পারমিতা পর্ব ৩৭
Nabila Ahmed
–পারমিতা?
পেছন থেকে কেউ মিতার কাঁধে স্পর্শ করে মিতার পুরো নাম ধরে ডাক দেয়।
অপরিচিত কারো কন্ঠ শুনতেই পেছনের দিকে ফিরে তাকায় মিতা।
মিতার সামনেই দাঁড়িয়ে আছে একজন বয়স্ক লোক। চুল আর দাঁড়ি পেকে সাদা হয়ে আছে। চোখে চশমা। সাদা রঙ্গের পাঞ্জাবি আর পায়জামা পরিহিত। দেখে মনে হচ্ছে ভালো পরিবার থেকে বিলং করে।
–আপনি?
বৃদ্ধ লোককে চিনতে না পেরে জিজ্ঞাসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে প্রশ্ন করে মিতা।
–আমার নাম কবির রহমান।
মিতার হাত ধরে মিতাকে টেনে দাঁড় করিয়ে বলে লোকটি।
–আমি তো আপনাকে চিনি না। আপনি আমার নাম জানেন কীভাবে?
প্রশ্ন করে মিতা।
মিতার প্রশ্ন শুনতেই লোকটির মুখে ফুঁটে উঠে আলতো এক হাসি। হাসির মাঝখান দিয়ে চোখেও পানি দেখা যাচ্ছে।
–যার নামটা আমি রেখেছি তাকে আমি চিনবো না?
বলে লোকটি।
পারমিতা নাম রেখেছে? কি বলছেন উনি? কিছুই যেন মিতার মাথায় ঢুকছে না। একের পর কী হচ্ছে মিতার সাথে তা বুঝতে পারছে না মিতা।
–মানে? আমার নাম আপনি কেন রাখবেন? আমার নাম রেখেছে আমার মা।
বলে মিতা।
–রাস্তায় দাঁড়িয়ে না থেকে কোথাও বসে কথা বলি? বয়স্ক মানুষ বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারিনা।
বলে কবির রহমান।
–অপরিচিত মানুষের সাথে আমি কোথাও যাই না।
জবাব দেয় মিতা।
দেখতে ভদ্র পরিবারের মতো লাগলেই যে সে ভদ্র হবে তেমন কোনো কথা নেই। আর মিতা যখন জানেই কেউ মিতাকে মা*রার চেষ্টা করছে সেহেতু অপরিচিত মানুষের থেকে দু চারটা ইমোশনাল কথা শুনে ভুল করার মানুষ নয় মিতা।
–ঠিক আছে। অন্য কোথাও যেতে হবে না। পাশের চায়ের দোকানটায় বসি?
হাত দিয়ে পাশের চায়ের দোকান দেখিয়ে বলে কবির রহমান।
এবার বিষয়টা মিতার কাছে খারাপ মনে হলো না। মাথা নাড়িয়ে সায় দিতেই দু জনে হাটা শুরু করে। চায়ের দোকানের শেষ টেবিলে বসে দু জনে।
–দুই কাপ চা দিন।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
দোকানদারকে বলে কবির রহমান।
মিতা কিছু বললো না। ভালো করে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলো কবির রহমানকে।
–আপনি আমাকে কীভাবে চিনেন? আপনাকে আমি কখনো দেখিনি।
কবির রহমান এদিকে তাকাতেই সাথে সাথে প্রশ্ন করে মিতা।
–তুমি বললে তোমার নাম রেখেছে তোমার মা। তোমার মায়ের নাম কী?
প্রশ্ন করে কবির রহমান।
মিতা ভ্রু কুঁচকে লোকটির দিকে তাকিয়ে রইল। কী বলবে বুঝে উঠতে পারছে না। মিথ্যে বলবে নাকি সত্যি সেটা ভাবছে।
–মায়া চৌধুরী।
জবাব দেয় মিতা।
মিতার জবাব শুনে তাচ্ছিল্যের এক হাসি দিলো কবির রহমান।
–আমি তোমাকে তোমার মায়ের নাম জিজ্ঞেস করেছি,পারমিতা। তোমার চাচীর না।
–আপনি কীভাবে…
কথাটা বলতে গিয়েও থেমে গেলো মিতা। সামনে বসে থাকা এই বয়স্ক লোক যে কিনা নিজেকে কবির রহমান বলে দাবী করছেন সে মিতার লাইফ সম্পর্কে অনেক কিছু জানেন বলে মিতার ধারণা হচ্ছে।
–সুমাইয়া চৌধুরী।
জবাব দেয় মিতা।
–তোমার মার আসল নাম কী?
প্রশ্ন করে কবির রহমান।
–সুমাইয়া রহমান।
জবাব দেয় মিতা।
কবির রহমানের দিকে তাকাতেই বুঝতে পারে তিনি কি বলতে চাচ্ছেন।
–পৃথিবীতে হাজারো রহমান আছে তার মানে এই না যে সবাই আমার মার রিলেটিভ।
বুদ্ধি খাটিয়ে বলে মিতা।
এবার কবির রহমান আবারও একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিলো। পাঞ্জাবির পকেট থেকে মোবাইল বের করে কিছু খুজতে লাগলেন। একটু পরেই মোবাইল এগিয়ে দিলেন মিতার দিকে।
মোবাইল ধীরে ধীরে হাতে তুলে নেয় মিতা। স্ক্রিনে একটা ছবি ভাসছে। ছবিটা মিতা এর আগে কখনো দেখেনি। তবে ছবিতে দেখা যাচ্ছে যুবক বয়সের কবির রহমানকে। পরনে একটা কালো শার্ট। মিতা চোখ তুলে একবার কবির রহমান এর দিকে তাকায়। এরপর আবারও ছবির দিকে তাকায়। ছবিতে কবির রহমানের গলা জড়িয়ে ধরে আছে ১৬/১৭ বছরের এক তরুণী।
–এই ছবির মানে কী?
প্রশ্ন করে মিতা।
–আরও আছে।
কথাটা বলতেই মিতা একের পর এক ছবি দেখতে থাকে। প্রতিটা ছবিতে কবির রহমানের সাথে ২/৩, ১০/১২, ১৮/১৯ বছরের সুমাইয়া রহমানকে দেখা যাচ্ছে।
–আমি তোমার হতভাগা নানা। সুমাইয়ার বাবা কবির রহমান।
নরম সুরে বলে কবির রহমান।
আনিকা চৌধুরী যখন কেবিনে প্রবেশ করলো অরিয়ন তখন বিছানায় শুয়ে চোখ বন্ধ করে রয়েছে। মিতা কেবিন থেকে বের হওয়ার পর থেকেই বুকটা কেমন যেন আনচান করছে অরিয়নের।
“আমাকে আর আটকাতে পারবে না” পরীর এই কথাটা বার বার মনে পড়ছে অরিয়নের। এভাবে বলার কী প্রয়োজন ছিলো?
–অরিয়ন?
স্নেহভরা কন্ঠে ডাক দেন আনিকা চৌধুরী।
আনিকা চৌধুরীর কন্ঠ শুনতেই চোখ খুলে তাকায় অরিয়ন। নিজের মায়ের মুখে মিষ্টি এক হাসি ফুটে উঠেছে।
আনিকা চৌধুরী বেডের পাশে টুল টেনে বসতেই অরিয়ন আনিকা চৌধুরীর দিকে জিজ্ঞাসার দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।
–কিছু বলবি?
প্রশ্ন করে আনিকা চৌধুরী।
–পরীর গায়ে হাত তুলেছো কেন?
গম্ভীর কণ্ঠে প্রশ্ন করে অরিয়ন।
অরিয়নের প্রশ্ন শুনতেই মুখ থেকে হাসিটা সরে যায় আনিকা চৌধুরীর। চোখেমুখে ফুঁটে উঠেছে বিরক্ততা।
–কী হলো জবাব দেও?
একটু রাগ হয়ে বলে অরিয়ন।
–কারণ ওর জন্য তুই ম*রতে বসেছিলি।
উত্তর দেয় আনিকা চৌধুরী।
–ও কী আমাকে বলেছিলো,আমাকে বাঁচাও? আমি নিজের ইচ্ছায় ওকে বাঁচাতে গিয়েছিলাম,মা।
বলে অরিয়ন।
–সেই একই কথা।
বলে আনিকা চৌধুরী।
–না, একই কথা নয়।
কথাটা বলে একটু বড় করে শ্বাস নেয় অরিয়ন। মনে হচ্ছে ব্যাথাটা আবার বাড়ছে।
–একটা মানুষকে আর কত অপমান আর কত শাস্তি দিবে তুমি?
তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে অরিয়ন।
–কী বলতে চাচ্ছিস তুই?
ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে আনিকা চৌধুরী।
–বলতে চাচ্ছি, মিতার সাথে তুমি আর খারাপ ব্যবহার করবে না।
–অরিয়ন…
অবাক হয়ে বলে আনিকা চৌধুরী।
–সব কিছু জানার পরও তুই এই কথা বলতে পারলি?
আবারও কথাটা বলতেই গলা ভিজে আসলো আনিকা চৌধুরীর।
— হ্যাঁ, সব কিছু জানার পরও বলছি। অহনার মৃত্যুতে ওর কোনো হাত ছিলো না,মা। ও তখন একটা অবুঝ বাচ্চা। যে নিজের বাবার কাছে কিছু নিয়ে আবদার করছিলো। আর কেন ভুলে যাও? ও নিজের ওর মা বাবাকে হারিয়ে এতিম হয়েছে।
–ওর কারণে আমার অহনা ম…
–না। ওর কারণে আমাদের অহনা আমাদের ছেড়ে যায় নি। যদি তাই হতো তাহলে অহনা নিজে বের না হয়ে পরীকে বের করতো না,মা। মেয়ে হারানোর কষ্ট হয়তো আমরা কেউ বুঝবো না, তোমার কষ্ট হয়তো আমরা কেউ বুঝবো না ভেবেই কেউ কোনোদিন তোমাকে কিছু বলিনি। কিন্তু মা, এখন তুমি সীমার বাইরে চলে যাচ্ছো।
–আমরা ভেবেছিলাম ধীরে ধীরে তোমার রাগ অভিমান কমে যাবে। কিন্তু তা যে এতো ভয়াবহ রূপ নিবে তা বুঝতেও পারিনি। সব কিছুর জন্য শুধু পরীকেই দোষারোপ করো তু…
অরিয়নের কথাগুলো শেষ করার আগেই নিজের হাত দেখিয়ে থামতে বলে আনিকা চৌধুরী।
চোখে তার পানি ছলছল করছে।
–এখন মা থেকে বউয়ের কষ্ট বেশি চোখে লাগছে?
বলে আনিকা চৌধুরী।
–মা। কিসব আজেবাজে কথা বলছো তুমি?
অবাক হয়ে বলে অরিয়ন।
–যা বুঝার আমি তা বুঝে গেছি।
কথাটা বলেই উঠে দাঁড়ায় আনিকা চৌধুরী।
–মা, ওয়েট। মা?
ডাকতে থাকে অরিয়ন কিন্তু আনিকা চৌধুরী আর অপেক্ষা করলো না। চোখ মুছতে মুছতে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
–শি*।
বিরবির করে বলে অরিয়ন।
–আমি তোমার হতভাগা নানা। সুমাইয়ার বাবা কবির রহমান।
নরম সুরে বলে কবির রহমান।
–আর কিছু লাগবো আপনাগো?
টেবিলের উপর দু কাপ চা দিয়েই জিজ্ঞেস করে দোকানদার।
–না। লাগলে বলবো।
বলে কবির রহমান।
মিতা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে কবির রহমান এর দিকে। কি বলতে বুঝতে পারছে না।
–আমি আপনার কথা বিশ্বাস করি না।
আমতা আমতা করে বলে মিতা।
–বিশ্বাস না করাটাই স্বাভাবিক। জন্মের পর থেকে কখনো আমাকে দেখোনি। আজ হঠাৎ সামনে এসে বললে অন্য কেউ হলেও বিশ্বাস করতো না।
চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে বলে কবির রহমান।
–আপনি যদি আমার নানাভাই হয়েই থাকেন তাহলে এতোদিন কেন খোজ নেন নি?
প্রশ্ন করে মিতা।
–তোমাকে অনেক কিছু বলার আছে। তবে এতোটুকু জেনে রাখো যে, তোমার মায়ের বিয়েতে আমার মত ছিলোনা।
বলে কবির রহমান।
–আমার কথাগুলো হয়তো তোমার আজ বিশ্বাস হবে না। তবে তোমার চাচা ওয়াহিদ চৌধুরীকে জিজ্ঞেস করবে আমার কথা। যদি আমাকে বিশ্বাস হয় তাহলে এই নাম্বারে কল করো। অনেক কিছু বলার আছে তোমাকে।
আবারও বলে কবির রহমান।
–তবে একটা কথা জেনে রাখো। যাদের তুমি তোমার পরিবার ভাবছো, যাদের তুমি এতো ভালোবাসছো, এতো বিশ্বাস করছো তারা এসবের যোগ্য নয়। বিশেষ করে হাবিব চৌধুরী।
কথাটা বলেই উঠে দাঁড়ায় কবির রহমান।
–মানে? কী বলছেন আপনি এসব? কেনো নয়?
মিতাও দাঁড়াতে দাঁড়াতে প্রশ্ন করে।
–এখন বললে বিশ্বাস করবে না। আগে নিজের বাবা থেকে নিশ্চিত হও কবির রহমান কে। এরপর না হয় বলবো।
কথাটা বলেই মিতার মাথায় হাত রাখে কবির রহমান।
মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে দোকানদারের সামনে দিয়ে দাঁড়ায়। পকেট থেকে ১০০ টাকার নোট বের করে এগিয়ে দেয়।
–বাকিটা বকসিস।
কথাটা বলেই চলে যায় কবির রহমান।
দোকানদারের চোখেমুখে আনন্দ ফুঁটে উঠেছে। মিতা মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে রইল দোকানে। মিতা জীবনটা যেন একটা সার্কাসে পরিনত হয়েছে।
ধীরপায়ে দোকান থেকে বেরিয়ে পড়ে মিতা।
দুপুরে অরিয়নের খাবার নিয়ে কেবিনে এসেছে আফরিন আর আবরার। হাবিব চৌধুরী পুলিশের সাথে কথা বলছে বাইরে। মায়া চৌধুরী ও আনিকা চৌধুরীকে বাড়িতে দিয়ে আসছে গিয়েছে ওয়াহিদ চৌধুরী।
আবরার এসে বেডটা একটু উঁচু করে দেয়। আফরিন অরিয়নের খাবার একেক করে বক্স থেকে বের করছে। অরিয়নের চোখ দরজার দিকে তাক করা। অপেক্ষা করছে মিতার রুমে প্রবেশ করার।
–ডাক্তার বলেছে সাদামাটা খাবার দিতে। তাই স্যুপ করে নিয়ে এসেছি আর…
–পরী কোথায়?
আফরিনের কথার মাঝেই আবরারের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে অরিয়ন।
–বাসায় গেছে।
জবাব দেয় আবরার।
–বাসায় গেছে মানে? আমি হাসপাতালে আছি জেনেও ও বাসায় চলে গেছে?
অবাক হয়ে প্রশ্ন করে অরিয়ন।
–সকালে বের হওয়ার সময় তো তাই বললো। ওর নাকি ভালো লাগছিলো না। বললো ফ্রেশ হয়ে একটু রেস্ট নিবে।
বলে আবরার।
–সকালে? সকালে মানে এই কেবিন থেকে বের হওয়ার পর?
অধৈর্য্য হয়ে বলে অরিয়ন।
–হ্যাঁ। কেন?
জবাব দেয় আবরার।
–আর ইউ এ ফা*কিং ফুল?
বেড থেকে উঠে বসার চেষ্টা করতে করতে বলে অরিয়ন।
–আফনান,বিছানা থেকে উঠো না। শুয়ে থাকো। তোমাকে রেস্ট নিতে বলেছে ডাক্তার।
অরিয়নের বাহু ধরে বলে আফরিন।
–আরিয়ান, পরীকে কল দে। ফোন দিয়ে দেখ পরী কোথায়।
আফরিনের কথা ইগনোর করে বসতে বসতে বলে অরিয়ন।
–আচ্ছা আমি দিচ্ছি তুই খেয়ে নে আগে।
বলে আবরার।
–কল দিতে বলেছি, তুই চুপচাপ কল দে। বেশি কথা বলবি না।
বিরক্ত হয়ে বলে অরিয়ন।
–আরিয়ান কল দিতে দিতে তুমি খেয়ে নাও। এভাবে থাকলে তো শরীর খারাপ হয়ে যাবে।
বলে আফরিন।
–আফরিন প্লিজ, এখন ভালো লাগছে না। আর তুই মিতাকে কল দে।
আবরারের দিকে তাকিয়ে বলে অরিয়ন।
আবরার কল দিয়ে ফোন কানের কাছে ধরে।
–মিতার মোবাইল তো বন্ধ।
একটু পরেই বলে আবরার।
–বন্ধ? বন্ধ কেন? মায়া চাচীকে কল দে তো।
চিন্তিত অরিয়ন ঘাবড়ে গিয়ে বলে।
এবার মায়া চৌধুরীর ফোনে কল দেয় আবরার।
–হ্যালো চাচী মিতা কোথায়?
প্রশ্ন করে আবরার।
–ও আচ্ছা।
বলে আবরার।
–কী হয়েছে? পরী বাসায় আছে তো?
আবরার কল কাটার আগেই প্রশ্ন করে অরিয়ন।
–চাচী বললো উনারা এখনো বাসায় পৌঁছায় নি। কেয়ারটেকার কে ফোন করে জানাচ্ছে আছে নাকি।
বলে আবরার।
অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে সকলেই। আবরার মায়া চৌধুরীকে ফোন করেছে গুনে গুনে ৩ মিনিট হবে। এই তিন মিনিট যেন ৩ দিন মনে হচ্ছে অরিয়নের কাছে। মনে হচ্ছে প্রতি সেকেন্ড গুনতে পারছে। সময় যতোই যাচ্ছে ধৈর্য্য যেন ততোই কমে আসছে অরিয়নের।
আবরারের ফোন বাজতেই সকলে যেন লাফিয়ে উঠলো। তাড়াতাড়ি করে ফোন রিসিভ করে আবরার। ফোন কানের কাছে নেওয়ার আগেই হাত থেকে কেরে নেয় অরিয়ন।
–হ্যালো চাচী?
–জ্বি আমি এখন ভালো আছি।
–চাচী পরীর কি খবর?
–কিহ?
অপর পাশ থেকে মায়া চৌধুরীর উত্তর শুনে মোবাইল আবরারের হাতে তুলে দেয় অরিয়ন। হাতে থাকা ক্যানোলা এক টানে খুলে ফেলে। র*ক্ত সাথে সাথেই ছিটকে র*ক্ত পড়া শুরু হয়েছে অরিয়নের হাত থেকে।
–ভাইয়া কী করছিস তুই? এগুলা খুলে ফেলছিস কেন?
প্রশ্ন করে আবরার।
পারমিতা পর্ব ৩৬
–আফনান। কী হয়েছে? কী বলেছে মা? এরকম পাগলামি করছো কেন?
অরিয়নের হাত ধরে টেনে বসিয়ে রাখার চেষ্টা করতে করতে বলে আফরিন।
–পরী…পরী বাসায় নেই।
বড় বড় শ্বাস নিয়ে বলে অরিয়ন।
–কিহ?
এক সাথে প্রশ্ন করে উঠে আবরার আর আফরিন।
অরিয়ন আর কোনো কথা না বলেই আফরিন থেকে হাত ছাড়িয়ে র*ক্তাক্ত হাত দিয়েই বুক হালকা চেপে ধরে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। পেছন পেছন দৌড়ে যায় আবরার আর আফরিন।