প্রণয়ের অমল কাব্য পর্ব ৫০ (২)

প্রণয়ের অমল কাব্য পর্ব ৫০ (২)
Drm Shohag

ইরফান বাইরে বেরিয়ে একটি পানির বোতল কিনল। এরপর রাস্তার এক সাইডে গিয়ে মাইরার হাত ধুইয়ে দেয়। মাইরা চুপচাপ ইরফানের কর্মকাণ্ড দেখছে। ইরফান মাইরার হাত ধুইয়ে, বোতলটা ছুঁড়ে ফেলে। এরপর মাইরার দিকে তাকালে দু’জনের চোখাচোখি হয়। ইরফান কিছু বললো না। মাইরার হাত ধরে আরেকটি ক্যাফেতে যায়। সেখান থেকে মাইরার জন্য দশটি বিরিয়ানির বক্স নেয়। লোক দিয়ে তার গাড়িতে রেখে আসতে বলে। মাইরা অবাক হয়ে বলে,
“এতো বিরিয়ানি কেন নিচ্ছেন?”
ইরফান মৃদুস্বরে বলে,
“তুমি খাবে।”

আমি তো এতো খেতে পারবো না। নষ্ট হবে সব। এখানে মনে হচ্ছে পুরো বিয়ে বাড়ির খাবার নিয়ে যাচ্ছেন।
ইরফান মাইরার দিকে শীতল দৃষ্টিতে তাকায়। তবে কিছু বলে না। মাইরার হাত টেনে নিয়ে গাড়িতে গিয়ে বসে। মাইরা ইরফানের দিকে চেয়ে বলে,
“আপনি এমন করছেন কেন? আমি সত্যি এতোগুলো খেতে পারবো না।
ইরফান মাইরার কথার উত্তর করল না। সে তার
গাড়িটা একটি ফাঁকা জায়গায় নিয়ে সাইড করে।
ইরফান মাইরার কোলের উপর একটি বিরিয়ানির প্যাকেট রেখে ভ্রু কুঁচকে বলে,
“নাও স্টার্ট।”
মাইরা কিছু একটা ভেবে আর কথা বাড়ালো না। পায়ের জুতো খুলে রেখে সিটের উপর দু’পা তুলে আড়াআড়িভাবে ভাঁজ করে বসে। এরপর মনোযোগ সহকারে খাওয়া স্টার্ট করে। চারটে লোকমা খেয়ে মাইরা একটু থামে। ভীষণ ঝাল লাগলো। কিন্তুু খাওয়া থামালো না। ঝালে নাকমুখ লাল হয়ে গিয়েছে। কিছু মনে পড়তেই ঘাড় বাঁকিয়ে ইরফানের দিকে তাকালে দেখল ইরফান তার দিকে চেয়ে আছে। মাইরা ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে,
“আপনি খেয়েছেন?”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

নো।
মাইরা তার হাতের বিরিয়ানির প্যাকেট ইরফানের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে,
“আপনি চাইলে এখান থেকে খেতে পারেন।”
ইরফান মাইরার হাতের বিরিয়ানির প্যাকেটের দিকে একবার তাকায়। দৃষ্টি ঘুরিয়ে মাইরার মুখপানে তাকায়। মেয়েটার চোখ ভেজা। নাকের পাটা লাল, ঠোঁটজোড়া টকটকে লাল, চারপাশ তৈলাক্ত সাথে ভেজা। ইরফান মাইরার ঠোঁটজোড়ায় দৃষ্টি রেখে মৃদুস্বরে বলে,
“Yeah! I want to eat something.”

মাইরা তার হাতে থাকা বিরিয়ানির প্যাকেটে নজর বুলায়। বেশ এলোমেলোভাবে খেয়েছে। একপাশ থেকে সুন্দর করে খায়নি। ইচ্ছে করে নয়, আসলে সে এভাবেই খায়। অতঃপর মাথা তুলে বলে,
“আপনি তো অনেকগুলো বিরিয়ানির প্যাকেট কিনলেন। ওখান থেকে একটা নিন।”
ইরফানকে চুপ থাকতে দেখে মাইরা তার হাতের প্যাকেট ড্যাশবোর্ডের উপর রেখে বলে,
আচ্ছা দাঁড়ান। আমি পিছনের সিট থেকে আপনাকে প্যাকেট এনে দিচ্ছি।”
কথাটা বলে তার সিটে কুঁজো হয়ে দাঁড়ায়। সামনে থেকে গাড়ির ভেতর দিয়েই পিছনের সিটে পা রাখার জন্য ডান পা উঠালে ইরফান তার ডান হাতে মাইরার বা পা ধরে টান দেয়। মাইরা ধপ করে ইরফানের কোলে এসে পড়ে। মেয়েটা চেঁচিয়ে ওঠে। ইরফান দু’হাতে মাইরার কোমড় জড়িয়ে মাইরাকে তার দিকে ফিরিয়ে বসায়। মাইরা তার ডান এঁটো হাতেই ইরফানের ব্লেজার আঁকড়ে ধরে পড়ে যাওয়ার ভয়ে। ইরফানের দিকে পিটপিট করে তাকায়। জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে বলে,

“খাবেন না?”
ইরফান বা হাতে মাইরাকে নিজের দিকে টানলো আরেকটু। ডান হাত মাইরার গালে রেখে ছোট করে বলে, “ইয়াহ!”
মাইরা মিনমিন করে বলে,
“তাহলে আনতে দিচ্ছেন না কেন?”
ইরফান মাইরার তৈলাক্ত ঠোঁটজোড়ায় দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখে ঠাণ্ডা গলায় বলে,
“Because, I want to eat delicious chocolate, not biryani.”
কথাটা বলেই মাইরার ঠোঁটজোড়া আঁকড়ে ধরে। মাইরা স্তম্ভিত হয়। তবে ইরফানকে বাঁধা দেয় না। ল’জ্জারা ঘিরে ধরলেও সেই আগের মতো অস্বস্তি হয় না এখন। তবে মেয়েটা চুপ করে বসে থাকে। প্রায় এক মিনিট হতে না হতেই ইরফান মাইরার ঠোঁটজোড়া ছেড়ে ডান দিকে ঘাড় কাত করে। চোখ বুজে দাঁতে দাঁত চেপে রাখে। মুখ, জিহ্বা জ্বলছে। মাইরা ছাড়া পেয়ে ধীরে ধীরে ইরফানের কোল থেকে পাশের সিটে যেতে চায়, তার আগেই ইরফান মাইরাকে টেনে ধরে। মাইরা ইরফানের দিকে তাকালে অবাক হয়। ইরফানের চোখমুখ কেমন লাল। একটু আগেই তো ভালো ছিল। ইরফান দাঁতে দাঁত চেপে বলে,

“স্টুপিট কি খেয়েছ?”
মাইরা ঢোক গিলে। সে তো বিরিয়ানি খেয়েছে। কিছু একটা মনে পড়তেই জিভেয় কা’ম’ড় দেয়। তার এক বান্ধবী তাকে বোম্বাই মরিচ দিয়েছিল। মাইরার তো ঝাল খেতে খুব ভালো লাগে। সে সেই মরিচ ব্যাগ থেকে বের করে বিরিয়ানির সাথে খেয়েছে। তারও ঝাল লেগেছে, কিন্তুু বেশি মজা লেগেছে। ইরফানের দিকে তাকালে দেখল ইরফান চোয়াল শক্ত করে তার দিকে চেয়ে আছে। চোখমুখ কেমন লাল। মাইরার বুঝে আসে না এই লোকের উপরে উপরে এতো ঝাঁঝ। অথচ সামান্য একটু ঝাল-ই খেতে পারে না।
মিনমিন করে বলে,
“আমি আসলে বোম্বাই মরিচ খেয়েছি।”
“হোয়াট?”

ইরফানের ধমকে মাইরা কেঁপে ওঠে। ইরফান বিরক্তর নিঃশ্বাস ফেলল। রেগে বলে,
“স্টুপিট গার্ল আর একবার এইসব ফালতু জিনিস খেলে থাপ্পড় দিয়ে সব দাঁত ফেলব তোমার।”
মাইরা মাথা নিচু করে মুখ ফুলিয়ে রাখে। তার ভালো লাগে সে খাবে। তার সব পছন্দের খাবার এই লোকের জন্য খাওয়া বাদ দিবে? মাথা উঁচু করে বলে,
“আমার ভালো লাগে। আমি খাবো।”
ইরফান চোখ গরম করে তাকায়। মাইরা চোখ নামিয়ে নেয়। ইরফান ঠাণ্ডা গলায় বলে,
“Ok. I will eat too you. Wait.”
কথাটা বলেই ইরফান মাইরাকে কোলে নিয়েই গাড়ি থেকে বের হয়। এরপর ব্যাক সিটে মাইরাকে সহ বসে পড়ে। বা হাতে মাইরাকে ধরে রেখে খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিতে গায়ে জড়ানো ব্লেজার খুলে রাখলো। এরপর এক এক করে শার্টের বোতাম খুলতে থাকে। মাইরা চোখ বড় বড় করে তাকায়। ইরফানকে ঠেলে বলে,

“কি করছেন? আমি আর খাবো না খাবো না।”
ইরফান মাইরাকে শক্ত করে ধরে মাইরার দিকে চেয়ে ঠাণ্ডা গলায় বলে,
“But I will eat you.”
কথাটা বলে মাইরাকে ইরফান তার বা পাশে বসিয়ে দেয় তার দিকে ঘুরিয়ে।
ইরফানের গাড়ির এসি চলছে না। এটা সে মাইরাকে নিতে আসার সময় দেখেছে। হয়তো কোনো প্রবলেম হয়েছে। ঠিক করাতে হবে, মাইরার কলেজ ছুটি হয়ে যাওয়ায় এটা ঠিক করাতে যেতে পারেনি। গরমে ইরফানের অবস্থা নাজেহাল। ডান হাতে শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে বা দিকে ঘাড় বাঁকিয়ে মাইরার দিকে একবার তাকায়। মাইরা ভরকানো মুখে ইরফানের দিকে চেয়ে আছে।
ইরফান ডান দিকে ঘাড় বাঁকিয়ে ঠোঁট বাঁকিয়ে একটু হাসলো। দু’সেকেণ্ডের মাঝেই নিজেকে স্বাভাবিক করে নেয়। বিড়বিড় করে, ‘স্টুপিট গার্ল।’

ইরফানের সবগুলো শার্টের বোতাম খোলা শেষ।
মাইরা এটা দেখে বসা থেকে খানিকটা উঁচু হয়ে দ্রুত পিছন দিকে সরতে চায়। কিন্তুু পায়ের সাথে বোরখা বেঁধে গিয়ে ঠাস করে পড়ে যায়।
ব্যাকসিটে রাখা বিরিয়ানির প্যাকেটগুলোর উপর গিয়ে ঠাস করে মাইরার পিঠ ধাক্কা খায়। প্যাকেটগুলো সব ফেটে ভেতরে থাকা বিরিয়ানি ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায়। মাইরা চেঁচিয়ে ওঠে। ইরফান এর কথাটা হয়তো কবুল হয়ে গিয়েছিল। সত্যি সত্যি মাইরার বিরিয়ানির মাঝে সাঁতার কাটার মতো অবস্থা হলো। বিরিয়ানিতে মাইরার পিছন অংশ মাখামাখি হয়ে গেল। কিছুটা ছিটকে মাইরার পেটের দিকেও আসে।
ইরফান হতভম্ব। একে ঠিক কি করা উচিৎ? দ্রুত মাইরার হাত ধরে টেনে তোলে। গাড়ির অবস্থা বেহাল। ইরফান মাইরার সামনে থেকে বিরিয়ানি ঝেড়ে ফেলে দেয়। এরপর মাইরাকে আবারও তার কোলে বসিয়ে মাইরার পিঠ বরাবর নজর করল, মাইরার সাদা হিজাবের পিছনের অবস্থাও কাহিল।
ইরফান মাইরাকে তার দিকে ফিরিয়ে চরম হতাশার শ্বাস ফেলে শান্ত কণ্ঠে বলে,

“তুমি বড় হবে না, এটা ঠিক করেই নিয়েছ, রাইট?”
মাইরার অবস্থা নাজেহাল। বেচারির দ্বারা শুধু অঘটনই ঘটে। ইরফানের শান্ত কণ্ঠে মাইরা একটু অবাক হয়। ভেবেছিল তাকে গাড়ির ভেতর থেকে কিক মেরে বাইরে পাঠিয়ে দিবে। কিছু না বলায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল মাইরা।
আড়চোখে ইরফানের দিকে তাকায়। এরপর চোখ নামিয়ে মিনমিন করে বলে,
“আমি তো বড়-ই।”
ইরফান অদ্ভুদভাবে তাকায় মাইরার দিকে, যেন অবাস্তব কিছু শুনেছে। হতাশার শ্বাস ফেলল।
কিছু বললো না। ইচ্ছে তো করছে এর গাল দু’টোয় থাপড়াতে থাপড়াতে ছাল তুলে দিতে। বিরক্ত হয়ে সিটে মাথা এলিয়ে চোখ বুজল। মাইরা একটুখানি মাথা তুলে ইরফানের দিকে তাকায়। জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে বোঝার চেষ্টা করে লোকটার কি হলো।

ইরফানের বন্ধ চোখ, কপালে অসংখ্য ভাঁজ। মাইরা চোখ নিচে নামাতে গিয়ে চোখে পড়ল ইরফানের শার্টের বোতামগুলো খোলা। শার্টের দু’পাশ দু’দিকে গিয়ে ছড়িয়েছে। ইরফানের খোলা বুক মাইরার মুখ বরাবর। মাইরা কেমন করে যেন তাকিয়ে থাকে সেদিকে। সে শুনেছিল ছেলেদের বুকে লোম থাকে। দেখেছিলও তো। রাস্তায় অনেককে দেখেছিল। কিন্তুু ইরফানের বুকে একটা লোমও খুঁজে পেল না। ইরফানকে তার ভীষণ অদ্ভুদ লাগে। বেশি অবাক লাগলো, লোকটার হাতে পায়ে বেশ ভালোই লোম। অথচ বুকে নেই। মাইরার এতো অদ্ভুদ লাগে!
বিকেলের রোদ পড়ে গিয়েছে। ধরণীতে উষ্ণ ভাব কমে গিয়েছে। গাড়ির জানালা খোলা। জায়গাটা ফাঁকা। আশেপাশে তেমন কেউ নেই। মাঝে মাঝে বাম পাশের জানালা দিয়ে মিটমিট বাতাস গাড়ির ভেতর প্রবেশ করে। মৃদু বাতাসের তোড়ে ইরফানের শার্ট সরে গিয়ে ইরফানের চওড়া বুক আরও উম্মুক্ত হয়। কোথা থেকে দু’টো মাছি উড়ে এসে ইরফানের বুকের মাঝখানে বসে। মাইরা চোখ ছোট ছোট করে তাকালো। তার একদম ভালো লাগলো না ব্যাপারটা। সব ভুলে ফটাফট ডান হাত তুলে ইরফানের বুক বরাবর একটা থাপ্পড় মেরে দেয়।

থাপ্পড় টা মেরে মাইরা নিজেই হতভম্ব হয়ে যায়। হায় হায় সে কি করল এটা? ইরফান চোখ খুলে বিস্ময় দৃষ্টিতে তাকায় মাইরার দিকে। মাইরা বারবার ঢোক গিলছে। দৃষ্টি নিচু সাথে এলোমেলো।
ইরফান বাকহারা। এই মেয়ে তাকে থাপ্পড় মারলো? তাকে? ডান হাতে মাইরার গাল চেপে ধরে। দাঁতে দাঁতে চেপে বলে,
“স্টুপিট গার্ল, কবে ভালো হবে তুমি?”
মাইরা চোখ খিঁচে বন্ধ করে মিনমিন করে বলে,
“স্যরি স্যরি!”
ইরফান মাইরার গাল চেপে রাখা হাত শিথীল করল। মৃদুস্বরে বলে, “মারলে কেন?”
মাইরা আমতা আমতা করে বলে,
“ওই মাছি বসেছিল। বিশ্বাস করুন। আমি মারিনি।”
ইরফান অদ্ভুদ চোখে তাকায় মাইরার পানে। মাছি বসেছিল বলে এ তাকে থাপ্পড় মেরেছে। কি বলবে বুঝল না। মাইরা ইনোসেন্ট মুখ করে ইরফানের দিকে তাকায়। মিনমিন করে বলে,

“মাছি…”
ইরফান গম্ভীর গলায় ধমকে ওঠে,
“সাট আপ।”
মাইরা ঝাঁকি দিয়ে ওঠে। মাথা নিচু করে গাল ফুলায়৷ সে কি এমন করেছে। এই লোক ধমকাধমকি ছাড়া আর কিছুই পারেনা।
ইরফান ব্যস্ত হাতে মাইরার হিজাব খুলতে থাকে। মাইরা বিচলিত কণ্ঠে বলে,
“হিজাব খুলছেন কেন?”
ইরফান আড়চোখে মাইরার দিকে চেয়ে গম্ভীর গলায় বলে,

“তোমাকে টাক বানাবো, যাতে তোমার বুদ্ধি হাঁটুর নিচ থেকে এই ফাঁপা মাথায় ঢুকতে পারে।”
মাইরা চোখ বড় বড় করে তাকায়। এই লোক তাকে অপমান করছে। কি খ’বি’শ লোক ভাবা যায়!
ইরফান মাইরার দৃষ্টি পাত্তা দিল না। হিজাব খুলে হিজাবটি মাইরার কাঁধের উপর রাখে। এরপর মাইরাকে তার দিকে টেনে মাইরার গলায় মুখ গুঁজে দেয়। মাইরা ঢোক গিলে। ইরফান চোখ বুজে ঠোঁট চওড়া করে শব্দহীন সূক্ষ্ম হাসে। বিড়বিড় করে, ‘লিটল গার্ল।’

রাত ১১ টা। শুদ্ধ এলোমেলো পায়ে এসে তার বাড়িতে বেল বাজায়। বেশ কয়েকবার বেল বাজালে সামিয়া এসে দরজা খুলে দেয়। শুদ্ধ নিরবে ঘরের ভেতর প্রবেশ করে। কোনোদিকে না তাকিয়ে তার ঘরের দিকে এগিয়ে যায়।
সামিয়া দ্রুত দরজা আটকে শুদ্ধর দিকে তাকায়। কেমন যেন স্বাভাবিক লাগলো না তার কাছে শুদ্ধকে। চিন্তিত হলো মেয়েটা। সে তো এইখানে কয়েক মাস হলো আছে। শুদ্ধ কখনো এতো রাত পর্যন্ত বাইরে থাকে না। মেয়েটার ভীষণ ইচ্ছে করল, শুদ্ধ কেমন আছে এটা জিজ্ঞেস করার। কিন্তুু সাহসে কুলায় না।
শুদ্ধ দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পিছু ফিরে সামিয়ার উদ্দেশ্যে বলে,

“মা কি ঘুমিয়েছে?”
সামিয়া সাথে সাথেই ছোট করে বলে,
“জ্বি উনি ঘুমিয়ে পড়েছেন।”
শুদ্ধ আর কিছু বলল না। সামিয়া উশখুশ করছে। শুদ্ধর অবস্থা জানতেই মূলত বেচারির এ অবস্থা। অনেক কসরত করে শুদ্ধর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেই ফেলে,
“আপনি কি অসুস্থ?”
শুদ্ধর পা থেমে যায়। পিছু ফিরে একটু অদ্ভুদভাবে তাকায় সামিয়ার দিকে। সামিয়া শুদ্ধকে তাকাতে দেখে মাথা নিচু করে নেয়। থেমে থেমে বলে,
“দুঃখিত! আসলে আপনার চোখ অনেক লাল। তাই…”
শুদ্ধ তার ঘরে যেতে যেতে বলে,
“এক কাপ চা দিয়ে যাও আমার রুমে।”
সামিয়া ঘাড় কাত করে দ্রুত রান্নাঘরের দিকে পা বাড়ায়।

শুদ্ধ ঘরে গিয়ে বিছানায় সটান হয়ে শুয়ে পড়লো। চোখ বুজল। ফারাহ’র মুখটা ভাসে চোখের সামনে। কতক্ষণ চুপচাপ শুয়ে রইল চার হাত পা চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে।
হঠাৎ-ই মনে পড়ল ফারাহ’র গলা চেপে ধরায় যে দাগ হয়েছিল, সে দাগ চোখের সামনে ভাসতেই আবারও দমবন্ধ লাগে। হঠাৎ-ই শোয়া থেকে বসে গায়ের জোরে বেডের কোণায় একটা পাঞ্চ মারে। নিজের উপর ভীষণ রাগ লাগছে। আবার ফারাহ’র উপর।
সামিয়া দরজার সামনে এসে শুদ্ধ কে এভাবে দেখে কিছুটা ভীত হয় মেয়েটা। এমনিতেই সে কোনো ছেলের সামনে যেতে ভীষণ সংকোচ করে। তবে শুদ্ধর সামনে তৃণা বেগম তাকে জোর করে পাঠাতো, তাই খুব সামান্য জড়তা কাটিয়ে শুদ্ধর সাথে কথা বলতে পারলো। কিন্তুু শুদ্ধর এমন রাগ দেখে মেয়েটাকে আবারও জড়তা ঘিরে ধরে।
শুদ্ধর চোখ দরজার দিকে পড়লে দেখল সামিয়া ভীত চোখে তার দিকে চেয়ে আছে। শুদ্ধর কেন যেন হাসি পায়। হেসেও ফেলল ছেলেটা। এই মেয়ে তাকে দেখে ভয় পাচ্ছে কেন অদ্ভুদ! ফারাহ ও তাকে দেখে ভয় পাচ্ছিল। সে কি এলিয়েন? রেগে যায় আরও।

সামিয়ার দিকে আঙুল তাক করে রাগান্বিত স্বরে বলে,
“এই ভীতু মেয়ে! ভয় পাচ্ছ কেন? আউট!”
সামিয়া আগের চেয়েও কয়েকগুণ ভীত হয়। শুদ্ধর রাগে বেচারি কি করবে বুঝে পায় না। তবুও মিনমিন করে বলে,
“আপনার চা টা..”
শুদ্ধ বসা থেকে দাঁড়িয়ে রেগে বলে,
“যেতে বলেছি যাও। ভীতুর ডিমের হাতের চা খেয়ে আমার মাথার সাথে সাথে পেট ব্য’থাও শুরু হবে। আউট!”
সামিয়া ভীষণ ভয় পায়। কিন্তুু শুদ্ধর বলা লজিক বেচারি বুঝল না। শুদ্ধর চোখ লাল। দেখেই বোঝা যাচ্ছে লোকটা অসুস্থ। এই চা খেলে লোকটা একটু আরাম পাবে। সামিয়া শুদ্ধকে বলার সাহস পায় না। উপায় না পেয়ে হাতের চায়ের কাপ দরজার কাছেই মেঝেতে রেখে দ্রুত ঘরের দরজা থেকে সরে যায়। শুদ্ধ অবাক হয়ে চেয়ে আছে মেঝেতে রাখা চায়ের কাপের দিকে। সামিয়া দ্রুত পায়ে তার ঘরে এসে দরজা আটকে দিয়েছে।
শুদ্ধ কি বলবে বুঝল না। চা টা প্রয়োজন। এগিয়ে এসে চায়ের কাপটা তুলে নেয়। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই চা টা শেষ করল। স্বাদ নতুন নয়। সামিয়া এ বাড়ি আসার পর সামিয়ার হাতে চা বেহিসাব খাওয়া হয়েছে শুদ্ধর।

“ভাইয়া শুদ্ধ ভাইকে একটা কল করবে?”
ফাইজ তার ঘর থেকে বেরিয়েছিল। ফারাহকে টলতে দেখে ফাইজ অবাক হয়ে বলে,
“তোর কি হয়েছে ফারাহ?”
ফারাহ লালিত চোখজোড়া টেনে তুলে ভাইয়ের দিকে তাকায়। দুর্বল কণ্ঠে বলে,
“শুদ্ধ ভাই কেমন আছে, একটু শুনবে ভাইয়া?”
ফাইজ ফারাহ’র কপাল চেক করল। মেয়েটার জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে। ফাইজ দ্রুত ফারাহকে একহাতে আগলে নিয়ে ফারাহ’র ঘরের দিকে নিয়ে যায়। ফারাহ ঘাড় বাঁকিয়ে বলে,
“শুদ্ধ ভাইকে একটা কল কর না ভাইয়া!”

তুই আগে ওষুধ খা। এরপর করছি। গায়ে তো অনেক জ্বর।
ফারাহ কিছু বললো না। ফাইজ ফারাহকে ওষুধ খাইয়ে দেয়। ফারাহ আবারও ফাইজের কাছে আবদার করে। ফাইজ ফারাহ’র পাশে বসলে ফারাহ ভাইয়ের কাঁধে মাথা রাখে। ফাইজ তার বোনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে শুদ্ধকে কল করে।
“হ্যাঁ বল।”
!
কেমন আছিস?
!
তোর বোন যেমন রাখলো তেমনি আছি। ডা’য়’নি বোন বানিয়েছিস।
!
একদম আমার বোনকে নিয়ে উল্টাপাল্টা কথা বলবি না।
শুদ্ধ বিরক্ত হয়ে বলে,
“কেন কল করেছিস?”
ফাইজ মৃদুস্বরে বলে,
“ফারাহ টার…
আর বলতে পারলো না। শুদ্ধ মাঝখান থেকে বলে ওঠে,
“তোর বোন আমায় বিয়ে করতে চায় না, বুঝিস নাই? ওকে বল আমি আমার মায়ের পছন্দ করা মেয়েকেই বিয়ে করব। ওর ত্যাড়ামি নিয়ে ও জীবন কাটাক।”

কথাটা বলেই কল কেটে দেয় শুদ্ধ। ফাইজ আবারও কল ব্যাক করে, কল রিসিভ হয় না। ফারাহ ফাইজের ফোন নিয়ে নিজেই কল দিতে থাকে। তৃতীয়বার দিলে ওপাশে শুদ্ধর ফোন সুইচ অফ বলে। ফারাহ’র চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ে। কিছু না বলে চুপ করে বেডে গিয়ে ডান কাত হয়ে শুয়ে পড়লো। ফাইজ অসহায় হয়ে বসে রইল। ফারাহ কুঁকড়ে শুয়েছে। ফাইজ ফারাহ’র গায়ে কাঁথা দিয়ে দিল। ফারাহ’র মাথার হাত রেখে মৃদুস্বরে বলল,
“শুদ্ধ রেগে আছে। ওকে রাগাস কেন বল তো? শান্তশিষ্ট ছেলেটা, রেগে গিয়ে এমন করছে। ঠিক হয়ে যাবে।”
ফারাহ’র বন্ধ চোখের পাতা বেয়ে জল গড়ায়। নিজেকে সামলে ভাঙা গলায় বলে,
“তোমাদের ছেলেদের কত রাগ ভাইয়া! আমি যেখানে ইচ্ছে করে কিছু করিইনি, তাতেই কত রাগ শুদ্ধ ভাইয়ের! রেগে গিয়ে তো আমাকে..
বলতে গিয়ে থেমে গেল। গলায় ভীষণ ব্য’থা আছে এখনো। তবে তার ভাইকে বলতে চাইলো না এসব। এড়িয়ে গিয়ে বলে,

শুদ্ধ ভাই যেদিন থেকে বুঝেছে আমার তাকে ভালো লাগে, সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত অন্য মেয়েদের নিয়ে আমার সাথে শুধু মজাই করে গেল। আমি মেয়ে বলে বুঝি আমার রাগ থাকতে নেই? কষ্টও থাকতে নেই? অভিমানও থাকতে নেই?
আর আমি একদিন আমার অনিচ্ছায় কি করলাম, তাতেই আমাকে…
আবারও থেমে যায়। কাঁথার ভেতর মুখ নিয়ে নিঃশব্দে চোখের পানি ফেলে। ফাইজের খারাপ লাগলো। শুদ্ধ মজা করলেও তার বোন তো সত্যিই কষ্ট পেত, এই যে এখন সেই মেয়েকে বিয়ে করতে চাইলো, জানে এমনি বলেছে, তবুও তো ফারাহ কষ্ট পাচ্ছে, ঠিক যেমন ফারাহ অভিমান করে বিয়ের ব্যাপার এড়িয়ে যেতে চাওয়ায় শুদ্ধ রেগে আছে। সত্যিই তো তার বোন মেয়ে বলে কি রাগ নেই? কাল দিনের আলো ফুটুক আগে। তার বোনটাকে কষ্ট দেয়ায় ওর পিঠের হাড় ভাঙবে।
তার মাকে নয়তো ইনায়াকে ফারাহ’র সাথে থাকতে বলবে, সেজন্য দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।

শুদ্ধ নামাজ পড়ে বেডে শুয়ে পড়ে। ভীষণ মাথা ব্য’থা করছে। শরীর খারাপ লাগছে। বেশ কিছুক্ষণ পর থেকে ছেলেটা হাসফাস করে। বারবার এপাশ-ওপাশ করে। দু’হাত ভাঁজ করে, এক পা আরেক পায়ের উপর রেখে ঘনঘন শ্বাস ফেলে। ফ্যানের বাতাসে যেন কুঁকড়ে যায়। চোখ মেলে তাকাতে পারে না। বিড়বিড় করে,
“আমার ফারাহ পাখি, আমার বউ আমার ফারাহ। পাখি, স্যরি! ফারাহ পাখি!”

সামিয়া তার ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছে মূলত শুদ্ধকে রাতের খাবার দিতে। তৃণা বেগম ঘুমিয়েছে, সে ছাড়া আর কে খেতে দিবে শুদ্ধ কে? রাগ দেখালে দেখাবে নাহয়। মানুষটা না খেয়ে থাকবে ভাবলেই কেমন যেন লাগে! সামিয়া শুদ্ধর ঘরে উঁকি দিলে অবাক হয়। ঘরের লাইট জ্বালানো। আর শুদ্ধ কেমন যেন কুঁকড়ে আছে। ভালোই গরম পড়েছে, তাহলে লোকটা এভাবে ঘুমিয়েছে কেন? সবচেয়ে বড় কথা এতো গরমে এসি থাকতে ফ্যান কেন দিয়েছে? ফ্যান দিয়েও কুঁকড়ে আছে। সামিয়া এগিয়ে এসে শুদ্ধর পাশে দাঁড়ায়। শুদ্ধ কি যেন বিড়বিড় করে। সামিয়া অভিজ্ঞ চোখে শুদ্ধর দিকে তাকিয়ে কিছু বুঝল যেন। ডান হাত বাড়ায় শুদ্ধর কপালের দিকে। যদিও ভীষণ ইতঃস্ততবোধ করছে। এসব রেখে কাঁপা হাতে শুদ্ধর কপাল স্পর্শ করলে হাতে যেন ছ্যাঁকা খায়। অনেক গরম কপাল। বুঝল শুদ্ধর জ্বর এসেছে। দ্রুত এগিয়ে গিয়ে ফ্যানের সুইচ অফ করে দিল। এরপর শুদ্ধর গায়ে কাঁথা জড়িয়ে দেয়। শুদ্ধ বোধয় একটু আরাম পেল।

সামিয়ার ভীষণ খারাপ লাগলো। হাসিখুশি মানুষদের অবস্থা শোচনীয় হলে সত্যিই খুব খারাপ লাগে। কিন্তুু সামিয়ার যেন খারাপ লাগার মাত্রা অনেক বেশি। শুদ্ধর শুকনো মুখটা দেখে ১৮ বছর বয়সী সামিয়ার চোখের কোণে পানি জমে। হাঁটু মুড়ে শুদ্ধর মাথার কাছে বসে। কাঁপা কাঁপা বা হাতে শুদ্ধর চুলের ভাঁজে হাত চালায়৷ বিড়বিড় করে,
“আপনার সকল কষ্ট আমার হোক, আপনি সকল দুঃখ, কষ্ট ভুলে খুব ভালো থাকুন সাহেব।”

রাত ১২ টার কাছাকাছি। ইরফান ফেরেনি। মাইরার ঘুম আসছে না। মন খারাপ লাগছে মেয়েটার।
ইরফান থাকলে যে মাইরার সাথে বসে গল্প করতো এমন নয়। তবে ইরফানের উপস্থিতি ঘরে থাকলেই মাইরার বোধয় ভীষণ ভালো লাগতো। এই ঘরের মাঝে তার ছটফট লাগলো। বিড়বিড় করে ইরফানকে ধুয়েও দিল। রাত-বিরেতে ভালো মানুষেরা কখনো বাইরে থাকে না। ওই লোকটা তো খ’বি’শ। ভালো তো নয়। এজন্যই বাড়ি ফিরছে না। মাইরার এটাই কথা।

বেশ অনেকক্ষণ পর মাইরা ঘর থেকে বের হয়। এই ঘরে বেশি খারাপ লাগছে। ভাবলো একটু ছাদে যাবে। আজ ইনায়াকে খুব মনে পড়লো। এখন ইনায়া থাকলে সে আর ইনায়া দু’জন একসাথে যেতে পারতো। রিতা আরও দু’জন কাজের মেয়ে, ওরা সবাই ঘুমিয়ে গিয়েছে। মাইরা একা একাই টিপটিপ করে ছাদের দিকে এগোলো।
ছাদের দরজায় পা দিয়ে মাইরা এদিক-ওদিক তাকায়। ওতোটাও অন্ধকার নয়। চাঁদের মিটিমিটি আলো ছাদজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। মাইরার একটু ভয় ভয় লাগলো। তবে পাত্তা দিল না। ভয়কে তাড়িয়ে ছাদের মাঝখানে গিয়ে দাঁড়ায়। রাতের অন্ধকারে মিটিমিটি বাতাস মাইরার গা ছুঁয়ে দেয়। কি যে ভালো লাগছে তার! গায়ের ওড়না খুলে একপাশে রেখে দিল। খোপা করা চুলগুলো খুলে দিল। এরপর চোখ বুজে দু’হাত মেলে একা একা গোল হয়ে ঘোরে। থেকে থেকে বাতাসের বেগ বাড়ে, মাইরাকে আলতো ধাক্কা দেয়। মাইরার মন ভীষণ ভালো হয়৷
কিছুক্ষণ পর ছাদের অনেকটা কিনারায় গিয়ে দাঁড়ায় মাইরা। এখন যেন বাতাস গায়ে লাগছে বেশি। মাইরার মুখে হাসি ফুটে ওঠে। ইরফানের মুখটা ভেসে ওঠে চোখের পর্দায়। ঠোঁটের কোণে লেগে থাকা হাসি চওড়া হয়। মৃদুস্বরে বলে,

‘তুমি-ই আমার শিষওয়ালা, আমি খুব জানি। কিন্তুু ধরা দাও না। নিষ্ঠুর শিষওয়ালা কি-না!’
একটু থেমে লম্বা শ্বাস নেয়। এরপর দু’হাতের বাহু আড়াআড়িভাবে আঁকড়ে ধরে গেয়ে ওঠে,
“যার কথা ভেবে শিহরণ..
এক লাইন গাইতেই ইরফান পিছন থেকে মাইরাকে দু’হাতে জড়িয়ে নেয়। মাইরার বলার পরের লাইন থেকে গেয়ে ওঠে,
“যে আমার জীবন মরণ..
এলো যেন সে
ভালোবেসে
ভরে দিতে আজ এ মন
যেন এক নতুন সকাল
ভেঙে দিয়ে ঘুমের-ই জাল…

প্রণয়ের অমল কাব্য পর্ব ৫০

এতোটুকু গেয়ে মাইরার কানের কাছে মুখ নিয়ে এরপরের থেকে লিরিক্সের শিষ বাজায়। মাইরা স্তব্ধ হয়ে ইরফানের বুকে শরীরের ভার ছেড়ে দেয়। ইরফান এতো সুন্দর গান গাইতে পারে? সে আগে কখনো ইরফানের গান শোনেনি। আজ-ই প্রথম। সে ভাবতো ইরফান শুধু শিষ বাজাতে পারে। কানের কাছে সেই পরিচিত সুরেলা শিষ শুনতে পেয়ে মাইরার দেহে ক্ষণে ক্ষণে শিহরণ জাগে। আবেশে চোখ বুজে নেয়। যেটুকু তার ভারে দাঁড়িয়ে ছিল, সেটুকুও ইরফানের উপর ছাড়ে। ইরফান আগলে নিল মাইরাকে। ঠোঁটের কোণে কিঞ্চিৎ হাসির রেখা। তবে শিষ বাজানো থামালো না।

প্রণয়ের অমল কাব্য পর্ব ৫১