পারমিতা পর্ব ১২
Nabila Ahmed
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে অরিয়ন। খালি গায়ে শুধু মাত্র প্যান্ট পরা অবস্থায় নিজের চেহারা আয়নায় দেখতে ব্যস্ত। দু হাত ড্রেসিং টেবিলের উপর রাখা যেন হাত সরালেই যে কোনো মুহুর্তে পড়ে যেতে পারে। ঘাড় ঘুরিয়ে অন্যদিকে তাকাতেই নজরে আসে ঘুমন্ত পারমিতার চেহারা।
নিশ্চিতে, নিস্পাপ শিশুর মতো ঘুমিয়ে আছে মিতা। ঠোঁটে, গলায় ও ঘাড়ে কালো কালো কালচে দাঁগ হয়ে আছে। অরিয়ন ভালো করেই জানে এসব কি। কিছু হচ্ছে কামড়ের দাঁগ আর কিছু হিকি। মিতার মুখ থেকে নজর সরিয়ে ঘরটা ভালো ভাবে দেখলেই লক্ষ্য করে এক পাশে নিচে পড়ে আছে গতকাল রাতে পরা মিতার কাপড় আর তার পাশেই অরিয়নের শার্ট।
হঠাৎ করেই মিতা ঘুমের মধ্যে নড়েচড়ে উঠতেই শরীরে থাকা চাদরটা কিছুটা নিচে নেমে আসতেই লক্ষ্য করে কামড়ের দাঁগগুলো শুধু গলা, ঠোঁট আর ঘাড়েই সীমাবদ্ধ নয়, বুকের দিকেও দেখা যাচ্ছে। কামড়ের দাঁগ নজরে আসতেই দু পা পিছিয়ে পরে অরিয়ন। নিজের চোখকে যেন বিশ্বাস করাতে পারছে না যা দেখতে পারছে অরিয়ন। নিজের দু হাতের দিকে তাকিয়ে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে অরিয়ন। ঘুম ভাঙ্গতেই মিতাকে বিছানায় দেখতেই লাফিয়ে উঠে অরিয়ন।
হয়তো ভুলে ঘুমিয়ে পরেছে ভাবতে ভাবতেই আয়নার সামনে এসে দাঁড়ায়। নিজের ভুল ভাঙ্গে যখন খেয়াল করলো অরিয়নের গায়েও কিছু দাঁগ দেখা যাচ্ছে। “কামড়ের দাঁগ?” প্রশ্ন জাগে অরিয়নের মধ্যে।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
” না না না না না না” বিরবির করে বলতে থাকে অরিয়ন।
“রে*পিস্ট” আয়নার দিকে আবারও তাকিয়ে নিজেকে দেখে বলে উঠে অরিয়ন।
“আমি…আমি… পরীর সাথে কিভাবে..আমি, রে*প.. পরীকে?” কথাগুলো যেন ঠিক মতো বলতেও পারছে না অরিয়ন। ক্রোধে নিজের দু হাত দিয়ে নিজের চুল টেনে ধরেছে।
” না না না না না, রে*পিস্ট, আই এম এ ফা*কং রে*পিস্ট” কথাটা বলেই রাগে নিজের হাত দিয়ে ড্রেসিং টেবিলের উপর রাখা সব কিছু ঠেলে ফেলে দেয় অরিয়ন।
–কেএএএএএএ।
অরিয়নের চিৎকার করা শুনে ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠে নিজেও চিৎকার দিয়ে উঠে মিতা। পরক্ষণেই দেখতে পায় সামনে দাঁড়িয়ে আছে অরিয়ন। বিছানায় বসে থাকা মিতার নজর যায় অরিয়নের দিকে যে কিনা একবার নিজের হাতের দিকে ও একবার আয়নার দিকে তাকিয়ে মাঝে মধ্যেই বিরবির করে কিছু বলে উঠছে। অরিয়ন আবারও ফুলের টব হাতে তুলে আয়নায় ছুড়ে মারতেই মিতা চাদরসহ বিছানা থেকে নেমেই নিজের কাপড় পরে নিয়েই দৌড়ে চলে যায় অরিয়নের কাছে।
–না না না না না না।
মন্ত্রের মতো বার বার বলতে বলতেই ভাঙ্গা আয়নায় নিজের ডান হাত দিয়ে ঘুসি বসিয়ে দেয় অরিয়ন।
–অরিয়ন ভাইয়ায়ায়ায়ায়ায়া।
অরিয়নের হাত ধরে চিৎকার করে উঠে মিতা।
অরিয়নের র*ক্তে হাত আর আয়না নিমিষেই লাল হয়ে গিয়েছে কিন্তু তাও যেন অরিয়নের মনকে ক্ষণিকের জন্যও শান্ত করতে পারছে না। নিজের হাতে মিতার স্পর্শ অনুভব করতেই মিতার দিকে ফিরে তাকায় অরিয়ন। মিতাকে দেখতেই যেন নিজেকে পৃথিবীর সব চাইতে নিকৃষ্ট ব্যক্তি মনে হতে লাগলো অরিয়নের।
–আমাকে ছুঁবি না পরী।
কথাটা বলেই ধাক্কা দিয়ে মিতাকে দূরে সরিয়ে দেয় অরিয়ন।
–আমার স্পর্শে তুই..তুই অপবি..
কথাটা বলতে গিয়েও থেমে যায় অরিয়ন।
–তোকে তো আমি…আমি অপবিত্র.. করেই দিয়েছি।
কথাটা বলেই আবারও আয়নায় ঘুসি মারতে থাকে অরিয়ন।
–কি বলছো তুমি এসব? থামো প্লিজ।
নিজেকে নিজে আঘাত করতে থাকা অরিয়নকে দেখে কান্না করতে করতে দু পা এগিয়ে গিয়ে বলে মিতা।
–আই হেট মাইসেল্ফ, আই হেট মাইসেল্ফ ফর ডুয়িং দিস টু ইউ।
নিজেকে আঘাত করতে থাকা অরিয়ন বার বার একই কথা বলতে থাকলো।
–অরিয়ন ভাইয়া, প্লিজ আমার কথাটা শুনো।
মিতা অরিয়নের বাম হাত ধরে টানতে টানতে বলে।
–আমি একটা জানো*য়ার, একটা মনস্টার, আই এম এ ফা*কং রে*পিস্ট পরী।
চিৎকার করে বলতে থাকা অরিয়নের রাগ এতোটাই বেড়ে গিয়েছে যে নিজের হাতের মারাত্মক অবস্থাও নজরে আসছে না।
অরিয়নের কথা শুনে নিজের জায়গায় পাথর হয়ে রইল মিতা। “রে*পিস্ট?” বিরবির করে বলে মিতা।
–কি বলছো তুমি এসব?
অবাক হয়ে প্রশ্ন করে মিতা।
–ঠিকি বলছি আমি, নিজেকে একবার দেখ, দেখ তোর প্রিয় অরিয়ন ভাইয়া কি অন্যায় করেছে তোর সাথে।
তাচ্ছিল্যের এক হাসি দিয়ে বলে অরিয়ন।
–না, তুমি এরকম কিছুই করো নি।
মাথা নাড়িয়ে বলে মিতা।
— আই ডিড পরী,আই ডিড বিকজ আই এম আ মনস্টার, এ রে*…
–নো ইউ ডিড নট, ইউ ডিড নট।
অরিয়নের কথা শেষ হওয়ার আগেই চেচিয়ে বলে উঠে মিতা।
–আই ডিড পরী, আই ক্যান সি ইউ, লুক এট ইউরসে..
–অরিয়ন..
চিৎকার করে উঠে মিতা।
বড় বড় শ্বাস নিতে থাকা মিতা নিজের রাগ যেন কোনোমতেই কমাতে পারছে না। কোথা থেকে অরিয়নকে নাম ধরে ডাকার সাহস পেলো তাও জানেনা। মিতার মুখ থেকে নিজের নাম শুনে চুল থেকে হাত সরিয়ে মিতার দিকে অবাক হয়ে তাকায় অরিয়ন।
— ইউ ডিড নট। গতকাল রাতে যা হয়েছে তাতে আমার সম্মতি ছিলো, আমার ইচ্ছায় হয়েছে।
এক দৃষ্টিতে অরিয়নের দিকে তাকিয়ে বলে মিতা।
–তোর ইচ্ছাতে? আমি তোকে ফোর্স করিনি?
অবাক হয়ে প্রশ্ন করে অরিয়ন।
মাথা নাড়িয়ে না বোঝায় মিতা।
–তাহলে তুই আমাকে বাধা দিস নি কেনো?
মিতার দিকে দু পা এগিয়ে প্রশ্ন করে অরিয়ন।
–কি হয়েছে বল? কেনো বাধা দিস নি?
মিতার কাছাকাছি গিয়ে নিজের দু হাত দিয়ে মিতার দু গাল ধরে নিজের কপালের সাথে মিতার কপাল স্পর্শ করিয়ে বলে অরিয়ন।
–আমার উপর করুনা হচ্ছিলো তোর? যে নিজের কথা একবারও ভাবলি না?
মিতার চোখের দিকে তাকিয়ে বলে অরিয়ন।
–আমাকে তোমার প্রয়োজন ছিলো।
অরিয়নের দিকে তাকিয়ে জবাব দেয় মিতা।
মিতার উত্তর শুনেই যেন শান্ত হওয়া রাগটা আবারও মাথায় উঠে গেলো অরিয়নের। চোখে মুখে রাগের বহিঃপ্রকাশ হতে লাগলো।
–প্রয়োজন হলেই যার তার সাথে শুয়ে পড়বি তুই?
দাঁতে দাঁত চেপে বলে অরিয়ন।
মাথা নাড়িয়ে না বলে মিতা।
–তাহলে?
মিতার কিছুই বুঝতে না পেরে আবারও প্রশ্ন করে অরিয়ন।
–কারণ…কারণ, আমি তোমাকে ভালোবাসি।
বলে ফেলে মিতা।
গতকাল সন্ধ্যা ৬ টা।
অফিসে নিজের রুমে বসে সব কিছু চেক করতে ব্যস্ত অরিয়ন। চেয়ারের উপরে নিজের কোর্ট খুলে রেখে ল্যাপটপে এটা সেটা চেক করতে করতেই মাঝে মধ্যে দু এক চুমুক কফি পান করছে।
–এই মহারাজ।
হুট করেই রুমের দরজা খুলে ভেতরে চলে আসে একজন যুবক।
–স্যার, আমি উনাকে আসতে না করেছিলাম তাও উনি জোর করে ঢুকে পড়েছে।
যুবকের পেছন পেছন একজন মধ্য বয়স্কলোক প্রবেশ করে অরিয়নের উদ্দেশ্যে বলে।
–সমস্যা নেই আংকেল, আপনি এখন আসতে পারেন।
অরিয়নের জবাব শুনে ছেলেটি অরিয়নের সামনে রাখা চেয়ার টেনে বসে অপরদিকে মধ্য বয়স্কলোকটি রুম থেকে বের হয়ে যায়। অরিয়ন কোনো কথা না বলে ভ্রু কুচকিয়ে যুবকটির দিকে তাকিয়ে রইল।
–বিয়ে গরিবের ফর জানাইবের প্রয়োজন ও মনে ন গরস?
হুট করে বলে উঠে ছেলেটি।
–তুই এতদিন হডে আসিলি ইবে জানাইবের প্রয়োজন মনে গইজ্জুস নে?
ছেলেটির দিকে তাকিয়ে অরিয়নও বলে।
–জেলেত্তুন কেইল্লে গরি খবর ফাডাইয়ুম?
জবাব দেয় ছেলেটি।
–কিহ? জেলে? কিন্তু কিভাবে?
এবার চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষা বাদ দিয়ে ঠিক করে কথা বলতে শুরু করে অরিয়ন।
–সব বলবো আর সবকিছু তোর থেকে জেনেও নিবো। আগে চল ক্লাবে যাই।
অরিয়নের হাত ধরে টেনে উঠিয়ে বলে ছেলেটি।
–তুই ও না ফারহান, একটু ও বদলাস নি।
চেয়ারের উপর থেকে কোর্টটা হাতে তুলে নিয়ে বলে অরিয়ন।
–ফারহানরা বদলায় না।
বাঁকা হাসি দিয়ে বলে ফারহান।
–এরপর আর আফরিনকে পাশ নি?
হাতে ম*দের গ্লাস নিয়ে জিজ্ঞেস করে ফারহান।
–নাহ।
নিজের গ্লাসে চুমুক দিতে দিতে বলে অরিয়ন।
–এরপর ওর বোনকে বিয়ে করেছিস? যে কিনা তোর থেকে ১১ বছরের ছোট?
নিজের গ্লাসে এবার চুমুক বসায় ফারহান।
–হ্যাঁ।
জবাব দেয় মা*তাল হওয়া অরিয়ন।
–দেখতে কেমন?
প্রশ্ন করে ফারহান।
ফারহানের কথা শুনেই রেগে যায় অরিয়ন।
–শি ইজ এ চাইল্ড সো টক কেয়ারফুল্লি ফারহান।
নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করে বলে অরিয়ন।
–তোর চোখেই বাচ্চা। ১৮ বছরে কেউ আবার বাচ্চা হয়? মেয়েরা আমাদের আগে মেন্টালি ম্যাচুয়র হয়ে যায় জানিস না?
নিজের গ্লাসে আবারও ম*দ নিতে নিতে বলে ফারহান।
–ঠিক আছে আর কিছু বলবো না।
অরিয়নের চাহনি দেখে বলে ফারহান।
–তো তোর গার্লফ্রেন্ড দেখতে কেমন ? লাস্ট কখন দেখেছিলাম ভুলেই গিয়েছি। চেহারাও মনে নেই।
বলে ফারহান।
–শি ইজ দা মোস্ট বিউটিফুল গার্ল ইন দা ওয়ার্ল্ড।
চোখ বন্ধ করে জবাব দেয় অরিয়ন।
–তোর সাথে চিট করার পরেও?
অবাক হয়ে অরিয়নের দিকে তাকিয়ে বলে ফারহান।
–ইয়েস।
আবারও চুমুক বসায় অরিয়ন।
–তো, তোর সেই জান্নাত এর কি খবর?
হাসতে হাসতে প্রশ্ন করে অরিয়ন।
–জান্নাত না জাহান্নাম বল…অকে সামনে পেলে গ*লা টিপে মারবো আমি।
দাঁত কিরমির করে বলে ফারহান।
–তবে যাই বলিস, ও কিন্তু তোর একটা সুন্দর নাম দিয়েছে, ফারহানা আপু।
কথাটা বলেই শব্দ করে হাসতে থাকে অরিয়ন।
–তুপ থাক তুই। আমাকে জেলে পাঠিয়েছে ঐ মেয়ে, অকে শুধু একবার হাতের নাগালে পাই তারপর বুঝাবো মজা।
গম্ভীর হয়ে বলে ফারহান
–হুম হুম।
সায় মিলায় অরিয়ন।
মা*তাল অরিয়নকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে বাসায় মধ্যে দিয়ে গেছে ড্রাইভার। কোনো মতে হেলেদুলে রুমের দরজা খুলতেই থমকে যায় অরিয়ন। সামনেই দাঁড়িয়ে আছে আফরিন। আফরিন, অরিয়নের আফরিন।
—-আমি কখন থেকে অপেক্ষা করছি। আজ এতো লে…
অরিয়নের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা আফরিন হাসি মুখে কথা বলা শুরু করলেই দু কদমে সামনে গিয়ে দাঁড়ায় অরিয়ন। পরক্ষণেই নিজের ঠোঁট স্পর্শ করে আফরিনের ঠোঁটকে।
কি হচ্ছে কিছুই যেন মিতার মাথায় ঢুকছে না। একটু আগেই দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অরিয়নের ঠোঁট মিতাকে ক্ষণিকের জন্যও ছাড়ছে না।
–আই মিসড ইউ সো মাচ।
মিতার ঠোঁট ছেড়ে দিয়ে কপালের সাথে কপাল স্পর্শ করিয়ে বলে অরিয়ন।
–অরিয়ন ভা..
নিজেকে ছাড়িয়ে কথা বলার চেষ্টা করে মিতা।
–হিসসসসস।
নিজের আঙ্গুল মিতার ঠোঁটের সাথে স্পর্শ করে বলে অরিয়ন।
পরক্ষণেই আবারও অরিয়নের ঠোঁট আক্রমণ করে মিতার ঠোঁটকে। অরিয়নের চুমু খাওয়াগুলো যেন প্রতি মুহূর্তে এক অন্যরকম অনুভূতি দিচ্ছে মিতাকে। “আচ্ছা প্রথম কিস কি এরকমই হয়?” মনে মনে ভাবে মিতা। হুট করেই কোলে তুলে নেয় মিতাকে। মিনিটের মধ্যেই মিতা নিজেকে আবিস্কার করে বিছানার উপর। বিছানায় মিতাকে শুয়িয়ে দিতেই যেন হুশ ফিরলো মিতার। কি হতে চলেছে তা ভালোই বুঝতে পারছে মিতা।
–অরি…
–ইউ নো? ইট হার্টস। ইট হার্টস সো মাচ বেব।
নিজের হাত দিয়ে মিতার হাত নিয়ে নিজের বুকের বা পাশে রেখে বলে অরিয়ন।
বিছানায় শুয়ে থাকা নিতা ভালোই বুঝতে পারছে কাকে আর কার উদ্দেশ্য কথাগুলো বলছে অরিয়ন। অরিয়নের চোখে এরকম ভালোবাসা তখনি মিতা দেখেছে যখনি আফরিনের নাম বা আফরিন সামনে থাকতো। মিতার বুকের মধ্যে অসম্ভব যন্ত্রণা করতে শুরু করেছে অরিয়নের চোখ দেখে। মনে হচ্ছে এক্ষুনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়বে অরিয়ন। ভালোবাসা কেমন হয় তা মিতা এখন ভালোই জানে, এটাও জানে অপর পাশের মানুষটা আপনাকে ভালো না বাসলে কেমন অনুভব হয় আপনার তাও।
–ইউ ডিডেন্ট লিভ মি ফর হিম, ডিড ইউ?
চোখের কোণে পানি জমে থাকা অরিয়নের চোখ দেখতেই যেন আপনা-আপনি মিতার চোখ থেকে পানি পড়তে শুরু করলো।
–আই নিড ইউ, ডু ইউ নিড মি আফরিন?
আবারও নিজের কপালের সাথে মিতার কপাল স্পর্শ করিয়ে মিতার দিকে তাকিয়ে বলে অরিয়ন।
আফরিন, যেই নামটা মিতার খুব পছন্দের, যেই নাম শুনলেই মুখে হাসি ফুটে উঠে মিতার মুখে সেই নামটা শুনে কোনোদিন মরণ যন্ত্রণা অনুভব করবে তা কল্পনাও করেনি মিতা।
মানুষ ভালোবাসায় নিজেকে ধ্বংস করে দেয়, করে দেয় বরবাদ। বিনিময়ে কি চায়? চায় শুধু অপর পাশের মানুষের ভালোথাকা। মিতার ভালোবাসাটা ঠিক কতদিনের তা মিতা জানেনা, শুধু জানে সামনে তাকিয়ে থাকা মানুষটাকে মিতা খুব ভালোবাসে। এতোটাই ভালোবাসে যে তার জন্য মিতা বরবাদ হতেও রাজি আর সব কিছু বরবাদ করতেও।
চোখ দিয়ে পানি পড়তে থাকা মিতা অরিয়নের দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়িয়ে নিজের সায় দিতেই হাসি ফুটে উঠে অরিয়নের মুখে। আলতো করে চুমু খায় মিতার কপালে। চোখ দিয়ে গড়িয়ে পানি পড়তে থাকা মিতা নিজের হাত দিয়ে অরিয়নের গলা জড়িয়ে ধরে।
বর্তমান
–কারণ…কারণ, আমি তোমাকে ভালোবাসি।
বলে ফেলে মিতা।
মিতার কথা শুনে প্রথমে কিছুটা অবাক হয় অরিয়ন কিন্তু পরক্ষণেই আবারও ঠিক হয়ে যায়।
–আমি ও তোকে খুব ভালোবাসি পরী, কিন্তু ভালোবাসলেই এইসব হতে দেওয়া ঠিক নয়।
মিতার গাল থেকে হাত সরিয়ে কাধের উপর রেখে বলে অরিয়ন।
পারমিতা পর্ব ১১
মিতা ভালো করেই জানে অরিয়ন কোন ভালোবাসার কথা বলেছে আর মিতা কোন ভালোবাসার কথা বলছে তা।
–আমি তোমাকে সেভাবে ভালোবাসি যেভাবে একজন নারী একজন পুরুষকে ভালোবাসে, যেখাবে একজন স্ত্রী তার স্বামীকে ভালোবাসে, যেভাবে আফ…যেভাবে আফরিন আপু তোমাকে ভালোবাসতো।
এক নিশ্বাসে বলে ফেলে মিতা।