না চাইলেও তুমি শুধু আমারই পর্ব ২৩ (৪)
মাইশা জান্নাত নূরা
আজ সূর্যের তেজ অন্যদিনের তুলনায় অনেক কম। একটু পর পর মেঘের দলেরা সূর্যকে ঘিরে ধরে তাকে তাপ ছড়াতে বাঁধা দিচ্ছে। পর্দার ফাঁক গলে সূর্যের নরম আলো এসে পড়েছে পিহুর ঘুমন্ত মুখশ্রীর উপর। হালকা বাতাসে ওর মুখশ্রীর উপর এসে থাকা অবাধ্য চুলগুলো তাদের অবাধ্যতা দেখাচ্ছে নিপুনভাবে। ঘুমের ভারে পিহুর চোখের পাতাজোড়া এখনও ভারী হয়ে আছে।
ঘড়িতে তখন দুপুর ১টা বাজে। পিহু ধীরে ধীরে চোখ খুলে নিজের উপরে থাকা কম্বলটা সরলো। মাথাটাও একটু ভার ভার লাগছে। জানালার দিকে চোখ পড়তেই বুঝলো সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে গিয়েছে।
পিহুর মুখশ্রীজুড়ে হালকা চিন্তার ছাপ স্পষ্ট হলো। বিরবিরিয়ে বললো…..
—”হায় আল্লাহ! এতো বেলা পর্যন্ত ঘুমিয়েছি আমি! সবাই কি ভাববে আমায় নিয়ে! শ্বশুরবাড়িতে এসে কোনো মেয়ে বেলা ১টা পর্যন্ত এভাবে পড়ে পড়ে ঘুমায়!”
পিহু তখনও বিছানায় আধশোয়া হয়ে আছে। মাথার এলোমেলো ছাড়ানো চুলগুলো কোনোরকমে ঠিক করে হাতখোপা করলো পিহু। ঠিক তখনই ওর রুমের দরজায় টোকা পড়লো। দরজার ওপাশ থেকে শিউলি শান্ত কন্ঠে বললো….
—”পিহু মা, উঠেছো তুমি ঘুম থেকে?”
পিহু তড়িঘড়ি করে বিছানা থেকে নেমে দাঁড়ালো। ওড়নাটা ভালোভাবে নিজের শরীরে জড়িয়ে নিয়ে নম্রস্বরে বললো….
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
—”জি, মেজো চাচী উঠেছি আমি।”
পরক্ষণেই রুমের দরজা খুলে শিউলি আর আতুশি একসাথে ভিতরে প্রবেশ করলেন। দুজনের ঠোঁটেই হালকা হাসির রেখা ফুটে আছে। শিউলি বললেন…
—”অবশেষে আমাদের ঘুমকন্যার ঘুম ভেঙেছে!”
পিহু লজ্জায় মাথা নুইয়ে নিলো। ওর শ্যম রঙা গাল দু’টোতেও হলকা লালচে ভাব স্পষ্ট হয়েছে। পিহু ধীরস্বরে বললো…..
—”আমি, আসলে রাতে ঠিক মতো ঘুমাতে পারি নি চাচী। তাই বুঝতেই পারি নি কখন সকাল পেরিয়ে দুপুর হয়ে গিয়েছে।”
আতুশি কোমল স্বরে বললেন….
—”আরে এতো ভাবার কী আছে মা! এটা তো তোমারও বাড়ি। এখানে নিজের সুবিধে মতো উঠবে, বসবে, চলাফেরা করবে। এতে কেউ কিছুই মনে করবে না তোমায় নি। বরং সবাই বলছিলো পিহু মা’কে ডাকাডাকি করো না। ও বিশ্রাম নিক।”
পিহু স্বস্তিমূলক চোখে আতুশির দিকে তাকালো। শিউলি পিহুর থুতনি স্পর্শ করে নিজের ঠোঁটে ছুঁইয়ে স্নেহভরা কন্ঠে বললেন….
—”তুমি তো আমাদের ঘরের মেয়ে। তোমার সুবিধা-অসুবিধার দিকে খেয়াল আমার না রাখলে কে রাখবে হুম? এখন এসব ভাবা-ভাবি বাদ দিয়ে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসো দেখি। আর ছোট তুই নিচে গিয়ে পিহু মায়ের জন্য খাবার সাজিয়ে আন জলদী।”
পিহু হালকা হেসে মাথা নেড়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো আর আতুশিও হাসিমুখে নিচে চলে গেলেন।
শিউলি বিছানায় বসলেন। কিয়ৎক্ষণ পর পিহু ফ্রেশ হয়ে আসতেই দেখলো বিছানার উপর ট্রে-তে খাবার সাজিয়ে রাখা হয়েছে। শিউলি আর আতুশি পাশাপাশি বসে আছেন। পিহু তাদের মুখো মুখি এসে বসলো। ট্রে-এর উপর দু’টো সাদা পরোটা, সবজি, সিদ্ধ ডিম, আর এক পাশে এক গ্লাস দুধ রাখা অবস্থায় দেখলো পিহু। শিউলি আদুরে স্বরে বললেন….
—”আজ আমরা তোমায় নিজের হাতে খাইয়ে দিবো পিহু।”
পিহু লজ্জা মাখা কন্ঠে বললো….
—”না না মেজো চাচী, এমনিতেই আপনারা আমার জন্য কষ্ট করে খাবার রুম পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন এখন আর আপনাদের কষ্ট বাড়াতে চাই না আমি।”
আতুশি একটু কড়া কন্ঠেই বললেন….
—”মায়েরা মেয়েকে নিজের হাতে খাবার খাইয়ে দিবে এতে কিসের কষ্ট হবে শুনি? বেশি কথা না বলে চুপচাপ বসে থাকো। আর আমরা খাইয়ে দিবো তা খেয়ে নিবে বুঝলে!
পিহু আর না করতে পারলো না। প্রথমে শিউলি রুটির সাথে অল্প সবজি নিয়ে পিহুকে খাইয়ে দিলেন এরপর আতুশিও খাইয়ে দিলেন৷ এভাবেই ট্রে-তে থাকা তিনভাগ খাবার তারা পিহুকে খাইয়ে দিলেন।
সেইসময় নীরা পিহুর রুমে প্রবেশ করে বললো….
—”বাড়ির নতুন মেয়েকে পেয়ে পুরোনো মেয়েকে দেখছি তার দুই মা-ই ভুলে গিয়েছে।”
নীরা কন্ঠস্বর কর্ণপাত হতেই ওরা তিনজন নীরার দিকে তাকালেন। নীরার ঠোঁটে হাসির রেখা ফুটে আছে। আতুশি মাথা নিচু করে নিয়ে অভিমানী স্বরে বললেন…
—”তুই তো মায়ের হাতে উঠিয়ে খাবার খাওয়া পছন্দ করিস না নীরা। শেষ কবে তোকে আমি বা ভাবীরা তোকে খাইয়ে দিয়েছিলাম তা আমাদের কারোর-ই খেয়াল নেই।”
নীরার হাসিমাখা মুখটা মিইয়ে গেলো মূহূর্তেই। পরপরই নীরা শব্দ করে একবার নিঃশ্বাস ফেলে এগিয়ে এসে মলিন স্বরে বললো….
—”ঠিক বলেছো মা। ভুলটা আসলে আমার-ই ছিলো। নিজের পরিবারের মানুষদের স্নেহ-ভালোবাসা অত্যাধিক ভাবে পেতে পেতে তার কদর করতে ভুলে গিয়েছিলাম। তবে তোমাদের সবার থেকে ২ টো বছর দূরে থাকার পর খুব ভালো ভাবেই অনুভব করতে পেরেছি আমার ভু*ল টা।”
পিহু বললো….
—”মেজো চাচী, ছোট চাচী! মান-অভিমানের পালা এবার মিটিয়ে নাও। নীরা নিজের ভু*ল টা বুঝতে পেরেছে যেহেতু তাই মা হিসেবে তোমাদের উচিত নয় কি ওকে ক্ষমা করে দিয়ে আবারও আপন করে নেওয়া!”
আতুশি কিছু বললেন না। শিউলি নীরার হাত ধরে পিহুর পাশেই ওকে বসিয়ে দিয়ে আদুরে স্বরে বললেন…
—”মায়েরা কখনই তাদের সন্তানদের উপর লম্বা সময় ধরে রাগ-অভিমান করে থাকতে পারেন না। আমরাও এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নই।”
এই বলে শিউলি ট্রে-থেকে রুটি-সবজি নিয়ে নীরাকে খাইয়ে দিলেন। নীরার ঠোঁটে হাসির রেখা ফুটে উঠলেও সে নিজের জন্ম দায়িনী মা আতুশির দিকে তাকিয়ে আছে। নীরার চাহুনি বুঝিয়ে দিচ্ছে ওর মনের ভিতর কোন ইচ্ছেরা পূরণ হওয়ার জন্য ছটফট করছে। শিউলি আতুশিকে বললেন…
—”খাইয়ে দে মেয়েকে!”
আতুশি কোনো রেসপন্স করলেন না। পিহু আতুশির হাতের উপর হাত রাখলে পিহুর হাতের উপর আতুশির চোখ থেকে দু’ফোটা অশ্রু ঝরে পড়লো। পিহুর ভিতরটা কেমন যেনো করে উঠলো। পিহু দ্রুততার স্বরে বললো….
—”ছোট চাচী, কেঁদো না তুমি। আজ তো বড় সুখের দিন। যেই মেয়েকে নিজের চোখের সামনে ঘুরাঘুরি করতে দেখার জন্য তোমার দু’চোখ তৃষ্ণার্থ হয়ে ছিলো, যেই মেয়ের মাথায় আদুরে হাত বুলানোর অপেক্ষায় থাকতে থাকতে তোমার হাত জোড়া অবশ হয়ে আসছিলো সেই মেয়ে আজ তোমার সামনে বসে আছে তোমার হাতে তুলে দু’মুঠো খাবার খাওয়ার আশায়। মান-অভিমান গুলোকে এবার বিসর্জন দাও। নিজের হাতে নীরাকে খাইয়ে দাও চাচী। নিজের ভিতরে জমে থাকা সব কষ্ট গুলোকে এবার ঢেলে ফেলো নীরার সামনে। ওকে নিজের বুকে জড়িয়ে ধরো তারপর।”
নীরার ঠোঁটজোড়া কাঁপছে, দু’চোখ ছলছল করছে, বুকের ভিতরটাও পুঁ*ড়*ছে। নীরা কাঁপা কন্ঠে ‘মা’ বলে ডাকতেই আতুশি বিছানা থেকে নেমে নীরার পাশে এসে ওকে বুকে জড়িয়ে নিলেন। মা-মেয়ে একসাথে হু হু করে কেঁদে উঠলো। কতোদিনের জমানো ব্য*থা, অভিমান, রাগ সব আজ এই কান্নার মধ্যদিয়ে দূর হয়ে যাবে। পিহু আর শিউলির চোখেও পানি জমে এসেছে।
তেজ ওর বাইকটা রাস্তার পাশেই পার্কিং করে রাখার স্থানে রাখলো। সূর্যটা তখন মাথার উপর বিরাজ করছে। সূর্যের তাপ কম হলেও হালকা গরম বাতাস বইছে চারপাশে। ইলমা তেজের পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। তেজ চোখ তুলে সামনে তাকালো। একটা সরু গলির মতো দেখতে রাস্তা যার দুই পাশে ঠাসাঠাসি করে আছে শ’খানেক দোকান। দোকানগুলোয় সারি সারি ভাবে সাজানো রয়েছে একটা নতুন বাসা সাজিয়ে নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় যাবতীয় জিনিসপত্র। খাট, আলমারী, তোশক, বালিশ, চাদর, হাঁড়ি-পাতিল, পর্দা, গ্যাসের চুলা, রাইস কুকার কি নেই!
শ’খানেক দোকানে ভির জমিয়ে রেখেছে আরো ২-৩শত মানুষজন। এই মানুষের ভির ঠেলেই যে যার মতো কেনাকাটা করছে। দোকানদারদের ডাকাডাকি, হাঁকাহাঁকি তো আছেই৷
তেজ ওর চোখে-মুখে বিকৃতির হালকা ছাপ ফুটিয়ে বললো…..
—“এটাই সেই জায়গা?”
ইলমা হেসে উত্তর দিলো….
—“হুম, এখান থেকেই আমি আমার অবিবাহিত জীবনের ছোট্ট সংসারের জন্য যাবতীয় জিনিসপত্র কিনবো। চলুন এবার ভিতরে যাওয়া যাক।”
তেজের চোখে-মুখে এবার বিরক্তি ও অস্বস্তির ছাপও স্পষ্ট হলো। তেজ এসব জায়গায় এসে কিছু কেনে নি কখনও। সে বড় বড় মলে গিয়ে, ব্রান্ডের শো-রুমে গিয়ে এসির বাতাস খেয়ে কেনাকাটা করতেই অভ্যস্ত। তাই এমন ভির ঠেলাঠেলি জায়গায়, ১০০ রকমের মানুষের চিৎকার চেচামেচি করে জিনিসপত্র নিয়ে দাম দরকষা করা দৃশ্যগুলো ওর কাছে সম্পূর্ণই নতুন লাগছে।
ইলমা তেজকে নিয়ে একটা হাঁড়ি-পাতিলের দোকানে ঢুকে দু’হাতে দু’টো ছোট ও মাঝারি আকারের পাতিল তুলে নিয়ে সেখানে থাকা একজন কর্মচারীকে উদ্দেশ্য করে বললো….
—“এই পাতিল দু’টোর দাম কতো?”
তেজ নিরব দর্শক হয়ে দেখছে কেবল। কর্মচারীটি বললেন….
—” অন্য কাস্টোমার হইলে আপা দাম কিন্তু বেশিই চাইতাম। আপনারে দেইখা মনে হইতাছে দামদর সম্পর্কে জ্ঞান ভালো আছে। তাই এই পাতিল দুইটা শুধু আপনার জন্য ৪০০ টাকা রাখতে পারবো।”
ইলমা সঙ্গে সঙ্গে মুখ কুঁচকে বললো…..
—“দু’টো পাতিল মাত্র, তার দামও চাইছেন ৪০০! এটাকে কম বলা বলে? শুনেন ভাই, এই একই পাতিল আরো ২টো আমার ঘরে আছে। আমি ক’দিন আগেই নিয়ে গিয়েছি এই বাজার থেকেই। দাম পড়েছিলো দেড়শ টাকা। তাই আমি দেড়শ এর বেশি এক টাকাও দিবো না আপনাকে।”
তেজের ভ্রু কুঁচকে এলো ইলমার কথা শুনে। কর্মচারীটি মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললেন….
—”কি যে কন, এতো কমে তো আমরা কিনতেও পারি নি আপা। আচ্ছা আপনে যখন নিছেন-ই তাইলে ২৫০ টাকা দিয়েন যান। আর কমাইয়েন না।”
ইলমা তো নাকোচ। পাতিল দু‘টো সেখানেই টেবিলের উপর রেখে বললো…
—”একই পাতিল ১০০ টাকা বেশি দিয়ে নেওয়ার মানে হয় না ভাই। আপনি বরং রাখেন। আমি অন্য দোকানে দেখছি। তেজ, চলুন এখান থেকে।”
এই বলে ইলমা চলে যাওয়ার জন্য উদ্দত হতেই কর্মচারীটি বললেন….
—”আচ্ছা আপা, আপনের কথাই থাক। নেন দেড়শ তেই দিচ্ছি।”
এহেনু অবস্থায় তেজের মুখ হা হয়ে গেলো। ইলমা হাসিমুখে বললো…
—”হুম সেই মানবেন ই। শুধু শুধু তালবাহানা করেন আপনারা।”
কর্মচারীটি বললেন….
—”আপনে আপা বহুত কড়া কাস্টোমার। আপনের জায়গা থেকে নড়বেন না। কি আর করমু কন! জিনিসপত্র এখন বেঁচা কম যাচ্ছে তাই মানতে হলো। কিন্তু বড্ড ঠকা হইয়া গেলো।”
ইলমা তেজের থেকে ১৫০ টাকা নিয়ে কর্মচারীটিকে দিয়ে বললো….
—”ঠকেন নি মোটেও। আপনারা লাভ ছাড়া কখনই জিনিস কাস্টোমারের হাতে ছাড়বেন না। এ আমরা জানি।”
কর্মচারীটি কেবল হাসলেন। এরপর ইলমা পাতিলের ব্যগটা তেজের হাতের ধরিয়ে দোকান থেকে একসাথে বের হলো। তেজ বললো….
—”মাত্র ১০০-১৫০ টাকার জন্য আপনারা এতো সময় নিয়ে তর্কা-তর্কি করেন!”
ইলমা বললো….
—”মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ঘরের মানুষদের কাছে ১০ টাকাও অনেক মূল্য রাখে।”
তেজ মনে মনে ভাবলো…..
‘আমরা যারা অঢেল টাকা হাতে পাই কোনো পরিশ্রম ছাড়াই তারা এসব বুঝি না। কোন খাতে কেমন ভাবে ব্যয় করা উচিত, দু’টো টাকা বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করা উচিত এসব নিয়ে কখনই ভাবি না। সত্যিই আমাদের থেকে এখানে চলাচল করা প্রতিটি মানুষের জীবন কতোটা ভিন্ন!’
এরপর একে একে ইলমা তেজকে নিয়ে অনেকগুলো দোকান ঘুরে নিজের বাসার জন্য যাবতীয় জিনিসপত্র কিনলো। আস্তে আস্তে তেজের বিরক্তি ভাবটাও কেটে গেলো। মধ্যবিত্ত মানুষদের জীবন-যাপন করার ধরণ ও অনেকটাই আন্দাজ করতে সক্ষম হলো। তারা টাকাকে কতোটা মূল্য দেয় তাও তেজ বুঝতে পারলো।
পার্টি অফিসে বিভিন্ন উপরমহলের নেতাকর্মীদের সাথে মিটিং করছে সারফারাজ। সেইসময় ওর ফোনে পরপর কয়েকটা মেসেজের নোটিফিকেশন এর শব্দ আসলে ফোনটা হাতে নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে ঢুকতেই মেসেজ গুলো দেখতেই ওর চোয়াল শক্ত হয়ে এলো। ফর্সা মুখটা রক্তিম বর্ণ ধারণ করেছে। সারফারাজ ওর হাত শক্ত ভাবে মুষ্টিবদ্ধ করে নিলো। ফলস্বরূপ হাতের শিরাগুলো স্পষ্ট হয়ে উঠলো।
তৎক্ষনাৎ সারফারাজ বসা থেকে উঠে টেবিলের উপর দু’হাত ভর দিয়ে কর্কশ কন্ঠে বললো…..
—”এই মিটিং এখানেই সমাপ্ত করা হচ্ছে। পরে যখন মিটিং বসানো হবে আপনাদের সে বিষয়ে অবগত করা হবে।”
এই বলে সারফারাজ আর কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে মিটিং রুম থেকে বের হয়ে এলো। সেখানে উপস্থিত সবাই সারফারাজের এমন আচারণে হতবাক হয়ে গিয়েছে। বাহিরে আহাদ দাঁড়িয়ে ছিলো। সারফারাজ আহাদকে উদ্দেশ্য করে বললো….
না চাইলেও তুমি শুধু আমারই পর্ব ২৩ (৩)
—”গাড়ির চাবিটা দাও, আহাদ।”
আহাদ চাবিটা এগিয়ে দিয়ে বললো….
—”স্যার, কোথায় যাবেন? আমি নিয়ে যাই!”
সারফারাজ শক্ত কন্ঠে বললো….
—”না, আমি একাই যাবো।”
এই বলে সারফারাজ তৎক্ষণাৎ স্থান ত্যগ করলো। আহাদ বিরবিরিয়ে বললো…..
—”হুট করে কি হলো স্যারের! এতো রেগে আছেন কেনো? কোনো বড় সমস্যা নয় তো!”