নির্মল প্রেমানুভব গল্পের লিংক || নূরজাহান ফাতেমা

নির্মল প্রেমানুভব পর্ব ১
লেখিকা নূরজাহান ফাতেমা

রাদিন ভাইয়ার সাথে নিজের বিয়ের কথা চলছে শুনে ভড়কে গেলো সাফা।রাতে ঘুমানোর পূর্বে মুঠোফোনের কৃত্রিম পর্দায় বুদ হয়ে ছিল সে।হটাৎ তার বড় বোনের মুখে উচ্চারিত এহেন বুলি শুনে ভ্রু কুঞ্চিত করে ফেলল।রাদিন নামটা শুনতেই চোখের পর্দায় রাশভারি শক্ত চোয়ালের অধিকারী ফরসা বর্ণের সুদর্শন চেহারা অক্ষিপটে ভেসে ওঠে তার।লোকটা যতটা সুদর্শন তার চেয়ে কয়েকগুন বোরিং।খুব কম কথা বলা গম্ভীর স্বভাবের মানুষ রাদিন।এমন একটা মানুষের সাথে সারাজীবন কাটাতে হবে ভেবে শুকনো ঢোক গিলে সাফা।তার উপর সম্পর্কে খালাতো ভাই হয় সে।ভাই গন্ধটা থাকার পরও কেন বর বানাতে চাইছে বুঝে আসে না সাফার।সন্দিহান হয়ে প্রশ্ন করে,

“মজা করছো না তো?বিয়ে সাদী মজা করার জিনিস না আপু।”
সাফার জোর হীন বুলি শুনে বিষ্মিত হয় মাহমুদা। আশ্চর্য কন্ঠে জবাব দেয়,
“তোর কেন মনে হল আমি মজা করছি?আমি তো যা সত্যি তাই বলছি।”
বোনের ঐকান্তিক বুলি শুনে অপ্রস্তুত হয়ে যায় সাফা।হটাৎ অসস্তি ঘিরে ধরে নেত্রযুগলে।মাথা নুইয়ে ফেলে সে।আবারও জিজ্ঞেস করে,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“আব্বু নিজে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে?”
“হুম।তোর মতামত কি তাই বল?”
“বিষয়টা এখানে শেষ করো।এ বিয়ে আমি করছি না।”
জোর কন্ঠে প্রতিবাদ করে সাফা।হতভম্ব হয়ে যায় মাহমুদা।রাদিন খুব ভালো ছেলে।ওদের বড় খালার জেষ্ঠ পুত্র সে।আচার ব্যবহারের নম্রতা অমায়িক।এই যুগেও সে একটা সিগারেট অবধি ছুঁয়ে দেখেনি।এমন পাত্রকে পাওয়া সৌভাগ্যের ব্যপার।সেখানে তাকেই কিনা রিজেক্ট করছে সাফা!
সন্দেহ জাগ্রত হয় মাহমুদার অন্তরে।সুক্ষ্ম চোখে তাকায় বোনের দিকে।দ্বিধা করে জিজ্ঞেস করে,

“তোর কি পছন্দের কেও আছে সাফা?”
বোনের প্রশ্নে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যায় সাফা।
“আমার জীবনে এমন কেও নেই।হটাৎ এসব জিজ্ঞেস করছ কেন?”
মাহমুদার বাঁকা ভ্রুজোড়া সোজা হলো, কপালের বিরক্তির ভাজ সরে গেল। স্বরে নেমে এলো নমনীয়তা,

“জুলেখা খালার বিয়েটাও এ এলাকায় হওয়ায় ওনাদের পরিবারের সাথে আমাদের পরিবারের বেশ ভালো সম্পর্ক আছে।জুলেখা খালারও খুব সখ এ বাড়িতে সম্বন্ধ করে সম্পর্কটাকে অটুট রাখার।রাদিনের দশ বছর বয়স কালীন তুই হলি।তোর জন্মের সময়ই আম্মুর কাছে উনি আবদার করেছিলো তোকে।আমরাও ওনার প্রতি সম্মান স্বরুপ সায় দিয়েছিলাম।বাড়ির কাছে চোখের সামনে থাকবি তুই এটা বাড়ির সবার কাছেই আনন্দের লেগেছে।এর মাঝে তোরা বড় হলি।

রাদিনের জব হওয়ার পর থেকেই দুই বছর হল ওরা চেয়ে আসছে তোকে।তোর বয়সটা আঠারো হোক এই অপেক্ষাই ছিলাম আমরা।আর রাদিনকে আমরা সবাই ছোটোবেলা থেকে চিনি, বেশ চমৎকার ছেলে।প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, ভদ্র, নম্র ও বেশ।তাই গতকাল যখন রফিক খালু আবারও ফোন দিল আব্বুও আপত্তি জানাইয়নি।রফিক খালুর প্রস্তাব গ্রহন করে নিজেদের মাঝে কথা বলে রেখেছে।তাই আমরা চাচ্ছি কয়েকটা মুরুব্বী নিয়ে ঘরোয়া ভাবে আকদটা সেরে ফেলতে।তোর পছন্দের কেও না থাকলে রাদিনকে বিয়ে করে ফেল।”

বিস্ময়ের আকাশ ছুঁলো সাফা। দু’চোখের নেত্রপল্লব এক করতে ভুলে গেল। চোখ মুখে রাজ্যের চমক। তার এই একুশ বছরের জীবনে এতটা ভয়ংকর আর চমকপ্রদ সংবাদ প্রথম শুনল। তার কানে ধুয়া তুলল মাহমুদার কথাগুলো।
কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে বসে রইল সে। ইতঃপূর্বে বাসায় তার বিয়ের কথা উঠেনি, আজই উঠল। তাও কাকে নিয়ে? তার সবচেয়ে অপছন্দের একজন মানুষকে নিয়ে!

মাহমুদা খুব ভালো করেই জানে সে রাদিন ভাইয়াকে কতোটা অপছন্দ করে।
রাশভারি গোছের মানুষ রাদিন।নির্জনতা প্রিয় মানুষ সে।কোনপ্রকার বিশৃঙ্খলা পছন্দ করে না একদম।কেউ ওনার ব্যক্তিগত জিনিস স্পর্শ করলে ধমক লাগিয়ে দেয়।এসব বিষয়ে পূর্বে জানত না সাফা।একদিন ও বাড়ি গিয়ে আটকা পড়ায় বোরিং লাগছিলো তার।রাদিনের ফোন নিয়ে গেমস খেলার উদ্দেশ্যে ফোনের দিক হাত বাড়াতেই স্বজোরে ধমক লাগিয়ে দেয় রাদিন।ভয়ে মিথ্যা বলল সাফা,

“আ..আম্মুকে কল দিতে চেয়েছিলাম।”
গম্ভীর কন্ঠে রাদিন বলেছিল,
“অন্যের ব্যক্তিগর ফোন ধরতে হয় না এই মিনিমাম সেন্সটুকু তোমার নেই?কারো সাথে কথা বলবে আমাকে বললে পারতে।আমি কল দিয়ে দিতাম।কল দেয়ার বাহানায় অন্যের ফোন স্ক্রোল করার ধান্দা বাদ দেও।”
এ ঘটনার রেশ ধরেই রাদিন তার অপছন্দের লিষ্টে।আকস্মিক পুরনো ঘটনা স্মরণে এলো সাফার।কত ধুরন্দর আর চতুর লোক ভাবা যায়।এ বিষয়টা সে বুঝেছিল কিভাবে!লজ্জায় অপমানে সাফার মেদুর গাল দুটো লাল হয়ে উঠেছিল।সে ঘটনা মনে হতেই আবারও প্রতিবাদ করে বলল,

“অসম্ভব এ বিয়ে আমি করছি না।”
“কিন্তু কেন?”
“প্রচুর গম্ভীর আর একরোখা রাগী মানুষ রাদিন ভাই।কেও কোন অন্যায় করার আগেই চট করে ধরে ফেলে শাস্তি দেয়।বাদ যায় না কোন আত্মীয়ও।এমন একটা জাদরেলের সাথে সারাজীবন কাটাতে বলছো আমাকে! অসম্ভব।এ ছাড়াও ওনার সান্নিধ্যে ঘন্টা খানেক বসে থেকেও দু’টো কথা বের করা যায় না।দু’টো দিন ওনার সাথে থাকলে যে কেও কথা বলা অর্ধেক ভুলে যাবে।আমি উনার সাথে একঘন্টা থাকতে পারব না, সেখানে বিয়ের মতো বন্ধনে জড়িয়ে সারাজীবন কাটানো তো বিলাসিতা। আমি উনাকে কোন ভাবেই বিয়ে করব না।”

দৃঢ়তার সাথে জানাল সাফা।
বোনকে বুঝানোর চেষ্টা করলেন মাহমুদা,
“রাদিন দেখতে শুনতে বেশ, আচার ব্যবহার ও ভালো।সুদর্শন ছেলে হয়েও প্রেম প্রীতির মাঝে নেই।বি.সি.এস. দিয়ে সরকারী কলেজে জয়েন করেছে।সবমিলিয়ে ফার্স্ট ক্লাসের ছেলে সে।ব্যক্তিগত জীবনেও একটু গম্ভীর হলেও ভীষণ অমায়িক ব্যবহার তার। আমিও তো ওকে ছোটোবেলা থেকে চিনি।পড়ার সুত্রে বাড়িতে খুব বেশি থাকে নি।তোর সাথে অনুষ্ঠাম্ন ছাড়া কখনো দেখা হয়নি তাই এমন মনে হচ্ছে।”

মাহমুদার কথা সাফার কাছে বিশ্বাসযোগ্য নয়।তাকে রাজি করানোর জন্য আপু বানিয়ে বলছে এসব বুঝলো সে।রাদিনের মতো রোবটিক টাইপের মানুষ কি না প্রাণবন্ত!অসম্ভব, এ লোক তো হাসতেও জানে না।অধৈর্য হয়ে ওভাবেই শুয়ে পড়ল সাফা।দৃঢ় গলায় বলল,
“এই ব্যাপারটাকে এখানেই ইতি টানো, আপু। দ্বিতীয়বার এ নিয়ে কোন কথা শুনতে অনিচ্ছুক আমি।আমার সম্পূর্ন মতামত ভাইয়াকে বিয়ে করব না। না এখন, আর না কখনো।”
“বিয়ে তোকে করতেই হবে সাফা।আব্বু কথা দিয়ে ফেলেছে।আর আব্বুর কথা কেও খোয়াতে পারে না সে তুই ভালোই জানিস।”

এক রাশ বিস্ময় এসে ঘিরে ধরল সাফাকে। তার যেন বিশ্বাস হচ্ছে না মাহমুদার কথাগুলো।রাদিনের সাথে তার বিয়ের কথা চলছে। পুরো বিষয়টা মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। তার অগোচরে কত বড়ো ষড়যন্ত্র চলছিল তাকে নিয়ে, অথচ সে টের অবধি পায় নি! আপু কিভাবে পারল এত বড়ো কথা লুকাতে? এমন প্রশ্ন মস্তিষ্কে হানা দিতেই কপালে চিন্তার ভাজা পড়ল তাঁর।রাদিন ভাইয়া? তিনি কিভাবে পারলেন এককালের ছাত্রীকে বিয়ের কথা ভাবতে! পরিবারের সিদ্ধান্ত নিশ্চয়ই তার অজানা নয়, তার সম্মতি না পেলে কথা সাফা অবধি আসতো না। তিনি হয়তো আগে থেকেই জানতেন। ভেতরে ভেতরে কী ভেবে বসে আছেন আল্লাহ জানে!

হটাৎ ঘাড় ঘুরিয়ে প্রন করল সাফা,
“ভাইয়াও আগে থেকেই এ বিষয়ে জানতেন?”
“না।তোদের মাঝে বিবাহ পূর্ব কোন সম্পর্ক হোক এটা চাইনি আমরা।এ কারনেই তোদের জানানো হয়নি আগে।বিয়ের কথা শুনে মনও পাল্টে যেত তোদের।ওকেও কাল রাতে জানানো হয়েছে।”
হাঁফ ছেড়ে বাঁচল সাফা।উত্তরটা হ্যা হলে সে চাপ নিতে পারত না।আবারও জিজ্ঞেস করে,

“সে রাজী হয়েছে বিয়েতে?”
“হ্যা হয়েছে।সবাই তো আর তোর মতো হাঁদারাম না!”
চঞ্চলমনা সাফা হঠাৎ রুষ্ট হল।রাগের অর্ধাংশ সবার উপর, বাকি অর্ধাংশ রাদিনের উপর।সাফার রাগটা রাদিনের সম্মতি দেয়া নিয়ে।রাদিনের উপর এতদিনের জমে থাকা রাগের সাথে কয়েকগুন রাগ যোগ হলো। রাগ রূপ নিল বকাঝকায়।মনে মনে ইচ্ছামত বকবক করলো রাদিনকে। এসবের মাঝে চোখে ঘুম নামলো না।

ফজর নামাযের আজান পড়তেই উঠে গেল সাফা।নিকষ কালো পবন ধ্বনিত হলো ‘আল্লাহু আকবর’ আওয়াজে।নামায পড়ে আবারও শুয়ে পড়ল সে। সময়ের বহমানতায় আকাশের কোলজুরে উঁকি দিল ভোরের রবি।জানালার ফাঁক গলিয়ে এক মুঠো সোনালী রোদ গা ছুঁয়ে দিতেই বিছানা ছেড়ে উঠে পড়ল সে।করিডোরে বসে প্রকৃতিতে মনোনিবেশ করল।সাতটা বাজতেই দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ এলো। এক বাচ্চা কন্ঠ ওপাশ থেকে বলে উঠল,

“আন্টি, উঠেছো?নানুমনি টেবিলে নাস্তা দিয়েছে, খেতে আসো।”
সাফা ফ্রেশ হয়ে কলেজের জন্য তৈরি হয়ে নিল।
সাফার রুমের সামনেই ডাইনিং প্লেস।খেতে বসেছে মাহমুদা।সাফার বাবা প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক।আজ অনেক আগেই খেয়ে বেরিয়ে পড়েছে।বিশেষ কাজ আছে নাকি।না খেয়েই কলেজের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ল সাফা।
সাফা এবার প্রানিবিদ্যা বিষয়ে স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত আছে। প্রতিদিন নিজ ডিপার্টমেন্টে গিয়ে চঞ্চল্য সাফা আজ বিষন্নতায় ডুবে রইল।দুই বান্ধবী অনেক চেয়েও হাসাতে পারল না তাকে।গুটি কয়েক ক্লাস করে বেরিয়ে পড়ল তারা।আর ভালো লাগছে না।সকালে না খেয়ে আসায় মাইগ্রেনের ব্যাথা দ্বিগুণ হল।ব্যাগ কাঁধে নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে দুই বান্ধবীর উদ্দেশ্যে বলল,

“আজ আর ক্লাস করব না। বের হ।”
নিশি ভ্রু কুচকে বলল,
“আজকে দুইটা গুরুত্বপূর্ন ক্লাস আছে।ক্লাস করে যাই?”
“আচ্ছা তোরা থাক।আমি ক্লাস করবনা।”
মুখ চাওয়া চাওয়ি করল ওরা।হয়তো সাফার মনের অবস্থা বুঝল।তারপর উঠে দাঁড়ালো ওর সাথে।

নদীর ধারে উন্মুক্ত হাওয়ায় ঘোরাঘোরি করছে ওরা।হটাৎ নীল শার্ট, কালো প্যান্টের সুদর্শন পুরুষকে তাদের দিকে এগোতে দেখে হাত পা শীতল হয়ে এলো সকলের। অস্বস্তিতে মুখটা ছেয়ে গেল সাফার। চাপ দাঁড়ির গম্ভীরতরলম চোয়ালের দিকে তাকিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে গেল সে, এক পলক চেয়ে অন্যদিকে চোখ ফিরিয়ে নিল।
নিশি ও সাথী রাদিনকে দেখে সালাম দিল।ব্যস্ত ভঙিমায় ওদের দিকেই এগিয়ে আসছিল রাদিন।ওদের সালাম শুনে দাঁড়িয়ে গেল। সালামের উত্তর দিয়ে হাতগড়িতে সময় দেখল। তারপর ভ্রু কুঁচকে বলল,

“এখন তো ক্লাস টাইম।ক্লাস বাঙ্ক মেরে এখানে কি কর তোমরা?”
রাদিনে গম্ভীরমাখা কথায় ভয় পেল দুই বান্ধবী।আজ নিশ্চিত বাসায় জানিয়ে দিবে খবরটা।তারপর হাজারটা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। সাফার অবিভক্তি বোঝা দায়।এখনো অন্য দিকে তাকিয়ে অস্বস্তি সংবরণের মত্ত।সাফা নিশ্চুপ দেখে ওরা দু’জন অপ্রস্তুত হয়ে বলল,
“ভালো লাগছিলো না।তাই একটু ঘুরতে এসেছি।”
রাদিন ভ্রুকুটি করে বলল,

“ক্লাস বাঙ্ক দেয়া ভালো কাজ নয়। এই কাজের জন্যই তোমাদের প্রথম বর্ষের ইম্প্রুভ পরীক্ষা দিতে হচ্ছে।এ বছরও যেন দিতে না হয়।আদু মিয়াও প্রতিদিন ক্লাস করত।”
বলে সামনের দিকে পা বাড়াল।যাওয়ার পূর্বে আড়চোখে দেখে নিল সাফাকে ওর ।চেহারার চোরা অস্বস্তি পরখ করে নিল এক পলকে।সাফা ঘাড় ঘুরিয়ে সামনে তাকাল।চোখে চোখ পড়তেই ইতস্ততায় ছেয়ে গেল সে।মুহুর্তেই মাথা ঘুরিয়ে ফেলল সে।রাদিনে দৃষ্টিতে কি আজ অন্য কিছুর আভাস ছিল, যা তাকে বিভ্রান্ত করল? না কি সবটাই তার মনের ভুল। দ্বিধায় পড়ল সাফা।

রাদিন চলে যেতেই সাফা রাগে গজগজ করে বলল,
“বেটা হিটলার ঘরের বাইরেও হিটলারগিরি করে।আমরা ক্লাস বাঙৃক মারলে তোর কি।”
নিশি বলল,
“রসায়ন বিভাগে নামেই পড়েছে।আসলে রস কষ কিছু নেই।এইজন্য প্রেম জোটে নি কপালে।ওটা দিয়েও পাক পবিত্র পুরুষের টয়াগ ঝুলাইছে।আস্ত খবিশ।”

বস্তুত সারা বছর ক্লাস বাঙ্ক দিয়ে রসায়নে ফেইল এসেছে ওদের।এটা পুরো এলাকায় ছড়িয়ে গিয়েছে।
বাসায় ফিরেই বিছানায় গা এলিয়ে দিল সাফা।মাইগ্রেনের ব্যাথার ওষুধ খাওয়ায় নিমিষেই মিলিয়ে গেল ঘুমের রাজ্যে।ঘুম থেকে উঠতে মাগরিব নামাযের সময় গড়িয়ে ফেলল।ভালো ঘুম হওয়ায় মনটা একটু প্রসন্ন হয়েছিল সাফার।কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী হল না।পুরুষালী গম্ভীর কন্ঠ শুনে সন্দিগ্ধ হয়ে উঁকি দিল ঘর থেকে।ড্রয়িংরুমে বসা মানুষ দুটোকে দেখে চেহারায় রঙ পাল্টালো তার।ফ্যাকাশে চেহারায় ভয়ের আভা দেখা গেল।সামনে বসা পুরুষটিকে দেখে অন্তরাত্মা কেঁপে উঠল সাফার।

নির্মল প্রেমানুভব শেষ পর্ব