ধূসর রংধনু পর্ব ১২
মাহিরা ইসলাম
সকালে ঢাকার যানজটপূর্ণ শহর। সকলেই নিজেদের কর্মজীবনে ব্যস্ত। কেউ ডাক্তার, কেউ ইন্জিনিয়ার, কেউ বা অফিস কর্মী। আর এর মাঝে দ্বিতীয় শ্রেনির কিছু যুবক – যুবতী ছাত্রছাত্রীর দলে। তারাও ছোটে সকাল সকাল পড়াশোনার তাগিদে।ব্যস্ত ভঙ্গিতে।
একটু ফাঁকি দিলেই তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। ফিউচারে তাদের করতে হবে কঠিন পরিশ্রম।
কারণ এই যৌবনের সময়টাই তো তাদের জীবন গড়ার মূখ্য সময়।হারানো সময় পুনরায় ফিরে পাওয়া যায় না।তেমনি যৌবনের গতিবেগ,শক্তি ক্ষমতা, দক্ষতা আর কখনোই ফিরে পাওয়া যায় না।
যারা এই সময়টাকে কাজে লাগিয়েছে তারাই তো আজ ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার,পাইলট,বড় ব্যবসায়ী।আর যারা এ সময় টাকে হেঁসে খেলে পার করেছে তারাই আজ রিক্সাচালক,মুদি’দোকানদার, বাসের কন্ট্রাক্টর।কেউ কি কখনো শুনেছে একজন ডক্টর কিংবা পাইলট কে রিক্সা চালাতে?
আজ আকাশে কেমন মেঘলা মেঘলা ভাব বিধ্যমান।বৃষ্টি হবে কি? হ্যাঁ হতেই পারে।বর্ষাকাল তো চলেই এলো।এখন থেকে প্রতিদিন তাসফির ছাতা নিয়ে বের হতে হবে।কখন বৃষ্টি চলে আসে বলা তো যায় না।
তাসফির অধ্যয়ন’রত প্রাইভেট মেডিকেল কলেজটির সঙ্গে লাগোয়া সাইডেই হসপিটাল। অর্থাৎ এই কলেজের আন্ডারে ডান পাশে রয়েছে হসপিটাল।যাতে নিত্যদিন কয়েকশত মানুষের আনাগোনা। আর বাম সাইডেই তাদের কলেজ বিল্ডিং গুলো।তাদের কলেজের নাম প্যাশন প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ।নাম ডাক ও আছে বেশ।
কলেজে প্রবেশের মুখে তাসফি দেখলো একটা ছয়- সাত বছর বয়সী মেয়ে ফুল বিক্রি করছে।মেয়েটাকে মান্সার সাথের আরো কিছু মেয়ে ছেলে বিরক্ত করছে।
এই যে আবার শুরু হয়েছে এদের বাঁদরামি।
তাসফি ভ্রুকুচকে সে দিকে এগিয়ে গেল।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
— “কি হচ্ছে এখানে ওকে কেন বিরক্ত করছো তোমরা?তোমাদের আর কোনো কাজ নেই? সারাদিন এর ওর পিছনে লেগে থাকো সুপারগ্লু আঠার মতো।”
ছেলে মেয়েগুলো তাসফির দিকে চাইলো। ওদের মাঝে একটা ছেলে সয়তানি হেঁসে কৌতুক করে বলল,,
— “তো কি তোমাকে বিরক্ত করবো নাকি খুঁকি। তো এসো এ… ”
আর কিছু বলতে সুযোগ পেলো না ছেলেটা।তার আগেই তাসফি ঠাস করে ছেলেটার গালে থাপ্পড় মেরে দিলো।
সকলে চোখ বড় বড় করে চাইলো।
তাসফি রাগে শরীর চিরবির করে উঠলো। সে রাগে ফুঁসে উঠে বলল,,
— “বাড়িতে মা বোন, ভাই নেই। গায়ে সাদা এপ্রোন জরিয়ে এভাবে মানুষ কে হেনস্তা করতে তোমাদের বিবেকে বাঁধে না? এটা কোনো ভার্সিটি নয় যে এখানে তোমরা রাজনীতি করবে। এটা একটা মেডিকেল কলেন প্লাস হসপিটাল। একটা সম্মানিত পেশায় তোমরা ভবিষ্যৎ এ কাজ করতে যাচ্ছো। সেখানে তোমরাই এভাবে সব কিছুর অবমাননা করছো। সরকারিতে চান্স পাওনি। বাবা মায়ের টাকা আছে বলে প্রাইভেটে পড়ছো। আবার রাস্তা ঘাটে এসব করে বেড়াচ্ছো।
লজ্জা করে না তোমাদের। একটা ছোট বাচ্চা মেয়ের সাথে নোংরামি মূলক কথা বার্তা বলতে বিবেক বাঁধে না তোমাদের? ”
— “তুমি বেশি কথা বলো না তাসফি। আমার বাবা এই হসপিটালের শেয়ার হোল্ডার। আমার যা ইচ্ছে আমি তাই করবো এতে তুমি বলার কে? আমি একশোবার..
মান্সা কিছু বলতে নিবে তার আগেই তাসফি ঠাস করে ওর গালেও চর বসিয়ে দিলো।
অনেক হয়েছে।এইসব কিছু বিকৃত মস্তিষ্কের মেয়ে-ছেলে দেখলে তার গাঁ চিরবিরিয়ে উঠে।এরা নিজেদের ভাবেটা কি। দেশটা তাদের বাপের হোটেল।ক্ষমতা থাকলেই দেখাবে। আর কেন সাধারণ পাবলিক কি বানের জলে ভেসে এসেছে।
মান্সা ভ্যাবলা কান্তের মতো তাকিয়ে রইলো।
রাগে তার শরীর ফেটে যাচ্ছে। এই তুচ্ছ মেয়েটার কতবড় সাহস তার গায়ে হাত তোলে।এর শোধ সে নিয়েই ছারবে।
তাসফি তা তোয়াক্কা না করে মেয়েটার হাতে কিছু টাকা দিয়ে পাঠিয়ে দিলো।
বাচ্চা মেয়েটা কৃতজ্ঞতা পূর্ণ দৃষ্টি তাসফির দিকে তাকিয়ে চলে গেল।
তাসফির মান্সার দিকে তাকিয়ে শাসিয়ে বলল,
“ভালো হয়ে যাও।ভালো হতে না পয়সা লাগে না।
এইসব লেইম কাজ করে নিজেদের ভবিষ্যতের পেশা কে ছোট করো না। তোমার বাবা এই না সেই সেটা জেনে আমার কোনো কাজ নেই।তোমার বাবার টাকায় আমি পড়াশোনা করছি না। এটা একটা প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে। বছরে বছরে লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে তবেই এখানে পড়াশোনা করতে হয়। ”
অতঃপর সে নিজে কলেজের ভেতরে ঢুকে গেল।বিকৃত মেন্টালিটি মেয়ে-ছেলের সঙ্গে তর্ক করে সে একদমই সময় নষ্ট করতে চায় না।
নিস্তব্ধ গাড়ির ভেতরে বসে শান্ত মস্তিষ্কে এতক্ষণের সবটা পরোখ করলো।
তাসফি চলে যেতেই নিস্তব্ধ চোয়াল শক্ত করে গাড়ি নিয়ে ভেতরে ঢুকে পরলো।
মেয়ে তো নয় যেন অগ্নিকন্যা।
আর ছেলে মেয়েগুলোর ব্যবস্থা সে করবে।
ঘড়িতে তখন রাত দশটা কি তার আশে পাশে।
বাহিরের ঘুটঘুটে অন্ধকার ল্যাম্পপোস্টের আলোয় হালকা আলোকিত। সুজন দাঁড়িয়ে আছে তাদের বাসা থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে একটা তিনতলা ছাঁইরঙা বিল্ডিংয়ের সামনে। বিল্ডিংয়ের তিনতলার শেষ কর্ণারের রুমটার বাতি জ্বলছে বেশ কিছুক্ষণ যাবত।
সে তারই দিকে অপলক তাকিয়ে আছে আঁধ ঘন্টা যাবত।
সুজন বার বার পায়ে হাত দিয়ে মশা তাড়াচ্ছে আর হাজারটা গালি ছুঁড়ে দিচ্ছে মশার বিরুদ্ধে।
” সালার হারামজাদার দল,এই তোর মা খেতে দেয় নি বাসায় এসে আমার রক্ত চুষছিস।তোরা জানিস আমি কে? প্রতিদিন কত কত রক্ত আমার সামনে দিয়ে ঘোরা ফেরা করে জানিস।তোদের রক্ত লাগবে সেটা তো আমায় বললেই পারিস বাপ আমার তোদের এক ডজন রক্তের ব্যাগ দিয়ে যাবো। তবুও প্লিজ দয়া করে এভাবে টুকুশ টুক্কুশ করে তোদের সুইয়ের মতো আল আমার পা*ছায় ঢুকাশ না।দোহাই লাগি তোদের ভাই দোহাই লাগি”
সুজনের হাজারটা আজগুবি বিরবিরানোর মাঝেই কেউ তার কাঁধে টোকা দিলো।
সুজন চমকে উঠে পিছন ফিরে চাইলো।
পেছন ঘুড়ে তৃপ্তি কে দেখে সুজন বুকে হাত দিয়ে দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে দাঁত কিড়মিড় করে বলল,
-” অতৃপ্ত আত্মার বাচ্চা। এখনি তো আমার আত্মা টা খাঁচা থেকে বেরিয়ে আসলো।তুই কি চাইছিা এই মুহুর্তে আমার ভোলাভালা আত্মাটাকে কবজ করে ফেলতে।কি ব্যাপার বলতো।তোর লক্ষণ তো আমি মোটেও ভালো দেখছি নারে অতৃপ্ত আত্মা। ”
তৃপ্তি চোয়াল শক্ত করে বলল,
-“ফালতু কথা বন্ধ কর। আর বল গত আঁধা ঘন্টা যাবত আমার বিল্ডিংয়ের নিচে দাঁড়িয়ে তুই কি করছিস।”
সুজন তেঁতে উঠে বলল,
-” তোর বিল্ডিংয়ের নিচে মানে।তুই বিল্ডিং দিলি টা কবে।
– আমার নয় আমাদের বলেছি আমি।
– ” সে একই তো হলো। কি বলতে চাইছিস তুই। আমি তোর জন্য এই বিল্ডিংয়ের নিচে মশার কামড় খেতে দাঁড়িয়ে আছি?”
তৃপ্তি ভাবলেশহীন গলায় বলল,
-” আমি কিছুই ভাবছি না তুই বলছিস।”
-” আর ভাববি ও না। আমার কি খেয়ে আর কোনো কাজ নেই তোদের বিল্ডিংয়ের নিচে দাঁড়িয়ে থাকবো। তোর মতো জল্লাদ মহিলার জন্য না কোনো পুরুষ কোনোদিন অপেক্ষা করবে কি না সন্দেহ আছে রে। অতৃপ্ত আত্মা তুই তো সকলের ঘাড় এক নিমিষেই মটকে দিবি রে।
আর তুই কিনা ভাবছিস আমি তোর জন্য দাঁড়িয়ে আছি? মোটেও না আমি তো আমার নতুন গার্লফেন্ড এর দেখা পেতে এখানে দাঁড়িয়ে আছি। সে আসবে।কিন্তু এখনো কেন আসছেনা বুঝতে পারছি না।
-” তোর গার্লফেন্ড এর বাসা এখানে?”
-” হ্যাঁ।”
–” কোন বাসাটা দেখা তো?”
সুজন মিছে রাগ নিয়ে বলল,
– ” কেন কেন তোকে দেখাতে যাবো কেন। যাতে তুই আমার নতুন গার্লফেন্ড এর জান কবজ করে ফেলতে পারিস।কিন্তু সেটাতো আমি একজন সচেতন প্রেমিক হয়ে কিছুতেই হতে দিতে পারি না রে। তুই হচ্ছিস একজন জল্লাদ , মুখে দর্গন্ধ যুক্ত, নাকে সর্দি নিয়ে ঘোরা মহিলা।তোকে আমার গার্লফেন্ডের বাসা চিনিয়ে দেওয়া মানে আমার ঘুম হারাম করা।তুই কি করে ভাবলি আমি জেনে শুনে সেই কাজটা করব।”
-“ফালতু কথা বন্ধ কর আর এখান থেকে ফোট।”
-” তুই কে আমাকে ফোট বলার। এটা কি তোর বাপের জায়গা যে ফোট বললেই ফাঁকা জুসের বোতলের মতো ফোটে যাবো।”
তৃপ্তি জোড়ছে একটা ধমক দিলো সুজন কে,
-” স্যাটআপ ষ্টুপিড। ” বলেই সে হন হন করে চলে গেল।
সুজন তার যাওয়ার পানে তাকিয়ে ফিসফিস করে বলল,
-” তুই এত পাষান্ড কেন রে অতৃপ্ত আত্মা। আমার উপর একটু দয়া করে এই প্রেমের ঘাটের সুজন মাঝির জানটা কবজ করা থেকে রেহাই দিতে পারিস তো।তা না করে এই যে বাসার পরিহিত ড্রেস পড়ে চমার সামনে এসে মাথাটা এলোমেলো করে দিয়ে গেলি।”
রাত অনেক হলো।তাসফি হাসি খুশি মুখে নিস্তব্ধ’র রুমে প্রবেশ করলো।দেখলো অসহ্য লোকটা সোফায় বসে দক্ষ হাতে একমনে ল্যাপটপে আঙুল চালিয়ে যাচ্ছে। রুমের মাঝে আজ আর কোনো কালো ডিম লাইট জ্বলছে না।জ্বলছে তার আনা উজ্জ্বল রঙের লাইট টা।তাসফি আজ বিকালে দারোয়ান কে দিয়ে তার পছন্দের রঙ কমলা রংয়ের একটি লাইট আনিয়েছে।সেটাই খুব যত্নের সহিত লাগিয়ে দিয়েছে।
অনেকে কমলা রঙটা পছন্দ করে না।ভাবে কমলা রঙটা ভীষণ সেকেলে টাইপ।কিন্তু তাসফির কাছে মোটেও তা নয়।কমলা রঙ হচ্ছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শুভ্র রঙয়ের মাঝে একটা।সূর্যিমামা যখন ভোর, সকালে এই ধরণীর বুকে ঊদিত হয় তখন ঠিক এই কমলা রঙয়ের আভাটাই তার চারপাশে ছরিয়ে পড়ে,আর আমরা পুরো পৃথিবীর সবকিছু রঙিন দেখতে পাই।ঠিক তেমনি ভাবে সূর্যিমামা তার কমলা রঙ সঙ্গে করে নিয়ে অস্ত যায় পশ্চিম দিগন্তে ধীরে ধীরে। কেমন চারপাশ কালো অন্ধকারে মিইয়ে যায়।চারপাশ কেমন নিস্তব্ধতায় ছেয়ে যায়। থেমে যায় সারাদিনের শত ব্যস্ততা কোলাহল সব।
তাসফি রুমে প্রবেশের বার্তা পেতেই নিস্তব্ধ তার দিকে আড় চোখে তাকালো।
তাসফি একবার ড্রেসিং টেবিলের সামনে যাচ্ছে তো একবার বেলকনিতে,একবার ওয়াশরুমে।
নিস্তব্ধ এতক্ষণ বিষয়টায় নিরব ভুমিকা পালন করলেও এবারে বিরক্ত কন্ঠে ধমক দিয়ে বলল,
-” এই মেয়ে সমস্যা কি তোমার।এভাবে সারা রুম জুড়ে ঘুটঘুট করছো কেন?পড়াশোনা নেই।সন্ধ্যা থেকে এর ওর ঘরে ঢেঙ ঢেঙ করে ঘুরে বেড়াচ্ছ।”
তাসফি বিরবির করে বলল,
-” সমস্যা তো অবশ্যই আছে ডাক্তার সাহেব।এই যে আমি আপনার রুমের এতবড় একটা কেলেংকারী করে ফেললাম অথচ আপনি টু শব্দটি পর্যন্ত করলেন না। কিন্তু আমি তো তা মেনে নিতে পারছি না। আপনার নিস্তব্ধতা মানতে পারছি না। ”
বিরবির করার মাঝে তাসফির হালকা গোলাপি রংয়ের ঠোঁট জোড়া মৃদু ভঙ্গিতে কাঁপছে। নিস্তব্ধ তা অনুসরণ করে নিঃশব্দে ঢোক চিপলো।তার গলাটা কেমন যেন শুকিয়ে আসছে। তার কি এখন একটু পানি খাওয়া দরকার?মাথাটাও কেমন ঝিম ঝিম করছে। নাকি এককাপ কফি খেয়ে মাথার ঝিম ঝিম ভাবটা কমানো দরকার।
-” এই মেয়ে একদম বিরবির করবে না। আমার পছন্দ নয়।”
তাসফি ভ্রু কুঁচকে বলল,
-” তো আপনার পছন্দে অপছন্দে আমার কি যায় আসে।আমার যা ইচ্ছে আমি তাই করবো।”
বলেই সে চলল বাইরের দিকে।
নিস্তব্ধ অবাক চোখে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো
“আবার কোথায় যাচ্ছো।”
তাসফি দায়সারা বাবে জবাব দিল,
-” আপার রুমে। আজ আমি সেখানেই থাকবো। তাছাড়া দাদুও এতক্ষণে ঘুমিয়ে পড়েছেন।
আপনার এমন অসহ্যকর মুখটা দেখার চেয়ে বরং আমার আপার কাছে থাকাটাই বেটার। আপার মিষ্টি মুখটা দেখে ঘুমালে আমার স্বপ্ন গুলোও মিষ্টি হবে।আপনার মতো নিরামিষ তিতকুটে হবে না অবশ্যই। ”
তাসফির চলে যাওয়ার পানে নিস্তব্ধ হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে অদ্ভুত ভঙ্গিতে নিজের মুখে হাত বুলালো।
তার মুখ কিনা অসহ্য। সে কিনা নিরামিষ, তিতকুটে। তাকে দেখে ঘুমালে স্বপ্ন তিতকুটে হবে।কেন সে কি দেখতে এতটাই খারাপ নাকি,এই মেয়ে বলে কি।
ধূসর রংধনু পর্ব ১১
যেখানে কলেজে,হসপিটালে যুবতি মেয়েরা তাকে দেখলে তার দিকে হা করে তাকিয়ে থাকে,সেখানে এইটুকুনি মেয়ে তাকে বলে কিনা তার মুখখানা অসহ্য।