প্রণয়ের অন্তিমক্ষণ পর্ব ৩

প্রণয়ের অন্তিমক্ষণ পর্ব ৩
অনন্যা

-‘স্বর্ণের বিস্কুট!!!!! হুয়াট দ্যা ডিসমিস…!
রোদেলা কথাটা বলে কুহুর দিকে তাকালো।যার শুধু চোখ দেখা যাচ্ছে।আজ সে বোরকা-নিকাব পড়ে এসেছে।ঠিক করেছে যে আজ থেকে এভাবেই আসবে তানাহলে দেখা যাবে সবাই তাকে নিয়ে মজা উড়াবে ঐ ঘটনার জন্য।কুহু চুপচাপ দাঁড়িয়ে রয়েছে।ঘটনাটা বুঝতে একটু বেগ পোহাতে হচ্ছে তাকে।এদিকে রোদেলা বলে উঠলো
-‘ভাই আমি স্বর্ণের বিস্কুট খেয়ে ফেলেছি! কুহু!!
কুহু বিরক্তভরা নয়ন নিক্ষেপ করলো রোদেলার পানে।মনে মনে আওড়ালো সেই কথাটা—“বা/লের ভার্সিটি! একটাদিন ক্লাসরুম পর্যন্ত যেতে পারি না।এর আগেই কিছু না কিছু ঘটে যায়!”

-‘হাবিলদার! ধরো একে। থানায় না নিয়ে গেলে স্বীকার করবে না।
একজন মহিলা হাবিলদার এগিয়ে যেতে নিলে কুহু বলে উঠলো
-‘আরেহ! কি আশ্চর্য! ঘটনার সত্যতা যাচাই না করেই ধরতে আসছেন যে!
সবার নজর এখন ওদের দিকে।রোদেলা আর কুহু ভার্সিটির গেইটে ঢুকতে যাবে ওমনসময় পুলিশ এসে হাজির।রোদেলা বলে উঠলো
-‘কোন শা/লা মামলা করছে আমিও দেখি! আর কি প্রমাণ আছে যে আমিই চুরি করেছি?
কুহু বললো
-‘তার আগে এটা বলুন যে বিস্কুটটা কি আপনি নিজের চোখে দেখেছেন?
লোকটা বলে উঠলো—“নাহ।”
কুহু বললো

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

-‘ওকে চুরি করতে দেখেছেন?
লোকটা দুইপাশে মাথা নাড়িয়ে না বোঝালো।কুহু এবার বললো
-‘এখানে আশেপাশে তো কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা আছে বলেও মনে হয় না।তাহলে আপনি বুঝলেন কি করে যে ও’ই চুরি করছে?
লোকটা থতমত খেলো খানিকটা।পরক্ষণেই ভাব নিয়ে বললো
-‘বুঝতে হবে..পুলিশ বলে কথা!
-‘আরেহ! পেয়ে গেছেন!
সবাই পেছনে ঘুরে তাকালো।রোদেলার ভ্রু কুচকে গেল।এই সেই হতোচ্ছোরাটা! একটা বিস্কুট খেয়েছে বলে তার নামে মামলা করে দিল! এখন আবার বলে কিনা স্বর্ণের বিস্কুট ছিল! ওরে শা/লা! রাফি বললো
-‘হ্যাঁ অফিসার, এই মেয়েটাই।গতকালকে সে আমার বিস্কুট নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল আবার আমাকে কাকুও বলছে!
রোদেলা বলে উঠলো
-‘ভাই এটা কিছু হলো! আপনার বাড়ির দলিল থোরেই নিয়ে গিয়েছিলাম যে মামলা করে আসছেন!
রাফি বললো

-‘তার চেয়েও বড় কিছু নিয়ে গেছেন।আমার বিস্কুট, আমার প্রাণ।বাড়ির দলিলটা চাইলেও দিয়ে দিতাম তবু আমার বিস্কুট না।
রোদেলা কিছুক্ষণ হাবার মতো তাকিয়ে রইলো। কুহু বলে উঠলো
-‘আচ্ছা তাই?
রাফি উপর নিচ মাথা ঝাঁকালো।কুহু হঠাৎ পাশের দোকানে গিয়ে এক বয়াম বিস্কুট নিয়ে এলো।এরপর তা রাফির দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললো
-‘এই নিন এক বয়াম বিস্কুট।এবার আপনার বাড়ি-গাড়ি যা আছে সব কিছু আমার নামে করে দিন।
উপস্থিত সবাই হো হো করে হেসে উঠলো।রাফি ভ্যাবাচ্যাকা খেল।পুলিশ অফিসার বলে উঠলো
-‘ওয় ম্যাডাম জ্বী!! স্বর্ণের বিস্কুট নিয়ে এখন …
রোদেলা বলে উঠলো

-‘আপনার মাথার বিস্কুট! আপনি দেখছেন স্বর্ণের বিস্কুট ওটা? স্বর্ণের হলে আমি খেলাম কীভাবে?ওই মিয়া! বিস্কুটটা যে স্বর্ণের না সেটা কেন বলছেন না ওনাদের?
একটা হৈ হুল্লোড় পড়ে গেল।ভার্সিটির ভেতর থেকে অনেকেই বাহিরে এসে কাহিনীটা বোঝার চেষ্টা করতে লাগলো।এক পর্যায় আহনাফরাও বেরিয়ে গেল।আহনাফ ঘটনাটা বোঝার জন্য ভিড় ঠেলে এগিয়ে এলো সামনে।সামনে দাঁড়ানো রমণীকে দেখেই তার কপাল কুচকে গেল। সে বলে উঠলো
-‘রোদ, তুই?
সবার নজর গেল আহনাফের দিকে।রোদেলার চোখ-মুখ উজ্জ্বল হয়ে গেল খুশিতে।সে বলে উঠলো
-‘আরেহ্ আহনাফ ভাই, আপনি!
এরপরেই রাফি বলে উঠলো—“আরেহ ভাই তুমি!”

কুহু মনে মনে বললো—“আরেহ চুমুখোর লোক! পরক্ষণেই সে পেছন দিকে ঘুরে গেল।কোনোমতেই আহনাফকে বুঝতে দেওয়া যাবে না যে এটা কুহু।কিন্তু কুহু বুঝলো না যে এই রোদেলা একে ভাই বললো কেন..! আর নামটা কি বললো? আহনাফ!কোথায় যেন সে এই নামটা শুনেছে! কুহু জটিল অংক কষতে বসলো যেন।
এদিকে রোদেলা আহনাফের উদ্দেশ্যে বলতে লাগলো
-‘দেখুন না আহনাফ ভাই! এই লোক কি শুরু করেছে!
আহনাফ আশেপাশে তাকালো।অনেক মানুষ! সে বলে উঠলো
-‘সিনেমা চলছে না এখানে।আপনারা যার যার কাজে যান।
আহনাফের কথা শুনে একে একে সবাই যাওয়া আরম্ভ করলো।আহনাফ বললো
-‘কি হয়েছে?

রোদেলা আর রাফি একসাথে নিজেদের কথা বলতে লাগলো।আহনাফ চেঁচিয়ে উঠলো
-‘চুপপপ….একজন একজন করে বল..রাফি আগে তুই বল।
রোদেলা মুখ ভেংচি কাটলো।রাফি শুধু বললো
-‘ভাই..এটাই সেই বিস্কুট চোর।
আরিফ পেছন থেকে বললো
-‘আয়হায় কি বলো! এ তো দেখি চোর/নি..!
আহনাফ যা বুঝার বুঝে গেল। সে পুলিশ অফিসারের দিকে তাকালো।তাকিয়েই রইলো! অফিসার থতমত খেলেন খানিকটা।সে কি মেয়ে নাকি যে এভাবে দেখছে! তবে আজকাল যে যুগ পড়েছে ছেলেরা ছেলেদেরও খারাপভাবে দেখে মাই/রি! সে নিজের পোশাকটা একটু ঠিকঠাক করলো।আহনাফ বললো
-‘আপনি কোন থানার পুলিশ?
লোকটা বললো—ক’কেন?
-‘আগে কখনো দেখিনি আপনাকে।
লোকটা বললো

-‘আপনি কি আগে জেলখানায় থাকতেন নাকি যে আমাকে চিনবেন?
আহনাফ কিছু বলতে নিলে রাফি বললো
-‘ভাই, আপনি কি এই চোরকে আগে থেকেই চিনেন?
আহনাফের ঠোঁটের কোণে কেমন একটা হাসি ফুটে উঠলো।সে বললো
-‘বোন হয়।
রোদেলার মুখটা চুপসে গেল।তার শোনা পৃথিবীর সবচেয়ে জঘন্যতম বাক্য ছিল এটা।ইহ! আপন বোন হয় নাকি সে? চাচাতো বোন হয়।এই আহনাফ ভাইটাও না! এদিকে রাফি এটা শুনে বলে উঠলো
-‘হায় আল্লাহ! ভাই, কি বলছেন? আমি যদি আগে জানতাম কোনোদিন কেইস করতাম না….অফিসার! দুঃখিত আমি।ওটা স্বর্ণের বিস্কুট ছিল না।আর আমি আমার কেইস উঠিয়ে নিচ্ছি।আপনারা আসতে পারেন।
অফিসার “আচ্ছা” বলে কোমর দুলিয়ে চলে গেল।সবাই হতভম্ব হয়ে গেল এহেন ঘটনায়।আদিত বললো

-‘কি বড়লোকি ব্যাপার! এক কথায় রাজি হয়ে পা/ছা দোলাতে দোলাতে চলে গেল! আজ গরিবস্ বলে ঘটনাটা বুঝলাম না।
আরিফ বললো
-‘সহমত।
রাফি মেকি হেসে বললো
-‘কি যে বলেন না ভাই আপনারা! অফিসারটা মনে হয় আমাকে পাগল ভেবে ছেড়ে দিল।আর আহনাফ ভাই থাকতে আমাকে কেউ কিছু কি করে বলবে! ভাই আছে না!
আদিত বললো

-‘হ্যাঁ সেটাই।ইনি কোন থানার পুলিশ একটু জানিয়ো তো ভায়া! ইয়ে আমার একটা ছোট প্যান্ট হারিয়ে গিয়েছে।আমার তো ভাই আরিফকে সন্দেহ হচ্ছে।ওর নামে মামলা ঠুকে আসতাম আরকি।
সবাই হো হো করে হেসে উঠলো।কুহু নিজেও হাসতে লাগলো।দেখা গেল একটা সময় সবার হাসি থামলেও তার হাসি থামলো না।অভ্যাসবসত সে রোদেলার বাহুতে থাপ্পর মারতে মারতে হাসছে।আহনাফের চাহনি দেখে রোদেলা বললো

-‘আমার বেস্ট ফ্রেন্ড, কুহু।
আহনাফ প্রথমে খুব একটা পাত্তা না দিলেও পরে কুহু নামটা শুনে তড়াক গতিতে তাকালো তার দিকে।ওকে পিছনে ঘুরে থাকতে দেখে কপাল কুচকালো সে। এদিকে কুহুর হাসি বন্ধ হয়ে গেছে ততক্ষণে।আহনাফ এক ভ্রু উঁচু করে বললো
-‘কুহু? পুরো নাম কি?
রোদেলা বলতে নিলে কুহু গলার স্বর চিকন করে বললো
-‘ কুহেশ্বরি কুহু।
আর মনে মনে বললো—“রিস্ক নিয়ে লাভ নেই বা/ল। চিনলেই বিপদ। কারণ চুমু খেতে তো আমিই চেয়েছিলাম।এখন যদি রোদের সামনে বলে দেয়!মানসম্মানের প্রশ্ন..!”
আরিফ ফিসফিস করে বললো
-‘কুহু নাম কি শুধু ঐ মেয়েটার নাকি? তুইও না আহনাফ!
রোদেলার ভ্রু কুচকে গেল।মিথ্যা বললো কেন কুহু? কুহু রোদেলার হাত টানতে টানতে ভার্সিটির ভেতর চলে গেল।আহনাফ বিরক্তভরা নয়নে রাস্তার দিকে তাকালো।এই মেয়ে কি আজকে ভার্সিটি আসবে না? কি একটা ভেবে পেছনে তাকালো সে।আবার সামনে ফিরে চাইলো।

আকাশে আজ তারা নেই।কালো মেঘে ঢেকে রয়েছে পুরো আকাশ।বিকালের দিকে সে কি বৃষ্টি! অথচ সকালে ছিল কত রোদ! এখন আবার মেঘলা।মাঝে মাঝে বিদ্যুত চমকাচ্ছে আকাশে।হালকা বাতাসও বইছে।নিরব সেই আকাশের দিকে তাকিয়ে জীবনের হিসেব কষছে কুহু।ছাদের একটা দোলনাতে বসে রয়েছে সে।
আচ্ছা..তার জীবনটা অন্য সব স্বাভাবিক মেয়েদের জীবনের মতো হলেও তো পারতো! বাবা-মা নেই বলেই কি তার এতো কষ্ট?দাদিও তো চলে গেল।যাকে ঘিরে ছিল কুহুর সবকিছু সেই মানুষটাও চলে গেল।আর তারপর? তারপর ঐ দিনটা..কুহুর জীবনের সবচেয়ে জঘন্যতম দিন।সবকিছু পাল্টে গেল এরপর থেকে। কুহুর একটা ভুল তার জীবনটাকে তছনছ করে দিল।মামির আদর অত্যাচারে পরিণত হলো।কুহুর চোখ দিয়ে কখন যে পানি গড়িয়ে পড়লো.. হুশ নেই। হঠাৎ কাঁধে কারো হাতের স্পর্শ পেতেই চমকে লাফিয়ে উঠলো কুহু।

-‘রিল্যাক্স! আমি..আয়ান..
কুহু বুকে তিনবার থুথু দিল।আয়ান বললো
-‘তুই কাঁদছিস?
কুহু চোখে হাত রাখলো।কখন যে চোখে পানি এসে গেছে খেয়াল নেই।কিন্তু কথা হচ্ছে চোখ দিয়ে পানি যেহেতু বের হয়েছে তার মানে নিশ্চই সে কাঁদছে।এটা আবার জিজ্ঞাসা করার কি আছে?এদিকে কুহুর থেকে উত্তর না পেয়ে আয়ান আবার বললো
-‘ তুই কাঁদছিস, কুহু?
কুহু বলে উঠলো

-‘আরেহ না কি যে বলেন! কাঁদবো কেন?ঝর্ণার পানি বের হচ্ছে।এই যে দেখুন ঝর্ণা…
আয়ান ঠোঁট চেপে হাসলো।সে বললো
-‘তোকে কাঁদলে অনেক সুইট লাগে, সুহাসিনী।
কুহু চোখ-মুখ কুচকে বললো
-‘কুহু…কুহু বলে ডাকবেন।আগেও বলেছি।
-‘কিন্তু আমার তো এই নাম’ই ভাল্লাগে।
কুহু কিছু বলতে যাবে তখন খেয়াল করলো দরজায় তার মামি দাঁড়িয়ে।সে চুপচাপ হেঁটে চলে গেল ছাদ থেকে।আয়ান কপাল কুচকালো।
-‘আরে সুহাসি..
পেছনে ঘুরে দরজায় মাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে থেমে গেল আয়ান।আনোয়ারা বেগম বললেন
-‘রাতে ছাদে থাকা ভালো না।নিচে যাও…
আয়ান একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নিচে চলে যেতে নেয়।তখন কানে আসে আনোয়ারা বেগমের কথা
-‘কলঙ্কের ভার কিন্তু অনেক।নিজের কাঁধে নিতে চেয়ো না…একটাসময় অতৃপ্তি কাজ করবে।
আয়ান হাসলো শুধু কিছু বললো না।

-‘আরেহ্ ভাই বলছিটা কি তাহলে! এই মাত্র একটা ছেলের সাথে ছাদে বসেছিল, ভাবি।
আহনাফ শোয়া থেকে উঠে বসলো।
-‘কি বলছিস? কে সেই ছেলে?
রাফি দূরবীক্ষণ যন্ত্রটা পাশে রেখে বললো
-‘ভাবির মামাতো ভাই।
আহনাফ স্বস্থির শ্বাস ছাড়লো।
-‘ভয় পাইয়ে দিয়েছিলি!
-‘আরেহ ভাই এটাইতো ভয়ের বিষয়। আপন ভাই ছাড়া আর কোনো ভাই যে ভাই হয় না জানেন না?কতকিছু যে ঘটছে চারদিকে!
আহনাফ বললো
-‘তোর ভাবিকে তো হাতের কাছে পাচ্ছিই না।একটু যে হুমকি দিব সেটাও পারছি না।
রাফি ভাবলো কিছু একটা।এরপর বললো
-‘ভার্সিটিতে যখন যাবে তখন একটু চিপা-চাপাতে নিয়ে গিয়ে হুমকি দিবেন।তাহলেই তো ল্যাটা চুকে যায়!
-‘ভার্সিটিও তো আজকে এলো না।আর আহনাফ শাহরিয়ারের চিপাতে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।সবার সামনে কিস করতে পেরেছি এ আর এমন কি! কিন্তু আসছেই তো না।
রাফি ভাবুক সুরে বললো

-‘ব্যাপারটা সত্যিই চিন্তার। আচ্ছা কালকের দিনটা দেখুন যায় নাকি।ফোন করেও দুই একটা হুমকি দিতে পারেন চাইলে।
আহনাফ বললো
-‘বেশ ভালো বলেছিস তো! কিন্তু ফোন নম্বর নেই।
রাফি বলে উঠলো
-‘দুনিয়ার সবার ফোন নম্বর জোগাড় করতে পারেন আর ভাবিরটার বেলায় পারলেন না! ধিক্কার জানাই ভাই..
-‘দুনিয়ার সবার সেটিং করিয়ে দিতে পারিস অথচ নিজের বেলায়..তিনবার উষ্টা খাস।ধিক্কার জানাই তোকে..
রাফি মেকি হাসলো।
-‘আচ্ছা ভাই কালকে কথা হবে।ঘুম পাচ্ছে…বাই..
রাফি কল কেটে দিল।আহনাফ হাসলো।তবে বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না সেই হাসি।হঠাৎ তার ফোনটা আবার বেজে উঠলো। “হিটলার” নামটা জ্বলজ্বল করছে।আহনাফ ‘চ’ সূচক শব্দ করে রিসিভ করলো
-‘হ্যালো..!
ফোনের ওপাশ থেকে কোনো উত্তর না পেয়ে আহনাফ বলে উঠলো
-‘হ্যালো..বাবা!!

-‘তোমার হার্ট ছোট চাচা অ্যাটাক করেছে।দ্রুত বাসায় এসো..
আহনাফ কপাল কুচকে বললো—“হুয়াটট!! কি বলছো এসব?”
আহান শাহরিয়ার বললেন
-‘ওহ সরি! তোমার অ্যাটাক ছোট চাচা হার্ট করেছে।
আহনাফ ‘চ’ সূচক শব্দ করে বললো
-‘তুমি আবার ড্রিংক করেছো?
-‘নাহ্.. নাহ..তুমি বাসায় এসো।কতগুলো তুমি হয়ে গেলে মাস বাসায় এলে না!
আহনাফ বলে উঠলো
-‘কিসব বাজে বকছো?
আহান শাহরিয়ার এবার একটু কেঁশে বললেন
-‘বাসায় এসো..একসাথে ড্রিংক করে আইটেম সঙে নাচবো।প্রমিস…
আহনাফ ফিক করে হেসে ফেললো না চাইতেও।তবুও গাম্ভীর্য বজায় রেখে বললো
-‘তুমি একা নাচো গিয়ে।আমার তো আর খেয়ে দেয়ে কাজ নেই!
ফোনের ওপাশ থেকে অস্পষ্ট স্বরে শুধু শোনা গেল

-‘বা”’বাসায় এসো…ফি””ফিরে এসো…এ””কা করে দিওনা আ”মা””কে।
আহনাফ দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।শুধু বললো—“আসবো।”
ফোনের ওপাশ থেকে এখনো এক’ই কথা শোনা যাচ্ছে।আহনাফ কল কাটলো না।ভালোই লাগছে শুনতে।কতগুলো দিন পর আজ বাবার স্বর শুনছে সে। তারা বাবা-ছেলে তো একটা সময় বন্ধুর মতো ছিল। তাহলে আজ এতো দূরত্ব কেন?বুকটা হঠাৎ ভারি হয়ে উঠলো আহনাফের।ঠিক অমন সময় আহান শাহরিয়ার বলে উঠলেন

প্রণয়ের অন্তিমক্ষণ পর্ব ২

-‘লাল পারি ম্যা.. লাল পারি…সুন্দর সুন্দর লাল পারি..
আহনাফ চমকে উঠে ফোনের দিকে তাকালো। চেতে বলে উঠলো
-‘এই ভালো হবা না তুমি? হুদাই তোমার জন্য দুঃখ লাগতেছিলো..ধুর!!
আহনাফ কল কেটে শুয়ে পড়লো আবার।হয়তো অন্যদিকে আহান শাহরিয়ার এখন মাতাল হয়ে নাচছে, হাসছে আবার হয়তো কাঁদছে..!

প্রণয়ের অন্তিমক্ষণ পর্ব ৪

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here