নিষিদ্ধ শব্দের দিনলিপি পর্ব ৩০

নিষিদ্ধ শব্দের দিনলিপি পর্ব ৩০
ঝিলিক মল্লিক

পুরো সন্ধ্যাটা রিদি আর তানহার গল্প করে কেটে গেল। তারপর রাতের খাবার খেয়ে শাশুড়ির সাথে ড্রয়িংরুমে বসলো রিদি। সাথে তানহাও। আফসানা বেগম রিদিকে পাশে বসিয়ে অনেকটা সময় এই কয়েকদিনের হাল-চাল শুনলেন। বেশ কিছু সাংসারিক উপদেশমূলক কথাবার্তাও বললেন। রিদিও ভদ্রোচিতভাবে শাশুড়ির সব কথা মনোযোগ সহকারে শুনলো। তারপর আফসানা বেগম উঠলেন একসময়। তখন দেয়ালঘড়িতে সময়ের কাটা রাত এগারোটার ঘরে। আফসানা বেগমের কাছে এ অনেক রাত। তিনি বেশ কয়েকবার দরজার দিকে তাকিয়ে উদ্বিগ্ন স্বরে বললেন,

“ছেলেটা যে এখনো আসছে না কেন, সেটা বুঝতে পারছি না। কল দিলাম, কলও ধরছে না।”
“উনার তো আজকে আসতে বেশ রাত হবে আম্মা৷ আমাকে মেসেজ করে জানিয়েছেন অনেকক্ষণ আগেই। আর আমাদের অপেক্ষা না করে ঘুমাতে বলে দিয়েছেন। উনার কাছে চাবি আছে। চিন্তা করতে নিষেধ করেছেন।”
আফসানা বেগমের আরো কিছুক্ষণ ড্রয়িংরুমে বসার পরিকল্পনা ছিল। বোধহয় ছেলে ফিরলে তাকে একবারে নিজে হাতে বেড়ে খাইয়ে দিয়ে তারপর ঘুমাতে যাবেন— এমন পরিকল্পনা-ই করছিলেন মনে মনে। কিন্তু তানহা হঠাৎ বলে উঠলো,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“ও মামি। ঘুম পাচ্ছে প্রচুর৷ ঘরে চলো না। আর কতক্ষণ অপেক্ষা করবে?”
“তুই গিয়ে ঘুমা। আমি আমার ছেলের জন্য বসে থাকবো এখানে। আহারে আমার বাপটা না খেয়ে কি করে বেড়াচ্ছে কে জানে!”
“আরে খাবার তো টেবিলেই ঢাকা দিয়ে রাখা আছে সব। তুমি অতো ভেবো না তো। চলো, ঘরে চলো।”
তানহা একপ্রকার টেনে আফসানা বেগমকে শোবার ঘরে নিয়ে গিয়ে দরজা আটকে দিলো। রিদি এতোক্ষণ শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির মধ্যে ছিল। এবার স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো ও। সোফা ছেড়ে উঠে গিয়ে ড্রয়িংরুমের সব আলো নিভিয়ে নিজেদের শোবার ঘরের দিকে পা বাড়ালো রিদি৷ যাওয়ার সময়ে ড্রয়িংরুমের ঘড়িতে একবার সময় দেখে নিলো। সাড়ে এগারোটা প্রায় বেজে গেছে চোখের পলকেই। সময় বাড়ার সাথে সাথে রিদির বুকের ধুকপুকানি বেড়েই চলেছে। মনের অমন পরিস্থিতি নিয়েই শোবার ঘরের দরজা ভেড়িয়ে দিয়ে আলমারি থেকে শাড়িখানা বের করলো রিদি। আজ প্রথমবার এই কাপড়টা বের করে হাতে নিয়েছে ও। এটা গায়ে জড়ানো আর না জড়ানো সমান কথা। কে যেন এটা উপহার দিয়েছিল, তা মনে করার চেষ্টা করলো রিদি। হ্যাঁ, মনে পড়েছে ওর। এই শাড়িটা রিদির খালাশাশুড়ি দিয়েছিলেন ওকে। আম্মার কাছ থেকে এমন কথাই শুনেছিল রিদি। ওর আম্মা ওকে এ-ও বলেছিলেন, এটা বেশ দামী শাড়ি। এরকম কারুকার্য খচিত শাড়ি খুব কম পাওয়া যায় শাড়ির বাজারে।

হ্যাঁ দামী শাড়ি বটে। তবে যত দাম, তত কাপড়ের পরিমাণ কম। এই কথাটা আদ্যোপান্ত বিশ্বাস করার মতো নয়। অনেকেই করে না। বরং চেঁচামেচি করে তর্কে জড়ায়। কিন্তু এই শাড়িটির ক্ষেত্রে শতভাগ সত্যি। শাড়িটা গায়ে জড়াতেই শিউরে উঠলো রিদি। ওমা! এতো পেট-পিঠ সব দেখা যায়। ব্লাউজটা জামদানী। তারওপর আবার পিঠখোলা, বড় গলা। হাতা কনুইয়ের ওপরে। সবমিলিয়ে নিজেকে আয়নায় একনজর দেখে রিদির নিজেরই নাস্তানাবুদ দশা। এমন অবস্থায় আরবিনের সামনে যাবে কি করে ও!
তা-ও অত্যন্ত ধৈর্য সহকারে ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে শাড়ি পরলো রিদি। আহামরি খুব পরিপাটিভাবে নয়। বরং ইচ্ছাকৃত-ই এলোমেলোভাবে। চোখে খুব সুন্দর করে কাজল লেপ্টে নিলো আর ঠোঁটে গাঢ় কালো খয়েরী রঙের লিপস্টিক।

সাজগোজ শেষ করেই দ্রুত বিছানায় উঠে বসলো রিদি। শীতকাল নয়। তবু একটা কম্বল টেনে এনে গায়ে জড়িয়ে নিলো। তারপর ফোন হাতে নিয়ে ডাটা অন করলো। হোয়াটসঅ্যাপে একবার চেক করলো রিদি। আরবিনকে এখনো অনলাইনে অ্যাক্টিভ দেখাচ্ছে। রিদি দ্রুত টাইপ করে মেসেজ লিখলো,
“আসবেন না?”
মিনিট পাঁচেক পরে মেসেজটা সিন হলো। তারপর আরো পাঁচ মিনিট পরে রিপ্লাই আসলো,
“আমার আসতে লেইট হবে। তুমি ঘুমিয়ে পড়ো। জেগে আছো কেন এখনো? আমার আসাতে কী?”
“আপনাকে রাতের খাবার খেতে দিয়ে তারপর ঘুমাবো।”

রিদি একটু মিথ্যেই বললো। আরো কিছুটা সময় পর আরবিন মেসেজের রিপ্লাই দিলো,
“আমি নিজে বেড়ে নিয়ে খেতে পারবো। তোমার জেগে থাকার কোনো প্রয়োজন নেই।”
রিদি আর একটা রিপ্লাইও দিলো না আরবিনের এই মেসেজ দেখে। রাগের মাথায় ওকে প্রথমে হোয়াটসঅ্যাপ থেকে ব্লক করলো, তারপর কনট্যাক্ট লিস্ট থেকে। দুই মিনিট পরে আবার ব্লক খুললোও। একটা বালিশ টেনে এনে মাথার নিচে রেখে হেলান দিয়ে শুয়ে পড়লো রিদি।

আরবিন মাত্র ফ্ল্যাটে এসেছে। রিদির ঘুম আসছিল না কোনোভাবেই। চোখ বুঁজে শুয়েছিল ও। আরবিনের বুট জুতার শব্দ পেয়ে ধড়ফড়িয়ে উঠে বসলো ও। আরবিন প্রায়-ই জুতা পরা অবস্থায়-ই ফ্ল্যাটে ঢোকে। আজ-ও তাই করেছে। ভেতরে এসে তারপর দরজার এককোণে জুতা খুলে রেখেছে।
রিদি একটুও নড়লো-চড়লো না। আরবিন শোবার ঘরে এলো। দরজাটা ভেড়িয়ে দিয়ে একটা আলো জ্বালালো। ঘরের বাকি সব আলো নেভানো। রিদি ঘুমিয়েছে ভেবে সবগুলো আলো জ্বালায়নি আরবিন।
বিছানার কাছাকাছি এগোতেই ভ্রু কুঁচকে তাকালো আরবিন। রিদি পুরো পা থেকে মাথা পর্যন্ত কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে এই গরমের মধ্যেও। ঘরের ফ্যান চালু করা নেই৷ আরবিন আলতো করে হাত দিয়ে ঠেলে রিদিকে ডাকতে লাগলো। তারপর গম্ভীর স্বরে বললো,

“এই গরমের মধ্যে কম্বল মুড়ি দিয়ে আছো কেন? আর ফ্যান অফ করে রাখার কারণ কী? দেখি, উঠে বসো তো।”
রিদিকে উঠে বসতে বলে আরবিন ঘুরে গিয়ে ফ্যানের সুইজ চালু করে দিয়ে পেছনে ফিরতেই স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে গেল। রিদি কম্বল সরিয়ে বসেছে। আরবিনের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে দুই হাত একসাথে করে কচলাচ্ছে। আরবিন এগোলো ধীরে ধীরে। রিদির সামনে যেয়ে দাঁড়াতেই রিদি উঠে দাঁড়ালো চকিতে৷ আরবিনের চোখে চোখ পড়তেই মুখ নুইয়ে ফেললো। আরবিন ওকে দেখলো অনেকটা সময় নিয়ে। আপাদমস্তক অবলোকন করা শেষে রাশভারী গলায় বললো,
“রাত-বিরেতে ভয় দেখানোর জন্য এসব কী সেজেছো? ভাগ্যিস, লাইট অন করেছিলাম। নাহলে অন্ধকারে তোমাকে এভাবে দেখলে শিওর ভয় পেতাম!”

কথাটা বলেই আরবিন হোহো করে হাসতে লাগলো৷ রসিকতায় আর ওই হাসির ঝংকারে রাগে শরীর জ্বলতে লাগলো রিদির। তবুও মনে মনে পণ করলো, আজ ও কোনোভাবেই চেতবে না। আরবিন যত-ই চ্যাতানোর চেষ্টা করুক, তবু রিদি তেতে উঠবে না। বরং, তানহা যেভাবে বলেছে; ঠিক সেভাবেই আরবিনের সাথে কথা বলবে আজ।
রিদি আসলেই তেতে উঠলো না। বরং যথেষ্ট স্বাভাবিক থেকে আরবিনের দিকে আরো এক পা এগিয়ে গিয়ে বললো,
“ওগো, এতক্ষণে তোমার আসার সময় হলো?”
আরবিন তখনও হাসছিল। রিদির এমন কথা শুনে মুহূর্তের মধ্যে হাসি বন্ধ হয়ে গেল ওর৷ এবার সরু চোখে অত্যন্ত গম্ভীরতার সাথে রিদিকে দেখে নিলো ও। রিদি আবারও বললো,
“তুমি খাবার তো খাওনি। চলো, খাবার খেয়ে নেবে। আমি নিজে হাতে বেড়ে..না না! নিজে হাতে খাইয়ে দেবো তোমাকে।”

রিদি আরবিনের হাত টেনে ধরলো৷ আরবিন কিছুটা দূরে সরে গিয়ে তীক্ষ্ণ নজরে রিদিকে দেখে গম্ভীর স্বরে বললো,
“কাছে আসো তো।”
আরবিনের এমন কথায় রিদির শিরদাঁড়া বেয়ে ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেল। আরবিনের অমন দৃষ্টি খুব অদ্ভুত। ওই দৃষ্টির সাথে খুব বেশি পরিচিত নয় রিদি। আগে দু-একবার মাত্র সম্মুখীন হয়েছে। আজ আবার আরবিনের এমন প্রতিক্রিয়ায় আড়ষ্ট হলো রিদি৷ ভাবলো কি না কি করে! তাই ধীরপায়ে হেঁটে আরবিনের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো ও। লজ্জায় মুখ নুইয়ে ফেললো। আরবিন রিদির অনেকটা কাছে এগিয়ে এসেছে। রিদি তা বেশ বুঝতে পারছে৷ গুটিয়ে যাচ্ছে ও। চোখ তুলে চাইতে পারছে না। তখনই মাথায় একটা শক্ত চাটি পড়তেই অবাক হয়ে মুখ তুলে চাইলো রিদি। আরবিনের দিকে ক্ষিপ্ত হয়ে ভ্রু কুঁচকে তাকালো। আরবিন আরো একটা চাটি মে’রে বললো,

“তোমার মাথার তাঁরতুর সব ঠিক আছে কিনা পরীক্ষা করে দেখছিলাম। নাহ তাঁর তো ঠিকই আছে। তাঁরতুর ঢিলা থাকলে এই চাটি মারার জন্য এতক্ষণে চিল্লাপাল্লা করে এলাহি কান্ড বাঁধিয়ে ফেলতে। কিন্তু কথা হচ্ছে, মাথার তাঁর যদি সব ঠিকঠাক জায়গামতো থাকে, তাহলে তুমি রাত-বিরেতে এমন ভূত সেজে বসে আছো কেন?”
ভূত! ভূত বললো! রিদির অন্তর জ্বলে যাচ্ছে। রাগে শরীর কাঁপছে ওর। দাঁতে দাঁত চেপে নিজেকে যতোটা সম্ভব শান্ত রাখার চেষ্টা করলো। কিন্তু সম্ভব হলো না এই মুহূর্তে। আরবিনের একেবারে কাছ ঘেঁষে দাঁড়ালো রিদি। ওর বুকের সাথে মিশে গিয়ে থুতনিতে নিজের হাতটা রাখলো। আরবিনের মুখ ঘুরিয়ে ধরলো নিজের দিকে। তারপর ওর চোখের দিকে চেয়ে প্রশ্ন করলো,

“দেখুন তো। এই সাজকে আপনার ভূতের সাজ মনে হয়?”
আরবিন কিছুক্ষণ দেখলো রিদির কথামতো। বিজ্ঞদের মতো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে। কপাল, চুল, নাক, ঠোঁট, গলা..
তারপর গম্ভীর স্বরে জবাব দিলো,
“তা নয় তো কি!”
“আর কিছু চোখে পড়ে না?”
“আর কিছু আছে চোখে পরার মতো?”
রিদি এবার ছাড়লো আরবিনকে৷ ধাক্কা মে’রে দূরে সরিয়ে দিয়ে উল্টোদিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বললো,
“ঘুমাতে যাচ্ছি আমি।”
“খেতে দিয়ে তারপর ঘুমাতে যাও।”

আরবিনের শান্ত স্বর। রিদি ঝাঁঝালো সুরে জবাব দিলো,
“পারলাম না। হাত আছে না? নিজে বেড়ে খেয়ে নিন।”
“আজ আমি খুব ক্লান্ত। অনেক বড় ঝামেলা সামলে এসেছি। কোয়ার্টারে ঢুকতে গিয়েও সে আরেক ঝামেলা। এখন এসে খেতে দিয়ে যাও৷ আর একবারও বলতে পারবো না কিন্তু।”
আরবিনের আরেকবারও বলতে হলো না। ওর ক্লান্তির কথা শুনেই উঠে গেল রিদি। ডাইনিং-এ গিয়ে চুপচাপ খাবার বেড়ে দিতে লাগলো। আরবিন চেয়ারে বসে খাবার মুখে তুলতে তুলতে রিদির দিকে না তাকিয়েই অত্যাধিক গম্ভীর স্বরে বললো,

“আর কখনো যেন তোমাকে এ-ধরনের সাজে না দেখি। বিশেষ করে আমার অনুমতি ছাড়া মোটেও না৷”
রিদি কোনো জবাব দিলো না একথার। হাতে ছিল একটা স্টিলের মগ। মন চাইছিলো, ওটা তুলে জোরে বা’রি মে’রে আরবিনের মাথা ফাটিয়ে ফেলতে।
রিদি আর দাঁড়ালো না সেখানে। ঘরে ফিরে এসে রাগে-দুঃখে সব সাজসজ্জা খুলে-ছুঁড়ে ফেললো। লিপস্টিক মুছলো, কাজল লেপ্টে দিলো।

তানহা সকাল সকাল বসার ঘরের সোফায় বসে চায়ে চুমুক দিচ্ছিল। আফসানা বেগম শোবার ঘরে গেছেন। কি যেন বুনছেন তিনি কুশিকাটা দিয়ে। সেটার কাজ করছিলেন। আরবিন নেই কোয়ার্টারে৷ ক্যান্টনমেন্টে গেছে। রিদি ঘর থেকে বের হলো সবে। পা টিপে টিপে এগিয়ে আসলো। সতর্কভাবে আশেপাশে দেখলো। নাহ, শাশুড়িকে এখানে দেখা যাচ্ছে না। এ-ই সুযোগ। রিদি গিয়ে সোফায় ধপ করে বসলো তানহার পাশে। খপ করে ওর হাত ধরে বললো,
“ওগো প্রিয় সখী তানহা, নামটা তোমার চেঞ্জ করে রেখে দাও কাকতাড়ুয়া।”
“কী?”

“বললাম, নামটা চেঞ্জ করে রেখে দাও কাকতাড়ুয়া। শুধু মুখে মুখে নয়, বরং এফিডেবিট করে নাও।”
“তাহলে তো হয়ে যাবে কাকতাড়ুয়া খাতুন।”
“সে তো হওয়ার-ই ছিল। না হয়ে উপায় কী বলো?”
“কাহিনী কী বলো তো? আমি চা-টা শেষ করে তোমার ঘরেই যেতাম ঘটনা শুনতে। কাজ হয়েছে কাল রাতে?”
“তোমার ট্রিকস জলে।”
“মানে?”

“কত সুন্দর করে সাজলাম। তোমার কথায়, হটভাবে৷ তারপর উনি আসার পরে মিষ্টি মিষ্টি করে কথা বললাম। অমন সাজ নিয়ে তার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম কতক্ষণ। তবু তিনি ফিরে তাকালেন না।”
“কি বলো! আমার তো বিশ্বাস হতে চায়না। এমন পাষাণও হয়? তোমার অমন সাজ দেখলে তো পাথরের বুকেও ফুল ফোটার কথা। এ কী তাহলে ইস্পাত?”
“আগ্নেয়গিরি। সাক্ষাৎ আগ্নেয়গিরি। উল্টো আরো কী করেছে জানো?”
“কী করেছে?”
তানহা কৌতূহলী হয়ে প্রশ্ন করে৷ রিদি বেশ গল্প বলার ছলে বললো,
“আমার মাথায় একটা চাটি মে’রে বলে, ‘ভূত সেজেছো কেন? মাথার তাঁরতুর ঢিলা হয়ে গেছে নাকি?’ এসব বলেছে৷ কি আশ্চর্য! আমার মাথার তাঁরতুর ঢিলা হবে কেন? আমি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। তারপর বলেছে, অমনভাবে আর কখনো না সাজতে।”

নিষিদ্ধ শব্দের দিনলিপি পর্ব ২৯

“সে কি কথা! এ তো ভারী অদ্ভুত ব্যাপার। তোমার না একটু ভালোভাবে ভাইয়াকে খতিয়ে দেখা উচিত। এক কাজ করো। আজ বরং তুমি ভাইয়ার ফোন ঘেঁটে দেখবে। কোনো মেয়ের সাথে সামান্য হাই-হ্যালো হলেও ব্লক মে’রে দেবে। ভাইয়ার দেখলাম, রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস এখনো সিঙ্গেল দেওয়া। তুমি আজ রাতে ভাইয়া আসলে সুযোগ বুঝে স্ট্যাটাস চেঞ্জ করে দেবে। ম্যারিড স্ট্যাটাস দিয়ে দেবে। এমনকি তোমার আইডিও ট্যাগ করে দেবে। আই থিংক, এতে কিছুটা চেঞ্জ আসবে।”
রিদিও তানহার সাথে সহমত জানিয়ে পরিকল্পনা করতে লাগলো, আজ কিভাবে আরবিনের ফোন ধরা যায়!

নিষিদ্ধ শব্দের দিনলিপি পর্ব ৩১