প্রণয়ের প্রিয়কাহন পর্ব ৫
শার্লিন হাসান
তোমার বিয়ে নাকী আগে থেকে ঠিক করা।”
“কীহহহহহ্! কার সাথে? আমি কেন জানিনা?”
জাইমার কথায় রুপা জবাব দেয়, “তোমার দাদা ঠিক করে গেছেন এই বিয়ে। তোমার জেঠ্যু আছে না? ওনার কোন ছেলের সাথে। নাম মোম নাকী কী জানি।”
“হ্যাঁ শুনেছি তার বাম মর্ম।একদম বাজে একটা নাম। একজন ভালো সুন্দর মবের মানুষের নাম কখনো মর্ম হতে পারেনা।”
“তাহলে?”
“ওই যে রাগী করলার জুশ গোলামেরপুত। ওই ব্যাটার নামও নাকী মর্ম কর্ম। সেজন্য আমার বিয়ে এটা ক্যান্সেল করতে চাই। মর্ম কর্ম আমি দেখতে পারিনা।”
“এই বিয়ে কিছুতেই ক্যান্সেল হবেনা। দেখবে ওই মর্মর সাথেই তোমার বিয়ে হবে।”
“আয়হায়! কিন্তু আমি ভাবছি, নতুন একটা প্রেম করব। তখন সবাই তাকে পছন্দ করে নিবে। অবশ্যই ছেলে সুন্দর, ভালো হতে হবে। কী বলো?”
রুপা জবাব দেয়না। জাইমার হাসি মাখা মুখ মূহুর্তে মিইয়ে যায়। দু’জন খেয়েদেয়ে উঠে যায়। জাইমা রুপার হাত ধরে সামনে-পেছনে ঝাঁকাতে , ঝাঁকাতে বাইরে আসে। মনে রঙ লেগে গেছে। আজকে রাতের মধ্যে ফেসবুক বা ইন্সটাগ্রাম থেকে সে একটা ছেলে খুঁজে বের করবে।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
রুপাকে নিয়ে তাড়াতাড়ি বাসায় আসে জাইমা। এসেই তার দাদী,বাবা-মাকে একসাথে আলোচনায় বসতে দেখেছে সে। জাইমা হাতের ব্যাগটা রুপাকে দিয়ে দেয়ে। ছুটে যায় কিচেনে। ড্রয়ার থেকে চিপস বের করে একটা বাটিতে নেয়। ফ্রিজ থেকে মজোর বোতল গ্লাসে ঢেলে একটা ট্রেতে নিয়ে লিভিং রুমে এসে বসে। জাইমাকে দেখে জামিলা ভ্রু কুঁচকে বলে, “বাইরে থেকে এসেছ, ফ্রেশ হও। এখনি এসব নিয়ে বসেছ? এসব খাবার কম করে খেতে বলেছি। খেয়াল নেই?”
জাইমা ডান হাতের তর্জনী কামড়ে জবাব দেয়, “দাদীর জন্য এনেছি।”
“তোমার দাদী এসব খায়না।”
“আজকে খাবে।”
কথাটা বলে রাহেলা খানের দিকে তাকিয়ে জাইমা হাসে। তখন তার বাবা সাজ্জাদ খান বলেন, “মৈশানী আমি তোমার ভার্সিটি যাব ছুটি পেলে। কোন অভিযোগ যাতে না শুনি।”
“তুমি তো ব্যস্ত। কী দরকার সময় নষ্ট করে যাওয়ার?”
জামিলা চোখ রাঙিয়ে তাকাতে জাইমা চুপসে যায়। দাদীর পাশে গিয়ে বসে। চিপসের বাটি হাতে নিয়ে খাওয়া শুরু করে। মজোতে চুমুক দিয়ে আবারো সবার কথায় মনোযোগ দেয়। রাহেলা খান ছেলো সাজ্জাদ খানের উদ্দেশ্যে বলে, “মর্ম দেশে এসেছে বছর হলো। তোমার বাবার বলা কথা ভুলে গেছ?”
সাজ্জাদ খান কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে, “তার দরকার হলে আসবে। আমি আমার মেয়ে নিয়ে তাদের হাতে তুলে দিতে পারব না। আমার মনে হয়, যেখানে যোগাযোগ নেই, সম্পর্ক অতীতে রুপ নিয়েছে সেখানে নতুন করে সম্পর্ক স্থাপনের মানেই হয়না। মর্ম—র জন্য ভালো মেয়ে পাবেন। আমার মৈশানীকে এসবে টানবেন না।”
“তোমার বাবার ঠিক করে যাওয়া সম্পর্ক পায়ে ঠেলে দিচ্ছ?”
“এরকম কিছুনা।”
রাহেলা খান কিছু বলেননা। সাজ্জাদ খান উঠে চলে যান। তখন রাহেলা খান জামিলাকে উদ্দেশ্য করে বলে, “তুমি সাজ্জাদকে বলো। ওদের সামান্য ভুল বুঝাবুঝি, কথা কাটাকাটির জন্য আজকে এই অবস্থা সবার। আমার মেয়েরা এ বাড়িতে আসেনা। আমিও ছেলের বাড়িতে যেতে পারিনা। এসবের অনেক হলো। এবার কী সব মিটমাট করা যায়না?”
“আপনার দুই ছেলেই ঘাড় ত্যাড়া। কেউই নত হবেনা।”
“এবার এটার হেস্তনেস্ত করেই ছাড়ব। আমার জাইমা মর্ম’র নাধ্যমে দুই পরিবার এক করব।”
“আপনি যা ভালো বুঝেন।”
কথাটা বলে জামিলা চলে যায়। জাইমা উঠে দাঁড়ায়। সামান্য নেচে উঠে। হাতে থাকা চিপসের বাটি থেকে কিছু চিপস উপরে ছেড়ে দিয়ে আবারো নেচে বলে, “মর্ম নামটা পাল্টে নেব। সবচেয়ে বড় কথা আমার বিয়ে হচ্ছে।”
রাহেলা খান নাতনির নাচ দেখে কথা বলতে ভুলে গেছেন। লিভিং রুমটা অপরিষ্কার করে নিয়েছে। একটু পর জামিলা এসে বকাঝকা শুরু করবে। জাইমা অতিরিক্ত উদ্বিগ্ন হয়ে রাহেলা খানের কাছে আসতে যাবে তার জামার সাথে লেগে মজো’র গ্লাস নিচে পরে চিৎপটাং। জাইমা গ্লাসের দিকে তাকিয়ে সরে যায়। আর কোন অঘটন ঘটানোর আগে চিপস যে কয়টা অবশিষ্ট আছে সেগুলো একে,একে মুখে পুড়ে নেয়। কাচের বাটি ভেঙে যাবে ভেবে সেটা হাতে নিয়ে কিচেনের দিকে চলে যায়।
পুনরায় ফিরে আসে ছোট গার্ডেন বেলচা হাতে। কাচগুলো কুড়িয়ে নিয়ে ডাস্টবিনে ফেলে দেয়। আর এক মূহুর্ত না দাঁড়িয়ে নিজের রুমে চলে আসে সে। ফ্রেশ হয়ে ড্রেস চেঞ্জ করে নেয়। ফোন হাতে ফেসবুকে যায়। কিছুক্ষণ ফেসবুক স্ক্রোল করতে, করতে ভুলে যায় সে কেন ফেসবুকে এসেছে।
রাত সাড়ে দশটায় মনে পড়ে তার যে এসাইনমেন্ট লিখতে হবে। ভেবেই তড়িঘড়ি পড়ার টেবিলে বসে যায়। উদ্দেশ্য আজকে রাতের মধ্যে এসাইনমেন্ট লিখে শেষ দেওয়া।
খান পরিবারের সবাই ডিনার করতে বসেছে। ইশরাক সবার শেষ এসেছে ডিনার করার জন্য। তাকে দেখে রাজিয়া আহমেদ বলেন, “তোমার দাদীনের সাথে দেখা করবে কবে?”
ইশরাক মায়ের দিকে তাকায়। চেয়ার টেনে বসে বলে, “দাদীকে বলো চলে আসতে। এখানে থাকবে সমস্যা কোথায়?”
“তোমার চাচ্চু শোনলে বকাঝকা করবে।”
ইশরাক তার বাবা সাজেদ খানের দিকে তাকায়। তিনি চুপচাপ খাবার খাচ্ছেন। ইশরাত তার আম্মুকে বলে, “চাচ্চুকেও বলো সবাইকে নিয়ে আসতে। ওনার ছেলে মেয়েদের দেখার অনেক ইচ্ছে।”
ইশরাতের কথায় সাজেদ খান জবাব দেন, “ওর আসার প্রয়োজন নেই। তোমার বেশি দেখার ইচ্ছে হলে খবর পাঠাও, ওর ছেলে-মেয়েরা চলে আসবে।”
“আরেহ্ বাবা এরকম করছ কেন?”
ইশরাতের কথায় ইশরাক তার বাবাকে বলে, “এভাবে আর কতদিন? দাদার বলে যাওয়া কথা ভুলে গেছ?”
ছেলের কথায় সাজেদ খান কিছুক্ষণ থম মেরে বসে থেকে বলেন, “অতীত সেটা! বর্তমানের কথা বলো।”
“বাবা এরকম বলছ কেন? এমনিতেও এই সম্পর্ক জোড়া লাগানোর জন্য দাদর কথা পালন করা ছাড়া আর কোন উপায় দেখছিনা।”
ইশরাকের কথায় পোহা ইশরাতের দিকে তাকিয়ে ভ্রু জোড়া সংকুচিত করে নেয়। চোখ দিয়ে ইশরা করে, কী এমন বলে গেছে তাদের মৃত দাদা?
খাবার টেবিলে তেমন কথা হয়নি। তবে সোফায় বসলেই কিছুক্ষণ তর্কাতর্কি হয়। ইশরাক তার বাবার জেদকে থামানোর জন্য দাদীর নাম্বারে কল দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যে কল রিসিভ হতে রাহেলা খান বলেন, “হ্যালো।”
ইশরাক জবাব দেয়, “আসসালামু আলাইকুম দাদীন। আমি মর্ম বলছি।”
“ওয়া আলাইকুমুস সালাম। মর্ম কেমন আছো?”
“আলহামদুলিল্লাহ, তুমি?”
“আলহামদুলিল্লাহ।”
“আগামী কালকে আমাদের বাড়ি আসো। আমি নিতে আসব তোমায়।”
রাহেলা খান কিছুক্ষণ চুপ করে থাকেন। ইশরাক পুনরায় বলে, “কী হলো?”
“সাজ্জাদের কথা ভাবছি।”
“চাচ্চুর সাথে আমার কন্ট্রাক্ট হয়। দেখা হবে শীঘ্রই। আমি বললে আমার কথা ফেলতে পারবেনা।”
“আচ্ছা, তাহলে ঠিক আছে। তবে আগামী কালকে যাব না। কয়েকদিন পরই যাব।”
“ঠিক আছে।”
ইশরাক কল রেখে সাজেদ খানের দিকে তাকান। জবাব দেয়, “চাচ্চুকে আসার জন্য বলব। অনেক হয়েছে এবার সব মিটমাট করে নেও।”
সাজেদ খান কিছু বলেননা। ইশরাক স্থান ত্যাগ করে। বাকীরা সাজেদ খানের দিকে তাকিয়ে রয়। ওনাদের দুই ভাইয়ের রাগ-জেদ দুটোই প্রখর। কেউ কারোর থেকে কম না। সেজন্যই তো সতেরো-আঠারো বছর হলো কেউ কারোর সাথে যোগাযোগ রাখেনি।
পরের দিন জাইমা ভার্সিটি আসে। এসেই মেহেরের সাথে বসে গল্প গুঁজবে মেতে উঠে। ইশরাক ক্লাসে আসলে জাইমা ভদ্র হয়ে যায়। পুরোটা ক্লাসে একটু দুষ্টুমিও করেনা। ব্যপারটা ইশরাকের চোখ এড়ায়নি। হুট করে মেয়েটা এতো ভদ্র হয়ে গেলো। জাইমার মনে পড়ে তার এসাইনমেন্ট জমা দেওয়া বাকী। ইশরাকের কথা মাঝে জাইমা দাঁড়িয়ে বলে, “স্যার আমার এসাইনমেন্ট।”
ইশরাক বিরক্ত হয়ে চোয়াল শক্ত করে নেয়। তার কথা বলার মাঝে ব্যাঘাত পছন্দ না। জাইমার মনে হয় কোন ম্যানার্স শেখেনি সেজন্য এরকম উদ্ভট বিহেভিয়ার। ইশরাক জাইমার কথায় পাত্তা না দিয়ে নিজের কথাটা শেষ করে। জাইমা ইশরাকের এট্টিটিউড দেখে বিরক্তিতে মুখ বাকায়। ইশরাক জাইমার সামনে দাঁড়াতে, জাইমা এসাইনমেন্ট এগিয়ে দেয়। এসাইনমেন্ট টান দিয়ে নিয়ে ইশরাক জাইমাকে গুরুগম্ভীর কন্ঠে বলে, ” আগামী কালকে আপনার হোমওয়ার্ক, ম্যানার্সের উপর স্টাডি করে আসবেন।”
“জ্বী নিশ্চয়ই।”
ইশরাক বিড়বিড় করে বলে, “ড্রামা ফ্যাক্টরি।”
জাইমা সেটা শোনে ভদ্রতার সহিত মাথা নাড়ায়। মেহেরের দিকে তাকিয়ে ইশরাককে বলে, “স্যার মেহেরের প্রেজেন্টেশন কবে?”
জাইমার কথায় মেহের হা হয়ে যায়। সে তো এরকম কিছু জিজ্ঞেস করতে বলেনি। ইশরাক জাইমার দিকে তাকিয়ে বলে, “আপনার দেখছি অনেক তাড়া। ঠিক আছে,
আগামী কালকে আপনি প্রেজেন্টেশন দিবেন।”
ইশরাকের কথায় জাইমা হা হয়ে যায়। মেহের না হেঁসে পারেনা। জাইমা শুকনো ঢোক গিলে বলে, “আমার তাড়া নেই স্যার। আগামী কালকে মেহেরকে দিন। আমি পরেরদিন প্রেজেন্টেশন দেব।”
“স্যার ওকে দিন। ওর তাড়া বেশি সেজন্য আমার কথা বলছে।”
“না স্যা…
” জাস্ট শাট আপ।”
ইশরাক ধমকে বলে। জাইমা চুপসে যায়। ইশরাক চোখ গরম করে জাইমার দিকে তাকিয়ে বলে, “আমার ক্লাসে ডিস্টার্ব করার জন্য, আপনি বাকী সময় দাঁড়িয়ে থাকবেন। দ্বিতীয়ত, আগামী পরশু থেকে টানা দুইদিন আপনি প্রেজেন্টেশন দিবেন। যদি না দিয়েছেন তাহলে আপনার মার্ক কাট করে দেব।”
জাইমা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে ইশরাকের কথায়। রাগে কান গরম হয়ে ওঠছে। ইশরাকের প্রতি এতো রাগ হচ্ছে তার। তারচেয়ে বেশি হচ্ছে মেহেরের প্রতি। সে তো আগ্রহ থেকে জিজ্ঞেস করেছিল এটা। কিন্তু ইশরাক তাকে এরকম একটা বাঁশ হাতে ধরিয়ে দিবে ভাবতে পারেনি সে। ইশরাক নিজের আলোচনায় আসে। পুরোটা সময় জাইমাকে দাঁড় করিয়ে রেখেছে সে।
ক্লাস শেষ করে বের হতে জাইমা ক্রেডিট কার্ড হাতে ইশরাকের পেছনে আসে। পেছন থেকে ডাক দিয়ে বলে, “স্যার ওয়ান মিনিট।”
ইশরাক দাঁড়ায়। জাইমা মাথা নিচু করে কার্ডটা এগিয়ে দিয়ে বলে, “পঁচিশ হাজার লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে।”
ইশরাক কার্ডটা নিয়ে নেয়। জাইমার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে। কোন রকম প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে চলে যায়। জাইমা ইশরাকের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুখ বাকায়। গালি দেয়। বিরক্ত হয়। এক আকাশ ক্ষোভ জমে আছে। সেজন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামী কালকে সে ভার্সিটি আসবে না। যা কিছু হয়ে যাক না কেন। এই ইশরাকের মুখ দেখার কোন ইচ্ছে তার নেই। সারাক্ষণ মুখ একটা গম্ভীর করে রাখে। জাইমা বিরক্ত হয়ে ক্লাসে চলে আসে।
মনঃক্ষুণ্ন হয়ে বাকী ক্লাস গুলো শেষ করে একা,একা বেরোয়। এখন লিফটে বেশ ভিড় থাকবে ভেবে, ধীরে,ধীরে হাঁটে। বাইরে বেশ গরম সেজন্য মিনি ফ্যান হাতে মুখের সামনে বাতাস দেয়। লিফটের সামনে আসতে দেখে অনেকে লিফটে ঢুকেছে অনেকে দাঁড়িয়ে আছে। জাইমাও তাদের সাথে দাঁড়ায়। দ্বিতীয় দফাতেও সে লিফটে জায়গা পায়নি। সেখানে দেওয়ালের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। একে,একে সবাই চলে যায়। তৃতীয় দফায় সে একাই যাবে লিফট দিয়ে। ভেবেই খুশি হয়। একে তো ইশরাক আজকে তার মান-ইজ্জত ফালুদা বানিয়েছে। জন সম্মুখে একসাথে যাওয়ার মানেই হয়না।
জাইমার আনন্দ ঘন মূহুর্ত বেশীক্ষণ স্থায়ী হয়না। কারণ, ইশরাক ফোন একটা কানে গুঁজে কথা বলতে, বলতে লিফটের সামনে আসে। জাইমা ইশরাককে দেখে বিরক্ত হয়। কী করবে,কী করবে ভেবে নিজের ফোনটা ব্যাগ থেকে বের করে। কল আসেনি তবুও কানে ফোন রেখে বলে, “হ্যাঁ দাদী। বলো?”
কিছুক্ষণ পর আবার বলে, “না,না এখানে কে আসে। আগে যদি জানতাম এতো বড় মাপের মুখচোরা গরগরলালের সাথে দেখা হবে কখনোই আসতাম না।”
আবার হেঁসে বলে, “কী বললে তুমি? হ্যাঁ এটাই ঠিক বলেছ। একবারে গোমড়ামুখো বুড়ো। বিয়ে করবে কে শুনি?”
কথাটা বলে জাইমা লিফটে প্রবেশ করে। ইশরাকও লিফটে প্রবেশ করে। জাইমা লিফটে ঢুকেও জোরে হাসতে,হাসতে বলে, “হ্যাঁ সেজন্য তো বলি, আশি বছরের বুড়ো কিন্তু ভাব নেয় পঁচিশ বছরের।”
জাইমার হাসি দেখে ইশরাক বিরক্ত হয়। সামনের দিকে তাকিয়ে বলে, “পাবলিক প্লেসে উড়নচণ্ডীর মতো কেউ হাসে না। পাশের মানুষ বিরক্ত হয়।”
জাইমার হাসি থেমে যায়। জেনো তার হাসি ইশরাকের সর্বাঙ্গে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। তখনি জাইমার ফোনে কল বেজে উঠে। ইশরাক বুঝে এতোক্ষণ যা করেছে সব নাটক। দ্বিতীয়ত এসব কথাবার্তা তাকেই বলা হয়েছে। জাইমা লজ্জায় মুখটা কোথায় লুকাবে সেটা ভেবে পাচ্ছেনা। এই মূহুর্তে মনে হচ্ছে, লিফট ফাঁকা হয়ে যাক সে গা ঢাকা দিবে। কী লজ্জা!
প্রণয়ের প্রিয়কাহন পর্ব ৪
ইশরাক নিজের ঠোঁটের কোণের হাসি থামিয়ে নেয়। জাইমা কল কেটে দিলে আবারো বেজে উঠে। ইশরাক তার অবস্থা দেখে পুনরায় বিড়বিড় করে বলে, “ড্রামা ফ্যাক্টরী।”
জাইমা বিরক্ত হয়ে ফোন অফ করে নেয়। রাগ-জেদ-লজ্জা সব ঘিরে ধরেছে তাকে। মনে,মনে ইশরাককে হাজারটা গালি দিচ্ছে। জাইমা
লিফট থেকে বেরুতে,বেরতে বিড়বিড় করে বলে, “মুখচোরা গরগরলাল।”