প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে সিজন ২ পর্ব ৪৬

প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে সিজন ২ পর্ব ৪৬
আদ্রিতা নিশি

ইরফান বাড়ি থেকে বেড়িয়েছে বিকেলে। ইসমা বেগমের সাথে কথা কাটাকাটির জের ধরে রাগ করে বাড়ি ছেড়েছে। পণ করেছে আজ রাতে বাড়িতে ফিরবে না। কোনো বন্ধুর বাসায় রাত কাটিয়ে দেবে। তার ছেলেমানুষী অভিমাণ কোনো কালে ছিলো না কিন্তু প্রথমবার অভিমান জমেছে মনে। মা হয়ে কেন ছেলের বিপর্যন্ত মনের অবস্থা বুঝতে পারে না এটাই যেন বড় দোষ। সে ভেবে পায় না অরিত্রিকাকে ভালোবাসে এবং বিয়ে ঠিক করা আছে তাহলে সমস্যা কোথায় বিয়ে দিতে? দুপুরের সময়ে রাগারাগি করেও কোনো লাভ হলো না। উল্টো আজমল সাহেবের কাছে বেয়াদব উপাধিতে ভূষিত হয়েছে। কেন এতো তাড়াহুড়ো করছে সে সকলের সামনে কী করে বলবে? বললে পারিবারিক সম্পর্ক নষ্ট হবে। সকলের সাথে মনমালিন্য হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিবে। সারহানের সাথে তার বন্ধুপূর্ণ সম্পর্কের অবনতি হওয়ার সম্ভবনা আছে। সে উক্ত ভাবনা ভেবে তপ্ত শ্বাস ফেলে।

বৈশাখ মাসের শুরু। প্রকৃতি যেন নতুন সাজে সেজেছে। বৃষ্টিস্নাত রাতে দমকা হাওয়ায় অশান্ত চারিপাশ। ঝড় না হলেও যেন ঝড়েরবেগে হাওয়া বইছে। ঝমঝমিয়ে বৃষ্টির ফোঁটা পরছে ধরনীতে। অম্বর যেন বিষন্নতায় মুখ ঢেকেছে। দমকা হাওয়ায় গাছপালা অসম্ভব নড়ছে। সেই শীতল হাওয়া ছুঁয়ে যাচ্ছে ব্যস্ত শহরের উত্তপ্ত বক্ষ। শহুরে মানুষজন বৃষ্টি থেকে বাঁচতে আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন দোকানপাট সহ বিল্ডিংয়ের নিচে। রাস্তাঘাটে যানবাহনের সংখ্যা অনেকটা কম এখন। ইরফান বসে আছে রাজশাহী কলেজের রাস্তা সংলগ্ন সিটি সেন্টারের নিচতলার একটা দোকানের সামনে। সেখানে আরো গুটিকয় মানুষের অবস্থান।সকলের নিশ্চুপ ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে আছে। ইরফান সকলের ব্যতিক্রম নয়। সে নিশ্চুপ — মুখাবয়ব অতিশয় গম্ভীর এবং মলিন। বিমর্ষ চোখ মেলে সেখান থেকে দৃশ্যমান রাস্তার একপাশে পার্ক করা কালো রঙের বাইকটির দিকে। বাইকটি তার নিজস্ব, সাদা দীর্ঘ পলিথিন দ্বারা আবৃত করা। মনঃস্থির করে ভেবে চলেছে, কখন বৃষ্টি থামবে আর কখন সে এখান থেকে বেরুতে পারবে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“ এক্সকিউজ মি, ভাইয়া একটু সাইডে দাঁড়াবেন? ”
মেয়েলী অপরিচিত কন্ঠস্বর কর্ণকুহরে প্রবেশ করে ইরফানে। মুখ বিরক্তিতে খিঁচে আসে। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকায় সামনে। অর্ধভেজা অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে এক মেয়ে। পরনে মেরুন রঙের টু পিস। মাথা হিজাব দ্বারা আবৃত করা। সে দৃষ্টি ফিরিয়ে একটু চেপে দাঁড়ায়। মেয়েটি দ্রুত জায়গা পেয়ে দোকানটার সামনে দাঁড়ায়। কৃতজ্ঞতা স্বরুপ ক্ষীণ স্বরে বলে ;
“ ধন্যবাদ। ”
ইরফান উত্তর দেয় না। অনড় ভঙ্গিতে গাম্ভীর্যতার সহিত ঠাই হয়ে দাঁড়িয়ে রয়। কোনো প্রতিত্তোর করে না। মেয়েটি অপমানিত বোধ করে। যেচে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত হয়নি একদম। মানুষ সৌজন্যতার খাতিরে প্রতিত্তুর করে কিন্তু মূর্তির ন্যায় দাঁড়ানো খারুস মানুষটার মাঝে কোনো সৌজন্যতা বোধ টুকু নেই। সে ক্ষুব্ধ দৃষ্টিতে পরখ করল। তৎক্ষনাৎ কপালে সূক্ষ্ম ভাজ পড়ল। তৎক্ষনাৎ কিছু একটা মনে পড়তেই কৌতুহলী ভাব নিয়ে জিজ্ঞেস করল ;

“ আপনি অরিত্রিকার ফুপাতো ভাই, ইরফান ভাইয়া না? ”
ইরফান ভ্রুযুগল গুটালো। তির্যক দৃষ্টিতে তাকালো মেয়েটির দিকে। অতঃপর বলল ;
“ জ্বি। কিন্তু আপনাকে তো চিনলাম না! ”
“ আরেহ ভাইয়া আপনি আমাকে চেনেন না? আমি রাহা আমিরাহ্, অরিত্রিকার ভার্সিটি ফ্রেন্ড। অরিন আপুর বিয়েতে গিয়েছিলাম, মনে পড়েছে? ”
“ মনে পড়েছে। ”
“ আপনি এখানে কি করছেন? ”
“ দাঁড়িয়ে আছি দেখতে পাচ্ছেন না? ”
ইরাফনের দৃঢ় কন্ঠস্বর। রাহার উচ্ছসিত ভাবখানা উবে গেল। ফর্সা মুখখানা চুপসে গেল। দৃষ্টি নামিয়ে অন্যত্র তাকাল। শয়তান লোক কোথাকার তাকে অপমান করলো? ভালো মনে কথা বলা উচিত হয়নি আর কোনোদিন দেখা হলে কখনো কথা বলবে না। বান্ধবীর ভাই তাই অপমান টুকু গিলে নিলো। অন্য কেউ হলে খবর করে দিতো।
“ আমার জানা মতে আপনার বাসা ভার্সিটির আশেপাশে। তাহলে আপনি একা একটা মেয়ে হয়ে এদিকে কেনো এসেছেন? ”

রাহার ভাবনার মাঝে ইরফানের কন্ঠস্বর শোনা গেল। কেমন যেন শক্ত স্বর। সে চমকে উঠে। চকিত নয়নে তাকায় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটার দিকে। ভদ্রতা রক্ষার্থে উত্তর দেয় ;
“ কাজিনের থেকে উপন্যাসের বই নিতে এসেছিলাম। বই নিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম তখনই ঝুম বৃষ্টি এলো। উপায়ন্তর না পেয়ে এখানে এসে দাঁড়ালাম। ”
“ রাতে মেয়েদের একা চলাফেরা করা সেফ না। ”
“ আসলে.. আব্বু বাসায় ছিলো না তাই একা আসতে হয়েছে। ”
“ পরবর্তীতে রাতে একা কোথাও বের হবেন না। শুনেছেন নিশ্চয়ই লক্ষীপুরে কয়েকদিন আগে একজন ছাত্রকে খু*ন করেছে দু*র্বৃত্তরা। ”
“ হ্যা শুনেছি। ”

রাহা দু’দিকে মাথা নাড়িয়ে মিনমিন করে বলে। ইরফান সেই ঘটনা মনে পড়তেই মন বিষন্ন হয়ে যায়। ছেলেটা তার বন্ধুর ছোট ভাই ছিলো। রাজশাহী নিউ ডিগ্রি কলেজে অনার্স থার্ড ইয়ারে অধ্যয়নরত ছিলো। ছাত্র এবং মানুষ হিসেবে দুর্দান্ত ছিলো। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে অকালে জীবন ঝড়ে গেল। সে নিশ্চুপ ভঙ্গিমায় ভাবতে থাকে ঘটনাটা। রাহা তেমন কথা বাড়ায় না। ভদ্র মেয়ের মতো গুটিশুটি হয়ে দাঁড়িয়ে রয়।
বৃষ্টির ধারা অনেকটা কমে এসেছে। দমকা হাওয়ার বেগ ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। দোকানপাটে অবস্থানরত মানুষগুলো নিজেদের গন্তব্যে ছুটতে শুরু করেছে। শূন্য রাস্তায় যানবাহনে পরিপূর্ণ হয়ে উঠছে। ইরফান কপাল কুঁচকে আশে পাশে তাকিয়ে পরিবেশ পরখ করল। এই মুহুর্তে বৃষ্টি হওয়ার চান্স তেমন একটা নেই। সে দেরী করল না। দ্রুততার সহিত সেখান থেকে হেঁটে বাইকের সামনে এসে দাঁড়াল। বাইকের ওপরের পলিথিনটা নিচে ফেলে বাইক স্টার্ট দিলো। অতঃপর সেখান থেকে রওনা দিলো এক বন্ধুর বাড়ির উদ্দেশ্যে। রাহা হতভম্ব হয়ে দেখল ইরফানের কান্ড। পরিচিত একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে যাওয়ার সময় অন্তত বলবে “ আমাদের বাসায় বেড়াতে যাবেন সময় হলে। ” কিন্তু সেসবের বালাই টুকু নেই। কেমন যেন সভ্য ভাব নেই। তার কেন যেন মনে হলো তাকে নিঃশব্দে অপমান করে গেল লোকটা।

রাহার মুখ চোখ কুঁচকে গেল। বিরক্তিভাব নিয়ে বিরবির করে বলল;
“ অরিত্রিকার ইরফান ভাই ঠিক যেন আমার ইয়ারফোনের মতো। নষ্ট না হওয়া স্বত্বেও আওয়াজ বের হয় না। ”
রাহা রাগবাগ ভুলে কাঁধে ঝুলানো ব্যাগটা আঁকড়ে ধরে। সাবধানে পা ফেলে এগিয়ে যায় রাস্তার দিকে। এখন তাড়াতাড়ি অটো ধরে বাড়ি ফিরতে হবে।

“ সারারাত আমাকে জড়িয়ে ধরে রাখার মতলব আছে নাকি? দ্রুত ছাড় আমাকে গরম লাগছে। ”
বেলকিনতে দাঁড়িয়ে আছে সাদাত। চোখ মুখ অস্বাভাবিক অশান্ত হয়ে আছে। শীতল পরিবেশেও কপালের মধ্যাংশ জুড়ে বিন্দু বিন্দু ঘাম নিঃসরণ হচ্ছে। দৃষ্টি ভীষণ এলোমেলো। অস্বাভাবিক হারে হৃদপিন্ড অনিয়ন্ত্রিত গতিতে লাফাচ্ছে। অস্বস্তি, অদ্ভুত অনুভূতিতে হাসফাস লাগছে। ইশরা এখনো ভয়ার্ত ভঙ্গিতে তার দুবাহু আঁকড়ে ধরে আছে। মেয়েটার সন্নিকটে উপস্থিতি যেন দিশেহারা করছে। কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে ভারী কন্ঠে বলল। এখনো বিদ্যুৎ আসেনি। জেনেরেটর চলছে। ইশরা ভারিক্কি আওয়াজে হচকচিয়ে উঠল। সাদাতের বক্ষ থেকে মাথা উঁচিয়ে ভয়ার্ত ভঙ্গিতে আশেপাশে তাকাল। বেলকনিতে আলো জ্বলছে। ভয় কিছুটা কমে আসে। ভালোভাবে তাকাতেই খেয়াল করে তার অবস্থান। মুহুর্তেই অস্বস্তিতে জর্জরিত হয়ে গেল। লজ্জায় যেন মাটিতে মিশে গেল সে। দ্রুত সাদাতের বাহু ছেড়ে দিয়ে দুরত্ব বজায় রেখে দাঁড়াল। এতোক্ষণ সে সাদাতকে জড়িয়ে ধরে ছিল ভাবতেই আড়ষ্টতা জেঁকে ধরল। ছিহ কি লজ্জাজনক কাজ করেছে সে। মাথা নুইয়ে গেল লজ্জার ভারে।

“ আসলে আমি ইচ্ছে করে করিনি। ভয়ে.. স্যরি সাদাত। ”
ইশরা কন্ঠস্বর ক্ষীণ যেন কথা বলার ক্ষমতাটুকু হারিয়েছে। জড়তা, অস্বস্তি সব মিলিয়ে অদ্ভুত অনুভূতি। সাদাত নিজেকে সামলে নেয়। নিঃশব্দে তাকায় ইশরার লাজুক মুখশ্রীতে। থমকাল, মুগ্ধ হলো। কিন্তু প্রকাশ করল না। সে টমেটোকে ভালোবাসে বুঝতে দেওয়া যাবে না। মেয়েটা যদি জানে সে তাকে ভালোবাসে তাহলে নিশ্চয়ই ভাববে তার সুযোগ নিচ্ছে।
“ ইটস ওকে। ”
সাদাত শান্ত কন্ঠে প্রতিত্তোর করে দ্রুত পায়ে সেখান থেকে প্রস্থান করল। ইশরা আড় চোখে প্রস্থানের দৃশ্য দেখল। কিছুক্ষণ আগের বিব্রতকর পরিস্থিতির কথা ভাবতেই হাসফাস করে উঠল।
“ অরিত্রিকা ভেতরে আছিস? ”

উক্ত কথাটি বলতে বলতে প্রবেশ করলেন সাথী বেগম। ইশরা ছোট মামীর হাকডাক শুনে অস্বস্তিভাব ভুলে বেলকনি থেকে দৌড়ে রুমে এসে সামনাসামনি দাঁড়ায়। অতঃপর হাসির ভাণ করে বলে ;
“ অরিত্রিকা ওয়াশরুমে। কিছু বলবে? ”
সাথী বেগম সেখান থেকে দৃষ্টি ফেললেন ওয়াশরুমের দিকে। দেখলেন দরজা বন্ধ । তিনি দৃষ্টি ফেরালেন। গভীর শ্বাস টেনে বললেন ;
“ অরিত্রিকা ওয়াশরুম থেকে বের হলে আমাদের রুমে পাঠিয়ে দিস একটু। ”
“ কেনো মামী? ”
“ তোর মামা কথা বলবে। ”
“ ওহহ। মামী ছোট হয়ে একটা কথা বলব? ”
“ বল। ”
সাথী বেগম স্বাভাবিক ভাবে বললেন। ইশরা ভার কন্ঠে বলল ;

“ অরিত্রিকাকে ভাইয়ার সাথে জোর করে বিয়ে দিও না। যদি বিয়ে দাও তোমার মেয়ে কিন্তু ম’রে যাবে। ”
সাথী বেগমের বুক যেন মোচড় দিয়ে ওঠে। মুখ অনামিশার ন্যায় অন্ধকার হয়। উদ্বিগ্ন হয়ে ইশরার হাত আঁকড়ে বলেন ;
“ অরিত্রিকাকে একটু বোঝা মা। বাচ্চা মেয়েটা আমার কথা শুনছে না। হয়তো অভিমান করেছে। তুই শুধু অরিত্রিকে বোঝা ওর অনুমতি ছাড়া বিয়ে হবে না। ”
“ মামী আমি ওকে বুঝাচ্ছি। এখন একটু স্বাভাবিক হয়ে আছে। ”
“ তুই ওর সাথে সবসময় থাকবি। এক মুহুর্তের জন্য চোখের আড়াল করিস না। ”
“ আচ্ছা মামী। ”
“ অরিত্রি বেরুলে আমার রুমে পাঠিয়ে দিস। ”
ইশরা মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানাল। সাথী বেগম ইশরার মাথায় আদুরে হাত বুলিয়ে দিয়ে নিঃশব্দে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলেন। ইশরা হাঁপ ছেড়ে বাঁচল। এতোক্ষণ অতি কষ্টে নিজেকে স্বাভাবিক রেখে রাখঢাক না করে মিথ্যা বলে যাচ্ছিল। যদি ছোট মামী বুঝে যেতেন তাহলে আরেকদফা হুলুস্থুল বেঁধে যেত। সে দৌড়ে বেড়িয়ে গেল ছাদের উদ্দেশ্যে।

অরিন লেভিকে কোলে নিয়ে বিছানার ওপর আধশোয়া হয়ে বসে আছে। মন ভীষণ ভার। মুখাবয়বে স্পষ্ট ফুটে উঠেছে উদ্বিগ্নতা। মলিন মুখে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে বিছানার ওপর অবহেলায় পড়ে থাকা ফোনটির দিকে। ফোন স্কিনে জ্বলজ্বল করছে আবিরের নাম। সন্ধ্যা থেকে আবিরকে বিশের অধিক বার কল করা হয়েছে অথচ কোনো রেসপন্স নেই। সে লিভিং রুমে যখন বসে ছিলো তখন দেখেছে সারহানকে বাড়ি ফিরতে। কিন্তু আবিরকে আসতে দেখেনি। তখন থেকে চিন্তিত ভঙ্গিতে কল করে যাচ্ছে সে। তার মন বলছে সকালের ঘটনার জন্য মানুষটা রাগ করেছে। তাই এ বাড়িতে আসেনি।
গভীর চিন্তার মাঝে আবিরের কল আসে ফোনে। অরিনের ভাবনার ছেদ ঘটে সঙ্গে সঙ্গে। মলিন ভাব কেটে যায়। বিষন্নতা ছাপিয়ে রাগ হানা দেয় তার মাঝে। একমুহুর্ত দেরী না করে তড়িঘড়ি করে ফোন রিসিভ করে কানে গুঁজে রাগান্বিত ভঙ্গিতে বলে ;

“ কল কেনো রিসিভ করছিলেন না আবির? ”
অপর পাশ হতে জবাব এলো ;
“ ব্যস্ত ছিলাম। ”
“ কি এমন কাজ করছেন যে একবার কল রিসিভ করে বলার সময় পাচ্ছেন না? ”
“ মিটিংয়ে ছিলাম। ”
“ সারহান ভাই সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরেছে আর আপনি মিটিংয়ে ব্যস্ত!সত্যি করে বলুন কল কেনো ধরেননি? ”
অরিন ক্ষুদ্ধ হয়ে বলল। আবির কিছুক্ষণ মৌন থেকে স্বাভাবিক স্বরে বলল ;
“ দলীয় মিটিং ছিলো। সারহান আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিল আজকের সন্ধ্যার পর মিটিং এবং যাবতীয় কাজ শেষ করার। ”

প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে সিজন ২ পর্ব ৪৫

অরিন একটু শান্ত হয়। তবুও রাগ কমে না। পূর্বের ন্যায় গমগমে কন্ঠে বলে ;
“ বাড়িতে কখন ফিরবেন?”
“ এখনো কাজ শেষ হয়নি। বাড়িতে ফিরতে এগারোটা বাজবে। ”
“ দুপুরে খাবার খেয়েছিলেন? ”
“ সময় হয়নি। আম্মাকে কল করে বলেছি রাতে রান্না করতে। কাজ শেষ করে বাড়িতে গিয়ে খাবো।”
“ আপনি আমাদের বাড়িতে আসবেন না? ”
অরিন বিস্মিত কন্ঠে বলল। আবির শ্বাস ফেলে বলল ;
“ নাহ। ”

প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে সিজন ২ পর্ব ৪৬ (২)