প্রণয়ের বাঁধন পর্ব ২২
মুসতারিন মুসাররাত
তৃষাকে দেখার সাথে সাথেই ইভানের মুখাবয়ব কঠিন হয়; ইচ্ছে করছে সজোড়ে কষিয়ে একটা চপটেঘাত করতে। তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলে পরপর নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে ইভান। তৃষা নিচে পরা ফুলগুলোর দিকে একবার তাকিয়ে আবার দৃষ্টি তুলে ইভানের দিকে তাকাল। উপহাস করে সুরেলা কণ্ঠে বলল,
-” ইশশ্! এইরে ফুলগুলো তো ন’ষ্ট হয়ে গেলো। একদম সোজা ময়লার মধ্যে পরল। সো স্যাড! তা বউয়ের জন্য নিচ্ছিলে বুঝি!”
ইভান স্পষ্ট রাগি দৃষ্টিতে তাকায়। ভ্রু বাঁকিয়ে ছোট করে বলল,
-” তোহ?”
-” গুড…গুড জব।”
একটু থেমে ফের ব্যঙ্গাত্মক ভঙিতে শুধোয়,
-” তা একটা আনস্মার্ট, সাধারণ মেয়ের মধ্যে কী এমন দেখলে? যে এত তাড়াতাড়ি প্রেমে পরে গেলে। বউয়ের প্রেমে হাবুডুবু খাওয়া শুরু করলে যে। দেখতে আহামরি সুন্দরীও নয়; ওই সাধারণ মেয়েটা তোমার স্ট্যাটাসের সাথে যায়? বলো ইভান যায়?”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন করে চোখ পিটপিট করে দুই হাত বুকে ভাঁজ করে উত্তরের অপেক্ষায় রয় তৃষা। ইভান তৎক্ষণাৎ বলল,
-” কবিগুরুর একটা কথা মনে পরে গেল; উপযুক্ত সময়ে উপযুক্ত কথাটাই মনে পড়েছে। কবিগুরু বলেছেন, ‘সৎ পথে করিও ভ্রমণ যদিও হয় দেরি, অসৎ নারী না করিও বিয়ে যদিও হয় পরি!’ উত্তরটা এর মধ্যে আছে; আশাকরি বুঝে নিয়েছো।”
তৃষার মুখ থমথমে হয়ে যায়। এক ঝটকায় অপমানে ফর্সা মুখটা কালোয় ছেয়ে যায়। ইভান দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
-” আফসোস হয়। খুব বেশিই আফসোস হয়; নিজের রুচির উপর। থ্যাংক গড! অসংখ্য ধন্যবাদ সৃষ্টিকর্তার উপর। ঠিক শেষ মুহূর্তে এসে বড় বাঁচা বেঁচে গিয়েছিলাম।”
তৃষা ভেতরে ভেতরে সাপের মত রাগে ফোঁসফোঁস করছে। সব রাগ গিয়ে ঠেকছে এক বিন্দুতে। সেই বিন্দু হলো ‘তনুজা’ এই একটা মেয়ের জন্য ওরা দুইভাই তাকে খা’রাপ বলে অ’পদস্থ করে চলছে। না আর মানা যাচ্ছে না। তৃষা ফণা তোলা সাপের মত ফোঁস করে মুখ খুলল। কণ্ঠে ঝরল তীব্র আক্রোশ রাগ-ক্ষোভ,
-” আমার একাধিক রিলেশন ছিলো এইজন্য আমি খা’রা’প! এইজন্য আমার সাথে বিয়ে না হয়ে বড় বেঁচেছো, রাইট? আমি যদি রিলেশন করে খা’রাপ হই? তাহলে সেই একই দোষে তনুজাকেও তো দোষী সাব্যস্ত করতে হয়। তবে তনুজার বেলায় তোমরা কেনো অন্ধ? বলো…বলো তো আমায়?”
ইভান রাগান্বিত স্বরে বলল,
-” ডো’ন্ট টক ননসেন্স। অল অর নট লাইক ইউ! ফারদার তনুজার সাথে নিজের তুলনা করবে না।”
কথার মাঝেই তৃষা গা জ্ব’লু’নি দিয়ে শব্দ করে হাসল। আপনাআপনি ইভানের আঙুল মুষ্টিবদ্ধ হয়ে আসে; দাঁত কটমট করে চাইল। তৃষা হাসি থামিয়ে পরপর বলে উঠল,
-” তোমার বউ তনুজা.. সতী সাবিত্রী তনুজা এতটাই লয়াল? একজনের সাথে বিয়ের আগে রঙ্গলীলা করে, খুব সুন্দর করে সেসব হাইডে রেখে; বরের সাথে সংসার করে যাচ্ছে। এটাকে কী প্রতারণা বলে না? এটাকে কী চিট করা বলে না? তোমার সাথে চিট কী শুধু আমিই করেছি? তনুজা করেনি? করছে না? ইভেন এখনও প্রতিনিয়ত চিট করে চলছে ও। তনুজা তো সুন্দর নিখুঁত অ্যাক্টিং করে যাচ্ছে তোমার সাথে। আমি যতটুকু জানি ওর মনে এখনো অন্যকেউ আছে। অতীত লুকিয়ে তনুজা তোমাকে ঠকাচ্ছে না ইভান?”
ইভানের মেজাজের পারদ সর্বোচ্চ হয়। গলার স্বর চড়িয়ে বলল,
-” একদম আ’জে’বা’জে কথা বলবে না। আমি আবারও বলছি, সবাই তোমার মত নয়। এটা পাবলিক প্লেস, তাই সিনক্রিয়েট করতে চাইছি না। নাহলে তনুজা সর্ম্পকে আজেবাজে বলায়, তোমার গায়ে হাত তুলতেও আমি দু’সেকেন্ড সময় নিতাম না।”
-” বাহবা! এতটা অন্ধ বিশ্বাস বউয়ের উপর। আমার না একটা কথা ভীষণ জানতে ইচ্ছে করে। মা’রা’ত্মক কিউরিওসিটি হয় আমার। কিউরিওসিটি দমিয়ে রাখতে না পেরে আজ প্রশ্নটা করেই ফেলছি; আচ্ছা ওই মেয়ে জাদুটোনা জানে নাকি? তোমরা দুই ভাইই যে ওই মেয়ের প্রতি একদম অন্ধ হয়ে গেলে।”
শেষের কথা শুনে ইভানের কপালে পরপর দু’টো ভাঁজ পরে। দুইভাই বলতে কাকে বোঝাচ্ছে? দিব্যকে? কিন্তু কেনো? ইভানের মনে প্রশ্নের সঞ্চার হয়। ইভান প্রশ্ন করে উঠল,
-” কী বলতে চাইছো তুমি?”
তৃষা বাঁকা হাসল। বলল,
-” সেকি ইভান আমার ধারণাই তাহলে ঠিক। এতক্ষণ তো আমি ধারণার উপর কথা বলে যাচ্ছিলাম। তোমার বউ সত্যিই তার প্রেম কাহিনী লুকিয়ে রেখেছে! তোমার বউয়ের যে তোমারই ছোট ভাইয়ের সাথে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো; সেসব কিছুই জানো না? আমি যেমন কথায় স্পষ্টভাষী, ঠিক তেমনি কাজেও। তাই তো কোনকিছু অগোচরে, আড়ালে-আবডালে থাকে না। সেইজন্য সবার কাছে খুব সহজেই খা’রাপ হয়ে যাই। নিজেকে সতী সাবিত্রী দেখাতে তনুজার মতো মিনমিন করে মিথ্যে বলে, গোপন করে চললে; আজ আমিও সবার কাছে ভালো থাকতাম, হুঁ।”
“ছোট ভাইয়ের সাথে..” কথাটা ইভানের কানে ঢোল পিটিয়ে যাচ্ছে। লহমায় ইভানের চক্ষু দু’টো রাগে লাল টকটকে হয়ে আসে। আ/গু/নের লাভা বেরুচ্ছে যেন। তৃষাকে যেন চোখ দিয়েই ভ’স্ম করে দিবে। ইভান ব্রজকণ্ঠে বলল,
-” মাইন্ড ইউর ল্যাংগুয়েজ। আর একটা উল্টাপাল্টা কথা বললে তোকে আমি এখানেই খু//ন করে ফেলব।”
তৃষা ইভানের রাগের তোয়াক্কা করল না। থোড়াই কেয়ার করে ও বলল,
-” শাট আপ! জাস্ট শাট আপ। আমি একটাও উল্টাপাল্টা কথা বলছি না। আর নাতো মিথ্যে। কোনটাই নয়। যা বলছি সব জেনেশুনেই বলছি। আই ওয়েললি নো। দিব্য তনুজাকে ভালোবাসে। এন্ড তন__”
কথাটা সম্পূর্ণ না করতে দিয়ে ইভান কর্কশ স্বরে বলল,
-” আমি যতটা জানি দিব্যর সাথে তোমারও তো রিলেশন ছিলো। এখন শুধু শুধু কোন হিংসা পরায়ণ হয়ে বেহুদা তনুজার নামে মিথ্যে বলছো, শুনি? তুমি আমাকে যা বলবে বাচ্চা শিশুর মতো আমি তাই বিলিভ করব? লাইক সিরিয়াসলি?”
তৃষা বি’র’ক্ত হয়। সাথে প্রচন্ড রাগও হয় তনুজার প্রতি এত বিশ্বাস-ভরসা দেখে। এই বিশ্বাস ভরসা দেখে তৃষা উন্মাদ হয়; রাগে-ক্ষোভে ফেটে পরে। তীব্র প্রতিবাদের সুরে বলল,
-” তুমি ভুল ইভান, তুমি ভুল। আমি সত্যি বলছি দিব্য-তনুজা দু’জন দু’জনকে ভালোবাসতো। ইভেন এখনও বাসে। এইযে হুট করে দিব্য ইউএসএ পারি জমানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছে, এটা কী এমনি এমনি? নিজের প্রেমিকাকে একই বাড়িতে অন্যকারো সাথে নিজ চোখে মেনে নিতে পারছে না জন্যই দিব্য শুধু বাড়ি নয়, এই শহর নয়; দেশ ছেড়েই চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
ইভানের সময় যেন থমকে গেল। মুখটা চুপসে ছোট হয়ে আসে। কেনো জানি তৃষার কথাগুলো মিথ্যে মনে হচ্ছে না। হঠাৎ দিব্যর ইউএসএ যাওয়ার ডিসিশন যে এমনি এমনি নয়, তা ইভানকেও ভাবায়। তবে এইজন্য! তা ইভানের কল্পনা কেনো; দুঃস্বপ্নেও ছিলো না। ইভানের বুকের ভেতরটায় তোলপাড় শুরু হয়। মন থেকে প্রে করছে, তৃষার কথাগুলো যেন মিথ্যে হয়। কস্মিনকালেও যেন সত্যি না হয়। তৃষা ছোট করে নিঃশ্বাস টেনে পুরোদমে শুরু করে,
-” আমার কথা যদি বিশ্বাস না হয়, তাহলে দিব্যর ফ্রেন্ড সার্কেলে খোঁজ নাও। সেখান থেকেই সত্যি জানতে পারবে। এদিকে আমি অল্প-স্বল্প জানি লিমনের কাহিনী। তোমার একবারও মনেহয়নি লিমন তনুজাকে চেনে কী করে? কারন দিব্যর বন্ধু লিমন। আমি যতটুকু জানি লিমন তনুজাকে পছন্দ করতো। ওদিকে দিব্যর সাথে তনুজার সম্পর্ক দেখে বেচারা মেনে নিতে না পেরে ওরকম একটা গেইম খেলেছে। বেচারা নিজেও পেল না, দিব্যকেও পেতে দিলো না তনুজাকে। মাঝখানে ক্যাচটা তুমি ধরে ওদের দু’জনকে একসাথে আউট করে দিলে। ছোট ভাইয়ের প্রেমিকাকে বিয়ে করে নিলে।”
তৃষা রঙচঙ মাখিয়ে সত্যের সাথে খানিক মিথ্যেও বলে। ইভানের মস্তিষ্ক ফাঁকাফাকা লাগছে। হঠাৎই সেদিন ক্লিনিকে তনুজার বান্ধবীর বলা কথা স্মরণ হয় ইভানের, ” ওনার সাথে তোর বিয়ে হয়নি?” দুইয়ে দুইয়ে এইবার চার হয়। তারমানে তৃষার কথাগুলো মিথ্যে নয়। ইভানের মাথায় বিনা মেঘে বজ্রপাত ঘটলো। সাথে যেন সবকিছু ভেঙে চুরমার করে ফেলছে। ইভানের নিজেকে অসাড় লাগছে। তৃষা মনে মনে পৈ’শা’চি’ক আনন্দ অনুভব করছে। মুখে মিথ্যে বেদনার ছাপ টেনে আনল। দীর্ঘশ্বাস ফেলে গলার স্বর নিচু করে বলল,
-” স্যরি ইভান, আমি এভাবে বলতে চাইনি। এসব বলে মোটেই তোমাকে হার্ট করতে চাইনি। তোমাকে আমি ভালোবাসতাম, এন্ড এখনো বাসি। শত হোক তুমি আমার প্রথম ভালোবাসা। জীবনে অনেক কিছুই আসে যায় তবে কখনোই প্রথম ভালোবাসাকে ভুলা যায় না। শরীর দেওয়া যায়, কিন্তু মন! মন সে তো আ’মৃ’ত্যু প্রথম ভালোলাগা আর ভালোবাসাকে মনে রাখে।”
সুক্ষ্ম খোঁচা দিয়ে কথাগুলো বলে তৃষা। ইভান বাকরুদ্ধ, নিস্তব্ধ, কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে শুণ্য দৃষ্টিতে চেয়ে রয়। ফুলগুলো অমনি অবহেলায় পরে রইল। পথচারীর পদাঘাতে পি’ষ্ট হতে থাকল। নতুন করে ফুলের তোড়া নেওয়ার চিলতে আগ্রহ জাগল না ইভানের মধ্যে। পরপর সম্বিৎ ফিরে পেতেই গাড়িতে উঠে বসে। শব্দ করে ডোর লাগিয়ে সিটে কাঁধটা এলিয়ে দেয়। ক্লান্ত ভঙিতে চোখদুটো বুঁজে নেয়। অস্ফুটে আওড়ায়,
-” আমি এখনও মন থেকে চাইছি, যা ভাবছি; সবটা যেন মিথ্যে হয়। ফের যেনো মেয়ে জাতির কাছে আমাকে ঠকতে না হয়!”
তনুজা কাচা কভারগুলো বালিশে ভরে বিছানাটা ঠিক করে পাশ ঘুরতে নিলে; আচমকা সেন্টার টেবিলের উপর থাকা কাঁচের গ্লাসটা শাড়ির আঁচলে বেঁছে ফ্লোরে পরে কয়েক টুকরো হয়ে যায়। সুন্দর গ্লাসটার এহেন দশা করায় তনুজার মুখটা ম্লান হয়ে আসে। তড়িৎ হাঁটু গেড়ে বসে কাঁচের টুকরোগুলো তুলতে থাকে। হঠাৎ ডানহাতের তর্জনীতে কাঁচের অংশ লাগতেই মৃদু আর্তনাদ করে ওঠে,
-” আহ্!”
বলে পরপর আঙুলের দিকে তাকায়। আঙুলের ডগায় লাল তরল পদার্থ গড়িয়ে পরছে। তনুজা পাশ থেকে টিস্যু নিয়ে আঙুলটা মুছে নেয়। অতঃপর টুকরোগুলো বাইরে ময়লার ঝুড়িতে ফেলে আসে।
পড়ার টেবিলে বসে প্র্যাকটিক্যাল খাতা তৈরি করছে তনুজা। এদিকে লিখতে গিয়ে আঙুলে চাপ পড়তেই ক্ষ’ত স্থানে ব্যাথা লাগছে। অবশেষে খাতাগুলো গুছিয়ে রাখতে রাখতে ঘড়ির দিকে তাকায়। ঘড়ির কাঁটা রাত নয়টার ঘর পেরিয়েছে। এরমধ্যে দরজার নব ঘুরিয়ে ভেতরে ঢোকে ইভান। শব্দ শুনে তনুজা ব্যস্ত হয়ে উঠে দাঁড়িয়ে ইভানের দিকে তাকায়। স্মিত হেসে বলল,
-” ওহ্, আপনি?”
তনুজা কয়েক কদম এগোয়। রুমের মাঝে সটান দাড়িয়ে তনুজার দিকে চেয়ে ইভান। ইভানের সবসময় পরিপাটি থাকা চুলগুলো এলোমেলো, কপাল ছাড়িয়ে ভ্রুয়ের কাছাকাছি নেমেছে। মুখাবয়ব টানটান, দৃষ্টিজোড়া নিস্পন্দ। তনুজার হঠাৎ আজকের ইভানকে কেমন অদ্ভুত অন্যরকম ঠেকল। এ’কদিনের ইভানের সাথে আজকের ইভানের বেশ তফাৎ লাগছে। এ ক’দিনে রুমে ঢুকেই প্রথমে মিষ্টি একটা হাসি উপহার দেয়। সাথে সারাদিনের ক্লান্তি দূর করতে তনুজাকে আলিঙ্গন করা, তারপর মনটা ফুরফুরে করতে লম্বা কিস করা। ইভানের এসব পা’গ’লামি কাজ আর কথা শুনে আজ ক’দিনে তনুজা অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে। আজ ইভানের দৃষ্টি, মুখাবয়ব অন্যরকম ঠেকছে। কিছু ভেবে তনুজা মিহি স্বরে জিজ্ঞাসা করল,
-” আপনাকে কেমন যেন দেখাচ্ছে। ঠিক আছেন? না মানে শরীর খা’রা’প লাগছে কী?”
ঝ’ড়ের আগে প্রকৃতি যেমন নীরব, শান্ত গুমোট থাকে, ঠিক তেমনি ইভানও ঠান্ডা নিস্পন্দ আছে। তনুজার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করল ইভান। একদম ঠান্ডা অথচ প্রগাঢ় স্বরে শুধালো,
-” দিব্যকে আগে থেকেই চিনতে তুমি?”
মস্তিষ্কে কথাটা ঢুকতেই সোজা প্রশ্নটা ছু’রি’র মত সোজা বুকে গিয়ে গাঁথে তনুজার। মূহুর্তেই বুকটা ভ’য়ে আ’তং’কে এফোঁড়-ওফোঁড় হয় ওর। এই প্রশ্নের অর্থ তনুজা ঢের অনুমান করতে পারছে। অবচেতন মন আওড়ায়,
-” তবে কী কোনভাবে ইভান জেনে গিয়েছে? কীভাবে?”
তনুজার হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়ার জো হয়েছে। মস্তিষ্ক শুণ্য লাগছে। তনুজাকে নিরুত্তর দেখে ইভানের কপালের ভাঁজ প্রগাঢ় হয়। জলদগম্ভীর স্বরে ফের বলল,
-” কী হলো আমি তোমাকে প্রশ্ন করেছি? আনসার মি?”
ইভানের ধ’ম’কে তনুজা কেঁপে উঠল। তনুজার দু’চোখ কান্নায় ভেঙে আসার জোগার; কোন রকমে কান্না সংবরণ করে মাথা নুইয়ে কাঁপাকাঁপা স্বরে বলে,
প্রণয়ের বাঁধন পর্ব ২১
-” হ-হু।”
ইভান চোখদুটো বুজে নেয়। বুক চিঁড়ে তপ্ত নিঃশ্বাস বেরুয় ওর।