ধূসর রংধনু ৩ পর্ব ৩১

ধূসর রংধনু ৩ পর্ব ৩১
মাহিরা ইসলাম মাহী

হাফপ্যান্ট পরে নীলাদ্র কোনো দিকে না তাকিয়ে সোজা দরজা খুলে দেয়।
নীলাদ্র কে দেখেই কাশফি দাঁত কেলিয়ে হাসে।
“ নীল সমুদ্র আমায় এক গ্লাস পানি খাওয়ান প্লিজ। তিন তলায় উঠতে গিয়ে আমার জান বেরিয়ে গেল।নিচতলার ফ্লাট টা নিতে পারতেন।”

কাশফির চোখে আজ চশমার উদয় ঘটেছে।
ইদানীং সে বড্ড কম দেখতে শুরু করেছে চোখে।ডাক্তার তাকে চশমাটা সাজেস্ট করেছে। বলতে গেলে চশমা ছাড়া এখন এক প্রকার সে সবটা আবছাই দেখে।নাওমীর ব্যারাম তার হয়েছে।
কাশফির মনে হচ্ছে আজকাল বোধহয় সে একটু চশমাটা পরে বেশিই দেখতে শুরু করেছে।নয়তো নীলাদ্র’র মতো দামড়া ছেলের পরনের হাফপ্যান্ট দেখতে পায় কি করে।এত বড় দামড়া ছেলে কখনো হাফপ্যান্ট পরে নাকি?
দরজা খুলে চশমা পরিহিত কাশফিকে দেখে নীলাদ্র’র চোখ কপালে।
নিচের দিকে তাকিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঠাস করে দরজা লাগিয়ে দেয় সে কাশফির মুখের সামনে।
কাশফি চোখ টিপটিপ করে চায়।কি হলো ব্যাপারটা?

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

কাশফি দরজা ধাক্কায় পুনরায়।
খুলে না।
দু’মিনিট পার হয়।
নীলাদ্র দরজা খুলে।
কাশফি এবারে নিজের চশমাটা চোখ থেকে খুলে পরিষ্কার করে পুনরায় চোখে দেয়।
নাহ এবারে ঠিক আছে।
“ এই তো নীল সমুদ্র কি সুন্দর লুঙ্গি পরে তার সামনে একদম বাঙালি স্টাইলে দাঁড়িয়ে। বাহ বাহ। দারুণ বাঙালিয়ানা।এই তো ঠিকআছে তার চোখে সমস্যা হয়নি তবে। হ্যাফপ্যান্টের বদলে এবারে লুঙ্গি বাহ বাহ ভালোই উন্নতি।ব্যাপার না।”
নীলাদ্র বাসা তন্ন তন্ন করে খুঁজে প্যান্ট না পেয়ে শেষমেশ লুঙ্গি পরতে বাধ্য হয়েছে।আশ্চর্য তার এত এত প্যান্ট গুলো গেল কোথায়।

লুঙ্গি গুলো গত রাতে সাফওয়ান রেখে গেছে।নীলাদ্র নিশ্চিত তার প্যান্ট গায়েব হওয়ার পেছনে ওই অসভ্য সাপ ব্যাটারই হাত আছে শতভাগ।নয়তো তার আস্ত আস্ত প্যান্টগুলোর তো হাত পা নেই যে হেঁটে হেঁটে পালাবে।
এসব লুঙ্গি পরা কি তার সাজে।
নীলাদ্র কোনো রকমে গিট দিয়েছে মনে হচ্ছে এই বুঝি খুলে পরলো বলে।
কোনো রকমে ধরে আছে সে।
ভাগ্যিস নিচে হাফপ্যান্ট টা ছিলো।
এমন সাংঘাতিক ঝুঁকিময় বস্তু কেউ পরিধান করে? আশ্চর্য।
নীল সমুদ্রের হাত দিয়ে লুঙ্গি ধরে রাখার স্টাইল দেখে কাশফি মিটিমিটি হাসে।
“ এই মেয়ে সমস্যা কি তোমার? এভাবে রাক্ষসীর মতো হাসছো কেন? ওয়েট, ওয়েট, এক মিনিট ওয়েট তুমি আমার ফ্লাটে কেন? তার চাইতেও বড় কথা আমার ফ্লাট চিনলে কেমন করে তুমি কাঁশি?”
নীলাদ্র ভ্রু নাচায়।

“ এই যে সাফওয়ান ভাইয়ার সঙ্গে এসেছি।এই যে আস্ত নীল সমুদ্র আমায় বাকি গল্পটা শোনাবেন না?অর্ধেক গল্প বলে সেই যে উধাও হলেন।””
কাশফির কন্ঠে তীব্র উৎসাহ,উত্তেজনা।
সে পেছনে আঙুল দিয়ে সাফওয়ান কে দেখায়।
ততক্ষণাৎ পেছন থেকে সাফওয়ান উঁকি মারে।
দাঁত কেলিয়ে হেসে বলল,
“ লুঙ্গি পরে ফিলিংস কেমন বন্ধু’র।“
নীলাদ্র কটমট করে চায়।
তার চোখের ভাষাই বুঝিয়ে দেয়,
“ আজ শুধুমাত্র কাঁশির জন্য বেঁচে গেলি রে সাপুরের বাচ্চা। নয় তো তোর হাড়-গোড়, রক্ত মাংশ সব এক করে ফেলতাম। কি ভাবে করতাম তার প্রসেস তোর উপর নির্ভর করছে।”
“এই একমিনিট কাশফি তুমি একটু নীলাদ্র’র পাশে গিয়ে দাঁড়াও তো।”

কাশফি ড্যাব ড্যাব করে চায় অবুঝের ন্যায়।
সাফওয়ান সে সুযোগের অপেক্ষায় নেই। তার বলতে দেরী এগিয়ে নিলাদ্র’র হাটুতে ল্যাঙ মারতে দেরী নেই।
নীলাদ্র কোনো রকমে নিজের ইজ্জ্বত বাচাঁতে বাঁচাতে ঝুঁকে পরে কাশফির দিকে।
দুজনের মুখশ্রী একদম ছুঁইছুঁই।
কাশফির চোখ গোলাকৃতি ধারণ করে।
সঙ্গে সঙ্গে মুহুর্ত টুকু ক্লিক করে ক্যামেরায় বন্দি করে নেয় সাফওয়ান।
“ পারফেক্ট। “
সঙ্গে দৌঁড়ে পালায়।নীলাদ্র’র ওমন শক্তপোক্ত থাপায় মার খাওয়ার তার কোনো ইচ্ছে নয়।উহু একদমি নয়।ছবিটা তার একজনকে সেন্ট করতে হবে।সেই মহাশয় গুরুদায়িত্ব দিয়েছে তাকে।পালন তো করতেই হবে যতই হোক গুরুজন সে।আর সাফওয়ান বড্ড ভদ্রছেলে।গুরুজনের কথা সে খুব কর মেনে চলে।তারওপর বন্ধু’র বিষয়ে, উদার তো তাকে হতেই হবে।
পরতে পরতে নীলাদ্র কোনো রকমে নিজেকে সামনে নেয়।
কাশফি শুষ্ক ঢোক গিলে। যাহ। সাফওয়ান ভাইয়া তাকে এভাবে একা রেখে চলে গেল।
নীলাদ্র ভিতরের দিকে হাঁটা দিতেই কাশফি চেঁচিয়ে উঠে,

“ আরে আরে।দেখতে পাচ্ছেন দরজায় মেহমান এসে দাঁড়িয়ে আছে কোথায় তাকে আপ্যায়ন করে ঘরে তুলবেন।তা না এভাবে মুখ বাঁকিয়ে চলে যাচ্ছে। ভারী আশ্চর্য লোক তো মশাই।”
নীলাদ্র ঘুরে দাঁড়ায়,
“ ওহ রিয়েলি? তুমি মেহমান? আমি তো ভেবেছি ভাইরাস। ভাইরাস কে নিজের থেকে যত দুরে রাখা যায় ততই মঙ্গল বুঝেছ?”
নীল সমুদ্রের নাম মাত্র অপমানে কাশফি দাঁত কেলিয়ে হাসে।
নীলাদ্র কাশফির কপালে টোকা দেয়।
“ আঁউচচ।বেয়াদব ছেলে।”
নীলাদ্র কাশফিকে পাত্তা না দিয়ে রুমে ঢুকে যেতেই কাশফি তার ছোট ছোট বিড়াল পায়ে নীলাদ্র’র পিছু পিছু ভেতরে ঢুকে যায় বিনা অনুমতিতে।
নীলাদ্র পিছু ফিরে ধমকে বলল,

“ ভেতরে আসতে বসেছি তোমায়? আশ্চর্য মেয়ে মানুষ। “
কাশফি জবাব দেয় না বরং ড্রয়িংরুমে থাকা নরম সোফায় ঠাস করে বসে পরে।
যেন এটা তারই বাসা।
নীলাদ্র কোথাকার কোন ছাঁ।
নীলাদ্র চোখ ছোট ছোট করে চায়।
মেয়েটা আশপাশ দেখতে ব্যস্ত।
কাশফির কাঁধের ব্যাগে দুটো খরগোশ ছানা ঝুলছে। ফোমের বোধহয়।জীবিত নয় ঝড়।তার পায়ে ক্যাট সু।মাথায় মিকি মাউস হেয়ার ব্যান্ড।ঘাড় থেকে একটু নিচে নামন্ত চুলগুলো ছেড়ে দেওয়া।
আশ্চর্য এই মেয়ের সবখানে জীবজন্তুর পাহাড় কেন। একদম বাচ্চা বাচ্চা টাইপের কাঁশি।
আসলেই এর থেকে ভাইরাস ছড়াবে নাকি?
নাহ বাচ্চারা তো নিষ্পাপ হয়।
নীলাদ্র কি একটু খানি ছুঁবে?
না না অসম্ভব। সেবার মেয়েটার হাত ধরতেই তার তিন দিন জ্বর ছিল।অসম্ভব।

“ শুনো কাঁশি আমার থেকে একফুট দুরত্ব বজায় রাখবে।একদম আশেপাশে ঘেসার চেষ্টা করবে না।”
কাশফি চট করে উঠে দাঁড়ায়।
দুটো সোফা পর গিয়ে ঠাস করে পুনরায় বসে পরে।
নীলাদ্র কৌতূহলী দৃষ্টিতে চেয়ে।
“ এই যে দেখুন এবারে একফিট হয়েছে কি না? আপনার কাছে ফিতা আছে নীল সমুুদ্র?”
নীলাদ্র দাঁতে দাঁত চেপে চায়।
“ কি দরকার তোমার আমার আছে? হুম?”
কাশফি কাঁদো কাঁদো মুখ করে চায়।
“ বাকি গল্পটুকু শেনাবেন না? কি হলো সেই রাজকুমারের?”
“ পারবো না।”
“ এই না না প্লিজ এমন করবেন না।বলুন না কি হলো এরপরে রাজকুমারের।রাজ কুমারের বড্ড কষ্ট।তাই না বলুন। “

ঘটনা ঘটলো খুব দ্রুত।
খানিকক্ষণ আগে নিজের করা এক ফিটের দুরত্ব ঘুঁচিয়ে ফেলল কাশফি দু সেকেন্ড।
নীলাদ্র বাম হাতের তালু স্পর্শ করে বাচ্চা মেয়ের ন্যায় আবদার করলো।
“ এই যে নীল সমুদ্র বলুন না প্লিজ।আপনাকে চকলেট খাওয়াবো তো প্রমিস।”
নীলাদ্র কাশফির হঠাৎ ছোঁয়ার বিদ্যুৎ এর ঝটকা খায়।ফিসফিস করে সুধায়,
“ রাজকুমারের গল্প শুনে তার কষ্ট কে ঘুঁচিয়ে দিতে পারবে তো মেয়ে?”
কাশফি পিটপিট করে চায়।
“ কষ্ট ঘুঁচাতে না পারলে বলবেন না বুঝি।”
কাশফির চোখ ছলছল। নিষ্পাপ মুখখানি তার কাঁদো কাঁদো।
নীলাদ্র ঠোঁট টিপে হাসে।

“ উমম কষ্ট কমিয়ে দেবে কথা দিলে বলতে পারি।”
কাশফি সঙ্গে সঙ্গে মাথা নাড়ায়।
“ দেব। প্রমিস।সত্যিই দেব
এই দেখুন তিন সত্যিই। এবারে বলবেন বলুন প্লিজ?”
নীলাদ্র আহত চোখে তার পরনের লুঙ্গি খানার দিকে চায়।এই মুহুর্তে এই কাঁশির সামনে লুঙ্গি পরে থাকার তার পক্ষে অসম্ভব।
সে কাশফির হাত ধরে দরজার বাহিরে বের করে দিয়ে ঠাস করে দরজা বন্ধ করে দিলো মুখের উপর।
“ কাল এসো কাল শোনাবো গল্প। এখন আমি ঘুমাবো পিচ্চি মিকি মাউস। সো বাইইই।”
কাশফি হতভম্ব দৃষ্টিতে চেয়ে।
নীল সমুদ্র তাকে এভাবে অপমান করে বের দিতে পারলো।একটু গল্পই তো শুনতে এসেছিস তাই বলে এভাবে বারবার অপমান করবে তাকে?
অভিমানে মুখ ফুলায় অবুঝ যুবতী রমণী।

ভার্সিটির পরিবেশ আজ হুট করেই জমজমাট। চারপাশে একটাই গুঞ্জন।
প্রফেসর জাওয়াদের সঙ্গে নিস্তব্ধতা’র বিয়ের গুঞ্জন। খবরটা কোনো ভাবে লিক হয়েছে।
সাদাফ ঘুম থেকে উঠে মাত্র ভার্সিটিতে এসে নিজ বাইকটা থামিয়েছে। গতকাল রাত দুটো পর্যন্ত নিস্তব্ধতা তাকে শহর ঘুরিয়েছে।অতঃপর আইসক্রিম না কিনে ছাড়ে নি। অত রাতে কি আর আইসক্রিমের দোকান খোলা থাকে?
যাও বা একটা পেল ঘটলো আরেক বিপত্তি। সাদাফ এসেছে সঙ্গে বাইক নিয়ে মানি ব্যাগ তো সঙ্গে আনে নি।এদিকে নিরুর আইসক্রিম দুটো ততক্ষণে খাওয়া ওও শেষ।
দোকানদার মামা টাকার জন্য উৎসুক হয়ে চেয়ে। মানিব্যাগ নেই পকেটে।এখন উপায়?
টাকা দেবে কিভাবে।দোকানদার মামা এখন নির্ঘাত তাদের ঝাটু পেটা করবে। নয়তো লাঠি পেটা।
সাদাফ করুণ চোখে নিস্তব্ধতা’র দিকে চায়। তার হাতের তিনটে আইসক্রিম ততক্ষণে শেষ।
বিল এসেছে একশত পঞ্চাশ টাকা।পকেটে নেই তা টাকা, এখন উপায়? আয়হায়।
নিস্তব্ধতা দাঁত কেলিয়ে হাসে।

এই হাসির মানে একটাই বাইকে উঠ সজনেডাঁটার বাচ্চা ভাগ। ভাগ সাদাফ ভাগ। মামা আপন প্রাণ বাঁচা।
তারপর আর কি যেমন ইশারা তেমন কাজ।
পেছন থেকে দোকানদার মামা চিল্লায়ে উঠে।
কে শোনে কার কথা।
দোকানদার হায়হায় করে, শেষে কিনা তার লাস্ট বউনি এভাবে বাকি নিয়ে ফাঁকি দিলো।
সাদাফ ফাঁকি অবশ্য দেয় নি।
সকালে আসার পথে টাকাটা দোকানদারের হাতে হাতে দিয়ে পরিশোধ করে এসেছে।
সঙ্গে সঙ্গে দোকানদার মামার মুখে হাসি ফুটেছে।
রাতে শেষ বউনি বাকি তো কি সকালে প্রথম বউনি টা তো হলো এই ভাগ্য।
নিস্তব্ধতা কে রিলাক্স দেখাচ্ছে।
খবরটা তার কানেও এসেছে।

যার বিয়ে সে জানেনা না অথচ ভার্সিটির সকলে জানে ব্যাপারটা আশ্চর্যের না?উহু মোটেও আশ্চর্যের না। কেন জানিনা নিস্তব্ধতা নিজেও ব্যাপারটা বেশ এনজয় করছে।
নীবিড় দৌড়ে আসে সাদাফের কাছে। ব্রেক কষে চলন্ত পাদুকা খানার।
রীতিমতো হাঁপাচ্ছে সে।
“ ভাই সর্বনাশ হয়ে গেছে।”
সাদাফ নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে মাথা থেকে হেলমেট টা খুলে বাইকের সঙ্গে বাঁধায়।
“ বল।”
“ বল মানে টা কি।কিছু শুনিস নি তুই?”
“ নাহ।”
নীবিড় চোখ ছোট ছোট করে চায়।

“ তোমার প্রেমিকার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে অথচ তুমি এখানে হেলেদুলে ভার্সিটি তে আসছো? কি ভাই? আমি হলে নিরু আপার অসব বুজলুকি না এক চুটকিতে থাপ্পড় মেরে বের করে দিতাম।শুধু তুমি বলেই এতসব সহ্য করছো বুঝলে।
“ আমার প্রেমিকা? ব্যাপারটা হাস্যকর নয় মহিষের বাচ্চা।”
“ অবশ্যই না। ব্যাপারটা মোটেও হাস্যকর না।আর একদম মহিষের বাচ্চা না তুমি এই সিরিয়াস মোমেন্টে বলিও না। তুমি না জানলে কি হবে।তোমার মনের খবর আমি জানি বুঝলে। নীরু আপার বিয়ে নাকি ওই জাওরাটার সঙ্গে আর এদিকে তুমি বলছো কিছু জানো না ফাজলামো পেয়েছ নাকি?”
সাদাফ থমকে পেছনে তাকিয়ে রয়।নীবিড়ের পেছনে স্বয়ং নিস্তব্ধতা দাঁড়িয়ে আর নাওমী দাঁড়িয়ে।
নাওমী বিরবির করে,

“মহিষের বাচ্চা নিজের মনের খবর জানে না অথচ অন্যের মনের খবর জানে বাহ ভারী ইন্টারেস্টিং তো।দারুণ।
নিস্তব্ধতা নীবিড়ের কান টেনে ধরে।
“ আচ্ছা?আমার বুজলুকি ছুটাবি তুই তাইনা?”
নিস্তব্ধতা আপুর কান্ডে নাওমী মিটমিটিয়ে হাসে।
আপুর সঙ্গে আজ তার বেশ ভাব হয়েছে।কেন হয়েছে ব্যাপারটা সিক্রেট।
“ আপা ছাড়ো লাগছে তো।তুমি তোমার জাওরাটার কাছেই যাও না আশ্চর্য আমার কান কেন টানছো।”
একমুহূর্ত কাটে। সাদাফ খপ করে নিস্তব্ধতার হাতখানা শক্ত করে ধরে।
“ আরে সাদ…”
“ চুপপপ।ডোন্ট কল মি সাদাফ।”
নিস্তব্ধতার কথায় পাত্তা দেয় না সাদাফ।বরং প্রচন্ড আক্রোশের সহিত তার হাত চেপে ধরে টানতে টানতে নিয়ে যায় কোথাও।
নীবিড় নাওমী পানে চায়।
কিছু বলার তাগিদে মুখ খু্লে সে,
“ মিস নাউডুবা চশমিশ তুমি…”
নাওমী এক সেকেন্ড ওও দাঁড়ায় না একপ্রকার নীবিড়কে না দেখার ভান করে ইগনোর করে চলে যায়।
নীবিড় কটমট করে চায়।তার ভাবুক দৃষ্টি।ইন্ডাইরেক্টলি মেয়েটা তাকে পুনরায় ইগনোর করলো? এই নীবিড় কে?

জাওয়াদ ক্লাস নিচ্ছে বাকি দিনের ন্যায় তার মুখটা আজ গম্ভীর নয় বরং হাসিখুশি। কিসের কারণে প্রফেসর জাওয়াদের মুখে এই হাসি।বিয়ের আনন্দে বুঝি?
অদিতি স্তব্ধ হয়ে বসে ক্লাসে।
নিস্তব্ধতা আপু আর জাওয়াদের বিয়ের খবর শোনার পরমুহূর্ত থেকে তার মনে খবর কাউকে বোঝানো দায়।তান্ডব,তূফান, ঝড়,টর্নেডো সব বৈছে তার হৃদমাঝারে। পীড়া দিচ্ছে হাজার রকম।
জীবনের এত বড় একটা সিদ্ধান্তের ব্যাপারে মায়ের মতো একই ভুল কি করে, করে বসলো সে।কি করে?
চোখ বেয়ে তার ঝরে নোনা অশ্রু।

এতবড় মিস্টেক করে ফেলল সে কেমন করে?
তবে জাওয়াদের তাকে অতিথি পাখি বলা কি শুধুই হঠকারিতা? তুই নিজেই বা এত কেন বোকা অদিতি।
নিজেকে ধিক্কার জানায় অদিতি।
ছিঃ একজন প্রফেসরের প্রতি ভালোবাসা তোর উতলে পরে কি করে?
নাওমী অদিতিকে ধাক্কা দেয়।
গম্ভীর কন্ঠে ফিসফিস করে বলল,

ধূসর রংধনু ৩ পর্ব ৩০

“ নিস্তব্ধতা আর জাওয়াদ স্যারের বিয়ের খবর শুনে তুই খুশি নস? পছন্দ করিস প্রফেসরকে?
আমার কথার জবাব দে অদিতি। “
অদিতি চমকে তাকায় নাওমীর পানে।

ধূসর রংধনু ৩ পর্ব ৩২