প্রণয়ের অন্তিমক্ষণ পর্ব ৫

প্রণয়ের অন্তিমক্ষণ পর্ব ৫
অনন্যা

-‘আমি যাকে খুশি তাকে জড়িয়ে ধরবো।এতে আপনার কি? অনেক চুপ থেকেছি আর নয়।তখন থেকে কি শুরু করেছেন হ্যাঁ?
আহনাফ এক ভ্রু উঁচু করে তাকিয়ে তার দিকে।কুহুও সাহস সঞ্চায় করে তাকিয়ে রইলো।একে ভয় পেলে এ আরো বেড়ে বসবে।কুহু আবার বললো
-‘আমি যাকে খুশি তাকে জড়িয়ে ধরবো।দরকার পড়লে তাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খাবো। আপনার কি তাতে?
আহনাফ কিছু বললো না।কুহু ভাবলো হয়তো ভয় পেয়েছে।বাঁকা হাসলো সে।হঠাৎ আহনাফ পেছনে ঘুরে গিয়ে একটা হকস্টিক নিয়ে এলো।এরপর এক পা এক পা করে তার দিকে এগোতে লাগলো।কুহু চোখ বড়বড় করে হকস্টিকটার দিক তাকালো।পেছোতে লাগলো সে।আহনাফ বলে উঠলো

-‘কি যেন বলছিলেন…
কুহু পুরো রুম জুড়ে ঘুরতে লাগলো।কোনোমতেই দেয়ালের সাথে পিঠ ঠেকতে দেওয়া যাবে না।আহনাফ বিরক্ত হলো বড্ড।পুরো রুম জুড়ে হাঁটছে তারা।আহনাফ বলে উঠলো
-‘স্টপ…
কুহু থামলো।আহনাফ বললো
-‘হয় নিজে থেকে ঐ ছেলের থেকে দূরে থাকবে নাহয় আমি ব্যবস্থা করে দিব।
কুহু কপাল কুচকে বললো
-‘কেন? দূরে থাকবো কেন?
আহনাফ ওর দিকে তাকিয়ে কঠোর স্বরে বললো
-‘এতো কথা বলো কেন? যা বলেছি তাই করবে…অন্যথায়..
-‘অন্যথায়?
আহনাফের কপাল কুচকে গেল বিরক্তিতে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

-‘কবরে পাঠিয়ে দিব..তোমাকে না।যে ছেলের সাথেই মিশবে সেই ছেলেকে..
কুহু বুঝলো সবটা।কিন্তু এটা কখনো সম্ভব না।কুহু বললো
-‘আপনি যা চাইছেন তা হবার নয়।আর আপনি যে ছেলের কথা বলছেন মানে যাকে জড়িয়ে ধরেছি সে আমার উডবি হয়।
আহনাফ এক ভ্রু উঁচু করে ঘাড় বাঁকালো।কুহু বললো
-‘তাই আপনি আমার থেকে দূরে থাকবেন। আর ফ্রিতে একটা পরামর্শ দিচ্ছি..আপনি যাকে চান তাকে নয় যে আপনাকে চায় তাকে আপন করে নিন।সুখী হবেন।
কুহু কথাগুলো বলেই চলে যেতে নেয়।আহনাফ বলে উঠলো
-‘কে আমাকে চাইলো না চাইলো আই ডোন্ট কেয়ার।আমার কাকে চাই সেটাই হচ্ছে ফ্যাক্ট।এখন সে কারো উডবি হোক আর দশ বাচ্চার মা’ই হোক.. আই ডোন্ট কেয়ার।আমার তাকেই লাগবে।দরকার পড়লে ছিনিয়ে নিব…
কুহু তাচ্ছিল্যের স্বরে বললো

-‘বড়লোকের ছাঁও না আপনি! ছিনিয়ে নেওয়া ছাড়া আর কি’ই বা করতে পারবেন! এর চেয়ে অন্যদিকে দিকে রাস্তা মাপুন।আপনার আমার দুজনেরই ভালো হবে এতে।
কুহু দরজা খুলে চলে গেল। আহনাফ তার যাওয়ার পানে তাকিয়ে বলে উঠলো
-‘বড্ড ঘাড় ত্যাড়া মেয়ে! যে জায়গায় আমার জন্য এতো মেয়ে পাগল সে জায়গায় এই মেয়ে আমাকে এক চুলও পাত্তা দিল না।হাহ্! তোমার ঐ উডবিকে যদি আমি আমার সমন্ধি না বানিয়েছি তাহলে আমার নামও আহনাফ না।মনে রাখবেন, মিস তিলোত্তমা..!

-‘তোর ঐ পিরিতের ভাই আস্ত একটা খাটাশ।ইচ্ছা করছিলো দুইগালে ঠাস ঠাস করে দুটো চড় লাগাতে।
রোদেলা মুখটা ছোট করে বলে উঠলো
-‘তুই আমাকে গালি দে..মার..তাও আমার আহনাফ ভাইকে নিয়ে কিছু বলিস না।কারণ তোকে চাইলেও কিছু বলতে পারবো না আমি।

কুহু রোদেলার দিকে অদ্ভুদ নয়নে তাকালো।একটা মেয়ে কি করে একটা ছেলেকে এতো ভালোবাসতে পারে! দিনের পর দিন এতো অবহেলা পেয়েও ভালোবেসে যাচ্ছে।অথচ অপর পক্ষের কোনো হুশ নেই এতে।এতেও মেয়েটা দিব্যি খুশি আছে।নিজের মতো করে কতোকিছুই না কল্পনা করে তার সেই শখের পুরুষকে নিয়ে।কুহুকে সবসময় তার কথা বলতেই থাকে।একদিন দেখিস এটা হবে.. ওটা হবে..আমরা ওখানে যাবো…আরো কতোকিছু।রোদের এই স্বপ্ন কি আদেও কোনোদিন সত্য হবে? কুহু কি তৃতীয় পক্ষ হয়ে গেল তাদের মাঝে? তাদের বন্ধুত্বে যদি ফাটল ধরে এর কারণে? কুহুর ভাবনার মাঝেই রোদেলা বলে উঠলো

-‘কি রে! কি ভাবছিস?
কুহু ভাবনার জগৎ থেকে বেরিয়ে এলো।
-‘উঁহু কিছু না।…তোর গাড়ি এসে গেছে..যা..
রোদেলা তাকিয়ে দেখলো যে একটা সাদা রঙের প্রাইভেট কার দাঁড়িয়ে। সে বলে উঠলো
-‘আয় আজ তোকে নামিয়ে দেই..প্লিজ বেবি…প্রতিদিন’ই তো মানা করিস।আজকে অন্তত আয় প্লিজ….
কুহু বলে উঠলো
-‘জানিস’ই তো এসব গাড়িতে আমি উঠতে পারি না।ব/মি পায়…
রোদেলা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।এরপর বললো

-‘দেখিস তোর এমন একটা ছেলের সাথে বিয়ে হবে যার অনেক প্রাইভেট কার থাকবে..
কুহু হো হো করে হেসে উঠলো।এরপর কিছু একটা মনে পড়তেই বললো
-‘তোর উনি কেন ডাকলো জিজ্ঞাসা করলি না যে?
রোদেলা হালকা হেসে বললো
-‘কিছু কিছু ব্যাপার অজানা থাকাই ভালো।এতে হৃদয়ে জ্বালা কম হয়…
রোদেলা কথাটা বলেই গাড়িতে উঠে পড়লো।গাড়িটা স্টার্ট দিতেই তা অনেকটা দূরে চলে গেল। রোদেলা সিটে হেলান দিয়ে চোখটা বন্ধ করে ফেললো।বিরবির করে বললো—“আহনাফ ভাই আমার,,শুধুই আমার।”

কুহু ভ্রু কুচকালো।বলতে কি চাইলো রোদ? বিরক্ত লাগলো কুহুর।ছোট্ট একটা মাথা তার।এতো কিছু ভাবতে গেলে মাথা ব্যথা শুরু হয়ে যায়।আরকিছু না ভেবে সামনের দিকে হাঁটা আরম্ভ করতে নিল।হঠাৎ তখন একটা বাইক এসে থামলো তার সামনে।কুহু তাকিয়ে দেখে, আয়ান।আয়ান হেসে বলে উঠলো
-‘উঠে বস…

কুহু প্রথমে মানা করতে চাইলো।কিন্তু একটু খেয়াল করতেই দেখলো দূরে আহনাফকে দাঁড়িয়ে থাকতে।আরকিছু না ভেবে সে আয়ানের বাইকে উঠে পড়লো।আয়ান এতেই অবাক হয়েছিল অনেক।কিন্তু কুহু তাকে অবাকের শেষ চূড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য তাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে।আয়ান হা হয়ে গেল।বাইক স্টার্ট দিতে ভুলে গেল।এদিকে আহনাফ রাগে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে গেল।আরিফ, আদিত আর নাতাশা একে অপরের দিকে তাকাচ্ছে একবার তো কুহুর দিকে তাকাচ্ছে একবার।তারা একসাথে আহনাফের দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো।

আহনাফ আরিফের হাতে থাকা হকস্টিকটা নিয়ে সোজা কুহুর দিকে ছুঁড়ে মারলো।ওরা মুখে দিয়ে নিজেদের চিৎকার করা আটকালো।এদিকে হকস্টিকটা গিয়ে সোজা কুহুর মাথায় লাগলো।পেছন ঘুরে থাকায় কুহু দেখতেই পায়নি যে আহনাফ হকস্টিক ছুঁড়ে মেরেছে।ধপাস করে বাইক থেকে পড়ে গেল সে।আয়ান এখনো হা হয়ে ভাবছে যে হচ্ছেটা কি।এদিকে কুহু যে পড়ে গেছে তার খেয়াল’ই নেই।মানুষজনের চেঁচামেচিতে তার হুশ এলো।মানুষ কে এদিকেই তাকিয়ে থাকতে দেখে কপাল কুচকালো সে।পেছনে তাকাতেই দেখলো কুহু নেই।নিচের দিকে চোখ যেতেই ভড়কালো সে।কুহু পড়লো কীভাবে? আর কখন’ই বা পড়লো?সে দ্রুত বেগে নেমে পড়লো বাইক থেকে।
-‘সুহাসিনী…এই সুহাসিনী…কি হলো তোর?
একটা লোক বলে উঠলো

-‘কি হলো আবার কি! একটু আগেই না মেয়েটার মাথায় হকস্টিক লাগলো।কোন জগতে থাকেন আপনি?
পাশে থাকা হকস্টিকটা এতোক্ষণে খেয়াল করলো আয়ান।পেছনে তাকাতেই দেখলো কিছু ছেলে-মেয়েকে দাঁড়িয়ে থাকতে।সবাইমিলে একজনকে চেপে ধরে রেখেছে।যার হাতে আরেকটা হকস্টিক।আয়ানের দিকেই তাকিয়ে সে।আয়ান বুঝলো না কিছু।সে আপাতত কুহুর দিকে ফোকাস দিল।মেয়েটা অজ্ঞান হয়ে গেছে।আয়ান কুহুর ব্যাগ থেকে পানির বোতল বের করলো। ওর চোখে পানি ছেটাতে লাগলো।কিন্তু তাও জ্ঞান ফিরলো না তার।আয়ানের ভয় হলো।
-‘কুহু? এই কুহু?
হঠাৎ সেখানে আহনাফ উপস্থিত হলো তখন।আশেপাশে এতো মানুষ দেখে চেঁচিয়ে উঠলো সে

-‘হেল্প তো করছেন না উল্টো ভিড় বাড়াচ্ছেন। নিজেদের কাজ করুন গিয়ে..যান..
একে একে কেটে পড়লো সবাই।আহনাফকে কম বেশি সবাই চিনে।কে বলতে পারে এখন আবার তাদের হকস্টিক দিয়ে মার না শুরু করে দেয়! তাই কেউ রিস্ক নিল না। তখন রাফি এক বালতি পানি নিয়ে হাজির হলো।আহনাফ কুহুর নিকাবটা উপরে তুলে দিল।আয়ান কপাল কুচকালো।আহনাফ রাফির থেকে বালতিটা নিল।এরপর পুরো এক বালতি পানি কুহুর মুখের উপর ঢেলে দিল।আয়ান আটকানোর সময়টাও পেল না।এদিকে কুহু ধরফরিয়ে উঠলো।মনে হচ্ছিল যেন তার মুখের উপর দিয়ে সুনামি বয়ে যাচ্ছে।তাকাতেই সে আরেকটা ঝাটকা খেল।আহনাফ দাঁড়িয়ে! পরিস্থিতি বুঝতে সময় লাগলো তার।সে উঠে বসলো।তখন’ই মাথায় হাত দিয়ে চেঁচিয়ে উঠলো মৃদু।আয়ান বিচলিত হয়ে বললো

-‘ঠিক আছিস তুই? মাথা ব্যথা করছে?
কুহু বলে উঠলো
-‘বা/লের ভার্সিটি আমার! একটাদিন সুস্থসবলভাবে বাড়িতে যেতে পারি না!
আহনাফ বলে উঠলো
-‘হাহ্! তুমিও ভার্সিটির একটা বা/লের স্টুডেন্ট। এই? বাসায় কি খেতে দেয় না? একটা হকস্টিক মাথায় এসে লাগলে অজ্ঞান হয় কেউ?
কুহু তাকালো আহনাফের দিকে।এরপর বলে উঠলো
-‘আসেন আপনাকে মেরে দেখাই অজ্ঞান হয় কি করে..!
আয়ান বলে উঠলো
-‘হকস্টিকটা কি আপনি মেরেছিলেন?
আহনাফ কিছু বলার আগেই কুহু বলে উঠলো
-‘বাসায় যাবো, ভাইয়া।

কুহু উঠতে নিলে আয়ান আর আহনাফ দুজনেই ওকে ধরলো। কুহু তা দেখে বললো
-‘আরো কাউকে নিয়ে আসুন গিয়ে।সবাই মিলে ধরুন আমায়।পাব্লিক বাসের হ্যান্ডেল তো আমি…
এহেন কথা শুনে দুজনেই একসাথে ছেড়ে দিল ওকে।কুহু ধপাস করে পড়ে গেল।বোকার মতো দুজনের দিকে তাকিয়ে রইলো।এরপর কোমড়ে হাত দিয়ে চেঁচিয়ে উঠলো সে। ওরা আবার ধরতে নিলে কুহু বলে উঠলো
-‘হয়েছে..থাক..অনেক সাহায্য করছেন আপনারা আমার।
কুহু একাই কোনোমতে উঠে দাঁড়ালো।আহনাফের চোখেমুখে এখনো রাগ।কুহু খেয়াল করলো তা।মুখ ভেংচি কাটলো সে।আহনাফ মনে মনে বললো
-‘একবার হাতের নাগালে পাই তোমায়..এরপর বোঝাবো..।জড়িয়ে ধরার খুব শখ না! মজা বোঝাবো তোমায়।
কুহু বলে উঠলো

-‘বাইকে যেতে পারবো না।রিক্সা নিন।
আয়ান আচ্ছা বলে রিক্সা খুঁজতে লাগলো।আহনাফের ভালো লাগলো না ব্যাপারটা।এই ছেলের সাথে যাবে এখন তার তিলোত্তমা! রিক্সায় একে অপরের পাশে বসবে তারা।যদি আবার ঢং করে হাতে হাত রাখে…
-‘আমার গাড়িতে করে চলে যান আপনারা..যেহেতু দোষটা আমার..
আহনাফ দাঁতে দাঁত চেপে বললো কথাগুলো।আদিত,আরিফ আর নাতাশা হা হয়ে গেল।প্রেমে পড়লে সত্যিই সবাই চেইঞ্জ হয়ে যায়।

-‘আপনার গাড়িতে করে কেন যাবো?
কুহুর কথায় আহনাফ শুধু এক ভ্রু উঁচু করে তাকালো তার দিকে।হকস্টিকটা দেখালো ইশারায়।কুহু আমতা আমতা করে বললো
-‘ইয়ে..আ’আপনার গা’গাড়িতেই তো যাবো… হ্যাঁ দোষ তো আপনার।
আয়ান বলে উঠলো—“তারপরেও..”
কুহু বলে উঠলো—“আপনি চুপ করুন।”
আয়ানের মুখটা চুপসে গেল। আহনাফ রাফিকে গাড়ির চাবি দিয়ে ওদের পৌঁছে দিতে বললো।কুহু ব্যাগটা উঠিয়ে চলে গেল।কি মনে করে পেছনে ফিরে তাকালো সে।আহনাফ হকস্টিকটা উঠিয়ে শাসালো ওকে।কুহু ভয়ে আর পেছনে তাকালো না।আদিত বলে উঠলো
-‘যার প্রেম জীবনেও কোনোদিন হওয়ার কথা না তার’ই সবার আগে হয়ে গেল।আর আমরাই সিঙ্গেল রয়ে গেলাম।
আরিফ একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো

-‘হামারা ফুডা কপাল..
নাতাশা বলে উঠলো
-‘আমি তো পেয়ে গেছি।আহনাফ, আই থিংক আমি তোর হেল্প করতে পারবো।
আহনাফ নাতাশার কথা শুনে কপাল কুচকালো।নাতাশা শয়তানি হাসি দিল।আদিত বললো
-‘হয়ে গেল! কার জানি কপাল পুড়লো রে!
নাতাশা আদিতের পিঠে ধরাম করে কিল বসিয়ে দিল।হঠাৎ তাদের সামনে একটা কালো রঙের গাড়ি এসে থামলো।সবাই কপাল কুচকালো।গাড়ি দরজা খুলে গেল। স্যুট-কোর্ট পড়া একটা লোক নেমে এলো। চোখে তার সানগ্লাস।আহনাফ ‘চ’ সূচক শব্দ করলো।আশেপাশে তাকাতেই খেয়াল করলো কিছু মেয়ে হা করে তাকিয়ে এইদিকে।এদিকে লোকটা এগিয়ে এসে আদিত,আরিফের সাথে হ্যান্ডসেক করলো।

-‘হ্যালো ইয়াং ম্যান! কি খবর?
নাতাশা বলে উঠলো
-‘আংকেল আমার তো মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে আপনাকেই বিয়ে করে নিতে।আপনি এখনো কত হ্যান্ডসাম!
আহান শাহরিয়ার হো হো করে হেসে উঠলো।আহনাফ বললো
-‘তুমি এখানে কেন এসেছো?
আহান শাহরিয়ার বললেন
-‘আমাকে দেখলেই তোমার পেছন জ্বলে কেন?
আদিত বলে উঠলো
-‘আরে বুঝেন না আংকেল! আপনি আসলে ওর দাম কমে যায় না! আপনি যে ওর থেকেও বেশি হ্যান্ডসাম।
আহনাফ বিরক্তিকর দৃষ্টিতে তাকালো।

-‘কি সমস্যা? এখানে এসেছো কেন?
আহান শাহরিয়ার বললেন
-‘শুনলাম আমার সো কোল্ড ছেলে নাকি কোন মেয়েকে চুমু খেয়েছে..
-‘হ্যাঁ..তো কি হয়েছে?
আহনাফের কথা শুনে আহান শাহরিয়ার বললেন
-‘কি হয়েছে মানে? তুমি একটা মেয়েকে কিস করেছো! ব্যাপারটা কতো বড় তোমার ধারণা আছে?
আহনাফ বলে উঠলো
-‘প্রেগনেন্ট তো করে ফেলেনি.. কিস’ই করেছি জাস্ট..তাও গালে।
আহান শাহরিয়ার বলে উঠলেন
-‘কেমন নির্লজ্জ ছেলে! বাপের সামনে কিসব কথা বলছে!
আহনাফ কিছু বলতে যাবে তার আগেই আহনাফের ফোন বেজে উঠলো।

-‘হ্যালো!
-‘ভাই..গাড়ির ব্রেক ফেইল হয়ে গেছে…
রাফির কথা শুনে আহনাফের মাথায় বাজ পড়লো।
-‘হুয়াট!!! তোরা কোথায় এখন?
-‘জানি না ভাই।গাড়ি যে দিকে যাচ্ছে আমরাও সেইদিকে যাচ্ছি।
-‘হুয়াট দ্যা ফা*! তিলোত্তমা ঠিক আছে?
রাফি কাঁদো কাঁদো সুরে বললো
-‘ওনার কথা আর বইলেন না ভাই। ব্রেক ফেইল শুনে ওনি গাড়ির দরজা খুলে জাম্প মেরে দিছে।এখন আমি আর আয়ান ভাই গাড়িতে।ভাই, বাঁচান আমাদের..
আহনাফ হতবাক, হতভম্ব! জাম্প মেরে দিছে মানে! ও কি করে..! ফোনের ওপাশ থেকে আয়ান আর রাফির চেঁচানোর শব্দ ভেসে আসছে।

প্রণয়ের অন্তিমক্ষণ পর্ব ৪

-‘মিস্টার আহনাফ আমাদের বাঁচান..
-‘ভাই বাঁচাও…
আহনাফের সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।সে শুধু বললো
-‘হাসপাতালে দেখা হচ্ছে..
ফোনের ওপাশ থেকে ওরা চেঁচিয়ে উঠলো–“নাআআআ!”

প্রণয়ের অন্তিমক্ষণ পর্ব ৬

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here