নীলের হুরপাখি পর্ব ১৮

নীলের হুরপাখি পর্ব ১৮
কারিমা ইসলাম কেয়া

নীল ঃ কিহ হলো এখনো ঘুমোচ্ছিস না কেন?
হুর ঃ দুষ্টুমি করতে ইচ্ছে করছে তাই। (হুর কথাটা বিরবির করে বলল)
হুর আস্তে কথাটা বললেও নীল স্পষ্ট শুনেছে। নীল এতক্ষন সোজা হয়ে শুয়ে ছিল, হুরের সাথে কথাও বলছিল না, কিন্তু হুরের উসকানো কথায় 29 বছরের যুবকের মনে তীব্র প্রভাব ফেলল। যা তার হৃদয়কে তোলপাড় করে দিল।
নীল হুরের উপরে উঠলো কিন্তু হুরের সাথে তার শরীর 2 ইন্ঞি কমে লাগলো না। নীল নিজের শরীরের উপরই ভর দিয়ে আছে।

নীলের নীলচে কালো চোঁখে ফুটে উঠলো অস্থিরতা।
শ্বাস ওহ হালকা ভারি। নীল তার নীলচে কালো চোঁখ জোড়া দিয়ে হুরকে পরখ করে নিল।
নীল ঃ পাখি তুমি এখনো অনেক ছোট আমার যাতনা সইতে পারবে না।
নীলের এতটা কাছে আসায় হুরের হৃদপৃণ্ড লাফাতে লাগলো। হুরের মনটা অনুভূতির তীব্র ইচ্ছেতে দোলতে লাগলো। হুর নীলের নীলচে কালো চোঁখে তাকিয়ে শিউরে উঠলো। এই অশান্ত চোঁখ তার হৃদয়ে ভয়ের আবেশ তৈরি করলো। নীলের শরীরে ডার্ক পারফিউমে
হুর ঢোক গিলল।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

কিন্তু হুরকে ছোট বলায় হুরের ভিষণ রাগ হলো। হুর গাল ফুলিয়ে অন্যদিকে ঘুরলো।
হুর ঃ আমি এতটাও ছোট নয় আমার কুড়ি চলে।
নীল ঃ তহ ম্যাম কিহ এখন আমার কাছে কিছু ব্যক্তিগত সময়ের আবদার জানাচ্ছেন।
হুরের মুখ লজ্জায় রক্তজবার মতো লাল হয়ে উঠলো।
হুর আমতা আমতা করে বললো।
হুর ঃ মা,মা,মানে
নীল নেশাক্ত গলায় বলল,

নীল ঃ আদর, তোমার কিহ আদরের তেষ্টা পেয়েছে পাখি।
হুর নীলের কথা শুনে লজ্জায় মুখ ঢেকে নেয় তার দু হাত দিয়ে।
নীল ঃ আমার আর জ্বালাস না পাখি, এতে নিজেরই বিপদ ডেকে আনছিস। আমি তোর প্রতি বড্ড বেশি আসক্ত, এই আসক্তি এক দু ঘন্টায় শেষ হবার নয়। বি এলার্ট তৈরি হয়ে এসো।
নীল হুরের নাকের সাথে নাক ঘসে দিল ।
নীল ঃ নষ্টামি চিন্তা না করে ঘুমিয়ে পড়। নাকি এখন ঘুম পাড়ানি গাণ গাইতে হবে।
হুর ঃ আমি মোটেও ছোট বাচ্চা হয় যে আমায় ঘুম পাড়ানি গাণ শুনে ঘুমাতে হবে। (হুর মেকি রাগ দেখিয়ে বললো)
নীল ঃ ওলেবাবালে আমার বউতা অনেক বলো তয়ে নেছে। ( নীল বাচ্চাদের মতো করে বললো)
হুর উল্টো দিক ফিরে ঘুমিয়ে পড়লো।

রাতটা কেটেঁ যাচ্ছে। তবে আজকের রাতটা বিশেষ হয়ে থাকবে। আজ রাতে হুর ওহ নীল তাদের পরিবারের মানুষের বিরুদ্ধে গিয়ে এক হলো।
তুবা তার জেদকে ঠিক রাখতে বিনা পরিকল্পনায় রক্তিমকে বিয়ে করে নিল।

আজ আরও একটা মিষ্টি ভোরের সূচনা। আজকের আবহাওয়া ওহ যেন বিশেষ কিছুর বার্তা বহন।
সত্যি বলতে এমন কিছুই না আমরা মানুষরা যখন যেমন চাই, তখন আমরা আমাদের চারিপাশের পরিবেশকেও সেভাবে সাজিয়ে নিই ।
হুর মোচরামোচরি করে আস্তে আস্তে আলসেমিতে চোঁখ খুললো। চোঁখ খুলতেই হুর অবাক হলো নীলকে দেখে।
নীল ক্লান্ত চোঁখে হুরের দিকে তাকিয়ে আছে।
হুর ঃ জ্বীন মানব নাকি এভাবে হুটহাট আমার রুমে চলে আসো। একটা মেয়ের রুমে এভাবে হুটহাট চলে আসতে লজ্জা করে।
নীল ঃ ওইসব চা-পাতির লজ্জা শরম আমাদের ছেলেদের নেই , তার বাস্তব প্রয়োগ আপনিই হবেন মিসেস হুরজান।
নীল গালে জ্বিহ্বা ঠেলে বাকাঁ হেসেঁ বললো।

নীল ঃ তহ যাইহোক, আপনার ভাণ্ডারে তহ লজ্জা শরমের অভাব নেই, তহ আপনি এখানে কিহ করেন।
নীলের কথায় হুরের এখন জ্ঞান ফিরলো। নিজেকে নীলের রুমে দেখে তার রাতের সব কথা মাথায় ভিড় করলো।
নিজের ভুলো মনের জন্য হুরের ভিষণ লজ্জা অনুভব হলো। তারসাথে নীলের কাল রাত থেকে তুমি আপনি ডাকাটা হুরের জন্য অসস্থি অনুভূত হচ্ছে। তবে ভিষণ ভালো ওহ লাগছে।
নীল ঃ তহ আপনাকে কিহ এখন কোলে করে ফ্রেস হতে নিয়ে যেতে হবে।
হুর ঃ নাহ,,তার প্রয়োজন নেই।
হুর ব্যাপারটা থেকে বাচাঁর একটা ছল পেল। হুর তড়িঘড়ি করে চলে গেল।
নীল ঃ ভীষণ ঘুম পাচ্ছে মেয়েটাকে সারা রাত দেখার লোভে এখন আমার মাথা হ্যাং হয়ে ভোঁ ভোঁ করছে।
নীল ঘুমিয়ে গেল।

নাস্তার টেবিলে সকলে বসে নাস্তা করছে। হুর নামে নি খিদে পেলেও। তাই নীল নিজেই চলে আসলো নিজে হুরের জন্য খাবার আনতে।
নীল ঃ কাকি হুরের খিদে পেয়েছে খাবার রেডি করো।
লামহা খাবার রেডি করলো না নীলের সাথে কথাও বলল না। নীলের মা রুহানি ওহ নীলের সাথে কথা বলছে না। সকলে তাকে ইগনোর করছে।
নীল ঃ ওকে আমি নিজেই রেডি করে নিচ্ছি।
তখনই নীলের ছোট কাকি খাবারের ট্রে এগিয়ে দিল নীলের দিকে। তবে সে ও কথা বলল না।
নীল তাদের দুজনের খাবারের ট্রে নিয়ে উপরে যাচ্ছে। তখনই চোঁখ পড়ে তুবার দিকে। তুবা নিচে নামছিল।
নীল ঃ বেহায়া মেয়ে, তুমি এখন ও এখানে কি কর।

রক্তিম ঃ ভালোভাবে তুবার সাথে কথা বলবে ভাইয়া, বিয়েটা যেভাবেই হোক তুবা এখন আমার ওয়াইফ।
নীল রক্তিমের কথায় কিছুটা অবাক দৃষ্টিতে তাকালো।
নীল ঃ তহ নিশ্চয়ই নিজের মানসম্মান বাচাঁনোর জন্য, আমাদের পিতামহ এর সাথে তকে বিয়ে দিয়ে দিয়েছে।
রক্তিম চুপ।
নীল ঃ তুই এতে খুশি তহ।
রক্তিম এবার ওহ চুপ।
নীল খাবারের ট্রে নিয়ে চলে গেল।

নীলের হুরপাখি পর্ব ১৭

সকালের আলো ফোটাঁ সত্ত্বেও চারিদিকে অন্ধকারে ছেয়ে আছে। আলোর রশ্নি যেনো এখানে প্রবেশ নিষেধ এই বার্তা জানান দিচ্ছে। চারিদিকে ভ্যাপ্সা গাঁ গুলানো দূর্গন্ধ, এই গন্ধে পেটের নাড়ি ভূড়ি বের হওয়ার উপক্রম। গাঁ ছমছমে
এই বাড়িটা এক ভয়ের রাজ্যকে জানান দিচ্ছে।এরই মাঝে শুরু হলো এক যন্ত্রনাদায়ক গগণবিদারী চিৎকার।

নীলের হুরপাখি পর্ব ১৯

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here