প্রণয়ের অমল কাব্য পর্ব ৫
Drm Shohag
মাইরা ঘরে গিয়ে শরীর থেকে থেকে বোরখা ছেড়ে হিজাব খুলল। এরপর ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমে গিয়ে ওজু করে। মুখে পানি দেয়ার সময় মনে হলো কাটা ঘায়ের উপর নুন ছিটিয়ে দিয়েছে কেউ। দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করে নিল। পানির সাথে সাথে কয়েক ফোঁটা চোখের নোনতা পানি মিশে যায়। মায়ের কথা ভীষণ মনে পড়লো। তার মা তাকে কখনো মারে নি। সৎ বাবার জন্য অনেক ভালো না বাসতে পারলেও আঘাত করতো না। তার মেয়েকে আজ বর শ্বাশুড়ি দু’জন মে’রে’ছে জানলে মা কি খুব ক’ষ্ট পাবে? কথাটা ভেবে শব্দ করে হেসে ফেলল। তার মা নতুন সংসার নিয়ে বিজি। তাকে নিয়ে ভাববে কেন অযথা? নিজের মাথায় নিজেই একটা চাটি মেরে আবারও মুখে পানি দিয়ে হাত দিলে ব্য’থা পেয়ে, উহ্ শব্দ করে ওঠে। চোখমুখ কুঁচকে নিজেকে সামলে ওজু শেষ করে বেরিয়ে আসে। এরপর নামাজ পড়ে নেয়।
নামাজ শেষে মাইরা তার ছোট্ট ব্যাগ থেকে বিভিন্ন ধরনের বেশ অনেকগুলো চকলেট নিয়ে বসল বিছানার উপর। তার শ্বশুরের থেকে কিনে নিয়েছে এগুলো। একটা চকলেট ছিঁড়ে খেতে লাগলো, তখনই কেউ ঘরে আসে। মাইরা দরজার দিকে তাকিয়ে ইনায়াকে দেখে হেসে বিছানা থেকে নেমে বলে,
“আপু তুমি। এসো এসো।”
ইনায়া মাইরার দিকে তাকিয়ে আছে। মেয়েটার ডান গাল অসম্ভব লাল হয়ে আছে। তার নিজেরই ভীষণ খারাপ লাগছে। আর এই মেয়েটা কীভাবে হাসছে। ইনায়া ভেতরে গিয়ে বলে,
“ভাবি, তোমার গাল কি বেশি ব্য’থা করছে?”
মাইরা চকলেটে আরেকটা বা’ই’ট দিয়ে ইনায়ার হাত ধরে বিছানায় বসে বলে,
“আরে আপু, এতো ভাবছ কেন? এটা সেরে যাবে। চাপ নিও না। কিন্তুু তুমি আমাকে ভাবি ভাবি ডাকছ কেন? আমি তো তোমার চেয়ে ছোট।”
ইনায়া মৃদু হেসে বলে,
“তুমি তো সম্পর্কে আমার ভাবি। ছোট হলেও কি!”
মাইরা তার চকলেট থেকে অর্ধেক এর বেশি চকলেট ইনায়ার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে,
“আপু খাওয়া স্টার্ট কর। খেতে খেতে বলছি। নয়তো আমি চোখের পলকে সব খেয়ে ফেলব। তখন তুমি পাবে না।”
ইনায়া হাসল। মাইরা মেয়েটাকে তার ভীষণরকম পছন্দ হলো। মাইরা আবারও চকলেটে আরেকটা বা’ই’ট দিয়ে বলে,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“তোমার ভাই তো আমায় বউ মানেই না। সেই সম্পর্ক ধরে তুমি ভাবি ডাকছ? এসব আমার পছন্দ হচ্ছে না। তুমি আমার সুইট, কিউট বড় বোন হয়ে যাও তো। ওসব ভাবি-টাবি কাটাকুটি।”
ইনায়া মাইরার প্রথম কথা শুনে মুখখানা মলিন করলেও লাস্ট কথা শুনে হেসে ফেলল। মাইরার দিকে একটু এগিয়ে গিয়ে বলে,
“ওকে ওকে তোমাকে আমি মাইরা বলেই ডাকব।”
মাইরা হাসল। ইনায়া মাইরার গালে মলম দিতে আঙুল ছোঁয়ালে মাইরা চোখমুখ কুঁচকে বলে,
“আহ! আপু, এমনিই ঠিক হয়ে যেত। ইশ! অনেক জ্বলছে।”
ইনায়া মাইরার গালে ফু দিল বেশ কিছুক্ষণ। এরপর সরে বসে বলল,
“রাতের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে।”
মাইরার চোখে জল, মুখে হাসি। ইনায়া অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। মাইরা মেয়েটা কীসের তৈরী!
মাইরা চকলেট খেতে খেতে বলে,
“আপু তুমি মাগরিবের নামাজ পড়েছ?”
ইনায়া মাথা নাড়িয়ে বলে,
“না। কাজা হয়ে গিয়েছে। একেবারে এশারের সাথে পড়ে নিব।”
মাইরা মাথা নাড়িয়ে বলল,
“আরে না না। বসে থাকবা কেন? যাও আগে নামাজ পড়ে এসো আপু।
একটু ভেবে বলল,
“তোমার চকলেট খাবো না পাক্কা। যাও যাও নামাজ পড়ে এসো। ইচ্ছা করে লেট করা ঠিক না।”
মাইরার কথায় ইনায়া হাসল। মেয়েটা খুবই চটপটে। ইনায়া মাইরার গালে হাত দিয়ে বলল,
“তুমি খুবই ভালো মাইরা।”
মাইরা হেসে বলল,
“এটা তো আমি জানি ই। আমি নিজেই সবাইকে বলে বেড়াই। এ বাড়ির মানুষ দেখি শুধু আমাকে ভালোই বলছে। যদিও স্বামী শ্বাশুড়ি মিলে মুখের মানচিত্র পাল্টে দিয়েছে। বাট আমি কিছু মনে করিনি আপু।”
কথাগুলো বলে একটু থামল। হঠাৎ-ই মুখটা মলিন হয়ে যায়। মৃদুস্বরে বলল,
“এখানে এসে তো আমি একটা বাবা পেয়েছি। তোমার বাবা খুবই ভালো আপু।”
ইনায়া অবাক হয় মাইরার ভয়েস টোনে। জিজ্ঞেস করে,
“তোমার বাবা..”
মাইরা চোখ তুলে তাকায় ইনায়ার দিকে। অতঃপর হেসে বলে,
“নেই।”
কথাটা বলার সাথে সাথে ডান চোখ থেকে টুপ করে এক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়ে। মাইরা সাথে সাথে শব্দ করে হেসে দেয়। হাতের চকলেট রেখে দু’হাতে চোখ মুছে বলে,
“আপু তুমি নামাজ পড়ে নাও যাও।”
ইনায়া বিস্ময় ভরা চাহনিতে তাকিয়ে আছে মাইরার দিকে। মাইরা ঠেলে ইনায়াকে ওয়াশরুমে পাঠায়। ইনায়া কথা বলার ভাষা হারিয়েছে। সে মাইরার মতো মানুষ সত্যিই দেখেনি। মেয়েটা ক’ষ্ট পাচ্ছে, চোখ দিয়ে পানিও ঝরছে, আবার হাসছে।
ইনায়া ওয়াশরুমে গেলে মাইরা হাঁটু ভাঁজ করে বসে। কেন যেন ভীষণ খা’রা’প লাগছে। অনেকের বাবা-ই থাকে না, তাদের হয়তো এতো ক’ষ্ট হয় না। কিন্তুু তার ভীষণ ক’ষ্ট হয়। কারণ সে বাবাকে হারিয়ে নামের নতুন বাবা পেয়েছিল। ভেবেছিল সে নতুন বাবা তাকে আসল বাবার মতো আদর করবে। কিন্তুু নতুন বাবা তো তার মাকেই তার থেকে কেড়ে নিল। মা আর তার মাঝে দূরত্ব তৈরী করে দিল। মাইরার চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ে। তার কাপড়ের ব্যাগ থেকে একটা ছোট্ট ডাইরি আর একটা কলম বের করে বিছানার উপর বসে। ডায়রি মেলে কলমের সাহায্যে একটা লাইন লিখে,
“আই মিস ইউ বাবা, মিস ইউ মা।”
ডায়রি বন্ধ করে যথাস্থানে রেখে আবারও চকলেট খাওয়ায় মন দিল। এর মাঝে ইনায়া নামাজ পড়ে মাইরার পাশে এসে বসে। মাইরা হেসে বলে,
“আপু তোমার চকলেট ভালো লাগে?”
ইনায়া হেসে বলল,
“তোমার চেয়ে কম। তবে ফুসকা সবচেয়ে বেশি মজা লাগে।”
মাইরা লাফ দিয়ে উঠল। ইনায়া বুকে থুতু দেয়। মাইরা হেসে চকলেটগুলো রেখে বোরখা পরতে পরতে বলল,
“চলো চলো ফুসকা খেয়ে আসি। তুমি মনে করিয়ে দিলে, এখন ফুসকা না খেয়ে থাকলে আমার রাতে আর ঘুম আসবে না।”
ইনায়া চোখ বড় বড় করে তাকায়। তার ভাই জানলে আস্ত রাখবে না, যদি শোনে এই রাতে বাইরে গিয়েছে। ইনায়া দু’দিকে মাথা বলল,
“না না মাইরা, রাতে বাইরে যাওয়া ভাইয়া একদম পছন্দ করে না। আমি যাব না।”
মাইরা হিজাব গলার সাথে ঝুলিয়ে ইনায়ার সামনে দাঁড়িয়ে বলল,
“আহা আপু, তুমি এতো ভয় পাও কেন? ভয়কে জয় করতে শেখ। আচ্ছা শোনো তোমাকে আমি তোমার ওই জম ভাইয়ের থেকে প্রটেক্ট করব, এইবার চলো।”
ইনায়া হা করে তাকিয়ে বলল,
“তুমি তো একটু আগেই থাপ্পড় খেলে ভাইয়ার হাতে। আবার…”
মাইরা হেসে বাম গাল এগিয়ে দিয়ে বলল,
“এই দেখ, আমার এই গাল একদম ভালো আছে। আবার মারলে নাহয় এই গালটা পেতে দিব। তোমাকে মারতে পারবে না। তাছাড়া ফুসকার জন্য একটা থাপ্পড় খাওয়াই যায়, আপু চলো না যাই, প্লিজ!”
ইনায়া মাইরার দিকে তাকালো। তার মনে প্রশ্ন উঁকি দেয়, আচ্ছা এই মেয়ের কি মন খারাপ হয় না? তার মা আর ভাই এর হাতে মার খেয়ে, ভাইয়ের ওমন শক্ত কথা শুনেও দিব্যি ভালো আছে। ইনায়া না করল না। কেন যেন তার নিজেরই খারাপ লাগছে মাইরার জন্য। মাইরার এই হাসিটুকু কাড়তে চাইলো না। তাই রাজি হলো। মাইরা হিজাব বেঁধে বাইরে যেতে যেতে বলল,
“তুমি রেডি হয়ে এসো। আমি বাবা কে ডেকে আনি কেমন?”
ইনায়া দ্রুত মাইরার হাত ধরে আটকে দেয়।
“মাইরা বাবা কে বলো না। বাবা যেতে দিবে না। আসলে রাতের বেলা মেয়েদের বাইরে যাওয়া, এটা কেউ পছন্দ করে না।”
মাইরা মন খারাপ করে বলল,
“ওহ। কিন্তুু আমি তো বের হতাম। তাহলে চলো আমি আর তুমি যাই। আচ্ছা তোমার সেই খালাতো বোনকে সাথে নিই চলো। তিন বান্ধবী গেলে অনেক ভালো হবে।”
ইনায়া হেসে বলল,
“আচ্ছা আমি লুকিয়ে রেডি হয়ে আসছি। তুমি দুই মিনিট দাঁড়াও।”
~
মাইরা আর ইনায়া বাসা থেকে বের হয়েছে। ইনায়া তার খালাতো বোন জাহারাকে বলেছিল। কিন্তুু জাহারা যখন শুনেছে মাইরা যাবে, তখন আর কিছুতেই রাজি হয়নি। ইনায়া বুঝতে পারছে না জাহারার এমন করার কারণ।
মাইরা, ইনায়া ফুটপাতের একটা দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ইনায়া রেস্টুরেন্টে যেতে চেয়েছিল, কিন্তুু মাইরা বলেছে এখানে খেতে বেশি মজা লাগে। ইনায়ার রাস্তার পাশে এভাবে কখনো খাওয়া হয়নি। তার বাবা নয়তো ভাই সবসময় রেস্টুরেন্টে নিয়ে গিয়েছে। মাইরা ফুসকাওয়ালাকে চার প্লেট ফুসকা দিতে বলে আশেপাশে তাকালো। তার থেকে কিছুটা দূরে চেনা কাউকে দেখল যেন। দু’হাতে চোখ ডলে আবারও সামনে তাকালো। নাহ, ভুল মনে হচ্ছে না তো। সে কী লোকটার থা’প্প’ড় খেয়ে ক্রাশ খেয়ে এখন সবাইকেই নিজের স্বামী রূপে দেখছে না-কি। শুধু একজন নয়, পাশে আরেকজনকে পরিচিত ঠেকল। মাইরা ইনায়াকে ডেকে বলল,
“আপু সামনে ওরা কারা?”
ইনায়া আশেপাশে তাকিয়ে দেখছিল এটা ওটা। মাইরার কথায় সামনে তাকালে তার চোখ বড়বড় হয়ে যায়। বিড়বিড় করে,
“ভ.ভাইয়া।”
মাইরা বুঝতে পারল তার চোখের ভুল নয়। সে ক্রাশ ফ্রাশ খায়নি। যদি তাকে থা’প্প’ড় না মারতো, আর চুলগুলো সাইজ করতো, আর তাকে সারাদিন বউ বউ বলে ডাকতো, তখন নাহয় ক্রাশ খাওয়া যেত। কিন্তুু এমন ছেলের উপর সে ক্রাশ খাবে কেন? ছ্যাহ তার রুচি বহুত ভালো। ভাবনার মাঝেই কারো শক্ত কণ্ঠে মাইরার ধ্যান ভাঙে।
“এখানে কি করছিস?”
ইনায়া আমতা আমতা করছে। কি বলবে বুঝতে পারছে না। শুদ্ধ ভ্রু কুঁচকে মাইরার দিকে একবার তাকায়, আরেকবার ইনায়ার দিকে। ইনায়াকে বলে,
“এই মেয়ে তোর কে হয়?”
ইনায়া কাঁপা কণ্ঠে উত্তর দেয়,
“ভাবি।”
শুদ্ধ অবাক হয়। এই মেয়েটা ইনায়ার ভাবি? মানে ইরফানের বউ? অদ্ভুদভাবে বলে ওঠে,
“হোয়াট?”
ইরফান ইনায়ার হাত ধরে টেনে গাড়ির দিকে নিয়ে যেতে থাকে। মাইরা হতভম্ব হয়ে পিছন পিছন যেতে যেতে বলে,
“আরে আপুকে ছাড়ুন। আমাদের ফুসকা খাওয়া হয়নি তো।”
ইরফান ইনায়ার দিকে তাকিয়ে বলে,
“গাড়িতে ওঠ।”
ইনায়া ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে ভীত কণ্ঠে বলে,
“ভভাইয়া স্যরি। মাইরাকে কিছু বলো না।”
ইরফান ধমকে বলে,
“গাড়িতে উঠতে বলেছি।”
ইনায়া একবার তাকায় মাইরার দিকে। ইরফান আবারও ধমকে বলে,
“থা’প্প’ড় খেতে না চাইলে এক্ষুনি গাড়িতে ওঠ।”
পাশ থেকে শুদ্ধ বলে,
“আহ, ইরফান। বাদ দে। দু’টোই বাচ্চা। বকিস না।”
মাইরা শুদ্ধর দিকে তাকিয়ে বলল,
“আপনার মতো এতো ভালো মানুষের কপালে এমন অ’সভ্য বন্ধু জুটলো কীভাবে ভাইয়া? সামান্য ফুসকাই তে খেতে এসেছি। দেখেছেন কেমন করছে?”
মাইরার কথায় শুদ্ধ চোখ বড় বড় করে তাকায়। বিড়বিড় করে,
‘যা হয়ে গেল! ইঞ্জিন গরম হওয়ার তেল দেওয়া শেষ।’
ইরফান দাঁতে দাঁত চেপে মাইরার দিকে চেয়ে আছে। মাইরা ইরফানের দৃষ্টিতে ভয় পায়। ঢোক গিলে আমতা আমতা করে বলল,
“দেখুন, আমি আপনাকে ভয় পাই না। এভাবে তাকাবেন না।”
বিড়বিড় করে,
ইশ! ভয় পাচ্ছি কেন?’
কথাটা পাশ থেকে শুদ্ধ শুনে ফেলেছে। মুখ লুকিয়ে একটু হাসলো। এই মেয়েকে তো রেস্টুরেন্টে দেখে আসল খানিক আগে। কারেন্ট এর মতো দৌড় এর। ইরফান এগিয়ে এসে মাইরার হাত শক্ত করে চেপে ধরে। মাইরা হাতে ব্য’থা পায়। ইরফানের হাত অপর হাতে ধরে বলে,
“ইশ! আমার হাত খুলে গেল। হাত ছাড়ুন আমার।”
ইরফান টেনে মাইরাকে ফুসকার দোকানে সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। হাত ছাড়ে না। মাইরা অপর হাতে এতো চেষ্টা করল হাত ছাড়ানোর, ব্যর্থ। এদিকে ইনায়া গাড়ির ভেতর থেকে বেরতে নিলে শুদ্ধ ধমকে বলে,
“রাতে বাইরে বেরিয়েছিস কেন?”
ইনায়া ফুফাতো ভাইয়ের ধমকে মিনমিন করে বলে,
“ফুসকা খেতে।”
শুদ্ধ রেগে বলে,
“তুই কি পা’গ’ল? রাতের বেলা একা একা দু’টো মেয়ে বেরিয়েছিস। ওই মেয়ে তো বাচ্চা। তোর মাথায় কি গোবর ছাড়া কিছুই নেই?”
ইনায়া রেগে তাকালো শুদ্ধর দিকে। শুদ্ধ পাল্টা চোখ গরম করে তাকিয়ে বলে,
“আমাকে চোখ রাঙাচ্ছিস? তোর ভাই যে থা’প্প’ড় তার বোনকে দিতে পারেনি, সেটা আমি পূর্ণ করব এবার। বেয়া’দব। সেন্স নেই? যদি কিছু হতো?”
ইনায়া চুপসে গেল। মুখ ফুলিয়ে বিড়বিড় করে বলল,
“হলে হতো। ঢং করতে আসে। অসহ্য একটা। মনে হয় ফিডার খাই আমরা।”
শুদ্ধ কথাটা শুনতে পেয়ে খানিকটা ঝুঁকে গাড়ির জানালায় ডান হাত ঠেকিয়ে গম্ভীর গলায় বলে,
“বেশি মিস করলে ফিডার কিনে দিই চল।”
ইনায়া কটমট চোখে তাকালো শুদ্ধর দিকে। শুদ্ধ গম্ভীর চোখে ইনায়ার দিকে তাকিয়ে আছে। হাত বাড়িয়ে ইনায়ার কপালে একটা টোকা দিয়ে বলল,
“চোখ নামা। আর একবার এভাবে তাকালে ডিরেক্ট গালে থা’প্প’ড় পড়বে।”
ইনায়া মুখ ফুলিয়ে চোখ নামিয়ে নিয়ে চুপ করে রইল। শুদ্ধ দীর্ঘশ্বাস ফেলে উল্টো ঘুরে দাঁড়ায়। ইরফানদের দিকে এগিয়ে যায়।
ইরফান মাইরার হাত শক্ত হাতে চেপে দোকানদারের উদ্দেশ্যে গম্ভীর গলায় বলে,
“যতগুলো ফুসকা আছে, সবগুলো পর পর প্লেট করে সাজিয়ে দিন।”
মাইরা চোখ বড় বড় করে তাকায়। দোকানদার নিজেও হা করে চেয়ে আছে ইরফানের দিকে। মাইরা আবারও তার হাত ছাড়াতে চায়, মোচড়ামুচড়ি করতে করতে বলে,
“এতোগুলো ফুসকা কি করবেন? উফ! আমার হাত ছাড়ুন।”
ইরফান হাতের বাঁধন আরও খানিকটা শক্ত করে বলে,
“সব ফুসকা না খেয়ে এক পা নড়বে না, স্টুপিট। ফুসকা খাওয়ার সাধ মেটাবো আজ।”
মাইরা চোখ বড় বড় তাকায়। এতোগুলো ফুসকা কি করে খাবে? আসলেই পা’গ’ল এই লোক। পা’গ’ল বলতে গিয়েও জিভ গুটিয়ে নিল। এটা বলবে না থাক। এমনিতেই গালের ব্য’থা এখনো ঠিক হয়নি। অতঃপর বলে,
“দেখুন, আপনি আমায় গরু ভাবতেই পারেন, হয়তো আপনার চোখের প্রবলেম। তাই আমার পরামর্শ হচ্ছে আপনি একটা ডক্টর দেখিয়ে চশমা কিনে নিন। এরপর বুঝবেন আমি একটা কিউট বাচ্চা, একদম গরু নয় যে এতোগুলো ফুসকা একবারে খাবো।”
ইরফান শক্ত চোখে মাইরার দিকে চেয়ে আছে। পিছন থেকে শুদ্ধ শব্দ করে হেসে ফেলল। মাইরা ঘাড় বাঁকিয়ে নিজেও হাসল। এই লোকটার গায়ে আগুন লাগাতে ভালোই লাগে। শুধু না মারলেই হয়। ইরফান দোকান ওয়ালার দিকে তাকিয়ে বলল,
“প্লেট সাজানো স্টার্ট করুন।”
শুদ্ধ এগিয়ে এসে বলে,
“আরে তুই কি বাচ্চা না-কি? বাদ দে।
এরপর দোকানির উদ্দেশ্যে বলল,
“মামা দু’প্লেট ফুসকা দিন আপনি।”
মাইরা বলে ওঠে,
“আমি তো চার প্লেট দিতে বলেছি।”
শুদ্ধ হেসে বলল,
“ওকে তাহলে চারটে দিন। ফুসকা লাভার মেয়ে বলে কথা।”
মাইরা খুশি হলো, ভালোভাবে ফুসকা খেতে পারবে এই ভেবে। তার স্বামী নামক অ-স্বামীর বন্ধুটা কত ভালো। আর এই লোকটা একটা জাঁদরেল।
বিরক্ত হয়ে ইরফানের দিকে তাকালে ইরফানের দৃষ্টি দেখে চুপসে যায়। সে কী এমন করেছে?
তার ডান হাত টা এতো শক্ত করে ধরে রেখেছে, হয়তো র’ক্ত সঞ্চালন হচ্ছে না ঠিকঠাক। মাইরা ইনোসেন্ট ফেস বানিয়ে বলল,
“হাত টা ছাড়ুন প্লিজ, ছিঁড়ে গেল হাতটা আমার, উফ!”
শুদ্ধ পাশে দাঁড়িয়ে বলে,
“ইরফান ছাড়। মেয়েটা ব্য’থা পাচ্ছে।”
ইরফান শুদ্ধর দিকে তাকালে শুদ্ধ মেকি হেসে বলল,
“মানে তোর বউ, আমার ভাবি ব্য’থা পাচ্ছে।”
ইরফান মাইরার হাত ঝটকা মেরে ছেড়ে শুদ্ধর কলার ধরে বলে,
“ওকে বউ মানি না, আন্ডারস্ট্যান্ড?”
মাইরা ছাড়া পেয়ে তার হাত ডলতে ডলতে বলে,
“আপনাকেও আমি স্বামী মানিনা। অ’সভ্য লোক।”
ইরফান দাঁতে দাঁত চেপে মাইরার দিকে তাকায়। শুদ্ধও মাইরার দিকে তাকায়। এই মেয়ে কি ইরফানকে রাগিয়ে দেয়ার প্রতিজ্ঞা করেছে না-কি? ফুচকাওয়ালা ডাকলে শুদ্ধ এগিয়ে গিয়ে দু’টো প্লেট নিয়ে মাইরাকে দিল। মাইরা দু’হাতে দু’টো প্লেট নিয়ে একটা চেয়ারে গিয়ে বসল। এক প্লেট কোলের উপর রেখে আরেকটা প্লেট বাম হাতের তালুতে নিয়ে খাওয়ায় মন দিল।
শুদ্ধ বাকি দু’টো প্লেট নিয়ে রাস্তার ওপারে ইরফানের গাড়ির কাছে গিয়ে জানালা দিয়ে ফুসকার প্লেট ইনায়ার সামনে ধরে। ফুসকার প্লেট দেখে ইনায়ার মুখে হাসি ফুটে ওঠে। শুদ্ধর দিকে তাকিয়ে বলল,
“থ্যাঙ্কিউ শুদ্ধ ভাই।”
শুদ্ধ ভ্রু কুঁচকে বলে,
“দ্রুত ফিনিশ কর।”
ইনায়া শুদ্ধর হাত থেকে প্লেট নিয়ে খাওয়া শুরু করে। তার ভাইয়ের থেকে শুদ্ধ ভাইটা ভালোই আছে। একটা ফুচকা মুখে পুড়ে বলে,
“তুমি খাবে?”
শুদ্ধ ভ্রু কুঁচকে ফটাফট তিনটে ফুসকা মুখে পুড়ে নিল। ইনায়া হা করে চেয়ে আছে। সে জিজ্ঞেস করল, আর এই লোক তার তিনটে ফুসকা খেয়ে নিল? ইনায়া প্লেট সরিয়ে বলল,
“তোমাকে আমি দিয়েছি? জিজ্ঞেস করলাম ওমনি খেয়ে নিলে? খেলে তো খেলে কতগুলো খেলে?”
শুদ্ধ ঝাল খেতে পারে না। মারাত্মক ঝাল এই ফুসকায়। মুখের ফুসকা খেতে তো পারলোই না। পাশে গিয়ে মুখ থেকে সব ফেলে দ্রুত ইনায়ার পাশে এসে বলে,
“পানি দে, পানি। ওরে আল্লাহ, মেয়েরা এসব কি খায়।”
ইনায়া শুদ্ধর দিকে চেয়ে আছে। শুদ্ধর চোখ দু’টো লাল হয়ে গিয়েছে। মনে মনে ভেংচি কেটে বিড়বিড় করে,
“ঠিক হয়েছে।”
শুদ্ধ ইনায়াকে ধমকে বলে,
“এই বেয়া’দব পানি দে।”
ইনায়া সিট এর পকেট থেকে পানির বোতল বের করে দিলে শুদ্ধ গলগল করে প্রায় অর্ধেক বোতলের পানি খেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে।
এদিক-ওদিক মাথা নাড়ায়। ইনায়া আড়ালে হেসে নিজে খাওয়ায় মন দেয়।
মাইরা খুব মনোযোগ দিয়ে ফুসকা খাওয়ায় ব্যস্ত। রাস্তার হলদে আলোর কিছুটা মাইরার মুখে এসে পড়েছে। মেয়েটা কী দারুণ খুশির আমেজে ফুসকা মুখে পুড়ছে, যেন অমৃত খাচ্ছে। মুখের এক্সপ্রেশনে এমনই মনে হচ্ছে।
ইরফান গম্ভীর মুখাবয়বে মাইরার দিকে চেয়ে আছে। সে বুঝল না, এই রাস্তার ফুসকা পেয়ে কেউ কি করে এতো খুশি হতে পারে? স্ট্রেঞ্জ!
মাইরার ডান গালে চোখ পড়লে দেখল পুরো গাল অনেক ফুলে আছে। বেশ লাল হয়ে আছে গালের চারপাশটা জুড়ে। সে আর তার মা দু’জনেই মেরেছে মনে পড়ল। ফোঁস করে শ্বাস ফেলে চোখ বুজল।
শুদ্ধ মাইরার সামনে দাঁড়িয়ে বলল,
“তোমার নাম কি?”
মাইরা খেতে খেতে মৃদু হেসে বলল,
“জ্বি, মাইরা ইসলাম।”
শুদ্ধর নজর মাইরার ডান গালে পড়লে অবাক হয়। হঠাৎ-ই প্রশ্ন করে,
“তোমার গালে কি হয়েছে?”
মাইরার এক প্লেট ফুসকা খাওয়া শেষ। অপর প্লেট এর লাস্ট ফুসকা মুখে পুড়ে চিবিয়ে চিবিয়ে পুরোটা শেষ করল। ঝালে চোখে পানি জমেছে। ঝাল পাত্তা না দিয়ে গলা নামিয়ে বলল,
“আপনার বন্ধু আমায় সাদাসিধে পেয়ে মেরেছে, বুঝলেন?”
ইরফান ভ্রু কুঁচকে মাইরার দিকে চেয়ে আছে। মাইরা ইরফানের দিকে তাকিয়ে বলল,
“আর কখনো যদি মেরেছেন না, আপনার নামে মামলা দিব বুঝলেন? বউ পেটানো ভালো কাজ নয়, জানেন না?”
ইরফান রেগে এগিয়ে আসতে নিলে মাইরা প্লেট দু’টো রেখে রাস্তার এপার থেকে ওপারে যাওয়ার জন্য দৌড় দেয়, আরেকবার যদি থা’প্প’ড় দেয়, নয়তো হাত টেনে ধরে, সব পঁচে যাবে সেই ভয়েই দৌড় দিচ্ছে। রাস্তার ওপারে গাড়িতে গিয়ে ইনায়ার পাশে বসবে।
রাস্তা দিয়ে মাঝে মাঝেই বড় বড় গাড়ি চলাচল করছে, মেয়েটা না দেখেই এভাবে দৌড় দিয়েছে। একটা বড় ট্রাক মাইরার দিকে ধেয়ে আসছে। শুদ্ধ চোখ বড় বড় করে তাকায়।
ইরফান ‘ওহ সীট’ বলে একটা দৌড় দেয়, ট্রাক টা মাইরার সাথে লাগবে লাগবে ভাব, মাইরা নিজেও চোখ বড় বড় করে তাকায়। তার আগেই ইরফান মাইরার হাত ধরে জোরে এক টান দেয়।
মেয়েটা তাল সামলাতে না পেরে ইরফানের বুকে এসে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। ট্রাকটি একদম তাদের পাশ ঘেঁষে চলে যায়।
মাইরা ভয়ে কাঁপছে। একটুর জন্য সে বেঁচে গিয়েছে। জীবনে কখনো এতো ভয়া’বহ অভিজ্ঞতা হয়নি।
ইরফান মাইরাকে ঝটকা মেরে সরিয়ে সেখানেই কষিয়ে ডান গালে একটা থা’প্প’ড় মেরে দেয়। মাইরা কয়েক পা পিছিয়ে যায়। কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিটে দিলে যেমন হয়, তেমনি মাইরার গালে অস’হ্য য’ন্ত্র’ণা হলো। একটু আগের ঘটনায় ভয়ে এমনিতেই মেয়েটা কাঁপছে, সাথে গালের অসহনীয় ব্য’থায় চোখ থেকে টুপটুপ করে পানি গড়িয়ে পড়ল।
ইনায়া মাইরার দিকে ট্রাক আসতে দেখেই গাড়ি থেকে নেমেছিল। মাইরাকে অক্ষ’ত দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস নেয়, তবে তার ভাইয়ের থা’প্প’ড় মারা দেখে সে নিজেই কথা বলার ভাষা হারায়। দ্রুত পায়ে এসে দাঁড়ায় মাইরার পাশে।
শুদ্ধ ইরফানের পাশে এসে দাঁড়ায়। কি বলবে বুঝতে পারছে না। ইরফান এখনো জ্বলন্ত চোখে মাইরার দিকে চেয়ে। মাইরা ভেজা চোখে মাথা তুলে তাকায়। কাঁদতে কাঁদতে বলে,
“অ’সভ্য লোক, এই আপনার হাত ব্য’থা করে না? আমার গাল টা সরকারি পেয়েছেন? শুধু মারছে তো মারছেই। ওমন লোহার হাত দিয়ে এই নরম গালে মা’রতে একটুও মায়া করে না। পা’ষা’ণ লোক।
ইরফান আবারও তেড়ে যেতে নিলে মাইরা ভয়ে নিজেকে গুটিয়ে নেয়। শুদ্ধ ইরফানকে টেনে ধরে ইনায়ার দিকে তাকিয়ে বলে,
“গাড়িতে গিয়ে বস।”
ইনায়া মাইরাকে নিয়ে ওপারে গিয়ে গাড়িতে উঠে বসে। মাইরা গাড়িতে বসে চোখে জল নিয়েই মৃদু হেসে বলে,
“আপু তুমি ফুসকা খেয়েছ?”
ইনায়া শান্ত চোখে মাইরার দিকে তাকায়। মেয়েটার গাল থেকে কিছুটা র’ক্ত বেরিয়েছে। ইনায়ার খুব খা’রা’প লাগলো। তার ভাই মেয়েটাকে বারবার এভাবে মারছে কেন? বোন হিসেবে তার নিজের-ই গিল্টি ফিল হচ্ছে। মাইরা চোখ মুছে বলল,
“আপু মন খারাপ করেছ আমি তোমার সাথে বসে খাইনি বলে? তোমার জাঁদরেল ভাই বুঝলে? তাই কথা না বাড়িয়ে ওখানে বসে খেয়েছি। আরেকদিন আমি তুমি একসাথে খাবো আচ্ছা?”
ইনায়া কিছুই বলল না। এই মেয়েকে তার রোবট লাগছে। মাইরা অনেকবার ডাকলো। ইনায়ার কোনো উত্তর না পেয়ে মুখটা মলিন হয়ে গেল। ঘাড় বাঁকিয়ে গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরে তাকালো। সব অন্ধকার। ঠোঁট বাঁকিয়ে মলিন হাসল। বিড়বিড় করল,
“মিস ইউ বাবা, মা।”
ইরফান শান্ত চোখে তার গাড়ির পানে চেয়ে আছে। শুদ্ধ রেগে বলল,
“তুই মেয়েটাকে এভাবে মারছিস কেন বলবি? ও তোর হাফ বয়সী একটা মেয়ে। একটু দয়ামায়া বলে কিছুই নেই না-কি তোর?”
ইরফান বেশ কিছুক্ষণ চুপ থেকে শুদ্ধর দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুঁচকে বলল,
“মারলাম কখন?”
শুদ্ধ অবাক হয়ে বলল,
“মেয়েটার গাল কেটে গিয়েছে। তুই বলছিস মারলি কখন?”
ইরফান নির্লিপ্ত কণ্ঠে বলে,
“বাঁচিয়ে শাস্তি দিয়েছি। স্টুপিট দের এভাবেই শায়েস্তা করতে হয়। আরেকটা গাল অক্ষ’ত আছে এর জন্য শুকরিয়া কর।”
শুদ্ধ অদ্ভুদভাবে তাকালো ইরফানের দিকে। ইরফান তো এমন নয়। শুধুমাত্র রে’গে কখনোই এভাবে মারার মানুষ ইরফান নয়। রা’গ বেশি ঠিক আছে। কিন্তুু এভাবে ধুপধাপ মারার স্বভাব তো ইরফানের নেই। তার কলার ধরা পর্যন্ত-ই সীমাবদ্ধ থাকে। সেখানে ওই বাচ্চা মেয়েটাকে ধুপধাপ মেরে দিচ্ছে।
শুদ্ধ ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে,
“দেখ, যদি একেবারেই মেয়েটাকে মানতে না পারিস, তবে ডিভোর্স দিয়ে দে। এভাবে ধুপধাপ মারিস না। শুনেছি মেয়েটার বাবা নেই। এতো কম বয়সে বিয়ে দেয়ার পর তুই এরকম বিহেভ করছিস।
মামা কাজ টা একদমই ঠিক করেনি। তুই কেমন জানেই, এরপরও এভাবে বিয়ে দেয়াটা সত্যিই খা’রা’প হয়েছে।
যাক গে, আমি তোদের ডিভোর্সের ব্যবস্থা করছি।”
ইরফান শুদ্ধর কলার ধরে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
“আমার ব্যাপারে নাক গলাতে বলেছি তোকে?”
শুদ্ধ অদ্ভুদভাবে তাকালো ইরফানের দিকে। সে তো ভালো কথাই বলছে। এর আবার কি হলো? চোখ ছোট ছোট করে বলল,
প্রণয়ের অমল কাব্য পর্ব ৪
“তোর-ই তো উপকার করতে চাইছি।”
ইরফান কিছুই বলল না। শুদ্ধর কলার ছেড়ে গটগট পায়ে এগিয়ে গেল গাড়ির দিকে। শুদ্ধ চিন্তিত বদনে ইরফানের পানে চেয়ে গাল চুলকালো। এই ইরফানের হাবভাব টা কি? এই বলছে, বউ মানে না। আবার ধুপধাপ মেরে দিচ্ছে, ডিভোর্স করাতে চাইলে নাক গলাতে নিষেধ করছে। কি আজব পাবলিক! এক মানুষ! অথচ ক্যারেক্টার কতগুলো!