প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে পর্ব ১৩
আদ্রিতা নিশি
মা তুমি কি অবুঝ হয়ে গেছো?বিড়ালের কি হাত আছে? বিড়াল কিভাবে ফ্রিজ থেকে আইসক্রিম বের করবে?
অরিত্রিকা বিরক্তি প্রকাশ করে বললো।সাথী বেগমের এবার হুঁশ ফিরলো মেয়ের কথায়।এটা তো ভেবে দেখেননি তিনি।এতোক্ষণ অযথা বিড়াল খুঁজছিলেন। সাথী বেগম বোকামি বুঝতে পেরে বললেন ~ আসলেই তো এটা ভেবে দেখিনি।
অরিত্রিকা একবার সারহানের দিকে তাকিয়ে সাথী বেগমকে বললেন~ তোমায় যে যা বলবে তাই বিশ্বাস করবে?
আরশাদ সাহেব বললেন ~ যা হয়েছে তা নিয়ে ভেবে কাজ নেই। আমাদের মধ্যে হয়তো কারো থেকে ঘটনা টা ঘটেছে।
সাথী বেগম নিজের বোকামোতে নিজেই লজ্জা পেয়েছেন তাই তাড়া দিয়ে বললেন~ এসব ভেবে আর কাজ নেই। আমার অনেক কাজ বাকী আছে। আমি গেলাম।
সাথী বেগম চলে যেতেই অরিত্রিকা সারহানের দিকে গিলে খাওয়া দৃষ্টিতে তাকালো।সবসময় সুযোগ বুঝে তাকে অপ/মান করে। সারহান তার বাবার সাথে কথা বলায় ব্যস্ত থাকায় খেয়াল করে নি।সাদাত সারহানের দিকে অরিত্রিকাকে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললো~ এমন পিশাচিনীর মতো তাকিয়ে আছিস কেনো ভাইয়ের দিকে?
সাদাতের কথা শুনে সারহান কথা থামিয়ে দিয়ে অরিত্রিকার দিকে নিবিড় দৃষ্টি ফেললো।আরশাদ সাহেবও তখনি অরিত্রিকার দিকে তাকালেন। অরিত্রিকা দৃষ্টি নিচু করলো। মুখশ্রী থমথমে।এই সাদাতটা বড্ড অ/সভ্য। এভাবে সকলের সম্মুখে বলার কোনো মানে হয়? আরশাদ সাহেব চোখে থাকা চশমা ঠেলে বললো~ কিছু বলবে আম্মা?
অরিত্রিকা এমন আদুরে ডাক শুনে থমথমে ভাব কাটিয়ে হেসে ফেললো।আরশাদ সাহেব অরিত্রিকাকে নিজের সন্তানের ন্যায় ভালোবাসেন।সাদাত, সারহানের জন্য কোনো কিছু কিনলে অরিত্রিকার জন্যও বরাদ্দ থাকে।ছোট থেকেই বড় বাবা আর বড় মার আদর পেয়ে বড় হয়েছে।অরিত্রিকা আরশাদ সাহেবকে হেসেই বললো~ তেমন কিছু না বড় বাবা।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
আরশাদ সাহেব বললেন~ ওহহ আচ্ছা। তোমার গ্যাং এর আরো দুজন সদস্য কই?সকাল থেকে তো তাদের কোনো দেখা পেলাম না।
অরিত্রিকা বললো~ ওরা তো ছাঁদে। আমিও ছাঁদে ছিলাম। সাদাতকে ডাকতে এসেছিলাম।
আরশাদ সাহেব বললেন~ ওদের ডেকে নিয়ে এসো।সকালের খাবার খাবো সকলে একসাথে বসে।
~ঠিক আছে।
অরিত্রিকা আরশাদ সাহেবের সাথে কথা বলে ছাঁদে ইফা আর ইশরাকে ডাকতে গেলো।
আরশাদ সাহেব সারহানের উদ্দেশ্যে বললেন~রাজনীতির পাশাপাশি আমাদের অফিসের কাজকর্মে একটু মনোযোগী হও।
সারহান আরশাদ সাহেবের কথা শুনে বললো~ ইলেকশন হয়ে যাক। তারপর থেকে অফিসেও সময় দেবো।
~ ঠিক আছে তাহলে ওই কথাই রইল।আমি বাগান থেকে একটু হেঁটে আসি।
~ ওকে।
আরশাদ সাহেব বাগানে হাঁটতে চলে গেলেন।প্রতিদিন ভোরে হাটাহাটি করলেও আজ ভোরে হাটাহাটি করা হয়নি।সারহান নিজের ফোন বের করে আবিরকে টেক্সট পাঠালো-“এমপি মহোদয়ের সাথে মিটিং আছে এগারো টায়।” আবিরের রিপ্লাই আসলো তখনি ” পৌঁছে যাবো”।সারহান ফেসবুক ওপেন করলো। ফোন স্ক্রল করতে করতে একটা পোস্ট তার চোখে পরলো।যেখানে নয়ন তালুকদার ভদ্রবেশী নেতার ন্যায় মানুষকে খাবার,কর্মসংস্থান, বাড়ি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভাষণ দিচ্ছেন।আমজনতার ভীড় জমিয়েছে ভাষণ শোনার জন্য। তাহলে নয়ন তালুকদার সাধারণ মানুষদের ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করছে?ভাবতেই সারহানের ওষ্ঠ জুড়ে তাচ্ছিল্যের হাসি ফুটে উঠলো।মানুষ কতোটা নি/কৃষ্ট হলে সাধারণ মানুষকে এভাবে মিথ্যা প্ররোচনায় ফেলে!!গরীব,দুঃখী দের ভরসা দিয়ে ভোট আদায়ের চেষ্টা চালাচ্ছে।মানবতার ফেরিওয়ালা সেজেছে অল্প দিনের জন্য।নিজের কার্যসিদ্ধি হয়ে গেলে সাধারণ মানুষকে ভুলে যাবে ।নয়ন তালুকদার একজন মুখোশধারী মানুষ। শুধু কাছের কিছু সংখ্যক মানুষ জানে নয়ন তালুকদারের আসল চেহারা।
সাদাত সারহানের ফোন থেকে ভেসে আসা নয়ন তালুকদারের ভাষণ শুনে সারহানকে বললো~ ভাই এটা তোমাদের দলের বিরুদ্ধে লড়বে সেই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না?
সারহান ফোন স্কিনে চোখ রেখেই বললো~হুম।এটাই সেই নয়ন তালুকদার নিশাদের মামা।
সাদাত উঁকি দিয়ে ফোনে নয়ন তালুকদারকে দেখে বললো~ এই মটকু নয়ন তো খুব খা/রাপ।টাকলুর ভাগ্নের সাহস আছে বলতে হবে না হলে কেউ শ/ত্রুর বাড়িতে বিয়ে করতে চায়।আমার তো ওই নিশাদকে একদম পছন্দ ছিলোনা। চাচার জন্য কিছু বলতে পারিনি।
সারহান ফোন স্ক্রল করা বন্ধ করে ফোন পকেটে রেখে দিলো।তারপর সাদাতকে উল্টে প্রশ্ন করলো~ ভার্সিটির ক্লাস কেনো মিস দিচ্ছিস? কিছুদিন পর ইনকোর্স তোর।পড়াশোনা বাদ দিয়ে দে।এমনিও পড়াশোনার প্রতি মন কোথায়? সব মন তো গার্লফ্রেন্ডদের কাছে পরে থাকে।
“গার্লফ্রেন্ডদের” কথা শুনে সাদাত কেশে উঠলো। সারহানের কাছে কোনো কথাই গোপন থাকেনা। কীভাবে যেনো সে জেনে যায়। সাদাতের মনে হয় তার পেছনে গুপ্তচর লাগিয়ে রাখা হয়েছে।সে সারাদিন যা করে সব এসে তার ভাইকে বলে দেয়। সাদাত ধরা পরা চো/রের ন্যায় বললো~ এসব কি বলছো তুমি? আমার তো কোনো গার্লফ্রেন্ড নেই।
ছোট ভাইয়ের মনোভাব বুঝে সারহান ঠোঁট বাকিয়ে হাসলো। হেসেই বললো~ আমার থেকে লুকিয়ে লাভ নেই ব্রো।এসব ছেড়ে পড়াশোনা কর। এমনিও ওদের সাথে বিয়ে হবেনা। এগুলা শুধুই টাইম পাস ছাড়া কিছুই না।আমার মনে হয় তুই অন্যের বউকে পাহারা দিচ্ছিস বিনা স্যালারিতে। কাজটা মন্দ নয়। ক্যারি ওন। এটা করতে চাইলে করতে পারিস। পরে কোনো সমস্যা হলে আমাকে বলতে আসবি না।
সাদাত সারহানের কথা শুনে আর কিছু বললো না। সারহানের করা অপ/মান শুনেও শুনলো না। তার ভাই থাকতে আর কোনো শ/ত্রুর দরকার পারবেনা। তারমানে এবারের গার্লফ্রেন্ড ও গেলো। এর আগেও দুইটা গার্লফ্রেন্ড ভেগেছে।নিশ্চয়ই তার ভাইয়ের কারসাজি। এবারের টাও গেলো।ভাবতেই মন খারা/প হলো সাদাতের।
মিতা বেগম সারহান আর সাদাতকে সোফায় বসে থাকতে দেখে এগিয়ে আসলেন তাদের দিকে।সারহানের সাথে এসে পর্যন্ত তেমন দেখা হয়নি। আফ্রিদিও তার মায়ের আগে এসে সোফায় বসে পরলো। মিতা বেগমও ছেলের পাশে বসে পরলেন।সারহান মিতা বেগমকে দেখে ভদ্রতাসূচক ভাবে বললেন~ আসসালামু আলাইকুম আন্টি।
মিতা বেগম বললেন ~ ওয়ালাইকুম আস সালাম। কেমন আছো বাবা?
~আলহামদুলিল্লাহ। আপনি কেমন আছেন?
~আলহামদুলিল্লাহ ভালো।তোমার সাথে তো দেখাই হয় না। রাজনীতি নিয়ে খুব ব্যস্ত সময় পার করছো বোঝা যাচ্ছে।
~হুম। সামনে ইলেকশন এসব নিয়ে একটু বিজি আছি।আংকেল আসলেন না কেনো?
~আর বলোনা তোমার আংকেল ব্যবসা নিয়ে অনেক ব্যস্ত। তাই আমাদের সাথে আসতে পারেনি।
সারহান আর কি কথা বলবে বুঝে উঠতে পারলোনা।সে ছোট্ট করে বললো~ ওহহ।
সাদাত আর আফ্রিদি দুজন নিরব দর্শক হয়ে সারহান আর মিতা বেগমের কথা শুনছে।মিতা বেগমের সারহানের সাথে কথা বলে মনে হলো ছেলেটা গম্ভীর হলেও ভদ্র, আচার-আচরণ সুন্দর, সাবলীল আছে।ইফা নিচে এসে তার মাকে সারহানের সাথে কথা বলতে দেখে এগিয়ে এসে মায়ের পাশে দাঁড়ালো। অরিত্রিকা তিশার সাথে ফোনে কথা বলতে বলতে সিঁড়ি দিয়ে নামছে।ইশরা অরিত্রিকার পিছু পিছু আসছে। মিতা বেগম সারহানকে বললেন ~ রাজনীতির পেছনে একটু কম ছুটে বিয়ে সাদি করে নাও। সংসার টাও তো করতে হবে। বয়স তো কম হলো না।
অরিত্রিকা তার মামির কথা শুনে ফোনে কথা বলা বন্ধ করে দিলো।সে কল কেটে খানিকটা এগিয়ে আসলো। ইশরা অরিত্রিকার পিছে গিয়ে দাঁড়ালো। ইফা তো উৎফুল্ল হয়ে বসে আছে সারহানের উত্তর শোনার জন্য।
সারহান সোফায় শরীর এলিয়ে পায়ের ওপর পা তুলে বসলো।তার মুখশ্রী গম্ভীর।সারহান গাম্ভীর্যতা বজায় রেখে বললো~রাজনীতিতে নিজের স্থান গড়ছি। বিয়ে নিয়ে এখনো ভাবিনি তবে ইলেকশনের পরে বিয়ে নিয়ে ভেবে দেখবো।
মিতা বেগম সারহানের উত্তর শুনে বললেন~ কোনো মেয়ে পছন্দ করেছো? না মানে এখনকার ছেলে মেয়েরা তো নিজেদের পছন্দে বিয়ে করে।
সারহানের এসব ব্যক্তিগত কথা বলার ইচ্ছে নেই। এসব নিয়ে সে কাউকে কিছু বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না।তবুও ভদ্রতার খাতিরে বসে আছে। সামনে থেকে চলে যাওয়াটা বেমানান দেখায়। উত্তরটা ইচ্ছে না থাকা সত্বেও দিতে হবে। সে কন্ঠস্বর স্বাভাবিক রেখেই বললো~ তেমন কেউ নেই।
মিতা বেগম খুশি হয়ে বললেন~ বাহহ।খুব ভালো তো।এখনকার দিনে এমন ছেলে পাওয়া দুষ্কর।
ইফা তো সারহানের বলা না সূচক উত্তর শুনে ভীষণ খুশি হয়েছে।তবে একটু সন্দেহ হচ্ছে আসলেই কি কেউ নেই?অরিত্রিকা প্রতিক্রিয়াহীন ভাবে দাঁড়িয়ে আছে।সে জানতো সারহান এমন উত্তরই দিবে।আফ্রিদি মায়ের কথা শুনে হায় হুতাশ করে বললো~ মা তুমি কি আমায় দেখতে পাচ্ছোনা? আমারও তো বিয়ের বয়স হয়েছে। আর কতোকাল সিঙ্গেল হয়ে ঘুরবো?বিয়েটা দিয়ে দাও তোমার ছেলের বউ আনি।
মিতা বেগম মেকি রাগ দেখিয়ে ছেলের কাঁধে চাপড় দিয়ে বললেন~ কোনো ছেলেকে দেখেছিস বিয়ের জন্য লাফায়?কানাডায় গিয়ে নির্ল/জ্জ হয়েছিস দেখছি।ছোট বড় না মেনে বিয়ের কথা বলে দিলি।
~আমি তো সত্যি বললাম। বিয়েটা দিয়ে দাও।
~অস/ভ্য ছেলে একটা।
অরিত্রিকা, সাদাত, ইফা,ইশরা আফ্রিদির কথা শুনে হেসে উঠলো। সারহানের মুখে কোনো হাসি নেই। সে মিতা বেগমকে বললো~ আন্টি আমার জরুরী কাজ আছে উঠতে হবে।
মিতা বেগম সারহানকে বললো~ ঠিক আছে বাবা। যাও।
সারহান নিজের হাতে থাকা ঘড়িতে টাইম দেখে নিলো।বেশী সময় নেই এখনই যেতে হবে। সে সোফা থেকে উঠে সদর দরজা দিয়ে গ্যারেজের দিকে গেলো।
চৌধুরী বাড়িতে ছোট খাটো যেনো ঈদ লেগেছে। অরিন মামী এসেছে জেনে চলে তাড়াহুড়ো করে ব্যাগ গুছিয়ে বাপের বাড়িতে চলে এসেছে।অরিনের হাসবেন্ড অফিসে যাওয়ার আগে চৌধুরী বাড়িতে রেখে গেছে। পড়ন্ত বিকেলে সবাই ছাদে আড্ডার আসর বসিয়েছে।এখানে সবাই উপস্থিত থাকলেও অনুপস্থিত আরশাদ সাহেব, আজমল সাহেব আফ্রিদি আর সারহান। বিবাহিত নারীরা সংসারের বিভিন্ন কথা নিয়ে মজে আছে। তাদের থেকে কিছুটা দুরত্ব রেখে অরিত্রিকা,সাদাত,ইশরা আর ইফা বসে আছে। তাদের গল্পের টপিক আলাদা। অরিত্রিকা কাল রাতের আইসক্রিমের কাহিনী সবাইকে বলেছে তবে খোলাখুলি সব কিছু বলেনি। সে যে কেনো অসুস্থ হয়ে পরেছিলো এটাও চেপে গেছে।সব কথা না বলাই শ্রেয়।ইশরা,সাদাত জানলে উঠতে, বসতে রা/গাবে। সবাই নিজেদের কথা বলার মধ্যে মশগুল থাকলেও ইফা চুপচাপ বসে কিছু একটা ভাবছে।সাদাত ইশরা আর অরিত্রিকাকে বললো~ ভার্সিটির এডমিশন তো এক সপ্তাহ পর থেকে শুরু হয়ে যাবে। পড়াশোনা শুরু কর। না হলে দেখা যাবে চাচা তোদের দুটোকে একসাথে বাড়ি ছাড়া করবে।
ইশরা চমকে উঠে বললো~ কি বলিস? আমি তো তোদের বাড়িতে এসে ঘুরে ফিরে বেড়াচ্ছি।সামনে এডমিশন ভুলেই গেছি। আমি কাল বাড়ি যাবো তাহলে।
অরিত্রিকা বিতৃষ্ণা নিয়ে বললো~ আর ভালোলাগেনা। আবার এডমিশন! আবার পড়াশোনা, গাদাগাদা বই পড়তে হবে।
সাদাত অরিত্রিকার কথা শুনে বললো~ এবার চান্স পেতেই হবে। নাহলে চাচাকে তো চিনিস! যে রাগ?
~হুমম রে। এবার চান্স পেতেই হবে যে কোনো ভার্সিটিতে।তবে এই শহর ছেড়ে যেতে ইচ্ছে হয় না। রাজশাহীতেই চান্স পেলে খুব ভালো হতো।
~ভালো করে পর তাহলে রাজশাহী ভার্সিটিতে চান্স পেয়ে যাবি। আমাদের রেকর্ড হয়ে থাকবে চৌধুরী বাড়ির সকল ছেলে মেয়ে রাজশাহী ভার্সিটির স্টুডেন্ট ছিলো।
~আসলেই।
তানিয়া বেগম আর মিতা বেগমের দুজনের কথা চলছে। অরিত্রিকা সেদিকে মনোযোগী হবে না স্থির করেও মনোযোগী হলো।কারণ সারহানের বিয়ে নিয়ে আবারও কথা তুলেছে মিতা বেগম। অরিত্রিকা মনে মনে খুব বিরক্ত হলো। সারহান ভাইয়ের বিয়ে নিয়ে এতো লাফালাফি কেন করছে সে বুঝে উঠতে পারছেনা। তার ওপর সকলে সায় জানাচ্ছে।ইশরা বসে থেকে সবকিছুই শুনতে পাচ্ছে।সে অরিত্রিকাকে ধীরে বললো~ বইন এইডা তোর মামী নাকি কোনো ঘটক? সারহান ভাইয়ের বিয়ের পেছনে লাগছে। এমন ভাব করতেছে মনে হচ্ছে যে মেয়ে পাবে তার সাথেই সারহান ভাইয়ের বিয়ে দিয়ে দিব। আমার ভয় করতেছে রে কখন যেনো আমার আর তোর বিয়ে টাও দিয়ে দেয়! সাবধানে থাকিস বইন।
অরিত্রিকার বিরক্তির মাত্রা বাড়লো।সে ইশরার কথার কোনো উত্তর দিলোনা।
প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে পর্ব ১২
~ভাবী আপনার মেয়েটা মাশাল্লাহ অনেক সুন্দরী,ভদ্র, নম্র।প্রথম দিনে দেখেই ভালো লেগেছিলো। আপনি কিছু না মনে করলে একটা কথা বলতে চাই।
তানিয়া বেগমের সংকোচজনিত কন্ঠস্বর অরিত্রিকাসহ বাকী তিনজনের কানে পৌঁছালো। মুহুর্তেই কান সজাগ হলো তাদের। তানিয়া বেগম কি বলতে চাইছেন!তা জানার জন্য তানিয়া বেগমের দিকে তাকালো সকলে।
মিতা বেগম তানিয়া বেগমের কথা শুনে বললেন~আরে বলুন। আমরা নিজেরাই তো, কিছু মনে করবোনা।
তানিয়া বেগম সংকোচ ভুলে গেলেন। তিনি বলে উঠলেন~আমি আপনার মেয়ে ইফাকে সারহানের বউ করে এই বাড়িতে নিয়ে আসতে চাই।
তানিয়া বেগমের এ বাক্য যেনো বজ্রের ন্যায় মনে হলো অরিত্রিকার।বক্ষস্থল ধক করে উঠলো তৎক্ষনাৎ। সে একমুহুর্তের জন্য যেনো স্তব্ধ হয়ে গেলো।