প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে পর্ব ৩৬

প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে পর্ব ৩৬
আদ্রিতা নিশি

চৌধুরী বাড়ির প্রতিটা সদস্য হতভম্ব হয়ে বসে আছে। সারহানের বন্ধু মহলের সকলে অবাক হয়েছে বেশ। অবাকতার রেষ অধীক হওয়ায় সকলের মুখে কোনো কথা নেই। সকলে সারহানের দিকে বাকরুদ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে। আরশাদ সাহেব ছেলের দিকে ক্রোধ মিশ্রিত চোখে তাকিয়ে আছেন। চোয়াল শক্ত করে ক্রোধ সংবরণ করছেন। সকলের সামনে এখন এই বিষয় নিয়ে ঝামেলা হবে। সারহান বিচক্ষণ, বুদ্ধিমান ছেলে হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত কেনো নিলো? তার খটকা লাগছে। নানা ভাবনা ঘিরে ধরছে তাকে। তানিয়া বেগম ছেলের মুখে বিয়ের কথা শুনেও খুশি হতে পারছেন না। চোখ মুখ থমথমে হয়ে গেছে। অরিত্রিকাকেই বা কেনো বিয়ের কথা বলছে? অন্য মেয়ে বিয়ে করতে চাইলে এক্ষুণি আকদ করিয়ে দিতো কিন্তু বাড়ির মেয়েকেই যে বিয়ে করতে চাইছে। এখন কি হবে ভাবতেই আতংকিত হয়ে আছেন। তিনি আজমল সাহেব আর সাথী বেগমের দিকে তাকালেন৷ দুজনের মুখই থমথমে হয়ে আছে। আজমল সাহেব যেনো কথা বলতেই ভুলে গেছেন। কি বলবেন বুঝে উঠতে পারছেন না।বিয়ে কি কথার কথা নাকি বললেই হয়ে গেলো। সারহানের প্রতি কিছুটা রেগে গেলেন তিনি।

সাথী বেগম ভীতু মুখে বারবার স্বামীর দিকে তাকাচ্ছেন। মনে মনে চাইছেন কোনো ভুল বোঝাবুঝি বা ঝামেলা না হোক।সারহানের ওপর রাগও করতে পারছে না। ছেলেটা তো খারাপ নয়। কিন্তু এমন সিদ্ধান্ত কেনো নিলো? একই প্রশ্ন সকলের মনে।সাদাত চোখ বুলিয়ে বুলিয়ে সকলকে পর্যবেক্ষণ করছে। নিস্তব্ধ শান্ত হয়ে আছে সকলে। এতোটা নিরবতা দেখে মনে হচ্ছে ঝড় ওঠার পূর্ব লক্ষণ।সাদাত ভাবতেই ঢোক গিলতে লাগলো। অরিন তো মাথায় হাত দিয়ে মেঝেতে বসে আছে। অবিশ্বাস্য চোখে সারাহ আর অরিত্রিকার দিকে তাকাচ্ছে। অরিনের মন বলছে এই কারণেই হয়তো অরিত্রিকা নিশাদকে বিয়ে করতে চাই নি। সারহানের ভাই আর তার ছোট অবুঝ বোনটা এতো দিন প্রেম করেছে নাকি? ভাবতেই অরিনের মাথা ঘুরিয়ে উঠলো। নাকের ডগায় বসে দুজন এতো কাহিনি করলো আর সে কিছুই জানতে পারলো না? এখন যে কি হবে কে জানে। কোনো ঝামেলা যেনো না হয় মনে মনে চাইছে সে। এসব মিটে যাক তারপর অরিত্রিকার পেট হতে আসল সত্যি জেনে ছাড়বে সে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

অরিত্রিকা স্তব্ধ হয়ে আছে। তার বিশ্বাস হচ্ছে না সারহান ভাই সকলের সামনে বিয়ের কথা বলবে। স্ট্যাচুর ন্যায় ইশারার হাত আঁকড়ে ধরে বসে আছে। বিয়ে নামক শব্দটার বারবার কানে বেজে যাচ্ছে। সারহানের ভাইয়ের সাথে বিয়ে ভাবতেই বুকের মাঝে উথাল-পাতাল ঢেউয়ের ন্যায় অনুভূতিরা খেলা করছে। বুক কাঁপছে। শরীরও শীতল হয়ে আসছে। সে দম নিয়ে সারহানের দিকে সংকোচ নিয়ে তাকালো। সারহান ঠাই হয়ে একদম স্বাভাবিক ভাবে সকলের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ভাবটা এমন বিয়ে একটা সাধারণ বিষয়। তেমন কিছু ভাবার নেই। অরিত্রিকা মাঝে ভয় কাজ করছে। তার বাবা মা, বড় মা, বড় বাবা কি মেনে নিবে? তার বাবা যে রাগী না জানি কি করে বসেন। আরও একটা চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে সারহান ভাই হঠাৎ আজই কেনো বিয়ের কথা বললেন?
আরশাদ সাহেব পরিস্থিতি বুঝে গম্ভীর কণ্ঠে বলে উঠলেন~ তুমি যা চাইছো তা কখনো হবার নয়। এসব বলে ঝামেলা বাড়িয়ো না।

সারহান আরশাদ সাহেবের এমন ব্যবহারে একটু বিরক্ত হলো। বাবা হয়ে ছেলের ভালোবাসার পূর্ণতায় বাঁধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। একেই বলে ঘরের শ ত্রু বিভীষণ।
সারহান শান্ত কন্ঠে বললো~ বাবা আপনি দেখছি মীর জাফরের থেকেও ভয়া বহ। ছেলে এই প্রথম মুখ ফুটে কিছু চাইলো তা না দিয়ে বিরোধীতা করছেন? দিস ইজ নট ফেয়ার বাবা।
আরশাদ সাহেব কেশে উঠলেন। চারিদিকে একবার তাকিয়ে গাম্ভীর্যভাব বজায় রেখে বললেন~ নিজের বাবাকে মীর জাফর বলছো?

সারহান বাঁকা হেসে বললো~ হ্যা বলেছি। মীর জাফর না হলে ছেলেকে একটু হলেও সাপোর্ট করতেন।আপনি তো ছেলের বিয়ের সমন্ধ চাচার কাছে জানাতে পারলেন না। কি আর করার এখন আমায় বলতে হচ্ছে। আমি আমার সিদ্ধান্ত সকলকে জানিয়ে দিয়েছি। বিয়ের ব্যবস্থা করা হোক দ্রুত। রাত হতে ঘুম নেই। অনেক ট্রায়ার্ড আমি।
আরশাদ সাহেব চুপ হয়ে গেলেন। তিনি বুঝেছেন সারহান এক কথার মানুষ। যা বলবে তাই করবে। তিনি হতাশা নিয়ে আজমল সাহেবের দিকে তাকালেন। আজমল সাহেব সারহানের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে। ভাবভঙ্গি দেখে বোঝার উপায় নেই মনে কি চলছে।

আজমল সাহেব হঠাৎ ই শব্দ করে জোরের সাথে উঠে দাঁড়ালেন। পান্জাবি টেনেটুনে ঠিক করলেন। চশমা ঠেলে সারহানকে সরাসরি কাটকাট স্বরে প্রশ্ন করলেন~ অরিত্রিকাকে বিয়ে করতে কেনো চাইছো?
সারহান নড়েচড়ে আজমল সাহেবের দিকে তাকালেন। তাকিয়ে কাটকাট স্বরে উত্তর দিলো ~ আমি আপনার প্রশ্নের উত্তর দিবো কিন্তু পরে। আগে আপনাকে একটা প্রশ্ন করি। তার উত্তর একটু ভেবে দিবেন।
আজমল সাহেব ভ্রু কুঁচকে বললেন ~ কি?
সারহানের মতিগতি কেউ কিছুই বুঝতে পারছে না। এতো হেয়ালি কেনো? তানিয়া বেগম সারহানকে কিছু বলতে যাবেন তার আগেই আরশাদ সাহেব অর্ধাঙ্গিনীকে ইশারায় থামিয়ে দিলেন। কিছু বলতে নিষেধ করলেন। তানিয়া বেগম স্বামীর বারণ শুনে বসে রইলে চিন্তিত হয়ে। সকলের মাঝে উৎকন্ঠা কাজ করছে। সারহান কি বলতে চাইছে।
সারহান সকলের ভাবনার অবসান ঘটিয়ে বললো~ আপনি আপনার মেয়ের সুখ চান? আপনি কি সারাজীবন মেয়েকে সুখী দেখতে চান?

অরিত্রিকা চিন্তায় অস্থির হয়ে যাচ্ছে এসির বাতাসে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমছে কপালে। কি হবে ভেবেই গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। সকলেই অদ্ভুত দৃষ্টিতে একটু পর পর তাকাচ্ছে। সে কি করবে বুঝতে পারছেনা। মাথা চিন্তায় কাজ করছে না।
অরিত্রিকা উদ্বিগ্ন হয়ে ইশরাকে ধীরে বললো~ বইন আজ আমি শেষ। বাবা যদি জানে আমি সারহান ভাইকে ভালোবাসি তাহলে তো আমায় বাড়ি থেকে বের করে দিবে।
ইশরা কথা না বলে অরিত্রিকার হাতে হাত রেখে চোখ দ্বারা ইশারা করে বুঝালো তেমন কিছু হবে না। টেনশন করিস না। অরিত্রিকার তাও যেনো চিন্তা,ভয় কমছে না।
আজমল সাহেব সারহানের করা প্রশ্নে অবাক হলো বটে। প্রশ্ন সহজ। তিনি বলে উঠলেন ~ সকল বাবা চায় তার মেয়ে সারাজীবন সুখে থাকুক, ভালো থাকুক।আমিও বাবা হিসেবে আমার মেয়ের সুখ চাইবো।
সারহান হাসলো মনে মনে। সে এমন উত্তরই আশা করেছিলো। সে মৃদু হেসে বললো~ তাহলে ফাইরুজকে জিজ্ঞেস করুন সে কি আমায় বিয়ে করতে চায়? নিজের প্রিয়তম সুখ কে সাড়া জীবন আঁকড়ে ধরতে চায়? যদি সে হ্যা বলে তাহলে বিয়ে হবে আর না বললে বিয়ে ক্যান্সেল।

আজমল সাহেব আশ্চর্যিত হলেন সারহানের কথায়। সারহান যথেষ্ট দৃঢ়তার সাথে কথাটা বলেছে। তারমানে নিশ্চয়ই কোনো কাহিনি আছে। মনে মনে তিনি চান না সারহান অরিত্রিকাকে বিয়ে করুক। কিন্তু বড় ভাইয়ের ছেলে বলে কথা মেপে বলছেন। অন্যকোনো ছেলে হলে হাত পা ভেঙে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে রেখে আসতেন। আজমল সাহেব অরিত্রিকার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালেন। অরিত্রিকা বাবার এমন চাহনিতে ভয়ে সিটিয়ে গেলো।সে ভয়ে ঢোক গিলতে লাগলো।
সাথী বেগম অরিত্রিকাকে ভয় পেতে দেখে আজমল সাহেবকে বললেন~ অরিত্রি ছোট মানুষ। উচ্চস্বরে কথা বলো না তাহলে মেয়েটা ভয় পেয়ে যাবে।
আজমল সাহেব সাথী বেগমের কথায় তেমন প্রতিক্রিয়া দেখালেন না। পা বাড়িয়ে অরিত্রিকার সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন। মুখ গুরু গম্ভীর। অরিত্রিকার বুক দুরুদুরু করছে। হাত কাঁপছে। সে ভীতু চোখে আজমল সাহেবের দিকে তাকালো। আজমল সাহেব অরিত্রিকার দিকে তাকিয়ে আছেন।
বাড়ির সকলে আজমল সাহেবের কার্যকলাপ দেখছে। আরশাদ সাহেব কিছু বলছেন না। ভাই কি বলে তা দেখার অপেক্ষায় আছেন।

আজমল সাহেব ছোট করে শ্বাস টেনে নিলো। তিনি কোমল স্বরে শুধালেন~ আমি আমার সিদ্ধান্ত একবার তোমার ওপর চাপিয়ে দিয়েছিলাম।ভুল মানুষের সাথে তোমার বিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। ভাগ্য ভালো ছিলো সারহানের জন্য বিয়েটা হয়নি। কিন্তু এবার আর তেমন ভুল করবো না।
এতটুকু শুনেই সকলে একটু চমকে গেলো।আজমল সাহেব আসলে কি বলতে চাইছেন। সারহান ভ্রু কুঁচকে চাচার কথার মর্মার্থ বোঝার চেষ্টা করছে।অরিত্রিকা মাথা নিচু করে আছে। সে বাবার কথার অর্থ বুঝতে পারছে না।
আজমল সাহেব একটু থেমে আবারও বললেন~ সারহান তোমায় বিয়ে করার জন্য সকলের সামনে প্রস্তাব রেখেছে। তোমার থেকে মতামত জানতে চাই। তুমি কি রাজি? হ্যা অথবা না তে উত্তর দিবে। আমি তোমার বিয়ে তোমার অমতে দিবো না। আমায় ভরসা করতে পারো।যা বলবে তাই হবে।
আজমল সাহেবের কথা শুনে অরিত্রিকা থমকে গেলো। সে অবাক হয়ে তাকালো বাবার দিকে। আজমল সাহেবের কোমল কন্ঠ শুনে অরিত্রিকা আবেগী হয়ে উঠলো। মেয়ের প্রতি আদর, স্নেহতে ভরা ছিলো ওই কথায়। বাবাদের ভালোবাসা এমনই হয়। অপ্রকাশিত থাকে।

আজমল সাহেব মেয়েকে ভরসার বাণী শুনিয়ে বললেন~ তুমি যা মন থেকে চাইবে তাই হবে। ভেবে আমায় তোমার মতামত জানাও।
অরিত্রিকা মাথা নিচু করলো। চোখ দিয়ে টপটপ করে অশ্রু পরছে। সে অনেকটা সময় পর নিচু স্বরে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে উত্তর দিলো ~ হ্যা।
আজমল সাহেব মেয়ের মাথায় হাত আদুরে বুলিয়ে দিলেন। সকলেই আরেক দফা চমকে উঠলো। এতো দ্রুত এসব কাহিনি ঘটছে কেউই বুঝতে পারছে না হচ্ছেটা কি?সারহান বিশ্ব জয়ের হাসি দিয়ে আরশাদ সাহেবের দিকে তাকালেন। আরশাদ সাহেব বিস্মিত হয়ে বসে আছেন।
আজমল সাহেব এগিয়ে এসে আরশাদ সাহেবের কাছে দাঁড়িয়ে বললেন~ ছেলে মেয়ে দুজনেই রাজী। এখন আপনি কি আমার বেয়াই হতে প্রস্তুত ভাইজান?

আরশাদ সাহেব বিস্ময়ের রেশ কাটিয়ে উচ্চস্বরে হেসে উঠে আজমল সাহেবকে জড়িয়ে কোলাকুলি করে বললেন~ বেয়াই না হয়ে আর উপায় আছে? ছেলে তো একবারে সেই বন্দবস্ত করে মাঠে নেমেছে।
আজমল সাহেব হেসে বললেন~ কার ছেলে দেখতে হবে না।
আরশাদ সাহেব হেসে উঠলেন। তানিয়া বেগম আর সাথী বেগমও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। দুজনেই ভেবেছিলেন ঝামেলা হবে। সারহানের বন্ধুমহল সারহানের কাছে গিয়ে শুভকামনা জানাচ্ছে।আবির আর সাদাতও যোগ দিয়েছে তাদের সাথে।
আজমল সাহেব ভাইকে ছেড়ে উচ্চস্বরে স্বাভাবিক গলায় বললেন~ বাড়ির বড় ছেলের বিয়ে হবে তাও ছোট করে? অসম্ভব। আজ রাতে পারিবারিকভাবে আকদ করে রাখা হবে। ইলেকশনের পরে বড় করে অনুষ্ঠান করা হবে। সকলেই আকদের জন্য আয়োজন শুরু করে দাও।
অরিত্রিকা লজ্জায় আড়ষ্ট হয়ে গেলো।কল্পপুরুষের সাথে তার বিয়ে হবে ভাবতেই শিহরণ বয়ে গেলো। আড় চোখে তাকালো সারহানের দিকে। সারহান তার দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসি দিলো।অরিত্রিকার ভীষণ লজ্জা লাগছে।চোখ মেলাতেও লজ্জা এসে আষ্টেপৃষ্টে ধরছে। সে চোখ সন্তর্পণে সরিয়ে নিলো। ওষ্ঠজুড়ে লজ্জায় রাঙা হাসি। সারহান যেনো সেই হাসিতেই ঘায়েল হলো নতুন করে।

চৌধুরী বাড়িতে বিয়ের আমেজ। দুপুরের পর হতেই সকলের সহযোগীতায় ছোট পরিসরে আকদের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফুল দ্বারা হালকা সাজানো হয়েছে।লাইটিং ও করা হয়েছে। বাড়ির সকলের মুখে হাসি। অরিনের হাসবেন্ড আর শাশুড়ী এসেছে বিয়ে উপলক্ষে। ইশরার বাবাও উপস্থিত। তিনি মাত্রই চট্টগ্রাম হতে এসেছেন।
অরিত্রিকা আর সারহান সোফায় পাশাপাশি বসে আছে।অরিত্রিকার পরনে হালকা কারুকাজ করা খয়েরী শাড়ি। মাথায় ঘোমটা। শাড়ির সাথে মিল রেখে হালকা কারুকার্য শোভিত সোনার গহনা। মুখে তেমন প্রসাধনীর ছোঁয়া নেই।হালকা সাজ।সারহান অফ হোয়াইট হালকা কাজ করা পাঞ্জাবি পরেছে। মুখ স্বাভাবিক আজ। অরিত্রিকা একপলক সারহানকে দেখেছে। ইস তার সারহান ভাই এতো হ্যান্ডসাম কেনো? লম্বা সুঠাম দেহী শরীরে পাঞ্জাবি অসাধারণ মানিয়েছে। শ্যাম মানবের খোঁচা খোঁচা দাড়ি, ওষ্ঠ জুড়ে মৃদু হাসি অরিত্রিকাকে মুগ্ধ করছে বার বার। সে ভাবতেই পারছে না আজ তার প্রিয় ভালোবাসার মানুষটির সাথে বিয়ে।ভাবতেই লজ্জা সংকোচে নেতিয়ে পরলো।
সারহানের অগোচরে রয়ে গেলো অরিত্রিকার লাজে রাঙা হাসি। সে তো ভালোভাবে মুখ দেখতেও পারছেনা। ঘোমটার কারণে মুখ ঢেকে আছে। কেমন দেখাচ্ছে তার ফাইরুজকে বউ সাজে। চোখ যেনো বিচলিত হয়ে উঠেছে এক পলক দেখার জন্য। সে একটু পর পর পাশে তাকাচ্ছে।ভাবতেই ভালোলাগছে আজ তার ফাইরুজ অর্ধাঙ্গিনী রুপে তার জীবনে সারাজীবনের জন্য জড়িয়ে যাবে।

প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে পর্ব ৩৫

….🦋…..[ বিয়ে স্পেশাল]🦋
পরিবারের সকলে কেউ বসে বা কেউ দাঁড়িয়ে আছেন।কাজি সাহেব বিয়ে পরাতে শুরু করেছেন। কিছুক্ষণ সময়ের মধ্যে অরিত্রিকা আর সারহানের বিয়ে দুজনের সম্মতিতে তিন কবুলের মাধ্যমে সম্পূর্ণ হলো।সকলেই একসাথে আলহামদুলিল্লাহ বলে উঠলো। দুজনেই বিয়ের রেজিস্ট্রি পেপারে সাইন করলো। অরিত্রিকা চুপ করে নত মস্তকে বসে আছে। সারহান নিবিড় দৃষ্টিতে তাকালো অরিত্রিকার দিকে। একটু আগেই কান্না করছিলো।
সারহান অরিত্রিকার দিকে চেপে নিচু স্বরে বললো~ অপেক্ষার পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে অবশেষে পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আমার মন কুঠুরিতে তুই নামক সুখের আগমন ঘটলো তবে।
অরিত্রিকা সারহানের এহেন কথায় কেঁপে উঠলো।সারহান সকলের অগোচরে অরিত্রিকার হাত নিজ হাতে মুঠোবন্দি করে নিলো।অরিত্রিকা অবাক নয়নে দেখলো শুধু।সারহান তা দেখে মৃদু হাসলো।

প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে পর্ব ৩৭