দীঘির জলে কার ছায়া পর্ব ৪

দীঘির জলে কার ছায়া পর্ব ৪
অবন্তিকা তৃপ্তি

আশার হাতে টাকার ব্যাগটা শক্ত করে ধরে রাখা। সে এই মুহূর্তে একটা পরিচিত সোনার দোকান থেকে গলার চেইন বিক্রি করে সবে ১৫ হাজার টাকা ফেরত পেয়েছে। বাকি থাকে আরও ৫ হাজার, সেটুকুও এখনও জোগাড় হয়নি। চোখেমুখে অন্ধকার দেখছে আশা।কী করবে? কোথা থেকে জোগাড় করবে টাকাগুলো? ভেবেছে নিধিকে জিজ্ঞেস করবে। পরপর মনে হলো- নিধির কাছে যেটুকু টাকা জমা ছিল সেটা সেদিন পাত্রপক্ষ আসায় তাদের আপ্যায়নে খরচ করে ফেলা হয়েছে।

হঠাৎ করেই মনেমনে আশা অযথাই চূড়ান্ত বিরক্ত হলো অনিরূপের উপর। ওই অভদ্র লোকটা যেদিন থেকে আশার জীবনে এসেছে, সেদিন থেকে যেন দুর্ঘটনা আশার জীবন থেকে যাচ্ছেই না। অভি শা প হয়ে এসেছলো সে আশার এই সাধারণ-সরল জীবনে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

আশা ঠিক সঠিক ভেবেছিলো। হয়তো সেদিন আশা বুঝেনি, তার মনেমনে বিরক্ত-রাগ নিয়ে যেই অনিরূপকে ‘অভি শা প’ বলে আখ্যায়িত করেছিল, বাস্তবে সত্যি সত্যিই সে একটা কাল-অভিশা প হয়ে এসেছিল আশার জীবনে। অনিরূপ বলে না আশাকে, পোউর আশা? জীবন গল্পে আশাকে যতটা প্রতিবাদী করেছে, কঠোর নারী বানিয়েছে- বাস্তবতার একটাপর্যায়ে সেই একই আশা অনিরূপের ভাষ্যমতে সত্যিকারের ‘পোউর আশা’ বানিয়ে ফেলবে, সেটা কেইবা জানত? কেউই না, তেমন গল্পের আশাও জানেনি।

আশা মনেমনে জীবনের মোড় সম্পর্কে ভাবতে ভাবতে ফুটপাথ ধরে হাঁটছিল। টাকার ব্যাগ এখনও হাতে শক্ত করে চেপে রাখা। মনেমনে কিছুটা ভয়ে আছে আশা। মেয়ে মানুষ, এতগুলো টাকা নিয়ে রাস্তায় বেরিয়েছে। কখন কোন অঘটন ঘটে যায়-বলা মুশকিল।
আশা আশপাশ দেখে, এই গলিটা পেরিয়ে একটু হাঁটলেই থানা মিলবে। আশা তাই দ্রুত হাঁটা ধরে। কোনোমতে নিরব এই গলিটুকু পাড় করলেই বাঁচে।

গলির মুখটা পেরুনোর আগেই হঠাৎ আশার সামনে তিনটা মোটরবাইক এসে ঘিরে ধরে। আশার পথ রোধ করে দাঁড়ায় মোটরবাইক দিয়ে। আশার মুখটা সঙ্গেসঙ্গে ফ্যাকাশে হয়ে যায়। টাকার ব্যাগটা বোরকার ওড়নার নিচে লুকিয়ে মোটর-বাইক পাশ কাটিয়ে যেতে চাইলে একটা হেলমেট পরা ছেলে মোটরবাইক থেকে নেমে আশার পথ আটকে দাঁড়ায়। আশা থমকে যায়। এমন পরিস্থিতিতে আশা কখনো পড়েনি। তাই জানে না সে, কিভাবে এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়। আশা নিজের ভেতরের ভয়টুকু সেই ছেলেগুলোর সামনে প্রকাশ করতে চায়নি, তাই কণ্ঠে যথাযথ সাহস ঢেলে কঠোর কণ্ঠে বলে-‘এসব কী হচ্ছে? পথ ছাড়ুন আমার। আমি কিন্তু লোক ডাকব।’

একটা হেলমেট পরা ছেলে আশাকে আপাদমস্তক দেখে, ক্রূড় হেসে বললো-‘লোক ডাকবে? ডাকো, বাঁচাও বাঁচাও বলো। হিরোইন-এটা বাংলা সিনেমা নয়, যে ডাকলেই তোমার নায়ক চলে আসবে। এটা বাস্তব, এন্ড বাস্তবে আমরাই নায়ক,আর কোন নায়ক আসবে না আমাদের রুখতে।ভালোই ভালোই বলছি, সাথে যা যা আছে চুপচাপ দাও, আমি গায়ে হাত তুলতে চাইনা, কিন্তু যদি উল্টোপাল্টা করেন—‘

কথাটা বলে আশার দিকে দু কদম এগিয়ে আসে হেলমেটধারী ছেলেটা। আশা ভয়ে নিজের বোরকা চেপে ধরে ছেলেটার দিকে শক্ত মুখে চায়। মুখ দেখা যাচ্ছে না এদের কারোরই, সবার মুখে কালো হেলমেট পড়া।
আশা মনেমনে পালানোর পথ খুঁজছে।একটা লম্বা-উঁচু ছেলেআশার কাছে ঘনিষ্ঠ হয়ে ফিসফিস করে বললো-‘আপনের গা বোরকার আড়ালে কেমন আন্দাজ করেই লোম দাঁড়িয়ে যাচ্ছে- স্যার এটাকে কী দেখে-‘
সঙ্গেসঙ্গে পাশ থেকে আরেকটা ছেলে ওই ছেলেটার হেলমেটে নিজের হাতের ছু ড়ি ঘষে, ছেলেটা আশার থেকে চোখ সরিয়ে ওই ছেলেটার দিকে রাগ নিয়ে তাকায়। দুটো ছেলের চোখে চোখে কথা হয়, একজন অপরজনকে চোখের ইশারায় শাসায়। এদের এসব কিছু আশার আবছা লাগছে ভীষণ? স্যার- কে স্যার?

দুটো ছেলের চোখে-চোখে সাবধান বাণী সময়টা আশা কাজে লাগায়। টাকার ব্যাগ শক্ত করে চেপে এক দৌঁড়ে ছেলেদের মাঝখানে কোণা দিয়ে বেরিয়ে ছুটতে গেলেও, একটা ছেলে সঙ্গেসঙ্গে আশার বোরকার ওড়না টেনে ধরে আশার মুখে রুমাল চেপে ধরে। আশা কিছুসময় ধস্তাধস্তি করে একটাপর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ছেলের গায়ে লুটিয়ে পড়ে। ছেলেগুলো আশাকে মাটিতে আলগোছে শুইয়ে টাকার ব্যাগটা আশার ওড়নার নীচ থেকে হাতে নেই, তারপর কল লাগায় কাউকে-:

‘স্যার,টাকা পাইসি।’
‘ওর অবস্থা কী?’
‘ম্যাম বেহুঁশ হয়ে গেছেন।’
‘হাসপাতালে আনো, আমি হাসপাতালেই আছি।’
‘ওকে স্যার। স্যার টাকাগুলো?’
‘নজর দিবে না ওই টাকায়, যত হাজার আছে পুরোপুরি আমার কাছে জমা চাই।’
‘ওকে স্যার। স্যার ম্যামকে কী মোটরবাইকে-‘
‘আমি গাড়ি পাঠাচ্ছি।’

কল কেটে ছেলেগুলো একে অপরের মুখের দিকে চায়। এই বোরকাওয়ালির মধ্যে দ্য গ্রেট অনিরূপ কী এমন দেখেছে কে জানে? তবে মেয়েটার মুখটুকু দেখা যাচ্ছে। শ্যামলা গড়নের, ছিমছাম চেহারা। শরীরে মেদ হয়তো তেমন নেই। অতটা সুন্দর না হলেই, চেহারায় কেমন যেন আকর্ষণ আছে একটা।
ছেলেগুলো একে অপরের মুখের দিকে চায়। একটা ছেলে তো বলেই ফেলল-‘কী রে- খাবি ওকে?’
সঙ্গেসঙ্গে ওপর পাশ থেকে আরেকটা ছেলে রেগে বলে-‘মরার শখ নাই আমার, মাইয়া আরো আছে। স্যারের মালে হাত দিলে-জাহান্নাম হয়ে যাবে জিন্দেগি। তোর নজর শুধরা, মনে নেই এর আগের কথাগুলো?’
‘আগের কথা কথাটা মাথায় আসতেই ছেলেটা শুধরে গেলো।ফাঁকা ঢোক গিলে আশার দিকে একবার চেয়েই সঙ্গেসঙ্গে চোখ সরিয়ে নিলো।

হাসপতালের একটা বেডে বেহুঁশ হয়ে পড়ে আছে আশা। আশার হাতের পালস্ ভ্রু কুঁচকে ভীষণ মনোযোগ দিয়ে দেখছে একটা লম্বা-চওড়া পুরুষ। পালস্ কিছুটা ধীর চলছে, কিন্তু আশঙ্কা নেই। যেমন ভেবেছে তেমনটাই হচ্ছে। ডাক্তার আশার অসুস্থ মুখের দিকে চেয়ে রইলো কিছুসময়, সেভাবেই গাঢ় চোখে চেয়ে পাশে থাকা নার্সকে বললো-‘জ্ঞান ফিরবে আর কিছুসময়ের মধ্যেই। পাগলামি করলে আমাকে সঙ্গেসঙ্গে ডাকবে।’
নার্স মাথা দুলাল-‘জ্বী স্যার।’

ডাক্তার বেরিয়ে গেলো। কথামতো আশার জ্ঞান ফিরল দশ মিনিটের মধ্যে। আশা চোখ খুলল ভীষণ কষ্টে। সারা গা অবশ লাগছে, মাথাটা ঝিম ধরে আছে। মনে হচ্ছে আশা কোন নেশা খেয়ে পরে আছে বেডে। আশা প্রথমে হা করে সিলিংয়ের দিকে কিছুসময় চেয়ে থাকল, কিছু বোধ হচ্ছে না আপাতত ওর। যেন একটা ঘোরে আছে। কিছুসময় পর সমস্ত নার্ভ কাজ করা শুরু করলো আশার। আপনা-আপনি আশা চমকে শোয়া থেকে উঠে বসলো। বেডের চারপাশে পাগলের মতো হাতড়ে দেখে বিড়বিড় করতে লাগলো -‘টাকা?আমার টাকা? আমার টাকা কোথায়?টা-‘

আশা রীতিমত পাগলের মতো নিজের আশপাশে টাকা খুঁজছে। নার্স আশাকে পাগলামি করতে দেখে দৌঁড়ে এসে আশাকে ধরলো দুহাতে। আশা নার্সকে জিজ্ঞেস করলো-‘আপনি আমার টাকার ব্যাগ দেখেছেন? একটা কালো রঙের ব্যাগ? আমার আব্বার টাকা ওগুলো, আব্বা জেলে, আমার টাকা-
নার্স আশাকে বেডে শোয়ানোর চেষ্টা করে বললো-‘ম্যাম, আপনি এখানে কোনো টাকা নিয়ে আসেননি। আপনি বেহুশ অবস্থায় এখানে এসেছেন।’

আশা থমকে যায়, তার সাথে কোনো টাকা ছিলো না? তাহলে ওই ছেলেগুলো? আশার টাকা ছিনতাই হয়ে গেছে? ওতগুলো টাকা? আশা পাথরের মতো নার্সের দিকে চেয়ে রইলো কিছুসময়, তারপর দুর্বল গলায় জিজ্ঞেস করলো- ‘আমাকে এখানে কে এনেছে?’
নার্স তাকে শিখিয়ে দেওয়া বুলি আওড়ালো-‘আমাদের ডিরেক্টর স্যার।উনি রাস্তায় আপনাকে বেহুঁশ দেখে এখানে নিয়ে এসেছেন। উনিই আজ আপনার চিকিৎসা করেছেন।’

আশা চুপচাপ বেডে হেলান দিয়ে বসে রইলো। কী বলবে বুঝতে পারছে না। ওই টাকাগুলো আশার সম্বল ছিল। এখন মরে গেলেও আশার ওকাদ নেই, এতগুলো টাকা একসঙ্গে জোগাড় করার। সত্তর হাজার টাকা জোগাড় করা মুখের কথা না। আশা কোথায় যাবে? বাড়িও বিক্রি করতে পারবে না। কারণ বাড়ি একা রহমান সাহবের না। আশাদের চাচার অংশ আছে বাড়িতে। চাচা কিছুতেই বাড়ি বিক্রি করতে দিবেন না। কী করবে আশা? আশা আশপাশ খুঁজে নিজের মোবাইল খুঁজলো। সেটাও পেল না। মোবাইলও নিয়ে গেছে ওই হা/রা/মজা/দাগুলো। রাগে আশার গা রি-রি করছে শুরু। ইচ্ছে করছে-হাসপাতালের সবকিছু ভেঙে তছনছ করে ফেলতে।
নার্স কিছুসময় শান্ত আশাকে দেখল, তারপর নরম গলায় বললো-‘আপনার খাবার রাখা আছে। খেয়ে নিবেন।খেয়ে ওষুধ নিতে হবে আপনার।’

আশা দূরে টেবিলের উপর ঢেকে রাখা খিচুড়ির প্লেট দেখে ছোট্ট করে শ্বাস ফেললো। তারপর নার্সের দিকে চেয়ে দুর্বল গলায় বললো-‘আমি আপনাদের ডিরেক্টর স্যারের সঙ্গে দেখা করতে চাই, যে আমাকে এখানে এনেছেন।’
নার্স মাথা দুলালো-‘আমি ডাকছি স্যারকে।’
নার্স চলে গেলো। আশা বেডে হেলান দিয়ে চুপচাপ সামনে তাকিয়ে রইলো। চোখগুলো তার শান্ত নদীর মতো স্থির, টলটলে।

একটুপর কেবিনের দরজায় টোকা পড়লো, একটা দুটো তারপর শেষ টোকা। আশা স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করে গায়ের হিজাব ঠিক করে বললো-‘আসুন।’
একজন সাদা এপ্রোন পড়া ডাক্তার ভেতরে ঢুকল। আশার সামনে থেকে নজর সরিয়ে লোকটার দিকে তাকালো। মুহূর্তেই চমকে গেলো ও। লোকটাকে চেনে আশা। ওর চোখদুটো বিস্ময়ে মোটা মোটা হয়ে গেল। নিজের অজ্ঞাতেই বিড়বিড় করলো আশা-‘অ নি রূপ-‘

অনিরুপ ক্রূর হাসল। এগিয়ে এসে আশার পাশে চেয়ারে বসে অবাক-বিস্মিত আশাকে চোখ ভরে দেখতে থাকলো। আশা ফাঁকা ঢোক গিলে। শুষ্ক ঠোঁট জিহ্বা দিয়ে ভিজিয়ে দুর্বল গলায় বললো-‘আপনি? আপনি আমাকে এখানে-‘
অনিরুপ হালকা হাসলো। চেয়ারে হেলান দিয়ে পা দুটো আরাম করে ছড়িয়ে দিয়ে বললো-‘হ্যাঁ, আমি এনেছি। তুমি বেহুঁশ পড়ে ছিলে রাস্তায়।’

আশা শুনে। তারপর হঠাৎ অনিরূপের দিকে চেয়ে একটা ছোট্ট হোপ পেয়ে বসে ও। চোখমুখে উচ্ছ্বাস নিয়ে বলে-‘আপনি আমার পাশে কোনো টাকার ব্যাগ দেখেছেন?একটা কালো রঙের ব্যাগ?’
অনিরুপ কিছুসময় আশার চোখে-মুখে লেগে থাকা খুশির দিকে চেয়ে থাকে, আশা কতটা উচ্ছ্বাস নিয়ে অনিরুপের দিকে চেয়ে আছে।

অনিরূপ কিছুসময় আশার দিকে চেয়ে তারপর- নজর লুকিয়ে জবাব দেয়-‘না, দেখিনি।’
আশা খুশিখুশি মুখে আবারও আঁধার নেমে আসে। অনিরুপ সবকিছুই দেখে। আশা আবারো চুপচাপ বসে থাকে। অনিরুপ আশাকে কিছুক্ষণ দেখে নিজেই কথা তুলে-‘আমাদের আবারো দেখা হলো। হোক বিচ্ছিরিভাবে, বাট দেখা তো হলো।’

আশা স্থির চোখে সামনে চেয়ে ম্লান গলায় জবাব দিলো-‘আমি চাইনি।’
‘আমি জানি তুমি চাওনি। বাট দেখা হয়েছে সেটা স্বীকার করতে হবে।’
আশা জবাব দিলো না। অনিরূপ কিছুসময় আশার দিকে চেয়ে রইল। তারপর একসময় প্রশ্ন করলো-‘আমার শহরে হঠাৎ কেন এলে? ছেড়েই তো এসেছিলাম তোমাকে তোমার ওই অজপাড়াগায়ে।’
অনিরূপ মিথ্যা বললো কী অবলীলায়।

আশা থামে। দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবারও চুপ হয়ে যায়। উত্তর দিলো না। অনিরুপ ধৈর্য্য ধরে, সময় দিল আশাকে। সে জানে- আশা যে সময়টা পাড় করছে, সেটা টাফ একটা সময়।
আশা অনেকটা সময় পর ধীর গলায় বলতে শুরু করে- রহমান সাহবের জেলে যাওয়ার কাহিনি, মোড়লের অন্যায়ভাবে মামলা সাজানো, নিজের বিয়ের টাকা, চেইন বিক্রি, সব টাকা ছিনতাই হওয়া-
পুরো ঘটনা আশা ধারাবাহিক বলে। এগুলো আশা অনিরূপকে কেন বললো, হয়তো আশা নিজেও জানে না। হয়তো আশা মনের মধ্যে অপরাধবোধ-আত্মগ্লানী দূর করতে চেয়েছিল। হয়তো আশা ভেবেছিল, টাকাগুলো ছিনতাই হওয়ার পেছনে ওর নিজের দায়িত্বহীনতাই দায়ী।

আশা সব বলে কিছুটাসময় থামে। তারপর অনিরুপের দিকে চেয়ে স্লান
গলায় বললো-‘এতগুলো টাকা, এতগুলো টাকা আমি হারিয়ে ফেললাম। এখন আমার দায়িত্বহীনতার মাসুল আব্বাকে দিতে হবে। ওরা জেল থেকে ছাড়বে না আব্বাকে। কী করবো আমি? কী করবো?’

দীঘির জলে কার ছায়া পর্ব ৩

আশা কথাটা বলে দুহাতে নিজের মুখ শক্ত করে চেপে জোরেজোরে শ্বাস ছাড়তে থাকে। আশা কাদতে চাইছে না, অথচ নিজেকে শান্তও রাখতে পারছে না। অনিরূপ আশার দিকে চেয়ে রইল। কনস্টেবলের কথাই ঠিক। আশা সত্যি সত্যি একদম ভেঙে পড়েছে। নিজেকে শান্ত করে রাখার অসম্ভব চেষ্টা করছে, কিম্তু মাঝেমধ্যেই অস্থির হয়ে যাচ্ছে।
অনিরুপ আশার অস্থিরতা বাজপাখির ন্যায় সূক্ষ নজরে দেখে। তারপর বেশ সময় নিয়ে বলে উঠে-‘
‘আমি তোমাকে সাহায্য করবো,আশা।’

দীঘির জলে কার ছায়া পর্ব ৫