প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে সিজন ২ পর্ব ৬৭

প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে সিজন ২ পর্ব ৬৭
আদ্রিতা নিশি

“আমাকে ভালোবাসিস? তুই মজা করছিস তাই না?”
ইশরা এলোমেলো দৃষ্টি ফেলে সহসা কম্পনরত কন্ঠে বলে উঠল। সামনে বসা মানুষটার চাহনি, ভাবভঙ্গি যেন বলে দিচ্ছে ভালোবাসার গভীরতা অথচ সে যেন মানতে নারাজ। হঠাৎ করে কি ভালোবাসা হয়? তার মতে, হুটহাট ভালোবাসা যায় না। সাদাতের বুকটা কেঁপে উঠল। ভারাক্রান্ত কন্ঠে বলল ;
“আমি তোর সাথে মজা করছি না ইশু। আমার বলা প্রতিটা অক্ষর, শব্দ, বাক্য সত্যি! আমি তোকে ভালোবাসি।”
ইশরার গলা শুকিয়ে গেল। সে শুকনো ঢোক গিলল। ওষ্ঠ ভিজিয়ে কোনো মতে বলল;

“আমি.. আমি তোকে ছোটবেলা থেকে এ অব্দি শুধু ফ্রেন্ড ভেবেছি। কখনো অন্য নজরে দেখিনি। ভবিষ্যতেও হয়তো অন্য নজরে দেখতে পারবো না। আমাদের সুন্দর সম্পর্কটার মাঝে ভালোবাসা শব্দটা আনিস না সাদাত। এতে তোর আর আমার বন্ধুত্বের সম্পর্কে ফাটল ধরবে। দয়া করে, অন্য কারো সামনে আমাকে ভালোবাসিস এই কথাটা উচ্চারণ করবি না। তাহলে কিন্তু…। ”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

মেয়েলী কন্ঠস্বর থেমে যায়। গলদেশ হতে কথা নির্গত হয় না। সে দুহাতে চুল খামচে ধরে। কি করবে এখন? কি বলা উচিত বা কি করা উচিত বুঝে উঠতে পারে না। সাদাতের সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্কটা দৃঢ়! বন্ধুত্ব বাদেও আত্মীয়তার সূত্রটাও ভালো ছিল। বর্তমানেও আছে। ছোট বেলা থেকে দুজনে একসাথে খেলেছে, ঘুরেছে, সব কথা শেয়ার করেছে। কিন্তু ভালোবাসা নামক শব্দটা যেন সব সম্পর্কে ছিন্ন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এ কেমন দোটানায় পড়ল সে। সাদাত চক্ষুদ্বয় লাল টকটকে বর্ণ ধারণ করল। রাগ, কষ্ট মিলিয়ে বুকটা হাহাকার করে উঠল। প্রত্যাখ্যান করাটা যেন তীরের ন্যায় উদ্দাম বেগে ছুটে এসে লাগল হৃদয়ে।

এক প্রেমিক যুবকের প্রেমোমত্ত হৃদয়টা ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে গেল সেই নিদারুণ আঘাতে। প্রেম নামক শব্দটা রুপ নিলো প্রেমোত্তাপে! এ দহন সহজে নিভে যাওয়ার নয়! প্রেমিকের মনটা দগ্ধ করবে, ক্ষতবিক্ষত করবে, ঝলসে দিবে, বেঁচে থেকেও মৃ*ত বানিয়ে দিবে তারপর নিভে যাবে— একাকী। সাদাত ঘন ঘন শ্বাস ফেলল। তার ভয়টা তবে সত্যি হলো। ভালোবাসা প্রকাশ করেও পেল না প্রেয়সীকে। সে উদভ্রান্তের ন্যায় হাসল। অসহনীয় যন্ত্রণায় ছটফট করা ভেতরটা তান্ডব বইল। সেই অভ্যন্তরীণ অবর্ণনীয় কষ্ট চক্ষুদ্বয় নিংড়ে গাল বেয়ে পড়ল। ইশরা স্তম্ভিত নয়নে তাকিয়ে নির্বাক ভঙ্গিমায় দেখল সেই দৃশ্য। কাউকে ভালোবেসে যদি হারিয়ে ফেলা হয় তবে কি এমন ভাবে নিঃশব্দে কাঁদে? পুরুষজাতি ও বুঝি কাঁদে। সে সহ্য করতে পারল না। সোফা থেকে উঠে কাঁদতে কাঁদতে নিজের রুমের দিকে চলে গেল। সাদাত অশ্রুত আহত দৃষ্টিতে দেখল ইশরার চলে যাওয়া। নিজেকে বিদ্রুপ করে ধীরজ কন্ঠে বলল;

“এ প্রত্যাখান আমায় বুঝিয়ে দিলো — কাউকে ভালোবেসে না পাওয়ার যন্ত্রণা। আমি পূর্বে যে মেয়েগুলোর অনুভূতিকে অসম্মান করেছি, হেয় প্রতিপন্ন করেছি তার শাস্তিস্বরূপ তুই আমার ভালোবাসাকে ঠুকরিয়ে দিলি! একেই বলে রিভেঞ্জ অব নেচার।”
সে থেমে কাতর গলায় আওড়ায় ;
“তুই শুধু আমার হবি ইশু।যদি তুই আমার না হোস! তাহলে তুই কারো হবি না। আমি তোকে অন্য কারো হতে দেবো না।”

সাদাত গা এলিয়ে দেয় সোফায়। নিরবচিত্তে ভারাক্রান্ত মনে এক দৃষ্টে তাকিয়ে থাকে সিলিংয়ের দিকে। আফ্রিদি দুজনের সম্পূর্ণ কথোপকথন শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে গেল। তার ইশারাকে প্রথম দেখায় ভালোলেগেছিল। মেয়েটা আচরণ, কথাবার্তা মুগ্ধ করেছিল। ভেবেছিল, ঢাকায় ফিরে বাবা, মার সাথে বিয়ে বিষয়ক কথাবার্তা বলবে। কিন্তু মাঝপথে সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেল। যাকে গোপনে মন দিলো সে তো অন্য কারো পছন্দের রমণী। সে দীর্ঘ শ্বাস ফেলল। সাদাতের অবস্থা দেখে খারাপ লাগল। আনমনা ভাবল, মেয়েটা কি জানে — সে একটা নয় দুইটা মানুষের হৃদয় ভেঙেছে! যদি জানতো গোপনে আরেকজন তাকে মন দিয়েছিল। তবে কি করতো? সাদাতের মতো তাকেও প্রত্যাখান করতো? হয়তো তেমনটাই করতো। সে তাচ্ছিল্য হাসল। পা বাড়ালো গেস্ট রুমের দিকে। এ যাত্রায় একতরফা ভালোবাসার কষ্ট থেকে বেঁচে গেল।

গোধূলীলগ্ন পেরিয়ে সন্ধ্যা নেমেছে ধরণীতে। বিকেল থেকে আবহাওয়া শীতল এবং হালকা উষ্ণ। অম্বর ধূসর – কালো মেঘে আচ্ছন্ন হয়ে আসছে। প্রকৃতিতে মাঝে মাঝে হাওয়া বইছে। হয়তো গভীর রাতে অম্বর ভেঙে বৃষ্টি নামবে।
অরিত্রিকা গুটি গুটি কদম ফেলে সারহানের রুমটায় ঘুরে ফিরে দেখছে। চঞ্চলা হরিণীর ন্যায় আঁখি দুটো দিয়ে রুম, বেলকনি নিখুঁত ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। প্রায় আধা ঘন্টা ধরে পায়তারা করছে। সেই দৃশ্য বিছানায় বসে দেখছে লেভি। বিড়াল ছানাটা ভাবসাব বিস্মায়াবিষ্ট। সে নিজেও বুঝতে পারছে না মালকিন কেন এতো লম্ফঝম্প করে বেড়াচ্ছে? অরিত্রিকা হাটাহাটি করতে গিয়ে হাপিয়ে গেছে। এতোক্ষণ ধরে রুমের প্রতিটি কোণায় নজর বুলিয়েছে সে। পুরো রুমটা পরিপাটি এবং গুছানো। সব আসবাবপত্র একদম ঠিকঠাক ভাবে সাজানো।

যখন সে এই রুমে স্থায়ীভাবে থাকবে তখন গম্ভীর মানুষের গম্ভীর রুপী রুমটাকে পরিবর্তন করবে। পছন্দসই জিনিস দিয়ে ডেকোরেশন করবে ও লেভির থাকার জন্য ছোট্ট একটা ঘরে এ রুমের এক কোণায় রাখবে। বেলকিটা নিজের মতো করে সাজাবে বিভিন্ন গাছ ও ফুলের গাছ দিয়ে। আচ্ছা! রুমটার রঙটা কি পরিবর্তন করবে? পরিবর্তন করা যায়। কি কালারের রঙ দিবে? বেবি পিংক নাকি পিংক! সে আপাতত ভাবনার সমাপ্তি ঘটালো। তিড়িংবিরিং করে নাচতে নাচতে গিয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়াল। তার দৃষ্টি আঁটকে গেল পারফিউমের দিকে। কত্তো দিন পেরিয়ে গেল অথচ সে লুকিয়ে পারফিউম শরীরে মাখেনি!

এই জেন্টস পারফিউমটা তার অতি পছন্দনীয়। একদিন আবেগের ঠেলায় পারফিউমের দাম গুগলে জানতে চেয়েছিল। তারপর দাম জেনে টাস্কি খেয়ে যায়। এইতুটু জিনিসের দাম আটাশ হাজার টাকা! এ যেন পারফিউম টাকার খুশবু। সে প্রতিবারের মতো এবারও সারহানের অগোচরে পারফিউম শরীরে মাখলো। অতঃপর সাবধানে জিনিসটা জায়গা মতো রেখে এগিয়ে গেল লেভির দিকে। ঘড়ির কাটায় দশটা বেজে বিশ মিনিট। এখনি রগচটা মানুষটার আসার সময়। সে লেভিকে কোলে নেবে তখন দেখতে পেল বিছানায় ভাজ করে রাখা একটা কালো রঙা শার্ট। সে শার্টটা নিয়ে আলমারীটা খুলে রাখল।

আলমারীর ভেতরাংশে শার্ট এবং পাঞ্জাবীর কালেকশনে ভর্তি। বেশীরভাগ শুভ্র এবং কালো রঙের শার্ট। অরিত্রিকা বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে দেখল। কিঞ্চিৎ উত্তেজনায় ডুবে গেল। সে সাহস সঞ্চার করে একটা শুভ্র শার্ট বের করে আনলো। তা দুহাতে মেলে ধরে নাক ডুবালো। ঘ্রাণেন্দ্রিয়ে পুরুষালী ঘ্রানটা প্রবেশ করতেই মাথাটা ঝিমঝিম করে উঠল। শীতল শিহরণ বইয়ে গেল শিরদাঁড়া বেয়ে। মনে হলো, শ্যামমানব শরীরের ঘ্রান লেগে আছে শার্টে। সে আবেশে গোলাপী ওষ্ঠযুগল ছোঁয়াল শার্টে। লোমকূপ শিউরে উঠল। তৎক্ষনাৎ তটস্থ ভঙ্গিতে নিজেকে সামলে নিলো। এহেন কান্ডে লজ্জায় আড়ষ্ট হয়ে গেল। সে আলমারীর পাল্লা বন্ধ করল। কিন্তু শার্টটা রাখল না। সেটি ভাজ করে ওড়না দিয়ে মুড়িয়ে নিলো। আজ থেকে এ শার্ট তার কাছে থাকবে। সে ওষ্ঠদ্বয় এলিয়ে হাসল। তারপর ছুটে রুম থেকে বেড়িয়ে গেল। তার পিছু পিছু ছুটলো লেভি।

অরিত্রিকা এক দৌড়ে এসে থামল তার রুমের সামনে। রুমে না গিয়ে কিছুটা এগিয়ে গিয়ে করিডোরে দাঁড়িয়ে নিচে উঁকি দিলো। তখনি দৃষ্টি আঁটকে গেল শুভ্র পাঞ্জাবি পরিহিত মানবটির দিকে। কি নিখুঁত ও দক্ষ ভাবে পাঞ্জাবির হাতা গুটাতে গুটাতে সদরদরজা পেরিয়ে শাণিত পদযুগল ফেলে আসছে। এই দৃশ্য দেখে চঞ্চলা মনটা মুখ থুবড়ে পুনরায় প্রেমে পড়ল। বুকের ভেতরে হৃদপিন্ডটা ধরাস ধরাস করতে লাগল। এই শ্যামবর্ণের মানুষটিকে ঘিরে আজ কাল পাগলি শুরু করে দিয়েছে।
অরিত্রিকা মূর্তিরন্যায় করিডোরে দাঁড়িয়ে রইল। অন্যত্র তাকিয়ে সে গানের একলাইন আনমনে গেয়ে উঠল ;
“ দিলি বড় জ্বালা রে, পাঞ্জাবি ওয়ালা।”

অতঃপর দীর্ঘ শ্বাস ফেলল। পুনরায় তাকাল নিচে। দৃষ্টি স্থির করতেই হচকচিয়ে গেল। আমোদিত মুখখানা চুপসে গেল। সারহান গম্ভীর মুখে নিচে দাঁড়িয়ে তাকে দেখছে। মানুষটা কি তবে শুনে ফেলল তার গান? সে তড়িঘড়ি করে রুমের দিকে যেতে লাগল। তখনি বাঁধলো আরেক বিপত্তি। আজমল সাহেব পেছনের দিকে দাঁড়িয়ে আছেন। কখন শব্দহীন পায়ে এসে দাঁড়িয়েছে বোঝা যায়নি। অরিত্রিকার রুমের পরে অরিনের রুম। তার দুটো রুম পরে আজমল সাহেব এবং সাথী বেগমের রুম।
“আম্মা, পাঞ্জাবিওয়ালাকে দেখা হলে নিজের রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো।”
আজমল সাহেব নিরবতা ভেঙে স্বাভাবিক ভাবে বলল। অরিত্রিকার মুখখানা ছোট্ট হয়ে গেল। লজ্জায় মিইয়ে গেল সে। ইচ্ছে করল, মাটি ফাঁক করে ঢুকে যেতে। পূর্বে কখনো এমন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েনি সে। শেষেমেষ বাবার সামনে লজ্জাজনক পরিস্থিতিতে পড়তে হলো ভেবেই কাঁদো কাঁদো হয়ে গেল। মাথাটা নত করল। মিনমিন করে বলল ;

“আমি উনাকে দেখছিলাম না আব্বু। আমি গান গাইছিলাম।”
আজমল সাহেব মেয়ের দিকে তাকিয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বললেন ;
“আমিও বিয়ের পর তোমার মাকে দেখে গান গাইতাম। গান গাওয়া খারাপ কিছু না। তবে আমি তোমায় সাজেস্ট করছি পরবর্তীতে গান গাওয়ার আগে আশে পাশে খেয়াল রাখবে।”
অরিত্রিকা আরও মিইয়ে গেল। আমতা আমতা করে বলল ;
“আব্বু আমি তাহলে রুমে যাই? ”
আজমল সাহেব গম্ভীর কণ্ঠে বললেন ;

“রুমে যাও এবং দ্রুত ঘুমিয়ে পড়ো। আগামীকাল থেকে ভার্সিটি যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হও।”
অরিত্রিকা মাথা দুলিয়ে দ্রুত সটকে পড়ল। আজমল সাহেব হাসলেন। হাস্যরত অবস্থায় সামনে তাকাতেই দেখল সারহান কপাল কুঁচকে গাম্ভীর্য ভাব নিয়ে তাকিয়ে আছে। তিনি হাসি থামিয়ে দিলেন। পূর্বের ন্যায় বললেন ;
“তুমি একা এসেছো? আমার গুনধর আরেক জামাই কোথায়?”
সারহান এগিয়ে এসে দাঁড়াল সামনে। ভরাট কন্ঠে জবাব দিলো ;
“আবির ওর বাড়িতে। ”
“আমাকে না জানিয়ে চলে গেল!”
“আপনি কি জানানোর কোনো ওয়ে রেখেছেন? অরিন ও আবিরের আকদের পর থেকে ওর ওপর রাগ করে আছেন।”
“আমি ওর ওপর রাগ করে নেই।”

“তাহলে? আবিরকে শত্রু হিসেবে দেখেন কেন? ”
সারহান ভ্রুযুগল গুটিয়ে দৃঢ় কন্ঠে বলল। আজমল সাহেব অপ্রস্তুত হলেন। তা বুঝতে না দিয়ে গমগমে কন্ঠে বললেন;
“তুমি তো জানোই রাজনীতি আমার পছন্দ না।”
সারহান তপ্ত শ্বাস ফেলল। বুড়ো বয়সে এসে চাচার এমন বাচ্চামি যেন চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার মুখাবয়ব আরও গম্ভীর হলো। পুরূ কন্ঠে বলল;
“রাজনীতি পছন্দ করেন না অথচ আপনার দুই মেয়ের হাসবেন্ড পলিটিশিয়ান। বুড়ো বয়সে বাচ্চামো করবেন না।”
“আমি বাচ্চামো করছি?”
“অব্যশই করছেন। বাচ্চামো করাটা দিন দিন বাড়ছে। বিয়ের দিন থেকে অরিত্রিকাকে চোখে চোখে রাখছেন। রাতে এসে মেয়েকে দেখে যাচ্ছেন। এসব কেন করছেন সবাই বুঝতে না পারলেও আমি ঠিকই বুঝতে পারছি।”
“তুমি কিন্তু বেশী বুঝছো।”
“আমি মোটেও বেশী বুঝছি না! আপনার মেয়েকে কয়দিন পাহারা দিয়ে রাখতে পারেন আমিও দেখবো শ্বশুর আব্বাজান।”

সারহান বাঁকা হেসে বলল। আজমল সাহেব থমমত খেয়ে গেলেন। এ ছেলেটা বুদ্ধিদীপ্ত, বিচক্ষণ এবং চালাক। কিভাবে তার চালটা ধরতে পারল। তবে তিনি মনের ভাব বুঝতে দিলেন না। মুখে কাঠিন্যতা এঁটে শক্ত কন্ঠে বললেন;
“তুমি কথার খেলাপ করবে না সারহান। রিসিপশনের আগ অব্দি আমার মেয়ের থেকে দূরে থাকবে। ”
সারহান নির্লিপ্ত কন্ঠে বলল ;
“ফাইরুজের থেকে দূরে থাকা সম্ভব নয়। যদি পারেন আঁটকে দেখান শ্বশুর আব্বাজান।”
আজমল সাহেব হতবাক হয়ে গেলেন। সারহান বাঁকা হাসি বজায় রেখে ফুরফুরে মেজাজে নিজের রুমের দিকে চলে গেল। শ্বশুরকে জব্দ করে মাইন্ড ফ্রেশ হয়ে গেছে তার। বিয়ে করা বউয়ের থেকে দূরে থাকা অসম্ভব। তবে ভদ্রতার খাতিরে আপাতত দূরে থাকছে।

রাত এগারোটা বাজে। বাড়ির সবার খাওয়া দাওয়া শেষ। বাকি আছে শুধু সারহান। তানিয়া বেগম ছেলের জন্য খাবার গরম করে এনে টেবিলে সাজিয়ে রেখেছেন। খাবারের প্লেটটা সাজিয়ে রেখে তিনি বসলেন। সারহান ফ্রেশ হয়ে ডাইনিং রুমে আসলো। সোজা এসে তার চেয়ারটায় বসল। অতঃপর খেতে লাগল।
“শুনলাম তুই নাকি থানায় গিয়েছিলি?”
তানিয়া বেগম ছেলেকে প্রশ্ন করলেন। সারহান বুঝতে পারল অরিত্রিকা এ কথাটা নেচে-কুঁদে ভাসিয়েছে। মেয়েটার পেটে কোনো কথা থাকেনা! সে প্লেটে হাত নাড়া থামিয়ে মায়ের দিকে তাকাল। রুটি চিবুতে চিবুতে উত্তর দিলো ;
“হ্যা গিয়েছিলাম।”
“কেন গিয়েছিলি?”

“তাজিয়ার আ*ত্নহত্যার কেসটা রিঅপেন হয়েছে। সেই কেস রিলেটেড কিছু প্রমাণাদি আমার কাছে ছিলো। সেগুলো ইনভেস্টিগেটর হিসেবে কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তাকে হ্যান্ডওভার করতে গিয়েছিলাম।”
“তাজিয়া… নয়ন তালুকদারের মেয়ে!”
“হুমম। তাজিয়া তালুকদার।”
সারহান গম্ভীরস্বর তুলে বলল। তানিয়া বেগমের মনটা খারাপ হয়ে গেল। তাজিয়াকে তিনি চেনেন। মেয়েটা বড্ড মিষ্টি দেখতে ছিল। আচার – আচরণে ছিল ভদ্রতার ছাপ। একবার এ বাড়িতে এসেছিল সারহানের খোঁজে। সেদিন মেয়েটা উদ্বিগ্ন, চিন্তিত ছিল। সারহান সেদিন বাসায় না থাকায় তার সাথে কয়েকটা কথা বলে চলে গিয়েছিল। তার কয়েকদিন পরে মেয়েটা মা*রা যায়। এখানে তানিয়া বেগমের খটকা লাগে। কেন যেন মনে হয় মেয়েটা আ*ত্নহত্যা করেনি বরং মে*রে ফেলা হয়েছে। আড়াই বছরের বেশী হয়ে গেল অথচ রহস্য অমীমাংসিত রয়ে গেল। তিনি দীর্ঘ শ্বাস ফেললেন। মলিন কন্ঠে বললেন ;

“মেয়েটা অনেক ভালো ছিল।”
সারহান গাম্ভীর্যতা বজায় রেখে বলল;
“তাজ আমার জুনিয়র ছিল। ইলহামের সাথে যখন দেখা করতে আসতো তখন দুই একটা কথা হতো। মুনকে নিয়ে ওই ঘটনার পর সবকিছু পাল্টে গেল। ইলহাম — যে ছিল আমার বন্ধু সে হয়ে গেল শত্রু। দীর্ঘ ছয় বছরের বন্ধুত্বের সমাপ্তি ঘটল। ইলহামের সাথে আরও একজন বন্ধুকে হারিয়েছি। বন্ধুমহলের বিচ্ছেদ সহনীয় নয়। ”
“পুরনো কথা বাদ দিয়ে খাবার খা।”
“মা,ফাইরুজ খেয়েছে?”
“সবার সাথে খেয়েছে বোধ হয়।”
“ওকে ডেকে নিয়ে আসো।”
সারহান শান্ত কন্ঠে বলল। তানিয়া বেগম অবাক হয়ে বললেন ;
“কেন?”
সারহান রুটি ছিড়ে মুখে দিয়ে লহু স্বরে বলল;

“খাবার খাওয়া বাদ দিয়ে আমার রুমে ঢুকে বসেছিল মেয়েটা। এখন না খেয়ে শুয়ে আছে।”
তানিয়া বেগম কপাল চাপড়ালেন। মেয়েটা শুধু হাতে – পায়ে বড় হয়েছে অথচ মাথায় বুদ্ধি নেই। সারাক্ষণ নাচানাচি করে বেড়াবে। তিনি উঠবেন এমন সময় দেখলেন অরিত্রিকা এসে হাজির। চোখ মুখ ডলে ধপাস করে বসল সারহানের সামনের চেয়ারে। ক্ষুধায় মুখখানা শুকিয়ে গেছে। পুরো টেবিলে চোখ বুলিয়ে ঝিমিয়ে ওঠা কন্ঠ নিয়ে বলল ;
“বড় মা, খাবার দাও ক্ষিধে লেগেছে।”

তানিয়া বেগম উঠে দাঁড়ালেন। প্লেটে ভাত দিতে লাগবে এমন সময় অরিত্রিকা চিল্লিয়ে উঠে বলল;
“ভাত দিও না। রুটি দাও অর্ধসিদ্ধ সবজি দিয়ে।”
সারহান খাওয়া থামিয়ে সরাসরি তাকাল অরিত্রিকার দিকে। চোখে মুখে প্রশ্নাত্মক ভাব। তানিয়া বেগম অবাক হয়ে বললেন ;
“তুই তো সবজি পছন্দ করিস না। রুটিও তেমন একটা খাস না!”
অরিত্রিকা সামনে তাকাতেই সারহানের সাথে চোখাচোখি হলো। সে সন্তপর্ণে চোখ নামিয়ে ক্ষীণ কন্ঠে বলল;
“আজ থেকে খাবো। তোমার ছেলে এসব খেয়ে কিভাবে বেঁচে আছে তা রিসার্চ করব।”
তানিয়া বেগম হেসে উঠলেন। প্লেটে একটা রুটি আর সবজি দিয়ে অরিত্রিকার সামনে রেখে বসলেন। সারহানের কপাল কুঁচকে গেল। মাকে উদ্দেশ্য করে গম্ভীর কন্ঠে বলল;

“তোমার বউ মা বেশী পাকনামো শিখেছে। ভাত না খেয়ে কঙ্কাল হওয়ার পায়তারা করছে। এসব পাকনামো না করে ভাত খেতে বলো। নয়তো কয়েকদিন পর দেখা যাবে নিউজ চ্যানেলে হেডলাইন হবে — এমপি সারহান ইদায়াত চৌধুরী বউকে না খাইয়ে রাখছে। এমপির বউ না খেতে পেয়ে কঙ্কাল হয়ে যাচ্ছে। ভাবতে পারছো তখন আমার রেপুটেশন কই থাকবে? ”
অরিত্রিকা পিটপিট করে তাকাল। গমগমে কন্ঠে বলল;
“আপনি আমায় খোঁচা মা*রছেন?”
“ আমি কাউকে খোঁচা মা*রছি না। রুটি না খেয়ে ভাত খা।”
“আমি রুটিই খাবো।”
“বেশী সাহস বেড়েছে তোর।”

সারহান শক্ত কন্ঠে বলল। অরিত্রিকা ভেংচি কাটলো। তানিয়া বেগম দুজনের ঝগড়া থামাতে বললেন ;
“তোরা দুজন বিয়ের পরেও শোধরালি না। ঝগড়া না করে খা।”
সারহান স্বভাবসিদ্ধ রুক্ষতা নিয়ে বলল;
“আমি শোধরাতে চাইলোও তোমার ত্যাড়া বউমার জন্য পারব না।”
অরিত্রিকা কটমট করে তাকাল। অভিযোগ করে বলল;
“দেখেছো বড় মা তোমার ছেলে আমায় কথা শোনাচ্ছে।”
তানিয়া বেগম মেকি রাগ দেখিয়ে বললেন ;
“তোরা চুপ করবি নাকি দুটোকে কান মলা দিবো?”
অরিত্রিকা রুটি ছিঁড়ে সবজি দিয়ে মুখে পুড়ে বলল;
“তোমার ছেলেকে কান মলা দাও বড় মা।”
সারহান দাঁতে দাঁত চেপে রাগ সংবরণ করল। অরিত্রিকা হাত দ্বারা মুখ চেপে হাসল। তানিয়া বেগম হতাশ হলেন। এ দুজনে বুড়ো বয়সে এসেও শান্তি দিলো না। তিনি ভেবে পান না — দুজনে প্রেমে পড়লো কিভাবে? ঝগড়া করে নাকি অন্যভাবে!

অরিত্রিকা খাওয়া দাওয়া শেষ করে নিজের রুমে আসলো। রুমে ঢুকতেই দেখল ইফা ঘুমিয়েছে। সে ডাকলো না। নিঃশব্দে রুম থেকে বেড়িয়ে হাটা ধরল নিচতলার দিকে। ইশারার সাথে বিকেল থেকে দেখা নেই তার। মেয়েটা রুমে বসে একাকী কি করছে? অন্যদিকে সাদাতেরও খবর নেই বিকেল থেকে। একবার দেখা হয়েছিল, তখন ছেলেটার চোখ মুখ লাল হয়েছিল। মুখাবয়ব অতিশয় থমথমে ছিল। এদের দুজনের হলোটা কি? সে সিঁড়ি বেয়ে ধপাধপ পা ফেলে লিভিংরুমে পেরিয়ে
ইশরার রুমের দিকে যাবে এমন সময় কারো ডাকে থেমে গেল।
“কোথায় যাচ্ছিস?”
অরিত্রিকা পিছু ফিরে তাকায়। সারহান লিভিং রুমে বসে ফোন স্ক্রোল করছিল। সে জবাব দেয় ;
“ইশরার রুমে যাচ্ছি। বিকেল থেকে ওর সাথে দেখা নেই। মেয়েটার হঠাৎ কি হলো বুঝতে পারছি না।”
সারহান কিছুক্ষণ মৌন থেকে বলল;
“ঠিক আছে যা।”

অরিত্রিকা মাথা দুলিয়ে পা বাড়াতে গিয়েও থেমে গেল। পিছু ফিরে চিন্তিতগ্রস্থ হয়ে বলল;
“সারহান ভাই, সাদাতের সাথে আপনি দেখা করে আসুন। ওর ভাবসাব ভালো না। বিকেলে একবার দেখা হয়েছিল। সাদাতের চোখ মুখ লাল হয়ে ছিল। কেমন যেন নিষ্প্রাণ লাগছিল।”
সারহান ফোন স্ক্রোল করা বাদ দিয়ে উঠে দাঁড়াল। গম্ভীর কণ্ঠে বলল;
“আমি দেখছি ওর কি হয়েছে।”
অরিত্রিকা কথাটা শুনে ইশরার রুমের দিকে গেল। সারহান পা বাড়াল সাদাতের রুমের দিকে। সিড়ি ভেঙে দ্বিতীয় তলায় ছোট ভাইয়ের রুমের সামনে গিয়ে দেখল দরজা খোলা। সাদাত নেই রুমে। সে রুমটা বাহির থেকে আটকে সোজা চলে গেল ছাদের দিকে। সে জানে সাদাত এখন ছাদেই আছে।

সাদাত দোলনায় বসে আছে৷ হাতে তার শখের গিটার। বুকের সাথে সেটাকে আঁকড়ে ধরে অদূর প্রকৃতিতে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে। সন্ধ্যার পর থেকে এখানটায় ঠায় হয়ে বসেছে — কোনো নড়চড় নেই। মাঝে মাঝে গিটারের তারে আঙুল বুলিয়ে বিষাদের সুর তুলছে। মুর্ছে যাওয়া গলা নিয়ে দুই এক লাইন গাইছে। তবুও যেন বুকের ভেতরে জমে ওঠা যন্ত্রণার পাহাড় চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাচ্ছে না। বুকে সেই যন্ত্রণা জমিয়ে রেখেই ইশরাকে নিয়ে ভাবছে। মেয়েটার প্রতি তার কোনো অভিযোগ নেই আর না আছে রাগ। দোলনা হঠাৎ দুলল। সাদাতের ভাবনার সমাপ্তি ঘটল। সে প্রকৃতি থেকে দৃষ্টি সরিয়ে পাশে তাকাল৷ দেখল সারহান এসে পাশে বসেছে। সে তড়িঘড়ি করে স্বাভাবিক ভাবে বসল। মনে চলমান ঝড়ের আভাস বুঝতে না দিয়ে ওষ্ঠকোণে হাসি ফুটিয়ে বলল;

“ভাই তুমি এখানে?”
সারহান তীক্ষ্ণ চাহনিতে তাকাল সাদাতের দিকে। কন্ঠস্বর স্বাভাবিক রেখে বলল;
“অনেকদিন তোর সাথে আড্ডা দেওয়া হয় না। তাই ভাবলাম দুই ভাই মিলে আড্ডা দেই। তবে এখন মনে হচ্ছে ভুল টাইমে আড্ডা দিতে আসলাম।”
সাদাত থতমত খেল। কৌতূহল বশত জিজ্ঞেস করল;
“ভুল টাইম কেন বলছো?”
সারহান প্রশ্নটা উপেক্ষা করে বলল ;
“মন খারাপের কারণ বল আগে।”
“আমি মন খারাপ করিনি ভাই।”
“তোর মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে সব। কি হয়েছে বল।”
“কিছু হয়নি। আসলে শরীরটা ভালোলাগছে না।”
“সত্যিটা জানতে চাইছি।”

সারহান শক্ত কন্ঠে বলল। সাদাত অসহায় বোধ করল। সে বড় ভাইকে কিভাবে বলবে ইশরারকে ভালোবাসে? প্রপোজ করায় প্রত্যাখান করেছে?সে থম মেরে বসে রইল। থমথমে গলায় বলল;
“আমি তোমায় বলতে পারবো না।”
সারহান হঠাৎ হাসল;
“বুঝেছি। প্রেম ঘটিত ব্যাপার।”
সাদাত অবিশ্বাস্য চাহনিতে তাকাল ভাইয়ের দিকে। ভীতিগ্রস্ত কন্ঠে বলল;
“এসব… তুমি ভুল ভাবছো। আমি কারো প্রেমে পড়িনি নি।”
সারহানের ওষ্ঠদ্বয় প্রসারিত হলো। তারমানে সে যা ভেবেছে তাই। সে সাদাতের কাঁধে চাপড় দিলো। হাসি থামিয়ে বলল;

“তোর প্রপোজাল রিজেক্ট করেছে?”
“ভাই তুমি যা ভাবছো তেমনটা নয়।”
“আমি যা ভেবেছি তাই ঘটেছে। এই তোর বয়স কতো? প্রেম করার বয়স হয়েছে? পড়াশোনা করার বয়সে মেয়ে পটানো শিখেছিস। তারপর দুই একদিন কথা বলে ব্রেকআপ। আদৌও কি বুঝিস ভালোবাসা কি?”
“ভাই তুমি ভুল বুঝছো আমায়।”
“তুই কি কি করে বেড়াস সব খবর আছে আমার কাছে। ছোট বলে বারবার ওয়ার্নিং দিয়েছি। বোঝানোর চেষ্টা করেছি অথচ তুই পুনরায় একই ভুল করিস। বাইরের মেয়েদের সাথে টাইমপাস করেছিস মেনে নিয়েছি। কিন্তু ইশরার সাথে এমনটা করার কথা ভাবলে তুই কে আমি ভুলে যাব। তুই ওর থেকে দূরে থাকবি।”
“ভাই আমি সত্যি….”

“আমি আগেই তোর মতিগতি বুঝতে পেরেছিলাম। কিছু বলিনি তখন। ভেবেছিলাম তুই নিজের করা ভুলটা বুঝে একাই সরে দাঁড়াবি। কিন্তু তুই আবারও ভুল করলি।”
সারহানের কন্ঠস্বর বলিষ্ঠ। সাদাতের ভারাক্রান্ত মনটা পরিপূর্ণ রুপে ভেঙে গেল। সারহানের কথাগুলো যেন তীরের মতো বিঁধল। সে দুহাত দিয়ে বড়ভাইয়ের হাত ধরল। এক অসহায় পথিকের মতো বলল;
“ভাই, আমি ইশরাকে সত্যি খুব ভালোবাসি। মানছি আমি আগে অনেক মেয়ের সাথে টাইম পাস করেছি। কিন্তু আমি ইশরার সাথে টাইমপাস করতে চাইনি। আমার অনুভূতি মিথ্যা নয়। আমি তোমার কসম কেটে বলছি।”
সারহান তীক্ষ্ণ চাহনিতে তাকিয়ে গমগমে কন্ঠে বলল;

“তোর কথাটা আমি বিশ্বাস করলেও ইশরা বিশ্বাস করবে না। যদি ইশরাকে সারাজীবনের জন্য পেতে চাস তাহলে ওকে তোর ভালোবাসার গভীরতা বুঝিয়ে দে।”
সাদাত বিস্মিত হলো। কাতর চক্ষুদ্বয় শীতল হলো। সারহানের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হলো। শান্ত কন্ঠে বলল;
“আমি জানি তুই ইশরাকে ভালোবাসিস। আমি জেনেও চুপচাপ মেনে নিচ্ছি। কিন্তু বাবা মানবে না।”
“ভাই ইশরা…. ”

প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে সিজন ২ পর্ব ৬৬

“সবকিছু সময়ের ওপর ছেড়ে দে। এসব নিয়ে ভেবে মন খারাপ করিস না।”
সাদাত বিমর্ষ গলায় থেমে থেমে বলল;
“ইশরা আমাকে বন্ধু ভাবে। মেয়েটা আমার অনুভূতি বোঝার চেষ্টা করল না। আমার বলা কথার তোয়াক্কা করল না।”
সারহান আশ্বাস দিলে বলল ;
“যা হবে ভালোর জন্য হবে।”
“আমার ভালো ইশরাকে ঘিরে।”
“তবে ওকে কতটা ভালোবাসিস বুঝিয়ে দে।”

প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে সিজন ২ পর্ব ৬৮