ধূসর রংধনু পর্ব ১০
মাহিরা ইসলাম
**বাসন্তী করুণ চোখে তাকালো ভাইয়ের দিকে।
অভিমান মিশ্রিত কন্ঠে বলল,,
— “আমি কি একবারো তোকে বলেছি আমি ওই রাস্কেলটার সঙ্গে সংসার করতে চাই। আমি তো ওই জন্য কান্না করছি না ভাই।”
নিস্তব্ধ ক্ষেপাটে গলায় বলল,,
–“তাহলে কি জন্য কান্না করছিস তুই বল কি জন্য কান্না করছিস। কি এমন বলল তোকে ঘরে ডেকে।যে তোর একবারে তার জন্য দরদ উতলে পড়ছে। কি হলো বল।”
— “ওও ডাকে নি তো আমি ওকে ডেকেছিলাম। হাসিবের কিছু জিনিস ছিল আমার কাছে সেগুলোই দিতে।তুই কিন্তু আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করছিস ভাই।তোর এখন আমাকে একটু মাথায় হাত বুলিয়ে ভরসা দেওয়া উচিত। তানা তুই আমার উপর রাগ ঝাড়ছিস।”
অনিমা বেগম আর ওসমান শেখ তখন রুমে ঢুকলো নিলয় সাহেব বাসায় নেই। একটা কেসের তদারকিতে তাকে অন্য জেলায় যেতে হয়েছে।
অনিমা বেগম দরজা দিয়ে ঢুকতে ঢুকতে বললেন,,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
–“থামো। বাচ্চাদের মতো কি পাগলামি শুরু করেছো তোমরা।”
তিনি মেয়ের পাশে গিয়ে বসলেন।দৃঢ় স্বরে বললেন,”বাসন্তী আমায় শুধু তুমি একটা কথা বলো তুমি কি হাসিব এর সঙ্গে থাকতে চাও? হ্যাঁ কি না।
শেষবার জিজ্ঞেস করছি তোমায়।”
বাসন্তী ধীর স্বরে জবাব দিলো ।
— “না মা। আমি ওই জা*নোয়ার টার সঙ্গে কখনো থাকতে চাইনা। ও একটা জা*নোয়ার।তার থেকেও অধম।”
ওসমান শেখ নাতনির দিকে কিছু তাকিয়ে থেকে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন। অতঃপর বললেন,,
“বেশ। আর কোনো কথা হবে না। বাসন্তীর কাঁদতে ইচ্ছে হচ্ছে সে কাঁদুক। তোমরা যার যার রুমে যাও। নিজেদের কাজ করো।দিদিভাই ডিভোর্স পেপারে সাইন করে দেবে ঝামেলা শেষ।তাড়াছা দিদিভাই থাকতে চাইলেই তো আমরা তাকে থাকতে দেবো বা। আমাদের আদরের ধনকে দেখেশুনে কষ্টের মাঝে কেন ফেলবো।কটাদিন কষ্ট সহ্য করেছে এই তো ধের।
ওই জানো*য়ার কে আমার ছেলে নিজের হাতে শাস্তি দেবে।এতদিন ওর নামে নির্যাতনের কেইস ফাইল করি নি এই তো ওর ভাগ্য। তবে এবার করবো।
ডিভোর্স টা শুধু হোক।পরবর্তীতে দিদিভাই বিয়ে করবে কি না করবে সেটা সম্পূর্ণ দিদিভাইয়ের নিজের মর্জি। তাকে সারাজীবন পালনের জন্য তার বাপ ভাইয়ের কম টাকা নেই।
ওসমান চৌধুরী নিস্তব্ধ’র দিকে তাকিয়ে বলল,,
— “কি দাদাভাই পারবেনা বোনের দ্বায়িত্ব নিতে। নাকি বলবে পারবে না।”
ওসমান চৌধুরী নিস্তব্ধ’র দিকে তাকিয়ে বলল,,
— “পারবো দাদু ভাই। অবশ্যই পারবো। আমার একমাত্র বড়বোন কে আমি দেখতে পারবো না তা কি করে হয়। যে আপা আমায় ছোট থেকে কোলে পিঠে করে মানুষ করেছে তার কাছে আমি শতভাগ ঋণি।আপা সারাজীবন আমার ঘাড়ে বসে খেলেও বমার তাতে কোনো হায় আপসোস নেই।”
তিনি আবার ইয়ানা,আয়েশা আর তাসফির দিকে তাকিয়ে বললেন,,[কিছু কারণবশত তাসফির বড় জা,য়ের নাম পায়েল থেকে আয়েশা করা হয়েছে।তবুও যদি পরবর্তী কোনো পর্বে ভুল বশত পায়েল নামটি পান তবে জানবেন পায়েল এবং আয়েশা একজনই ব্যক্তি।নামের হেরফের লেখিকার ভুলোমনার জন্য দায়ী😑]
— “কি দিদিভাইয়েরা তোমরা পারবে তো ননদের সঙ্গে থাকতে?”
আয়েশা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জবাব দিল।
-” অবশ্যই পারবো দাদু। আল্লাহ রহমতে আপনার বড় নাতির কোনো কিছুর কমতি নেই। তাছাড়া আমরা তাল ভাত খেলে নাহয় আমার ছোট বোনটাও ডাল ভাত খাবে।”
ইয়ানা মনে মনে বেজায় বিরক্ত হলো,ইশশ যত্তসব ঢং এদের। তার সুখের সংসারের অন্য ধ্বংস করতে নাকি এখন সারাজীবন তাদের ঘাড়ে বসে খাবে অসহ্য।
তবুও নিজের মনের কথা মনে রেখেই মেকি হেঁটে জবাব দিল,
– “অবশ্যই দাদু।কোনো সমস্যা নেই”
তাসফি দঢ়তার সঙ্গে বাসন্তীর দিকে তাকিয়ে জবাব দিলো ,, “অবশ্যই দাদুভাই। কেন পারবোনা। আমার একমাত্র আপাইকে আমি সব সময় আগলে রাখবে।আর সে তো আমার ননদ নয়। আমার মিষ্টি একমাত্র আপাই।”
বলেই বাসন্তীকে পিছন থেকে গিয়ে জরিয়ে ধরলো।
দাদু হেসে নিস্তব্ধ’র উদ্দেশ্য বলল,, ” দেখেছো দাদাভাই হীরে খুজে এনেছি তোমার জন্য হীরে।যত্ন করে রেখো কিন্তু। ”
নিস্তব্ধ আঁড় চোখে তাকালো তাসফির দিকে।কপাল কুচকে মনে মনে বিরবির করলো, “পুঁচকে মেয়েটা সবসময় তাকে টেক্কা দিতে তৎপর থাকে যেন।”
ওসমান শেখ আবার বললেন,,
— “আমরা তোমার সঙ্গে আছি দিদিভাই। সমাজের চিন্তা তোমার করতে হবে না। তুমি সমাজে বুক ফুলিয়ে চলবে। আরে কে কি বলল,, তার ধার ধারার সময় আছে নাকি হ্যাঁ।আমাদের মেয়ে সেরা। আরে ওই সালা তো নর্দমার কিট। ”
বাসন্তীর বুক ভরে উঠলো প্রফুল্লতায়।
এরকম দাদু কজন পায় ঘরে ঘরে।
একে একে সবাই রুম থেকে বেরিয়ে গেল।
অনিমা বেগম বেগম মেয়ের মাথায় আদর দিয়ে বের হলেন।
— বাসন্তী যেন নিজের প্রাণ পুনরায় সঞ্চয় করলো।
আসলে শত দুঃখই জীবনে আসুক না কেন, পরিবারের মানুষদের একটু সাপোর্টই একজন ভঙ্গুর হৃদয়বান কে একদম সুস্থ করে দিতে পারে।
পরিবারের সাপোর্ট সবচেয়ে বেশি কার্যকরী। সমাজের লোক যাই বলুক না কেন তা আমাদের গায়ে লাগে না। হাজারটা বাজে মন্তব্য করলেও আমরা তা এরিয়ে চলি।
কিন্তু পরিবারের একজন প্রিয় মানুষ যদি দুঃখের সময় পাশে না দাঁড়িয়ে নেগেটিভ মন্তব্য করে আমাদের ভঙ্গুর হৃদয় আরো নুইয়ে পড়ে। এটাই স্বাভাবিক।
আপনজন পাশে থাকলে বিশ্ব জয় করা যায় অনায়াসে। মেন্টাল সাপোর্ট জীবনের সবচেয়ে বড় মহাঔষধী।
এইযে আমাদের দেশে কত ভালো মানুষ বর্তমানে মেন্টাল পেশেন্ট হয়ে এ্যাসাইলামে ভর্তি। কেন তারা মেন্টাল পেশেন্ট হলো। সকলের কি রোগ রয়েছে?
উহু নাতো? প্রিয় মানুষ থেকে ধোকা। পরিবার থেকে সাপোর্ট না পেয়ে। পরিবার থেকে লাঞ্চনা পেয়েই তো তারা গুমরে গুমরে মরেছে রুমের কোনে। সমাজে যখন বেড়িয়েছে কেউ তাদের কে কথার আঘাত থেকে প্রতিহত করে নি। কেউ তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়নি।কেউ বলেনি সাহসি হয়ে উঠো। এটাই তোমার জীবনের শেষ নয়। ভবিষ্যৎ এ তোমার আরো অনেক পথ চলা বাকি। নিশ্চয়ই পরম করুণাময় আমাদের জন্য উত্তম কিছু রেখেছেন। দুঃখের পরেই তো সুখ আসে।এমন আশ্বাস টুকু বোধহয় তাদের কেউ দেয় নি।
এই যে আজ বাসন্তীকে তার পরিবার যে সাপোর্ট টা দিলো। তার মনে হচ্ছে এতেই যেন তার সুখ হাতের মুঠোয় ধরা দিয়েছে।
সে তো এই ভয়টাই পাচ্ছিলো যদি কেউ তার সঙ্গ না দেয়।যদিও যখন বাসন্তী প্রথমবার ভঙ্গুর হৃদয় নিয়ে শ্বশুর বাড়ি থেকে বাপের বাড়ি আসলো এভাবেই সকলে তাকে সাপোর্ট করেছে।
তবুও ভয় তো থেকেই যায়। কত দিন তারা বিরক্ত হবে না। একসময় তো ঠিকই হবে?এই ভয়ছিল তার মনে?
আজ যেন সেই ভয়টুুকুও তার কেটে গেল নিমেষেই।
শ্বশুর বাড়ির দিন গুলোর কথা এখনো ভাবলেই তার সারা গাঁ বিষিয়ে যায়।
রাতে তাসফি বিছানায় সুয়ে আছে। তার ঘুম আসছেনা কিছুতেই। বাসন্তী আপার কথা তার সারাক্ষণ মাথায় ঘুরছে।কেন ডিবোর্স দিচ্ছে আপা তার স্বামী কে।, বাসন্তী আপার রুমে যেতে গেলে,বিকালে তাসফও তো দেখলো হাসিব আপার পায়ে ধরে ক্ষমা চাচ্ছে। যদিও কোনো ভূল করে থাকে তবে একজন মানুষ কে একটা সুযোগ দেওয়া কি উচিত নয়। তাসফির তো হাসিব কে ভালোই মনে হলো। তবুও একদিনে কি আর মানুষ চেনা যায়না।কিছু কিছু মানুষের কত রূপ যে থাকে তা ঠাহর করাও মুশকিল।
একজন মুখোশ ধারী মানুষের হাজারটা রুপ।আমরা সাধারণ মানুষ কি আর তা ঠার করতে পারি এক দেখাতেই উহু পারি না তো।পারলে তো সবাই জীবনে প্রতারকের ঠকে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেতো।
কিন্তু তা যেসম্ভব হয়ে উঠে না। তাইতো মানুষ ঠকে যায় তার ভালোবাসার কাছে,পরিবারের কাছে,সমাজের কাছে।এমনকি একজন অসৎ দোকানদারের কাছেও।
নিস্তব্ধ বের হয়েছে। উদ্দেশ্য গলির মোড়ের চায়ের দোকান। প্রায়দিনই সেখানে চার বন্ধুর আড্ডা চলে। সারাদিনের কর্মব্যস্ত সময়ের পরে এই চায়ের দোকানেই প্রায় তারা আসর জমায়।
নিস্তব্ধ পৌঁছাতেই সুজন কৌতুক স্বরে বলল,,
— “শোনো সবাই এই যে বের হয়েছেন আমাদের সদ্য বিবাহিত ব্যাচেলার পুরুষ মানুষ। তার বউ তাকে ব্যাচলার রাখেনি। আমাদের সভ্য পুরুষ বউ ছোট তাই নিজেকে ব্যাচেলার রেখেছে। ছোট বউ তার নাকি আবার পছন্দ নয়। কি মুশকিল বলুন তো বন্ধুগন।”
মাহীন রসাত্মক ভঙ্গিতে বলল,,
–” হ্যাঁ হ্যাঁ আমরাও দেখবো পুঁচকে পুচকে করে ব্যাটা কতদিন নিজের পুরুত্ব হেফাজত করতে পারে।
দেখা গেল আমাদের সৃজনের আরেক বাচ্চার আগে নিজেই বাপ হয়ে বসে রইলো। হা হা হা।
নিস্তব্ধ নিজের শক্ত পোক্ত পুরুষালী দুহাতের সাহায্যে লাগালো দুজনের পিঠে চর।
সুজন আঁতকে উঠলো,,
–” কি রে ভাই আস্তে মারনা। হাত তো বানিয়েছিস লোহার মতো।”
আবার ফিসফিস করে বলল,,
–“তা তোর এই ওসুরের মতো শক্ত হাত দিয়ে তোর পুচকে বউয়ের নরম কোমল হাত চেপে ধরলে তো তা মোম হয়ে গলে পড়বে রে।সাবধানে বন্ধু।সাবধানে কাম চালিয়ো।
নিস্তব্ধ চোখ গরম করে তাকালো বলল,,
— “আমার বউয়ের হাত গলবে নাকি শক্ত হবে সেটা আমি দেখবো। তুই বরং এবারে একটা বিয়ে করে নে। তারপর নিজের বউয়ের হাত ধরে দেখিস গলে কিনা।
নিজেরটা প্রাকটিস ওও হয়ে যাবে কেমন।আঙ্কেল কে বলবো মেয়ে খুজতে হুম।”
সুজন দুঃখী দুঃখী গলায় নাটকীয় ভঙ্গিমা করে বলল,
-” এই দেখো এর মধ্যে আবার আমার বিয়ে নিয়ে টানাটানি করছিস কেন। সিঙ্গেল আছি বেশ আছি
তোর মতো এক্কা থেকে দোক্কা হতে চাই না ভাই।দেখা গেল কলিজা ফেটেই নাহয় মরে গেলাম তারপর আমার ভুতের কি হবে ভেবে দেখেছিস একবারো।সার্থপর বন্ধু সবগুলো তোরা।”
নিস্তব্ধ’র কথায় মাহীন গন্ধ শুকার ভঙ্গিমা করে বলল,,
— “কিরে মামা কি যেন পোড়া পোড়া গন্ধ পাচ্ছি মনে হচ্ছে। ”
সৃজন বলল,, “হ্যাঁ তাইতো।”
সৃজনের ফোন বেজে উঠলো,, তার বউ কল করেছে।
— মাহীন বলে উঠলো,,” এই তো দেখেছিস একেক জনের বউয়ের কত চিন্তা। বাসার বাইরে গেলেই ফোন আর ফোন। সালার আমাদের জীবনটাই তেজ পাতা।বউ ও নেই ফোন করার মানুষ ওও নেই।
সৃজন দূরে গিয়ে কথা শেষ করে এসে বলল,
— “পাট কমিয়ে নাও বৎস।দরকার পড়লে নিজে বিয়ে করনা।তবুও অন্যের সুখে নজর দিস কেন ভাই।”
মাহীন নাটকীয় ভঙ্গিমায় বলল,,
— “নাউজুবিল্লাহ,, আমি কেন নজর দেবো। তোরাই তো এমন এক এক টা বিয়ে করলি যে সালার একটা সালি জোটাইতে পারলি না।বেঁচে বেছে সবগুলা একটাই বউ তোদের। না আছে সালী না আছে সালা।
মাহীন পেশায় একজন ডেন্টিশ।
নিস্তব্ধ দুষ্টু হেঁসে বলল,,
— “কত সুন্দরী মেয়েরা দাঁত দেখাতে আসে একজনের দাঁত দেখে প্রেমে পড়লেই তো পারিস।”
— “হ্যাঁ সেটাই। আমার রুচি এতটাও নিচে নামেনি যে পোকায় খাওয়া দাত ওয়ালা মেয়েকে পছন্দ করবো।”
মাহীনের কথায় বাকি তিন বন্ধু হাঁসতে লাগলো জোড় কদমে।
বন্ধু আড্ডা চলল অনেকরাত পর্যন্ত।
দরজা খোলার শব্দে তাসফি সচেতন হলো।
নিশ্চয়ই ডাক্তার সাহেবের আগমন হয়েছে। এই রাত বারোটার সময় তার আসার সময় হলো। আসুক তাসফি র তাতে কি।তাসফি ঘুমিয়ে পড়ার ভান ধরে শুয়ে রইলো বিছানার মাঝে। এবার ঘুমা না ঘুমা।দেকি কি করে ঘুমাস তুই ব্যাটা।দুপুরে আমায় ঝাড়ি মেরেছিলি না। এবার ঘুমা আরাম করে।
নিস্তব্ধ রুমে ঢুকে ফ্রেস হয়ে বিছানায় এসে তাসফিকে এভাবে মাঝে শুয়ে থাকতে দেখে কপাল কুচকালো।
সব মেয়েটার ফাজলামি, সয়তানকি তা সে ঠিকই বুঝেছে।
সে শক্ত কন্ঠে বলল,,
–” পাশে সরে ঘুমান। আমি জানি আপনি ঘুমান নি ম্যাডাম। সো নাটক বন্ধ করে সরেন।”
কি করে বুঝলো সে ঘুমায় নি আজব।
– তবু তাসফি সরলো না ঘাপটি মেরে পরে রইলো।
নিস্তব্ধ এবারে তাসফির মাথায় জোড়ছে টোকা মারলো
তাসফি ব্যাথায় আউচ শব্দ করে উঠলো।
নিস্তব্ধ বাঁকা হেঁসে বলল,” কি ম্যাডাম টেকনিক পছন্দ হয়েছে তো আপনার।”
তাসফি তার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে সরে শুলো।
নিস্তব্ধ গায়ে কাঁথা টেনে সাদা আলোর উজ্জ্বল লাইট খানা নিবিয়ে দিলো। কালো ডিম লাইট জ্বালানিয়ে দিলো।
আজব আলো যখন করতে চাস তাহলে এমন কালো না লাগিয়ে লাইটটা অন্য রংয়ের লাগালে কি সমস্যা এই ব্যক্তির। আজব সব কারবার।
তাসফি কিছুক্ষণ উসখুস করে পেটের কথা উগরেই দিলো।
— “আচ্ছা বলুন তো আপা কি কারণে হাসিব ভাইকে ডিবোর্স দিতে চাইছে?”
নিস্তব্ধ জবাব দিলো না।
তাসফি আবারো বলল,
-” এই যে শুনছেন বলুন না।”
নিস্তব্ধ চোখ খুলে রাগী চোখে তাকিয়ে বলল,
ধূসর রংধনু পর্ব ৯
— “পুচকে মেয়ে তোমার এত কিছু জানার তো আমি প্রয়োজন দেখছি না। সকালে ক্লাস নেই? এসব চিন্তা বাদ দিয়ে পড়াশোনা করো ঠিকঠাক।এখন নিজে ঘুমাও। আর আমাকে ও ঘুমাতে দাও।ঘুমাও”
তাসফি মুখ ভেঙচি কাটলো। ইশশ পড়াশোনা করো। কেন আমি পড়াশোনা না করে তোর জন্য রাখি নাকি হুহ।
নিস্তব্ধ নিজের বালিশ নিচ হতে তাসফির ওড়নাটা বের করে নাকের কাছে নিয়ে গন্ধ নিলো।
ইশশ গন্ধে যেন কেমন নেশা ধরানো। তার কেমন মাতাল মাতাল লাগে নিজেকে।
দেখেছো তোমরা এই বদমাশ ডাক্টার প্রতিরাতে বউয়ের ওড়নার ঘ্রাণ নিয়ে ঘুমাবে। অথচ বউকে শীকার করবেনা।অসহ্য,অভদ্র, বদমাশ নিস্তব্ধ ইয়াসার।