প্রণয়ের অমল কাব্য পর্ব ২৫

প্রণয়ের অমল কাব্য পর্ব ২৫
Drm Shohag

ইরফান মাইরার দিকে তীক্ষ্ণ চোখে চেয়ে আছে। পা থেকে মাথা পর্যন্ত চোখ বুলিয়ে গম্ভীর গলায় বলে,
“কোথায় যাচ্ছ?”
মাইরা উত্তর করল না। ইরফানের পাশ কাটিয়ে দু’পা এগোয়। ইরফান ডান হাত পিছনে নিয়ে মাইরাকে টেনে তার সামনে দাঁড় করিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলে,
“কোথায় যাচ্ছ?”
মাইরার চোখজোড়ায় পানির কণা। তার মাথা নিচু। সেভাবেই হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে। ইরফান হাতের বাঁধন আরও শক্ত করে ধরে। বা হাতে মাইরার কোমড় জড়িয়ে তার সাথে চেপে ধরে। ডান হাতে মাইরার থুতনি উঁচু করে প্রশ্ন করে,
“স্টুপিট গার্ল, কিছু জিজ্ঞেস করেছি আমি।”

মাইরা কিচ্ছু বলে না। উল্টে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে চায়। ছটফট করে। ইরফানের রাগ যেন তড়তড় করে বেড়ে গেল। গতকাল রাতে একা বাসায় ফিরেছে, সেই রাগ যেন আবারও জেগে উঠল আজ আবার একা বাইরে বেরোতে দেখে। কোনো কথা না বলে মাইরাকে কোলে তুলে নেয়। মাইরা ছটফটায়। তবে কথা বলে না। ইরফান শক্ত মুখাবয়বে ভেতরে যায়। ডাইনিং-এ তারেক নেওয়াজ, রুমা নেওয়াজ সাথে রিতা। মাত্র ঘর থেকে আসলো তারা। ইরফানের কোলে মাইরাকে দেখে তিনজনের চোখেমুখে বিস্ময় ভর করে। তারেক নেওয়াজ অবাক হয়ে বলে,
“মাইরাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছ?”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

মাইরা তারেক নেওয়াজ এর গলা পেয়ে শান্ত হয়ে গেল। ইরফানের বুকে মুখ ঠেকিয়ে নিরবে অশ্রু বিসর্জন দেয়। ইরফান সিড়ি বেয়ে উপরে ওঠে। রুমা নেওয়াজ ভয় পায়। গতকাল ইরফান মাইরাকে মেরেছে এটা তার স্বামীকে বলেননি। এখন ইরফান আবার কোনো কারণে রেগেছে কি-না, আবার যদি মারে? অতঃপর বলে,
“ইরফান ওকে নামিয়ে দাও। কিছু বলো না।”
ইরফান শুনলো না কারো কথা। তারেক নেওয়াজ ভ্রু কুঁচকে তাকালো। মাইরার পরনে বোরখা। আর মেয়েটাও কেমন যেন শান্ত হয়ে আছে। কিছু একটা ভেবে চুপ থাকলেন। সাথে রুমা নেওয়াজ কেও থামতে বললেন।
তারেক নেওয়াজ অভিজ্ঞ চোখে মাইরা আর ইরফানের প্রস্থান দেখল। রুমা নেওয়াজ তার স্বামীর দিকে চায়ের কাপ বাড়িয়ে দিয়ে বলে,

“আটকালে না কেন? যদি আবার মারে? তোমার ছেলের বিশ্বাস নেই।”
তারেক নেওয়াজ সোফায় বসে চায়ের কাপে চুমুক দেয়। কিছু জল্পনা-কল্পনা করে বলে,
“মারলে এখানেই মারতো। ঘরে নিয়ে যেতো না।”
একটু থেমে আবারও বলে,
“তোমার ছেলে মাইরাকে কেন এনেছে জানো?”
“কেন এনেছে?”
“মাইরার অ্যাজমা। এজন্য ওর ফ্রেন্ড সীমান্তের কাছে নিয়ে গিয়েছিল। শুদ্ধর কাছে কল করেছিলাম।”
রুমা নেওয়াজ বিস্ময় নিয়ে তাকালো তার স্বামীর পানে। মুখ ফসকে বলে দেয়,
“কিন্তুু কালকে যে ইরফান মাইরাকে আবার মারলো!”
কথাটা শুনে তারেক নেওয়াজ অবাক হয়ে তাকায়। রুমা নেওয়াজ নিজেও কথাটা বলে থতমত খেয়ে যায়। তারেক নেওয়াজ বসা থেকে উঠে দাঁড়ালেন। হাতের কাপ ঠাস করে টেবিলে রেখে গটগট পায়ে সিড়ি বেয়ে উপরে ওঠে। রুমা নেওয়াজ কপাল চাপড়ায়। কি দরকার ছিল বলার! অসহায় চোখে স্বামীর পিছু পিছু যায় আর ডাকে,, ‘কিছু বলো না। দাঁড়াও।’

ইরফান দ্রুতপায়ে তার ঘরে গিয়ে ঘরের দরজা লক করে দেয়। মাইরাকে নামিয়ে দিয়ে টান দিয়ে হিজাব খুলে ছুঁড়ে ফেলে। জ্বলন্ত চোখে মাইরার দিকে চেয়ে আছে। মাইরার মুখাবয়ব জুড়ে ভীতি। চোখ থেকে পানি গড়ায়।
তারেক নেওয়াজ রেগে গটগট পায়ে ইরফানের ঘরের দরজার সামনে এসে দাঁড়ায়। অনবরত দরজায় থা’প্প’ড় দিয়ে ডাকে, “ইরফান? দরজা খোলো। মাইরাকে বের হতে দাও।”
দরজার বাইরে বাবার ডাকে ইরফানের মাথা যেন আরও দাউদাউ করে জ্বলতে লাগলো। চিৎকার করে বলে,
“বাবা এখান থেকে যাও। আমায় রাগিয়ো না।”
তারেক নেওয়াজ রেগে বলে,
“খবরদার মাইরাকে মারবে না। আমি বলেছি দরজা খোলো।”
ইরফান দু’হাতে মাথার চুল টেনে বলে,
“আমার ওয়াইফকে আমি মারবো, কাটবো, সময় মতো আদরও করবো,, যা ইচ্ছা করব। তুমি যাও এখান থেকে।”
তারেক নেওয়াজ ছেলের কথায় থতমত খেয়ে যায়। পাশ থেকে রুমা নেওয়াজ তার স্বামীর হাত টেনে নিয়ে যেতে যেতে বলে,

“এসো। তুমিই তো বললে ইরফানের কর্মকাণ্ড। এখন নিজেই বাচ্চাদের মতো আচরণ করছো কেন?”
তারেক নেওয়াজ রেগে বলে,
“তাই বলে মেয়েটাকে মারবে? এই ছেলে কবে মানুষ হবে?”
রুমা নেওয়াজ কিছু বলল না। দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
এদিকে ইরফান হঠাৎ-ই তার ডান হাতে শক্ত করে মাইরার গাল চেপে চিৎকার করে বলে,
“এ্যাই পুচকি মেয়ে, এতো সাহস কোথায় পেয়েছ? অ্যান্সার মি! একা একা কোথায় যাচ্ছিলে?”
মাইরা কথা বলে না। ইরফান দাঁতে দাঁত চেপে বলে,
“স্পিক আপ। রেডি হয়েছ কেন? বলো?”
ইরফানের শক্ত কথায় মাইরা কেঁপে ওঠে। তবুও কোনো কথা বলে না।
মাইরাকে চুপ থাকতে দেখে ইরফান রেগে মাইরার গালে থা’প্প’ড় মারতে গিয়ে থেমে যায়। বাম গালের স্পট এখনো জ্বলজ্বল করছে।

মাইরা চোখ বুজে। বন্ধ চোখের পাতা বেয়ে ঝপঝপ করে পানির কণা বেয়ে পড়ে। ইরফান মাইরার মুখপানে চেয়ে মাইরার গাল ছেড়ে দেয়। বা হাত নামিয়ে নেয়, যেটা থা’প্প’ড় মারতে উঠিয়েছিল। অবাক হয় মাইরাকে কথা বলতে না দেখে। ঢোক গিলে দু’হাতের আঁজলায় মাইরার দু’গাল নিয়ে নরম গলায় জিজ্ঞেস করে,
“কাঁদছো কেন?”
মাইরা কিচ্ছু বলে না। নিরবে অশ্রু ঝরায় চোখ থেকে। ইরফান মাইরার পুরো মুখ অবলোকন করে। কান্নার দাপটে পুরো মুখ কেমন লাল হয়ে আছে। আবারও নরম গলায় জিজ্ঞেস করে,
“কোথায় যাচ্ছিলে?”
মাইরা এবারেও কথা বলে না। ইরফান রেগে যাচ্ছে। ফোঁস করে শ্বাস ফেলে নিজেকে সামলে ধমকে বলে,
“স্টুপিট কথা বলো। রাগিয়ো না আমায়।”
মাইরা তবুও কথা বলে না। ইরফান এদিক-ওদিক পায়চারি করে রাগে দরজার লাথি বসায় একটা। মাইরা কেঁপে ওঠে। মাথা নিচু করে থাকে। ইরফান দু’হাতে মাথার চুল টেনে ধরে। এরপর মাথা তুলে মাইরার দিকে তাকায়। গায়ে বোরখা জড়ানো। মাথার চুল এলোমেলো হয়ে আছে। চোখমুখ এর অবস্থা কেঁদেকেটে খা’রা’প হয়ে গিয়েছে। ইরফান এগিয়ে এসে মাইরার কোমড় বা হাতে জড়িয়ে নিজের সাথে চেপে খসখসে ডান হাত মাইরা নরম গালে রেখে মৃদুস্বরে বলে,

“সবসময় আমার রাগ বাড়িয়ে দাও কেন? কখনো কমিয়েও তো দিতে পারো!”
ইরফানের কণ্ঠ অতি নরম। মাইরা পিটপিট করে চোখ মেলে তাকায়। ইরফান গম্ভীর চোখে মাইরার দিকে চেয়ে আছে। মাইরা হঠাৎ-ই ইরফানকে দু’হাতে ধাক্কা দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে চেঁচিয়ে বলে,
“আমি আমার গ্রামে যাবো। থাকবো না এখানে আমি।”
ইরফানকে তো তার থেকে এক চুল সরাতে পারলোই না, উল্টে ইরফান রেগে মাইরাকে আরও শক্তি খাঁটিয়ে নিজের সাথে চেপে ধরে। দাঁতে দাঁত পিষে বলে,
“আর ইউ ম্যাড? একা একা যাচ্ছিলে? কোনো আইডিয়া আছে একা একা বাস-এ গেলে কি অবস্থা হতো তোমার?”
মাইরা রেগে বলে,
“তো কার সাথে যাবো? আমায় রেখে আসার মানুষ নেই। ছাড়ুন আমায়। আমি একাই যাব।”
ইরফান স্তম্ভিত হয়ে তাকায় মাইরার দিকে। মাইরাকে ছেড়ে দু’হাতে মাইরার চোখের পানি মুছে বলে,
“স্টপ ক্রায়িং। আমি রেখে আসবো।”
“একটু আগেই তো বললেন আমাকে নিয়ে যেতে পারবেন না।”
ইরফান ভ্রু কুঁচকে বলে,
“এখন বলছি নিয়ে যাবো।”

মাইরা তার গাল থেকে ইরফানের হাত ঝাড়া দিয়ে বলে,
“যাবো না আমি আপনার সাথে। আমি একাই যাবো।”
ইরফান চোখ গরম করে তাকায় মাইরার পানে। দু’হাতে মাইরাকে শক্ত করে চেপে বলে,
“আমি বলেছি মানে আমার সাথেই যাবে। ইউ আর আ ডেঞ্জারাস গার্ল, তাই চেয়েছিলাম একা থাকো। বাট তুমি তো একটা স্টুপিট।”
মাইরা ইরফানের হাত ধরে টেনে ছাড়াতে চায়, তবে ইরফানের থেকে নিজেকে ছাড়াতে পারে না। রেগে বলে,
“যাকে ডিভোর্স দিবেন, তার আশেপাশে থাকছেন কেন? এতো ভাবতে হবে না, ছাড়ুন বলছি।”
কথাগুলো বলতে বলতে চোখ থেকে টপটপ করে পানি গড়িয়ে পড়ে।
ইরফান অবাক হয়ে বলে,
“হোয়াট? কাকে ডিভোর্স দিব?”

মাইরা বিরক্ত হয়। এতোটাই ভ্যালুলেস সে, এই লোকটার এটাও মনে নেই যে তাকে সে ডিভোর্স দিতে চায়। মাইরা বিরক্তি কণ্ঠে বলে,
“আপনি আমাকে ডিভোর্স দিবেন।”
কথাটা বলার সাথে সাথে ইরফান ডান হাতে মাইরার গাল চেপে রাগান্বিত স্বরে বলে,
“কে বলেছে এটা?”
মাইর ব্য’থা পায়। ইরফানের হাত সরাতে চায়৷ তবে পারে না। ওভাবেই বলে,
“আপনি নিজেই বলেছেন। ছাড়ুন আমায়।”
ইরফান মাইরার চেপে ধরা গালে রাখা হাত শিথীল করে। গম্ভীর গলায় বলে,
“তুমি কি চাও?”
মাইরা অবাক হয় ইরফানের কথায়। এই লোকটার হয়েছে কি। কেমন করে যেন কথা বলছে। ভাবনা রেখে রেগে বলে,

“কি চাই মানে? ডিভোর্স চাই। আপনার মতো হার্টলেস মানুষের সাথে কেউ থাকতে চাইবে না।”
ইরফান তীক্ষ্ণ চোখে চেয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলে,
“ইহজীবনে পাবেনা,,হার্টলেস মানুষের সাথেই থাকতে হবে। দিবা স্বপ্ন দেখা বাদ দিয়ে মন দিয়ে পড়াশুনা কর, স্টুপিট। এসব ফালতু চিন্তা মাথায় কে ঢুকিয়েছে। অল্প বয়সে পেকে গেলে যা হয়! পুচকি মেয়ে, দশ লাইন বেশি বোঝা পাবলিক হলে থা’প্প’ড় দিয়ে সব দাঁত ফেলে দিব।”
কথাটা বলে মাইরার চোখের পানি মুছে দিয়ে শান্ত গলায় বলে,
“ডোন্ট ক্রাই। বিকালে রেখে আসব। বাইরে এক পা রেখেছ তো পা কেটে ঘরে বসিয়ে রাখব।”
মাইরা ফুঁপিয়ে কাঁদে। মাথা নিচু তার। ইরফান বিচলিত কণ্ঠে বলে,
“হোয়াট হ্যাপেন্ড? কাঁদছ কেন?”
মাইরা কিছু বলেনা। ইরফান মাইরাকে কোলে তুলে বেডে বসিয়ে দেয়। মাইরা রেগে ইরফানকে ধাক্কা দেয়। ইরফান তীক্ষ্ণ চোখে মাইরার দিকে চেয়ে আছে। হঠাৎ-ই মাইরাকে সাপ্টে ধরে শুয়ে পড়ে। কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলে,
“জ্বালিয়ো না।”

কথাটা বলে মাইরার মাথায় গাল ঠেকিয়ে চোখ বুজে নেয়। মাইরা কেঁপে ওঠে। কান্নামাখা গলায় বলে,
“কি করছেন? ছাড়ুন আমায়।”
ইরফান চোখ মেলল মাইরার দিকে তাকায়। বা হাতে মাইরাকে নিজের সাথে চেপে ডান হাতে মাইরার মুখ মুছে দিয়ে বলে,
“ডোন্ট ক্রাই। ঘুমাও।”
মাইরা কান্নাভেজা চোখে ইরফানের দিকে চেয়ে আছে। ঘুমাও মানে। মনে হচ্ছে সে ছোট বাচ্চা। কাঁদছে বলে তাকে ঘুম পাড়াচ্ছে। মোচড়ামুচড়ি করতে করতে বলে,
“আমায় ছাড়ুন বলছি, আমি গ্রামে যাব। ঘুমাবো না আমি।”
ইরফান শুনলো না মাইরার কথা। শক্ত করে মাইরাকে নিজের সাথে ধরে চোখ বুজে রইল। মাইরার আরও কান্না পাচ্ছে। এই লোক এমন সাপের মতো প্যাঁচিয়ে ধরেছে কেন তাকে? বা হাতে ইরফানের বুক ঠেলে বলে,
“ছাড়ুন আমায়। দমবন্ধ লাগছে।”
ইরফান চোখ মেলে তাকায়। গম্ভীর গলায় বলে,

“বমি করতে চাইছো?”
মাইরা চোখ বড়বড় করে তাকায়। গতকালের কথা মনে পড়তেই ঢোক গিলল। দ্রুত চোখ বুজে মাথা নামিয়ে নেয়। ফলস্বরূপ ইরফানের বুকে তার মুখ ঠেকে। ইরফান মাইরাকে দেখে ঠোঁট বাঁকিয়ে একটু হেসে চোখ বুজে নেয়।
মাইরার ঘাড়ে ইরফানের গরম নিঃশ্বাস পড়ছে। মেয়েটা কেমন হাসফাস করে। মিনমিন করে বলে,
“দূরে সরুন।”
ইরফান চোখ বুজেই গম্ভীর গলায় বলে,
“নো। অাই’ল স্লিপ নাও। ডোন্ট ডিস্টার্ব মি।”
মাইরা রেগে বলে,
“আপনি ঘুমান। আমি ঘুমাবো না। আমায় এভাবে ধরে রেখেছেন কেন?”
ইরফান বিরক্ত চোখে তাকায় মাইরার দিকে। রেগে বলে,

“বিকজ ইউ আর আ মানকি। ছেড়ে দিলেই বাঁদরামি স্টার্ট হবে। সো, ডোন্ট সাউট। ওয়ান আওয়ার ঘুমাবো। দ্যন অফিস যাবো। আর একবার ডিস্টার্ব করেছ তো,, বমি করলেও এটা খাবো।”
লাস্ট কথাটা মাইরার গোলাপি ঠোঁটে দৃষ্টি রেখে বলে। মাইরা ইরফানের দৃষ্টি দেখে চোখ নামিয়ে নেয়। হঠাৎ-ই ইরফানকে তার একদম মুখের সামনে দেখে বা হাতে নিজের ঠোঁট চেপে ভীত চোখে তাকায় ইরফানের দিকে। ইরফান মাইরার চোখের দিকে তাকালো। মৃদুস্বরে ঠাণ্ডা গলায় বলে,
“কিছু করবো না। ডিস্টার্ব কর না।”
কথাটা বলে চোখ বুজে নেয়। মাইরা পিটপিট করে তাকিয়ে থাকে ইরফানের দিকে। মিনমিন করে বলে,
“আমার গরম লাগছে।”
ইরফান বিরক্ত হয়ে মাইরাকে আরও শক্তহাতে চেপে দাঁতে দাঁত খিঁচে বলে,
“স্টুপিট, আমায় না জ্বালালে তুমি শান্তি পাওনা?”
মাইরা চোখ পিটপিট করে তাকায়। ইরফান মাইরাকে ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়। টেবিলের উপর থেকে এসির রিমোট নিয়ে পাওয়ার একদম লো করে দেয়। মাইরা ছাড়া পেয়ে দ্রুত বিছানা থেকে নামতে গেলে ইরফান ঝরের বেগে এসে মাইরাকে বিছানার সাথে চেপে ধরে। রেগে বলে,

“থা’প্প’ড় খেতে না চাইলে বাঁদরামি অফ কর।”
মাইরা অবুঝ গলায় বলে,
“আপনার সাথে থাকলে আমার গরম লাগছে। আমি কোথাও যাবো না, প্লিজ ছেড়ে দিন।”
ইরফান ফোঁস করে শ্বাস ফেলে মাইরাকে জড়িয়ে চোখ বুজল। মৃদুস্বরে বলল,
“আর লাগবে না।”
পাঁচ মিনিটের মাথায় ঠাণ্ডায় মাইরার শরীরে কাঁপন ধরে। নিজেকে গুটিয়ে নিতে যায়, ইরফানের দিকে চেপে যায়। ইরফানের চোখ লেগে এসেছে। ঘুমের মাঝেই মাইরাকে দু’হাতে আরেকটু টেনে নিল নিজের দিকে। মাইরার কান্না পাচ্ছে। মনে হচ্ছে বরফ পড়ছে। তার তো দিনে ঘুমানোর অভ্যাস নেই, এখন ঘুমও আসছে না। মাথা তুলতে নিলে ইরফানের চোয়ালের সাথে জোরে ধাক্কা লাগে মাইরার মাথা। ইরফানের যা একটু চোখ লেগেছিল ছুটে গিয়েছে মুহুর্তেই। মাইরাকে ছেড়ে চিৎ হয়ে শোয়। কাঁচা ঘুম তো ভেঙেছে, কিন্তুু রাগা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। বিরক্তিতে কপালে অসংখ্য ভাঁজ ফেলে। ডান হাত তুলে চোখের উপর রাখে।
ইরফান ছেড়ে দেয়ায় মাইরার যেন আরও ঠাণ্ডা লাগছে। মাইরা ইরফানের দিকে চেপে গিয়ে মিনমিন করে বলে,
“আমার ঠাণ্ডা লাগছে।”

ইরফান মুখ বুজে রাগ গিলতে চাইছিল। তা আর হলো না। ঝট করে চোখ মেলে শোয়া থেকে উঠে বসে। টান মেরে মাইরাকে তুলে রাগান্বিত স্বরে বলে,
“হোয়াট’স ইওর প্রবলেম? তুমি ঠিক করেই নিয়েছ আমাকে শান্তি দিবে না?”
মাইরা ভয় পেয়ে যায়। অনবরত ঢোক গিলে। ইরফান মাইরাকে টেনে বেড থেকে নামায়। হাত ধরে টেনে দরজার বাইরে মাইরাকে ধাক্কা মেরে বের করে দিয়ে বলে,
“আমার সামনে আরেকবার আসলে থা’প্প’ড় দিয়ে সব দাঁত ফেলব। স্টুপিট। আই ওয়াজ রাইট, ডিভোর্স ইজ বেটার।”
কথাটা বলেই ঠাস করে দরজা বন্ধ করে দেয়।
মাইরা তব্দা খেয়ে চেয়ে থাকে। ইরফানের লাস্ট কথাটায় চোখ ভিজল। বিড়বিড় করল, “পা’ষা’ণ লোক।”

নিজের দিকে খেয়াল করলে দেখল হিজাব নেই। হিজাব তো ভিতরে। এখন কি করবে? মাথার চুল ভাগ করে দু’পাশে আনে। এগিয়ে গিয়ে নিচে নজর করলে দেখল ডাইনিং এ কেউ নেই। এমনিতেও বাসায় কেউ নেই। মূলত তারেক নেওয়াজ ডাইনিং-এ কি-না এটাই দেখল। দেখতে না পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। এরপর দ্রুতপায়ে সিড়ি বেয়ে নিচে নামে। সিড়িতে তার পার্স পড়ে থাকতে দেখে হাতে তুলে নেয়। এরপর এক দৌড়ে তার ঘরে যায়। দরজা আটকে চুলগুলো বেঁধে নেয়।
দেয়াল ঘড়িতে দেখল ৮:৩০ বাজে। দীর্ঘশ্বাস ফেলে
আরেকটা হিজাব বের করে মাথায় বেঁধে নেয়। এরপর পার্স হাতে নিয়ে কাউকে না বলেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। ‘ডিভোর্স ইজ বেটার’ কথাটা ভেবে চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ে। ডানহাতে তা মুছে নেয়। পায়ের গতি বাড়ায়। মেইন গেইটে রহমত চাচা মাইরাকে একা দেখে অবাক হলো। কিন্তুু যেচে কিছু জিজ্ঞেস করল না।
মাইরা বাসস্ট্যান্ডে এসে টিকিট কেটে দাঁড়িয়ে আছে এক কোণায়। কেমন যেন ভয় ভয় লাগছে। এর আগে কখনো এভাবে একা বের হয়নি। ইরফানের কথায় রাগে, দুঃখে, কষ্টে বেরিয়েছে। ওই লোকটাকে খু’ন করতে ইচ্ছে করে। ভাববে না তার কথা। কিছুক্ষণ পর একটা বাস এসে থামলে মাইরা উঠে পড়ে সে বাসে। তার নির্দিষ্ট সিটে বসে পড়ে, জানালার কাছে। বাস ভর্তি মানুষ। মাইরা ভয় পাচ্ছে। সে তো গ্রামের মেয়ে। শহরে এভাবে একা একা চলাচল করেনি কখনো।

ইনায়া তার ঘর থেকে বেরিয়ে মাইরার ঘরে আসে। আজ উঠতে উঠতে লেট হয়েছে। গতকাল মাইরা ঘুমিয়ে যাওয়ায় আর কথা হয়নি। গতকাল কি হয়েছিল, কেন একা একা বাড়ি চলে আসলো সেসব নিয়ে কথা বলবে। কিন্তুু মাইরার ঘরে এসে মাইরাকে দেখতে না পেয়ে ভ্রু কোঁচকালো। ভাবলো ওয়াশরুমে গিয়েছে। তাই বেশ কিছুক্ষণ বসে অপেক্ষা করল মাইরা বের হওয়ার। কিন্তুু অনেকক্ষণ পরেও যখন দেখল মাইরার খবর নেই তখন এগিয়ে গিয়ে ওয়াশশরুম চেক করলে কাউকে দেখতে পায় না। বেলকনি চেক করে। কোথাও নেই। ঘর থেকে বেরিয়ে রুমা নেওয়াজ কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘ইরফানের ঘরে।’
ইনায়া অবাক হলো। মাইরা ভাইয়ার ঘরে কি করে? তার ভাইয়া বাসায় আছে না-কি তা জানে না। কি মনে করে সিড়ি বেয়ে উপরে যায় ইরফানের ঘরের দিকে। দরজা ঠেললে আপনাআপনি দরজা খুলে যায়। ঘরের লাইট জ্বালিয়ে দেখল ভেতরে কেউ নেই। গিয়েছে কোথায় এরা?
ঘর থেকে বেরিয়ে ছাদে যায় মাইরাকে খুঁজতে। ছাদেও না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে এসে তার মাকে বলে। রুমা নেওয়াজ অবাক হয়। ইরফান যে তখন মেয়েটাকে ওর ঘরে নিয়ে গেল? ইরফান কি মাইরাকে গ্রামে রাখতে গিয়েছে তবে?

রুমা নেওয়াজ ইরফানের নাম্বারে কল করে, কিন্তুু ইরফানকে ফোনে পায় না। মাইরার নাম্বারে কল করে তাকেও পায় না।
উপায় না পেয়ে দ্রুত তারেক নেওয়াজ এর নাম্বারে কল করেন। কাউকেই কলে না পেয়ে হতাশ হলেন। ইরফান অফিসের উদ্দেশ্যে বের হয়েছে। আর তারেক নেওয়াজ অফিসের কাজে গাজীপুরের উদ্দেশ্যে বের হয়েছে, তবে মাইরা গেল কোথায়?
এরপর শুদ্ধর নাম্বারে কল দিয়ে ব্যাপারটা জানালে শুদ্ধ জানায় দেখছে।
শুদ্ধ কল কেটে ইরফানদের অফিসের উদ্দেশ্যে বের হয়।
ইনায়া ঘরে গিয়ে তার ফোন চেক করে দেখে মাইরা কল দিয়েছিল। সে ব্যাক করার আগেই আবারও মাইরার কল আসে। ইনায়া দ্রুত কল রিসিভ করে বলে,
“মাইরা কোথায় তুমি?”
মাইরা জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে বলে,
“আপু আমি গ্রামে যাচ্ছি। তুমি বাবা আর মা কে একটু বলে দিবা?”
ইনায়া অবাক হয়ে বলে,
“কার সাথে যাচ্ছো? ভাইয়া তো অফিসে। বাবাও কাজে বেরিয়েছে।”
“একাই যাচ্ছি আপু।”

“মানে? মাইরা তুমি একা কিভাবে যাচ্ছ? আম্মু বাবা শুনলে খুব রাগ করবে।”
“স্যরি আপু। কিছু হবে না। আমি বাসে উঠে পড়েছি। পৌঁছে তোমাকে কল করব।”
ইনায়ার কান থেকে রুমা নেওয়াজ ফোন কেড়ে নিয়ে রেগে বলে,
“তুমি একা কেন বের হয়েছ? রাস্তাঘাট ভালো না, জানো না? আমাদের কাউকে বলার প্রয়োজন মনে করলে না, একা একা বেরিয়ে গিয়েছ।”
মাইরা চুপচাপ শুনলো। রুমা নেওয়াজ আরও অনেক কথা শোনালো ধমকে। এরপর ইনায়ার হাতে দিয়ে বলে, ‘পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত, একটু পর পর কল করে শুনবি ও কোথায়।’

তিনি ভীষণ বিরক্ত তার ছেলে আর এই অবুঝ মেয়ে মাইরাকে নিয়ে। এদের দু’জনের চিন্তায় সে কবে না জানি স্ট্রোক করে। ছেলের সংসার দেখার সাধ তার আগেই মিটে গিয়েছে। মাঝখান থেকে এই মেয়েটার যে কি হবে। কে জানে, ইরফান আবার মেরেছে কি-না! মেয়েটাও কাউকে কিছু না বলে চলে গিয়েছে।

মাইরা ফোন কেটে চুপচাপ বসে রইল। ইরফানের কথা মনে পড়লো। লোকটা আসলেই আস্ত খা’রা’প।
ভাবনার মাঝেই তার পাশের সিটে কাউকে বসতে দেখে পাশ ফিরে তাকালে চিৎকার দিয়ে ওঠে। ছেলেটা থতমত খেয়ে দ্রুত দাঁড়িয়ে পড়ে। আশেপাশের অনেকে তাকিয়েছে। বাসের হেল্পার এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করে, ‘কি হয়েছে?’
মাইরা আমতা আমতা করে বলে,
“আমার পাশে মেয়ে দিন।”
হেল্পার ভ্রু কুঁচকে বলে,
“এইডা কি কথা কন আপা? যাত্রী টিকিট কাটছে। কিছু করার নাই। সব সিট বুক।”
মাইরা অসহায় চোখে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটার পানে তাকালো। সাদা শার্ট পরিহিত ২৬-২৭ বছরের এক শ্যামা সুদর্শন পুরুষ মাইরার দিকে অবাক চোখে চেয়ে আছে।
মাইরা ঢোক গিলে বসা থেকে দাড়িয়ে যায়। ছেলেটার দিকে তাকিয়ে বলে,

“ভাইয়া আপনি একটা ছেলের পাশে বসুন না!”
ছেলেটা মাইরার দিকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকালো। কি যেন ভেবে ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটলো। মাইরা ছেলেটাকে নিজের দিকে চেয়ে হাসতে দেখে বিব্রতবোধ করে।
তাদের পাশের সিটেই একজন বৃদ্ধ মহিলা, তার পাশে বয়স্ক লোক। ছেলেটি এগিয়ে গিয়ে বয়স্ক লোককে বললে সে সিট এক্সচেঞ্জ করতে রাজি হয়। মাইরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। ছেলেটার উদ্দেশ্যে বলে,
“থ্যাংক ইউ ভাইয়া।”
ছেলেটা সৌজন্য হেসে বলে, “ওয়েলকাম।”
এরপর পাশের সিটে বসে পড়ে। আর মাইরার পাশে বৃদ্ধ মহিলা।
বাসস্ট্যান্ডে নেমে মাইরা এদিক-ওদিক তাকায়। পাশ থেকে মাইরার পাশের সিটের ছেলেটা বলে,
“নাম কি তোমার?”
মাইরা ভ্রু কুঁচকে ছেলেটার দিকে তাকায়। ভাবলো ছেলেটা ভালোই। নয়তো তার পাশে মেয়ের বসার ব্যবস্থা করতো না। কিন্তুু অপরিচিত ছেলের সাথে ভাব জমাতে ভালো লাগলো না তার। তাই মুখ গোমড়া করে রেখেই বলল,
“নেই।”

ছেলেটা মৃদু হেসে বলে,
“ইন্টারেস্টিং নেইম। ফার্স্ট টাইম শুনলাম কারো নাম ‘নেই’।
মাইরা বিরক্ত হলো। কোনো কথা না বলে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। ছেলেটা ভ্রু কুঁচকে দেখল মাইরাকে। সেও এগিয়ে যেতে যেতে পিছন থেকে বলে,
“হেই বার্বি ডল!”
এমন সম্মোধনে মাইরা রেগে যায়। নিশ্চয়ই ছেলেটা ততটা ভালো না, যতটা সে ভেবেছে। একা মেয়ে পেয়ে ডিস্টার্ব করছে। মাইরা পিছু ফিরে ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলে,
“পিছু আসলে একদম গণপিটুনি খাওয়াবো বলে দিলাম।”
কথাটা বলে দ্রুত এগিয়ে গিয়ে একটা ভ্যানে উঠে পড়ে। ছেলেটা মৃদু হেসে বিড়বিড় করে,

“কথা শুনে মনে হয়, অনেক বড় হয়ে গিয়েছ বার্বি ডল। ইন্টারেস্টিং!”
এরপর মাইরার দিকে চেয়ে ছেলেটি গলা উচিয়ে হেসে বলে,
“তোমার নাম মাইরা, ঠিক বললাম তো বার্বি ডল?”
মাইরা চলন্ত ভ্যানে বসে ছেলেটার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকায়। তার নাম জানলো কি করে? সে তো চেনেনা এই লোককে। কেন যেন ভয় লাগলো। দ্রুত বাড়ি ফিরলেই শান্তি।

শুদ্ধ ইরফানের অফিসে যাওয়ার আগেই রাস্তার মাঝে ইনায়ার ফোন পায়। জানতে পারে মাইরা গ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছে। শুদ্ধর একটু খারাপ-ই লাগলো। গতকালের জন্য হয়তো মেয়েটা এমন করেছে। মেয়েটাকে দোষ দিয়েই বা কি লাভ। ইরফানকে কল করল বেশ কয়েকবার,, প্রথম কয়েকবার কেটে দিল, এরপর আর রিসিভ করল না। কিছু একটা ভেবে ইরফানের নাম্বারে একটা ম্যাসেজ করে মিটিমিটি হাসে।
ইরফান মিটিং রুমে ছিল। ফোনে টুং করে একটা ম্যাসেজ আসে, আলো জ্বলে ওঠে। ইরফান একবার তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিতে গিয়েও ফোন হাতে তুলে নেয় প্রথমে মাইরা শব্দ দেখে। কথা বলার মাঝে চুপ হয়ে যাওয়ায় সবাই ইরফানের দিকে তাকিয়ে আছে। ইরফান ম্যাসেজ ওপেন করে,
“মাইরা একাই গ্রামের উদ্দেশ্যে বের হয়েছে। আমার মনে হয়, মাইরা তোকে ছেড়ে চলে গেল ভাই, আমিও উকিলের সাথে কথা বলতে যাচ্ছি ডিভোর্সের জন্য। বলছি সিনিয়র কোনো মেয়ে দেখব তোর জন্য? রিপ্লেটা দিয়ে দে। উকিল এর সিনিয়র মেয়ে থাকলে এক মিটিংয়েই সব সলভ্ হয়ে যাবে।”
ইরফান ম্যাসেজ টা পড়ে বসা থেকে দাঁড়িয়ে যায়। রাগে ফেটে পড়ছে। হাতের মুঠোয় ফোন শক্তহাতে চেপে ধরে ক্রোধ দমানোর চেষ্টা করে। চোখ বুজে লম্বা শ্বাস ফেলে।
কাউকে কিছু না বলেই হনহন করে মিটিংয়ের মাঝখান থেকে বেরিয়ে যায়। সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখে ইরফানের প্রস্থান। কেউ কিছুই বুঝলো না।
অফিসের পিএ সজীব পিছন থেকে বলে,

“স্যার উনারা তো চলে যাবে। উনাদের কি বলব?”
ইরফান চিৎকার করে বলে,
“সবগুলোকে জাহান্নামে যেতে বলো।”
কথাটা বলে বড় বড় পা ফেলে অফিস থেকে বেরিয়ে যায়।
সজীব ছেলেটা বোকাচোখে তাকিয়ে থাকে। এদের গতকাল সারাদিন ঘুরিয়েছে। আজ সকাল সকাল মিটিং ডেকে তবুও মাঝখান থেকে চলে গেল।ছেলেটার মাথা কাজ করেনা। তাদের এতো পাঙ্কচুয়াল স্যারের হঠাৎ কি হলো?
ইরফান গাড়ি নিয়ে রওয়ানা হয় গ্রামের উদ্দেশ্যে।

প্রণয়ের অমল কাব্য পর্ব ২৪

চোখমুখে ক্রোধ, সাথে খানিক দুশ্চিন্তার ছাপ। একা একা বেরিয়েছে ভেবেই গাড়ি চালানোর মাঝেই ডান হাতে স্টিয়ারিং-এ একটা থা’প্প’ড় মারে।
স্টিয়ারিং ঘোরাতে ঘোরাতে বিড়বিড় করে,
“স্টুপিট গার্ল, তোমার হাত পা ভেঙে তবেই আমি দম নিব। যাস্ট ওয়েট!”

প্রণয়ের অমল কাব্য পর্ব ২৬