নে আদরে জড়িয়ে মন পর্ব ১০

নে আদরে জড়িয়ে মন পর্ব ১০
সিনথিয়া

নাজুক হাতটা মুঠোয় নিয়ে উঠে বসলো শেহজাদ। উদাম শরীর খসে ডুভেটটা নিচে পড়তেই চোখ সড়িয়ে নিলো আরশি।
শুকনো গলায় বার কয়েক ঢোক গিললো জুতসই উত্তর খুঁজতে। কিন্তু বিধিবাম!
কি উত্তর দেবে ও?
এতো রাতে আপনার রুমে এসেছি আপনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে? জানতে এসেছি কেনো এতো রহস্য দিয়ে ঘিরে রেখেছেন নিজেকে?
চোখ খিঁচে নিজেকেই এক প্রস্থ বকলো মেয়েটা। এসব বললে কি আদৌ ও বের হতে পারবে এই রুম থেকে? লোকটার যে মেজাজ!
যদি বেঁধে রেখে দেয় ওকে?

শেহজাদের ওষ্ঠপুটে বাঁকা হাসির হুল্লোড়। ব্যাধের দৃষ্টি তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটার মলিন মুখে। বলল,
“বললে না তো! কেন এসেছো এই ঘরে? ”
আরশি খড়খড়ে ঠোঁটটা ভেজালো জিভ দিয়ে। সাহস করে মানুষটার চোখে চোখ রাখলো। দৃঢ়স্বরে বলল,
“শখ করে আসিনি এ ঘরে। নিহাতই আপনি অসুস্থ। আর এখনো তো বিবেকটুকু চলে যায়নি আমার। তাই দেখতে এসেছিলাম-”
“যে মরে গেলাম কি না?”
মূহুর্তেই অন্য হাত দিয়ে শেহজাদের মুখ চেপে ধরলো আরশি। মানুষটার উষ্ণ শ্বাস এসে লাগলো তালুতে। ক্ষীণ কন্ঠে শুধোলো,
“উল্টো-পাল্টা বলছেন কেনো? সামান্য জ্বরই তো এসেছে! আবার তো সুস্থ হয়ে যাবেন আপনি।”
এই গোটা শহরে যে মানুষটা ওর সবচেয়ে অপছন্দের, তার প্রতিই এতোটা দূর্বল কবে থেকে হলো মেয়েটা?
কথাটা ভাবতেই শেহজাদের মুখ থেকে অপ্রস্তুতে হাত সড়ালো আরশি। আর তখনই অন্য হাতের হ্যাঁচকা টানে হুমড়ি খেয়ে পড়লো মানুষটার গায়ে।
চোখ তুলে মুখপানে চাইতেই ঢিপঢিপ শব্দ তুললো হৃদযন্ত্রটা। ঝাঁকে ঝাঁকে রক্তজবা ভির বসালো কিশোরীর পান্ডুর গালে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“ক্যান আই কিস ইউ আরশি? প্লিজ?”
ঠোঁটভাঙা কথার ভার সামলাতেই যেনো নিজের অজান্তে উদাম কাঁধজোড়া শক্ত করে ধরলো মেয়েটা। অথচ মানুষটার কি মাতাল করা তাকানোর ধরন।
ঘন পল্লব বিশিষ্ট অক্ষিযুগলে নেশা ধরেছে যেনো।
আরশি হতব্যস্ত তাকায় সেই চোখে। অবিশ্বাসের তোপে বলে ওঠে,
“কীহ্?”
“তুমি না বললে, আমি অসুস্থ! আর অসুস্থ মানুষ আবদার করলে, সেটা রাখতে হয়! নাকি এটাও জানো না ?”
আরশির ফ্যালফ্যাল দৃষ্টি উপেক্ষা করেই ওর অধরজোড়ার একেবারে কাছাকাছি চলে আসলো শেহজাদ। তপ্ত শ্বাসের ছোঁয়া এসে লাগলো মেয়েটার ঠোঁটে।

“থাক জানতে হবে না! শুধু বলো একটা চুমু খেতে পারবো কি না?”
“আপনি জ্বরের ঘোরে আছেন শেহজাদ। এমন কিছু করবেন না যাতে পরে আফসোস করতে হয় আপনার!”
এই প্রথম বোধ হয় সামনাসামনি শেহজাদের নাম ধরে ডাকলো আরশি। তাতেই অশান্ত হলো মানুষটার ভিতরটা। ছোট করে শ্বাস ফেললো ও। মাথা ঝুঁকিয়ে কম্পিত অধরজোড়া লুফে নেয়ার আগে শুধু বলল,
“আমি জ্বরের ঘোরে না থাকলেও এমন কিছুই করতাম আরশি! তুমি না চাইলেও করতাম!”
ঈষদুষ্ণ ঠোঁটের স্পর্শে মুদে আসলো কিশোরীর চোখ। আবরণহীন দেহের তাপে পুড়লো মেয়েটা।
শেহজাদের উষ্ণ শ্বাসের গতি বাড়লো। অথচ কি ধীরগতিতে চলছে তার ঠোঁট। যেনো আস্বাদন করছে কোনো প্রিয় অসুখের স্বাদ।
এর আগে কখনো এতোটা কাছাকাছি আসেনি ওরা। ভার্সিটির প্রথম দিনে আরশি শেহজাদের গালে যখন চুমু খেয়েছিল? তখন তো মানুষটার গালে ঠোঁট ছুঁইয়েই ছিটকে সড়ে গেছিল সামনে থেকে।
অথচ সেদিনের চুমুর সাথে আজকের চুমুর কি বিস্তর পার্থক্য।

হসপিটালের ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডের বাইরে পায়চারি করছে জারা। দাঁত দিয়ে নখ কাঁটতে কাঁটতে ক্রমাগত তাকাচ্ছে ওয়ার্ডের দরজার দিকে।
তখনই ভিতর থেকে একজন টেঁকো মতোন ডক্টর এসে দাঁড়ায় দরজার সামনে। পশ্চিমা ভাষায় জিজ্ঞেস করে,
“আপনি কি জারা? পেশেন্ট ডাকছেন আপনাকে!”
কথাখানা শোনামাত্রই হুড়মুড়িয়ে ওয়ার্ডের ভিতরে ঢোকে মেয়েটা। নীলাভ চোখজোড়া হন্য হয়ে খোঁজে আয়ানকে।
বেডেই শুয়ে ছিল লোকটা। জারাকে দেখেই মুখে হাসি ফুঁটিয়ে উঠে বসে ও। হাত তুলে ইশারা করতেই মেয়েটা ছুটে যায় ওর কাছে।
জারার চোখেমুখে অনুশোচনার ঝড়। সুস্থ-সবল একটা মানুষকে কি-না এক লাথিতে হসপিটালের বিছানায় শুইয়ে দিলো ও?
তখনই ডক্টর আসলেন ওদের কাছে। মেয়েটার চিন্তিত স্বর। জিজ্ঞেস করলো
রয়েসয়ে,

“ডক্টর হাউ ইজ হি?”
“ওহ! হি ইজ এ্যাবস্যালুটলি-”
কথাটা শেষ করতে পারলেন না ডক্টর। তার আগেই কেশে উঠলো আয়ান। হয়তো চোখ দিয়ে ইশারাও করলো কিছু একটা। কিন্তু সেটা দৃষ্টিগোচর হলো না জারার।
ডক্টর বিরক্তি সমেত ঠোঁট টিপলেন। এমন পেশেন্ট সে বাপের জন্মে দেখেনি। পুলিশ অফিসার হয়ে কি না ডক্টরকে ঘুষ দেয় বাড়ির লোককে মিথ্যে বলার জন্য?
দীর্ঘ শ্বাস ফেললেন ভদ্রলোক। গলার শ্লেষা সড়িয়ে আগের মতোই আবার বলা শুরু করলো,
“নট ফাইন ম্যাম। আ’ম এফ্রেইড হি উইল নেভার হেভ হিজ অ’ন চিলড্রেন!”
আঁতকে উঠলো জারা। উদ্বিগ্ন চোখে চাইলো আয়ানের দিকে। মানুষটার মলিন মুখ দেখে হুহু করে ওর মন। আহারে! কত শখ ছিল মানুষটার বিয়ে করার।
ফিউচার জেনারেশন, ফিউচার জেনারেশন করে পাগল করে ফেলতো ওকে। অথচ আজ!
অন্যকিছু আর ভাবতে পারলো না জারা। ডক্টরকে বললো, আলাদা করে ওদের একটু কথা বলার সময় দিতে।
লোকটাও আর বেশিক্ষণ থাকলেন না ওদের মাঝখানে। চলে গেলেন অন্য পেশেন্টের কাছে।
লোকটা যাওয়া মাত্রই জারা সোজাসুজি তাকালো আয়ানের হেম চোখে। ঢোক গিললো আয়ান। কুলকুল ঘামলো কপালটাও। ভাবলো,

এই রে! ধরা পড়ে গেলো না তো ও?
তখনই কানে উড়ে এলো সেই প্রতীক্ষিত শব্দগুলো,
“আয়ান! বিয়ে করবেন আমায়?”
আয়ানের চোখ-মুখ জুড়ে অবিশ্বাস। সেটা ফুটে উঠলো কথায়ও।
“এ্যাহ? কি বললেন আপনি? আরেকবার বলুন তো! আমি কি ভুল শুনলাম?”
জারা ঠোঁট ভেজালো কথা সাজাতে।
কি বলবে ও? নিজের কাজে অনুতপ্ত হয়ে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে আয়ানকে। তাতে যদি ছেলেটার সম্মানে লাগে?
“আ-আমি মন থেকেই বলছি কথাগুলো। জানি আমি হয়তো আপনার যোগ্য নই। আমার মা-বাবা নেই৷
ছোটবেলা থেকে আশ্রমে অন্যের দাদা-দাদির আদরে বড় হয়েছি। তারাই পড়িয়েছেন। তারাই বাবা-মায়ের অভাবটা পূরণ করেছেন। কোনো এক অভাগা বাবা-মা সন্তানের বোঝা হয়ে আশ্রমে এসে আমার মতো অন্যের সন্তানকে আকড়ে ধরে বেঁচেছেন।”

একটু থামলো জারা। চোখের কোনায় জমা পানিটুকু আলগোছে মুছে আবার বলল,
“স্কলারশিপের টাকায় বিদেশে এসে পড়াশুনো করলেও থাকা-খাওয়ার টাকাটা কিন্তু ওনারাই জোগাড় করে দিয়েছেন।
এমন নিঃস্বার্থ ভালোবাসা পেয়ে বড় হওয়া মেয়েটা স্বার্থ পরের মতো আপনাকে একা ফেলে চলে যাবে?
চোখের সামনে আপনার স্বপ্ন ভেঙে যেতে দেখবে? তার চাইতে চলুন আমরা বিয়ে করি! জানি দুদিনের পরিচয় আমাদের। কিন্তু বিশ্বাস করুন আমার তেমন কোনো চাহিদা নেই। না-ই বা হলো আমাদের ফিউচার জেনারেশন।
সারাজীবন না হয় দুই বুড়ো-বুড়ি এভাবেই একে অপরের ভরসা হয়ে কাটিয়ে দেবো?”
ঝুলে পড়া চোয়ালটা কোনোমতে টেনেটুনে ওঠালো আয়ান৷ ওর ডক্টরকে দিয়ে বানানো কথাগুলো বিশ্বাস করে এতো বড় একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললো মেয়েটা?
হুট করেই যেনো জারার প্রতি ভালোলাগা আরো কয়েক শতগুণ লাফিয়ে বাড়লো ওর।
মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললো, অতীত যা-ই হোক, জারার আগামীটা সুন্দর করার দায়িত্ব আজ থেকে আয়ানের।

শেহজাদের ঠোঁটের কবলে হাসফাস করছে আরশি। শ্বাস নিতেও যেনো বেগ পেতে হচ্ছে মেয়েটার। অস্থিরতা টের পেয়ে অধর জোড়া ছাড়লো শেহজাদ।
ঠোঁট কেঁটে রক্ত জমাট বেঁধেছে সেখানে। আরশিরও তাই।
দুজনেই দম ফেলছে ঘনঘন।
নীলাভ চোখজোড়া যেনো এখনো আরশি নামক মাদকতায় টলছে। আরেকবার হামলে পড়তে চাইছে ওর গোলাপের পাপড়ির ন্যায় ঠোঁটের উপর। কিন্তু সে সুযোগ আর দিলো কই মেয়েটা?
ছাড়া পেয়ে অমনি ছুট লাগালো নিজের রুমে।
দরজা আটকে হাত দিলো গালে। যেনো সদ্য লাভা থেকে তুলে এনেছে তা।
ঠোঁট কামড়ে বুকে হাত দিলো। সেখানেও একই রকম তান্ডব। লাগামহীন ঘোড়ার বেগে ছুটছে যেনো হৃদপিণ্ডটা। ঠোঁট দুটোয় কি ভয়ংকর জ্বালাপোড়া।
আচমকা লজ্জায় মুখ ঢাকলো আরশি। এবার লোকটার সামনে কিভাবে গিয়ে দাঁড়াবে ও?
এই লজ্জায় মরে যাবে না তখন?

আর শেহজাদ? একহাত চোখের ওপর রেখে শুয়ে রইলো কিছুক্ষণ। পুবের আকাশে ভোরের আলো ফুটতে দেরি নেই।
আরশির অমন হুট করে দৌড়ে পালানোয় প্রথমে মেজাজ খারাপ হলেও পরক্ষণেই ঠোঁট কামড়ে হেসে ফেললো ও। মস্তিষ্কের প্রতিটি নিউরনে ঘুরপাক খেলো একটু আগের ঘটনা।
কিন্তু ঐ অল্প কিছু সময়ের ভালো লাগাটুকু যেনো এখন শাস্তি হয়ে দাঁড়ালো ওর জন্য। ঘুমোতে পারলো না শেহজাদ। উঠে গেলো লম্বা একটা একটা শাওয়ার নিতে।
অন্যান্য দিনের মতোই তুষার মুড়িয়ে শুরু হলো আজকের সকাল।
ম্যানহাটন সিটির ব্যস্ততাও শুরু হলো নিত্যদিনের মতো। কফিশপ-রেস্তোরাঁ গুলোতে মানুষের আনাগোনা বাড়লো দিনের শুরুতেই।

হাডসন নদীর নির্মলতা ছাপিয়ে গেলো কর্মব্যস্ত মানুষের দৌড়ঝাঁপ।
শব্দ বাড়লো। সাথে বাড়লো মানুষের কোলাহল।
রয়্যাল ব্লু ওভারকোট আর প্যান্টের সাথে সাদা টি-শার্ট পড়ে রুম থেকে বেরিয়েছে আরশি। হালকা সাজের সাথে কোমর অবধি চুলগুলো ছেড়ে রেখেছে অযত্নে।
পুরোদস্তুর রেডি হয়ে রুম থেকে বেরিয়েছে শেহজাদও। ধূসর রঙা ব্লেজার আর স্যুটে
সুঠাম দেহের সৌন্দর্য যেন ঠিকরে ঠুকরে বের হচ্ছে ফাঁক-ফোঁকর দিয়ে।
আরশির সেদিকে তাকিয়ে আবারও রাতের ঘটনাগুলো মাথায় আসলো। লজ্জায় আরেকদফা মরে যাওয়ার আগে তাড়াহুড়ো করে বের হলো বাসা থেকে।

কিন্তু নিচে এসেই আঁটকে গেলো মেয়েটা। সেই তো যাওয়া লাগবে শেহজাদের গাড়ি করেই!
মানুষটা আসে ওর পিছন পিছন। প্রতিদিনের মতোই আরশিকে গাড়িতে উঠতে বলে নিজেও উঠে বসে ড্রাইভিং সিটে।
মুখের ভাব-সাব এতোটাই নিরেট যে মাঝপথে সন্দেহ হলো আরশির! মানুষটা এক ঘুমে সব ভুলে বসেনি তো?
বরফে ঢাকা রাস্তা ভেঙে গাড়ি এসে থামলো ভার্সিটির গেইট থেকে একটু আগে। আরশি গাড়ি থেকে নামলো নিঃশব্দে।
বুকটা তার ভেঙেচুরে একাকার হলো। সামান্য কথা অবধি বললো না লোকটা ওর সাথে?
বীতস্পৃহায় ধুপধাপ পা ফেলে ভার্সিটির গেটের দিকে হাঁটা দিতেই পেছন থেকে ডাক দিলো শেহজাদ। আরশি থমকালো। পা ঘুরিয়ে আবার গাড়ির কাছে এসেই খ্যাঁক
করে উঠলো,

“কেনো ডেকেছেন?”
মানুষটার নির্লিপ্ত কণ্ঠ। রয়েসয়ে বলল,
“ব্যাগ যে রেখে গেছো? খেয়াল আছে?”
আরশির বুকটা আরেকবার ভাঙলো? ব্যাগ রেখে গেছে দেখে ডাকলো লোকটা? অন্যকিছুর জন্য নয়?
আশাহত মেয়েটা শেহজাদের হাত থেকে ছো মেরে ব্যাগটা নিলো। পরপর বিবর্ণ মুখে ভার্সিটির রাস্তা ধরতেই ঠোঁট টিপে হাসলো শেহজাদ।

জারা ভীষণ মনমরা হয়ে বসে আছে আরশির পাশে। শেহজাদের পড়ানোতে মন নেই তার৷
কাল যে আয়ানকে এতো বড় একটা কথা বলে ফেললো! তার উত্তরই যে দিলো না লোকটা।
কেমন মূর্তির ন্যায় বাসায় ফিরে রুমের দরজা আটকালো। পাত্রী হিসেবে কি এতোটাই বাজে জারা? নাকি মা-বাবা নেই শুনে রাজি হতে পারছেনা আয়ান?
মাথার রগগুলো কেমন দপদপ করলো চিন্তায়। আরশিকে যদি একটু বলতে পারতো সবটা। তাহলে কি একটু হালকা লাগতো না ওর?

কিন্তু ক্লাস শেষেই শেহজাদ পশ্চিমা ভাষায় বলে বসলো,
“মিস আরশি। আমার সাথে অফিস রুমে আসুন! এক্ষুনি।”
ব্যাস! জারার আর কিছু বলা হলো না আরশিকে।
আরশিও উশখুশ করছিল জারাকে শেহজাদের ব্যাপারে বলার জন্য। কিন্তু বিষয়টা জারা কিভাবে নেবে সে হিসেবটা মেলাতে মেলাতেই যে ডাক পড়ে
গেলো ওর। থাক এসেই না হয় বলবে ক্ষণ।
আগে জাম্বুবানটা কেনো ডাকছে সেটা জানা দরকার! আবারও নির্ঘাত কোনো ভুল ধরেছে ওর! সে জন্যই ডাকছে হয়তো!
মনে মনে এসব ভেবে শেহজাদের পেছন পেছন ছুটলো আরশি। এসে থামলো শেহজাদের অফিস রুমের সামনে।
ক্লাস না থাকলে এখানেই বসে স্টুডেন্টদের কপিগুলো চেক করে লোকটা।
নোটবুক আর বইয়ে ঠাসা রুমটাতে তবুও কেমন গা ছমছমে ভাব।
এখানে কেনো আসতে বললো ওকে শেহজাদ?
রুমে ঢুকেই দরজা ভিড়ালো লোকটা। পরপর আরশিকে শূন্যে তুলে টেবিলে বসিয়ে দু’হাত দু’পাশে রাখলো ওর।
আরশির অধরযুগলে আরেকবার নিজের নিশানা বসানোর পূর্বে ঘন ঘন শ্বাস ফেলে
বলল,

নে আদরে জড়িয়ে মন পর্ব ৯

“আই কান্ট টেইক দিস এ্যানিমোর আরশি। আই নিড ইউ। আমি চাই সবাই জানুক তুমি আমার ওয়াইফ!”
তখনই কোত্থেকে ডাহুক পাখির ন্যায় ভিড়ানো দরজা খুলে হাজির হলো রেজা।
আরশি আর শেহজাদকে ঐ অবস্থায় দেখে চোখজোড়া যেনো কোটর ছেড়ে বাইরে আসার আহুতি জানালো ওর।
চিৎকার করে বলে উঠলো,
“হোয়াট আর ইউ ডুইং উইথ মাই ফ্রেন্ড প্রফেসর?”
শেহজাদের কন্ঠ শীতল। আরশিকে ওভাবেই দু’বাহুর মধ্যে রেখে বলল,
“হোয়াট ডু ইউ থিঙ্ক উই আর ডুইং মিস্টার… রেজা?”

নে আদরে জড়িয়ে মন পর্ব ১১