নীলাঞ্জনা বোনাস পর্ব 

নীলাঞ্জনা বোনাস পর্ব 
শুভ্রতা জাহান

আমার জীবনে আজ প্রথমবার আমি পরী দেখলাম। উহু জ্বিন পরী নয়। মানুষ পরী। চোখ দুটোয় যেন তার সারাক্ষণ জলে টলমল। চোখ বন্ধ করলেই বোধহয় টুপ্ করে ঝরে পড়বে! কিন্তু না। সে জল ঝরে পড়ে না। ওই জলটুকু বোধহয় কেবল তার চোখের সৌন্দর্য রক্ষার জন্যই দিয়েছেন সৃষ্টিকর্তা। তার চোখের ওই জলের মাঝেই ডুবে গেছি আমি। সবার মনে হতে পারে চোখের মাঝে আর কতটুকুই বা জল থাকে যাতে আমি একেবারে ডুবেই গেলাম। আহা এ ডোবা সে ডোবা নয়। এ যে তার চোখের অনন্ত মায়ায় ডোবা। তার ব্যাতিত অন্য কারো চোখে না তাকানোর প্রতিজ্ঞা যেন খুঁদ তার ওই চোখই করিয়ে নেয়।

আমি অভ্র আকশার। আকশার বাড়ির একমাত্র ছেলে। রেহমান আকশার এবং আয়শা বেগম এর একমাত্র পুত্র। যে মেয়েটার কথা আমি বলছি সে নীলাঞ্জনা। মহুয়া আকশার নীলাঞ্জনা। সুন্দর নাম তাই না? সে তার নামের থেকেও হাজার গুণ বেশি সুন্দর। নইলে যে অভ্র আকশার আমেরিকায় থেকে সেখানকার শত শত মর্ডান, স্মার্ট মেয়েদের দিকে চোখ তুলে তাকায়নি, সে প্রথম দেখাতে প্রেমে পড়ে গেছে! অবাক কান্ড। তবে আমি অবাক নই। বরং যদি কেউ তাকে দেখার পরেও প্রেমে না পড়ে তখন অবাক হবো। সে যে প্রেমে পড়ার মতোই এক পরী।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

মেয়েটাকে আজ প্রথম দেখলাম আমি। তাও নিজের কাজিন হিসেবে। যদিও সে আমার বাবাই এর নিজের মেয়ে না। বাবাই ব্যাবসার কাজে গ্রামে গেলে তাকে কুড়িয়ে পেয়েছিলো। আমার সাথে তার আজই প্রথম দেখা। সে আমাকে চিনতো না ফলে ভুল বশত পেছন থেকে বাবাই ভেবে জড়িয়ে ধরেছিলো। তারপর বাবাই এর বদলে আমাকে দেখে সে কি রাগ! তাকে আজ দেখেই ভীষণ বাজে ভাবে তার মায়ায় পড়ে গেছি আমি। জানিনা এর ফল কি হবে! তবে আমার মনে হয় না আমাদের মাঝে কোনো বাধা আসতে পারে।

এটুকু পড়েই দম বন্ধ হয়ে আসে নিহার। ঘর গোছাতে গিয়ে অভ্রর নাম লেখা ডাইরি পেয়ে তা কৌতূহল বশত খুলে পড়তে গেছিলো নিহা। কে জানতো তাকে এসবের মুখোমুখি হতে হবে? অভ্র তার মানে নীল আপাকে ভালোবাসে? তাকে নয়? নিহার চোখ জলে ভরে ওঠে। কীভাবে পারলো অভ্র তাকে ঠকাতে? আর ঠকালোই jযখন তাহলে এগুলো তার সামনে এসেই কেনো পড়লো? আড়ালেই থাকতো! তবু তো নিহা মিথ্যা হলেও ভেবে নিয়েছিল অভ্র তাকে ভালোবাসে! সেই মিথ্যে নিয়েই বাঁচতো। আবার পড়তে শুরু করে নিহা।

পুরো ডাইরি জুড়েই কেবল অভ্র কীভাবে নীলের প্রেমে পড়লো, নীলের কি কি তার ভালো লাগে, নীল কি ভালোবাসে, নীলের রূপের নানান উপমায় ভর্তি। এরপর নিহার চোখ আটকে যায় আরেকটা লেখায়।
আমার এত কষ্ট হচ্ছে কেন? নীলকন্যা তো আমার নয়। তার সাথে আমারই প্রাণের বন্ধু নভর বিয়ে ঠিক হয়েছে। সে তো নিষিদ্ধ আমার জন্য। তবু এই বেহায়া চোখ কেন ঘুরেফিরে তার পানেই চেয়ে থাকে? নিজেকে সামলাতে কেনো পারছি না আমি!

আজ নীলাঞ্জনার, আমার প্রথম প্রেম, প্রথম ভালোবাসার বিয়ে ঠিক করেছে বাবাই। আমার প্রাণপ্রিয় বন্ধু নভর সাথে। নভ খুব ভালো একটা ছেলে। বাবাই এর সাথে ব্যবসা সামলায় আবার সিক্রেট অফিসার। ও খুব ভালো রাখবে আমার নীলকন্যাকে। তারপরেও কেনো জানি খুব কষ্ট হচ্ছে! বক্ষ পিঞ্জরে হয়ে চলেছে অদৃশ্য রক্তক্ষরণ। সামলাতে পারছি না নিজেকে। কিন্তু আমাকে সামলাতে হবে! আমি নিজের বন্ধুর স্ত্রীর দিকে নজর দিতে পারি না কখনো! এটা পাপ।

আমি আর নিতে পারছি না। আমার সামনে নীলকন্যা অন্য কারো হয়ে যাবে তা মানতে পারবো না। আজই বাড়ি ছাড়বো আমি। নইলে যে আমি কিছু একটা করে ফেলবো। আমি তো চাই না নীলকন্যা বা বাবাই কষ্ট পাক। আমাকে দূরে যেতেই হবে। তাতে মা, রেহানা, নীল যতই রাগ করুক। যতই বাবা কথা না বলুক। যেতেই হবে আমাকে।

নিহা ভাবতে থাকে। তার মানে এই জন্যই অভ্র নীলের বিয়ের সময় নিউইয়র্ক গিয়েছিলো। আর ঐভাবে লুকিয়ে নীলকে দেখছিলো? আসলেই নীল আপা অনেক ভাগ্যবতী। তাকে সবাই ভালোবাসে এমনকি আমার স্বামীও। নিহার ভাবনার মাঝে কেউ ঘরে ঢোকে। ঘুরে দেখে অভ্র। নিহার হাতে নিজের ডাইরি দেখেই অভ্র বুঝে ফেলে সব জেনে গেছে নিহা। এখন কি হবে? নিহা কি চলে যাবে তাকে ছেড়ে?
“আপনি নীল আপাকে ভালোবাসেন?”

অভ্র বুঝতে পারে এবার তাকে বলতেই হবে। আর কিছু লুকিয়ে লাভ নেই। ভনিতা না করেই বলতে শুরু করে সে।
“ডাইরি পড়েছো মানে তুমি তো জানোই কীভাবে নীলাঞ্জনার প্রেমে প্রথম দেখাতেই বুদ হয়ে গেছিলাম আমি! ভালোবেসে নামও দিয়েছিলাম। আমার নীলকন্যা। ধীরে ধীরে ওর প্রতি অনেক বেশিই দুর্বল হয়ে পড়ি আমি, কিন্তু কখনো বলিনি বা বুঝতেও দিইনি। এরপরে এক সময় নভর সাথে ওর বিয়ে ঠিক করে বাবাই। নীলও তাতে রাজি হয়ে যায়। বাবাইকে খুব ভালোবাসতো কি না। আমি কখনো চাইতাম না আমার জন্য বাবাই বা নীল কষ্ট পাক। তাই দূরে চলে যাই। কিন্তু ওকে না দেখে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়েছিল তাই বাড়িতে এসে লুকিয়ে দেখতে থাকি ওকে। আর তখনই তোমার নজরে পড়ে যাই। বাকিটা তো তুমি জানোই।”

অঝোরে কেঁদে চলেছে নিহা।
“তাহলে আপনি আমাকে কেনো ঠকালেন? আপনি তো কখনো বলেননি আপাকে ভালোবাসেন। তাহলে আমি আপনার জীবনে কখনোই আসতাম না।”
নিহার কথা শুনে অভ্র বুঝতে পারে সে ভীষণ কষ্ট পেয়েছে। বড্ড বেশি ভালোবাসে বাচ্চা মেয়েটা তাকে। নিহাকে বুকে জড়িয়ে নেয় অভ্র।

“এটা সত্যি আমি নীলাঞ্জনাকে ভালোবেসেছিলাম। সে প্রথম প্রেম আমার। তাকে কখনো ভোলা হয়তো সম্ভব নয়। কিন্তু একটা কথা কি জানো তো, পুরুষের জীবনে শেষ নারী আর নারীর জীবনে প্রথম পুরুষ হতে পারা ভাগ্যের ব্যাপার। আর সেই সৌভাগ্যবতী তুমি নিহা। আমার জীবনের শেষ নারী। আমরা সবাই বেশিরভাগ ভালোবাসি বা লাভ ইউ শব্দ গুলো আওড়াত থাকি। কিন্তু তারপরেও প্রকৃত সুখী কজন বলো তো?

শুধু ভালোবাসলে আর ভালোবাসার মানুষটাকে পেলেই সুখী হওয়া যায় না নিহা। সুখী হওয়ার জন্য এমন কাউকে প্রয়োজন হয় যার জন্য আমরা ভালো থাকতে পারবো! আমাদের ভালো থাকার, সুখে থাকার কারণ হবে সে। আর আমার জীবনে সেই কারণটা তুমি নিহা। শুধু তুমি। আমার হৃদয় এর কোনো এক কোণে নীলাঞ্জনার স্মৃতি আছে ঠিকই কিন্তু সর্বক্ষণ আমার হৃদয় জুড়ে তোমার বিচরণ তা ফিকে করে দেয়। তোমাকে ছাড়া আমার ভালো থাকা অসম্ভব বাচ্চা।”

অভ্রর কথা গুলো খুব মন দিয়ে শোনে নিহা। আর তা যে প্রতিটা অক্ষরে অক্ষরে সত্য তাও বুঝতে পারে। হাসি ফুটে ওঠে তার ঠোঁটের কোণে। পরোক্ষণে খেয়াল হয় অভ্র তাকে বাচ্চা বলেছে। ধপ করে আগুন জ্বলে ওঠে!
“এই এই কি বললেন আপনি? কে বাচ্চা? কদিন পর বাচ্চার মা হবো আর এখনো আপনি আমাকে বাচ্চা বলেন? আপনার সাহস তো মন্দ না!”

নিহার মন ভালো হয়েছে দেখে অভ্রর মনেও প্রশান্তি ছেয়ে যায়। গাল টেনে দিয়ে বলে
“তুমি বুড়ি হয়ে গেলেও আমার কাছে বাচ্চাই থাকবে। বুঝেছো?”
চলতে থাকে তাঁদের খুনসুটি। ভালোবাসার থেকে প্রয়োজনটাই অভ্র নিহার জীবনে বেশি সুন্দর। ভালোবাসুক বা না তাঁদের দুজনেরই দুজনকে প্রয়োজন। আর সেটা দুজন পূরণও করেছে একে অপরের জীবনে থেকে। আর কি চাই!
সেদিন ভিডিও আর ছবি দেখে নভর কাছে কিছু না জিজ্ঞেস করেই নভকে ভুল বুঝে যে ভুল নীলাঞ্জনা করেছে তার মাশুল এখনো দিয়ে যাচ্ছে। নভ আজও ক্ষমা করেনি তাকে। প্রতি পদে পদে নীলকে শুনতে হয়
“তুই আমাকে ভালোবাসিসনি নীল, তুই আমাকে ভালোবাসিসনি!”

নভকে হাজার বলেও কোনো লাভ হয়নি। ক্ষমা করেনি সে নীলাঞ্জনাকে। ভালো যে বাসে না তেমন নয়। খুব করে ভালোবাসে। সন্তান, সংসার সবই আছে তাঁদের। শুধু নেই শান্তি। আসলে কিছু কিছু সময় ভালোবাসার মানুষের ছোট ছোট আঘাত আমাদের খুব বাজে ভাবে আহত করে দেয়। আমরা চাইলেও সেই ক্ষত নিরানময় করতে পারি না। নভর ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। নীলের দেওয়া আঘাত ভুলতে পারেনি সে।

অভয় বায়না ধরেছে পাপা আর মায়ের সাথে ঘুরতে যাবে। নীলাঞ্জনা ভাবছে নভ রাজি হয় কি না। তবে তাকে অবাক করে দিয়েই খুব সহজে রাজি হয়েছে নভ। বাইকে স্ত্রী সন্তান নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছে নভ। মনের মধ্যে যেন আলাদা প্রশান্তি কাজ করছে। আচ্ছা সে কি পারে না নীলকে ক্ষমা করে সব আবার আগের মতো সুন্দর করে নিতে! তখন নিশ্চয়ই আরো বেশি সুখের হবে তাঁদের সংসার। মনে মনে ঠিক করে ফেলে নভ। আজ রাতেই নীলাঞ্জনাকে সারপ্রাইস দেবে। নতুন করে ভালোবাসবে তার নীলময়ীকে।

হঠাৎ রাস্তার পাশে আইছক্রিম দেখে খাবে বলে বায়না ধরে অভয়। বাইক দাঁড় করিয়ে নীল অভয়কে রেখে রাস্তার অপর পাশে আইছক্রিম আনতে যায় নভ। নীলের চোখ নভর দিকেই ছিলো। আহ কি সুন্দর পরিবার তার। শুধু যদি নভ আবার আগের মতো হয়ে যেত! দীর্ঘশ্বাস ফেলে নীল। অমনি চেয়ে দেখে অভয় রাস্তার মাঝখানে।

নভর দিকে হেটে যাচ্ছে। ডান দিক থেকে ধেয়ে আসছে ট্রাক। নভরও চোখ যায় সেদিকে। দুদিক থেকে দুজন দৌড় দেয় অভয়কে বাঁচাতে। নভর আগেই নীল গিয়ে অভয়কে ধাক্কা দিয়ে রাস্তার পাশে ফেলে দেয় কিন্তু নিজে সরতে পারে না। তারপর শুধু একটা শব্দ!

রাস্তার মাঝে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে নীলাঞ্জনা। অভয়কে ভুলেই নভ ছুটে যায় নীলের কাছে। নীলের এখনো নিঃশ্বাস চলছে। ইশারায় নভকে কাছে ডাকছে সে। হয়তো কিছু বলতে চায়। বসে পড়ে নভ।
“নীলময়ী কিছু হবে না তোর। তুই এভাবে অভয় আর আমাকে রেখে যেতে পারিস না নীলময়ী। আমি আবার তোকে কাছে টেনে নেবো শুধু একবার সুস্থ হয়ে যা।”

নভর কথা গুলো শুনে মুচকি হাসে সে। সে হাসিতে কষ্টের ছাপ স্পষ্ট। তারও যে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে এমন সুখের পরিবার ছেড়ে যেতে! অনেক কষ্টে শুধু ঠোঁট দুটো ফাঁকা করে বলে
“ভালোবাসি নভ।”

কথাটা শেষ হতেই থেমে যায় নীলাঞ্জনার জীবন। এতক্ষণ বোধহয় কথাটা বলতেই থেমে ছিলো। অসহায়ের মতো চিৎকার করতে থাকে নভ। অভয়কে কোলে তুলে নিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে। ছোট্ট অভয় বুঝতে পারে না তার পাপা এভাবে কাঁদছে কেনো? আর মা এভাবে রাস্তায় কেনো শুয়ে আছে?

গোধূলি বেলা। আকাশ ছেয়ে আছে লালচে আভা। বারান্দায় চেয়ার পেতে বসে আছে নভ। আজ তার পাশে আর নীলময়ী নেই। বারবার করে কেউ ক্ষমা করতে বলছে না। কিছু একটার শূন্যতা অনুভব করে নভ। তাহলে তো নীলের সেই বারবার ক্ষমা চাওয়ায় অবভ্যস্ত হয়ে গেছে সে! নভর মনে হয় সে ক্ষমা করে দিলে বোধহয় আর ন
নীলময়ী চলে যেত না তাঁদের ছেড়ে। অভিমান করে চলে গেছে হয়তো মেয়েটা। কি হতো ক্ষমা করে দিলে। সে তো ভালোবাসতো নীলকে তাহলে ক্ষমা কেনো করতে পারলো না? তাহলে কি নভ ভালোবাসতে পারেনি? নীল একাই ভালোবেসে গেছে! নভর মনে হয় আশেপাশের সব কিছুর মধ্যে থেকে যেন নীল ফিসফিস করে বলে উঠছে কিছু।
“তুমি আমায় ভালোবাসোনি নভ, তুমি আমায় ভালোবাসোনি!”

নীলাঞ্জনা শেষ পর্ব 

[আস্সালামুআলাইকুম। #নীলাঞ্জনা আমার প্রথম লেখা। লেখালেখির জগতে আমার পদার্পন নীলাঞ্জনার মাধ্যমে। সে তুলনায় অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। নচিকেতার মস্ত বড় ভক্ত হওয়ার দরুন নীলাঞ্জনা গানটাও আমার ভীষণ প্রিয়। সে থেকেই গল্পের নাম ভেবেছিলাম। কিন্তু শেষ অবধি মন মতো সাজাতে পারিনি গল্পটা। হয়তো নতুন বলে বা হয়তো আমার সাধ্যের বাইরে। তবে সত্যি বলতে শেষটা আমারও পছন্দ হয়নি। সময় সুযোগ হলে পরে কখনো আবার নীলাঞ্জনাকে নিয়ে কাহিনী তুলবো। জানি অনেকের ভালো লাগেনি, কেউ কেউ জঘন্য বলেছেন। আসলে কথা হচ্ছে কোনো জিনিসই সবার পছন্দের হতে পারে না তাতে সে জিনিস যতই সুন্দর হোক। অতীব সুন্দরী এক রমণীও পারে না সকল পুরুষের দৃষ্টি কাড়তে। তাই লেখাটা যে সবার ভালো লাগবে না এটাই স্বাভাবিক। তবু সবাইকে অনেক ধন্যবাদ শেষ অবধি পাশে থাকার জন্য।]

সমাপ্ত