প্রণয়ের অন্তিমক্ষণ পর্ব ৩২
অনন্যা
সময় সকাল দশটা।মেঘ সরে গিয়ে রোদ উঠেছে আবার।দেখে বুঝার উপায় নেই যে ভোরে মুষলধারে বৃষ্টি পড়েছে।কুহু আড়মোড়া ভেঙে ঘুম থেকে উঠলো।আহনাফ প্রবেশ করলো তখন।
-‘গুড মর্নিং তিলোত্তমা…
কুহু ঘুমঘুম স্বরে বললো
-‘গুড মর্নিং…
আহনাফ কফির মগটা পাশে রেখে বললো
-‘ঘুম কেমন হলো?
-‘বিন্দাসস..
আহনাফ হেসে ওর চুল এলোমেলো করে বললো
-‘তাই?
কুহু মাথা ঝাঁকায়।পরণে আহনাফের ঢিলাঢোলা শার্ট।শাড়ি পড়ে ঘুমাতে অসুবিধা বিধায় এই কাজ।আহনাফ মুগ্ধ নয়নে দেখে তা।যদিও সকাল থেকে বহুবার দেখেছে।তাও তৃষ্ণা মিটছে না তার।কুহু হঠাৎ বলে উঠলো
-‘জানেন? আজকে অনেক অদ্ভুদ স্বপ্ন দেখেছি।
আহনাফের হঠাৎ মাথায় এলো কুহুর সকালের হাসি আর কান্নার কথা।সে বলে উঠলো
-‘কি দেখলে?
কুহু লাজুক হেসে বলে উঠলো
-‘নাহ্ বলবো না…
আহনাফ কপাল কুচকায়।
-‘কেন?
-‘লজ্জা লাগে।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
আহনাফ ওর গা ঘেষে বসলো এবার।এরপর বললো
-‘এমন কি দেখলে যে লজ্জা লাগছে! হুম হুম?
কুহু বলে উঠলো
-‘বলা যাবে না।আপনি মজা নিবেন।
আহনাফ কুহুর কানের লতিতে কামড় বসিয়ে দিল।কুহু কেঁপে উঠলো।
-‘বলবে নাকি অন্য উপায় অবল্বন করবো?
কুহু বলে উঠলো
-‘বলছি..বলছি..
আহনাফ হাসলো।কুহু মিনমিন করে বলে
-‘দেখলাম যে একটা ক্যান্ডেল লাইট ডিনারে নিয়ে গেছেন আপনি আমাকে।আপনি না…ঐ যে একটা গান আছে না..শুধু তোমার’ই জন্য..ঐ গানটা গাইছেন আর আমি মনোযোগ দিয়ে শুনছি।
আহনাফ মিটিমিটি হেসে বলে
-‘তাই?
কুহুর মুখটা মলিন হয়ে গেল হঠাৎ।আহনাফ কপাল কুচকায় তা দেখে,
-‘কি হলো?
-‘এরপর হঠাৎ আপনার উপর কে বা কারা আক্রমণ করে।লোকগুলো আপনাকে আমার থেকে অনেক দূরে নিয়ে চলে গেল।আমি কেঁদে কেঁদে একাকার করে ফেলছি।মনে হচ্ছিল…মনে হচ্ছিল আমাদের প্রণয়ের অন্তিমক্ষণ ছিল সেটা।
-‘তারপর?
-‘তারপর হঠাৎ এক বাচ্চা ছেলে আমার কাছে আসে।সে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।হঠাৎ ছেলেটা বড় হয়ে গেল।আর তার মাঝে আপনার চেহারা ফুটে উঠলো।আমি খুশি হয়ে জড়িয়ে ধরলাম।
আহনাফ ভাবুক হলো একটু।এরপর বলে উঠলো
-‘তারমানে আমাদের ছেলে হবে?
-‘আমি তো মা হতে পারবো না।
আহনাফ হাসলো।বললো
-‘আল্লাহ ভরসা।সে যাই হোক…এসব স্বপ্ন স্বপ্ন’ই হয়।বাদ দাও।
কুহু বলে উঠলো
-‘ভোরের স্বপ্ন সত্যি হয়।আমি নামাজ পড়ে ঘুমিয়েছিলাম।বুঝতে পারছি না কিছু।
আহনাফ কুহুকে বুকের মাঝে নিয়ে বললো
-‘কিচ্ছু হবে না।আল্লাহ ব্যতিত কেউ আমাদের আলাদা করতে পারবে না।
কুহু কিছু বলে না।হঠাৎ আহনাফের ফোনটা শব্দ করে বেজে উঠলো।আহনাফ কুহুকে জড়িয়ে ধরেই অপর হাতে ফোনটা নেয়।নাতাশা কল করেছে।
-‘হ্যালো! বল..
নাতাশা কর্কশ স্বরে বললো
-‘আয়ানকে কি করেছিস তুই?
আহনাফ কপাল কুচকায়।
-‘আশ্চর্য তো! আমি ছেলেদের প্রতি ইন্টারেস্টেড নাকি!
কুহু ভড়কে উঠতে নিলে আহনাফ বুকে চেপে ধরে তাকে।নাতাশা বলে উঠলো
-‘আমার আয়ান কোথায়?
-‘আমি কি জানি? তুই আমাকে জিজ্ঞাসা করছিস কেন?
-‘বা//ল ওই নিখোঁজ।তুই ছাড়া আর কে করবে এই কাজ?
আহনাফ চমকে উঠে।নিখোঁজ!
-‘আমি ওকে মেরে কি করবো আর…তিলোত্তমা তো আমার হয়েই গেছে।দেখ গিয়ে কোন চিপায় দেবদাস হয়ে বসে আছে।
-‘আহনাফ আই’ম সিরিয়াস।
-‘আমি জানলে কি বলতাম না?
নাতাশা ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে
-‘আয়ানকে এনে দে….
-‘আরেহ্! আচ্ছা কুল আমি দেখছি।
কল কাটলো আহনাফ।কুহু বললো
-‘আয়ান ভাইয়ার কি হয়েছে?
-‘কি জানি! নিখোঁজ বলে।
কুহু চমকে উঠে।
-‘কিহ্!!!
আহনাফ সবেমাত্র একজনকে কল করতে নিয়েছিল তখন নাতাশা আবার কল করে।সে রিসিভ করলো
-‘বল..
-‘পেয়েছি..পেয়েছি..ড্রেনে পড়েছিল।
আহনাফ হতভম্ব হয়ে বললো
-‘অ্যা! ওখানে কি করছিল? শোকে শোকাহিত হয়ে ড্রেনে ঝাপ দিয়ে মরতে চেয়েছিল নাকি?
-‘ধুর! আমি পরে কল করছি।
নাতাশা কল কেটে দেয়।কুহু জিজ্ঞাসা করলো
-‘কি হয়েছে?
আহনাফ কিছুক্ষণ চুপ রইলো।এরপরেই ঘর কাঁপিয়ে হেসে উঠলো।কুহু এর আগে তাকে এভাবে হাসতে দেখেনি।আহনাফ হাসতে হাসতে বলে
-‘মানে সিরিয়াসলি! ঐদিন তুমি পড়লে ড্রেনে আর আজ আয়ান।তোমরা ভাই-বোন হিসেবে পারফেক্ট।
কুহু বালিস ছুঁড়ে মেরে বললো
-‘চুপ করুন…বাঙ্গির নাতি…
আহনাফ বলে উঠলো
-‘করবো না ড্রেনের নাতি…
আহনাফের মুখে এই কথা শুনে কুহু বলে উঠলো
-‘বাঙ্গির নাতি কোথাকার!
-‘ড্রেনের নাতিন কোথাকার!
-‘চুপপ
আহনাফ ঠোঁটে আঙুল দিয়ে চুপ থাকবে বুঝালো তবে তার ঠোঁটের হাসি সরছে না।কুহু আহনাফের দিকে তাই আরেকটা বালিস ছুঁড়ে মারলো।আহনাফ বালিসটা ধরে হো হো করে হাসতে লাগলো।কুহু রেগে ওয়াসরুম চলে গেল।আহনাফের ফোনটা বেজে উঠলো শব্দ করে।আহনাফ ফোনটা হাতে নিতেই দেখলো রাফির কল।রিসিভ করলো সে।
-‘ভাই..রাতে আজকে গোডাউনে আসেন।দুর্দান্ত খবর পেয়েছি।আসল কালপ্রিট মনে হয় এবার সামনে আসবে।
আহনাফ কপাল কুচকায়।সে বললো
-‘গুছিয়ে বল…
-‘আহা! আপনি আসেন’ই না!
আহনাফ ভাবনায় পড়ে যায়।রাফি কল কেটে দেয়।আহনাফ ফোঁস করে শ্বাস ছাড়লো।
-‘তুমি কি সত্যিই রোদেলাকে বিয়ে করবে?
বাবার কথা শুনে রাহুল গম্ভীর স্বরে বললো
-‘হুম…কোনো সমস্যা?
সাজ্জাদ শাহরিয়ার থমথমে স্বরে বললো
-‘রোদ কি কোনো দোষ করেছে? আমার ভাইয়ের মেয়েও রাহুল।ওকে অন্তত…
রাহুল শব্দ করে হাসলো।এরপর বললো
-‘আই লাভ হার ড্যাড…
-‘সে তো কত মে…
-‘আজ অবদি এই কথা আমি তোমাকে বলেছি কোনোদিন? কোনো মেয়েকে নিয়ে ভালোবাসার কথা বলেছি?
সাজ্জাদ শাহরিয়ার ভাবুক হলেন।সত্যিই তো এর আগে তো এসব বলেনি কখনো।ছেলেটা কি সত্যিই রোদেলাকে ভালোবাসে? এটাও সম্ভব?ব্যাপারটা সাজ্জাদ শাহরিয়ারের কাছে বড্ড অদ্ভুদ ঠেকলো।শেয়াল তো মুরগি শিকার করে খায়..বিয়ে করার কথাও মাথায় আনে? তার ভাবনার মাঝেই রাহুল বললো
-‘আমাকে নিয়ে যত কম ভাববে তোমার জন্য তত’ই ভালো।বয়স হচ্ছে তো..ছেলের পথের কাঁটা হওয়ার চেষ্টা করো না।তুমি জানোই আমি কেমন।
রাহুলের কথাটা সাজ্জাদ শাহরিয়ার বেশ ভালোই বুঝলেন।তিনি এক ভ্রু উঁচু করে বললেন
-‘তুমি আমাকে মেরে…
-‘উঁহু…সতর্ক করলাম জাস্ট।বিয়ে ভাঙার চেষ্টাও করো না।রোদকে পেতে আমি সব করতে পারবো..সব মানে সব।
রাহুল বাবার দিকে তীক্ষ্ণ নয়নে তাকিয়ে বললো কথাটা।সাজ্জাদ শাহরিয়ার বললেন
-‘রোদেলা তোমার সম্পর্কে সবটা জানে?জানলে তো তোমার মতো ছেলেকে ভালোবাসার কথা না।
রাহুল হাসলো কেমন করে যেন।
-‘আপনার সম্পর্কে সবটা জানে আপনার স্ত্রী মিস্টার সাজ্জাদ শাহরিয়ার?
-‘রাহুলল…
সাজ্জাদ শাহরিয়ার কটমট করে বললেন।রাহুল বললো
-‘আপনি যে কত বড় সাধু তা আমার জানা আছে।ভাইয়ের মেয়ের জন্য এত দরদ উতলে পড়ছে যে! ভাইদের যে কতটা ভালোবাসেন তাও আমার জানা আছে।তাই আমার সাথে লাগতে আসবেন না।
সাজ্জাদ শাহরিয়ার চুপসে গেলেন।রাহুল উঠে দাঁড়ালো।
-‘বিয়ে ভাঙার চেষ্টাও করবেন না।ধ্বংস করে ফেলবো…আই রিপিট ধ্বংস করে ফেলবো।
রাহুল কথাগুলো বলে হনহন করে চলে গেল রুম থেকে। সাজ্জাদ শাহরিয়ার দাঁত কটমট করে দেখে গেলেন তা।
রাহুল নিজের রুমের দিকে গিয়েও ফিরে এলো।রোদকে দেখতে ইচ্ছা করছে তার।গতকাল কি একটা পার্সেল নিয়ে যে রুমে গেল আর রুম থেকে বের হয়নি।রাহুল রোদেলার দরজা খুলতে গিয়ে বুঝলো দরজা ভেতর থেকে বন্ধ।অবাক হলো সে।ভেতর থেকে তো দরজা বন্ধ করে না সে।তাহলে আজ কি হলো? রাহুল অস্থির হয়ে উঠলো খারাপ চিন্তায়।আহনাফের বিয়ের কথা শুনে উল্টোপাল্টা কিছু তো আবার….রাহুল দরজা ধাক্কাতে লাগলো।রোদেলা খুলছে না।রাহুল দরজা ভাঙার সিদ্ধান্ত নিল।দরজা ধাক্কানোর শব্দে সবাই এসে হাজির হলো এখানে।অখিল শাহরিয়ার অফিসে গিয়েছেন।জেরিন বেগম আর আনিসা বেগম হকচকিত হলেন।
-‘কি হয়েছে বাবা?
জেরিন বেগম অস্থির কণ্ঠে শুধায়।রাহুল কিছু বলে না।রাহুল বোধহয় একটুর জন্য নিজেকে সি আই ডির দয়া মনে করেছিল। দরজায় জোরে লাথি মেরে বসে।দরজা তো খুললোই না উল্টো তার পায়ে আঘাত পেল।দমে থাকলো না সে।পরপর কতগুলো ধাক্কার পর দরজা খুলে গেল।আনিসা বেগম কিছু বলছেন না।ছেলের পাগলামি দেখছেন তিনি।মনটা বলে উঠলো..রোদ’ই পারবে তাকে ঠিক পথে আনতে।দেশের বাহিরে থাকাকালীন প্রায়’ই রাহুল রাতে বারে যেত আর ফিরে আসতো মাতাল অবস্থায়।অনেকসময় কিছু মেয়েকেও সাথে দেখেছেন তিনি।আনিসা বেগম যদি জানতেন তার ছেলে এর চেয়েও নিকৃষ্ট তাহলে বোধহয় রোদেলার সাথে বিয়ে দিতে অমত প্রকাশ করতেন।আফসোস! ছেলের সব সম্পর্কে সবটা তিনি জেনে উঠতে পারেননি।
এদিকে রাহুল হুড়মুড়িয়ে প্রবেশ করে রোদেলার কক্ষে।মেয়েটা একটা কোলবালিস জড়িয়ে ধরে দিব্বি ঘুমাচ্ছে।ঘুমে এতোটাই মগ্ন যে এতো চেঁচামেচিও শুনেনি।এত ঘুম পাগলও কেউ হয়! রাহুল স্বস্থির শ্বাস ছাড়লো ওকে ঠিক দেখে।জেরিন বেগম বললেন
-‘কুম্ভকর্ণ একটা! এতো ডাকাডা…
-‘কথা বলো না ছোট মা…উঠে যাবে তো…
রাহুলের কথা শুনে থেমে গেলেন জেরিন বেগম।আনিসা বেগম মিটিমিটি হাসলেন।জেরিন বেগমকে সাথে নিয়ে বেরিয়ে গেলেন কক্ষ থেকে।
-‘রাহুল রোদেলার জন্য অনেকটা পাগল।অনেক সুখী হবে রাহুলের সাথে আমার মেয়েটা।তাই না আপা?
আনিসা বেগম মুচকি হেসে বললেন
-‘ওদের দেখলেই মনে হয়..মেইড ফর ইচ আদার।অনেক সুখী হবে ওরা।
জেরিন বেগম হাসলেন।দুজন কথা বলতে বলতে চলে গেলেন।
রাহুল রোদেলার শিউরে বসে।মাথায় আদুরে হাত বুলিয়ে দেয়।মেয়েটা এতো সুন্দর কেন? আহনাফের রুচিই খারাপ।এতো সুন্দর মেয়ে রেখে কিনা কুহুর মতো একটা শ্যামলা মেয়েকে পছন্দ করলো! কুহুর মতো মেয়েকে শুধু ভোগ করা যায় ভালোবাসা যায় না।রোদেলা কত কিউট! রাহুলের নজর যায় রোদেলার গোলাপি ওষ্ঠজোড়ায়।পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নেয়।রোদ একবার এর জন্য তাকে থাপ্পর মেরেছিল।হাহ্! কিছুদিন পরে রোদের এই ওষ্ঠ কেন পুরো শরীরের অধিকার তার থাকবে।মাথায় কিছুক্ষণ হাত বুলিয়ে সে চলে গেল।
রাফি কটমট করে সবটা দেখছে।রাগে পায়ের জুতো খুলে স্ক্রিনেই মেরে বসলো।
-‘আল্লাহ গোওওও…ধৈর্যশক্তি বাড়িয়ে দাও আমার…এসব আর সহ্য করতে পারছি না আমি।
সূর্যটা পশ্চিমাকাশে হেলে পড়ছে।আকাশে অল্পসল্প মেঘে ভেসে বেড়াচ্ছে।পাখিরা ডানা ঝাপটে নীরে ফিরে যাচ্ছে।আকাশের বুকে এ যেন এক অদ্ভুদ শিল্পাকার্য হয়ে ফুটে উঠছে।রাইফা সেদিকে আপনমনে তাকিয়ে রয়েছে।পাশেই আদিত বসা।আয়ানদের বাড়ির পাশের পার্কটাতে এসেছে তারা। ছেলেটার ঠোঁট থেকে আজ হাসি সরছেই না।সে বাদামের খোসা ছাড়িয়ে খাচ্ছে।আবার রাইফাকেও দিচ্ছে।রাইফাকে অন্যমনষ্ক দেখে বললো
-‘কি ভাবছো রাইফেল?
-‘হুঁ?
-‘কি ভাবছো এতো?
রাইফা সল্প হেসে বললো
-‘কিছু না।
আবার নিরবতা চললো কিয়ৎক্ষণ।রাইফা নিরবতা ভাঙলো।
-‘আচ্ছা আদিত..তোমার পরিবারের যদি আমাকে পছন্দ না হয়?
আদিত কথাটা শুনে খ্যাক খ্যাক করে হাসে।রাইফা কপাল কুচকায়।আদিত বললো
-‘আমার পরিবার তো আমাকেই পছন্দ করে না।তোমাকে করব কেমনে? তবে চিন্তা করো না..বকা টকা দিলেও মারবে না।ভালো আছে এমনে।
রাইফা হতভম্ব হলো কথাটা শুনে।কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো
-‘কেউ’ই মানবে না এটা।না তোমার পরিবার আর না আমার।
-‘পরিবারের ব্যাপার তুমি আমার উপর ছেড়ে দাও।তুমি শুধু আমার পাশে থেকো আমি সবটা সামলে নিবো।ওকে?
রাইফা কিছু বললো না।উদাস নয়নে আবার আকাশের পানে তাকায়।ভেতরের অশান্তি কমছে না কিছুতেই।সামনে বিরাট ঝামেলা হবে বলে মনে হচ্ছে তার।আদিত বুঝলো সবটা।সে রাইফার হাতের উপর হাত রেখে বললো
-‘এসব নিয়ে টেনশন করো না।আমি আছি তো..
আদিতের এই “আমি আছি তো” কথাটায় কিছু একটা ছিল।রাইফার মনের অশান্তিটা কমে গেল এটা শুনে।
মনটা হালকা হলো তার।মুচকি হাসলো আদিতের পানে তাকিয়ে।আদিত বলে উঠলো
-‘উফ! এমনভাবে হেসো না মেয়ে..কিছু করে ফেলতে ইচ্ছা করে।
রাইফা হো হো করে হেসে ফেললো এটা শুনে।আদিত মুগ্ধ নয়নে দেখে তার প্রেয়সির হাসি।
মাগরিবের নামাজ পড়ে কুহু বিছানাতে বসলো।কিছুতেই স্বপ্নের ব্যাপারটা সে ভুলতে পারছে না।মন বলছে খারাপ কিছু হবে।তাহাজ্জুদের নামাজ পড়বে বলে ঠিক করলো।আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইবে।তখন আহনাফ হাজির হলো কফির মগ হাতে।একটা কুহুর দিকে বাড়িয়ে দিয়ে আরেকটা পাশে টেবিলে রাখলো।কুহু মলিন হাসলো।আহনাফ কপাল কুচকে বললো
-‘মন খারাপ?
কুহু দুই দিকে মাথা নাড়ায় অর্থাৎ না।আহনাফ বললো
-‘তাহলে?
-‘কিছু না।
আহনাফ কুহুর পাশে বসলো।
-‘কিছু তো হয়েছে।বলো না কি হয়েছে…
কুহু ওসব কথা না বলে বললো
-‘আপনি জানতেন সাখাওয়াত আলম আমার বাবা?
আহনাফ মুচকি হেসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বললো
-‘এমনকিছু কি বাকি আছে তোমার যা আমি জানি না? শুধু শরীরের তিলগুলো বাদে।
শেষের কথাটা ওর দিকে ঝুঁকে একটু ফিসফিস করে বললো।কুহু লজ্জা পেল না।সে শুধু বললো
-‘ওহহ..
আহনাফ অসন্তুষ্ট হয়ে বললো—“হুয়াট ওহহ? লজ্জা পাওয়া উচিত ছিল তোমার।”
কুহু ভ্রু কুচকে বললো
-‘কেন?এতে লজ্জা পাওয়ার কি আছে?
আহনাফ ফোঁস করে শ্বাস ছেড়ে নিজের কফির মগ হাতে নিয়ে বললো
-‘নাহ, কি থাকবে? কফিটা ঠাণ্ডা হয়ে যাবে..
কুহু ফুঁ দিয়ে চুমুক দিল।তখন বেল বেজে উঠলো।আহনাফ কপাল কুচকালো।বললো
-‘আমি দেখছি,..
আহনাফ কক্ষ থেকে বেরিয়ে যায়।দরজা খোলার আগে ছোট্ট ছিদ্রটা দিয়ে একবার দেখে নিল কে এসেছে।দেখতেই তার মুখ বিকৃত হয়ে গেল।দুই একটা গালিও দিল।বেলটা আবার বেজে উঠলো।আহনাফ বহু কষ্টে মুখে হাসি আনলো।দরজা খুললো সে।
আয়ান আরেকবার বেল বাজাতে যাচ্ছিল কিন্তু আহনাফ দরজা খোলায় হাত ফিরিয়ে আনলো।আহনাফ উৎফুল্ল স্বরে বলে উঠলো
-‘আরে সমন্ধি সাহেব যে…আসুন বুকে আসুন..
আয়ান কিছু বলার আগেই সে তাকে জড়িয়ে ধরে।পরক্ষণেই কিছু একটা মনে পড়তে তাকে ছেড়ে দেয়।
-‘আপনি নাকি ড্রেনে পড়ে গিয়েছিলেন?
ভারি লজ্জা পেল ছেলেটা।তার চোখে-মুখে লজ্জার আভা দেখা যাচ্ছে।আহনাফ আস্তে করে বলে উঠলো
-‘বেচারা ড্রেন!
আয়ান চমকে বললো—“হুয়াট?”
-‘আরেহ না, না কিছু না।আরেহ ভেতরে আসুন সমন্ধি সাহেব।
আয়ানকে ভেতরে নিয়ে এসে আহনাফ কুহুকে ডাকতে লাগলো
-‘কি গো..কোথায় তুমি? দেখো তোমার ভাই এসেছে।
আহনাফ আয়ানের মনে জ্বালা ধরাতেই বোধহয় এভাবে বললো।আয়ান হাত মুষ্ঠিবদ্ধ করে ফেলে।সে মোটেও কুহুর ভাই নয়।এদিকে কুহু বাহিরে এসে আয়ানকে দেখতেই হতভম্ব হয়ে গেল।আয়ান তো আকাশ থেকে পড়লো।বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেল ছেলেটা।কুহুর পড়ণে আহনাফের শার্ট আর প্যান্ট।গলায় একটা গামছা ঝুলানো।ভেতরটা কেঁপে উঠলো আয়ানের।কুহু বলে উঠলো
-‘আরেহ আয়ান ভাইয়া! কেমন আছেন?
আহনাফ আয়ানের কাঁধ চেপে ওকে আবার বসালো।
-‘আরেহ বসুন মিয়া..
আহনাফ কুহুর দিকে এগিয়ে যায়।কুহুর সামনে আসা চুলগুলো কানের পিছনে গুঁজে দিয়ে একটু জোরেই বললো
-‘তুমিও না সোনা! এসব পড়ে কেউ ভাইয়ের সামনে আসে? আমাকে লজ্জায় ফেলছো তুমি।যাও সুন্দর একটা শাড়ি পড়ে এসো।নাকি আমি পড়িয়ে দিব আবার?
আবার! আয়ানের মাথা চক্কর দিয়ে উঠলো।ওরে আল্লাহ! ওরা কি তবে…না, না এমনকিছু না।এমনকিছু হলে কুহু উড়ে এসে থাপড়াতো তাকে।ঐ সত্যটা তো জানতো তাহলে।কুহু এদিকে নিজেও লজ্জায় পড়েছে খানিকটা।ভুল করে এসব পড়েই চলে এসেছে।শাড়ি পড়তে অনেক ঝামেলা।তাই আহনাফের জামা-কাপড়’ই পড়ে।সে ছুটে রুমে চলে গেল।আহনাফ ঠোঁট কামড়ে হাসে।এরপর আয়ানের পাশে বসে বললো
-‘তো কেমন আছেন সমন্ধি সাহেব?
-‘আয়ান বলেই ডাকুন।ওটা কেমন যেন শোনায়।
আহনাফ বলে উঠলো
-‘ওমাহ! সে কি! একটামাত্র শালা-সমন্ধি আমার।অন্যকিছু বলে ডাকবো কেন?
আয়ান কিছু বললো না।রাগে লাল হয়ে যাচ্ছে ছেলেটা।আহনাফ খোঁচা মেরে বললো
-‘বোনের জন্য মন কেমন করছিল বুঝি! আহহা! আপনাদের ভাই-বোনের বন্ধন দেখে চোখে পানি এসে যায়।
আহনাফ একটু কান্নার অভিনয় করলো।আয়ান চেতে বলে উঠলো
-‘ফালতু বকা বন্ধ করুন।আপনি ইচ্ছা করে এসব বলছেন তাই না?
-‘কোনসব?
আহনাফ অবুঝের ভান করলো।আয়ানের আর সহ্য হচ্ছে না।সে ওর কলার চেপে ধরে বললো
-‘আমার সুহাসিনীকে কেড়ে নিয়ে এখন নাটক করছিস! লজ্জা করলো না অন্যের ভালোবাসা কেড়ে নিতে!
আহনাফ বাঁকা হেসে বললো
-‘নাহ্..একদম’ই লজ্জা করলো না।কারণ ওটা ওয়ান সাইড ছিল।আর তাছাড়া শুধু কেড়েই নেইনি আরো অনেককিছু…
আয়ান এবার কলার ছেড়ে হো হো করে হাসতে লাগলো।
-‘আরো অনেককিছু করেছেন? মিথ্যা বলে জ্বালা ধরাতে চাইছেন মনে?
-‘মিথ্যা?
-‘হ্যাঁ, মিথ্যা।সত্য হলে এখনো আমাকে এখানে বসিয়ে রাখতেন না।কুহুও খুশি হতো না আমাকে দেখে।
আহনাফ অবুঝের মতো বললো
-‘কেন বলুন তো?
আয়ান কিছু বলে না।আহনাফের ঠোঁটের কোণে বেঁকে গেল।সে বললো
-‘কিছু হলে বোধহয় এটা জেনে ফেলতাম যে কুহু ধ’র্ষি’তা না।এটার জন্য?
আয়ানের মাথায় বাজ পড়লো যেন একটা।সে চমকে তাকায় আহনাফের দিকে।আহনাফ এক পায়ের উপর আরেক পা তুলে।ঠোঁটের কোণে অদ্ভুদ এক হাসি।আয়ান একটা শুকনো ঢোক গিলে। এতো বছর ধরে লুকিয়ে রাখা সত্যটা কি এবার বাহিরে চলে আসবে?নির্ঘাত জেল হবে তার এজন্য।বুক ঢিপঢিপ করতে লাগলো তার।আহনাফ বললো
-‘আরেহ্! আপনি ঘামছেন কেন?রিল্যাক্স সমন্ধি সাহেব!
আয়ান কোনোমতে বললো
-‘ক’কে ব’বলেছে ও ধ’ধর্ষি’তা না?
-‘হাহ্! আহনাফ শাহরিয়ারকে বড্ড হালকা ভেবে নিয়েছেন আপনি।তাই না? এসব জানা আমার বাম হাতের খেলা সমন্ধি সাহেব।
আয়ান ঘেমে একাকার হয়ে গেল।তখন কুহু এসে হাজির হলো।মেয়েটা একটা সবুজ রঙের শাড়ি পড়েছে। আবার বেল বেজে উঠলো।কুহু বললো
-‘আমি দেখছি..
দরজা খুললো সে।ভড়কে গেল সাথে সাথে।রোদেলা আর রাহুল বাদে প্রত্যেকটা মুখ তার অচেনা।রোদেলা জড়িয়ে ধরলো তাকে।
-‘বেবিইইইই..
কুহু হালকা হেসে ওর পিঠে হাত রাখলো।রাহুল এসব দেখে চোখ উল্টায়।ঢং যত্তসব! সে কর্কশ স্বরে বললো
-‘ভেতরে যেতে দিবে না?
কুহু সরে দাঁড়ালো।আহনাফ উঠে দাঁড়িয়েছে ততক্ষণে।এদের দেখে একটু অবাক’ই হয়েছে সে।জেরিন বেগম কুহুর থুতনি ধরে বলে উঠলেন
-‘মাশাআল্লাহ!
তবে আনিসা বেগম খানিকটা অপছন্দের নজরে তাকালেন।আহনাফের পছন্দ তার ঠিক ভালো লাগলো না।তবুও মুখে হাসির রেখা কমালো না।জেরিন বেগম বললেন
-‘আমি আহনাফের ছোট মা।আর রোদেলার মা..
কুহু ব্যাপারটা বুঝতেই পা ধরে সালাম করতে নিলে জেরিন বেগম থামিয়ে দিলেন।পেছনে গম্ভীরভাবে দাঁড়িয়ে আছেন অখিল শাহরিয়ার আর সাজ্জাদ শাহরিয়ার।কুহু মুখে সালাম দিল তাদের।সবাই ভেতরে আসলো।পেছনে আহান শাহরিয়ারকে দৌঁড়ে আসতে দেখা গেল।কুহু তাকেও সালাম দিল।আহান হাঁপাতে হাঁপাতে উত্তর দিলেন।আহনাফ বিরক্ত হলো এখানে সবাইকে দেখে।সে বলে উঠলো
-‘তোমরা কি করতে এসেছো এখানে?
সবার মুখের হাসি উবে গেল এটা শুনে।রাহুল বললো
-‘বিয়ের ডেট ফিক্সড করতে।তুই তো যাবি না তাই আমাদের’ই আসতে হলো।
-‘কেন তোদের বাড়ি-ঘর নেই যে আমার বাড়িতে নিজের বিয়ের ডেট ফিক্সড করতে এসেছিস?
আহান শাহরিয়ার বললেন
-‘তোমার আর রাহুলের একদিনে বিয়ে হবে।
-‘হুয়াটট!!
-‘ইয়েস..
আহনাফ মোটেই তা পছন্দ করলো না।সবাই বসলো।আয়ান বেচারা এক কোণায় চেপে রইলো।ভেবেছিল আহনাফকে বলবে কুহুকে ডিভোর্স দিতে এখন উল্টো বিয়ের ডেট ফিক্সড হচ্ছে এদের।তার সাথেই কেন এমন হয়? সে মুচকি হেসে সালাম দিল তাও।কুহুর ভাই হিসেবে আহনাফ তাকে পরিচয় করিয়ে দিল।আয়ান ব্যথিত হলো।বুকটা ফেঁটে গেল তার।সাজ্জাদ শাহরিয়ার বললেন
-‘ওদের ফ্যামিলির পজিসন কেমন?
আহনাফ বলে উঠলো
-‘আপনাকে বলার প্রয়োজন মনে করছি না।
সাজ্জাদ শাহরিয়ারের ইগোতে লাগলো কথাটা।আহান শাহরিয়ার চোখ দিয়ে শাসালেন ছেলেকে।আহনাফ তাকে ব্যাঙ্গ করলো।হতাশ হলেন তিনি।অখিল শাহরিয়ার বললেন
-‘মুখের ভাষা ঠিক করো আহনাফ।ভাইজানের সাথে…
-‘আপনারা তো জানেন’ই আমাকে।তাও কেন সম্মান আশা করেন আমার থেকে বুঝি না আমি।
অখিল শাহরিয়ার ফোঁস করে শ্বাস ছাড়লেন।কুহু চমকায় খানিকটা।বাড়ির লোকের সাথে এভাবে কথা বলে কেউ! জেরিন বেগম বললেন
-‘আচ্ছা বাদ দাও এসব।বিয়ের তারিখ ঠিক করা হোক..কুহুর বাড়ির লোকও তো আছে।বড় ভাই’ই বাবার দায়িত্ব পালন করবে।
আয়ানের বুকটা পুরো ফাটলো এবার।একটা গান মনে পড়লো হঠাৎ তার…বুকটা ফাইট্টা যায়..বুকটা ছিঁড়া যায়..।আয়ান জোরপূর্বক হাসে।আনিসা বেগম কুহুর উদ্দেশ্যে খানিকটা কর্কশ স্বরে বললেন
-‘এই মেয়ে এদিকে এসো।
আহনাফের পছন্দ হলো না ডাকটা।সে বলে উঠলো
-‘এক পা নড়বে না, তিলোত্তমা।
কুহু যেতে নিয়েও দাঁড়িয়ে পড়লো।আনিসা বেগম কপাল কুচকালেন।রাহুল ফোন স্ক্রল করছে।এসব বিষয়ে তার ইন্টারেস্ট নেই।জেনে শুনে আহনাফের কাছে অপমানিত হয় তার বাবা-মা।আহনাফ বললো
-‘বড় চাচি আপনি নিশ্চই আমার ওয়াইফের নাম শুনেছেন।এই মেয়ে কি শব্দ? সে কোনো রাস্তার টোকাই না।সে আহনাফ শাহরিয়ারের একমাত্র শখের নারী..তার ওয়াইফ সে।কথাটা মাথায় রেখে কথা বলবেন।
প্রথমত বড় চাচি নামটা শুনে আহত হয়েছেন আনিসা বেগম।বড় মা থেকে বড় চাচি! একটু কষ্ট তো হলোই।সে কিছু বললো না।আহান শাহরিয়ার বলে উঠলেন
-‘ঠিক করে কথা বলো আহনাফ।উনি..
-‘আমার ওয়াইফকে সম্মান না দিলে আমি তো বা//লের সম্মান’ই করবো তাই না?
এবার সকলে দাঁড়িয়ে পড়লো।আহনাফের চেহারায় রাগ উপচে পড়ছে।আনিসা বেগম কেঁদে ফেললেন।সাজ্জাদ শাহরিয়ার বলে উঠলেন
-‘মুখ সামলে কথা বলো….
-‘আর আপনি কথাই বলবেন না আমার সাথে।
থমথমে পরিবেশ মুহূর্তেই গরম হয়ে উঠলো।কুহু তখন বললো
-‘আহনাফ শান্ত হন…
আহনাফ রাগি চোখে তাকালো তার দিকে অর্থাৎ তাকে চুপ থাকতে বলছে।কুহু তা দেখে বলে উঠলো
-‘চোখ রাঙাবেন না আহনাফ।বাঙ্গি দিয়ে পেটাবো আপনাকে।এভাবে কথা বলে কেউ বড়দের সাথে?
আহনাফ চুপসে গেল হঠাৎ।সে বলতে লাগলো
-‘তিলোত্তমা উনি..
-‘চুপপ..
ধমক দিল কুহু।সবাই হা হয়ে গেল।যে ছেলেকে তারা কিছু বলতে পারে না সেই ছেলে এই এক লতির মেয়ে ধমকাচ্ছে আর আহনাফও চুপসে গেল! কুহু বললো
-‘উনার তরফ থেকে আমি সরি।আপনারা প্লিজ নিজেদের মাঝে ঝামেলা করবেন না।
আনিসা যেন সুযোগ পেলেন।বললেন
-‘তোমার মতো অলক্ষণে মেয়ে দুটো হয় না।আসতে না আসতে ঝামেলা বাঁধিয়ে দিলে!
এবার কুহুও ক্ষেপলো।আচ্ছা ফাজিল মহিলা তো! কুহু তাকে বাঁচিয়ে দিল আর এখন সে তাকেই কথা শোনাচ্ছে! আহনাফ কিছু বলার আগেই কুহু বলে উঠলো
-‘বানিক চন্দ্রের মতো কথা বলবেন না।এসব শাওমি মার্কা কথা শুনলে উনি আরো রেগে যাবেন।বাঙ্গির জুস্ খাবেন? মাথা ঠাণ্ডা হবে।
মহিলা কিছুই বুঝলেন না।বানিক চন্দ্র আবার কি? আর সাউমি কি? নিস্তব্ধ ঘরে কে যেন আস্তে করে বলে উঠলো—“বা///ইন//চ* আর সাউ***…
ভড়কে গেল সবাই।কথাটা কে বলল দেখার জন্য সবার দিকে তাকালেন তিনি।সবাই একেকজনের দিকে তাকাচ্ছে।কে বললো কথাটা? রোদেলা এদিকে হু হা করে হাসতে লাগলো।সাজ্জাদ শাহরিয়ার তা দেখে রেগে বললেন
-‘হাসছো কেন বেয়া..
রাহুল বলে উঠলো
প্রণয়ের অন্তিমক্ষণ পর্ব ৩১
-‘শব্দটা গলায়’ই আটকে রাখুন।আমি মুখ খুললে আপনার বিপদ।ও হাসছে তাতে আপনার বাপের কি? হাসো..তুমি..
সাজ্জাদ শাহরিয়ার কটমট করলেন শুধু।কিন্তু কথাটা কে বললো?রাগে সবার মাথা আগুন ধরে যাচ্ছে।চিপায় বসে থাকা আয়ান এদের রাগি মুখ দেখে আরো চিপকে গেল সোফার সাথে।সে তো উপকারের জন্য মিনিংগুলো বলে দিল।উল্টো বিপদ ডাকলো নাকি?
