নূরজাহানের সংসার পর্ব ৮

নূরজাহানের সংসার পর্ব ৮
শ্রীমতি প্রজ্ঞা মঞ্জরী

নিশুতি রাত,আশেপাশে স্বল্প-বিস্তর পোকাদের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। নিস্তব্ধ পরিবেশ,অদ্ভুত চাপা কৌতূহল আর কিছু অজানা রহস্যের জটলায় বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। আজ হয়তো দু’জন মানব-মানবীর অস্থির চিত্তের শান্তি মিলবে একে অপরের সান্নিধ্য পেয়ে;হয়তো তারা আবার নতুন করে ভালোবাসবে। হয়তো কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত সত্য আসবে সকলের সামনে।কারো প্রতি বিশ্বাস,ভরসা এক পলকেই ভাঙ্গা কাঁচের ন্যায় গুঁড়িয়ে ক্ষতবিক্ষত করবে অপর পাশের মানুষটিকে। আজ রাতটা প্রণয়ের সুরে ভাসবে আবার হৃদয় ভাঙ্গা আর্তনাদে ডুবে যাবে। তবে রাত পেরিয়ে ভোরের আলো যেমন সত্যি,তেমনি তিক্ত সত্যটুকু গ্রহণ করতে পারলে আগামীর দিনগুলো যে অভিশাপ মুক্ত হবে এটাও চরম সত্যি।

কারো গুনগুনিয়ে কান্নার আওয়াজ কানে আসতেই চোখ পিটিপিট করে তাকালো নূর। নিজের হাতটাও ভিজে ভিজে ঠেকছে তার কাছে।আস্তে করে ঘাঁড় ঘুড়িয়ে পাশে তাকাতেই লাইটের মৃদু আলোতে এক অস্পষ্ট অবয়ন নজরে এলো নূরের।চেনা স্পর্শ,চেনা শরীরের ঘ্রাণে নূরের মস্তিষ্ক সজাগ হয়ে বলে উঠলো এটা অর্ণব।পরমূহুর্তেই মনে হলো অর্ণব কি করে তার ঠিকানা পাবে?যোগাযোগের সব পথ সে নিজেই বন্ধ করে দিয়েছে।
নূর ঘাড়টা উঁচু করে পাশের মানুষটার মুখশ্রী দর্শণের চেষ্টা করলো।নিজের হাতটাও ছুটিয়ে নিতে মোচড়াতে লাগলো।
“কে আপনি? আমার হাতটা ছাড়ুন।” বিরক্তি কণ্ঠে বলে ওঠে নূর।
সামনের মানুষটা মুখ তুলে তাকাতেই ক্রন্দরত অর্ণবের মুখটা দেখলো নূর। তার বা হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে অঝোরে কাঁদছে অর্ণব, একটু পর পর চুমু খাচ্ছে নূরের হাতে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

“আপনি? হাত ছাড়ুন আমার।আমার হাত ধরেছেন কেন? প্রতারকের হাত ধরতে আপনার রূচিতে লাগছে না?”
মনের সব ক্রোধ, অভিমান ঢেলে দিয়ে নূর বলে ওঠে, “আমি আপনার সংসার ছেড়ে দিয়ে এসেছি।তাও কেন এসেছেন? ডিভোর্স চাই আপনার?পার্মানেন্ট মুক্তির খোঁজে এসেছেন? ওটাও পেয়ে যাবেন।”
অর্ণব নূরের কথায় চমকে ওঠে।অস্ফুট স্বরে বলে ওঠে, “নূর?নূরজাহান?”
অর্ণবের কণ্ঠে কিছু ছিলো।হয়তো অনুসূচনা, নয়তো হারিয়ে ফেলার ভয়; জানা নেই নূরের।তবে এই কণ্ঠ নূরের কাছে অচেনা ঠেকলো।সে ডান হাতে খাটের পাশের টেবিল ল্যাম্পটা জ্বালিয়ে চোখ ফেরালো অর্ণবের দিকে।
এলোমেলো চুল, চোখ মুখ একদিনেই শুকিয়ে গেছে অর্ণবের। চোখের নিচে কালি জমেছে কয়েক ঘন্টার ব্যবধানেই। এমন এলোমেলো অর্ণবকে তো ফেলে আসেনি নূর!

“অর্ণব?”
নূরের ডাকে চোখ মেলে তাকায় অর্ণব। চোখ দু’টো লাল হয়ে আছে তার। নূরের বুকের ভিতরটা ধক করে উঠলো।হৃৎপিণ্ডটা যেন কেউ খামচে ধরেছে নূরের।এমন ভাঙ্গাচোড়া অর্ণবকে দেখে ভীষণ কান্না পাচ্ছে নূরের।
“আপনার কী হয়েছে? এ কী অবস্থা করেছেন নিজের?”
নূরের কথার উত্তর হিসেবে নূরকে জাপটে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয় অর্ণব।নূর অবাক হয় অর্ণবের আচরণে।পাঁচমাসের দাম্পত্যজীবনে এমন ডেস্পারেট হয়ে অর্ণব কখনোই নূরকে জড়িয়ে নেয়নি।এতোটা গভীরভাবে সে নূরকে আঁকড়ে ধরেছে যেন বহু প্রতীক্ষার পর সে মহামূল্যবান কিছু পেয়েছে।
নূর ণিজের ডান হাতটা অর্ণবের পিঠের ওপর রাখে।আস্তে আস্তে জিজ্ঞেস করে,

“আমায় বলুন অর্ণব,কাঁদছেন কেন?”
“আমার ভুল হয়েছে নূর।আমি অনেক বড় অপরাধ করেছি;পাপ করেছি আমি। তোমায় কষ্ট দিয়ে ভুল করেছি আমি নূর।কেন চলে এলে আমায় ছেড়ে? পাগলের মতো খুঁজেছি তোমাকে। সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে, আমি আসলে না হয় আমায় প্রশ্ন করতে।একটা থাপ্পড় মারতে। কেন ফেলে চলে এলে এভাবে? বুকের ভিতরটা জ্বলে যাচ্ছে নূরজাহান। আমায় ক্ষমা করো,রেহাই দেও এই দহন থেকে।আমি জ্বলে পুড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছি। আমায় বাঁচাও নূরজাহান।আমায় বাঁচাও প্লিজ।”

অর্ণবের কথায় নূর হাসে।চোখ ভর্তি জল নিয়ে মুখে হাসি ফোটে নূরের।অর্ণব তার স্বামী,যতই সে অভিমান করুক এই মানুষটাকে ছেড়ে সে ভালোথাকতে পারবেই না।অর্ণবের উপস্থিতি, তার ছোঁয়া, কথা বলা সব নূরের একমাত্র মানসিক শান্তির কারণ।সে ভালোবাসে অর্ণবকে; ভীষণ ভালোবাসে।কিন্তু অভিমানি মেঘেদের আঁড়ালে ভালোবাসার চাঁদটা লুকিয়ে ছিলো।অর্ণবের ভালোবাসার ঝড়ো হাওয়া সেই মেঘকে উঁড়িয়ে নিয়ে দূরে ফেলে দিয়েছে।
নূর একটু অভিমানি কণ্ঠে বলে ওঠে, “আপনি-ই তো বলেছিলেন চলে আসতে। দু’টো অপশনের মধ্যে যেকোনো একটা বেছে নিতে বলে চলে গেলেন।আমি মা হয়ে কি করে বাচ্চাদের ফেলে দেই বলুন?”
“আমার রাগের মাথায় বলা কথাটা শুনলে কিন্তু একবারো কারণটা জিজ্ঞেস করলে না নূরজাহান? এমন পাষাণী তো তুমি নও নূরজাহান। আমায় একটুও ভালোবাসো না তুমি?”

অর্ণবের কথায় নূর এবার একটু জোরেই হেসে উঠলো। অর্ণব এবার নূরকে ছেড়ে নিজের জায়গায় এসে বসলো।
“আপনাকে আমি ভালোবাসি না একথা আপনি বলতে পারলেন অর্ণব?আপনাকে ভালো না বাসলে আর কাকে ভালোবাসবো আমি?আপনার তিন সন্তানের জননী আমি। আপনাকে ছাড়া অন্য কোনো পুরুষের অস্তিত্ব মন বা মস্তিকেও আমি আনি না।আপনিই প্রথম আপনি-ই শেষ।এর আগে পরে কিচ্ছু নেই আমার জীবনে।আমার রবের নামে কসম করে বলছি।”
নূরের কথার উত্তর করেনা অর্ণব।এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে তার ব্যক্তিগত নারীর দিকে;যে অভিমানের পাল্লা ভারী করে তাকে ফেলে এসেছিলো।
“আপনি কি আমায় আবার এবরশন করাতে বলবেন?”
ভীত দৃষ্টিতে অর্ণবের দিকে চেয়ে বলে ওঠে নূর।
“যদি বলি হ্যাঁ?”

“তাহলে এবার তো অন্তত খুঁজে পেয়েছেন,পরেরবার আমি বা আমার অস্তিত্ব পুরোটাই আপনার জীবন থেকে মুছে দিয়ে চলে যাবো।আমার অনুপস্থিতিতে,আমার পীড়ায় প্রতি মূহুর্তে আপনি নিজের অস্তিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন। কিন্তু আমি নূরজাহান বিনতে সারোয়ার আপনার ছাঁয়াটাও মাড়াবো না।”
নূরের এমন কঠোর কথায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে অর্ণব।সে নূরের সাথে একটু খুনসুটি করতে চেয়েছিলো কেবল।কিন্তু নূর তা সত্যি ভেবে নিয়েছে।একটু আগের নরম কণ্ঠের অধিকারিণী নারী,তার স্ত্রী এখন পুরাদস্তুর মা হয়ে উঠেছে। নিজের সন্তানেকে রক্ষার্থে যেকোনো কিছুর মায়া ত্যাগ করার মতো সামর্থ্য রাখে এই নারী।

“তুমি আমায় আবার ভুল বুঝলে নূরজাহান।আমাদের সন্তানদের ক্ষতি আমি চাইনা।সেদিন আমি দিকবেদিক শূণ্য হয়ে পড়েছিলাম।ক্রোধের মাত্রা এতো বেশি হয়েছিলো যে দ্বিতীয়বারের মতো বাবা হতে পারার খুশিটা তার মাটি চাপা পড়ে গিয়েছিলো।আমার শুধু তোমায় আর আমার সন্তানদের চাই, আর কিচ্ছু চাইনা নূরজাহান। কিচ্ছু না।”
“আপনি আমার লোকেশন জানলেন কি করে?”
“তোমার সিম ট্র‍্যাক করেছি।এরপর তোমার ফুপ্পি ও আমার কল করে জানান তুমি এখানে আছো।”
“এতো কিছু করে ফেলেছেন!”
“আধ-পাগল করে রেখে এসেছো,আর বলছো এতো কিছু করে ফেলেছেন!আমার ইচ্ছে ছিলো তোমায় খুঁজে পেলে একটা শাস্তি দেওয়া।”
“কী শাস্তি?”
“তুমিই বলো, তোমার কেমন শাস্তি প্রাপ্য?”

“শাস্তি তো আপনার প্রাপ্য।আপনি আমায় ভুল বুঝেছেন; অপমান করেছেন বলা চলে।আবার আমায় শাস্তি দিতে চাচ্ছেন? বড্ড না-ইনসাফি হয়ে যাবে ।”
“কিন্তু তোমায় শাস্তি না দিলে যে নিজের সাথে না-ইনসাফি হয়ে যাবে নূরজাহান।আমি যে বড্ড স্বার্থপর।”
নূর অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয় অর্ণবের দিকে।
“আপনার শাস্তিটা কী?সেটা বলুন আগে।”
অর্ণব কথা বলেনা। সান্নিধ্য বাড়ায় নূরের সাথে।তৎক্ষণাৎ নূরের ওষ্ঠপুটে নিজের রাজত্ব কায়েম করে। নূর ধপ করে নিজের আঁখিজোড়া বন্ধ করে নেয়।দু’হাতে অর্ণবের কাঁধটা জড়িয়ে ধরে ঘনিষ্ঠতা বাড়ায় নূর। অর্ণবও নূরের পিঠ আঁকড়ে ধরে আরো কাছে টেনে নেয়। বহুল প্রতীক্ষিত মিলনে দু’জনই বেপরোয়া হয়ে ওঠে।নূর আটকায় না অর্ণবকে।এটা তো হওয়ারই ছিলো।সেদিন অমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটলে তাদের এমন নৈকট্য সে রাতেই ঘটতো।
কিছুক্ষণ বাদে অর্ণব নূরের ওষ্ঠ ছেড়ে দেয়। নিজের কপালটা নূরের কপালের সাথে মিশিয়ে ঘন ঘন শ্বাস নেয় দু’জনেই। নূরের গালে লজ্জার রক্তিম আভা দেখা দিচ্ছে।

অর্ণব সাত-পাঁচ না ভেবে নূরের চুলের ভাজে নিজের হাত গলিয়ে আবারো নূরের ওষ্ঠের ভাঁজে নিজের ওষ্ট ডোবায়। এই আক্রমণ নূরের কাছে অনাকাঙ্ক্ষিত ছিলো। নূর কিঞ্চিৎ কেঁপে ওঠে; নিজের অবস্থান টের পেয়ে আবারো জড়িয়ে নেয় অর্ণবকে।একহাতে খামচে ধরে অর্ণবের ঘাড়ের কাছের চুল।নূরের লাই পেয়ে অর্ণব আরো গভীরভাবে নূরকে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়;অপ্রতিরোধ্য গতিতে শাসন চালাতে থাকে নূরের ঠোঁটের ভাজে। আস্তে আস্তে নূরের ঠোঁট ছেড়ে গলায় মুখ ডোবায় অর্ণব।শিরদাঁড়া বেয়ে শীতলতা নামে যায় নূরের।
নূরের গলায় কয়েকটা ভেজা চুমু খেয়ে গলার ভাজে মুখ ডুবিয়ে পড়ে থাকে অর্ণব।
এদিকে নূরের লজ্জায় লাল-নীল অবস্থা।বিয়ের পাঁচ মাসে অর্ণবকে সে ঘনিষ্ঠ ভাবে যতবার পেয়েছে এমন অনুভূতিরা তার মাঝে হুড়মুড়িয়ে ধরা দিয়েছে।

একটু পরেই অর্ণব নূরের থেকে কিছুটা সরে আসে।নূর তখনো মাথা নিচু করে ঠোঁট কামড়ে হাসছে।
“নূরজাহান?”
অর্ণবের ডাকে উত্তর দিলো না নূর।
“আমায় প্রশ্ন করবে না?কেন আমি সেদিন তোমায় অমন কঠন শর্ত দিয়েছিলাম?”
নূর এবার মাথা তুলে তাকায়।উপর নিচে মাথা নাড়ায় অর্থাৎ সে জানতে চায়। নীরবতা ভেঙ্গে বলে ওঠে, “কেন?”
অর্ণব একটা দীর্ঘশ্বাস নেয়।নূরকে একহাতে জড়িয়ে নিলে নূর মাথা রাখে অর্ণবের কাঁধে।অর্ণব হালকা ঠোঁট ছোঁয়ায় নূরের মাথায়।
“তোমার মা আমায় বলেছিলেন তুমি বন্ধ্যা।”

অর্ণবের কথায় যেন নূর ভাষা হারিয়ে ফেলেছে।সে বন্ধ্যা? তার মা এমন কথা বলেছে অর্ণবকে?
“তোমায় বিয়ে করার পিছনের এটা আমার দ্বিতীয় কারণ ছিলো নূরজাহান। প্রথমটা অন্য একদিন বলবো। সেদিন তোমার প্রেগন্যান্সির খবরটায় আমি ভেবেছিলাম তুমি আমায় ইচ্ছে করে ঠকিয়ে বিয়ে করেছো।আমার মনে হচ্ছিলো তুমি আমায় প্রতারিত করেছো।তুমি,তোমার পরিবার মিলে আমায় মিথ্যে বলে বিয়ে করেছো।”
নূর মূর্তির ন্যায় বসে আছে।এই মূহুর্তে কোনো অনুভূতি কাজ করছেনা তার মধ্যে।রাহেলা তার সাথে এমন প্রতারণা করেছে তা নূর ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি।বারোটা বছর যেই নারীকা মায়ের মতো সম্মান-শ্রদ্ধা করলো,ভালোবাসলো সে কিনা এমন এক বিশ্রী ষড়যন্ত্র করে বসলো! নূরের এখন কান্না পাচ্ছে। “মা” নামক শব্দটা তার জীবনে অভিশাপ। গর্ভধারিণী মা নিজের স্বার্থে ছয় বছরের নূরকে ফেলে গেলো;আর পালনকারী মা কোনো এক অজানা কারণে নূরের বৈবাহিক জীবনটা বিষিয়ে তোলার জঘন্য পরিকল্পনায় মত্ত হলো!

নূর হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো।অর্ণবকে জড়িয়ে ধরে অঝোরে কাঁদতে লাগলো মেয়েটা।একটা নির্ভরযোগ্য কান্নার স্থান পেয়ে যেন বাচ্চা হয়ে উঠলো নূর।প্রিয় জিনিস হারিয়ে যাওয়ার বা ভেঙ্গে যাওয়ার বেদনায় একটা বাচ্চা যেভাবে কান্না করে নূরও সেভাবেই কাঁদতে লাগলো। এক পর্যায়ে নূরের শ্বাস ওঠে উপক্রম হলে অর্ণব নূরের পিঠ ডলতে শুরু করে।নূরকে স্বাভাবিক হতে বলে।এই মূহুর্তে এভাবে কান্না করলে বাচ্চাদের জন্য ক্ষতিকর হবে।
অর্ণব খাটের পাশের টেবিল থেকে পানির বোতল এনে নূরের সামনে দিল।নূর অপ্রকৃতস্থের মতো পানি পান করে নুয়িয়ে পড়লো অর্ণবের কাঁধে।
এমন সময় দরজায় কড়া নাড়লেন মারজানা। অর্ণব নূরের পিঠের পিছনে একটা বালিশ দিয়ে আরাম করে বসিয়ে দিয়ে দরজা খুললো।

মারজানা খাতুন ঘরে প্রবেশ করে নূরের কাছে গেলেন।নূর তখন চোখ বন্ধ করে আধ-শোয়া হয়ে বসা।
“নূর?” মারজানার কণ্ঠ পেয়ে চোখ তুলে তাকালো নূর।
“আমি সব জানি রে মা। অর্ণব আমায় তুই অজ্ঞান থাকা অবস্থায় সব বলেছে।তবে রাহেলা ভাবীকে নিয়ে আমি ভাইজানের চিঠিটা পড়েই সন্দিহান হই।আমি ভেবেছিলাম ভাইজান মারা যাওয়ার পর হয়তো সে তোকে অত্যাচার করেছে। তখন তো আর জানতাম না যে এমন নোংরা ষড়যন্ত্র করেছে ওই মহিলা। তুই চিন্তা করিস না মা।কাল আমরা সবাই ঢাকা যাবো।রাহেলাকে তার সব কৃতকর্মের জবাব দিতেই হবে।”

নূরজাহানের সংসার পর্ব ৭

“বাবা তোমায় চিঠিতে কি লিখেছিলেন ফুপ্পি?”
“তুই দেখবি?”
মারজানার প্রশ্নে নূর হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ায়।
শাড়ির আঁচলের আঁড়ালে থাকা চিঠিটা নূরের হাতে দেন মারজানা।নূর কাঁপা হাতে চিঠিটা নেয়;খুলে পড়তে শুরু করে।

নূরজাহানের সংসার পর্ব ৯