ধূসর রংধনু ৩ পর্ব ৩৫
মাহিরা ইসলাম মাহী
“ডাক্তারী ছেড়ে ব্যবসা করা সফল বিজনেসম্যান মি. আরাধ্য আপনার বান্ধবী’র সঙ্গে কথা বলা শেষ হলে আমায় কি একটু সুযোগ দেবেন?”
আরাধ্য হতভম্ব দৃষ্টিতে ছেলের পানে চেয়ে।
“ আমাদের একটু পার্সোনালি কথা বলার সুযোগ দেবেন কি? আপনি পরে দেখা করে নেবেন আবার।আমার আবার আপনার মত এত এত টাইম নেই বুঝলেন তো।আমি বিশাল ব্যস্ত মানুষ ।ফ্লাটে গিয়ে ঘুম দিতে হবে।”
আরাধ্য ছেলের সঙ্গে তর্কে জড়াতে চাইলো না।
অগত্যা উঠে বাহিরে বেরিয়ে গেল।
এতক্ষণ বসে থাকা বাবার চেয়ার খানায় ঠাস করে বসে পরলো নিলাদ্র।তার ভাবভঙ্গি নির্বিকার।
তাসফি শক্ত কন্ঠে বলল,
“ কি চাও?”
“ চাই তো অনেক কিছুই।এখন আপনারা দিতে পারবেন কিনা সেটা আপনাদের উপর ডিপেন্ড করছে। “
“ বলো কি চাও।”
“ দেখুন শ্বাশুড়ি মা থুক্কু সেকেন্ড শ্বাশুড়ি মা আমি সোজাসাপ্টা কথা বলতে ভীষণ পছন্দ করি।”
তাসফি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে নীলাদ্রকে পরখ করতে ব্যস্ত।
তার বিশ্বাস তার মাঝে সাময়িক সময়ের জন্য তৈরি হওয়া কিছু কনফিউশান ক্লিয়ার ছেলেটা নিজে থেকেই করবে।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“ তো আমার সেকেন্ড শ্বাশুড়ি মা শুনুন আমি ভেবেছি জীবনে এমন কাউকে বিবাহ করিব যার কিনা চার চারটে মা-বাবা থাকবে। লিগ্যাল না হোক পাতানো হলেও চলবে।
জামাই আদরেই সারা জীবনটা কেটে যাবে বুঝলেন তো। মাসের চার সপ্তাহ চার শ্বশুর বাড়িতে কাটাবো। ব্যস মাস শেষ। বিয়ের খরচা হজম। ভেবেছি ছেলে পেলেও পয়দা করবো শ্বশুর বাড়িতে থেকেই।চার শ্বশুর বাড়িতে আটটি সন্তান বুঝলেন তো।হিসাব বরাবর।
হিসাব মোতাবেক কয়েকজন রমণীকে খুঁজেও পেয়েছি।তবে দেখতে পাচ্ছি সমানতালে এক একজনের সীট বুকিং হচ্ছে ক্রমাগত।আমার কি দোষ।
শেষ পর্যন্ত একজনকে পেয়েও গেলাম বুঝলেন তো।”
“ কি বলতে চাইছো তুমি?”
“ সমীকরণ খুব সোজা সেকেন্ড চাচু মা।আপনি আমার বাপের শোচনীয় অবস্থা দেখে দুঃখ প্রকাশ করছেন রাইট?”
তাসফি মাথা নাড়লো।
“ হ্যাঁ আরাধ্য..”
“ দাঁড়ান দাঁড়ান দু মিনিট দাঁড়ান, আমার কথা শেষ হয়নি পুরোটা শেষ করতে তো দিন চাচু মা।”
তাসফি এবার সত্যিই বিরক্ত হচ্ছে ছেলেটার উপর।
“ আপনি কেন দুঃখ প্রকাশ করছেন? আমার মা এবং বাবার ডিভোর্সের জন্য? “
“ হ্যাঁ।”
“ তাদের ডিভোর্সের উৎস কি তাদের বিয়ে?”
“ হ্যাঁ।”
“ বিয়েটা কারা দিয়েছিলো মাতব্বরি করে,আপনারা রাইট?”
“ হ্যাঁ।”
“ কেন দিয়েছিলেন? আমার বাপ মাফ চায়নি আপনাদের কাছে? চেয়েছিলো কি না?মন থেকে অনুতপ্ত হয়েছিল কি না?”
“ চেয়েছিলো।”
“ তবুও কেন করলেন এমনটা?”
“ ভবিষ্যতের কথা কেউ বলতে পারে না নীলাদ্র।
আমরা বুঝতে পারিনি।
তাছাড়া তোমার বাবা মান্সাকে ভালোবাসতো।
আমি ছিলাম না সেখানে নিস্তব্ধ আর সুজন ভাইয়ার দ্বারা…”
“ হাহ সো কল্ড ভালোবাসা।আমার বাবা বাসতো।ওই মহিলা তো নয়।
ওই মহিলা তো আপনার হাসবেন্ড কে জান প্রাণ দিয়ে ভালোবাসতো।ব্যাপারটা হাস্যকর নয় বটে।”
“ নীলাদ্র তুমি…”
“ এখন আমি যদি বলি চাচু মা আপনি নিজের বরের উপর থেকে শকুনের নজর সরাতে আমার বাবাকে খুব চতুরতার সঙ্গে লিগ্যাল ওয়েতে ফাঁসিয়েছেন তবে কি বলবেন?”
“ নীলাদ্র তুমি কিন্তু লিমিট ক্রস করছো।”
“ মোটেও না সেকেন্ড শ্বাশুড়ি মা । আপনার গিল্টিফিল টুকু আমি শুধুমাত্র কমাতে এসেছি।
আসুন একটা ডিল করি।”
“ কিসের ডিল।আর ইউ ম্যাড?”
“ উহু। আপনার হাসবেন্ড আপনার প্রেমে ম্যাড।আমি নই।আমার বাপ ওও নয়।”
তাসফি হতভম্ব দৃষ্টিতে চেয়ে রইলো অসভ্য, অভদ্র ছেলেটার পানে।
নীলাদ্র ফিসফিস করে কিছু বলল।
“ তবে ডিল ডান চাচু মা।”
তাসফি হাসলো।
“ ডান।”
“ দয়া করে ওই মহিলা কে আমার বাবার জীবনে ফেরাতে যাবেন না।চাইলেও পারবেন না।আ..মি থাকতে..মাইন্ত ইট।”
তাসফি হাসলো।
বাবাকে ছেড়ে চলে যাওয়া ছেলেটা বাবার জন্য চিন্তা করছে, ব্যাপারটা হাস্যকর নয় কি? হুহ।
“ যান যান।আপনার সো কল্ড বন্ধু বাহিরে বোধহয় আপনার জন্য অপেক্ষা করছে।যান দেখা করে আসুন।ত্রিশ বছরের না বলা কথা গুলো উগড়ে দিন।তাছাড়া আপনার জন্য একটা সারপ্রাইজ ওও আছে বাহিরে।”
নীলাদ্র রহস্যময় হেসে বেরিয়ে গেল।যেমন করে ঠিক ঝড়ের গতিতে এসেছিল হঠাৎ।
তাসফি বাহিরে বের হয়ে সত্যিই সারপ্রাইজড হলো।
ভীষণ সারপ্রাইজড হলো।
তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা রোগা-সোগা দেহের মেয়েটাকে দেখে তাসফি’র চোখ ছলছল করে উঠলো। দৌঁড়ে গিয়ে তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরলো তাসফি।
সর্নিধি হাসলো।
চোখের কোটর হতে গরিয়ে পরলো তার একফোঁটা নোনাজল।
“ কেমন আছিস রে তাসের ঘর?কেমন চলতে নিস্তব্ধ ব্যাডার তাসের ঘর ”
তাসফি হেসে দিলো।
অদূরে বাইকে হেলান দিয়ে নিলাদ্র সিগারেট ফুঁকছে। তার পাশে দাঁড়িয়ে সাফওয়ান।
মা কে নিয়ে আসতে হয়েছে তার। কারণ তার মা পুরোপুরি সুস্থ নয়।মাসের প্রায় দিনই সে অসুস্থ থাকে।
নীলাদ্র’র হাতে জলন্ত সিগারেট।
বিষাক্ত ধোঁয়া ছেড়ে দিচ্ছে সে নির্মল আকাশে।
অর্ধেক সিগারেট সে এগিয়ে দিলো সাফওয়ানের দিকে।
“ মায়ের সামনে সিগারেট খাওয়া অসম্ভব দোস্ত। মা বাসায় ফিরে ঝাঁটু পেটা করবে নির্ঘাত।”
“ দূর ব্যাটা।”
সাফওয়ান একবার করুণ চোখে মায়ের পানে চায় তো একবার অসহায় অবলা সিগারেটের পানে।
সর্নিধি কালক্ষণে এদিকে চাইতেই নীলাদ্র চট করে নিজের হাতের আঁধপোড়া সিগারেট টুকু সাফওয়ানের মুখে পুড়ে দিলো।
সাফওয়ান চোখ বড় বড় করে অসহায় নেত্রে চেয়ে মায়ের পানে।
ঝড়ের গতিতে সিগারেট টুকু মাটিতে ফেলে পিষে ফেলার পায়তারায়।
নীলাদ্র ফিসফিস করে বলল,
“আমার অবলা সিগারেট টুকুকে না বলার সাহস পাস কই থেকে তুই? তাই শাস্তি।”
নীলাদ্র সাঁঈ সাঁই করে বাইক ছুটিয়ে পগারপার।
সাফওয়ান বিরবির করে,
“ এমন বন্ধ আর কারো না হোক খোদা। এর থেকে শত্রুও বোধহয় তার পরিপক্ষের মনের কষ্টটুকু বুঝতে সক্ষম হতো।”
রাত পেরিয়ে দিন গড়ায়।
অদিতি ভার্সিটিতে যায়।
তার প্রণয় পুরুষ জাওয়াদের মুখশ্রী তার চোখের সামনে ঘোরে।পুনরায় ব্যথায় ব্যথিত হয় তার হৃদয়স্থল।
নিস্তব্ধ করিডরে অদিতি নিষ্প্রাণ চোখে চেয়ে সামনে হাটে।
বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্য তার মনের মাঝে।
আচ্ছা তার কি ভার্সিটি পরিবর্তন করা উচিত?
“ নীড়ে ফিরে যাচ্ছেন বুঝি অতিথি পাখি?”
পুরুষালী পরিচিত গমগমে কন্ঠে অদিতি থমকে দাঁড়ায়। পা জোড়া থমকে দাঁড়াতে বাধ্য করে তাকে।
তারা যে বড্ড অবাধ্য। অদিতির কথা শুনতেই নারাজ।
অদিতি ঘুরে দাঁড়ায় না।জাওয়াদ নিজ উদ্যোগে সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।
অদিতি মাথা তুলে জাওয়াদের চোখে চোখ রাখে।
“ নিজ বিয়ের কার্ড বিলি করতে এসেছেন বুঝি প্রফেসর?”
জাওয়াদ হাসলো।তার হাসির ধরণ রহস্যময়। কিন্তু এত রহস্যের খোলাসা যে অদিতি করতে চায় না। তার মন সায় দেয় না।
“ তোমায় কে বলল আমার বিয়ে? আমি বলেছি?”
অদিতি মাথা নাড়ায়।
“ তবে?”
“ আপনি না বললেও জেনে গিয়েছি সকলের থেকে। আলাদা করে আপনার নিজে থেকে বলার প্রয়োজন নেই যে প্রফেসর।”
“ তাই নাকি?”
“ আফকোর্স।”
“ এত কনফিডেন্স আপনার মিথ্যার উপর অতিথি পাখি? এটা ঠিক নয়।”
জাওয়াদের হেয়ালী কথায় অদিতির দুঃখ বেড়ে দিগুণ হয়।
মানুষটা যদি একবার বলে
“এসব বিয়ে টিয়ে সব গুজব আমার অতিথি পাখি।
আপনিই যে আমার সম্বল।”
কই তা তো বলছে না।
অদিতি জাওয়াদকে পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে যায় ভার্সিটি থেকে।
রিক্সা নেয়।সোজা পৌঁছায় বাড়িতে।
জাওয়াদ নির্নিমেষ চেয়ে রয় অদিতির গমন পথে।
সময়টা দুপুর নাগাদ।তৃপ্তি গোসল ছেড়ে ড্রয়িংরুমের সোফায় বসে।ইদানীং মাথা ব্যথার ব্যমো হয়েছে তার।
অদিতি চুপচাপ বাসায় ঢুকে।
ব্যগটা টেবিলে রেখে খাতা কলম হাতে নেয়। খসখস শব্দ তুলে কিছু লেখে তাতে।
অতঃপর চট করে পৃষ্ঠাটি ছিড়ে সোফায় বসে থাকা মায়ের হাতে দিয়ে ঝট করে ওয়াশরুমে ঢুকে।
সাওয়ার নেয় সে অনেকটা সময় নিয়ে।ভালো লাগছে এখন।মনটা হালকা লাগছে।
এতক্ষণে তার কাগজে লিখা বাক্যটুকু তার মা নিশ্চয়ই পড়ে শেষ করে ফেলেছে।আচ্ছা তার সিদ্ধান্তে মা কি খুব বেশি বিস্মিত হবেন? নাকি একটু খানি? কোনটা?
তৃপ্তি অবাক বিস্ময়ে কাগজের টুকরোটুকু হাতে নেয়।
চোখ বুলায়।
“ তোমার অতিথি পাখি বিবাহ করতিতে চায় মা জননী।ভীষণ হ্যান্ডসাম একখান ছেলেকে বিবাহ করিতে চাই।তুমি কি তার জন্য পাত্র খুঁজিবে দয়া করিয়া।”
মেয়ের গুরুচন্ডালী সমস্যা জনিত কাগজের টুকরোয় লিখাগুলো হজম করতে কষ্ট হয় তৃপ্তির।
কয়েকমিনিট সময় নেয় নিজেকে ধাতস্থ করতে।
ভার্সিটিতে আজ নাওমী নীবিড় কে ইগনোর করে সমানতালে।একদম ইচ্ছে করে।
মগজ বিহীন পুরুষ মানুষের সঙ্গে সে কথা বাড়াতে চায় না মোটেও।একদমই না।
নীবিড় এগিয়ে এসে কথা বলতে চাইলেও নাওমী ইগনোর করে উল্টো পথে হাটা ধরে।
মধ্য দুপুরের পর মুহুর্ত।
নিস্তব্ধতা ড্রয়িংরুমের সোফায় বসে বসে নখ কাটছিলো।
তাসফি বাহির থেকে এসে গায়ের সাদা এপ্রোন পাশে রেখে বসে মেয়ের সামনের বরাবর সোফায়।
“ রুম্পা আমায় এক গ্লাস দিস তো।”
নিস্তব্ধতা আঁড়চোখে একবার মায়ের পানে চেয়ে নিজের কাজে মনোযোগী হয়।
রুম্পা তাসফির দিকে পানি এগিয়ে দেয়।
তাসফি নিঃশব্দে পানিটুকু শেষ করে গ্লাসটা সামনের ট্রি টেবিলে রাখলো।
“ তোমাদের ভার্সিটিতে থাকা ভালো কোনো মেয়ের সন্ধান দিতে পারবে নীরু?
আশা আমায় বলল তার পান্ডার জন্য নাকি একটা ঘরোয়া মেয়ে খুঁজছে।”
“ সাদাফ?”
“ ইয়েস।”
নিস্তব্ধতা হতভম্ব দৃষ্টিতে মায়ের পানে চেয়ে।
“ আমায় খুঁজতে বলছো?”
“ অবশ্যই।সেটাই বললাম নাকি?”
“ কিন্তু ভার্সিটির মেয়েরা তো ঘরোয়া হয় না মা।”
তাসফি চমৎকার ভাবে মুচকি হেসে মেয়ের পানে চাইলো।
“ সেটা আমরা বিচার করে নেব। তুমি শুধু মেয়ে খুঁজে দিও মামনী কেমন। তোমায় বিয়ের এক্সট্রা দাওয়াত দেওয়া হবে কনফার্ম।”
সময়টা বিকেল নাগাদ।গোধূলি বিকেল লালাভ আলোয় মোড়া। শীতল উষ্ণতা চারদিকে।
মাহরিসা প্রাকটিক্যাল ক্লাস শেষে বাড়ি ফেরার তাগিদে গেট পেরোয়।
অনমনষ্ক থাকায় গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা আদ্রিতের গাড়িখানা লক্ষ করে না।
গাড়ি ওভারটেক করার পর্যায়ে তাকে থেমে যেতে হয় হুট করে ভেতর থেকে ফ্রন্টসীটের পাল্লাটা মেলে দেওয়ায়।
হকচকিয়ে দু পা পিছিয়ে যায় মাহরিসা।
এতক্ষণে আদ্রিতের গাড়ির সঙ্গে স্বয়ং আদ্রিতকে দেখে সে শুষ্ক ঢোক গিলে।
বাবা-মাকে না জানিয়ে বিয়ে করে তাকে নিয়ে বোনা তাদের কিছু স্বপ্নকে ভঙ্গুর করেছে সে।
কি মুখ নিয়ে বিয়েটা সামনে আনবে সকলের সে?
এই তো সেদিন ও বাসন্তী মা তাকে একটা ছেলের ছবি দেখালো উৎফুল্লতার সহিত।
তার চোখে মুখে যেই খুশির ঝিলিক দেখতে পেয়েছিলো মাহরিসা তাকে কি করে পায়ে ঠেলে দেয়।কি করে সত্যতা প্রকাশ করবে সে? কেমন করে? কোন মুখে?
তাই তো সেই দুঃখে কদিন যাবত ইগনোর করে যাচ্ছে মাহরিসা আদ্রিত কে।
কিন্তু বোকা মাহরিসা নিজেও জানে হালাল স্বামীকে এত সহজে ইগনোর করে সব মুছে ফেলা যাবে না।তারওপর স্বামী যদি হয় আদ্রিতের মতন শক্ত-সামর্থ্য, তেজী, বলিষ্ঠ, এক নম্বরের ঘাড়ত্যাড়া অসভ্য ডাক্তার। তাহলে তো কথাই নেই।
তবুও ওই যে অবুঝ মনে একটুখানি সান্ত্বনা।
উত্তপ্ত অনলের জ্বলনে সে নিজেও তো জ্বলছে ক্রমাগত।এমন তো নয় সে সুখ পাচ্ছে নিজ অর্ধাঙ্গ কে ইগনোর করে।
“ উঠে আয়।”
গমগমে স্বরে আদ্রিত আদেশ ছুঁড়ে নিজ বউয়ের উদ্দেশ্যে।
“ ক..কেন আদ্রিত ভাই? আমি বাসায় যাবো তো।”
“ তোর বাপ এই মুহুর্তে হসপিটালে বসে বসে মেয়ে মানুষের দাঁত ওয়াশ করছে।রাতে যাবে বাসন্তী মায়ের কাছে।তোকে ওখানে কোনো দরকার নেই।
তোর দরকার আমার কাছে।সো তোর কোথায় থাকা উচিত? “
“ যেখানে দরকার।”
“ কোথায় দরকার?”
“ আমার আদু ভাইয়ার কাছে।”
আদ্রিত বাঁকা হাসে।
“ উহু মিস্টেক। তোর দরকার জামাইকে। দরকার জামাইয়ের সমস্ত আদর সোহাগ সাচ্ছন্দ্যে গ্রহণ করা।”
মাহরিসা শুষ্ক ঢোক গিলে।একদিনের আদর সোহাগে তার ঘাট হয়েছে।পুনরায় কি করে সইবে সে? কি করে।
“উঠ।”
মাহরিসা মাথা নাড়ায়।
“যাবো না আদু ভাইয়া।বাসায় যাবো।”
আদ্রিত সে কথা শুনতে নারাজ।
হাত বাড়িয়ে চট করে মাহরিসার এক হাত চেপে ধরে গাড়িতে বসিয়ে দেয়।
মাহরিসা আঁতকে উঠে।
ধূসর রংধনু ৩ পর্ব ৩৪
সাঁইসাঁই করে ছুটে চলে আদ্রিত গাড়ি নিয়ে।
মাহরিসা সীটের সঙ্গে একদম চুপসে বসে।
হু হা করার সাহস পাচ্ছে না মোটেও সে।
এতদিন লোকটাকে ইগনোর করেছে এত সহজে কি লোকটা তাকে ছেড়ে দেবে?
নিশ্চয়ই না।
এ পথ তার অচেনা।কোথায় যাচ্ছে ঘাড়ত্যাড়া লোকটা কে জানে।