ঘাড়ের দিকে। পূর্বের ন্যায় আস্তে আস্তে ঘাড়ে হাত বুলাতে শুরু করলো।
ঘুমের ঘোরে থেকেই বেলার পেটে নাক ডুবালো দিগন্ত। হুট করে ওর বালিশ এতো নরম কিভাবে হলো বুঝল না। মুখ যত দাবিয়ে দিচ্ছে তত যেন শান্তি মিলছে। নাকে ঠেকছে মন-মাতানো মিষ্টি সুবাস। জোরে শ্বাস টানলো দিগন্ত। মোহনীয় সে সুগন্ধ নাসারন্ধ্রে প্রবেশ করতেই নরম তুলতুলে বালিশে, জোড়ালোভাবে কয়েকবার নাক বুলালো। পরক্ষনেই নিজের সুখটুকু খুঁজে নিয়ে ঘুমের অতলে হারিয়ে গেল।

এদিকে,বেলার অবস্থা নাজেহাল। এতোসময় ধরে এভাবে বসে থাকার কারণে কোমড় থেকে পায়ের নিচ পর্যন্ত ঝিম ধরেছে। উপরন্ত, দিগন্তের অত্যাচারে শ্বাস আটকে পাথরের মতো শক্ত হয়ে বসে আছে। শরীর শিরশির করছে ওর। দিগন্তের করা কাজ- কারবারে কেমন অবশ হয়ে আসছে দেহ-মন। নতুন এই অনুভূতিগুলো পীড়াদায়ক হলেও, ভালো লাগছে বেলার।
কিছুক্ষন পর দিগন্ত ঘুমিয়ে পড়েছে দেখে নোটপ্যাড খুলে আবারো পড়তে শুরু করল।

❝ দেখতে দেখতে তিনটা দিন কেটে গেল। এর মাঝে পাশের রুমের সিনিরয় আপুর মাধ্যমে একটা টিউশনি পেলাম। বেতন ছয় হাজার। আমার টেনেটুনে বেশ চলে যাবে এটা দিয়ে। কিন্তু এরপর আরো দু-একটা টিউশনির খোঁজ করতে হবে। ভার্সিটির জন্য যে টাকার প্রয়োজন ছিল সেগুলো আম্মা দিয়েছিল, লোন নিয়ে। শোধ করতে হবে আমায়। আজ বাদে কাল থেকে ভার্সিটির ক্লাস শুরু। আমি যত বেশি উৎফুল্ল, তত বেশি ভয়ে আছি। শুনেছি,প্রথম দিন সিনিয়ররা ফ্রেশার্সদের দিয়ে উল্টাপাল্টা কাজ করায়। পুরোটা দিন নানান চিন্তাভাবনায় কাটল।

পরদিন ধুকপুক মনে ভার্সিটিতে চলে এলাম। গেট পেরিয়ে ভেতরে পা রাখতেই আবারো বাইকের সাথে এক্সিডেন্ট করতে করতে বাঁচলাম। দোষটা আমারই, মনযোগ ছিল ভার্সিটির ক্যাম্পাসের দিকে। চোখ তুলে সামনে তাকাতেই লজ্জায় পড়লাম। পরপর দুদিন ওদের বাইকের সামনেই পড়তে হলো। বাইক পার্ক করে দুজনে আমার দিকে এলো। ওদের ফেইস রিয়েকশন দেখে আমি ধরেই নিয়েছিলাম আজ আমাকে অপমানিত হওয়া থেকে কেউ বাঁচাতে পারবে না। কিন্তু না! আমার ধারণা ভেঙ্গে দিয়ে দুজনেই হেসে খেলে ভালো-মন্দ জিজ্ঞেস করতে শুরু করল। আমি বোকার মতো প্রথম দিকে চেয়ে ছিলাম। পরে ওদের চাঞ্চল্য ব্যবহারে সহজ হলাম। সে সময়কার দিগন্ত কিন্তু এখকার মতো রগচটা, গম্ভীর ছিল না। কু-বুদ্ধি আর বদের হাড্ডি ছিল। শয়তানি যেন মিনিটে মিনিটে মাথা চাড়া দেয় ওর।

এইতো, শুরু হলো আমার জীবনের বেস্ট দুটো মানুষের সাথে বেস্ট সময়গুলো। ভার্সিটি, ক্লাস, বন্ধু-বান্ধব সবকিছু পেয়ে জীবন রঙিন হলো। ফার্স্ট ইয়ারের মিড শেষ। এর মাঝে কত ফ্রেন্ড এলো-গেল কিন্তু দিগন্ত, রায়হান আর আমার বন্ডিং ধীরে ধীরে খুব স্ট্রং হতে শুরু করল। তিনজন হলাম ভার্সিটির অন্যতম গ্রুপ। লোকচোখে আমাদের মধ্যে জেন্ডার ইকুয়েশন থাকলেও, বন্ধুত্বের দৃঢ় বন্ধন সেসবে তোয়াক্কা করত না। প্রথম দিকে অবশ্য, আমি একটু রয়ে-সয়ে চলতাম, ওই যে তথাকথিত প্রবাদ ছেলে-মেয়ে কখনো বন্ধু হতে পারে না; তার থেকে বেশি কিছু হয়। কিন্তু দুই বাঁদর ছেলে, আমাকে মেয়ে বলে মনেই করত না। আমি ছিলাম ওদের ক্রাইম পার্টনার। ভার্সিটিতে দুটো আওয়ারাগিরি করে বেড়াতো আর সামলাতে হতো আমাকে। এগুলোর জন্য পি.জে স্যারের কাছে কম গালি খাই নি। গালি দিতে দিতেই স্যার আমাদের আপন মানুষ হয়ে গেলেন।

পড়াশোনায় আবার কেউ কাউকে ছাড় দিতাম না, কম্পিটিশন চলত। এই ক্ষেত্রে তিনজন একে অন্যের শত্রু। টপার হওয়ার জন্য সে কি লড়াই! একদিকে,প্রথম তিন স্থান আমাদের তিনজনের দখলে থাকত, অপরদিকে তিনজনের মধ্যে গোপন লড়াই চলত টপার হওয়ার। কি যে সুন্দর ছিল সেসব দিন!
দিগন্ত, রায়হান দুজনের পরিবারের মানুষের সাথে পরিচিত হলাম। ওদের পরিবার দেখে, বাড়ি যাওয়ার জন্য আমার মন উতলা হয়ে থাকতো, কিন্তু শহরে আসার সময় আম্মা বারবার বলে দিয়েছে আমি যেন ভুলেও আর বাড়িমুখী না হই। চোখের সামনে পেলে বাবা হয়তো মেরে ফেলতেও দুবার ভাববে না; কারণ নেশা করতে করতে সে মানসিক রোগীর মতো হয়ে গিয়েছে।

দেখতে দেখতে সেকেন্ড ইয়ারের ফাইনাল হলো। শূন্যহাতে এ শহরে এসে দুটো বেস্টফ্রেন্ড তো পেলাম, সাথে পেলাম ভাইরূপী দুই গার্ডিয়ান। নিজেকে আমার খুব একটা ভালো লাগে না, তবে সবার ভাষ্যমতে আমি দেখতে মাশ-আল্লাহ। একবার, হোস্টেলের পাশে আড্ডা দেওয়া কয়েকটা খারাপ ছেলে আমার পেছনে আঠার মতো লেগেছিল। সে কথা আমার দুই ব্রাদার শোনার পর খুব টাইট দিল। তারপর থেকে আগলে রাখত আমায়, সাধ্যের মধ্যে কারো কুনজরে পড়া থেকে বাঁচাতো। এদিকে, আমি পাজি, সুন্দর দেখে দুটো জুনিয়র মেয়েকে ওদের পিছে লাগিয়ে দিয়েছিলাম। চেষ্টা করেছিলাম ওদের জীবনে কাউকে আনার, কিন্তু হায়! বুড়ো দুটো কোনো মেয়ের দিকে ঘুরেও তাকায় না; হোক সে রূপবতী, গুণবতী। ❞

এতোক্ষন পড়তে ভালো লাগলেও এ পর্যায়ে এসে বেলার মন বিষিয়ে উঠল। কোনো মেয়ে দিগন্তের এটেনশন পাওয়ার চেষ্টা করেছিল ভাবতেই বুকের ভেতর কোথায় যেন জ্বলে উঠল। এহেন কাজের জন্য মনার উপরেও রাগ জমলো বেলার। ফোঁস করে শ্বাস ফেলে পরের লেখাগুলো পড়তে শুরু করল।

❝ ওদের এতো সাপোর্টিভ মাইন্ড দেখে, মাঝে মাঝে অবাক না হয়ে পারতাম না। আমাদের ফ্রেন্ডশিপের স্নিগ্ধ বন্ধন এতোটাই দৃঢ় যে, আমাকে নিয়ে ওদের মনোভাবের একবিন্দু পরিবর্তন ঘটেনি কখনো। কিউরিসিটিতে একবার তো প্রশ্ন করে বসেছিলাম, ‘ভার্সিটির কত ছেলে আমার উপর ক্রাশ খায় ; তোদের হাল-চাল এরকম হবে না তো?’
ব্যস, আমার প্রশ্ন আমার উপরেই ভারী পড়ল। মনে হলো আমি জোকারি করেছি। বেয়াদব দুটো হে হে করে হাসতে হাসতে আমার দুগালে ঠাস ঠাস করে মেরে দিল। আমিও রেগে গিয়ে তাতক্ষনাৎ দুটোর পায়ে জোরে জোরে লাথি মারলাম। অতঃপর নিজেই খেয়াল করলাম, আমার আচার-আচরণ এখন ছেলেদের থেকে কম নয়। কথাও বলি উচ্চশব্দে। দুই ফাতরা মিলে সাদাসিধা মনাকে ওদের মতো ফাতরা মনা বানিয়ে দিয়েছে। সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে কথাটা একেবারে খাপে খাপ। আমার বেশ-ভূষা শুধু মেয়েদের মতো। বাকি চাল-চলন ছেলেদের থেকেও বেশি উচ্ছন্ন যাওয়া। ঠিক এই কারণেই, দিগন্ত, রায়হানের ছয় বছরের ফ্রেন্ডশিপের মাঝে এসে আমিও জড়িয়ে পড়েছি। আমাদের তিনজনের বন্ডিং দেখে কেউ ঈর্ষান্বিত হতো ; কেউ-বা মুগ্ধ হতো।

বোকাসোকা গেয়ো আমিটা ওদের সাথে থেকে থেকে দুষ্টুমিতে পাক্কা হলাম। টিউশনি আর পড়াশোনার সময় বাদে বাকি সময় চলত তিনজনের আড্ডা, হাসি-তামাশা আর একজন আরেকজনের লেগ পুল করা। স্পেশালি রায়হানের; যখন জানতে পারলাম আমাদের ছোট দিশাকে ও পছন্দ করে। ❞
‘ কিহ? ’ বলে চিৎকার করতে গিয়েও হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরল বেলা। চোখ বড় বড় করে লাইনটা আবারো পড়লো, রায়হান দিশাকে পছন্দ করে। সরু চোখে একবার দিগন্তের দিকে তাকালো বেলা। মুখ নিশপিশ করছে কত কিছু জানার জন্য। কিন্তু দিগন্তের ঘুম ভাঙ্গাবে না। মনকে স্থির করে হালকা একটু নড়ে সোজা হয়ে বসল। চোখ ফেললো পরবর্তী পেইজের উপর।

« মার্চ ২২, ২০১৯ »
❝ মাঝে মাঝেই একটু আধটু গান করতাম গুনগুনিয়ে। আমার গানের গলা বেশ ভালো। সেকেন্ড ইয়ারে থাকাকালীন দিগন্ত আর রায়হান আমাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছিল। ভার্সিটিতে বিরাট এক গানের প্রতিযোগিতা ছিল, সেখানে হারামি দুটা আমার নাম দিয়ে দিয়েছে, না জানিয়ে। আমি প্রস্তুত ছিলাম না, সেভাবেই ওদের দুজনের মান-সম্মান বাঁচাতে এতো মানুষের সামনে গান গাইতে হলো। ব্যস, তারপর থেকে আমার গানের ক্যারিয়ার শুরু হলো। গানের সাথে নতুন পরিচিতি গড়তে শুরু করলাম। যেকোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গানের জন্য আমাকে থাকতেই হতো। পি.জে স্যার না শুনবে না।

তখন আমরা থার্ড ইয়ারের স্টুডেন্ট। সেবার দিগন্ত ওর গ্রামের বাড়ি গিয়েছিল। আমি আর রায়হান ক্যাম্পাসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। কিছুক্ষন পর ক্লাস শুরু হবে। এমন সময় ক্যাম্পাসের একপাশে একদল ছেলের মধ্যমনি একটা ছেলে গিটার হাতে গান ধরল। গান শুনতে সবাই ওদের কাছে এসে ভীর জমালো। তাই ছেলেটার মুখ দেখতে পেলাম না। না দেখেই তার গানের আওয়াজ আমাকে এতো টানলো, আমি ওকে একপলক দেখার জন্য ছটফটালাম। ভীর ঠেলে ভেতরে যেতেই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সর্বনাশ ঘটলো। শুধু গানে নয়, পুরো ছেলেটার প্রতিই আমি দূর্বল হলাম। দিনে দিনে সে দূর্বলতা বাড়লো।

এদিকে, আমি যে এক দেখায় একটা ছেলেকে ভালোবেসে ফেলেছি সেটা আমি ছাড়া আর কোনো কাক-পক্ষীও টের পায়নি। দিগন্ত-রায়হানকেও জানাইনি। ভেতরে ভেতরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম সে ম্যাথমেটিক্যাল ডিপার্টমেন্টের, থার্ড ইয়ারের স্টুডেন্ট। ট্রান্সফার করিয়ে সবে থার্ড ইয়ারে এসেছে। আমার একটু আফসোস হলো, ও আমাদের সাথে ইংলিশ ডিপার্টমেন্টের হলেও পারতো! আরো জানলাম, সে পি.জে স্যারের ভাতিজা ও পুলিশ কমিশনারের ছোট ছেলে ফাহাদ দেওয়ান। ❞

দিগন্তবেলার প্রেমান্দোলন পর্ব ৫০

পড়তে পড়তে মাথা চক্কর দিচ্ছে বেলার। একদিনে এতো সব জানতে পারছে যা কখনো ওর ধারণায় ছিল না। পরিচত সব মানুষের মাঝে কত কি লুকিয়ে আছে, তা এক এক করে জানছে আর অবাক হচ্ছে।

দিগন্তবেলার প্রেমান্দোলন পর্ব ৫০ (৩)