নিষিদ্ধ শব্দের দিনলিপি পর্ব ১৭
ঝিলিক মল্লিক
ইবনে সিনা হাসপাতালের দোতলার দুইশো এক নাম্বার কেবিনের বাইরের করিডোরে সারি বেঁধে সাজিয়ে রাখা চেয়ারগুলোর একটাতে মাথা এলিয়ে চোখ বুঁজে শুয়ে আছে আরবিন। ঘুমিয়ে পরেছে কিনা তা বোঝা যাচ্ছে না। কারণ ওর মুখের ওপরে একটা আর্মি ক্যাপ অবস্থান করছে।
সোহরাব হোসেন বেশ কয়েকবার বাইরে থেকে ভেতরে যাওয়া-আসা করছেন। এবার ফিরে তিনি আরবিনের পাশের চেয়ারটাতে গিয়ে বসলেন। তারপর ঘাড় ঘুরিয়ে আরবিনের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে হালকা কেশে বললেন,
“অ্যাক্সিডেন্ট গুরুতর নয়। ওর শরীরের বাহ্যিক অবস্থা দেখে নিশ্চয়ই এটুকু বুঝতে পেরেছো? হসপিটালে আনার পরে শুধু সেলাই আর ব্যান্ডেজ করিয়ে রেখে দিয়েছে। এটুকুও রাখতো না তারা। আমাদের অনুরোধেই রেখেছে গতকালের রাতটা শুধু। আজ রিলিজ দেবে।”
আরবিন এবার মুখের ওপর থেকে ক্যাপ সরিয়ে উঠে সোজা হয়ে বসে বললো,
“অ্যাক্সিডেন্ট করেছিল কীভাবে আব্বু?”
“বান্ধবীর সাথে ঘুরতে বেরিয়েছিল বিকালের দিকে। আসার পথে বান্ধবীকে আগে বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে অটোরিকশা করে আসছিল বাসার দিকে। তখনই মাঝরাস্তায় একটা সিএনজির সাথে অ্যাক্সিডেন্ট হলো। অটোচালকের তেমন কিছু হয়নি। তবে রিদি হাত-পায়ে আর মাথায় মোটামুটি আঘাত পেয়েছে। পরিচিত একজন দেখে সাথে সাথে খবর দেওয়ার পরেই আমরা এখানে আসি। সে এমনভাবে ফোনে কথাগুলো বলছিল, আমরা ভেবেছিলাম গুরুতর অবস্থা। কিন্তু আল্লাহর রহমতে তেমন কিছু হয়নি। আজ-ই রিদিকে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারবো।”
আরবিন মাথা নাড়ালো শুধু। নির্ঘুম রাত কাটানোর কারণে চোখ লাল হয়ে গেছে ওর। ক্লান্তি চোখেমুখে ছেয়ে আছে। সোহরাব হোসেন বললেন,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“তুমি একটু ঘুম দিয়ে নাও আব্বা। শরীর খারাপ করবে নয়তো।”
আরবিন জবাবে বললো,
“বাসায় ফিরে নিরিবিলিতে ঘুমাবো। দু’দিনের জন্য আছি এখানে।”
সোহরাব হোসেন এবার ব্যস্ত হয়ে বললেন,
“আমাদের ওখানেই চলো। তোমার আম্মাও আমাদের বাসায় গেছেন। তাদের এখন আবার এখানে আসতে নিষেধ করে দিয়েছি। মেয়েকে নিয়ে ফিরবো আমরা।”
আরবিন নিশ্চুপ হয়ে বসে রইলো। সোহরাব হোসেন উঠে গেলেন। অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে এসেছেন তিনি। রিদির হাত-পায়ের এই আঘাত নিয়ে সাধারণ যানবাহনে যাতায়াতের প্রশ্ন-ই আসে না। এক্ষেত্রে অ্যাম্বুলেন্স-ই নিরাপদ বাহন।
সোহরাব হোসেন বেরিয়ে যাওয়ার আগে আরবিনের উদ্দেশ্যে বললেন,
“আব্বা, আমি একটু ওদিকে সবকিছু ক্লিয়ার করে আসি৷ তুমি রিদির কাছে যাও। ফিরে এসে ওকে নিয়ে বের হবো আমরা।”
“আচ্ছা আব্বু।”
সোহরাব হোসেন বেরিয়ে যেতেই আরবিন উঠে কেবিনের ভেতরে ঢুকলো।
রিদির গতকালের অ্যাক্সিডেন্টের পর থেকে তেমন কিছুই জানা নেই। এরমধ্যে কিছু ঘটে থাকলে তা ওর মস্তিষ্কে কোনোভাবেই থাকার কথা নয়। কারণ, গতকাল এখানে আনার পরপরই ওকে হাইডোজের ঘুমের মেডিসিন দেওয়া হয়েছিল।
কিছুক্ষণ আগে বহুকষ্টে চোখের পাতা মেলতে পেরেছে রিদি। আধো ঘুম ঘুম চোখে কোনোমতে ঘাড় নাড়িয়ে আশেপাশের পরিবেশ দেখতে লাগলো ও।
হসপিটালের কেবিনরুম, এমন পরিবেশ, এই পরিস্থিতি— এসবকিছুর সম্মুখীন এই প্রথমবার হচ্ছে রিদি।
অস্থির দৃষ্টি যখন সামনে দরজার দিকে গিয়ে পরলো; কিছু মুহূর্তের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেল ওর সময়, থমকে গেল মস্তিষ্ক, হৃৎস্পন্দন স্থির হয়ে এলো।
স্থির দৃষ্টিতে বিধ্বস্ত পুরুষকে দেখছে রিদি। ক্রমশই ওর অস্থিরতা বাড়ছে। হাতের আঙুল কেঁপে কেঁপে উঠছে। রিদির চোখের কোণে হালকা অশ্রু জমলো। তবে নিজেকেই বুঝতে দিলো না ও। সেখানে আরবিনের বুঝতে পারা তো বহু দূরের বিষয়। আরবিন ধীরে ধীরে বুট জুতা পরিহিত পা -জোড়া টেনে সামনে এগোলো। যতই দু’জনের মাঝের অবস্থানগত দূরত্ব কমছে, রিদির শরীর যেন অবশ হয়ে আসছে। মস্তিষ্ক উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। খিঁচে চোখ বন্ধ করে নিলো রিদি। তবে চোখ বন্ধ থাকলেও বুঝতে পারলো, ছোট বেডটায় ওর পাশের ফাঁকা স্থানে এসে বসেছে আরবিন। শক্ত হাতটা রিদির হাতের ওপর রেখেছে।
রিদির হাত গরম ছিল। আরবিনের হাতের শীতল স্পর্শ ওর শরীরের সাথে সাথে মনেও কম্পনের সৃষ্টি করলো।
“ঘুম ভেঙেছে কখন?”
রাশভারী কন্ঠস্বরটা কানে আসতেই হৃদয়ে যেন জ্বলন শুরু হয়ে গেল রিদির। এবার আস্তেধীরে পিটপিট করে চোখের পাতা মেলে ও আশেপাশে তাকিয়ে বললো,
“আব্বু, আব্বু কোথায় তুমি?”
“আব্বু বাইরে। আমি তোমার স্বামী উপস্থিত আছি এখানে। আমার সাথে কথা বলো। কী প্রবলেম হয়েছে? বলো তো। ওয়াশরুমে যাবে? নাকি ব্যাথা বেড়েছে? দেখি।”
আরবিন রিদির হাতটা টেনে এগিয়ে নিয়ে দেখতে গেল৷ রিদি আস্তে করে টেনে সরিয়ে নিলো ওর হাত। আরবিন কিছুক্ষণ স্তব্ধ চাহনিতে রিদির ফ্যাকাশে মুখের দিকে চেয়ে রইলো।
নিজের অস্থিতিশীল মেজাজকে সামলানো বড্ড কষ্টকর। ওর প্রফেশন, ওর কাজ ওকে আরো বেশি কঠিন বানানোর সাথে সাথে অস্থিরও বানিয়ে ছেড়েছে। সহজে সবকিছু সহ্য করে নেওয়া দায়।
আরবিন উঠে দাঁড়ালো বেডের পাশের কেবিনেটের ওপরে থাকা বোতল থেকে গ্লাসে পানি ঢেলে ঢকঢক করে খেয়ে নিলো। তারপর মোটামুটি শান্ত হলো আরবিন। দাঁতে দাঁত চেপে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টায় অব্যাহত থেকে পুনরায় রিদির পাশে বসলো। আবারও আরবিনকে বসতে দেখে রিদি মুখ ঘুরিয়ে অন্যদিকে ফিরিয়ে রাখলো। আরবিন এবার উত্তপ্ত চাহনিতে কিছুক্ষণ দেখলো ওর ওই মুখ ঘুরিয়ে নেওয়া। তারপর গম্ভীর গলায় বললো,
“রিদি, এদিকে তাকাও।”
“পারবো না।”
“আমি অর্ডার করছি।”
“ওসব আপনার জুনিয়র অফিসারদের সাথে যেয়ে করুন। আমার সাথে চলবে না।”
আরবিন হাত শক্তভাবে মুঠো করে বেডের পাশের স্টিলের থামের ওপর ফেললো ঠাস করে। রাগে চোখ আরো বেশি লাল হয়ে উঠছে ওর৷ কপালের শিরা ফুলে গেছে। চোয়াল শক্ত হয়ে গেছে।
আচমকা আরবিন ঝুঁকলো। রিদির কোমরের দুইপাশে যথেষ্ট সতর্কতার সাথে দুই হাত ভর দিয়ে ওর মুখের নিকটে মুখ এগিয়ে নিলো৷ গলা ও কানের মাঝের অংশটায় ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলো আরবিন। গাঢ় থেকে প্রগাঢ় হলো সেই ছোঁয়া। রিদির ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় কাজ করা বন্ধ করে দিলো। শিরা-উপশিরায় আগ্নেয়গিরির উত্তপ্ত লাভা প্রবাহিত হলো যেন। শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে শিহরণ সৃষ্টি হলো। খিঁচে চোখ বন্ধ করে নিলো ও৷ আরবিন ঠোঁট সরিয়ে রিদির গালের সাথে গাল মিশিয়ে রেখে ওর চোখে চোখ রাখলো। রিদি তখনও চোখ বুঁজে। আরবিন এবার কোমল স্বরে বললো,
“চোখ খোলো।”
রিদি একইভাবে চোখ না খুলে জবাব দিলো,
“পারলাম না।”
“বেয়াদব তাকাও বলছি!”
আরবিন এবার হৃদপিণ্ড কাঁপিয়ে দেওয়ার মতো একটা ধমক দিলো জোরেসোরে। রিদি আলতোভাবে চোখ মেলে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইলো আরবিনের চোখের দিকে। রিদির চোখে চোখ রেখে আরবিন দাঁতে দাঁত পিষে বললো,
“বেয়াদব! মরে মরে অবস্থা, তবু তেজ কমে না।”
“মরে গেলে তো খুশি হতেন। এসেছেন কেন? ফ্যামিলির মানুষদের নাটক দেখাতে?”
“তোমার যদি এখন এই অবস্থা না থাকতো, তাহলে নির্ঘাত দু’টো থাপ্পড় সপাটে তোমার গালের ওপরে মারতাম। চড়াতে চড়াতে দাঁত ফেলে দিতাম। তখন এতো ঘাউড়ামি করার সাহস পেতে না।”
দাঁতে দাঁত চেপে কথাটা বলে থামে আরবিন। কেবিন রুমে এসি চালু থাকা স্বত্বেও রীতিমতো ঘেমে গোসল হওয়ার জোগাড় ওর। এই মেয়ে এমন একেকটা কথা বলে যে, রাগে জ্বরের মতো শরীর দিয়ে ঘাম উত্তাপের সাথে বেরিয়ে আসতে চায়৷ রিদির নির্লিপ্ত ভাব দেখে আরবিন হাত মুঠো করে নিলো৷ এক হাত দূরে সরে আসলো। তারপর-ই কঠোর স্বরে বললো,
“তোমাকে বোকা ভাবতাম। আসলে তুমি তেমন নও। বেশ বুদ্ধি বেড়েছে দেখছি। এক্সুয়ালি ঠিকই ধরেছো। আমি এসেছিলাম দু’জনের ফ্যামিলিকে দেখাতে যে, তোমার জন্য আমার কত চিন্তা হয়। কিন্তু এক্সাক্টলি তা মোটেও নয়। তুমি অ্যাক্সিডেন্ট করেছো, এই খবরে আমার মনের অবস্থার নূন্যতম হেরফের হয়নি। জাস্ট সবার সামনে একটু নাটক করছি। নাটকটা বরং চালিয়ে যাওয়া যাক। কী বলো?”
রিদি কোনো জবাব দিলো না। মুখ বুঁজে আরবিনের কঠোর, অনুভূতিহীন মুখপানে চেয়ে রইলো। রাগে কান্না পাচ্ছে রিদির। ঠোঁটে ঠোঁট চেপে কান্না আঁটকে নিলো ও। আরবিনের দৃষ্টি হতে অশ্রু আর নিজের দুর্বলতা লুকাতে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলো৷ আরবিনও ওর এমন আচরণ দেখে মুখ ফিরিয়ে নিলো ওর থেকে। নির্লিপ্ত কণ্ঠে বললো,
“আসছি আমি।”
আরবিন বের হওয়ার জন্য পা বাড়াবে তখন রিদি বলে উঠলো,
“একটা কথা শুনে রাখুন। আপনার আর আমার মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর মতো সম্পর্ক মোটেও নেই। কোনোদিক থেকে এক্সিস্টও করে না। আপনিও আমার খোঁজ রাখেন না, আর আমিও রাখার প্রয়োজন মনে করি না। আমাদের অবস্থানগত দূরত্ব কয়েকশো কিলোমিটারের৷ ওই কয়েকশো কিলোমিটার দূরে বসে আপনি কি করেন না করেন তা আমার জানার কথা নয়। আমি ওসব নিয়ে মাথা ঘামাতেও যাইনা। এমনকি মেয়েদের সাথে ঘষাঘষি করে বেড়ালেও না। সো, আপনাকে ওয়ার্ন করে দিচ্ছি, এবার ফ্যামিলিকে দেখানোর জন্য এসেছেন; ব্যস! এবার-ই শেষ। এরপর থেকে আর কোনোদিন, এমনকি আমার ম’রার খবর পেলেও নাটক দেখানোর জন্য হলেও ছুটে আসবেন না। না মানে না! আপনার আর আমার মধ্যে এমন কোনো সম্পর্ক নেই যে, আমার মরার খবরে আপনাকে আসতে হবে। সেখানে তো সামান্য একটা অ্যাক্সিডেন্ট। এখনও বেঁচে আছি, মরিনি!”
রিদির কথা শেষ হওয়া মাত্র সেখানে আর দাঁড়ালো না আরবিন। তীক্ষ্ণ চাহনিতে একবার ওকে দেখে নিয়ে কেবিন ছেড়ে বেরিয়ে গেল।
আরবিন কেবিনের বাইরে বেরিয়ে এসে দাঁড়িয়েছে মিনিট পাঁচেক হবে। ফোন বের করে কিছু জরুরি ইমেইল পাঠানোয় ব্যস্ত ও। তখনই সোহরাব হোসেন ফিরলেন। হাতে একটা পলিব্যাগে কিছু ওষুধপত্র। আরবিন এগিয়ে গেল৷ সোহরাব হোসেন তাড়াহুড়ো করে বললেন,
“নার্স আসছে। মেয়েকে অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত দিয়ে আসতে হেল্প করবে। ও কি উঠেছে?”
“জি আব্বু। কিছুক্ষণ আগেই উঠেছে। এইতো মাত্র ওর সাথে গল্প করে আসলাম।”
সোহরাব হোসেনের মুখে সামান্য প্রফুল্লতা। তিনি এগিয়ে গিয়ে কেবিনের দরজার সামনে দাঁড়ালেন। গতকাল থেকে আজ সকাল পর্যন্ত মেয়েকে যে কতবার দেখেছেন, তার হিসাব নেই৷ কেবিনের দরজা খুলে ভেতরে গেলেন তিনি। পেছনে আরবিন।
রিদি তখন নিরবে দেখছে সবকিছু। সোহরাব সাহেব রিদির দিকে তাকিয়ে বললেন,
“কী অবস্থা আম্মা? ব্যাথা কেমন?”
“তেমন ব্যাথা মনেই হচ্ছে না। আমি বাসায় যাবো না আব্বু?”
“হ্যাঁ, এইতো এখুনি যাবো আমরা।”
সোহরাব হোসেনের কথা বলার মাঝে নার্স চলে আসলো ভেতরে। কথা হয়েছে, রিদিকে ধরে আস্তেধীরে নামিয়ে একেবারে নিচে পার্কিং জোনের কাছে নিয়ে যাবে নার্স দু’জন। তবে আরবিন তখন বাঁধা দিয়ে সোহরাব হোসেনকে বললো,
“আব্বু, নার্সের প্রয়োজন নেই। এভাবে যেতে গেলে ও ব্যাথা পাবে বেশি। আমি দেখছি।”
আরবিন এগিয়ে গেল বেডের দিকে৷ রিদি কৌতূহলী দৃষ্টিতে আরবিনের দিকে তাকিয়ে আছে। আরবিন ওর দিকে হাত বাড়িয়ে দিতেই রিদি ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করলো,
“কী করছেন?”
“কোলে নেবো। হাত দাও।”
“পারবো না।”
রিদির কথা শুনে আরবিন আড়চোখে পেছনে দেখলো। ওর শ্বশুর দাঁড়িয়ে ডাক্তারের সাথে কথা বলছেন। আরবিন রিদির দিকে ঝুঁকে ফিসফিসিয়ে বললো,
“ত্যাড়ামি করবে না। আব্বু আছে কিন্তু এখানে।”
রিদিকে কোলে তুলে নিলো আরবিন। শক্ত করে চেপে ধরলো ওর কোমর। নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো ওকে। ধীরেধীরে করিডোর পেরিয়ে নেমে যেতে লাগলো সিঁড়ি বেয়ে। রিদি এবার অক্ষত হাতটা দিয়ে আরবিনের পিঠে জোরেসোরে একটা কিল বসিয়ে দিয়ে কানের কাছে মুখ এগিয়ে নিয়ে বললো,
“এভাবে গায়ের সাথে মিশিয়ে ধরে রেখেছেন কেন আমাকে? আলতোভাবে ধরুন। যেন গায়ের সাথে না মেশে।”
আরবিন দাঁতে দাঁত চেপে ফিসফিসিয়ে ওকে বললো,
নিষিদ্ধ শব্দের দিনলিপি পর্ব ১৬
“বেশি তেড়িবেড়ি করলে ঠাস করে ফেলে দেবো সিঁড়ির ওপর থেকে। তখন আরো দু’দিন পড়ে থেকো হসপিটালের বেডে৷ দারুণ হবে না?”
“আপনি এতো খারাপ কেন? একটু ভালো হতে পারেন না?”
“ভালো? তাও আবার তোমার মতো ঘাড়ত্যাড়া, উগ্র, অতি অসভ্য বেয়াদবের সাথে?”