দিগন্তবেলার প্রেমান্দোলন পর্ব ৫৫ (২)

দিগন্তবেলার প্রেমান্দোলন পর্ব ৫৫ (২)
আফরোজা আশা

কফিশপে বিশদ এক আলোচনা সেরে দিশাকে নিয়ে বাড়ি ফিরল দিগন্ত। ঘরে পা রাখতেই দেখা মিলল গাল ফুলিয়ে রাখা এক রমণীর। দরজায় হেলান দিয়ে তার করা কাণ্ডকারখানা দেখতে লাগল।
ড্রেসিং টেবিলের সামনে চিরুনি করছিল বেলা। দিগন্ত এসেছে আভাস পেয়ে জোরে শব্দ তুলে হাতের চিরুনিটা টেবিলের উপরে রাখল। গটগট পায়ে গিয়ে বসল পড়ার টেবিলে। অনবরত খসখস শব্দে বইয়ের পাতা উল্টাতে লাগল।
এক আঙুল দিয়ে ভ্রঁ চুলকাল দিগন্ত। বাপের বাড়ি যেতে দেয়নি বলে এতো রাগ বেলার। হেঁটে এসে ওর পেছনে দাঁড়িয়ে গলা খাকড়ি দিল। তাতেও বিশেষ লাভ হলো না। বেলা নিঃশব্দে বইয়ের দিকে চেয়ে আছে। দিগন্ত বলল,

‘ গোসল করব। টাওয়ালটা এনে দে। ’
বই পড়ায় মেকি মনযোগ রেখে ত্যাড়া জবাব দিল বেলা,
‘ বাপের বাড়িতে সবাই জমিদার। ’
-‘ এরকম করিস না সোনা। খিদে পেয়েছে। ’
-‘ মানুষের বাপের বাড়ির ডায়নিং টেবিলে হরেক রকমের খাবার আছে। ’
-‘ এতো রাগ দেখাচ্ছিস কেনো? ’
-‘ রাগ তো আর বাপের বাড়ি থেকে কিনে আনতে হয় না। ফ্রিতেই আসে, ভেতর থেকে। ’
-‘ মনে হয় তোরো খিদের চোটে মাথা খারাপ হয়েছে। দুপুরের খাবার খাসনি? ’
-‘ মানুষের বাপের বাড়িতে মানুষকে রেখে খাওয়া যায় না। মুরুব্বি দাদী-শাশুড়ির মানা আছে। ’
চোখমুখ কুঁচকে নিল দিগন্ত। লাইনে লাইনে বাপের বাড়ি তুলে আচ্ছামতো খোঁটা দিচ্ছে মেয়েটা। কি এক বেকায়দায় পড়েছে সে। অভিমানী বেলার উদ্দেশ্যে বলল,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

‘ যেতেই হবে ওবাড়ি? ’
ছলছল নেত্রে দিগন্তের দিকে তাকাল বেলা। হুট করে এক পরিবেশ ছেড়ে আরেক পরিবেশে মানিয়ে নেওয়া এতোটা সহজ নয়। তবুও চেনা মানুষজন বলে অনেকটা মানিয়ে নিয়েছে বেলা। কিন্তু ইদানিং আর মন টিকছে না। দিগন্ত যতটা সময় বাড়িতে থাকে ততক্ষন ঠিক থাকে কিন্তু সে বাইরে গেলে ফাপড়ে উঠে ভেতরটা।
ওবাড়ির মানুষগুলোর কথা খুব পড়ে। তখন আর কিছুতেই এখানে ভালো লাগে ওর। অস্বাভাবিক কিছু নয়। নতুন একটা বাড়িতে এসে মানিয়ে নিতে একটু সময় লাগবেই। হোক না সেটা চেনা জানা মানুষ। বেড়ে ওঠা বাড়িঘরের মায়া ছাড়া কি এতোই সহজ!
বেলা ভেজা গলায় আওড়াল,

‘ মন টিকছে না। আপনি বুঝতে পারছেন না কেনো? ’
ফোঁস করে দম ছাড়ে দিগন্ত। বেলার অশ্রুসিক্ত নয়নের দিকে চেয়ে ভার গলায় বলে,
‘ বিকেলে দিয়ে আসব। ’
-‘ আমি কয়েকদিন থাকবো। ’
-‘ আচ্ছা। ’ বলে চলে যাচ্ছিল দিগন্ত। বেলা ওর হাত ধরে আটকাল,
‘ আপনিও থাকবেন। ’
বেলার হাত থেকে হাত ছাড়িয়ে নিল দিগন্ত। ওয়াশরুমের দিকে হাঁটা ধরে গমগমে গলায় বলল,
‘ তোর বাপ আমাকে একবারো যেতে বলেছে? মেয়ে নিয়ে অহংকারে বাঁচেন না তিনি। আমারো দিন আসবে। কোনোদিন একদিন আমার মেয়েসহ আমি দেখিয়ে দিবো মেয়ের বাবা কেমন হতে হয়। ’
ভাবুক স্বরে আওড়াল বেলা,
‘ মেয়ে-ই হবে এতো শিয়র কিভাবে বলছেন। যদি মেয়ে না হয়? ’
দরজার কাছে গিয়ে পা থামল দিগন্তের। বাঁকা চোখে বেলার দিকে চেয়ে বলল,
‘ তবে তোর রেহাই নেই। ’
-‘ কেনো? ’
বাঁকা হেসে ঘাড়ে হাত ডলে দরজা লাগিয়ে দিল দিগন্ত। জবাব দেওয়ার প্রয়োজনবোধ করল না আর।

অন্ধকার রজনী। ঘরময় পায়চারী করছে এক রমণী। জীবনটা তার কেমন অগোছালো হয়ে গিয়েছে। দু’দিন হলো পাটোয়ারী বাড়ি এসেছে বেলা। প্রথমদিনটা হাসি আনন্দে কাটলেও, আজ সারাদিন দিগন্তের জন্য ছটফটাচ্ছে। ওবাড়িতে থাকলে এবাড়ির জন্য মন কাঁদে। এবাড়িতে থাকলে ওবাড়ির জন্য মন কাঁদে। দোনোমোনো বেলা এবার হাত পা মেলে সটান হয়ে শুয়ে পড়ল। মাথা ধরে গেছে ইতোঃমধ্যে।
কিয়ৎকাল পর তেলের বোতল হাতে ছুটল মায়ের ঘরে। ভেতরে পা রাখতেই দেখল সেখানে সিরিয়াল বসেছে। বিছানায় বসে বাণীর মাথায় তেল দিচ্ছে আমেনা। তারপাশে রিনা বৃষ্টিকে তেল দিয়ে দিচ্ছে। বিক্ষুব্ধ চিত্ত্বে দুবোনকে দেখল বেলা। পরপরই মিইয়ে গেল। তার মতো বুঝি তার বোনেরাও জামাইয়ের কথা ভেবে মাথাব্যাথা উঠিয়েছে।
বাণী বলল, ‘ দাঁড়িয়ে আছিস কেন? পাশে বস। ’

‘ একটু পরে আসছি। ’ বলে বাইরে চলে এলো বেলা। বিরস মুখে পা বাড়াল বসার ঘরের দিকে। রহমান পাটোয়ারী চেয়ারে বসে খবর দেখছিল টিভিতে। তার কোলের ওপর তেলের বোতলখানা রেখে নিচে পা মুড়িয়ে বসল বেলা। বিরস গলায় আওড়াল,
‘ মাথাব্যাথা করছে। ’
রহমান পাটোয়ারী আড়চোখে দেখলেন তার ছোট কন্যাকে। বিয়ের পর থেকে খুব প্রয়োজন ব্যতিত কথা বলেননি বেলার সাথে। দুদিন যাবৎ বেলা আশপাশ ঘুরেছে কথা বলার তালে কিন্তু হা হু ছাড়া খোশমনে কথা বলেননি।
হাতে রাখা রিমোটটা পাশে রেখে তেলের বোতলটা নিলেন তিনি। বলা বাহুল্য, হুটহাট মেয়েদের প্রতি এটুকু আহ্লাদ তার বহু পূর্বের। অভিজ্ঞ হাতে আস্তেধীরে বেলার মাথায় তেল দিয়ে দিতে দিতে মুখ খুললেন রহমান পাটোয়ারী,

‘ পড়াশোনা করতে পারছেন? ’
তার কথা শুনে মূর্ছা যাওয়া বেলার ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি ফুটল। নড়চড়ে উঠে বলল,
‘ হ্যাঁ। ভোরে ডেকে দেয়। দু’ঘণ্টা পড়ে খেয়েদেয়ে কলেজ যাই। দুপুরে কিছুক্ষন পড়ি আর রাতে যতক্ষণ ঘুম না ধরে ততক্ষন পড়ি। ’
-‘ টিউশন টিচার লাগবে না? ’
-‘ না। কোথাও আটকে গেলে উনি রাতে বুঝিয়ে দেয়। ‘
-‘ পারে? ’
-‘ হুমউউ। ’
-‘ বোরকা কবে থেকে ধরলেন? ’
-‘ বিয়ের দিন বলেছিল আমি বোরকা ধরলে উনি সিগারেট ছাড়বেন। ‘
-‘ ছেড়েছে? ‘
-‘ হ্যাঁ। তারপর থেকে তো দেখিনি। আর বাজে দূগন্ধও পাই না। ’
মেয়ের কথা শুনে ভেতরে ভেতরে কিছুটা স্বত্তি পেলেন রহমান সাহেব। তেল দেওয়া শেষে বেলার পিঠ সমান চুলগুলোতে বেণুনী গাঁথতে গাঁথতে শুধালেন,

‘ রাগারাগি হলে গায়ে হাত তুলে? ’
এতোদিন বাদে মন খুলে আব্বুর সাথে কথা বলতে পেরে খুশিতে আত্মহারা বেলা। সানন্দে জবাব দিল,
‘ না। তেমন তো রাগারাগি বা ঝগড়া-ঝামেলা হয়নি। কিন্তু আমি অনেক ভুলভাল কাজ করেছি। তাতে রাগ করেনি কখনো। ’
অতঃপর চঞ্চলে বেলা গল্পের ঝুরি খুলে বসল। সেদিন করা দই-চুনের ঘটনা থেকে এবাড়িতে আসা অব্দি তার করা কাজগুলো খুব সাবলীলভাবে বাবার কাছে বলতে লাগল। রহমান পাটোয়ারী যেন এই সুযোগেই ছিল। পূর্ণদৃষ্টি মেলে মেয়ের চোখমুখের জৌলস আর চাঞ্চল্য ভাবটা অবলোকন করছে। মনে রাখা অজানা ভীতিটাও কাটল অচিরেই। দিগন্তের প্রতি থাকা চাপা ক্ষোভটা কিছুটা লাঘব হলো হয়তো। ভালো আছে তার মেয়ে কথাটা ভেবে আলতো হাসলেন তিনি। নিরবে শ্রবণ করলেন হাত নাড়িয়ে কথা বলা তার ছোট কন্যার বুলিগুলো।

গভীর রাত। বিছানায় শুয়ে এপাশ-ওপাশ করছে দিগন্ত। মেজাজ তার বেজায় চটে আছে। এই সময়টাতে তার ওপর এতো পেরেশানি যাচ্ছে। আর মেয়েটা গিয়ে বাপের বাড়ি বসে আছে। দলের সব কাজের ইতি টেনে আজ অনেক রাত করে বাড়ি ফিরেছে সে। কাল থেকে বিশাল যুদ্ধে নামবে। আজ রাতটা একটু শান্তিতে না ঘুমালেই নয়। অথচ তার দুচোখের পাতায় ঘুম ধরা দিচ্ছে না। ঘরময় ফাঁকা ফাঁকা আভাসটা কিছুতেই শান্তি দিচ্ছে না।
ঝট করে উঠে বসল দিগন্ত। অন্ধকারে হাত বাড়াল সাইড টেবিলের দিকে। অভ্যাস মতো হাত বাড়াল ঠিক কিন্তু যা নেওয়ার উদ্দেশ্যে হাত বাড়িয়েছে তা নেই। বেলা না থাকায় সিগারেট টানা নেশাটা ভালোই মাথা চাড়া দিয়েছে এই মুহূর্তে।

বাড়ানো হাত গুটিয়ে চুল টেনে ধরল দিগন্ত। ফোনে সময় দেখল রাত তিনটা বাজে। ঘুমিয়ে আছে নিশ্চয়ই। বাপের বাড়িতে বেলার আরামের ঘুমে আর ডিস্টার্ব দিল না সে। সোজা বাপকেই ফোন লাগাল।
ফোনের ক্যাড় ক্যাড়ে রিংটোনে রহমান পাটোয়ারীর ঘুম ভাঙলো। পাশে গভীর ঘুমে তলিয়ে থাকা স্ত্রীর ঘুম নষ্ট না হয় তাই তড়িঘড়ি করে ফোন কাটলেন। অতঃপর আস্তেধীরে ফোন হাতে বাইরে বের হলেন।
এদিকে মুখের ওপরে ফোন কেটে দেওয়ায় থমথমে মুখে বসে আছে দিগন্ত। মিনিট খানেক বাদে সে নাম্বার থেকে ফোন এলে রাগান্বিত চোখজোড়া তার উজ্জ্বল হলো। ঝটপট রিসিভ করে টেনে সালাম দিল।
দিগন্তের হঠাৎ কাজে ভড়কালো রহমান সাহেব। নিজেকে ধাতস্থ করে গমগমে গলায় বলল,

‘ এটা ফোন দেওয়ার সময়? ’
ক্রুর হাসল দিগন্ত।
‘ সারাদিনের ব্যস্ততা ফুরালো এখন। সময় দেখে জামাই-শ্বশুড় সম্পর্ক মাপা যায় না পাটোয়ারী সাহেব। বউ আমার আপনার বাড়িতে। এসময় শ্বশুড়ের একটু খোঁজ-খবর না নিলে ব্যাপারটা খারাপ দেখায়। ’
তাচ্ছিল্য ভরা গলায় আওড়াল রহমান পাটোয়ারী,
‘ এসব বলার জন্য ফোন দিয়েছেন। ’
-‘ আপনার শরীর স্বাস্থ্য ভালো, শ্বশুড় আব্বাজান? ’
-‘ ভালো না থাকার কারণ আছে কি? ’
রহমান পাটোয়ারীর দাপটিপনা কথা ক্ষিপ্ত হলো দিগন্ত। ললাটে ভাজ ফেলে আওড়াল,

‘ বাকি দু’জামাইয়ের সাথেও এভাবে কথা বলেন? ’
-‘ তারা অসময়ে ফোন দেয় না। ’
-‘ শ্বশুড়ের মনে বিশেষ জায়গা করার জন্য দিগন্ত তালুকদার অসময়েই এট্রি দেয়। ’
-‘ আর কিছু বলবেন? ’
-‘ মণি নিশ্চয়ই এতোক্ষনে কথাটা আপনার কানে তুলেছে। ’
এ পর্যায়ে দমে গেল রহমান। গলা খাকড়ি দিয়ে অজানা ভান ধরে বলল,
‘ কোন কথা? ’
দিগন্তের অধরকোণে বাঁকা হাসির রেখা দেখা দিল। বেড সাইডে হেলান দিয়ে গম্ভীর গলায় আওড়াল,
‘ কাল থেকে অফিসে বসছি। ’

রহমান পাটোয়ারীর কঠোর মুখাবয়ব নমনীয় হলো। বেশ স্বাভাবিক স্বরে বলল,
‘ হঠাৎ এতো সুবুদ্ধি! তোমার বাবার সাথে তোমার দ্বন্দ্বের তো শেষ নেই। ’
-‘ তবে বলছেন যাবো না? ’
-‘ তোমাদের পারিবারিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কোনো ইচ্ছে নেই আমার। তবে যদি ন্যায়ভাবে চলতে পারো অবশ্যই যাবে। দুদিনের জন্য বেড়াতে যেও না যেন। যা কাজ করবে শক্ত হাতে করতেই থাকবে। ’
শুনল দিগন্ত। শান্ত গলায় প্রশ্ন ছুঁড়ল,
‘ এবার নিশ্চয়ই আপনার আশানুরূপ জামাতা হতে পারছি? ’
-‘ যত যা চেষ্টা করো ছোট মেয়ের স্বামী পর্যন্তই তোমাকে চিনবো।রাখছি। ’
রহমান পাটোয়ারীর বাঁকা কথা শুনে ফোনটা শক্ত করে চেপে রাখল দিগন্ত। মানুষের সামনে ভদ্রলোক নামে পরিচিত রহমান পাটোয়ারী আর দিগন্ত তালুকদারের মাঝে যে নিরব রেষারেষি চলে তা কেবল তারা দুজন ছাড়া আর কেউ জানে না।

কলেজ শেষে জীপ নিয়ে অপেক্ষারত পুরুষটাকে দেখে মুখের হাসি চওড়া হলো বেলার। রাইমার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে দ্রুতপদে জীপের কাছে এলো সে। মিনিট পাঁচেক সময় নিয়ে গোল গোল চোখে চেয়ে দেখেল ফর্মাল গেট আপে থাকা লোকটাকে। সুদর্শন পুরুষটার আপাদমস্তক চোখ বুলিয়ে একচোপট মাথা ঘুরালো তার। অবাক গলায় বলল,
‘ এতো সেজেগুজে কোথায় যাচ্ছেন? ’
-‘ বিয়ে করতে। ’
মুখ বেঁকিয়ে নিল বেলা। জীপে বসে ত্যাড়া গলায় বলল,
‘ এক বেলা পাটোয়ারীর বাপকে পটাতেই এখনো নাকানিচুবানি খাচ্ছেন শুনলাম। ’
দিগন্তের কাটা ঘায়ে যেন নুনের ছিঁটা পড়ল। স্টিয়ারিং এ হাত চালিয়ে চোখ রাঙানি দিল বেলাকে। খিলখিলিয়ে হাসল বেলা।পরক্ষণেই ভার মুখে বলল,

‘ অফিসে যাচ্ছেন একবারো জানালেন না আমাকে। ’
গাড়ি চালাতে ব্যস্ত দিগন্ত প্রতিত্তর করল,
‘ আমার পাশে থাকলে জানাতাম। ’
নাকমুখ কুঁচকে নিল বেলা। অন্যপাশে ঘাড় ফিরিয়ে গমগমে স্বরে আওড়াল,
‘ প্রতিশোধ তুলছেন ভালো কথা। আমিও ওবাড়িতে দেরী করে যাবো। ’
সহসা বেলার পাশের ব্যক্তি ফুঁসে উঠল। চোয়াল শক্ত করে হিসহিসিয়ে আওড়াল,
‘ আমার কাউকে লাগবে না। থাক তুই তোর বাপের বাড়িতে। যতদিন ইচ্ছা থাক। ‘
-‘ থাকবোই তো। আপনি আমার সাথে ঠিকভাবে কথাও বলেন নি কদিন থেকে৷ রাগ করেছি আমি। যাবো না আপনার কাছে। ’

দিগন্তবেলার প্রেমান্দোলন পর্ব ৫৫

-‘ বাপের কোলে চড়ে থাক। নাদানের বাচ্চা! ’
লটকানো মুখে দিগন্তের দিকে তাকালো বেলা। ঠোঁট উল্টে বলল,
‘ আপনার কোলে নিতে কি সমস্যা? ’
কোণা চোখে বেলাকে দেখলো দিগন্ত। থমথম কণ্ঠে আওড়াল,
‘ ছোট মেয়েলোককে দিগন্ত তালুকদার কোলে নেয় না। ’
সহসা নিজের সীট ছেড়ে দিগন্তের গা ঘেঁষে বসল বেলা। হকচকালো দিগন্ত। গাড়িতে ব্রেক টেনে সরু চোখে বেলাকে দেখল। দিগন্তের সে চাউনি দেখে বিগলিত হাসল বেলা। পুরুষালি শক্তপোক্ত বাহু দুহাতে পেঁচিয়ে ধরে আমোদিত কণ্ঠে আওড়াল,
‘ সেবেলা তো আমি কবেই বড় হয়েছি। আপনি টের পাননি। ’

দিগন্তবেলার প্রেমান্দোলন পর্ব ৫৬

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here